ফরচুন বরিশালের ছন্দময় বোলিংয়ের সামনে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের কেউই পারলেন না ব্যবধান গড়ে দেওয়ার মত ইনিংস খেলতে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের ত্রাতা হিসেবে হাজির হয়ে বলার মত একটা স্কোর এনে দিলেন অধিনায়ক আরিফুল হক। তবে সেটা যে একেবারেই যথেষ্ট নয়, তা প্রমাণ করে দিল তাওহীদ হৃদয় ও কাইল মায়ার্সের অপরাজিত শতরানের জুটি। টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বরিশাল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সিলেট পর্বের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ইকবালের দল জিতেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ১২৬ রানের টার্গেট দলটি পাড়ি দিয়েছে ৫৭ বল হাতে রেখে। আসরে এটি সিলেটের টানা তৃতীয় হার।
ব্যাট হাতে কিছুটা ঝলক দেখানো রাহকিম কর্নওয়েল বল হাতে প্রথম ডেলিভারিতেই করেন বাজিমাত। গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়ে ক্যাচ আউট হন আগের ম্যাচে ফিফটি করা তামিম ইকবাল। তাতে নাজমুল হোসেন শান্তর সামনে সুযোগ ছিল নিজেকে মেলে ধরার।
আরও পড়ুন
পরিস্থিতি অনুযায়ী বল করেই সফল নাহিদ |
তবে জাতীয় দলের ব্যাটার হতাশ করেন আরও একবার। কিপিংয়ের দায়িত্ব ভালোভাবে সামাল দিলেও ব্যাট হাতে এক চারে ৫ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস। ৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে তখন বরিশাল।
সেই চাপ সরাতে কর্নওয়েলের ওপর পাল্টা আক্রমণ করেন তাওহীদ। দীর্ঘদেহী এই বোলারের এক ওভারে দুটি চারের মাঝে মারেন ছক্কাও। অন্যপ্রান্তে মায়ার্সকে দর্শক বানিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন তরুণ এই ব্যাটার। রিস টপলিকে দুটি বাউন্ডারির পর আল-আমিন হোসেনকেও মারেন দুটি চার। ছয় ওভারে বরিশালের বোর্ডে জমা হয় ৫৫ রান।
অষ্টম ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের ওপর চড়াও হন মায়ার্স। দুই ছক্কা ও এক বাউন্ডারি সহ ওই ওভারে ২১ রান হজম করেন ডানহাতি এই পেসার। মাত্র ২৭ বলেই ফিফটি পূর্ণ হয় ক্যারিবিয়ান ব্যাটারের।
দুই রানের জন্য ফিফটি বঞ্চিত হন তাওহীদ। ২৭ বলের ইনিংস সাজান ৮ চার ও দুই ছক্কায়। মায়ার্স অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে।
আরও পড়ুন
ঢাকাকে উড়িয়ে রংপুরের টানা পঞ্চম জয় |
বোলিংয়ের মত ব্যাট হাতেও এদিন মলিন ছিল সিলেট। প্রথম ওভারেই বিদায় নেন অভিজ্ঞ ওপেনার রনি তালুকদার। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে তিনটি চার মেতে কর্নওয়েল দর্শকদের কিছুটা বিনোদন দেন। তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি বেশি।
খানিক বাদে শাহিনের বলেই আউট হন তিনি৷ তার আগে করতে পারেন মোটে ১৮ রান। ক্রিজে গিয়েই শাহিনলে দুই চার ও একটি ছক্কা মারেন জর্জ মুন্সি। অন্যপ্রান্তে জাকির হাসান শুরু থেকেই ছিলেন ইতিবাচক। তাতে এক পর্যায়ে সিলেটের রান ছিল ২ উইকেটে ৭৬।
এরপরই নামে ধস। জোড়া শিকার করেন জাহানদাদ খান। অন্যপ্রান্তে তার সাথে পাল্লা দিয়ে এরপর উইকেট নেওয়া শুরু করেন রিশাদ। দুজনের সমান তিনটি করে উইকেট শিকারে দিশেহারা হয়ে যায় সিলেট।
সেখান থেকে ১২৫ রান পর্যন্ত যাওয়ার কৃতিত্ব আরিফুলের একারই। ২৯ বলে খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। তবে দলের বড় হার এড়াতে পারেননি আর।
আরও পড়ুন
ব্যাটিং ব্যর্থতায় রংপুরকে মামুলি টার্গেট দিল ঢাকা |
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:১৮ পিএম
একটা দল যখন ম্যাচের পর ম্যাচ জিততেই থাকে, তখন আড়ালে চলে যায় ছোট ছোট ভুলত্রুটিও। চলতি বিপিএলে টানা ৮ ম্যাচে রংপুর রাইডার্স যেভাবে ছুটছিল, তাতে মনে হচ্ছিল তারা হারতেই হয়ত ভুলে গেছে। সেই ধারার ইতি টেনে দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। ব্যাটে-বলে লড়াই জমাতে ব্যর্থ হয়েছে রংপুর। প্লে-অফ আগেই নিশ্চিত হয়ে গেলেও, এই পরাজয়কে সতর্কতা হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল রংপুর আসরের শুরু থেকেই খেলছে গোছানো ক্রিকেট। বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়ে খুব বেশি বদল আনেনি দলটি। দেশীদের মধ্যেও রাখা হচ্ছে ধারাবাহিকতা। সাথে সোহানের দুর্দান্ত নেতৃতে দেখা মেলে একের পর এক জয়ের। রাজশাহীর বিপক্ষে তাই ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। তবে হারতে হয়েছে ২৪ রানে, যেখানে ফুটে উঠেছে কিছু দুর্বলতার জায়গা।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
সোহান তাই এই ম্যাচকে দেখছেন শিক্ষা নেওয়ার ভালো একটি উপলক্ষ্য হিসেবেই। “পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই আমরা ভালো খেলেছি। এই হারটা আমাদের জন্য একটা সতর্কবার্তা। সবার সবার জায়গা থেকে এটা নিয়ে চিন্তা করতে পারবে। আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেট জিনিসটাই এমন, ভালো ক্রিকেট খেলেই জিততে হবে। আপনি মাঠে নামবেন আর জিতবেন, এটা আশা করা যায় না। আপনি যেদিন ভালো খেলবেন, সেদিনই জিতবেন। আমরা কোথায় ভুল করেছি, আমার কাছে মনে হয় এখান থেকে শক্তিশালীভাবে ফিরে আসা যায়, এসব নিয়ে সবাই চিন্তা করবে।”
ম্যাচে বল হাতে রংপুর পারেনি শুরুর দিকে রাজশাহীর ব্যাটারদের দ্রুত রান তোলার গতিতে লাগাম দিতে। এনামুল হক বিজয় কিছুটা ধীরলয়ে ব্যাটিং করলেও সাব্বির হোসেনের ৩৯ রানের ক্যামিওতে পাওয়ার প্লেতে ভালো শুরু পায় দলটি। ইয়াসির আলির ফিফটির পর শেষ পাঁচ ওভারে ঘুরে দাঁড়ালেও টার্গেট দাঁড়ায় ১৭১। ব্যাট হাতেও প্রথম ছয় ওভারে সেভাবে রান করতে পারেনি রংপুর, যা চাপ বাড়ায় পরের দিকে।
দুই পাওয়ার প্লেতে ভালো না করাই হারের কারণ বলে মনে করেন সোহান।
“আমার কাছে মনে হয় পাওয়ার প্লেতে আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। উইকেট একটু ট্রিকি ছিল। তারপরও, আমরা কিছু রান বেশি দিয়ে দিয়েছি। হয়ত ১৫ ওভারের পর আমরা কামব্যাক করেছি, তবে রান কিছু বেশি হয়ে গেছে। একইসাথে, ব্যাটিংয়েও পাওয়ার প্লে আমাদের ভালো যায়নি। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং বলেন বা বোলিং, পাওয়ার প্লে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই দুইটাই আমাদের বিপক্ষে গেছে।”
সেই জিএসএল জয় দিয়ে শুরু, এরপর বিপিএলে রেকর্ড টানা ৮ ম্যাচ জেতা রংপুর রাইডার্স প্রায় অজেয়ই হয়ে উঠেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের জয়রথ থামল, তাও আসরের অন্যতম অধারাহিক দল দুর্বার রাজশাহীর কাছে। ইয়াসির আলির ফিফটির পরও রংপুরের বোলাররা প্রতিপক্ষকে আটকে দিয়েছিলেন নাগালের মধ্যে থাকা স্কোরেই। অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে সাইফ হাসান ও নুরুল হাসান সোহান লড়াই করলেন বটে, তবে এই দফায় আর পারলেন না জেতাতে। রাজশাহী পেল উজ্জীবিত এই জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩১তম ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুরকে ২৪ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। ১৭১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সোহানের দল থেমেছে ১৪৬ রানেই।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
এই ম্যাচ দিয়ে রংপুর একাদশে আসা ইরফান শুক্কুর নেমেছিলেন ওপেন করতে। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এই কিপার-ব্যাটার। প্রথম ওভারেই তাকে বোল্ড করেন রাজশাহী অধিনায়ক তাসকিন। আরেক ওপেনার স্টিভেন টেলরও ফেরেন এক ডিজিটে।
তবে রংপুরকে বড় ধাক্কাটা দিয়ে একই ওভারে গোল্ডেন ডাকের তেতো অভিজ্ঞতা উপহার দিয়ে ইফতিখার আহমেদকেও শিকার বানান এসএম মেহেরব। মাত্র ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া রংপুরের হাল ধরার চেষ্টা করেন সাইফ। মোহর শেখকে হাঁকান হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি।
তবে তাল মেলাতে পারেননি বল হাতে দারুণ দিন পার করা খুশদিল। পাকিস্তান অলরাউন্ডারের অবদান ছিল মাত্র ১৪ রান। সাব্বির হোসেনকে টানা দুই ছক্কা মেরে চল্লিশের ঘরে পা রাখা সাইফ ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে ক্রমেই চাপ সরাচ্ছিলেন।
তবে ফিফটি থেকে সাত রান দূরে থাকতে তাকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন শফিউল ইসলাম। ১৪ বলে ৮ রানের ইনিংসে রংপুরকে চাপে ফেলে সাজঘরের পথ ধরেন শেখ মাহেদি হাসান। ১৩ ওভারে বোর্ডে রান তখন মাত্র ৯১।
আরও পড়ুন
ইয়াসিরের ঝড়ো ফিফটির পর রংপুরের ফাইটব্যাক |
সেখান থেকেই লড়াইয়ের শুরু সোহানের। পরপর দুই বলে মেহেরবকে ডিপ মিড উইকেট ও লং অন দিয়ে মারেন ছক্কা। দারুণ সব শটে রংপুর অধিনায়ক যেন ফিরিয়ে আনছিলেন ফরচুন বরিশাল ম্যাচের স্মৃতি, যেখানে তিনি শেষ ওভারে ২৬ রান নিয়ে জিতিয়েছিলেন দলকে।
তবে এবার আর পারেননি। বার্লের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ৪১ রানে। ২৬ বলের ইনিংস সাজান ৪টি চার ও ২ ছক্কায়। ২ ছক্কা ও এক চারে সাইফউদ্দিন ২৩ রানের ক্যামিও খেলেন বটে, তবে জয়ের কাছাকাছিও তা নিতে পারেনি তার দলকে। ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে রাজশাহীর বোলিংয়ের সেরা অলরাউন্ডার বার্ল।
এর আগে একাদশে মাত্র দুই বিদেশী ক্রিকেটার নিয়ে নামা রাজশাহী শুরুটা ভালো করতে পারেনি সেভাবে। ১৯ রানে মোহাম্মদ হারিসের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রাখার কাজটা একাই এগিয়ে নেন সাব্বির হোসেন। এনামুল হক বিজয় রান করলেও সেটা ছিল ধীরলয়ে।
তবে সেটা বুঝতে দেননি সাব্বির। খেলেন মাত্র ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। এক ওভারেই তাকে ও রায়ান বার্লকেও ফিরিয়ে রংপুর শিবিরে হাসি ফোটান খুশদিল শাহ।
আরও পড়ুন
লড়াকু ইনিংসেও খুলনাকে জেতাতে পারলেন না নাইম |
মাঝে কয়েক ওভার এরপর রানের গতি কমে এলেও সেটা দলটি কাটিয়ে ওঠে ইয়াসির আলির ব্যাটা চড়ে। মাত্র ২৭ বলে করেন ফিফটি। মাত্র ৩২ বলে তার ৬০ রানের ইনিংস শেষের পর ফের ধাক্কা খায় রাজশাহীর ইনিংস। শেষ চার ওভারে একের পর এক উইকেট হারিয়ে টেনেটুনে করতে পারে ৯ উইকেটে ১৭০, যা অবশ্য শেষ পর্যন্ত এনে দেয় দারুণ এক জয়।
একাদশে মাত্র দুই বিদেশী ক্রিকেটার রেখে শুরুতেই চমক দেখানো দুর্বার রাজশাহীর ভরসার জায়গা ছিল দেশি ব্যাটাররা। সাব্বির হোসেন ও এনামুল হক বিজয় সেই কাজটা ভালোই করলেন শুরুতে। তবে মূল তাণ্ডব দেখালেন ইয়াসির আলি। পাঁচে নেমে প্রায় ১৮৮ স্ট্রাইক রেটের এক ইনিংসে এলোমেলো করে দিলেন ছন্দে থাকা রংপুর রাইডার্স বোলারদের। তবে তার বিদায়ের পর ঘুরে দাঁড়াল নুরুল হাসান সোহানের দল। সম্ভাবনা জাগিয়েও রাজশাহী পারল না বড় স্কোর গড়তে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩১তম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা রাজশাহী পেয়েছে ৯ উইকেটে ১৭০ রানের পুঁজি। সর্বোচ্চ ৬০ রান এসেছে ইয়াসিরের ব্যাট থেকেই।
কয়েকটি চারের মারে আশা জাগালেও মোহাম্মদ হারিস পারেননি ইনিংস টেনে নিতে। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের শিকার হওয়ার আগে করতে পারেন ১৯ রান। শুরুতে কিছুটা দেখেশুনে খেলা সাব্বির চড়াও হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ওপর। পঞ্চম ওভারে টানা তিন বলে বলে হাঁকান একটি ছক্কা ও দুটি চার।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
এরপর নাহিদ রানাকেও ওড়ান ছক্কায়। ক্রমেই যখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন রংপুরের জন্য, সেই সময়েই তাকে থামান খুশদিল শাহ। তবে তার আগে সাব্বির উপহার দেন ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। তবে ওই ওভারেই রায়ান বার্লকেও ফিরিয়ে রাজশাহীর চাপ বাড়ান খুশদিল।
এরপর কিছুটা কমে যায় রানের গতি। সেটা সচল হয় ইয়াসিরের হাত ধরে। মাহেদি হাসানের এক ওভারে চার ও ছক্কার পর আগ্রাসন দেখান আরেক স্পিনার রাকিবুলের ওভারেই। লং-অন ও ডিপ মিড উইকেট দিয়ে পরপর দুই বলে মেরে দেন দুই ছক্কা। পরের ওভারে সাইফউদ্দিনেরও হয় একই অভিজ্ঞতা।
মাত্র ২৭ বলে ফিফটিতে পা রাখেন ইয়াসির। ফিরতি স্পেলে এসে এক ছক্কা হজমের পর তাকে শেষ পর্যন্ত বিদায় করেন খুশদিল। ডানহাতি এই ব্যাটার তার ৩২ বলের ইনিংস সাজান ৬ ছক্কা ও ২ চারে।
১৬ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৫৩ রান করা রাজশাহীর ইনিংসে লাগাম এরপরই টেনে ধরেন রংপুরের বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেভাবে রানই বের না করতে দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে শিকার করেন উইকেট।
আরও পড়ুন
রঞ্জিতেও হাসল না রোহিতের ব্যাট |
৩১ বলে ৩৪ রানের মন্থর ইনিংসে খেলে রান আউটে কাঁটা পড়েন এনামুল হক। আরও একবার দলকে হতাশ করেন আকবর আলি। নিজের শেষ দুই ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন আকিফ জাভেদ, যা রাজশাহীর জন্য শেষের ঝড় তোলার কাজটা করে তোলে ভীষণ কঠিন। সব মিলিয়ে ২৩ রানে ৩ উইকেট তার নামের পাশে।
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম প্রতিভাবান ও স্টাইলিশ ব্যাটার হিসেবেই বিবেচনা করা হয় তাকে। অবসর নেওয়ার এক দশক পর সেই মাইকেল ক্লার্ক পেয়েছেন দারুনে এক সম্মান। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক।
বৃহস্পতিবার এই সম্মান গ্রহণ করেন ক্লার্ক। অস্ট্রেলিয়ার হল অব ফেমে তিনি ৬৪তম খেলোয়াড়। এই মৌসুমে তালিকায় যুক্ত হবেন আরও দুজন।
ক্লার্কের ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়, যেখানে তিনি ছিলেন অধিনায়ক। তবে ডানহাতি এই ব্যাটার বেশি আলো ছড়িয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটেই। ১১৫ ম্যাচে করেছেন ৮ হাজার ৬৪৩ রান, যা যা তাকে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রানস্কোরারদের তালিকায় রেখেছে ছয় নম্বর স্থানে।
আরও পড়ুন
হল অব ফেমে জায়গা করে নিলেন মাইকেল ক্লার্ক |
মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার ক্লার্ল ওয়ানডেতেও একেবারেই মন্দ ছিলেন না। ৭ হাজার ৯৮১ রানের মাধ্যমে তিনি অজিদের এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি রানস্কোরারদের তালিকায় আছেন চতুর্থ স্থানে।
২০০৪ সালে ভারত সফরে টেস্ট অভিষেকেই হইচই ফেলে দেন ক্লার্ক। ১৫১ রান করে হন ম্যাচ সেরা। এই ভারতের বিপক্ষে ২০১১-১২ মৌসুমে তার ব্যাট থেকে আসে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৩২৯ রান। ষষ্ঠ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার হিসেবে সেবার টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন ক্লার্ক।
টেস্ট অধিনায়ক্ত্ব পান ২০১১ সালে, স্থলাভিষিক্ত হন আরেক অস্ট্রেলিয়া গ্রেট রিকি পন্টিংয়ের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩-১৪ মৌসুমে অ্যাশেজে হোয়াইটওয়াশের নেতৃত্বে দেন ক্লার্ক। অবসরও নেন ইংলিশদের কাছে হেরেই, ২০১৫ সালে।
আরও পড়ুন
বায়ার্ন সেরা ক্লাবের কাতারে নেই, মানছেন কিমিখও |
অধিনায়ক তো বটেই, ব্যাটার হিসেবেই ক্লার্ককে বিবেচনা করা হত সময়ের অন্যতম সেরা হিসেবে। নিজের দিনে প্রতিপক্ষের সেরা সব বোলারদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার বেশ কিছু কীর্তি আছে তার। এমনকি কাঁধে চোট নিয়েও সেঞ্চুরি করে নিজের ব্যাটসম্যানশিপের ছাপ রেখেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততায় দীর্ঘ একটা সময় খেলেননি ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে ভারতের জার্সিতে লাল বলের ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় পেছনে ফেলতে সেখানেই ফিরতে হয়েছে রোহিত শর্মাকে। তবে রঞ্জি ট্রফিতে ফেরার ম্যাচেও যথারীতি ব্যর্থ ভারত অধিনায়ক। এক ডিজিটেই আউট হয়ে দীর্ঘায়িত হল তার রান খরা।
রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের বিকেসি-তে শরদ পাওয়ার একাডেমিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিপক্ষে গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে সকালেই ব্যাট করতে নামেন রোহিত। তবে সবাইকে হতাশ করে টিকতে পারেন মাত্র ১৯ বল, আর রান আসে মোটে তিন।
আরও পড়ুন
অবসর সিদ্ধান্ত কোহলি-রোহিতের ওপরই ছেড়ে দিলেন গম্ভীর |
এর মধ্য দিয়ে অব্যাহত রইল লাল বলের ক্রিকেটে রোহিতের লম্বা সময় ধরে চলা বাজে ফর্ম। গত বছর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচটি টেস্ট টেস্টে মাত্র একটি ফিফটি করেন রোহিত। দশ ইনিংসের চারবার আউট হন এক ডিজিটে।
এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঁচ ইনিংসে তার মাত্র একটি দুই অঙ্কের স্কোর ছিল, যেখানে তিনি পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে অংশ নিয়েছিলেন। অধিনায়ক হলেও শেষ টেস্টে থেকে নিজের নাম সরিয়েও নেন রোহিত।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুম রোহিত শেষ করেন টেস্টে মাত্র ১০.৯৩ গড় নিয়ে। ১৬ ইনিংসে তার এই গড় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০০৬ সালের পর থেকে কমপক্ষে ১৫ ইনিংস ব্যাট করা (শীর্ষ ছয়ে ব্যাট করা) খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন গড়। তার ওপরে আছেন কেবল ইংল্যান্ডের হাসিব হামিদ, ২০১৮ মৌসুমে ১৮ ইনিংসে তার গড় ছিল মাত্র ৯.৪৪।
আরও পড়ুন
রোহিতের চোখে অশ্বিন সত্যিকারের ‘ম্যাচ উইনার’ |
৬ দিন আগে
১০ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৪ দিন আগে