
চার-ছক্কার চেয়েও ম্যাচ জয়ে অত্যাবশ্যক ‘স্মার্ট ক্রিকেট’। আধুনিক ক্রিকেট বলতে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস বুঝিয়েছেন ‘বুঝে-শুনে পথচলা’। একই সঙ্গে রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেট , প্রতিপক্ষের পালস বিশ্লেষণ, আদোপ্রান্ত যাচাই-বাছাই ও বাউন্ডারি লাইনের পরিমাপ নখদর্পণে রাখা- ছোটখাট বিষয়গুলো কাজ সহজ করে দেয়, পৌঁছে দেয় কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। পরিকল্পনা যেমন কাজের অংশ, অ্যাথলেটিক্সে স্মার্ট এপ্রোচ ঠিক ততটাই। এশিয়া কাপ মিশন কিংবা তারও আগে থেকেই লিটন দাসের সরব বার্তা - ‘টু বি স্মার্ট ক্রিকেট’। অধিনায়কের তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা সতীর্থদের কেউ আমলে নিয়েছেন, কেউবা এড়িয়ে গেছেন। যা এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে কিছুটা হলেও দৃশ্যমান।
লিটন দাসের ছিল স্মার্ট ক্রিকেটের প্রতিশ্রুতি। তার দলকেও বিশেষ দুটি পরামর্শ দিয়ে রেখেছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ অধিনায়ক ও তার সতীর্থরা নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা রাখতে পেরেছেন এবং আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন কীনা তা-ই আলোচ্য। সরল দৃষ্টিতে হংকংয়ের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয়ে এশিয়া কাপে শুভসূচনা হয়েছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচে পারফরম্যান্স করেছেন লিটন ও তাওহীদ হৃদয়। বল হাতে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। এরপর...
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের শুরুতে দেশের দুই ওপেনারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যেতে পারে। গত কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের মতো হংকংয়ের বিপক্ষে ওপেনিং ভরসা রাখা হয় তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেনের ওপর। ভরসা না করেও যে উপায় নেই। কারণ দেশীয় ক্রিকেটের হেলে পড়া ওপেনিং সিংহাসন টিকিয়ে রেখেছেন এই দুই তরুণ ব্যাটার। তাছাড়া দুই ব্যাটার প্রায় প্রতি ম্যাচে প্রতিযোগিতা করে হাঁকিয়েছেন চার-ছক্কা। উদ্বোধনে তাদের ওপরই আস্থা নির্বাচকদের।
আরও পড়ুন
| তানজিদ শোনালেন আশার বানী |
|
হংকং ম্যাচে তানজিদ-পারভেজ ছিলেন ফ্রন্টলাইনার সোলজার। বৃহস্পতিবার শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে নামার আগে চলতি বছরে চলতি বছরে ৪৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন দুই ব্যাটার। অথচ গতকাল এই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে কেবল ৪৬। দুজনের মাঝে ভয়হীন ও ছক্কা মারার যে প্রতিযোগিতা, তা এশিয়া কাপ মঞ্চে দেখা যায়নি। ভালো শুরুর পরও লাল-সবুজ দলকে প্রথমে বিপদে ফেলেন ইমন। সবশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত অর্ধশতক হাঁকানো ইমন এদিন করতে পারেন ১৯ রান (১৪ বল)।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নিজের ২৩তম ছক্কাটি মারার ২ বল পরেই আরেকটি ছক্কা মারার চেষ্টা করেন পারভেজ। হিতে বিপরীত হয়ে ছাড়েন মাঠ। অর্থাৎ হংকংয়ের লড়াকু পুঁজির বিপরীতে অল্পতে উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি। তারই সঙ্গী তানজিদ থেমেছেন আরও অল্পতে। দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করেছেন ঠিকই, সেটাকে পারেনি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করতে। ঘরের মাঠ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নিজের সবশেষ ম্যাচে চোখজুড়ানো ইনিংস খেলেছিলেন তানজিদ। চায়ের শহরে তার অপরাজিত ৫৪ রানের ওপর ভর করে স্বাগতিকরা সহজ জয় পায়। অথচ হংকংয়ের বিপক্ষে ২৪ বর্ষী ব্যাটারের না ছিল ধার-ভার। ১৮ বলে করতে পেরেছেন কেবল ১৪। ছিল না ছক্কা। সান্ত্বনা কেবল ১ বাউন্ডারি।
দুই ওপেনারের পতনে দায়িত্ব বর্তায় টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের ওপর। অবশ্য বহুদিন ধরে দুর্বল এই জায়গায় বাহবা পাওয়ার মতো কাজ করে দেখিয়েছে ব্যাটাররা। এই সেক্টরের মূল ব্যাটন ছিল লিটনের হাতে। এশিয়া কাপ শুরুর আগে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রকাশিত প্রোমো ভিডিওতে বাংলাদেশ দলপতি যেভাবে বলেছেন, “মাঠে আমাদের আগ্রাসন”, ঠিক তারই প্রতিচ্ছবি ছিল আশার বাইশ গজে।
দলপতি লিটন এমনিতেই চাপে ছিলেন। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা সিরিজে ছিলেন ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। সেখান থেকে ফেরার একটা তাড়না ছিল। বের হয়েছেন সুনিপুণ দক্ষতায়। হাত খুলে খেলেছেন সবশেষ নেদারল্যান্ডস সিরিজে। ফিফটির দেখা পাওয়া ছাড়াও সিরিজসেরা হয়েছেন। স্মার্ট ক্রিকেট খেলে হংকংয়ের বিপক্ষেও বাজিমাত করেছেন। ক্রিজে যতক্ষণই ছিলেন ব্যাটিং সৌন্দর্য বিলিয়েছেন। স্টেডিয়ামে আশা হাজার খানেক দর্শকরাও তার মনোমুগ্ধকর ব্যাটিং উপভোগ করেছেন। এশিয়ার কাপের দোরগোড়ায় নিজের প্রথম ম্যাচে ৩৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেছেন লিটন। গড়েছেন ছক্কার রেকর্ড। দেশের ছক্কার রাজা এখন তিনিই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ১১১তম কুড়ি কুড়ি ম্যাচ অংশ নেওয়া লিটন হংকংয়ের বিপক্ষে নেমেছিলেন নামের পাশে ৭৭ ছক্কা নিয়ে। গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা মাহমুদউল্লাহর ছক্কাও ৭৭টি। যৌথ নামের রেকর্ডটাকে গতকাল হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের একার করে নিয়েছেন লিটন। আর সেটা মাহমুদউল্লাহর চেয়ে ২১ ইনিংস কম খেলেই। মোদ্দাকথা আশার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
আট জাতির টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম জয়ে লিটনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৭০ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয়। অনেক সমালোচনা মাড়িয়ে একাদশে টিকে যাওয়া এই হার্ডহিটার ব্যাটারের কাছ থেকে দেখা মেলেনি পাওয়ার হিটিং। ব্যাটিংয়ে ছিল না ঝাঁজ। ক্রিকেটীয় ভাষায় ‘আগলি ইনিংস’ যেটাকে বলে সে কাজটিই করেছেন ডানহাতি ব্যাটার। শেষ দিকে তামিম সাজঘর মুখো হলেও হৃদয় ৩৬ বলে ৩৫ রান নিয়ে খেলা শেষ করেছেন। লিটনের স্ট্রাইকরেট ১৫১.২৮ থাকলেও হৃদয়ের স্ট্রাইকরেট ছিল ১০০-এর চেয়ে কম। সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নাবানে জর্জরিত হতে হয়েছে তাকে। আধুনিক ক্রিকেট, পাওয়ার হিটিং, রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেটে দুর্বলতা নিয়ে হৃদয়ের উত্তর ছিল, দলের প্রয়োজনটাই আগে।
লিটন-হৃদয়ের বদৌলতে পরীক্ষার হটসিটে বসতে হয়নি জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারী ও রিশাদ হোসেনদের। তবে বোলিং সেক্টর নিয়ে একটু হতাশা থেকেই গেল। বোলাররা সুযোগের সুবিচার কতখানি করতে পেরেছেন সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ, ভারতের বিপক্ষে শতকের নিচে গুটিয়ে যাওয়া হংকং ১৪৩ রানের লড়াকু স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা টাইগার শিবিরে অস্বস্তি জন্ম দিয়েছে। ফলে ইচ্ছা সত্ত্বেও ম্যাচপরবর্তী তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারেননি লিটন।
আরও পড়ুন
| রানরেট নিয়ে বিচলিত নন হৃদয় |
|
এদিন ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রান করা হংকং শেষ পর্যন্ত স্কোর বোর্ডে জমা করে ১৪৩ রান। যা বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জে ফেলে। কারণ, আবু ধাবির এই মাঠে এর আগে কখনও জয়ের স্বাদ পায়নি টাইগাররা। ‘জুজু’ নিয়েই খেলতে নামে তারা। তারমধ্যে চিরচেনা পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ ছিলেন মেহেদী হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টার বরাবরের মতো ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের চেপে রেখেছেন। তবে ছিলেন উইকেটশূন্য। তাসকিন আহমেদ কোটার সবগুলো ওভার হাত ঘুরিয়ে দুই উইকেট তুলেছেন। তবে সাড়ে নয় ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন।
টাইগার বোলারদের মধ্যে সফল তানজিম হাসান ও রিশাদ। তানজিম একদম অচেনা কন্ডিশনে খেলতে নেমেছিলেন। এর আগে শেখ আবু জায়েদের মাঠে বিচরণ হয়নি তার। তারপরও উইকেট বুঝে-পড়ে পেয়েছেন সাফল্যের দেখা। চার ওভারে ২ উইকেট তুলেছেন। দলের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম রান (২১) খরচ করেছেন তিনি। লেগ স্পিনার রিশাদও প্রতিপক্ষকে খুব একটা সুবিধা করতে দেননি। রান খরচ করেছেন একটু বেশিই।
এশিয়া কাপের দোরগোড়া পেরোনো বাংলাদেশের পরবর্তী লক্ষ্য শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের মুখোমুখির আগে নিশ্চয়ই আপন কাঠগড়ায় নিজেদের দাঁড় করাবেন ক্রিকেটাররা। ভুল-শুদ্ধির এই মিশনে এক্সর্টা রান কমিয়ে আনা, ভালো ফিল্ডিং এবং পাওয়ার হিটিংয়ে পূর্ণ মনোযোগ-তবেই তিনবার এশিয়া কাপের শিরোপার মঞ্চে ওঠার কষ্ট চারবারে গিয়ে মোচন বাংলাদেশের।
No posts available.
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩১ পিএম
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১২ পিএম
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৫৬ পিএম

পাঁচ মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরছেন দক্ষিণ আফ্রিকার গতির তারকা আনরিখ নরকিয়া। ঘরোয়া প্রতিযোগিতা সিএসএ টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ দিয়েই মাঠে ফেরার অপেক্ষায় তিনি। চলতি বছরের মে মাসে আইপিএলে খেলার পর থেকেই মাঠের বাইরে নরকিয়া।
মানসিকভাবে অসুস্থতার কারণে জুনে মেজর লিগ ক্রিকেটে খেলতে পারেননি নরকিয়া। একই কারণে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না দলের সঙ্গে। সর্বশেষ ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিলেন ৩১ বছর বয়সি এই পেসার।
টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের নতুন আসরে ডলফিনসের হয়ে খেলবেন নরকিয়া । শনিবার কিংসমিডে টাস্কার্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরার কথা রয়েছে। তাঁর। দীর্ঘ পুনর্বাসনের পর মাঠে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত ডান হাতি এই পেসার বলেছেন, ‘পুনর্বাসনের শেষ সময়টা সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে। কারণ তখন মাঠে ফেরার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এখন আবার খেলার সুযোগ পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত।’
টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ শুরু হবে ২৯ অক্টোবর এবং চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। আটটি দল একবার করে একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। এরপর এলিমিনেটর ও কোয়ালিফায়ারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গত আগস্টে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। আজ মঙ্গলবার রাতে বিসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে, চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনও তাদের কাছে জমা পড়েছে।
বিসিবিকে দেওয়া প্রতিবেদনের আকার প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠা। এতে বিপিএলের দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যপ্রণালি ও পরিচালনাগত ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন, ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রক্রিয়া, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা বাড়ানো, ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সবার জন্য যোগাযোগ কাঠামো আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কাজ শেষ হলেও এখনই বিসিবি সব তথ্য প্রকাশ করবে না। চলমান প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যও করেনি দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। স্বাধীন তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বিসিবি বিবেচনায় নেবে এবং আইসিসির দুর্নীতি দমন কোড অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনে আরও তদন্ত করবে।
দেশীয় ক্রিকেটকে নিরাপদ রাখতে বিসিবি একটি স্বাধীন ইন্টিগ্রিটি ইউনিট গঠন করেছে। ইউনিটটির নেতৃত্বে থাকবেন একজন স্বাধীন চেয়ারম্যান, যা বোর্ডের স্বচ্ছতা ও নিয়মভিত্তিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করবে।

ইংল্যান্ড ক্রিকেটে বিশেষ অবদানের জন্য জেমস অ্যান্ডারসনকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। আজ উইন্ডসর ক্যাসেলে প্রিন্সেস অ্যানের হাত থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন দেশের কিংবদন্তি পেসার।
ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ গর্বের উপাধি নাইটহুড। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সম্মাননা তালিকায় একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে নাম ছিল অ্যান্ডারসনের। পুরস্কার গ্রহণের পর থেকে তার নামের আগে ‘স্যার’ যুক্ত হলো।
অ্যান্ডারসনের শৈশবের ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছে,
"স্যার জেমস অ্যান্ডারসন! আজ উইন্ডসর ক্যাসেলে প্রিন্সেস অ্যানের কাছ থেকে নাইটহুড গ্রহণ করেছেন। সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলার।"
২২ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া অ্যান্ডারসন ২০২৪ সালের জুলাইয়ে টেস্ট থেকে অবসর নেন। ১৮৮ টেস্টে ৭০৪ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ এবং বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। তাঁর সামনে কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন ও শেন ওয়ার্ন।
২০২০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাউদাম্পটনে ইতিহাস গড়েন অ্যান্ডারসন, টেস্টে প্রথম ফাস্ট বোলার হিসেবে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডের জুটি টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাসের অন্যতম সেরা। দুজন মিলে নেন ১২শর বেশি উইকেট এবং ইংল্যান্ডকে উপহার দেন চারটি অ্যাশেজ সিরিজ।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোটে পড়েন ভারতের সহ-অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। সেই চোটের কারণে সিডনির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এই ব্যাটারকে। আইয়ারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নতুন তথ্য জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। ভারতীয় এই ব্যাটারের পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও পাঁচ থেকে সাত দিন সময় প্রয়োজন।
আজ ক্রিকবাজের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর আইয়ার এখন স্থিতিশীল রয়েছেন। তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি এখন স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন, বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং নিজেই ছোটোখাটো কাজ সারছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইয়ারের শারীরিক অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। বিসিসিআই পরিবারের এক সদস্যকে সিডনিতে পাঠানোরও ব্যবস্থা করছে বলে জানিয়েছে ক্রিকবাজ।
আরও পড়ুন
| এশিয়া কাপ থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ভারতের |
|
আইয়ারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আপডেট দিয়েছেন ভারতীয় টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। আজ টি টোয়েন্টি সিরিজের আগে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
'ওর (সূর্যকুমার) চোটের খবর জানার পরই প্রথম দিন আমি ফোন করি। তখন জানলাম, ওর ফোন নেই। তাই ফিজিও কামলেশকে ফোন করি। উনি জানান, আইয়ার স্থিতিশীল। এখন কথা বলছে, মেসেজের জবাব দিচ্ছে। সবকিছু ভালোই আছে। ও বলেছে, আরও কয়েকদিন নিজের যত্ন নেবে। তবে ওর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, এটাই সবচেয়ে ভালো খবর।'
আরও পড়ুন
| র্যাঙ্কিংয়ের তিন বিভাগেই সেরা তিনে অজি অলরাউন্ডার |
|
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে জিতলেও, ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে ভারত। আগামীকাল থেকে শুরু পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজের টি-টোয়েন্টি দলে নেই আইয়ার। ভারতের পরবর্তী ওয়ানডে সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। রাঁচিতে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু সেই সিরিজ।

আগামী বছর ভারতে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। সহযোগী আয়োজক হিসেবে থাকছে শ্রীলঙ্কা। আগামী বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এশিয়া কাপ থেকেই নেওয়া শুরু করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন দলটির অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিরই অংশ বলছেন সূর্যকুমার,
'প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ দিয়েই, এখনও তা চলমান। এটা ভাবছি না যে, বিদেশে এসে খেলছি বলে এটি আলাদা সিরিজ। এটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতিরই অংশ, তবে একই সঙ্গে এটা চ্যালেঞ্জিংও, তাই আমি নিশ্চিত দারুণ সিরিজ হবে।'
আরও পড়ুন
| র্যাঙ্কিংয়ের তিন বিভাগেই সেরা তিনে অজি অলরাউন্ডার |
|
ওয়ানডে সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ভারত। সাম্প্রতিক পাওয়ার-প্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন মিচেল মার্শরা। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং নিয়ে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার বলেন,
'এটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জ। আমরা দেখেছি তারা (অস্ট্রেলিয়া) কীভাবে ওয়ানডে সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে। পাওয়ার-প্লে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।'
ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না ভারতের অভিজ্ঞ পেসার জাসপ্রিত বুমরা। কাল টি-টোয়েন্টি দিয়ে ফিরছেন তিনি। কীভাবে ভালো প্রস্তুতি নিতে হয় সেটি বুমরাহ ভালো জানেন বলে মনে করেন ভারত অধিনায়ক,
'সে (বুমরাহ) এত বছর ধরে যেভাবে ক্রিকেট খেলছে, নিজেকে সবসময় সেরা পর্যায়ে রেখেছে। সে জানে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়, কীভাবে খেলতে হয়। আমি মনে করি দলের মধ্যে সে-ই এদেশে (দক্ষিণ আফ্রিকা) সবচেয়ে বেশি এসেছে, সবাই তার সঙ্গে কথা বলেছে।'
আরও পড়ুন
| শেষ দিনে জিসানের ৩ রানের আক্ষেপ |
|
ভারত দলে অনেক বিকল্প থাকায় একাদশ নির্বাচন করাও কঠিন বলে মনে করেন সূর্যকুমার,
'এটা এক ধরনের মাথাব্যথা, এত বিকল্প আছে দলে! পেসার, স্পিনার, ওপেনার থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত ব্যাটিং অপশন। তাই যাদের খেলানো যাচ্ছে না, তাদের বোঝানো একটু কঠিন।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডি। টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ফিরছেন তিনি। সূর্যকুমার বলেন,
'আমার মনে হয় সে ভালো আছে। গতকাল কিছুটা রান করেছে, নেটে ব্যাটিং করেছে। আজ ঐচ্ছিক অনুশীলন, তাই বিশ্রাম নিয়েছে।’
মানুকা ওভালে আগামীকাল ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া দুইটায়।