
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) এবারও চেন্নাই সুপার কিংসে দেখা যাবে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক এবারও আগের ভূমিকায় থাকতে পারেন বলে মনে করেন দেশটির সাবেক ব্যাটার মোহাম্মদ কাইফ।
নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘মোহাম্মদ কাইফ’ এ তিনি বলেন, ‘ধোনি এখন আর ব্যাটিং করতে আসেন না। তিনি খেলেন ২০ ওভার কিপিং করার জন্য, ২০ ওভার দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। গাইড করার জন্যই তার মাঠে থাকা।’
গত মৌসুমে চোটের কারণে বেশিরভাগ ম্যাচে নেতৃত্ব দিতে পারেননি রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তাঁর অবর্তমানে দায়িত্ব সামলান ধোনি। নতুন মৌসুমের অধিনায়ক ঘোষণা না করলেও ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৬ মৌসুমে অধিনায়ক হবেন গায়কোয়াড়।
আরও পড়ুন
| বিসিবির দায়িত্বে বড় পরিবর্তন, নারী বিভাগের প্রধান রুবাবা |
|
রাজস্থানের হয়ে আইপিএল শিরোপাজয়ী কাইফের মতে, কাগজে কলমে গায়কোয়াড় অধিনায়ক হলেও মাঠে সিদ্ধান্ত নেবেন ধোনিই, ‘কাগজে কলমে গায়কোয়াড়ের নাম লেখা থাকতে পারে, কিন্তু ধোনি মাঠে থাকলে সবকিছু থাকবে ধোনির হাতেই থাকে।’
আগামী মৌসুমের জন্য রাজস্থান রয়্যালস থেকে সঞ্জু স্যামসনকে দলে ভিড়িয়েছে চেন্নাই। কাইফ মনে করেন ধোনির হাতেই থাকবে গ্লাভস, ‘এখন এমন সময় নয় যে, এক দলে একটাই কিপার খেলবে। স্যামসন খেলবে ফিল্ডার হিসেবে। ধোনিই কিপিং করবে। কারণ, তাঁকে মাঠে বেশি সময় দরকার।’
গত মৌসুমে আইপিএলে তলানিতে লিগ শেষ করেছিল চেন্নাই। এবার শিরোপা জিততে মরিয়া পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।
No posts available.
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪:৫২ পিএম
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৩ পিএম
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৭ পিএম
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১:৩৭ পিএম

৩৮ বছর বয়সী সুসি উইলসন-রো কেন্ট ক্রিকেট ও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন। সন্তানের জন্মের পর তিনি পিঠ ও পাঁজরের ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন। একজন পেশাদার খেলোয়াড় এবং ধূমপান না করা ব্যক্তির জন্য ফুসফুসের ক্যানসার ভাবার বিষয়ই ছিল না। তবে স্ক্যানের পর চিকিৎসকেরা টিউমার শনাক্ত এবং ফুসফুসে ক্যানসার চতুর্থ ধাপ নির্ণয় করেন।
সম্প্রতি ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ার পর স্বাস্থ্য সচেতনতায় জোর দিচ্ছেন সুসি। তিনি চান, অন্যরা এই রোগ দ্রুত শনাক্ত করতে পারুক এবং দীর্ঘজীবী হোক। এ জন্য ক্যাম্পেইন করে যাচ্ছেন।
ক্যানসারে আক্রান্ত- ব্যাপারটি বিশ্বাস করতেই যেন কষ্ট হচ্ছিল সুসির,
‘সব পরীক্ষার মাঝেই আমি ভাবছিলাম, আমি তো ফিট এবং স্বাস্থ্যবান… আমার মতো মানুষ ফুসফুসের ক্যান্সার পায় না। তাই এটা শকড ছিল বললেও কম হবে।’
কেন্ট ক্রিকেটে উইলসন-রো পাঁচবার উইমেন্স কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের অংশ ছিলেন এবং দুইবার ন্যাশনাল উইমেন্স টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা জেতা দলের সঙ্গে ছিলেন।
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস জানিয়েছে, ফুসফুসের ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ধূমপান, যা প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে ধূমপান না করা মানুষের মধ্যে এই রোগের হার বাড়ছে। ইংল্যান্ডে ৫৫–৭৪ বছর বয়সীদের জন্য স্ক্রিনিং চালু করা হচ্ছে, কিন্তু কম বয়সীদের জন্য নেই।
রুথ স্ট্রস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, অধূমপায়ীদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা পুরুষের দ্বিগুণ এবং ৫৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি। ফাউন্ডেশনটি সাবেক ইংল্যান্ড ক্রিকেট অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাসের স্ত্রী রুথ স্ট্রাসের স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যিনি ২০১৮ সালে ৪৬ বছর বয়সে ফুসফুসের ক্যানসারে মারা যান।
উইলসন-রো বর্তমানে কেমোথেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি নিচ্ছেন, যা এইনএইচএস সরবরাহ হয় না। এক্সন টুয়েন্টি গ্রুপ, যা রোগী, বিজ্ঞানী ও অনকোলজিস্ট নিয়ে গঠিত, সুসির ক্যানসারের নির্দিষ্ট মিউটেশন ও নতুন চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করছে।
তাঁর সঙ্গী জেন উইলসন-রো বলেন,
‘অন্য চিকিৎসাগুলো কিছু রোগীর জন্য কার্যকর হচ্ছে, কিন্তু এগুলো এখনও অনুমোদিত নয়। প্রতিটি অনুমোদনের জন্য আমরা শ্বাস ধরে রাখি, যেন প্রয়োজন হলে নতুন ইমিউনোথেরাপি নেওয়া যায়।’
চিকিৎসা এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়েছে। সুসি জানান, তাঁর টিউমার ছোট হয়ে গেছে এবং স্পাইন ও লিম্ফ নোডে ক্যানসার আর নেই। তিনি যোগ করেন,
‘ভবিষ্যৎ কী আছে তা আমরা জানি না, তবে আশা করি আমার শরীর যতটা সম্ভব লড়তে পারবে। আমার বার্তা হলো—যদি কিছু অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটি খতিয়ে দেখুন। ধূমপান না করা ফিট মানুষও ফুসফুসের ক্যানসারে হতে পারে, এটি আগেই শনাক্ত করা যেত।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে আচরণবিধি ভেঙে পাকিস্তানের তারকা ব্যাটার বাবর আজমকে ম্যাচ ফির ১০ শতাংশ জরিমানা করেছে আইসিসি। ম্যাচ চলাকালে স্টাম্পে ব্যাট দিয়ে আঘাত করায় তাঁর বিরুদ্ধে লেভেল–১ কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ গঠন করা হয়।
আইসিসির আচরণবিধির ২.২ ধারায় বলা আছে— কোনো খেলোয়াড় যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় ক্রিকেট উপকরণ বা মাঠের যেকোনো স্থাপনায় অযথা আঘাত বা ক্ষতি করার আচরণ করেন, তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাবর সেই ধারাই ভঙ্গ করেছেন বলে ম্যাচ শেষে ম্যাচ রেফারির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে তাঁর ডিসিপ্লিন রেকর্ডে একটি ডিমেরিট পয়েন্টও যোগ করা হয়েছে। গত ২৪ মাসে এটি তাঁর প্রথম অপরাধ।
আরও পড়ুন
| ‘উইন্ডিজ সিরিজের চেয়ে ভিন্ন হবে টেস্টের উইকেট’ |
|
ঘটনাটি ঘটে পাকিস্তানের ইনিংসের ২১তম ওভারে। তখন আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ক্ষোভে স্টাম্পে ব্যাট ছুঁড়ে মারেন বাবর। মাঠের আম্পায়ার অ্যালেক্স ওয়ার্ফ ও রশিদ রিয়াজ, তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শাহিদ সৈকত এবং চতুর্থ আম্পায়ার ফয়সাল আফ্রিদি ঘটনার পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। এমিরেটস আইসিসি ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলের ম্যাচ রেফারি আলী নকভি শাস্তির প্রস্তাব দেন।
বাবর আজম অভিযোগ মেনে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন হয়নি। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, লেভেল–১ অপরাধে সর্বনিম্ন সতর্কবার্তা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা এবং এক বা দুই ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হতে পারে।
তবে শাস্তির মধ্যেও মাঠের পারফরম্যান্সে ছিলেন উজ্জ্বল। তিন ম্যাচ সিরিজে ১৬৫ রান করে ছিলেন সর্বোচ্চ রানসংগ্রহকারী, পেয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে তাঁর রেকর্ড ২০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। যার সৌজন্যে শ্রীলঙ্কাকে ধবলধোলাই করেছে পাকিস্তান।

মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা মানেই আলোচনার বড় অংশ জুড়ে থাকে পিচ। ম্যাচের উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে কৌতূহল থাকে সবার। বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলছেন, টেস্টের উইকেট থাকবে ভালো।
গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে পুরোপুরি স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়েছিল স্বাগতিকরা। উইকেটে এতটাই সাহায্য ছিল স্পিনারদের, এক ম্যাচে পুরো ৫০ ওভারই স্পিনার ব্যবহার করে বিশ্ব রেকর্ডও গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এবার বদলে গেছে ফরম্যাট। মিরপুরে বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে দুই দলের সাদা পোশাকের লড়াই। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উইকেট সম্পর্কে ধারণা দিলেন সিমন্স।
আরও পড়ুন
| মুশফিকের সেঞ্চুরির ‘সিক্রেট’ জানালেন সিমন্স |
|
“ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের চেয়ে ভিন্ন মনে হচ্ছে উইকেট। দেখে সত্যিই ভালো মনে হচ্ছে। আগামীকাল সকালে আমরা যখন আসব... এখনই বলতে পারছি না কারণ আরও কিছু রোলিং হয়তো করবে তারা। এরপর আমরা দেখব উইকেট কেমন।”
“তবে এখন পর্যন্ত দেখে ভালো মনে হচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটে যেমন চাওয়া থাকে, শুরুর দুই-আড়াই দিনে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হতে পারে। এরপর চতুর্থ দিন থেকে কেমন হয় সেটি আমরা দেখব।”
মিরপুরের মাঠে এখন পর্যন্ত প্রথম ইনিংসের গড় সংগ্রহ ৩১৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটি কমে হয় ৩০৭ রান। তৃতীয় ইনিংসে গড়ে ২৪০ করেছে দলগুলো। আর ম্যাচের শেষ ইনিংসে গড় সংগ্রহ ১৬৭ রান।
সিমন্সের কথায় সেই আভাস। প্রথম দুই ইনিংসে তুলনামূলক বেশি হতে পারে রান। এরপর সুবিধা পাবেন বোলাররা। এমনিতে ম্যাচের আগের দিন দুপুর পর্যন্ত ঘাসের উপস্থিতি ছিল উইকেটে। ম্যাচের দিন সেটি থাকে কিনা, তা-ই দেখার।

পার্থের রোদের নিচে দাঁড়িয়ে ব্রেন্ডান ডগেট যেন নিজের জীবনের পথটিই আবার একবার ফিরে দেখছিলেন। তোওউম্বার সেই তরুণ, যিনি ভোরে ঘুম থেকে উঠে কাঠমিস্ত্রির কাজে বেরিয়ে পড়তেন, বাড়ি বানানোর ছিল তাঁর মূল কাজ। তারপর অতিরিক্ত যে কাজটি করতেন- ৯০ মিনিট গাড়ি চালিয়ে ব্রিসবেনে ব্যাট-বলের অনুশীলনে যেতেন। এখন তিনি অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অভিষেকের দোরগোড়ায়।
প্যাট কামিন্স আর জশ হ্যাজলউডের চোটে সাত বছর আগে যেমন আকস্মিকভাবে ডগেটকে আন্তর্জাতিক দলে ডেকেছিল, এবার আবার সেই একই দুজনের চোটই তাঁর সামনে খুলে দিয়েছে ‘ব্যাগি গ্রিনের’ দরজা। তবে এবার তিনি প্রস্তুত, পরিণত এবং অনেক বেশি বাস্তববাদী।
ডগেট নিজেই বলেন, তাঁর নাকি দুই জীবন— একটা কার্পেন্টারের (কাঠমিস্ত্রি), আরেকটা পেশাদার ক্রিকেটারের। আর যদি এই সপ্তাহেই টেস্ট অভিষেক হয়ে যায়, তা হলে জীবনের তৃতীয় অধ্যায় শুরু হয়ে যাবে।
মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয় গ্রেড ক্লাব ক্রিকেট থেকে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হঠাৎ জাতীয় দলে ডাক পড়ে ডগেটের। সে অভিজ্ঞতাকে তিনি আজও ভুলতে পারেন না। দুবাইয়ের মরুভূমিতে তীব্র ফিটনেস ক্যাম্পে নিজেকে স্পেশাল এয়ার ফোর্স ট্রেনিংয়ের কথা মনে পড়ছিল তাঁর। স্মিত হেসে ডগেট বললেন, ‘সেদিন বুঝেছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসলে কী চায়।’
কাঠমিস্ত্রি বাবার ঘরে রকহ্যাম্পটনে জন্ম ডগেটের। তবে শেকড় নিউক্যাসল অঞ্চলের ওয়ারিমি আদিবাসী সম্প্রদায়ে। কারপেন্ট্রি কোর্স প্রায় শেষ। সেই সময়ই কুইন্সল্যান্ড তাঁকে দিল রুকি কন্ট্রাক্ট— ওয়েস্টার্ন সাবার্বস ক্লাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে।
প্রথম শিল্ড মৌসুমেই ২৮ উইকেট নিয়ে কুইন্সল্যান্ডকে শিরোপা জেতানোর পর ডাক এল জাতীয় দলে। এমন দারুণ সুখবর পেয়েও নিজেকে কাঠমিস্ত্রি ছাড়া কিছু ভাবেননি ডগেট, ‘আমি তখনও নিজেকে কার্পেন্টারই ভাবতাম।’
সাত বছর আগে কামিন্স-হ্যাজলউডের চোট তখন দরজা খুলেছিল, এবারও তাই। প্রথমে দলে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা কমই ছিল। কিন্তু একে একে হ্যাজলউড, শন অ্যাবট ছিটকে গেলে বদলে গেল দৃশ্যপট। গত সপ্তাহে শিল্ড ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই ট্রাভিস হেড এসে খবরটা দিলেন, ‘মাথা যেন ছুটে যাচ্ছিল হাজার মাইল বেগে’, বললেন উচ্ছ্বসিত ডগেট।
২০২১ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া ছিল ডগেটের কঠিন সিদ্ধান্ত। কুইন্সল্যান্ডে শিরোপা জিতে, প্রিয় বোলিং কোচ অ্যান্ডি বিচেলকে রেখে চলে আসা সহজ ছিল না। নতুন দলে প্রথম তিন মৌসুম চোটে ভুগেছেন।
গত মৌসুমেই শুরু হলো ভাগ্যের মোড় বদল। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে মূল তালিকায়ও ছিলেন না। কিন্তু আরেকজনের চোটে ডাকা হলে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে। সুযোগ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে, ১৫ রানে ৬ উইকেট নেন। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। গত দুই মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়েছেন ৬৬ উইকেট, গড় ২১.১৬। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার শিল্ড জয়ের নায়ক— সব মিলিয়ে ৩১ বছর বয়সী ডগেটই এখন মূল দলের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পেসার হিসেবে বিবেচিত।
টেস্ট কিংবদন্তি জেসন গিলেস্পি আর রায়ান হ্যারিসের তত্ত্বাবধানে ডগেট পরিণত হয়েছেন আরও। তাঁর দুই বছর ছয় মাস বয়সী ছেলে, আর আগামী মার্চে জন্ম নিতে যাওয়া কন্যাকে দেখার অপেক্ষায় ডগেট। শুভ কামনা পাচ্ছেন শেকড়ের মানুষদের কাছ থেকেও, ‘এখন মনে হয়, আমি দুটা জীবন। আজও আমার পুরোনো বস, সহকর্মীরা শুভ কামনা পাঠান। তোওউম্বায় ফিরলে আমি আবার সেই কার্পেন্টারই— নেইল ব্যাগ পরে কাজ শুরু করি।’
একটু থেমে যোগ করেন, ‘ক্রিকেটটাই এখন সব মনে হয়, কিন্তু সত্যি বলতে জীবন তো খুবই সহজ ছিল। দিনদুপুরে বাড়ি (কাঠের কাজ) বানাতাম, সন্ধ্যায় ক্রিকেট খেলতাম। এই মুহূর্ত—সবটাই বরং বোনাস।’
এখন সব চোখ পার্থে। অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ড অ্যাশেজ টেস্টে কি তবে ডগেটের মাথায় উঠবে সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যাগি গ্রিন? অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট।

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একশ টেস্ট খেলার দুয়ারে দাঁড়িয়ে মুশফিকুর রহিম। সব ঠিক থাকলে বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে তার ক্যারিয়ারের ১০০তম টেস্ট।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ ফিল সিমন্স মঙ্গলবার মুশফিককে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
“মুশফিকের পেশাদারিত্ব, দীর্ঘ অধ্যবসায়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি অদম্য ভালোবাসাই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।”
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যা অনেকেই দেখছেন 'মুশফিকের টেস্ট' হিসেবে।
আরও পড়ুন
| টেস্টের শতক: যে বিশ্ব রেকর্ডের অপেক্ষায় মুশফিক |
|
আশি ও নব্বইয়ের দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন সিমন্স। দেখেছেন বিশ্বের বহু কিংবদন্তিকে তাদের ১০০তম টেস্ট খেলতে। এবার মুশফিকের এই অর্জনের পেছনে সিক্রেট জানতে চাইলে পেশাদারত্বের কথা বলেন তিনি।
“প্রথমেই বলতে হবে, তার পেশাদারত্ব, তার দীর্ঘ ক্যারিয়ার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খেলার যে অদম্য আগ্রহ- সেটা সত্যিই অসাধারণ। বাংলাদেশ বছরে ১৫টা টেস্ট খেলে না। তাই ১০০ টেস্টে পৌঁছাতে তার অনেক সময় লেগেছে; এটিকে আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে।”
“স্বল্প সময় তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু যতটুকু দেখেছি, পেশাদারত্বের মাত্রা অবিশ্বাস্য রকম উঁচু। আগামীকাল তার এই অর্জনের মুহূর্তে আমি সত্যিই খুব খুশি হবো।”
দীর্ঘ সময় ধরে টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্য ধরে রাখার জন্যও মুশফিকের মনোভাবকে আলাদা করে দেখছেন সিমন্স।
“আমার মতে তার আসল রহস্য হলো পেশাদারত্ব। নিজেকে কীভাবে তৈরি রাখা যায়, কীভাবে নিজের খেলায় আরও উন্নতি আনা যায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কীভাবে টিকে থাকা যায়- এই জিনিসগুলোই তাকে এখানে এনেছে।”
“আপনি তার ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে দেখবেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আর যারা ১০০ বা ১৫০ টেস্ট খেলেন, তাদের সবার মধ্যেই একই রকম এক ধরনের ক্ষুধা থাকে আরও ভালো হওয়ার, আরও উন্নতি করার। মুশফিকের মধ্যেও সেটা স্পষ্ট।”
আরও পড়ুন
| তিনটি জিনিসই ঠিক করবে, আর কত দিন খেলবেন মুশফিক |
|
পরবর্তী প্রজন্মের টেস্ট ক্রিকেটারদের জন্য মুশফিকের ক্যারিয়ার বড় উদাহরণ বলেও মনে করেন সিমন্স।
“তার মধ্যে যে জিনিসটা সবচেয়ে চোখে পড়ে তা হলো পেশাদার আচরণ৷ নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করেন, কীভাবে অনুশীলন করেন এবং কীভাবে আরও ভালো হওয়ার চেষ্টা করেন।”
“এই পর্যায়ে স্থির থাকার সুযোগ নেই। প্রতিনিয়ত উন্নতি করতে হয়। প্রযুক্তির যুগে দুনিয়াটা খুব ছোট; আপনাকে সবসময় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাই নিজেদেরও বদলাতে হয়, নতুন কিছু যোগ করতে হয়। মুশফিক তার ক্যারিয়ারে বহুবার তা করেছে।”