১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:০৬ পিএম
৪০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) ১৩ টেবিল টেনিস খেলোয়াড় চীন থেকে দেশে ফিরেছেন। চীন ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার অ্যাডভান্স ট্রেনিং এর আওতায় উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তারা।
প্রশিক্ষণ দলের সদস্যরা ছিলেন- জয় ইসলাম, নাফিজ ইসলাম, আবুল হাসেম হাসিব, মো. তাহমিদুর রহমান, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. মাহাতাবুর রহমান, মুসরাত জান্নাত সিগমা, আসমা খাতুন, নুসরাত জাহান অনন্যা, হাবিবা খাতুন, খৈ খৈ সাই মারমা ও রেশমী। আর প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিকেএসপির কোচ ইসরাত জাহান নাহিমা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুনীরুল ইসলাম উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা টেবিল টেনিস দলের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সংস্থাটির মহাপরিচালক সবার খোঁজখবর নেন।
চীনের হুনান প্রদেশের ভোকেশনাল কলেজে গত ২৮ জুলাই থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পটি। প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয় বহন করে চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এজেন্সি।
No posts available.
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৪:২৭ পিএম
কার্লোস আলকারাজ ও নোভাক জোকোভিচ—দুজনকেই নিজের অনুপ্রেরণা মনে করেন ইয়ানিক সিনার। নিজের উন্নতির পথে তাঁদের উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটিও অকপটে স্বীকার করেছেন এই ইতালিয়ান তারকা।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবে সিক্স কিংস স্ল্যাম প্রদর্শনী টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী জোকোভিচকে ৬-৪, ৬-২ গেমে উড়িয়ে দেন সিনার। আজ রিয়াদে ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় ও ছয়বারের গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী কার্লোস আলকারাজ।
গত বছর এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী সংস্করণের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিলেন সিনার ও আলকারাজ, যেখানে তিন সেটে জিতেছিলেন সিনার। তবে এটিপি ম্যাচে আলকারাজ এগিয়ে আছেন ১০-৫ ব্যবধানে। তাঁদের শেষ আট ম্যাচের সাতটিতেই জিতেছেন স্প্যানিশ তারকা।
আরও পড়ুন
কবে মাঠে ফিরবেন আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো, জানালেন রেড কোচ |
![]() |
জোকোভিচকে হারানোর পর নেটফ্লিক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিনার বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের উন্নতি করা। আমি চাই ক্যারিয়ারের শেষে বলতে পারি—নিজেকে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সাফল্য কখনোই আমাকে বদলাবে না, এটাই আমার বিশ্বাস। প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব দরকার। তোমার চেয়ে ভালো খেলোয়াড় থাকা দরকার। কার্লোস দারুণ প্রতিভাবান, সর্বগুণে গুণান্বিত একজন খেলোয়াড়। কোর্টে আজ আমরা তা দেখেছি—ড্রপশট থেকে শুরু করে সব কিছুই ও পারে।’
আলকারাজ ও জোকোভিচকে দেখে অনেক কিছু শেখেন সিনার, ‘আমি এই দুজনের দিকেই তাকিয়ে থাকি—জোকোভিচ আর কার্লোসের দিকে। তাঁদের দেখে শেখাই আমাকে প্রতিদিন আরও উন্নতির অনুপ্রেরণা দেয়।
কোর্টসাইড সাক্ষাৎকারে সিনার বলেন, ‘প্রতিবার আলকারাজের মুখোমুখি হওয়া আমার জন্য রোমাঞ্চকর। এটা আমাদের জন্যও ভালো—একটা বড় লড়াই হতে যাচ্ছে। আমি যতটা সম্ভব প্রস্তুত থাকার চেষ্টা করব। আবারও ওর বিপক্ষে খেলাটা বিশাল সম্মান।’
সিনার-আলকারাজ দ্বৈরথ এখন টেনিসের নতুন যুগের অন্যতম আকর্ষণ। শেষ পাঁচটি এটিপি প্রতিযোগিতায়, যেখানে দুজনই অংশ নিয়েছেন। তাঁরা মুখোমুখি হয়েছেন ফাইনালে—এর মধ্যে রয়েছে শেষ তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামও। আজ রিয়াদের রাতটা তাই হতে যাচ্ছে দুই তরুণ তারকার এক মহারণ।
রমনার জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্সে গতকাল পর্দা নামলো ৩৫তম বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর জুনিয়র জে-৩০ প্রতিযোগিতার। সাত দিন ধরে চলা লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিল ১২টি দেশের ৭৫ জন তরুণ খেলোয়াড়। বালক এককে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন থাইল্যান্ডের আরিয়াফল লিকুল। বালিকা এককে শিরোপা জিতেছেন ভারতের সানমিথা হারিনি।
শুক্রবার বালক এককের ফাইনালে আরিয়াফল ৬-৪, ৬-৩ গেমে চীনের চুয়ান ডিংকে হারান। আরিয়াফল বাংলাদেশের জারিফ আবরারকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন। বালিকা এককের ফাইনালে ভারতের সানমিথা ৬-৪, ৬-২ গেমে থাইল্যান্ডের তারিতা হংসইয়ককে হারান। সেমিফাইনালে তিনি মালদ্বীপের আসাল আজিমকে পরাজিত করেন।
শেষ দিনের আগেই বালক দ্বৈতে ভারতের শৌনক চ্যাটার্জি ও অমৃত ধনকর জুটি এবং বালিকা দ্বৈতে মালদ্বীপের আরা আসাল আজিম ও ভারতের সানমিথা হারিনি জুটি চ্যাম্পিয়ন হন।
ফাইনাল শেষে বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল হাই সরকার। পুরস্কার বিতরণের পর আতশবাজির আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের টুর্নামেন্ট।
বয়সের ছাপ স্পষ্ট। তারুণ্যের কাছে হার মানতে হচ্ছে প্রায়ই। তবু থামতে আপত্তি নোভাক জোকোভিচের। অবসরের কোনো পরিকল্পনাই নেই রেকর্ড ২৪বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর। সার্বিয়ান কিংবদন্তি খেলা চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিচ্ছেন ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, এনবিএ তারকা লেব্রন জেমস, সাবেক এনএফএল খেলোয়াড় টম ব্র্যাডির কাছ থেকে।
এ বছর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের চারটিতেই সেমি ফাইনালে শেষ হয় জোকোভিচের যাত্রা। ইয়ানিক সিনার-কার্লোস আলকারাজের মতো টেনিসের বর্তমানদের কাছে নিয়মিতই আত্মসমর্পন করতে হচ্ছে তাকে। সর্বশেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা এসেছে ২০২৩ সালে। চোট আর বয়সের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে ৩৮ বছর বয়সী কিংবদন্তিকে। এরপরও দৃঢ় মানসিকতার অধিকারী জোকোভিচ চালিয়ে যেতে যান খেলা।
জোকোভিচ আছেন এখন সৌদি আরবে। মধ্য প্রাচ্যের দেশটিতে ‘সিক্স কিংস স্ল্যাম’-এর সেমিফাইনালে আরও একবার সিনারের কাছে হেরেছেন তিনি। সেমিতে জোকোকে ৪-৬, ২-৬ সেটে হারিয়েছেন চারবারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী ইতালিয়ান। আরেকটি ব্লকবাস্টার ফাইনালে আগামীকাল মুখোমুখি হবেন আলকারাজ-সিনার।
সেমিতে সিনারের কাছে হারের পর রিয়াদে জয় ফোরামে ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেন জোকোভিচ। অবসরের প্রশ্নে বলেন,
‘দীর্ঘ ক্যারিয়ারই এখন আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা। আমি দেখতে চাই, আমি কত দূর যেতে পারি। বিশ্বজুড়ে খেলাধুলায় লেব্রন জেমসকে দেখুন—সে এখনো দারুণ খেলছে, বয়স ৪০। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও তাই, টম ব্র্যাডিও ৪০ বছর পেরিয়ে খেলেছেন। অবিশ্বাস্য! তারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাই আমিও চালিয়ে যেতে চাই—এটাই আমার অন্যতম অনুপ্রেরণা।’
টেনিসের পরিবর্তনশীল ভবিষ্যতের অংশ হতে চাওয়ার কথাও জানিয়ে জোকোভিচ বলেন,
‘আমি এমন সময়টায় বাঁচতে চাই। অর্থাৎ এখনো পেশাদার টেনিসে খেলতে চাই—যখন এই খেলাটিতে পরিবর্তন আসবে। আমি এতে ভীষণ রোমাঞ্চিত। আমার মনে হয়, টেনিস এমন এক খেলা, যা ব্যাপকভাবে বদলে যেতে পারে এবং যাবে। আমি সেই পরিবর্তনের অংশ হতে চাই, কেবল অংশ নয়, আমি চাই খেলাটির নবজাগরণের সময় কোর্টে থাকতে, যখন নতুন প্রজন্মের জন্য টেনিসের এক নতুন যুগের ভিত্তি তৈরি হবে।”
এই বছর জেনেভায় ক্যারিয়ারের ১০০তম শিরোপা জেতা জোকোভিচকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়—সিনার বা আলকারাজের মতো তরুণরা কি তাকে হারিয়েই অবসরে পাঠাবে? তখন মুচকি হেসে তিনি জবাব দেন, ‘তাদের হতাশ করতেই হচ্ছে—ওটা হতে যাচ্ছে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস তারকা কোকো গফের পলকে যুক্ত হলো আরও একটি অর্জন। উহান টেনিসের ফাইনালে স্বদেশি জেসিকা পেগুলাকে স্ট্রেইট সেটে হারিয়ে দিয়েছেন টেনিসের তিন নম্বর র্যাঙ্কধারী এই নন্দিনী। টেনিসের হার্ড কোর্টে ৯টি শিরোপা জিতে গড়েছেন রেকর্ড।
উহানে আজ ছন্নছাড়া ও উদ্ভ্রান্তের মতো দেখাচ্ছিল পেগুলাকে। হারের আগেই যেন হেরে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের এই টেনিস তারকা। আসরজুড়ে অপ্রতিরোধ্য থাকা ৬ নম্বর র্যাঙ্কধারী পেগুলা ছিলেন অসহায়ের মতো। স্বদেশি গফের কাছে ৬-৪ ও ৭-৫ সেটে হেরে কোর্ট ছাড়েন।
ম্যাচের সব বিভাগেই পিছিয়ে ছিলেন পেগুলা। শক্তিশালী সার্ভিস, ব্যাকহ্যান্ড, ফোরহ্যান্ডে তো ছিলই, দ্রুত কোর্ট কভারিংয়েও সুবিধা নিতে পারেননি তিনি। অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে উহান ওপেনের রানী বনে গেলেন গফ।
রেকর্ড শিরোপা জয়ের পর গফ বলেছেন,
‘আমি আমার টিমের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি এশিয়ার অন্যতম সেরা প্রতিযোগিতা। আমার কোচ ক্রিস্টোফা ফেইরুলা শুরুতে আমাকে এখানে আসতে দিতে চায়নি। কারণ আমার ইউএস ওপেনে সময়টা খারাপ গেছে। কিন্তু আমি তাকে ভুল প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই টেনিস তারকা আরও বলেছেন,
‘আমি খুবই জেদি একজন মানুষ। তাই ইচ্ছা করেই তিনি (কোচ) আমাকে আসতে বারণ করেছিলাম। যাতে আমি ভালো রেজাল্ট করি।’
স্বদেশি গফের এই জয় দেশের জয় হিসেবেই দেখছেন পেগুলা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন,
‘তার (গফ) সঙ্গে খেলতে পারাটা সম্মানের। একজন বন্ধু হিসেবে এবং একজন আমেরিকান হিসেবে। এই প্রথম দুইজন ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছি। খেলাটা বেশ মজার ছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের দুই টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস ও ভেনাস উইলিয়ামসনের মুখোমুখি লড়াইয়ের যে ব্যাপার, তা মঞ্চায়ন হয়েছে সাংহাই মাস্টার্সে। যেখানে শিরোপার মঞ্চে একে অন্যের বিরুদ্ধে র্যাকেট ধরেছেন দুই চাচাতো ভাই ভ্যালেন্টিন ভাচেরোট ও আর্থার রিন্ডারকনেচ।
চীনের সাংহাইয়ে বাংলাদেশ সময় আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার লড়াইয়ে রিন্ডারকনেচকে ৪-৬, ৬-৩ ও ৬-৩ সেটে হারিয়ে দিয়েছেন ভ্যালেন্টিন। যা লেখা হয়েছে খেরোখাতায়। এর আগে সাংহাই মাস্টার্সে র্যাঙ্কিং বিচারে এত নিচে ( সিঙ্গেল, ২০৪) থেকে উপরের (সিঙ্গেল, ৪২) কাউকে হারাতে পারেননি কোনো প্রতিযোগী।
আরও বেশকিছু কারণে রেকর্ডবুকে লেখা থাকবে এই ম্যাচ এবং দুই চাচাতো ভাই। প্রতিযোগিতায় এটি সম্ভবত দ্বিতীয় ফাইনাল, যেখানে ১৯৯১ সালের পর রক্তের সম্পর্কের দুই প্রতিযোগী একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তবে কলেজ ও স্কুল জীবনে বহুবার মুখোমুখি হয়েছেন ভ্যালেন্টিন ও আর্থার।
২৬ বর্ষী ভ্যালেন্টিন সাংহাই মাস্টার্সে জয়ের পর আবেগি বার্তা দিয়েছেন। তার সে বার্তা মন চুয়েছে সকলের। শুরুতেই দাদা-দাদিকে স্মরণ করেছেন। বলেছেন, ‘আশাকরি দাদা-দাদি খুশি হবেন আমার এমন অর্জনে।’
জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে কান্না ধরে রাখতে পারেননি দু’জন। নিজেরা কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন উপস্থিত সকলকে। ভ্যালেন্টিন বলেছেন,
‘এটা অবিশ্বাস্য, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে কি ঘটছে। এটা (শিরোপা) কল্পনাও করতে পারছি না।’
‘প্রতিযোগিতায় আমাদের একজন হেরেছে, একজন জিতেছে। তবে আমি মনে করি আজ আমরা দুইজনই জিতেছি। তারচেয়েও বড়-আমাদের পরিবার জিতেছে।’
যোগ করেন তিনি।
চাচাতো ভাইয়ের বিপক্ষে হারের পর আর্থার বলেছেন,
‘ভ্যালেন্টিন, তুমি সর্বোচ্চটা দিয়েছ। আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট। আমরা দুই কাজিন এখন আরও বেশি শক্তিশালী।’