সোমবার দুপর পর্যন্ত ব্যালন ডি’অর জেতার দিক থেকে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। তবে সন্ধ্যা হতেই পাল্টে যায় চিত্র। চারদিকে রব উঠে এবারের ব্যালন ডি’অর জিততে যাচ্ছেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রদ্রি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই খবরই হয়েছে সত্য। তাতে তৃতীয় স্প্যানিশ ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অরের সোনালী ট্রফিটা ঘরে তুলেছেন রদ্রি।
এসিএল চোটে পড়ে মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে গেছে রদ্রির। কয়েকদিন আগেই হয়েছে অস্ত্রোপচার। তাই ব্যালন ডি’অর যখন নিতে এলেন, তখন ক্রাচে ভর করেই এসেছেন। ব্যালন ডি’অরের শিরোপা হাতে পেতেই অবশ্য সেই স্মৃতি ভুলে চওড়া হাসির দেখা মিলেছে রদ্রির মুখে।
গেল মৌসুমে সিটি মিডফিল্ডার ক্লাব ও জাতীয় দল দুই জায়গায়ই ছিলেন সফল। সিটির হয়ে ৪৫ ম্যাচে ৯ গোলের পাশাপাশি করেছেন ১২ অ্যাসিস্ট। জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ, এবং ইউয়েফা সুপার কাপের শিরোপা।
স্পেনের জার্সিতেও রদ্রি কাটিয়েছেন দারুণ সময়। ১৪ ম্যাচে ৩ গোলের পাশাপাশি করেছেন একটা অ্যাসিস্ট। সেই সাথে জিতেছেন ইউরোর শিরোপা। হয়েছিলেন ইউরোর সেরা ফুটবলারও। তাতে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে টপকে জিতে নিয়েছেন গেল মৌসুমের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার।
২০২২/২৩ মৌসুমেও রদ্রির নাম এসেছিল ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে। সিটির হয়ে সেবার জিতেছিলেন ট্রেবল। তবে সেই মৌসমে শেষ পর্যন্ত ছয়ে থেকে শেষ করেছিলেন রদ্রি। এবার অবশ্য তাকে আর হতাশ হতে হয়নি। প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলে করতালির মধ্য দিয়েই ব্যালন ডি’অরটা উঁচিয়ে ধরেছেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৭ এম
চেলসি ও ওয়েস্ট হ্যামের সাবেক কোচ গ্রাহাম পটার সুইডেন ফুটবল দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। ৫০ বছর বয়সী পটার এর আগে সুইডেনে সাত বছর কোচিং করেছেন ওস্টারসুন্ড ক্লাবে, দলটিকে চতুর্থ বিভাগ থেকে দেশের শীর্ষ স্তর ও ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার তাঁর ওপর আস্থা রাখল সুইডিশ ফুটবল ফেডারেশন (এসভিএফএফ)।
সবশেষ লন্ডনের ক্লাব ওয়েস্ট হ্যামে দায়িত্ব পালন করেছিলেন পটার। সুইডেনের দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত পটার। আপাতত তাঁর লক্ষ্য, সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপের মূলপর্বে নিয়ে যাওয়া, ‘আমি এই দায়িত্বে নিঃসন্দেহে গর্বিত, তবে এক সঙ্গে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত। সুইডেনে অসাধারণ খেলোয়াড়রা রয়েছেন, যারা বিশ্বের সেরা লিগগুলোতে খেলেন। আমার কাজ হবে এমন পরিবেশ তৈরি করা যাতে আমরা দল হিসেবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে পারি এবং আগামী বিশ্বকাপে সুইডেনকে পৌঁছে দিতে পারি।’
পটারকে দায়িত্বে নেওয়ার আগে সুইডেনের দলের কোচ ছিলেন জোন ডাল টমাসন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে হতাশাজনক শুরুতে দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হন তিনি। ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে দায়িত্ব নেওয়া ডেনিশ কোচ টমাসনের বরখাস্তকরণ সুইডেনের পুরুষ দলের ইতিহাসে প্রথমবারের ঘটনা।
আরও পড়ুন
প্রতিপক্ষের দুই লাল কার্ডের ম্যাচে এমবাপের গোলে রিয়ালের জয় |
![]() |
সুইডিশ ফুটবল ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সাইমন অ্যাস্ট্রোম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এখনো বিশ্বকাপে পৌঁছানো। মার্চে প্লে-অফ খেলার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গ্রাহাম পটার আমাদেরকে শক্তিশালী এবং অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রদান করবেন, যা সর্বোচ্চ স্তরে পরীক্ষিত।’
পটারের অধীনে নভেম্বরে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে দুইটি ম্যাচ খেলবে সুইডেন। তাঁর চুক্তি বিশ্বকাপ প্লে-অফ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে, যদি সুইডেন যোগ্যতা অর্জন করে।
‘বি’ গ্রুপে থাকা সুইডেন চার ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট অর্জন করে টেবিলে সবার নিচে রয়েছে। কসোভোতে পরপর দুই পরাজয় এবং সাম্প্রতিক হোম ম্যাচে ১-০ গোলে হারের ফলে সুইডেনের সরাসরি বিশ্বকাপে যাওয়ার যোগ্যতার আশা শেষ। এসভিএফএফ টমাসনের বরখাস্তের কারণ হিসেবে দলের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা দেখানো হয়েছে বলে উল্লেখ করে।
ফুটবল পরিচালক কিম ক্যালস্ট্রোম বলেন, ‘গ্রাহামের আগমন আমাদের জন্য আনন্দের। আমরা পরিস্থিতি জানি এবং বিশ্বাস করি, তার নেতৃত্বের দক্ষতায় দল একত্রিত হবে। তিনি ম্যাচ জেতার জন্য কৌশলগত দক্ষ এবং খেলোয়াড়দের শক্তি ও পারস্পরিক সহযোগিতা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম।’
আরও একবার দলের জয়ে অবদান রাখলেন। সিরি‘আ’তে পরশু জুভেন্টাসের বিপক্ষে কোমোর ২-০ ব্যবধানের জয়ে একটি গোলের সঙ্গে সতীর্থে দিয়ে করিয়েছেন আরেকটি গোল। ধারে ইতালির ক্লাবটিতে যোগ দিয়ে নিয়মিতই চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন আর্জেন্টিনার প্রতিভাবান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
কোমোর ঘরের মাঠ সিনিগালিয়ায় চার মিনিটে কর্নার থেকে দারুণ এক ক্রসে বল জুভেন্টাসের বক্সে পাঠান নিকো। সেখান থেকে বল জালে জড়ান মার্ক-ওলিভার কেম্প। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে জাদুকরী মুহূর্তের স্বাক্ষী করেন নিকো। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে বক্সের প্রান্তে এগিয়ে যান আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। এরপর জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার আন্দেয়া কম্বিয়াসোকে পরাস্ত করে বাঁ পায়ের অসাধারণ এক শটে জাল কাঁপান নিকো পাজ। নিকো পাজের দূত্যি ছড়ানোর ম্যাচে ১৯৫২ সালের পর জুভেন্টাসের বিপক্ষে প্রথম জয়ও পেল কোমা।
আরও পড়ুন
‘মাথা উঁচু রাখো ছেলেরা’, স্বপ্নভঙ্গের পর যুবাদের স্বান্ত্বনা মেসির |
![]() |
২০২৫-ে২৬ মৌসুমে সিরি‘আ’তে চারটি গোলের সঙ্গে সমান চারটি অ্যাসিস্ট করেছেন নিকো পাজ। মাঠে গোলের সুযোগ তৈরি করা, সতীর্থের গোলে সহায়তা করা, নিঁখুত ফিনিশিংয়ে বল জালে পাঠানোয় পারদর্শী হয়ে উঠেছেন নিকো পাজ।
রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে যোগ দেওয়া নিকোর প্রশংসা করতে একেবারেই কার্পণ্য করছেন না কোমোর কোচ সেস ফ্যাব্রেগাস। ডিএজেডএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সে একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। আমি তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নই, কারণ আমি বুঝতে পারি কে ক্ষুধার্ত, কার মানসিকতা বড় কিছু হওয়ার মতো।’
শিষ্যকে নিয়ে ফ্যাব্রেগাস আরও বলেন, ’সে যেখানে যেতে চায় যেতে পারবে। শুধু বিনয়ী থাকতে হবে, পরিশ্রমের মানসিকতা ধরে রাখতে হবে—কারণ প্রতিভা ও শারীরিক সামর্থ্য দুটোই ওর আছে।’
কোমোয় নিকোর উন্নতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রিয়াল মাদ্রিদ। মৌসুম শেষে তাঁর প্রত্যাবর্তন বিবেচনা করতে পারে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি। ক্লাবের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইতোমধ্যেই আর্জেন্টিনা জাতীয় দলেও সুযোগ পেয়েছেন নিকো পাজ। ২০২৬ বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তেদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেই নিজের জায়গা নিশ্চিত করতে যেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি।
পার্থে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে সহজেই উড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে ম্যাচসেরা পুরস্কার হাতে তোলেন অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ।
তবে ম্যাচ জেতানোর চেয়েও মুখের অদ্ভুত ভঙ্গির কারণে বেশি আলোচনায় মার্শ! এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল গতকাল ম্যাচের একটি দৃশ্য। ইনিংসের মাঝপথে ক্র্যাম্প করেছিল অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের। তখন সতীর্থ মার্নাস লাবুশেন ও ফিজিও জেভিয়ার বার্টলেট দৌড়ে এসে তাঁর হাতে দিলেন জেলজাতীয় এক পানীয়।
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
সেটা মুখে দিতেই বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে গেল মার্শের। বিস্ময়ে চিৎকারও করে উঠলেন, ‘এটা আবার কী জিনিস!’ পরে হাসতে হাসতেই বললেন, তিনি ভেবেছিলেন সেটা কোনো মিষ্টি কিছু—কিন্তু যে তেতো স্বাদ পেলেন, তার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না।
মার্শকে দেওয়া হয়েছিল পিকল জুস—যা সাধারণত পেশির টান বা ক্র্যাম্প সারাতে ব্যবহার করা হয়। এর স্বাদ টক-নোনতা, মুখ ও গলার স্নায়ুতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কার বিতরণীতে এ নিয়ে প্রশ্নও আসে। হাসতে হাসতেই মার্শ বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ওটা কোনো চিনির এনার্জি জিনিস। আমাকে ভালোভাবেই ধোঁকা দিয়েছে ওরা! স্বাদটা ভয়ানক, তবে ক্র্যাম্প ঠিক করে দিয়েছে—যে কোম্পানিরই হোক, তাদের ধন্যবাদ।’
ঠিক যেমনটা ঘটেছে ম্যাচটার সঙ্গেও। সিরিজের সূচনা হওয়ার কথা ছিল এক ঝলমলে লড়াই দিয়ে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পরিণত হলো এক ‘ড্যাম্প স্কুইবে’—অর্থাৎ হালকা বৃষ্টিতে ভেজা নির্জীব ম্যাচে।
আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যেও কিছু দৃষ্টিনন্দন শট দেখা গেছে। বিশেষ করে মার্শের ছক্কাগুলো। তবে দিন শেষে বেশি রসিকতা হচ্ছে তেতো পানীয় খেয়ে মার্শের-‘এটা আসলে কী ছিল!’
আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাডিলেডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া-ভারত।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ২০০৫ আসরের চ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসি। ২০ বছর আগে আর্জেন্টিনা যুবা দলকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করে গোলল্ডে বলও জিতেছিলেন ইন্টার মায়ামির মহাতারকা। পরের আসরে আরেকবার এই ট্রফি ঘরে তুলে আলবিসেলেস্তারা। এরপর আর এই শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি আর্জেন্টিনার।
আজ মরক্কোর বিপক্ষে ফাইনালে সুযোগ ছিল ১৮ বছরের খরা কাটানোর। তবে আফ্রিকার দেশটির বিপক্ষে ০-২ গোলে হেরে স্বপ্নভাঙে আর্জেন্টিনার। স্বাভাবিকভাবেই হারের পর কান্নায় ভেঙে পড়ে এই প্রতিযোগিতার ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন
প্রতিপক্ষের দুই লাল কার্ডের ম্যাচে এমবাপের গোলে রিয়ালের জয় |
![]() |
ফাইনাল হারের পর আর্জেন্টিনা যুবাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন মেসি। ইনস্টাগ্রাম পেজে দলের প্রতি সমর্থন আর স্বান্ত্বনার সুরে মেসি লিখেন, ‘মাথা উঁচু রাখো, ছেলেরা! তোমরা অসাধারণ একটি টুর্নামেন্ট খেলেছো। যদিও আমরা সবাই চেয়েছিলাম তোমরা শিরোপা তুলে ধরবে। তবুও তোমাদের অসাধারণ সব সাফল্য আমরা উপভোগ করছি এবং যেভাবে তোমরা তোমাদের হৃদয় দিয়ে নীল ও সাদা জার্সির জন্য লড়েছে, আমরা গর্বিত।’
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ফাইনালে ওঠা আর্জেন্টিনা শিরোপার মঞ্চে এসে হোঁচট খায় মরক্কোর কাছে। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচে বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি আমাদের বিশ্বকাপে আগের ম্যাচগুলো থেকে আলাদা ছিল। আমরা আমাদের শক্তি পুরোপুরি দেখাতে পারিনি। আমরা ঘুরে দাড়াতে বা একটি গোল করতে পারিনি।’
অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতার সঙ্গে প্রতিপক্ষকেও কৃতিত্ব দিলেন আর্জেন্টিনার কোচ, ‘জয়টা তাদের প্রাপ্য। তারা শারীরিকভাবে খুব শক্তিশালী। আমাদের কিছু খেলোয়াড় পুরোপুরি পারফর্ম করতে পারেনি। ফলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচটি।’
গত দুই দশকে ইউরোপিয় ফুটবলে ক্রিশ্চিয়োনো রোনালদো-লিওনেল মেসির দ্বৈরথের কাছে সবকিছুই ম্লান মনে হতো। সর্বকালের অন্যতম দুই সেরা ফুটবলার ইউরোপ ছেড়েছেন অনেকদিন হলো। মেসি-রোনালদোর সময় অন্যদের সবসময় ছায়া হয়েই থাকতে হয়েছে। সময় বদলেছে। চলতি মৌসুমে ইউরোপের সেরা হওয়ার দৌড় চলছে তিন মহারথীর মধ্যে। আর্লিং হলান্ড, হ্যারি কেইন ও কিলিয়ান এমবাপে।
২০২৫-২৬ মৌসুমে তিন ফরোয়ার্ড আছেন দুর্দন্ত ছন্দে। নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে মাঠে নামলেই গোল উৎসবে মেতে উঠছেন হলান্ড-কেইন-এমবাপে। তাতে মৌসুমের শুরুতেই সর্বোচ্চ গোলদাতার হওয়ার লড়াই বেশ জমে উঠেছে। নিজেদের সবশেষ ম্যাচেও তিন তারকাই জালের দেখা পেয়েছেন। মৌসুমের প্রথমভাগেই যেভাবে নিয়মিত গোল করে দলের জয়ে অবদান রেখে যাচ্ছেন এই ফরোয়ার্ড ত্রয়, তাতে ব্যালন ডি’অর জয়েও হাড্ডহাড্ডি এক লড়াই দেখা যেতে পারে। তবে মৌসুমে শেষ হতে এখনো অনেকদূর, তার আগে দেখে নেওয়া যাক নতুন মৌসুমে এই তিন তারকার পরিসংখ্যান।
আর্লিং হলান্ড (ম্যান সিটি ও নরওয়ে)
‘গোলমেশিন’ নাম পাওয়া হলান্ড আছেন ছন্দের তুঙ্গে। ২০২৫-২৬ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচে গোলের দেখা পাননি নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৮ ম্যাচে ১১ গোল করে ম্যানচেস্টার সিটিকে লিগ শিরোপার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে দারুণ অবদান রাখছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ মৌসুমে দুই ম্যাচ খেলে করেছেন তিন গোল।
সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড অ্যালান শিয়ারারের ভাষায়, ‘যদি আদর্শ সেন্টার ফরোয়ার্ড তৈরি করতে চাও, হালান্ডকে দেখো—তার মধ্যে গতি, শক্তি, হেডের ক্ষমতা, শক্তিশালী ডিফেন্ডারদের ভয় না পাওয়া—সবই আছে, প্রায় নিখুঁত।’
জাতীয় দলের জার্সিতেও সমানতালে জালে পাঠিয়ে যাচ্ছেন হলান্ড। নরওয়েকে ১৯৯৮ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপে খেলার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। নরওয়ের হয়ে ছয়টি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১২ গোল করেছেন ‘দানবীয়’ এই ফরোয়ার্ড।
হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ ও ইংল্যান্ড)
গত শনিবার বুন্দেসলিগার ‘ডের ক্লাসিকার’-এ বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গোল করে এই মৌসুমে ক্লাব ও দেশের হয়ে ২২ গোল হলো কেইনের। ২০২৩ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর থেকে অসাধারণ ধারাবাহিকতায় দেখিয়ে যাচ্ছেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। তবে এ মৌসুমে যেন সবকিছু ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বুন্দেসলিগায় এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১২ গোলের সঙ্গে তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন কেইন। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চেলসি ও পাফোসের বিপক্ষে চারবার লক্ষ্যভেদ করেছেন ৩২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেইন জাতীয় দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ছয় ম্যাচে করেছেন তিন গোল। প্রথম ইউরোপীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে তাঁর দেশও।
কিলিয়ান এমবাপে ( রিয়াল মাদ্রিদ ও ফ্রান্স)
পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর প্রথম কয়েক মাসের হতাশা এখন অতীত। অবশ্য সেই হতাশার মৌসুমেও ঠিকই লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার ট্রফি পিচিচি জিতেছেন। এবার নতুন মৌসুমে তো আরও ক্ষুরধার ফরাসি ফরোয়ার্ড। নতুন কোচ জাবি আলোনসোর রিয়ালে আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা এমবাপে। ক্ষিপ্র গতি, বল নিয়ন্ত্রণ আর নিঁখুত ফিনিশিংয়ের মিশেলে প্রতিপক্ষকে নিয়মিতই নাকানি-চুবানি খাইয়ে ছাড়ছেন। এখন পর্যন্ত এ মৌসুমে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলে ১১ ম্যাচে ১৫ গোল করেছেন এমবাপে। লা লিগায় সর্বোচ্চ ১০ গোল তার, চ্যাম্পিয়নস লিগে মাত্র দুই ম্যাচে ৫ গোল। বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড টানা সাত মৌসুম নিজ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ছয়বার সাবেক ক্লাব পিএসজির হয়ে, আর রিয়ালের জার্সিতে প্রথম মৌসুমেই সেই কৃতিত্ব ধরে রেখেছেন তিনি।
ফ্রান্সের হয়ে করেছেন তিন ম্যাচে তিন গোল । এই মৌসুমে ক্লাব ও দেশের হয়ে ১৪ ম্যাচে কেবল একবার গোল পাননি। টানা ১১ ম্যাচ ধরে জালের দেখা তো পাচ্ছেনই।