চতুর্থ দিন শেষে অনেকটাই নিশ্চিত ছিল ম্যাচের ফলাফল। শেষ দিনে দারুণ কিছু হতে হলে বাংলাদেশকে হতে হত আগ্রাসী। তবে সেটা আর হলো না। নাজমুল হোসেন শান্ত করলেন টেস্টে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, তাতে ভর করে স্বাগতিকরা ছুঁড়ে দিল এমন টার্গেট, যা তাড়া করা প্রায় অসম্ভবই। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের রক্ষণাত্মক কৌশলে দ্রুত কিছু উইকেট তুলে বাংলাদেশ শিবিরে জাগল জয়ের সুবাস। সব রোমাঞ্চ ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ হল ড্রতেই।
গল টেস্টের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৬ উইকেটে ২৮৫ রানে। ২৯৬ রানের লক্ষ্যে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৪ উইকেটে ৭২ রানে।
বাংলাদেশ শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল ৩ উইকেটে ১৭৭ রানে। দিনের খেলা সব মিলিয়ে প্রায় ৯৫ ওভার হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশ যদি একটা টার্গেট ছুঁড়ে দিত, তাহলে ম্যাচের একটা ইতিবাচক ফল বের করার ভালো সুযোগ তৈরি হতেও পারত। তবে প্রথম সেশনে শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলে রয়েসয়েই ব্যাট করেন, ফলে রানের চাকা ছিল বেশ ধীর।
এর মাঝেই অহেতুক রান চুরি করতে গিয়ে কাঁটা পড়েন মুশফিকুর। বৃষ্টি ছিল গুঁড়িগুঁড়ি, খেলা বন্ধের আগে সম্ভাব্য শেষ ওভারে ৪৯ রানে থাকা অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ সিঙ্গেলস বের করতে গিয়ে শিকার হন রান আউটের।
এরপর খেলা আবার শুরুর পর লিটন দাস ক্রিজ ছেড়ে ব্যাট চালাতে গিয়ে বোল্ড হন বাঁহাতি স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকের বলে। খানিক বাদে এক ডিজিটে স্টাম্পড হন জাকের আলি অনিক। তবে এর আগেই বাংলাদেশের লিড আড়াইশ পার হওয়ায় দেখার ব্যাপার ছিল বাংলাদেশ আর কতোটা সময় ব্যাট করে।
তবে অধিনায়ক শান্ত নব্বইয়ের ঘরে যাওয়ার পর দ্রুত রান বের না করে এগিয়ে যান ধীরগতিতে। শেষ পর্যন্ত থারিন্দুর বলে সিঙ্গেলস নিয়ে করেন পূর্ণ করে শতক। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটার এরপর হাঁকান তিনটি বিশাল ছক্কা। ইনিংস ঘোষণার আগে অপরাজিত থাকেন ১২৫ রানে।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শান্ত। এর আগে তিনি এই কীর্তি গড়েছিলেন ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
৩৭ ওভারে ২৯৬ রানের অবিশ্বাস্য টার্গেটে প্রথম ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের আভাস ছিল শ্রীলঙ্কার। তবে বেশ স্পিন ধরা উইকেটে আক্রমণে এসেই টার্ন পান তাইজুল ইসলাম, যা বদলে দেয় চিত্র। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন লাহিরু উদারা।
অন্যপ্রান্তে এরপর আঘাত হানেন প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া নাঈম হাসানও। তার বলে টপ এজ হয়ে শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ২৫ বলে ২৪ করে ফেরেন পথুম নিশাংকা। এরপর খোলসবন্দী হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। মাটি আঁকড়ে ব্যাট করার প্রচেষ্টায় নিজের বিদায়ী টেস্টের শেষ ইনিংসটা বড় করতে ব্যর্থ হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস।
এই উইকেটের পর জেগে ওঠে বাংলাদেশের জয়ের আশাও। সেটা আরও বাড়িয়ে দিয়ে ৪৪ বলে ৬ করা দীনেশ চান্দিমালকে বোল্ড করেন ইনিংসে তিন উইকেট পাওয়া তাইজুল। এরপর বাকি সময়ে আর উইকেট না ধরা দেওয়ায় দুই অধিনায়ক মেনে নেন ড্র।
টেস্ট ক্রিকেট এখন আর অতি সংযমী ব্যাটিংয়ের খেলা নয়। স্ট্রাইক রেটে মনযোগ দিতে এখন বাজবল ক্রিকেট দর্শনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত। ৫ দিনের খেলায় ফলাফল অনূকুলে আনতে এই ফর্মূলা প্রয়োগকে আদর্শ মানছে যখন টেস্টে উপরের সারির দলগুলো, সেখানে ঠিক বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসে-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরি, ৪র্থ উইকেট জুটিতে ২৬৪, বিদেশের মাটিতে প্রথম খেলার প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অফ স্পিনার নাঈম হাসানের ৫ উইকেটের কল্যানে প্রথম ইনিংসে ১০ রানের লিড, উভয় ইনিংসে শান্ত'র সেঞ্চুরিতে বীরত্ব প্রকাশ পেয়েছে। ৪র্থ দিন শেষে বাংলাদেশ দল যেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাতে গন্তব্য শুধু ড্র- নয়, জয়ের সম্ভাবনাও ছিল বাংলাদেশের।
তবে চতুর্থ ইনিংসে ৩২ ওভারের মধ্যে দুই স্পিনার তাইজুল (১৬-৬-২৩-৩)-নাঈম হাসানের (১৩-৪-২৯-১) একটি স্পেলে ৪ উইকেট ফেলে দেয়ায় আফসোসে থেমেছে গল টেস্ট। ৪র্থ ইনিংসে ২৯৫ রানের টার্গেট দিয়ে পর্যাপ্ত সময় ব্যাট করতে না দেয়ায় জয়ের সম্ভাবনার পথে তৈরি হয়েছে বাধার দেয়াল। শেষ পর্যন্ত অনেক অর্জনের গল টেস্টের পরিসমাপ্তি হয়েছে ড্র-এ। ৫ ওভার আগে মিউচ্যুয়াল ড্র'র প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
টেস্ট ক্রিকেটে উভয় ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডটি মুমিনুলের। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে সে কৃতি (১৭৬ও ১০৫) তার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিতে (১৪৬ ও ১২৪) শান্ত ছুঁয়েছিলেন মুমিনুলের সেই কৃতিকে। গল টেস্টে এসে মুমিনুলের সেই কৃতিকে গেছেন ছাড়িয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে একাধিক টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছেন (১৪৮ও ১২৫*)।
চতুর্থ দিন শেষে ৫৬ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৬ মিনিটে বেরসিক বৃষ্টি যখন আক্রান্ত করে, তখন সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে ছিলেন শান্ত। দুই ঘন্টা ১৪ মিনিট পর পুনরায় মাঠে বল গড়ানোর পর সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে বসেছিলেন শান্ত। ৯০ রানের মাথায় প্রবথ জয়সুরিয়াকে সুইপ করতে যেয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে উদারার ফ্লাইং ক্যাচে পরিণত হতে পারতেন তিনি। তবে ভাগ্যের কৃপায় সে যাত্রায় বেঁচে যাওয়ার পর আর ভুল করেননি। থারিন্দুকে রিভার্স সুইপে থার্ডম্যানে পাঠিয়ে সিঙ্গল নিয়ে পূর্ণ করেছেন ৭ম টেস্ট সেঞ্চুরি, যে সেঞ্চুরিতে গড়েছেন বেশ ক'টি রেকর্ড।
১৯০৯ সালে ওয়ারেন লন্ডনের ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিতে (১৩৬ও ১৩০) অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন ব্রাডসলে যে রেকর্ডের শুরুটা করেছিলেন, শনিবার শান্ত'র কৃতিত্বে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫। এই কৃতিমানদের তালিকায় ব্যাটারদের সংখ্যা ৭৭ জন।
টেস্টে ১৪ তম ব্যাটার হিসেবে একাধিকবার উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন শান্ত। যে রেকর্ডে গাভাস্কার, পন্টিং, ওয়ার্নারের এমন কৃতি আছে ৩টি ম্যাচে। ২টি ম্যাচে উভয় ইনিংসে অ্যালান বোর্ডার, গ্রেগ চ্যাপেল, ডি সিলভা, দ্রাবিড়, হেইডেন, ক্যালিস, সাঙ্গাকারা, সাটক্লিফ, জর্জ হ্যাডলি, ব্রেন্ডন টেলর, ক্লাইভ ওয়ালকটের পাশে এখন উচ্চারিত হবে শান্ত'র নাম। টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচের উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরির রেকর্ডে ১৬তম স্থানে বাংলাদশ অধিনায়ক।
শান্ত'র রেকর্ডের দিনে আফসোস নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন মুশফিক। ২২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে হাফ সেঞ্চুরির কক্ষপথে এদিন ছিলেন মুশফিক। বৃষ্টির ঠিক আগের বলে প্রবথ জয়সুরিয়াকে ক্রস খেলে মিড অনে বল ঠেলে সিঙ্গলের চেষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিক, থারিন্দুর ডাইরেক্ট থ্রো-তে মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি হাতছাড়া করার কষ্ট নিয়ে ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে।
প্রথম ইনিংসে ৪র্থ উইকেট জুটিতে শান্ত-মুশফিকুরের অবদান ২৬৪, দ্বিতীয় ইনিংসে সেখানে এই জুটি যোগ করেছেন ১০৯। তবে এই জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় একটা দমকা হাওয়া বইয়ে গেছে। মাত্র ১২ রানে পড়ে গেছে ৩ উইকেট। ১৯০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন শান্ত ৫২.৬৩% স্ট্রাইক রেটে।
সেঞ্চুরিতে সময়ক্ষেপনে অপরাধবোধে তাড়িত ছিলেন বলেই সেঞ্চুরির পর ২৫ রান যোগ করেছেন মাত্র ৯ বলে। প্রথম জয়সুরিয়াকে এক ওভারে মেরেছেন ২টি ছক্কা, পরের ওভারে থারিন্দুকে মেরেছেন একটি ছক্কা। তবে ব্যাটিং অনুশীলনের এই ইনিংসে হতাশ করেছেন লিটন (৩), জাকির আলী অনিক (২)। বৃষ্টির পর দ্বিতীয় ওভারে থারিন্দুর বিগ টার্নিং ডেলিভারীতে বোল্ড হয়েছেন লিটন। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারী আঘাত হেনেছে মিডল স্ট্যাম্পে। একই ধরনের ডেলিভারী ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন জাকের আলী অনিক। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে এই থারিন্দুই ছিলেন সফল (৩/১০২)।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৫/৬ স্কোরে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছেন যখন শান্ত, তখন চতুর্থ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ২৯৫। ৩৭ ওভারে এই টার্গেট পূর্ণ করতে হলে ওভারপ্রতি করতে হতো তাদের ৬.৩২ রান। প্রথম ৫ ওভার ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে সে লক্ষের দিকে ছুটতে চেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
তবে উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি টার্ন আদায় করতে পারায় তাইজুল-নাঈম ছড়িয়েছেন আতঙ্ক। তাইজুল নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ ডেলিভারিটি দিয়েছিলেন ব্যাক অব লেন্থ। তাতে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে লংকান ওপেনার উদারা (৯) স্ট্যাম্পিংয়ে কাঁটা পড়েছেন। নাঈম হাসান বল করতে এসে স্লোয়ারে নিশাঙ্কাকে (২৪) শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন ।
ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ম্যাথুউজ থেমেছেন মাত্র ৮ রানে। তাইজুলের আর্ম বল লেগ সাইডে ঘোরাতে যেয়ে ব্যাট-প্যাড ক্যাচ উঠেছে, সিলি পয়েন্ট থেকে তা ঝাঁপ দিয়ে লুফে নিয়েছেন মুমিনুল। এক ওভার পর তাইজুলের শিকার চান্দিমাল। বোল্ড আউটে চান্দিমালকে (৯) ফিরিয়েছেন তাইজুল। তাইজুলের উইকেট সংখ্যা বাড়তে পারতো আরও। কামিন্দু মেন্ডিজ ৭ রানের মাথায় দিয়েছিলেন ক্যাচ। উড়ন্ত ক্যাচ নিতে চেয়ে মুশফিক ব্যর্থ না হলে তাইজুলের বোলিংয়ের পাশে থাকতো ৪ উইকেট।
তারপরও এই টেস্টে লংকান লিজেন্ডারি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজকে গার্ড অব অনারে দু'দল দিয়েছে ফেয়ারওয়েল। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে টেস্ট অভিষেক তার গল-এ। ১৬ বছরের ক্যারিয়ার থেমেছে তার সেই গল-এ। ১১৯ টেস্টে ১৬ সেঞ্চুরি, ৪৫ ফিফটিতে ৮২১৪ রান এবং ৩৩ উইকেটে থামলো এই অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ার।
টেস্ট ক্রিকেটে আগেও দেখা পেয়েছেন দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির। গল টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে আরও একবার সেই কীর্তির সামনে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পঞ্চম দিনে তিন অঙ্কের ঘরে পা রেখে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাম লিখিয়েছেন এমন এক ক্লাবে, যেখানে তার আগে জায়গা করে নিতে পারেননি বাংলাদেশের কেউই।
আগেররদিন ফিফটি তুলে নেওয়া শান্ত দ্বিতীয় সেশনে থারিন্দু রত্নায়েকের বলে সিঙ্গেলস নিয়ে করেন শতক। এর মধ্য দিয়ে তার নাম উঠে গেছে অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ‘টুইন’ বা জোড়া সেঞ্চুরি করা ব্যাটারদের তালিকায়। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ১২৫ রান।
আরও পড়ুন
জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন অধিনায়ক বাভুমা |
![]() |
এর আগে ২০০০ সালের পর থেকে অধিনায়ক হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন রিকি পন্টিং (৩ বার), মাইকেল ভন, ইনজামাম-উল-হক, ব্রেন্ডন টেইলর, মিসবাহ-উল-হক, বিরাট কোহলি, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
শান্তর হাত ধরে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে তৃতীয়বার জোড়া সেঞ্চুরির দেখা মিলেছে। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৭৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করে টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির প্রথম কীর্তি গড়েন মুমিনুল হক।
এরপর শান্ত ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শান্ত দুই ইনিংসে করেন যথাক্রমে ১৪৬ ও ১২৪ রান। এবারের জোড়া শতক দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে ১৪তম খেলোয়াড় দুই বা তার বেশিবার টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার বিরল রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন শান্ত।
বিরল এই তালিকায় প্রথম দিকেই আছেন ইংল্যান্ডের হারবার্ট সাটক্লিফ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জর্জ হেডলি ও ক্লাইড ওয়ালকট - তিনজনই দুই বার করে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। এরপর ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার নাম লেখান এই ক্লাবে। এরপর তার পথ অনুসরণ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল, অ্যালান বর্ডার, ম্যাথু হেইডেন ও ভারতের রাহুল দ্রাবিড়। এই চারজনের প্রত্যেকেই দুবার করে টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন।
আরও পড়ুন
নাঈমের ফাইফারের পর বাংলাদেশের স্বস্তির দিন |
![]() |
আর শ্রীলঙ্কার হয়ে এই কীর্তি গড়েছেন দুই গ্রেট অরভিন্দ ডি সিলভা ও কুমার সাঙ্গাকারা। দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র প্রতিনিধি কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিংও আছেন এই তালিকায়। এই কীর্তি গড়েছেন তিনবার, যা আরও করেছেন তার স্বদেশি ডেভিড ওয়ার্নার ও গাভাস্কার।
গল টেস্টে চতুর্থ দিন বাংলাদেশ দলকে যেমনটা দেখতে চেয়েছেন সমর্থকরা, তেমনটাই দেখতে পেরেছেন। তৃতীয় দিন শেষে ৩৬৪/৪ স্কোর নিয়ে লিডের স্বপ্ন দেখেছে শ্রীলঙ্কা। অফ স্পিনার নাঈম হাসানের ভয়ংকর এক স্পেলে (৩.৩-০-৫-৩) সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ১০ রানের লিড নিয়ে দিনের শেষ দুই সেশন নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেয়ার পরীক্ষাটা ভালই দিয়েছে বাংলাদেশ টপ ও মিডল অর্ডাররা। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান শান্ত ৫৬ এবং মুশফিক২২ রানে আছেন অবিচ্ছিন্ন। প্রথম ইনিংসে ২৬৪ রানের পার্টনারশিপে উদ্বুদ্ধ এই জুটি ইতোমধ্যে যোগ করেছেন ৪৯ রান। চতুর্থ দিন শেষে ১৮৭ রানের লিড নিয়ে গল টেস্টের চিত্রনাট্য তৈরি করেছে বাংলাদেশ।
অলৌকিক কোনো দুর্ঘটনা না হলে ড্র'র দিকে ধাবিত এখন টেস্টটি।
২০১৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে চট্টগ্রামের ছেলে নিজের হোম গ্রাউন্ডে টেস্ট অভিষেকে করেছিলেন দারুণ কৃতি। টেস্ট অভিষেকে চেনা মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট (৫/৬১)। ২০২০সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ও ৫ উইকেটের (৫/৮২) কৃতি আছে তার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের হোম গ্রাউন্ড চট্টগ্রামে ২০২২ সালে করেছেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং (৬/১০৬)। অথচ, টেস্ট দলে তাইজুল-মিরাজ অপরিহার্য, ব্রাত্য সেখানে নাঈম হাসান। ৭ বছরে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ১৩টি। বিদেশের মাটিতে এর আগে একবারই কেবল সুযোগ পেয়েছেন, ২০১৯ সালে কনকাশন সাব হিসেবে পিঙ্ক বলের টেস্টে খেলার সেই সুযোগ পেলেও বল হাতে নিতে পারেননি।
আরও পড়ুন
নাঈমের ফাইফারের পর বাংলাদেশের স্বস্তির দিন |
![]() |
অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ইনজুরিতে না পড়লে গল টেস্টে নাঈম হাসানের একাদশে থাকার সম্ভাবনা ছিল না। সেই ব্যাক আপ অফ স্পিনারই অসাধ্য সাধন করেছেন। বিদেশের মাটিতে এই প্রথম টেস্টে বল হাতে নিয়ে দেখেছেন ইনিংসে ৫ উইকেটের মুখ। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা যখন লিডের সম্ভাবনা দেখেছে, তখনই নাঈম হাসান সে সম্ভাবনা নাস্যাৎ করে দিয়েছেন। লাঞ্চ ব্রেকের পর মাত্র ২০ রানে শ্রীলঙ্কার শেষ ৪ উইকেট গেছে উড়ে, সেই ৪টি উইকেটের ৩টিই নাঈমের। লাঞ্চের পর চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে সেঞ্চুরির পথে পাঁ বাড়ানো কামিন্দু মেন্ডিজকে মিডল এন্ড অফ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারিতে ফ্লিক শটের ফাঁদে ফেলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। ৮৭ রানে কামিন্দুকে থামিয়ে দিয়ে ৮৪ রানের পার্টনারশিপ ভেঙ্গে ওই ওভারের শেষ বলে কুইকারে বোল্ড করেছেন থারিন্দু রত্নায়েককে (০)। নিজের এক ওভার বিরতি দিয়ে টেল এন্ডার আসিথা ফার্নান্ডোকে (৪) রিভার্স সুইপের পাতা ফাঁদ ফেলে বোল্ড করেছেন।
তৃতীয় দিন নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কা ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলে চতুর্থ দিন পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ৪র্থ ৫ উইকেট (৪৩.২-৪-১২১-৫)। পেসার হাসান মাহমুদ চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনের গর্জনে পেয়েছেন ২ উইকেট। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১৯) এবং কুশল মেন্ডিজকে (৫) ফিরিয়ে দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। যে দুটি উইকেটের ভাগীদার উইকেট কিপার লিটন। দুটি ক্যাচই নিয়েছেন লিটন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে! নাঈম হাসানের ৫ উইকেটের পাশে (৫/১২১) হাসান মাহমুদের ৩ উইকেট (৩/৭৪)। তাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো প্রথম ইনিংসে লিড নিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে যে ব্যাটাররা ছিলেন অফ ফর্মে, দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের দিকে চোখ ছিল সবার। কিন্তু ওপেনার বিজয় জানিয়ে দিলেন তিনি টেস্ট খেলতে ইচ্ছুক নন। টেস্টে ১ যুগে মাত্র ৭ টেস্ট খেলার সুযোগ নিয়ে এতোদিন নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের উপর বিরক্তিবোধ এখন আর প্রকাশ করার উপায় নেই তার। গল-এ ব্যাটিং স্বর্গে প্রথম ইনিংসে ০'র পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রানে থেমেছেন। প্রবথ জয়সুরিয়ার আউটসাইড অফ-এ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ। মুমিনুল থেমেছেন ১৪ রানে, থারিন্দুর বলে সুইপ করতে যেয়ে ব্যাট হয়ে হেলমেটে বল লেগে দিক পরিবর্তন করে শর্ট পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসের হতাশা কাটিয়ে সেঞ্চুরির পথে ছিলেন সাদমান। তবে ৬ষ্ঠ ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পূর্ণ করতে পারেননি এই ওপেনার। শ্রীলংকা পেসার মিলান রত্নায়েকের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে ব্যাক প্যাডে লেগেছে বলের আঘাত, এলবিডাব্লুউতে থেমেছেন সাদমান ৭৬ রানে। ১২৬ বলের মোকাবেলায় ৭টি বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি এই ইনিংসে।
আরও পড়ুন
৫৪ টেস্ট পর বাদ পড়লেন লাবুশেন, চোটে ছিটকে দিল স্মিথকে |
![]() |
চতুর্থ দিনে পিচে বল পড়ে খানিকটা নিচু বাউন্স হয়েছে। আনইভেন বাউন্সও দেখা গেছে। ৫ম দিনে স্পিনাররা ছড়াতে পারে আতঙ্ক, তেমন পূর্বাভাসই পাওয়া যাচ্ছে। তবে চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জের আগে তৃতীয় ইনিংসে নিজেদের ব্যাটিংয়ের দিকে মনোনিবেশ করাটাই উত্তম। পঞ্চম দিনটি হোক আরও উজ্জ্বল। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির কৃতি গড়ুক শান্ত-মুশফিক। গল টেস্টের শেষ দিনে সেদিকেই তাকিয়ে এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে চোট নিয়ে খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সেই মঞ্চে শেষ হাসি হাসা টেম্বা বাভুমাকে আপাতত অবশ্য থাকতে হবে মাঠের বাইরেই। চোটের কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার আসছে দুই টেস্টের সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক বাভুমা।
ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তার পরিবর্তে এই সিরিজে দলের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ স্পিনার কেশভ মহারাজ।
বাভুমাহীন স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন ৫ নতুন মুখ। এই সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়কেও। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সেঞ্চুরিয়ান এইডেন মার্করাম ও অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদা। আর প্রথম টেস্ট না খেললেও দ্বিতীয় ম্যাচে দলে থাকবেন ফাস্ট বোলার লুংগি এনগিডি।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের কোচ হলেন টিম পেইন |
![]() |
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়ায় ইনিংসের শুরুতে এক রান নিতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে বাভুমার। কয়েক দফায় মাঠেই চিকিৎসা নেওয়ার পর চালিয়ে যান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। খুঁড়িয়ে খুড়িয়েই দলকে জেতানোর পথে খেলেন ৬৬ রানের দারুণ এক ইনিংস। ম্যাচ শেষে তিনি জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ অমান্য করে দলের প্রয়োজনে মাঠে থাকতে চেয়েছিলেন।
তবে সেই চোট থেকে এখনও সুস্থ না হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ এবার মানতেই হচ্ছে বাভুমাকে। ফলে থাকতে হবে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের টেস্ট সিরিজ।
দক্ষিণ আফ্রিকা স্কোয়াড:
ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটজকে, ডিওয়াল্ড ব্রেভিস, করবিন বোশ, টনি ডি জর্জি, জুবায়ের হামজা, কেশভ মহারাজ (অধিনায়ক), কোয়েনা মাফাকা, উইয়ান মুল্ডার, লুহান্দ্রে প্রিটোরিয়াস, লেসেগো সেনোকোয়ানে, প্রেনেলান সুব্রায়েন, কাইল ভেরেন, কডি ইউসুফ, লুংগি এনগিডি (শুধুমাত্র দ্বিতীয় টেস্ট)।
প্রথম তিন দিন যেভাবে দাপট দেখিয়েছেন ব্যাটাররা, তাতে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল লিডের দিকেই। তবে বাঁধ সাধলেন নাঈম হাসান। তরুণ এই স্পিনারের ফাইফারে শক্ত অবস্থানে থেকেও পাঁচশ ছোঁয়া হলো না স্বাগতিকদের। ক্রমেই স্পিন ধরা উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকলেও শাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটিতে লিডটা বেশ বাড়িয়ে নিল বাংলাদেশ।
গল টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১৭৭ রান, লিড ১৮৭ রানের। এর আগে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে করতে পারে ৪৮৫ রান।
শ্রীলঙ্কা এই স্কোরে গুটিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন নাঈম। ক্যারিয়ারের এর আগে কখনই বিদেশের মাটিতে পাঁচ উইকেট না পাওয়া এই অফ স্পিনার দিনের শুরু থেকেই পেয়েছেন টার্ন। সাথে নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে ব্যাটারদের চাপে রেখেছেন একপ্রান্ত থেকে। আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম অবশ্য সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি টার্ন।
আরও পড়ুন
অফ স্পিনার নাঈমে লিড, ড্র-র পথে গল টেস্ট |
![]() |
এদিন নাঈমের প্রথম উইকেটে অবশ্য কৃতিত্ব বেশি পাবেন লিটন দাসই। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাট ছুঁয়ে চোখের পলকেই চলে যায় তার গ্লাভসে। এরপর কুসাল মেন্ডিসের উইকেটেও দেখান কিপিংয়ের মুন্সিয়ানা।
হাসান মাহমুদের লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়েছিলেন কুসাল, কানায় লেগে তার লেগ সাইড দিয়ে ছিল বাউন্ডারি হওয়ার পথেই। তবে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত এক ক্যাচে তাকে বিদায় করেন লিটন।
এরপর বাংলাদেশের বোলারদের চাপে ফেলে সপ্তম উইকেটে ৮৪ রান যোগ করেন কামিন্দু মেন্দিস ও মিলান রত্নেয়েকে মিলে। ইনিংসে চমৎকার বল করা হাসান শেষ পর্যন্ত ভাঙেন এই জুটি, ৩৯ রানে রত্নেয়েকেকে বোল্ড করে।
এরপর বড় উইকেটটা পান নাঈম। সেঞ্চুরির পথে থাকা কামিন্দু (৮৭ রান) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তিনি। ১৫ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে ৪৮৫ তেই থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ১২১ রানে ৫ উইকেট নেন নাঈম।
প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও দলকে হতাশ করেন এনামুল হক বিজয়। অভিজ্ঞ এই ওপেনার শুরু থেকেই ছিলতা জড়তাগ্রস্ত। প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেন মাত্র ৪ রান। তবে আরেক ওপেনার শাদমান চাপ সরান ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে।
তবে এবারও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ এই ওপেনার সুইপ করতে গিয়ে ফেরেন ১৯ রানে। লিড বেশ না হওয়ায় টার্নিং উইকেটে বাংলাদেশের সামনে তখন বিপদের শঙ্গা ছিলই কিছুটা।
আরও পড়ুন
৫৪ টেস্ট পর বাদ পড়লেন লাবুশেন, চোটে ছিটকে দিল স্মিথকে |
![]() |
তবে সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেটা সামাল দেন শাদমান ও শান্ত মিলেন। ফিফটি পারে সেঞ্চুরির পথে থাকা শাদমানকে থামতে হয় ৭৬ রানে। তবে মিলান রত্নানেয়েকের প্রথম শিকার হওয়ার আগে শান্তর সাথে যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৬৮ রান।
প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ায়ন শান্ত (৫৬*) ও মুশফিকুর রহিম (২২) মিলে অনায়াসেই পার করেন দিনের বাকি অংশ। পঞ্চম দিনে ম্যাচের ফলাফল কোন দিকে যাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে এই জুটির ওপর।