
গত দুই মৌসুম ধরেই বায়ার্ন মিউনিখ পার করছে কঠিন এক সময়। সবশেষ মৌসুম তো তাদের কেটেছে কোনো শিরোপা ছাড়াই। চলতি মৌসুমে বুন্দেসলিগা জেতার দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে নেই খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে। বুধবার রাতে ডাচ ক্লাব ফেয়ুনুর্দে কাছে হেরে সেরা আটে জায়গা পাওয়ার সুযোগ প্রায় শেষ হয়ে গেছে তাদের। দলের এমন পারফরম্যান্সে ম্যাচ শেষে হতাশা প্রকাশ করেছেন দলটির মিডফিল্ডার জশয়া কিমিখ।
এদিন বলের দখল কিংবা গোলের সুযোগ তৈরি সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। ৮০ শতাংশ বলের দখল ছিল ভিনসেন্ট কোম্পানির দলের। ৯ টি সহজ সুসোগ তারা হাতছাড়া করেছে তারা। অন্যদিকে ফেয়ুনুর্দ তিন শট নিয়ে সবগুলোই জালে পাঠিয়েছে। তাতেই ধরা দিয়েছে ৩-০ গোলের দারুণ এক জয়। আর তাতে পয়েন্ট টেবিলের ১১ নম্বরে উঠে এসেছে তারা।
আরও পড়ুন
| ব্রাজিল কিংবদন্তির গোলের রেকর্ড ভাঙতে চান ভিনিসিয়ুস |
|
অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে বায়ার্নের অবস্থান ১৫ নম্বরে। দলের এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স নিয়ে ম্যাচ শেষে হতাশা ঝড়ে পড়ল কিমিখের কণ্ঠে।
“আমাদের এটার স্বীকার করে নিতে হবে যে, আমরা বর্তমানে সেরা দলগুলোর মধ্যে নেই। তবে দলের মধ্যে এখনো একতা আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমরা বাজে অবস্থায় আছি। আমরা অনেক ভুল করছি, যার শাস্তিও পাচ্ছি মাঠে। ম্যাচ হারায় নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে, তবে আমাদের এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
আর একের পর এক গোল মিস করায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বায়ার্ন কোচ কোম্পানি।
“সত্যি বলতে ফেয়ুনুর্দ জয়টার দাবীদার। তারা বেশ ভালো লড়াই করেছে ম্যাচজুড়ে। আমরা অনেকগুলো সুযগ তৈরি করেছি। কয়েকটা গোল করতে পারতাম। আমরা না পারলেও তারা ঠিকই সেটা কাজে লাগিয়েছে।”
No posts available.
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৩ এম
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৯:০৯ এম
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৮ এম

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলন। গতকাল থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের জন্য নতুন একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো। এই প্রতিযোগিতার নাম হবে ‘ফিফা আসিয়ান কাপ’।
নতুন টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়ে ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফিফা আসিয়ান কাপের মাধ্যমে আমরা দেশগুলোকে একত্রিত করছি। এই প্রতিযোগিতা বিশাল সাফল্য বয়ে আনবে। এটি আসিয়ান অঞ্চলের জাতীয় দলের ফুটবলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমাদের খেলাধুলার বিকাশে সহায়ক হবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইতোমধ্যেই আয়োজিত হচ্ছে আসিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টের সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন ভিয়েতনাম। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় শিরোপা জেতে ভিয়েতনাম।
ইনফান্তিনো জানান, নতুন এই টুর্নামেন্টটি ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচ উইন্ডোর সময় অনুষ্ঠিত হবে, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন লিগের খেলোয়াড়রা তাদের জাতীয় দলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
সবশেষ পূর্ব তিমোর আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের ১১তম সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে। ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফুটবলবিশ্বে ১১ একটি প্রতীকী সংখ্যা, কারণ প্রতিটি দলের ১১ জন খেলোয়াড় থাকে।’
২০২৬ সালের বিশ্বকাপের মহাদেশীয় বাছাইপর্বে তৃতীয় রাউন্ডের পর একমাত্র আসিয়ান দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এগিয়ে ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেনি দেশটি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নতুন এই টুর্নামেন্টটি আরব কাপের ফরম্যাটে আয়োজিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিফা জানিয়েছে, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সবকিছু চূড়ান্ত করবে তারা।

ম্যাচের আগেই আভাস ছিল এমন কিছুর। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। দুই দলের ফুটবলারদের তেড়েফুঁড়ে আসা, বিবাদে জড়ানোর মতো ঘটনা এল-ক্লাসিকোর পুরোনো দিনের আমেজই যেন ফিরিয়ে এনেছে।
বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ দ্বৈরথে এবার আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়ানোর কাজটা করেন লামিনে ইয়ামাল। ‘রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে এরপর অভিযোগও করে’ তাঁর এমন মন্তব্যে তেতে ওঠে মাদ্রিদ শিবির। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সা উইঙ্গার ইয়ামালের দিকে তেড়ে গিয়ে সেই ক্ষোভই বুঝি উগরে দিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-দানি কার্ভাহালরা।
বিবাদে জড়িয়ে পড়েন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার কোর্তোয়াও
লা লিগায় গতকালের ম্যাচটি কিলিয়ান এমবাপে ও জুড বেলিংহামের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন পেদ্রি। আর তাতেই ডাগ-আউটে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
রেফারির ম্যাচ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজতেই সেই উত্তেজনা রূপ নেয় বাক-বিতণ্ডা, হাতাহাতি, আর ধাক্কাধাক্কিতে। রিয়ালের ফুটবলারদের ক্ষোভটা ছিল মূলত ইয়ামালের ওপর। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় ইয়ামাল যখন হেঁটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন তাঁকে হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু বলছেন কার্ভাহাল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, রিয়ালের রাইট ব্যাক কার্ভাহাল ইয়ামালকে বলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো। এখন বলো দেখি!’ তখন ইয়ামাল কার্ভাহালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে থামিয়ে দেন রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
আক্রমণাত্মক আর মারমুখি ভঙ্গিতে দেখা যায় ভিনিসিয়ুসকে। সতীর্থ সহ অনেকেও আটকাতে পারছিলেন না ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে। নিজের জাতীয় দলের সতীর্থ রাফিনিয়ার দিকেও তেড়ে যান ভিনি। ওই সময় ভিনিসিয়ুস নাকি ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
ম্যাচ শেষে এমন উত্তেজনা নিয়ে বার্সার মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি ইয়ং বলেন, ‘আমি মাঠে ছিলাম, হঠাৎ দেখলাম অনেক খেলোয়াড় এবং স্টাফ জড়ো হয়েছে। ম্যাচ যখন শেষ হলো তখন মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা লামিনের দিকে দৌড়ে গেল। আমার কাছে এটা কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে।’
ব্রাজিলের জাতীয় দলের সতীর্থকে থামাতে নেমে পড়েন রাফিনিয়াও
ডাচ মিডফিল্ডার কারভাহাল ও ইয়ামালের মধ্যে কথার লড়াই নিয়ে বলেন, ‘যেহেতু তুমি (কারভাহাল) লামিনের সতীর্থ (স্পেন দলের), তুমি তো তাকে চেন এবং যদি মনে করো তাঁর এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি, তাহলে তুমি তাকে কল করতে পারতে, মাঠে এমনটা করার বদলে।’
অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসোর কাছে এসব স্বাভাবিকই মনে হয়েছে, ‘যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আমার মনে হয় না আমাদের এখান থেকে বেশি অর্থ খুঁজে বের করা উচিত। এটা ফুটবল। আর এল-ক্লাসিকোর মতো ম্যাচে এসব হবেই।’
বিপরীতে বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ মাঠের খেলাতেই মনোযোগ দিতে বলছেন, ‘সত্যি বলতে, আমি বুঝতে পারিনি কি ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত বেঞ্চের মধ্যে অনেক লোক চিৎকার করছিল, তবে আমার মনে হয় আমাদের খেলার দিকে মনোযোগ দেওয়াই উচিত।’
ম্যাচ পরবর্তী দুই দলের বাক-বিতণ্ডায় জড়ানোর ঘটনায় ৬ জনকে হলুদ কার্ড এবং একজনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। রিয়ালের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও আর বার্সেলোনার ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে । সরাসরি লাল কার্ড দেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার আন্দ্রে লুনিন।

এল ক্লাসিকোর মতো দ্বৈরথে কথার লড়াইয়ের সঙ্গে খানিকটা শরীরি লড়াই থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সময়কার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি দুই ক্লাবের ফুটবলাররা তো প্রায়ই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ত। লামিনে ইয়ামাল-কিলিয়ান এমবাপে যুগের দ্বৈরথেও দেখা গেল আগের সেই উত্তাপ।
বার্সেলোনার বিপক্ষে টানা চার ম্যাচে হারের পর অবশেষে গতকাল রাতে জয়ের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। জুড বেলিংহাম ও এমবাপের গোলে লা লিগায় ২-১ গোলে জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করে জাবি আলোনসোর দল। ম্যাচে রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ইয়ামালের ওপরই যত ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায় রিয়ালের খেলোয়াড়দের।
প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের এমন আচারণ মোটেও ভালো লাগেনি বার্সার সহকারী কোচের। লাল কার্ডের কারণে নিষেধাজ্ঞায় থাকা প্রধান কোচ হান্সি ফ্লিকের অনুপস্থিতিতে ডাগ-আউট সামলান কাতালান ক্লাবটির সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইয়ামালের পারফরম্যান্সের সঙ্গে ম্যাচে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন
| থাইল্যান্ডে কঠিন চ্যালেঞ্জে বাস্তববাদী বাংলাদেশ |
|
মার্কাস সর্গ বলেন, ‘ইয়ামালের জন্য কঠিন এক দিন ছিল এটা। সে শুধু দর্শকের বিদ্রুপ আচরণেরই শিকার হয়নি বরং রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের আচরণও ছিল কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ।’
ম্যাচটিতে উত্তেজনা সৃষ্টির মশলা আগেই ছিটিয়ে দিয়েছিল ইয়ামালের একটি মন্তব্য। একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম বার্সা তারকা বলেছিলেন, ‘রিয়াল চুরি করে এরপর অভিযোগও করে’। প্রতিপক্ষের ফুটবলারের এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ সৃষ্ঠি হয় রিয়ালের ফুটবলারদের মধ্যে। ম্যাচ শেষে লস ব্লাঙ্কোদের রাইট ব্যাক দানি কার্ভাহাল, থিবো কোর্তোয়া ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে তেড়ে আসতে দেখা যায় ইয়ামালের দিকে।
মাঠেও ইয়ামালকে ভালোভাবেই সামলেছেন রিয়ালের ফুটবলাররা। গত মৌসুমের এল ক্লাসিকোতে দুর্দান্ত পারফরম্যন্সে দলের জয়ে অবদান রাখলেও গতকাল নিষ্প্রভ ছিলেন ইয়ামাল। গোলের তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেননি ১৮ বছর বয়সী উইঙ্গার। সর্গ মনে করেন, বার্নাব্যুর প্রতিকূল পরিবেশ ইয়ামালের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে, ‘হয়তো কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। কারণ ও এখনো শিখছে কিভাবে দর্শকের আওয়াজ, শ্লেষ—এসব সামলাতে হয়। এটা শেখার অংশ। তবে সাধারণত ও অনুপ্রাণিত থাকে এবং ভালো খেলে, আজকের দিনটা তার জন্য কঠিন ছিল।’
তরুণ উইঙ্গারের জন্য সমর্থন চেয়ে সর্গ বলেন, ‘ইয়ামাল ইনজুরি থেকে ফিরেছে, ওর ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে সময় লাগবে। আরও বড় ম্যাচে খেলে ছন্দ ফিরে পাওয়া দরকার। ওর বয়স মাত্র ১৮, তাই সময় দিতে হবে, সহায়তা করতে হবে—আমরা সবাই সেটা করব।’

প্রায় এক যুগ পরের দেখাতেও জয় অধরা। ৯-০ গোলে হারের ব্যবধানই কেবল কমাতে পেরেছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় দেখায় আফিদা খন্দকারদের পরাজয় ছিল ৩-০ গোলে।
পরপর দুটি সাফ শিরোপা জেতা এবং প্রথমবারের মতো এএফসি এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করা ঋতুপর্ণা চাকমাদের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশা বেড়েছে কয়েকগুণ। হাসিমুখে মাঠ ছাড়ার অভ্যাসটাও তো এই মেয়েরাই শিখিয়েছে; সেখানে লাল-সবুজের সমর্থকেরা আর পরাজয় মেনে নেবেনই বা কেন? তবে আফিদাদের কোচ পিটার বাটলার বুঝিয়ে দিয়েছেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের মেয়েদের ফারাকটা কোথায়।
শক্তিশালী থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি ম্যাচে আজ মাঠে নামছেন আফিদা খন্দকাররা। ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন প্রশ্ন রাখা হয়েছিল ব্রিটিশ কোচের কাছে— থাই মেয়েদের হারানো সম্ভব কি না। বাটলারের পাল্টা প্রশ্ন— থাইল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ কবে জিতেছিল বাংলাদেশ?
প্রথম ম্যাচে শুক্রবার বাংলাদেশকে হারিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিয়েছে থাইল্যান্ড। সেদিনের প্রতিপক্ষের একাদশ দেখে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কোচ। তাঁর কাছে মনে হয়েছে স্বাগতিকদের বেঞ্চ আরও শক্তিশালী। যে কারণে আজকের ম্যাচে আরও সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন দলকে, ‘আমরা থাইল্যান্ডের লেভেলে নেই। তাঁরা খুবই ভালো দল এবং সেটা তাঁরা দেখাবেও। ওরা সম্ভবত পুরো ভিন্ন এক দল মাঠে নামাবে (আজ)। অনেক সময় বেঞ্চ দেখে দলের শক্তি বোঝা যায়। তাঁদের বেঞ্চ দেখে মনে হলো এখানে আরেকটা দল বসে আছে। তাই আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে।’
মাঠের লড়াইয়ে নেমে যে কোনো দলের বিপক্ষেই এখন জয় ছিনিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ। আজও সেই আশা আছে, কিন্তু বাস্তবতাও যে কঠিন—তাও মাথায় আছে বাংলাদেশ কোচের,
‘শেষবার যখন বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে খেলেছিল, তখন ৬ কিংবা ৭-০ (আসলে ৯-০) গোলে হেরেছিল মনে হয়। তবে হ্যাঁ, আমরা জিততে চাই।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাইল্যান্ড। দু’বার বিশ্বকাপ খেলেছে দলটি। তাঁদের বিপক্ষে উচ্চাশা না করলেও আগের ম্যাচের ভুল শুধরে চ্যালেঞ্জে ফেলার সাহস অবশ্য করছেন এই ব্রিটিশ কোচ, ‘আমরা সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। কিছু কিছু জায়গায় ঘাটতি রয়েছে, সেটা পূরণ করতে হবে। আগের ম্যাচে আমরা মৌলিক কিছু ভুল করেছি— যেমন প্রথম ৪৫ সেকেন্ডে গোল হজম করা; আর তা সবসময় পাহাড়সম চাপ বয়ে আনে।’

প্রায় ৭৮ হাজার দর্শকে গমগমে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। একে তো তিল ধারণেরও ঠাঁই নেই, তার ওপর ‘রিট্র্যাক্টেবল রুফ’ ব্যাপারটি করে তোলে আরও মোহনীয়। আজ রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার ঐতিহ্যের লড়াই-এল ক্লাসিকো’র পরতে পরতে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। শুরু-শেষের এই উপখ্যানের বিজেতা অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ।
ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে ২০২৫-২৬ মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো জিতে নিল জাবি আলোনসোর দল। লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে গোল দুটি করেন কিলিয়ান এমবাপে ও জুড বেলিংহাম। কাতালানদের গোলটি ছিল ফারমিন লোপেজের পা থেকে।
বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচে বল পজিশনে ঢের এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। প্রায় ৬৮ শতাংশ বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তারা। তবে যে কাজটি অতিপ্রয়োজন-গোলমুখে শট এবং গোল আদায়, সেটিতে মুনশিয়ানা দেখিয়েছে স্বাগতিকরা। দু’দল গোলের জন্য একে অন্যের দিকে শট নিয়েছে ৩৮টি।
২৩টির মতো শট নিয়ে ১০টি গোলমুখে রেখে দুটি গোল আদায় করে রিয়াল। ন্যু ক্যাম্প যোদ্ধারা ১৫টি শট নিয়ে গোলমুখে রাখে ১৫টি। যেখানে ২৩টি ছিল কিলিয়ান এমবাপে-ভিনিসিয়ুস জুনিয়রদের। বড় সুযোগ পেয়েও মিস করে দু’দল। বিশেষ করে বার্সার হাইলাইন ডিফেন্সের খপ্পরে পড়ে অন্তত তিনটি গোল মিস করে স্বাগতিক দল।
এদিন মাত্র আড়াই মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয় রিয়াল মাদ্রিদের। মিডফিল্ড থেকে ছুটে আসা বল নিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে বক্সে ঢুকে পড়েন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। শট নেওয়া মুহূর্তে লামিন ইয়ামালের পায়ের সঙ্গে জড়িয়ে যায় ব্রাজিল ফরোয়ার্ডের পা। পেনাল্টি চেকের পর সিদ্ধান্ত যায় বার্সেলোনার পক্ষে। বড় বাঁচা বেঁচে যায় হ্যান্সি ফ্লিকের দল।
১২মিনিটে আবারও বিপদে পড়ে অতিথি দল। দূর থেকে কিলিয়ান এমবাপের চিপ শট গোলকিপার ভয়েচেখ সেজনির মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে জড়ায় জালে। যদিও পরোক্ষণে অফসাইটে বাতিল হয় গোল।
কিলিয়ান এমবাপে করেছিলেন শুরুটা। লা লিগার ফরাসি স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা এখন ১১সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আজও তুলনামূলক হাইলাইন ডিফেন্স ধরে রেখে খেলে দু’দল। বিশেষ করে ১২তম মিনিটে এমবাপের গোলটি বাতিল হয় অফসাইটে কারণে। গত মৌসুমের সবশেষ এল ক্লাসিকোতে সর্বমোট আটবার অফসাইটের শিকার হয়েছিলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। ২২ মিনিটে ঠিকই গোল আদায় করেন এমবাপে। অবদানটা অবশ্য ছিল সবশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রিয়ালের ত্রাণকর্তা জুড় বেলিংহামের। ইনজুরি থেকে ফেরা এই ফরোয়ার্ড মধ্যমাঠ থেকে বল পাঠান ফরাসি সেন্টার ফরোয়ার্ড বরাবর। সেখান থেকে জাল কাঁপান এমবাপে। লা লিগার এটি তার ১১তম গোল।
৩৪ মিনিটে আরও একবার বিপদে পড়ে বার্সেলোনা, বিশেষ করে সেজনি। পোলান্ডের এই তারকাকে আবারও ভ্রমে ফেলার চেষ্টা করেন এমবাপে ও ভিনি। তবে বুদ্ধিদৃপ্ত উপায়ে সামাল দেন তিনি।
প্রায় ৭৮ হাজার দশর্কদের উদ্দেশ্য করে বেলিংহাম হয়তো বলেছেন, আরও জোরে। আজ আমাদেরই দিন, বৃত্ত ভাঙার দিন৩৮ মিনিটে চাপে থাকা বার্সেলোনাকে দু’দণ্ড শান্তি এনে দেন ফেরমিন লোপেজ। ডান প্রান্ত হয়ে অ্যাটাকের পসরা সাজায় অতিথিরা। প্রেদির বাড়ানো বল পৌঁছে রাশপোর্ডের কাছে। ডি বক্সে থাকা লোপেজ আলতো শটে সেটাকে গোলে পরিণত করেন। ২২ বর্ষী স্পেনিয়ার্ড আগের ম্যাচে (চ্যাম্পিয়নস লিগ) ম্যাচে পেয়েছিলেন হ্যাটট্রিক। অলিম্পিকোসের পর এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষেও দলের ডেডলক ভাঙেন।
প্রথমার্ধ তিন মিনিট আগে পুনরায় লিড নেয় লস ব্লাঙ্কোসরা। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে সোজা বার্সার বক্সের কাছে ঢুকে পড়েন মিলিতাও। এরপর সেখান থেকে লং পাসে বল পাঠান জালের সামনে। আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা ইংলিশ ফরোয়ার্ড বেলিংহাম সুযোগ সদ্ব্য ব্যবহার করেন।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে আবারও অফসাইটের ফাঁদে পড়েন এমবাপে। দ্বিতীয়বারে মতো তার গোল বাদ পড়ে। ছোট পাস ধরে বল জালে জড়িয়েও আগের মতো নিজে হতাশ হন, দলকেও হতাশ করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিগুণ চাপে পড়ে যায় বার্সা। স্পট কিক থেকে গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করা ছাড়াও ৫৮ মিনিটে এদের মিলিতাও একাই গোলবারে ঢুকে পড়েন অতিথি বক্সে। তবে ডি ইয়ংয়ের বাঁধার মুখে পড়ে যান তিনি। তাতে শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি বল।

আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচের ৭২ মিনিটে লেফট উইঙ্গার ভিনিকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। তার বদলি হিসেবে রদ্রিকে নামানো হয়। এতে বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন ব্রাজিল প্লে-মেকার। বেঞ্চে বসতে গিয়েও কোচ জাবি আলোনসোর ওপর রাগ ঝাড়েন তিনি। একই সময় অবশ্য ভালভার্দেকে তুলে কারভাহাল নামানো হয় মাঠে।
চোট কাটিয়ে ফেরা জুড বেলিংহাম আরও অপ্রতিরোধ্য। বার্সা কফিনে শেষ পেরেকটি ছিল তাঁরইদুই মিনিট পর জোড়া সাবস্টিটিউ করে বার্সেলোনা। এরিক গার্সিয়াকে ফেরেন তোরেসের বদলে নামানো হয় মার্ক রোনাল্ড রোনাল্ড আরাউহো ও মার্ক কাসাদোকে। বদলির এই খেলায় পড়ে যান কিলিয়ান এমবাপে ও জুড বেলিংহাম।
শেষ দিকে গোলের মোহে আচ্ছন্ন থাকা কাতালানরা বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে। তবে দ্বিগুণ আক্রমণ যেন ফিরিয়ে দিচ্ছিল স্বাগতিকরা। এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে বক্সের সামনে ফাউল করলে বরং বিপত্তি বাড়ে। স্পট কিক থেকে রদ্রিগোর গোল থেকে আরও একটি গোল পেতে পারতো রিয়াল। যদিও ব্রাজিল লেফট উইঙ্গারের ডানপাশের তীব্রগতির শট রুখে দেন কোর্তোয়া।
ম্যাচের শেষ মুর্হূতে পেদ্রির দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের পর তর্কে জড়িয়ে পড়েন রিয়াল-বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। এল ক্লাসিকোতে একটু আধটু উত্তেজনা ছড়াবে না, তা কি করে হয়!
শেষদিকে পেদ্রির দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে মাঠ ছাড়া নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। সব চুকিয়ে এল ক্লাসিকোতে হারের বৃত্ত ভাঙল রিয়াল মাদ্রিদ। একই সঙ্গে লা লিগায় শীর্ষস্থান আরও পাকা করলো রিয়াল। ১০ ম্যাচে লস ব্লাঙ্কোদের পয়েন্ট ২৭। দ্বিতীয়তে থাকা বার্সার ২২।