টানা ৮ ম্যাচে সবার আগে নিশ্চিত হয়ে গেছে প্লে-অফ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের শেষ ম্যাচের পর মাঝের বিরতিতে তাই রংপুর রাইডার্স ঘুরে এসেছে রংপুরে। এবার মাঠে ফেরার পালা। চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে দলটির প্রতিপক্ষ অধারাবাহিক দুর্বার রাজশাহী। এই লড়াইয়ে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
ম্যাচ খেললেও সোহানের কিপিং করার সম্ভাবনা কমই এই ম্যাচে। এই কারণেই একাদশে জায়গা পেয়েছেন ইরফান শুক্কুর। যিনি রংপুরের শেষ ম্যাচে সোহান চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর বদলি ফিল্ডার হিসেবে নেমে পালন করেন কিপিংয়ের দায়িত্ব। এটি ছাড়া রংপুর একাদশে উল্লেখযোগ্য বিষয় সৌম্য সরকারের না থাকা। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার খুব কাছাকাছি থাকলেও আরও কয়েকটি অপেক্ষা করতেই হচ্ছে অভিজ্ঞ এই ওপেনারকে।
আরও পড়ুন
৮ ম্যাচ পর পরাজয়, সোহান দেখছেন সতর্কবার্তা হিসেবে |
![]() |
৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে ছয়ে আছে দুর্বার। নতুন অধিনায়ক তাসকিন আহমেদের জন্য এই ম্যাচটা চ্যালেঞ্জের। কারণ, গত ম্যাচে তার দল হেরেছে বিশাল ব্যবধানে। মাঠে ও মাঠের বাইরের নানা বিষয়ে দলটি বারবার আলোচনায় এসেছে ভুল কারণে। শক্তিশালী রংপুরের বিপক্ষে তাই নিজেদের মেলে ধরার দারুণ সুযোগ দলটির সামনে।
রংপুর রাইডার্স একাদশ : স্টিভেন টেলর, সাইফ হাসান, ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, নুরুল হাসান (অধিনায়ক), ইরফান শুক্কুর, মাহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আকিফ জাভেদ, নাহিদ রানা, রকিবুল হাসান।
দুর্বার রাজশাহী একাদশ : মোহাম্মদ হারিস, এনামুল হক, রায়ান বার্ল, ইয়াসির আলী, আকবর আলী, সাব্বির হোসেন, এস এম মেহেরব, তাসকিন আহমেদ (অধিনায়ক), সানজামুল ইসলাম, মোহর শেখ, শফিউল ইসলাম।
No posts available.
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮:০২ পিএম
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৭৯ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। উইন্ডিজের বিপক্ষে আগের বড় জয়টি ছিল ১৬০ রানের, ২০১২ সালে খুলনায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখির আগে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে টানা চারটি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। সেই ধারা ভাঙলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ক্যাপ্টেন্সিতে প্রায় ১৯ মাস পর ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। এর আগে সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল লাল সবুজ দল।
আজ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ জানান, জয়ের সাফল্য দলীয় হয়ে যায়। আর হারলে দায় অধিনায়কের ওপরই পড়ে।
মিরাজ বলেন,
‘আমাকে যখন অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন আমাদের টিমের অবস্থান ছিল দশ নম্বরে। এখনো দশেই আছি। মাঝপথে অনেক ম্যাচ হেরেছি। কিন্তু দিনের শেষে যদি টিম ফলাফল না করতে পারে, স্পষ্টতই ক্যাপ্টেনের ওপরেই আসে। আর টিম যখন ভালো খেলে, তখন অবশ্যই দল একত্রিত হয়ে খেলেছে বলে পারফরম্যান্স হচ্ছে।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক আরও বলেন,
‘অধিনায়ক হিসেবে অনেক দূর এগোতে হবে, অনেক বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে। হয়তো এখন আমি অধিনায়ক, ভবিষ্যতে অন্য কেউ আসবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করি এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে সিরিজ শুরুর পর বাকি দুই ম্যাচেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন রিশাদ হোসেন। সব মিলিয়ে ১২ উইকেট নিয়ে তিনিই জিতলেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। একইসঙ্গে ঘুচিয়ে দিলেন বাংলাদেশের দশ বছরের একটি অপেক্ষা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে সমান তালে পারফর্ম করেন রিশাদ। শেষ ম্যাচে হাসেনি তার ব্যাট। তবে বোলিংয়ে ঠিকই নেন ৩ উইকেট। সিরিজে ব্যাট হাতে ৬৮ রানের সঙ্গে বল হাতে তার শিকার ১২ উইকেট।
রিশাদের ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ১০ বা এর বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক সিরিজের তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন তরুণ কাটার মাস্টার।
মাঝের ১০ বছরে বাংলাদেশের আর কোনো বোলার দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ১০ উইকেট নিতে পারেননি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন রিশাদ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্পিনারদের মধ্যে এটিই সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
পরে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে ১৪ বলে ৩৯ রানের পর বোলিংয়ে তার শিকার ৪২ রানে ৩ উইকেট। শেষ ম্যাচে ৫৪ রান খরচ করে আবার নেন ৩ উইকেট।
তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ১০ বা এর বেশি উইকেট নেওয়া পঞ্চম বোলার রিশাদ। তার আগে মাশরাফি বিন মর্তুজা (১২), আল আমিন হোসেন (১০), আরাফাত সানি (১০) ও মোস্তাফিজের (১৩) আছে এই কীর্তি।
যে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ১০ বা এর বেশি উইকেট নেওয়ার ঘটনা আছে ১৪টি। ভিন্ন ৪টি সিরিজে এই কীর্তি আছে আব্দুর রাজ্জাকের। এছাড়া মাশরাফি ও সাকিব আল হাসান একাধিকবার ১০ বা এর বেশি উইকেট নিয়েছেন।
২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টিতে ফেরার অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হয়েছে ডেভিড মিলারের। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিলো ‘কিলার মিলার’ খ্যাত এই মারকুটে ব্যাটারের। অনুশীলনের সময় ডান পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি। মিলার সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।
আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়া ক্রিকেট বোর্ডের ঘোষিত টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে দেবেন অলরাউন্ডার ডোনোভান ফেরেইরা এবং ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে থাকবেন ম্যাথু ব্রিটজকে।
সাদা বলের সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন পেসার জেরাল্ড কোয়েটজে। তার বদলি হিসেবে ডাক পেয়েছেন অটনিয়েল বার্টম্যান। টি-টোয়েন্টি দলের নতুন মুখ টনি ডি জর্জি।
রাওয়ালপিন্ডিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ২৮ অক্টোবর। এরপর ৪ নভেম্বর ফয়সালাবাদে শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
টি-টোয়েন্টি দল: করবিন বশ, ম্যাথু ব্রিটজকে, টনি ডি জর্জি, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, নান্দ্রে বার্গার, কুইন্টন ডি কক, ডোনোভান ফেরেইরা (অধিনায়ক), রেজা হেনড্রিকস, জর্জ লিন্ডে, লুঙ্গি এনগিদি, এনকাবা পিটার, লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস, আন্দিলে সিমেলানে, লিজাদ উইলিয়ামস, অটনিয়েল বার্টম্যান।
ওয়ানডে দল: ম্যাথু ব্রিটজকে (অধিনায়ক), করবিন বশ, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, নান্দ্রে বার্গার, কুইন্টন ডি কক, টনি ডি জর্জি, ডোনোভান ফেরেইরা, বিয়র্ন ফোর্টুইন, জর্জ লিন্ডে, লুঙ্গি এনগিদি, এনকাবা পিটার, লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস, সিনেথেম্বা কেশিলে, অটনিয়েল বার্টম্যান।
নারী বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়ছে ভারত। নাভি মুম্বাইয়ে আজ খেলতে নেমে একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন ভারত দলের দুই ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও প্রতিকা রাওয়াল। দুইজনই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ওপেনিং জুটিতে রান তুলেছেন ২১২।
বৃষ্টির কারণে খেলা এক ওভার কমিয়ে আনা হয়। আম্পায়ারের বেঁধে দেওয়া ওভারে (৪৯) ৩ উইকেটে ৩৪০ রান তুলেছে ভারত। এই রান তুলতে গিয়ে দলকে প্রায় দশের অধিক রেকর্ড উপহার দিয়েছেন দুই ওপেনার।
দ্রুত এক হাজার প্রতিকার
ডিভাইনের বল ফ্রন্টফুটে এসে মিড উইকেট দিয়ে নান্দনিক একটি শটে বাউন্ডারি আদায় করে নেন প্রতিকা রাওয়াল। তাতেই এক হাজার রান স্পর্শ করেন এই ভারতীয় ওপেনার। মাত্র ২৩ ইনিংসে এই কীর্তি গড়েন প্রতিকা। অস্ট্রেলিয়ার লিন্ডসে রেলের সঙ্গে যুগ্মভাবে তালিকায় লেখা হয়েছে ভারতীয় ব্যাটারের নাম।
২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল প্রতিকার। বছর ঘোরার আগেই মাইলস্টোন গড়লেন তিনি।
সেঞ্চুরিতে মেগ ল্যানিংয়ের অতি নিকটে স্মৃতি
একদিনের ক্রিকেটে সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক মেগ ল্যানিং। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৫টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তার অতি নিকটে স্মৃতি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর সেঞ্চুরিটি ক্যারিয়ারের ১৪তম। নামের পাশে ৩৪টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে ভারতীয় ওপেনারের।
একবছরের সর্বাধিক সেঞ্চুরি স্মৃতির
স্মৃতি ২০২৪ সালে মোট সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ৪টি। এ বছর সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছেন। তাজমিন ব্রিটসের সঙ্গে যুগ্মভাবে এক ক্রিকেটীয় ক্যালেন্ডারে ৫টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি।
স্মৃতির ছক্কার রেকর্ড
ওয়ানডে ক্রিকেটে এক বছরের ক্যালেন্ডারে সর্বোচ্চ ছক্কা এখন ভারতের ওপেনার স্মৃতি মান্ধানার। বাঁ-হাতি এই ব্যাটার সেঞ্চুরি কালে মোট ছক্কা মেরেছেন ৪টি। এক বছরের তার ছক্কার পরিমাণ ২৯টি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার লিজলে লিকে ছাড়িয়ে গেছেন। ২০১৭ সালে ২৮টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটার। এবার তাঁকে ছাড়িয়ে গেছেন স্মৃতি।
ওপেনিং জুটির শতোর্ধ্ব পার্টনারশিপের রেকর্ড
নারীদের একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে এ নিয়ে সাতবার শতোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন স্মৃতি ও প্রতিকা। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১২ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তার আগে ইনিংসের ১৮তম ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করেন তাঁরা। স্মৃতি-প্রতিকার ৭টি শতোর্ধ্ব জুটির পেছনে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৩ ইনিংস। তাঁদের ওপরে কেবল অস্ট্রেলিয়ার বেলিন্ডা ক্লার্ক ও লিসা জুটি। ৬৬ ইনিংস খেলে ১০ বার শতোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েছেন তাঁরা।
এক বছরে শতোর্ধ্ব রানের জুটি
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সাবেক দুই ওপেনার বেলিন্ডা ক্লার্ক ও লিসা কেইটলি এক ক্রিকেটীয় ক্যালেন্ডারে ৫ বার শর্তোধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন। ২০২৫ সালে তাঁদের স্পর্শ করেছেন স্মৃতি ও প্রতিকা। বছরের এখনো দুই মাস বাকি। তার আগেই ভারতীয় দুই ওপেনার ৫ বার শর্তোধ্ব রানের জুটি পার করেছেন।
দেড়শ রানের জুটি
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার ইনিংস খেলাকালে আরও একটি কীর্তি গড়েছেন স্মৃতি ও প্রতিকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ওপেনিং জুটিতে ১৫০ রানের জুটি পার করেছেন দুইজন। এর আগে রেকর্ডটি ছিল কেবল অস্ট্রেলিয়ার রাসেল হেইন্সে ও এলিসা হিলি এবং বেলিন্ডা ক্লাস ও লিসার।
২০০ রানের জুটি
৫০, ১০০, ১৫০ রানের পর ওপেনিং জুটি ২০০ রানে টেনে নেন স্মৃতি-প্রতিকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে এ নিয়ে ২০০ ঊর্ধ্ব জুটি হয়েছে চার বার। ১৩তম আসরে সে কীর্তিতে নাম লেখালেন স্মৃতি ও প্রতিকা। দলীয় ২১২ রানে স্মৃতি সাজঘরে ফিরলে বড় এই জুটির পতন হয়। কিন্তু যাওয়ার আগে দারুণ সব রেকর্ড মাড়িয়ে যান তিনি।
নারী-পুরুষ মিলিয়ে এক ক্রিকেটীয় ক্যালেন্ডারে জুটির রেকর্ড
এক ক্রিকেটীয় ক্যালেন্ডারে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলীর। ১৯৯৮ সালে দুজন মিলে ১৬৩৫ রান করেছিলেন। দ্বিতীয়স্থানে স্মৃতি-প্রতিকা। চলতি বছরে ১৫৫৭ রান করেছেন ভারতের দুই ওপেনার। তালিকায় তৃতীয়তে রোহিত শর্মা-শুবমান গিল জুটি। ২০২৩ সালে ১৫২৩ রান করেছিলেন দুই ওপেনার।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাস সর্বোচ্চ ১০টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ভারতের নারীরা। আজ দুই সেঞ্চুরির আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ডের পাশে ছিলেন তাঁরা। দলকে সর্বোচ্চ স্থানে এনে দেন স্মৃতি ও প্রতিকা।
গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের অক্টোবর, প্রিয় ফরম্যাটে এই এক বছর কী দুর্বিষহ চিত্রই না ছিল বাংলাদেশের। আফগানিস্তানের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১-২ এ হার দিয়ে শুরু, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে স্বাগতিকদের কাছে ০-৩, শ্রীলংকা সফরে ১-২ এর পর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে আফগানিস্তানের কাছে ০-৩ এ হার!
টানা ৪টি ওডিআই সিরিজ হারের পর হারের বৃত্ত ভেঙ্গেছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের ওডিআই ইতিহাসে রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়টি সূচিত হয়েছে বুধবার রাতে। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৩ রানের জয়কে উপরে রেখে ১৭৯ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ২-১এ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে মিরাজের দল। মিরপুরে বাংলাদেশ নিজেদের ১০৬তম ম্যাচে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়টাও দেখলো বুধবার রাতে।
দীর্ঘদিন পর ওপেনিং জুটি ফিরে পেয়েছে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ১০৬তম ওডিআই ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে করেছে ১৭৬ রান। সৌম্য-সাইফ হাসান জুটির ১৭৬ এই ভেন্যুতে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ওপেনিং পার্টনারশপে সর্বোচ্চ। ১১ বছর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ইমরুল কায়েস-এনামুল হক বিজয়ের ১৫০-কে টপকে গেছেন সৌম্য-সাইফ। ঢাকায় ওডিআই ক্রিকেটে অপি-বিদ্যুতের ১৭০ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপকেও আনতে হচ্ছে সামনে। ২৬ বছর আগে মেহরাব হোসেন অপি'র হাত ধরে ওডিআই ক্রিকেটে বাংলােদেশের প্রথম সেঞ্চুরির সেই রেকর্ডের ম্যাচে শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের সঙ্গে ১৭০ রানের সেই পার্টনারশিপটা ছিল ঢাকা স্টেডিয়ামে।
প্রথম ২৫ ওভারে উইকেটহীন স্কোর ১৭৬, পরের ২৫ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২০। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে স্কোর ৭৪/০, শেষ পাওয়ার প্লে-তে ৬৫/৫। শুরু এবং শেষ পাওয়ার প্লে-কে যথার্থভাবে কাজে লাগানো ম্যাচে স্কোর তো সাড়ে তিনশ' ছুঁই ছুঁই এর প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু তিনশ-ই তো ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। কেনো পারেনি, তার বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসবে ২৬তম ওভার থেকে ৪০তম ওভার পর্যন্ত মাঝের ১৫ ওভারে ধীরগতির ব্যাটিং। যে ১৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে রান উঠেছে মাত্র ৫৫ রান। তাওহিদ হৃদয়ের ধীরগতির ব্যাটিং ( ৪৪ বলে ২৮) এই সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশিত স্কোরে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
প্রথম দুই ম্যাচে লেজের জোরে, বিশেষ করে রিশাদ ঝড়ে দুইশ কোনোমতে পার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওই দুই ম্যাচে ডট বলের সংখ্যা ১৭৩, ১৯৩ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে যথেষ্ট। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচে অতো ডট করেনি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ডট বলের সংখ্যা শেষ ম্যাচে ১৫৭টি।
প্রথম দুই ম্যাচের পিচ নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। সে কারণেই কিউরেটর টনি হেমিং-বদিউল আলম খোকন জুটি ইভেন বাউন্সকে গুরুত্ব দিয়ে শেষ ম্যাচের পিচ প্রস্তুত করেছেন। তৃতীয় ম্যাচের পিচ ব্যাটারদের জন্য ছিল বেটার। তবে ইনিংসে আড়াইশ'র কাছাকাছি স্কোরের জন্য তৈরি করা উইকেটে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৯৬/৮ স্কোর করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তা সম্ভব হয়েছে ওপেনিং জুটির অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী ইনিংসে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের জন্য সৌম্য'র ব্যাটিং হয়েছে অভিযুক্ত। সেই সৌম্যকেই সিরিজের শেষ ম্যাচে অন্য চেহারায় দেখা গেছে। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে রোষ্টন চেজ-কে রিভার্স সুইপে ছক্কা মেরে জানিয়ে দিয়েছেন বিগ হিটে নিজের সক্ষমতার কথা। সেই রোষ্টন চেজ-এর পরের ওভারে এই অফ স্পিনারকে নিয়ে ছেলেখেলা উৎসব করেছেন সৌম্য-সাইফ। ১ চার, ২ ছক্কার ওই ওভারে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার-ছয় মেরেছেন সৌম্য। দ্বিতীয় ম্যাচে ৮৯ বলে করেছেন সৌম্য ৪৫। এই ম্যাচে সেখানে করেছেন ৮৬ বলে ৯১। যে ইনিংসে ৭টি চার এর পাশে ৪টি ছক্কা। আকিল হুসেইনকে সুইপ করতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে ওডিআই ক্যারিয়ারে ৪র্থ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন সৌম্য। এর আগে নব্বইয়ের ঘরে একবারই মাত্র আউট হয়েছেন, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ইনিংসে কাটা পড়েছিলেন সৌম্য ৯০-এ।
টি-টোয়েন্টিতে মার মার কাট কাট ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে সাইফ হাসানকে নেয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, বৃহস্পতিবার সাইফের ব্যাটিংয়ে (৭২ বলে ৬ চার, ৬ ছক্কায় ৮০) তা জানিয়ে দিতে পেরেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অল স্পিন অ্যাটাকে ৫০ ওভার বোলিংয়ে বিশ্বরেকর্ড করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ম্যাচে স্পিনারদের দিয়ে ৪৩ ওভার বোলিং করিয়েছেন অধিনায়ক সাই হোপ। একমাত্র পেসার গ্রিভসকে দিয়ে ৭ ওভার বোলিং করিয়েছেন তিনি। ওই ৭ ওভারকে ভালই শিক্ষা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ওভারপ্রতি ৮.৭১ হারে উইকেটহীন গ্রিভসের খরচা ৬১।
এমন এক ম্যাচে শেষ দুই স্পেলের (৪-১-৯-১ ও ২-০-৫-৩) স্পিন ভেল্কিতে বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হুসেইনের শিকার ৪ উইকেট (৪/৪১)। ইনিংসের ৪৬ এবং ৪৮ তম ওভার আকিল হুসেইনকে দিয়ে করিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশিত স্কোরে বাধা সৃষ্টি করেছেন সাই হোপ।
বাংলাদেশের ইনিংসে উইন্ডিজ স্পিনাররা আহামরি বল ঘোরাতে পারেননি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে বাংলাদেশ স্পিনাররা ঠিকই বল ঘুরিয়েছে। দুই বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম (৬-১-১১-৩), তানভির (৮-০-১৬-২), লেগ স্পিনার রিশাদ (৯-০-৫৪-৩), অফ স্পিনার মিরাজ (৭.১-০-৩৫-২) উইন্ডিজ ব্যাটারদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ১১৭ রানে অল আউট করেছে বাংলাদেশ সফরকারী দলকে। একমাত্র পেসার মোস্তাফিজের হাতে ওঠেনি একটি ওভারও।
এক দশক আগে ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে ১৩ উইকেটে এখনো বিশ্বসেরা মোস্তাফিজকে ছুঁতে পারেননি রিশাদ। ১ উইকেট কম নিয়ে ১২ উইকেটে থেমেছেন এই লেগ স্পিনার (৩ ম্যাচে ১০.৯০ গড়ে ১২ উইকেট)।