২১ জুলাই ২০২৫, ৩:১৩ পিএম
এক বছরেরও বেশি সময় পর মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ বাংলাদেশ দল জয় দিয়ে রাঙালেও আলোচনায় এসেছে উইকেটের আচরণ। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের চিরচেনা ধীরগতির উইকেট অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দেখা যায়নি। এরপরও মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়া পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছেন উইকেটকে, যা তার কাছে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অগ্রহণযোগ্য। আসলেই কি তাই?
মিরপুরের উইকেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ২০ ওভারের ক্রিকেটে যেখানে আবেদন থাকে স্পোর্টিং উইকেটের, সেখানে অধিকাংশ সময়ই এখানে দেখা মেলে বেশ স্লো, টার্নিং ও নিচু বাউন্সের। ফলে ব্যাটাররা পারেন না সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিং করতে, আর বোলাররা দেখান দাপট। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়, বোর্ডে রান হয় কম আর ম্যাচ হয় লো-স্কোরিং।
মোটা দাগে রাখলে রোববার বাংলাদেশ-পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচটিকে সেই কাতারে আপনি রাখতেই পারেন। কারণ, আগে ব্যাট করা দল মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর সেটা তাড়া করতে প্রতিপক্ষকে খেলতে হয়েছে ১৬তম ওভার পর্যন্ত। ম্যাচটি যদি ২০২১-২২ সালের দিকেও হত, হেসনের দাবিকে আপনি যৌক্তিক মনে করতেই পারতেন। তবে এটা তো ২০২৫ সালের ম্যাচ এবং বাংলাদেশ দল তাদের ব্যাটিংয়ের সময় দেখিয়ে দিয়েছে, মিরপুরের উইকেট অন্তত এদিন লো-স্কোরিং ছিল না।
অবশ্য বাংলাদেশের আগে আনা যেতে পারে পাকিস্তানের ইনিংসের কথাও। বাংলাদেশকে চাপে ফেলে প্রথম তিন ওভারেই দলটি তুলে ফেলেছিল ৩২ রান। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং অর্ডার। উইকেটের আচরণের সাথে তাল না মিলিয়ে বারবার বড় শট খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন পাকিস্তান ব্যাটাররা। ৪৬ রানেই তাতে হারাতে হয় ৫ উইকেট।
এর মাঝেও ফখর জামান খেলেন ৩৪ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৪৪ রানের ইনিংস, যেখানে আবার তিনি জীবন পান দুই বার। এরপর আউট হন বিব্রতকর এক রান আউটে। পাকিস্তানের ইনিংসে এটি ছাড়াও ছিল আরও দুটি রান আউটের ঘটনা। একটি দলের তিন ব্যাটার যখন রান আউটের শিকার হন, ব্যাটিং বিপর্যয় তখন প্রায় অবধারিতই।
এর সাথে যোগ হয় মুস্তাফিজুর রহমানকে একেবারেই না বুঝতে পারা। এটা বলার তো অপেক্ষা রাখে না যে, মিরপুরের উইকেটে মুস্তাফিজুর বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর পেসার। তার স্লোয়ার, কাঁটার এখানে ভীষণ কার্যকর হয়। প্রথম ম্যাচে তিনি আবার ছিলেন নিজের সেরা ছন্দে। চার ওভারে ১৮টি ডট দিয়ে মাত্র ৬ রানে নেন ২ উইকেট।
তার মানে, বাকি ১৫.৩ ওভারে পাকিস্তান করেছে মোটে ১০৪ রান! এই ফরম্যাটে প্রতিপক্ষের একজন বোলার যদি চার ওভারে দেন মাত্র ৬ রান, তাহলে নিশ্চিতভাবে ব্যাটিং করা দলকে অন্য বোলারদের ওপর ভীষণ চড়াও হতেই হবে। পাকিস্তান দল সেটাও পারেনি। অধিকাংশ ব্যাটাররা বাজে শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। ফলে ফখরের ইনিংস ও শেষের দিকে আব্বাস আফ্রিফির ক্যামিও বাদে রানের জন্য বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে সালমান আঘার দলকে।
ম্যাচ শেষে হেসন অবশ্য ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করে অনেকটাই দায় চাপান উইকেটের ওপর। “এই উইকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কোনো দলের জন্যই আদর্শ নয়। আমরা যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটার দায় আমাদেরই। তবে এই ধরনের উইকেট আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যবহার করা ঠিক নয়। হ্যাঁ, ফখর শুরুতে কিছু শট খেলেছিল। আর সেজন্যই আমাদের মনে হয়েছিল উইকেট হয়ত সহজ। কিন্তু আসলে তা ছিল না। বল মুভ করছিল বেশ, হঠাৎ হঠাৎ লাফ দিচ্ছিল। আর তখনই আমাদের ব্যাটাররা ভুল শট বেছে নিয়েছে। সাথে তিনটি রান আউটও আমাদের কাজটা আরও কঠিন করেছে।”
হেসনের মন্ত্যবের প্রেক্ষিতে আসা যাক বাংলাদেশের ইনিংস। তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস যখন আউট হন, তখন ২.২ ওভারে বোর্ডে রান মাত্র ৭। সেখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করেছে ২৭ বল হাতে রেখে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের মত চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশও, তবে এই উইকেটে সেটা কীভাবে কাউন্টার করতে হয়, সেই ব্যাপারে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয় রেখেছিলেন স্বচ্ছ ধারণা। জুটিতে তাই একজন বলের মেধা বুঝে আক্রমণে গেছেন, অন্যজন আবার অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন।
টার্গেট ছোট হওয়ায় এটাই ছিল ব্যাট করার সেরা উপায়। শেষ পর্যন্ত তাওহীদ ৩৭ বলে ৩৬ করে আউট হলেও ইমন ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। খেলেন মাত্র ৩৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস, যা তিনি সাজান ৫ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে। সাথে শেষের দিকে ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন জাকের আলি অনিক।
এই তিনজনের ব্যাটিংই বলে দেয়, দ্বিতীয় ইনিংসেও মিরপুরের উইকেট মোটেও ব্যাটিং বিরুদ্ধ ছিল না। টার্গেট নাগালের মধ্যে থাকায় রয়েসয়ে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। নাহলে অনায়াসেই তারা এই রান ১২-১৩ ওভারের মধ্যেও তাড়া করতে পারতেন। সব মিলিয়ে তাই বলা যায়, পাকিস্তান তাদের ব্যাটিং পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন করতে পারত, তাহলে ১৫০-১৬০ রান খুব সম্ভব ছিল তাদের জন্য। বাংলাদেশের ইনিংস তারই প্রমাণ।
অথচ হেসন কিনা অতীতের মিরপুরের উইকেটের সাথে এই ম্যাচের উইকেটের মিল টেনে দিয়েছেন সতর্ক বার্তা। “ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে হলে ভালো মানের উইকেট দরকার। বিপিএলে কিছু ভালো উইকেট দেখা গেছে ঠিকই, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে এই উইকেটের কোনো মিল নেই। বাংলাদেশ দল যখন বিদেশে খেলে, তখন এমন উইকেট কিন্তু তাদের কোনো সাহায্য করে না। আপনি জানেন না এখানে ১০০, ১৩০ বা ১৫০ – কোনটা ভালো স্কোর। এটা কোনো দলের জন্যই ইতিবাচক নয়।”
হেসন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কোচদের একজন। ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবেও তার জুড়ি মেলা ভার। ক্রিকেটে ডাটার ব্যবহার তিনি বেশ করেন। অথচ পাকিস্তান কোচ কিনা তার দলের ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করলেন উইকেটের ওপর দোষ চাপিয়ে, যা বেশ হতাশাজনকই। তিনি যদি ঠিক হতেন, তাহলে একই উইকেটে বাংলাদেশ দলকেও করতে হত অনেক সংগ্রাম। ১১১ রান করতেই দেখা যেত উইকেটে চলে গেছে ৭-৮টি, আর ম্যাচ গড়িয়েছে ১৯-২০ ওভারে। এর কোনোটিই যেহেতু হয়নি, তাই হেসনের অভিযোগ আর ধোপে টেকে না, অন্তত এই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:২৬ পিএম
এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ভালো দারুণ শুরুরই আভাস দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩.৪ ওভারে ২৬ রান করে স্বাগতিকরা। তবে জাসপ্রিত বুমরাহর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আমিরাতের ইনিংস। কুলদিব যাদব ও শিবাম দুবের ঘূর্নিতে দিশেহারা হয়ে ১৩.১ ওভারে ৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা।
টি-২০ তে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডেই লিখল আমিরাত। এর আগে দুবাইতেই ২০২৪ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬২ রানে অলআউট হয় তারা। কুড়ি ওভারে ভারতের বিপক্ষে যেকোনো দলের এটি সর্বনিম্ন ইনিংস। এছাড়া এশিয়া কাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের বিব্রতকর রেকর্ডেও জায়গা হলো মধ্য প্রাচ্যের দেশটির। ২০২২ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে হংকংয়ের ৩৮ রান টুর্নামেন্টের সর্বনিম্ন।
আরও পড়ুন
অবসরের সময় জানালেন ওতামেন্ডি |
![]() |
দুবাইয়ে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। হার্দিক পান্ডিয়ার প্রথম ওভারেই ৮ রান তুলে নেন আলিশান শারাফু। পরের দুই ওভারে আরো ১৫ রান যোগ করে আমিরাত। ধসের শুরুটা হয় চতুর্থ ওভারে। ১৭ বলে ২২ রান করা শরাফুর স্ট্যাম্প ছত্রখান করে দেন বুমরাহ। আমিরাতের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকেই।
এরপর বাকি ব্যাটারা ছিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মধ্যেই। আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমের (১৯ বলে ২২) ব্যাট থেকে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। আর বাকি কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। ২.১ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন কুলদিব যাদব। আর ২ ওভারে ৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন দুবে।
চোট কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর সরাসরি বিশ্বকাপ দিয়ে জাতীয় দলে ফিরলেন উদেশিকা প্রবোধানি। তাকে নিয়েই সামনের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)।
ঘরের মাঠে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের দল থেকে বাদ পড়া ব্যাটার ইমেশা দুলানিকেও ফেরানো হয়েছে দলে। তবে বাদ পড়েছেন রাশ্মিকা সেভান্দি, মানুদি নানিয়াক্কারা, হানশিমা করুনারত্নে ও ইনোশি ফার্নান্দো।
গত বছরের অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন প্রবোধানি। ফিরে ফিরে আসা হ্যামস্ট্রিং চোট কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপ দিয়েই আবার মাঠে নামবেন ৩৯ বছর বয়সী বাঁহাতি এই অভিজ্ঞ পেসার।
আরও পড়ুন
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দুই ‘জুজু’ |
![]() |
প্রবোধানির সঙ্গে পেস বিভাগে আরও থাকছেন ৩৫ বছর বয়সী আচিনি কুলাসুরিয়া ও ২৪ বছর বয়সী মালকি মাদারা। নানিয়াক্কারার জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া দুলানি মূলত ব্যাক-আপ হিসেবে থাকবেন দলের সঙ্গে।
ব্যাটিং বিভাগে অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তুর সঙ্গে আছেন হাসিনি পেরেরা, বিশ্মি গুনারত্নে, হার্শিতা সামারাবিক্রমা, কাভিশা দিলহারি, নিলাক্ষী ডি সিলভা, পিউমি বাদালগে ও আনুশকা সাঞ্জিভানি।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে বিশ্বকাপের নতুন আসর। গুয়াহাটিতে উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের সঙ্গে খেলবে তারা। এরপর চারটি ম্যাচ কলম্বোতে খেলবে লঙ্কানরা। পরে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে মুম্বাই যাবে তারা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম রাউন্ডে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে আবার কলম্বোয় ফিরবে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ স্কোয়াড
চামারি আতাপাত্তু (অধিনায়ক), হার্শিতা সামারাবিক্রমা, বিশ্মি গুনারত্নে, নিলাক্ষী সিলভা, কাভিশা দিলহারি, আনুশকা সাঞ্জিভানি (উইকেটরক্ষক), ইমেশা দুলানি, হাসিনি পেরেরা, আচিনি কুলাসুরিয়া, পিউমি বাদালগে, ডেওমি ভিহাঙ্গা, মালকি মাদারা, উদেশিকা প্রবোধানি, সুগান্ধিকা কুমারি, ইনোকা রানাভিরা।
ট্রফি উঁচিয়ে ধরার বড় স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই মিশনে বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিপক্ষ হংকং। আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় দিয়েই আসর শুরুর প্রত্যাশা বাংলাদেশ দলের। তবে অতীত রেকর্ড মাথায় রাখলে, ম্যাচটি মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। এর পেছনে রয়েছে দুইটি জুজু- প্রথমত হংকং আর দ্বিতীয়টি আবু ধাবির মাঠ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত হংকংয়ের বিপক্ষে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য খেলেছেও শুধু একটি ম্যাচ। তবে সেটিও আবার নিজেদের ঘরের মাঠে। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিল হংকং।
চট্টগ্রামে হওয়া ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ১০৮ রানে অল আউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। অল্প পুঁজি নিয়েও অবশ্য বোলাররা লড়াই করেন। তবে মুনির দারের ২৭ বলে ৩৬ রানের সৌজন্যে ২ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটের জয় পায় হংকং।
ওই ম্যাচের প্রায় ১১ বছর পর আবার হংকংয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি হংকং। আর টানা তিন সিরিজ জিতে দারুণ ছন্দে আছে বাংলাদেশ। তাই ম্যাচটিতে পরিষ্কার ফেবারিট লিটন কুমার দাসেরই দল।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
তবে সেই জয়টি পেতে আবু ধাবি জুজুও কাটাতে হবে বাংলাদেশের। কারণ জায়েদ স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত জয়ের রেকর্ড নেই তাদের। ২০২১ সালে ওই মাঠে দুই টি-টোয়েন্টি খেলে ন্যুনতম লড়াইও করতে পারেনি বাংলাদেশ।
জায়েদ স্টেডিয়ামে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। পরে তাদেরকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচের একটিতেও ব্যাটে-বলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
ইংলিশদের বিপক্ষে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রান করে তারা। দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম। সেটিও কিনা ৩০ বল খেলে। আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। পরে ১৪.১ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
আর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চূড়ান্ত ভরাডুবির সামনে পড়ে বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নর্কিয়ার গতির ঝড়ে মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আট নম্বরে নামা শেখ মেহেদি হাসান ২৭ রান করে দলকে পঞ্চাশের আগে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচান।
চার বছর পর এবার অবশ্য প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল। তাই দুই জুজু কাটিয়ে উঠতে পারলেই জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম জয়ের পাশাপাশি হংকংকে প্রথমবার হারানোর কীর্তি গড়তে পারবে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান-হংকং ম্যাচ দিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে ভারত। দেশটির সাবেক অফ স্পিনারের মতে, এই টুর্নামেন্টে ভারতের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই। এমনকি বাংলাদেশ দল নিয়ে কথা বলারই কিছু দেখেন না তিনি।
এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার দলগুলোর সার্বিক সম্ভাবনা নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন অশ্বিন। যেখানে মূলত ভারতের এক আধিপত্যের কথাই বারবার বলেছেন তিনি। ভিডিওর একপর্যায়ের তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
“আমরা দেখুন এমনকি বাংলাদেশ নিয়েও কোনো কথা বলিনি। কারণ তাদের নিয়ে এখানে কথা বলার তো কিছু নেই। এসব দলগুলো কীভাবে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করবে?”
টুর্নামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে তাই এশিয়া কাপের বদলে আফ্রো-এশিয়া কাপ আয়োজনের পরামর্শ দেন অশ্বিন।
“তারা (আয়োজকরা) চাইলেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখানে যুক্ত করতে পারে এবং এটিকে আফ্রো-এশিয়া কাপ হিসেবে আয়োজন করতে পারে। যাতে টুর্নামেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। এখন যে অবস্থায় আছে, তাদের উচিত ভারত ‘এ’ দলকে এই টুর্নামেন্টে নিয়ে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা।”
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের উত্থান নিয়ে আলোচনা হয় অনেক। উদ্বোধনী ম্যাচে হংকংকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের শুরুটাও প্রত্যাশামাফিক করেছে তারা। তবে অশ্বিনের মতে, ভারতের বিপক্ষে হালে পানি পাবে না আফগানরা।
“এমনকি আফগানিস্তানের বোলারদের তথাকথিত হুমকির কথাও যদি বলি, ভারত ১৭০-এর বেশি রান করলে তারা কি সেটা তাড়া করতে পারবে? এটা তো অসম্ভরের কাছাকাছি।”
এসময় তিনি নিজেই অবশ্য ভারতকে হারানোর একটি তরিকা বলে দেন। তবে সেই তরিকা কেউ ব্যবহার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন না অশ্বিন।
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
“আমি একদিক থেকে আশা করি, অন্য কোনো দল যেন এই টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে। তাহলে অন্তত এশিয়া কাপে কিছুটা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফিরবে।”
“ভারতকে হারানোর একমাত্র উপায় হতে পারে, নিজেদের একটা ভালো দিনে কোনোভাবে ভারতকে ১৫৫ রানের মধ্যে আটকে রাখা এবং সেটি তাড়া করা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনিতে রোমাঞ্চকর, তবে এশিয়া কাপে ভারত এটিকে একতরফা বানিয়ে ফেলবে বলেই মনে হয়।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আয়োজনে বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ব্যাটিংয়ের বিশেষ প্রোগ্রাম- রান স্কোরিং ওয়ার্কশপ। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত চলবে এই কর্মশালা।
অস্ট্রেলিয়ান কোচিং বিশেষজ্ঞ অ্যাশলে রস ও ইয়ান রেনশ এই কোর্স পরিচালনা করছেন। যাদের মূল লক্ষ্য ব্যাটিং ও ব্যাটিং কোচিংয়ের সব দিককে ঘিরে কাজ করা। বিশেষ করে রান করার শিল্পকে আরও কার্যকরভাবে উন্নত করা।
কর্মশালার প্রথম দিনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা দেন রস। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধান করতে পারার সামর্থ্য এনে দেওয়াই মূলত তাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
“ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বোলারই একটা সমস্যা হাজির করে। খেলার পরিস্থিতি আরেকটা সমস্যা। সেরা ব্যাটাররা আসলে সেরা সমস্যা-সমাধানকারী। আমরা চাই খেলোয়াড়রা যেন সমস্যার সমাধান খুঁজে নেওয়ার মতো মানসিকতা গড়ে তোলে। কারণ কোচ মাঠে গিয়ে তাদের হয়ে খেলতে পারবে না। ব্যাটারদের সবসময় একাই নামতে হয়।”
“আমরা চাই ওরা যেন আত্মবিশ্বাসী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হয়। যখন তারা বিশ্বমানের বোলারদের বিপক্ষে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে, তখন যেন নিজেদের বলতে পারে- আমি ভালো সিদ্ধান্তগ্রহণকারী, আমি সমস্যা-সমাধানকারী, আমি যেকোনো চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারব। সফলতার জায়গা এটিই।”
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন দেশের ২০ জন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও কোচ। বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও কোচদের জ্ঞান ও দক্ষতায় মুগ্ধ রস।
“আমরা ভাগ্যবান, কারণ এখানে দারুণ জ্ঞানভান্ডার আছে। ইয়ান আর আমি তত্ত্বের কথা বলছি, কিন্তু এখানকার অসাধারণ ব্যাটাররা দেখাচ্ছেন, বাংলাদেশে কীভাবে জিনিসগুলো হয়। আমাদের কাজ মূলত ওদের ভেতরকার জিনিসগুলো বের করে আনা। জ্ঞান আসলে ওদের মধ্যেই আছে।”
কর্মশালায় অংশ নেওয়াদের তালিকায় আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শাহরিয়ার নাফীস, রাজিন সালেহর মতো বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়করা। এছাড়াও প্রথম দিন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এসব অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উপস্থিতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রশিক্ষক।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দল নিয়ে 'আত্মবিশ্বাসী' বুলবুলের দুই পরামর্শ |
![]() |
“আমরা সৌভাগ্যবান যে টেস্ট অভিষেকে ১৪৫ রান করা একজনকে (বুলবুল) পাচ্ছি। আমরা তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছি। তত্ত্ব নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি, কিন্তু পাশে যখন এমন ‘জীবন্ত গ্রন্থ’ থাকে, তখন দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।”
“আমরা যখন ধারণা নিয়ে আলোচনা করি, ওরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে- কীভাবে অনুশীলন করে, কোনটা তাদের জন্য কার্যকর, আর কীভাবে তারা সবচেয়ে ভালোভাবে কোচিং পেয়েছে। এই মিশ্রণ অসাধারণ এক শেখার পরিবেশ তৈরি করেছে।”