‘আপনি দেখেননি? ট্রফি ছিল তো আমার হাতে!’- ফাইনালের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এভাবেই মজা করলেন সূর্যকুমার যাদব। তার পাশেই থাকা অভিষেক শর্মাও হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমরা তো ট্রফি দেখেছি। ওজন কত ছিল তাও বুঝতে পেরেছি।’
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালের পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে এই ট্রফি। প্রায় ৩০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে তাই সূর্যকুমার যাদবকে বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে ট্রফি নিয়ে। যেখানে তিনি বলেছেন, দলের সদস্যরাই তার আসল ট্রফি।
দুবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার রাতে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। তবে ম্যাচ শেষে তাদের হাতে ওঠেনি কোনো ট্রফি। তাই অদৃশ্য এক ট্রফি নিয়েই নিজেদের মতো উদযাপন সারেন ভারতের ক্রিকেটাররা।
গত কয়েক মাস ধরে চলমান ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কের ফাটল আরও বড় হয়ে গেছে। সেই ধারবাহিকতায় পুরো এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলায়নি ভারতের ক্রিকেটাররা।
পরে ফাইনাল শেষে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) চেয়ারম্যান, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও পাকিস্তান সরকারের ইন্টেরিয়র মিনিস্টার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমমান) মহসিন নাকভির হাত থেকেও ট্রফি নিতে রাজি হয়নি ভারত।
ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, নাকভির হাত থেকে ট্রফি গ্রহণ করবে না তারা। নাকভিও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তিনিই তুলে দেবেন বিজয়ী দলের হাতে। দুই পক্ষের এমন সিদ্ধান্তের পর ফাইনাল শেষে আর ট্রফিই দেওয়া হয়নি চ্যাম্পিয়ন দলকে।
খেলা শেষ হওয়ার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগে যায় পুরস্কার বিতরণ শুরু হতে। যে কারণে সংবাদ সম্মেলন হয় আরও দেরিতে। যেখানে ট্রফি-কাণ্ড নিয়েই প্রথম প্রশ্ন করা হয় সূর্যকুমারের কাছে। অল্প কথায় পুরো ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করেন ভারত অধিনায়ক।
“আমি ক্রিকেট খেলা বা ক্রিকেট দেখার শুরুর পর থেকে এবারই প্রথম দেখলাম যে, একটা চ্যাম্পিয়ন দলকে কোনো ট্রফি দেওয়া হলো না। সেটিও এমন এক চ্যাম্পিয়নশিপ, যা খুব কষ্ট করে জিতেছি। এমন না যে সহজে জিতে গেছি।”
“আমার মতে, আমাদের এটি প্রাপ্য ছিল। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। আমার মনে হয়, আমি ভালোভাবে পুরোটা বলেছি। আর ট্রফির কথা বললে, ড্রেসিং রুমে আমার ১৪ ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফই আসল ট্রফি। যারা এই যাত্রার শুরু থেকে দুর্দান্ত ছিল। তারাই আসল ট্রফি।”
লম্বা অপেক্ষার পর শুরু হওয়া পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগত পুরস্কার গ্রহণ করেন তিলক ভার্মা, কুলদিপ যাদব ও অভিষেক শর্মা। রানার্স-আপ হওয়া পাকিস্তান ক্রিকেট দলকেও দেওয়া হয় তাদের মেডেল ও ৭৫ হাজার ডলারের ডামি চেক।
এরপর সঞ্চালক সাইমন ডুল বলেন, পুরস্কার নেবে না ভারতীয় দল। তাই মঞ্চ ছেড়ে চলে যান নাকভি ও অন্যান্য অতিথিরা। এরপর অদৃশ্য ট্রফি নিয়ে নিজেদের মতো করে উদযাপন করেন ভারতের ক্রিকেটাররা। সংবাদ সম্মেলনে সেটি নিয়ে হাস্যরসও করেন সূর্যকুমার ও অভিষেক।
আর ভারত অধিনায়ক জানান, ট্রফি না পেলেও, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দই তাদের কাছে বেশি।
“ম্যাচ শেষে দেখেছেন হয়তো, বড় পর্দায় লেখা ছিল, ‘ভারত- এশিয়া কাপ ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন।’ এর চেয়ে ভালো আর কী দেখার আছে। যতগুলো বোর্ড আছে, সব জায়গায় লেখা ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। খেলি তো এসবের জন্যই। আমি জানি, (দলের) সবাই এটিই বলবে।”
No posts available.
২ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২০ পিএম
২ অক্টোবর ২০২৫, ৯:৩৮ পিএম
এলেন, খেললেন এবং জয় করলেন। অভিষেক যে কত রঙে-ঢঙে রাঙানো যায়, রুবাইয়া হায়দার ঝিলিককে না দেখলে বুঝাই যেত না। প্রথমবার লাল-সবুজ জার্সি পরেই জাত চেনালেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটার। পাশাপাশি টিম ম্যানেজম্যান্ট ও অধিনায়কের আস্থাভাজন হয়ে উঠলেন শুভ যাত্রায়। রেকর্ড মাখা ইনিংস খেলে জানিয়ে দিলেন, লম্বা রেসের ঘোড়া তিনি।
কলম্বোর প্রেমাদাসায় বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় জয়ের অন্যতম নায়ক ঝিলিক। ফাতিমা সানাদের দেওয়া ১২৯ রানের টার্গেট নিতান্তই সাদামাটা বানিয়ে ছাড়েন তিনি। মেয়েদের ওয়ানডে অভিষেকে যা বাংলাদেশের ব্যাটারদের সর্বোচ্চ ইনিংস। রুবাইয়া ভেঙেছেন আয়েশা রহমানের রেকর্ড। ২০১১ সালে বিকেএসপিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৩ রান করেছিলেন আয়েশা।
২০ ওভারের বিশ্ব মঞ্চে রুবাইয়ার আগের দুটি অর্ধশতক ছিল ফারজানা আক্তারের নামে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ৭১ ও ৫২ রানের ইনিংস। এবার সেই কীর্তি গড়লেন ঝিলিক।
এদিন ৬৪ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন ঝিলিক। মাত্র ৪ রান যোগ করতেই জয় বন্দরে পৌঁছে যায় দল। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮ চারে। মোট ৭৭ বল মোকাবিলা করেছেন তিনি।
অভিষেক ম্যাচে শুরু থেকে প্রাণবন্ত ছিলেন ঝিলিক। মুভমেন্ট থাকায় থিতু হতে সময় নিলেন। তারপরও থেমে থাকেনি তার বাহারি শট। ৮ বাউন্ডারিতে স্পর্শ করেন নিজের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। ফিফটির পর একটু সতর্ক হয়ে পড়েন, কারণ অপরপ্রান্তে মোস্তারির ব্যাট ছুটছিল রানের জন্য হন্যি হয়ে।
পাওয়ার প্লেতে দারুণ বোলিংয়ের ছন্দ ইনিংসের বেশিরভাগ সময় পর্যন্ত ধরে রাখলেন নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিবরা। কিন্তু শেষ দিকে পাল্টা আক্রমণ করলেন মোহাম্মদ নবী। তাতেই ছন্নছাড়া বাংলাদেশের বোলিং।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান করেছে আফগানিস্তান।
অথচ এক পর্যায়ে ১৬ ওভারে তাদের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১০০ রান। সেখান থেকে বাকি ৪ ওভারে তারা করে আরও ৫১ রান।
শেষ ঝড় তুলে ১ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কায় ২৫ বলে ৩৮ রান করেন নবী। তিন নম্বরে নেমে ৩১ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৫০ রানের বেশি তাড়া করে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। হেরে গেছে বাকি দুই ম্যাচে। এবার তাই সিরিজে লিড নিতে বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জই পার করতে হবে জাকের আলি অনিকের দলের।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম তিন ওভারে দেখেশুনে কাটিয়ে দেন সেদিকউল্লাহ অতল ও ইব্রাহিম জাদরান। চতুর্থ ওভারে জাদরানকে বোল্ড করে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন নাসুম আহমেদ। পরের ওভারে অতলকে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব।
পরের দুই ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন দারউইশ রসুলি ও মোহাম্মদ ইশহাক। মাত্র ৪০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় আফগানিস্তান।
পঞ্চম উইকেটে ৩৩ রানের জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। রিশাদ হোসেনের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন ১৮ বলে ১৮ রান করা ওমরজাই।
দলকে একশর কাছে নিয়ে ফিরে যান গুরবাজও। তিন নম্বরে নেমে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ বলে ৪০ রান করে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
এরপর ঝড় তোলেন মোহাম্মদ নবী। ১৮তম ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে ৩টি ছক্কা মারেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে পঞ্চম বলে তাকে আউট করেন তাসকিন। ২৫ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন নবী।
নবীর বিদায়ের পর ১টি করে চার-ছক্কায় ১২ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে আফগানিস্তানকে দেড়শ পার করান শরাফউদ্দিন আশরাফ।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন সাকিব ও রিশাদ। ৪ ওভারে ৪০ রান খরচ করেন তাসকিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৫১/৯ (ইব্রাহিম ১৫, অতল ১০, গুরবাজ ৪০, রসুলি ০, ইশহাক ১, ওমরজাই ১৮, নবী ৩৮, শরাফউদ্দিন ১৭*, রশিদ ৪, নুর ৬; তাসকিন ৪-০-৪০-১, নাসুম ৪-০-১৮-১, সাকিব ৪-০-৩৩-২, মোস্তাফিজ ৪-০-২৪-১, রিশাদ ৪-০-৩৩-২)
নিগার সুলতানা জ্যোতির আক্ষেপ বুঝি ফুরালো! ২৪ ঘণ্টা আগেও ব্যাটিং নিয়ে আফসোস বাণী শুনিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে আরেকটি বোলিং নৈপুণ্যের দিনে রুবাইয়া হায়দার ঝিলিকরাও ঝলক দেখান ঠিকঠাক। তাতেই নারী বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ রাঙাল লাল সবুজ দল।
কলম্বোতে আজ টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৮.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ১১৩ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
আজ বড় জয়ের পাশাপাশি একাধিক রেকর্ডের সাক্ষী হয় নারী দল। শুরুতে হাত ঘুরিয়ে ৩ মেডেনসহ মাত্র ৫ রান খরচায় ৩ উইকেট তোলেন স্বর্ণা আক্তার। যা বিশ্বকাপে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং ফিগার।
ব্যাটিংয়ে দেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপে ফিফটি করেন রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। ওয়ানডের বিশ্ব মঞ্চে এর আগে দু’বার ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন ফারজানা হক পিঙ্কি।
এদিন রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট বিলিয়ে দেন ফারজানা আক্তার। তবে শারমিন আক্তারকে সঙ্গী করে ধাক্কা সামাল দেন ঝিলিক। পাওয়ার প্লে শেষ না হতেই আবারও পথ হারায় বাংলাদেশ। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন শারমিন আক্তার।
দলীয় ৩৫ রানে দুই উইকেট পতনের পর কিছুক্ষণ নিগার সুলাতানাকে নিয়ে এবং বাকিটা সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে পাড়ি দেন ঝিলিক। চলতি পথে আদায় করেন আন্তর্জাতিক কুড়ি কুড়ির ফরম্যাটে নিজের প্রথম ফিফটি। তা লেখা হয় খেরোখাতায়। ৭৭ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ঝিলক। তার সঙ্গে মোস্তারির ইনিংসে ছিল ২৪ রান।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই পথ হারায় পাকিস্তান। মারুফা আক্তারের গতি আর সুইংয়ে প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট হারায় দলটি। ওভারের পঞ্চম বলে ওমাইমা সোহেলকে বোল্ড করেন তিনি, পরের ডেলিভারিতেই ইনসুইংয়ে সিদরা আমিনের স্ট্যাম্প এলোমেলো করে দেন।
দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন মুনিবা আলি ও রামিন শামিম। তবে জুটি বড় হতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। মুনিবা ৩৫ বলে ১৭ রান করে ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। কিছু সময় পরেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রামিন শামিমও (৩৯ বলে ২৩ রান)।
এরপর ছোট ছোট কয়েকটি জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও পাকিস্তানের মেয়েদের ইনিংস বড় হতে দেননি রাবেয়া আক্তার ও ফাহিমা খাতুনরা। শেষ পর্যন্ত ৩৮.৩ ওভারেই ১২৯ রানে থামে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন স্বর্ণা আক্তার। ৩.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩ মেডেনসহ মাত্র ৫ রান খরচ করেন তিনি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে এটিই সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। গত আসরে ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন সালমা খাতুন।
আফ্রিকার আঞ্চলিক বাছাইয়ের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কেনিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতল জিম্বাবুয়ে। এ জয়ে ফাইনালে ওঠার পাশাপাশি বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে সিকান্দার রাজার দল।
২০২৬ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দিনের প্রথম সেমিতে তানজানিয়াকে হারিয়েছে নামিবিয়া। আগামী শনিবার ফাইনালে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখির পাশাপাশি বিশ্বকাপে অংশ নেবে দলটি। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও ২০ দলের বিশ্বকাপে এই অঞ্চল থেকে অংশ নেবে জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া।
২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবশেষ আসরে খেলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। এমনকি তারা ছিল না ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও। এবার বাছাইপর্বে টানা চার ম্যাচে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে ফিরল তারা।
জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আজকের বাঁচা-মরা ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ১২২ রান সংগ্রহ করে কেনিয়া। রান তাড়ায় নেমে ১৫ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। ব্রায়ান বেনেট খেলেন ২৫ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস।
কেনিয়ার ১২২ রানের লক্ষ্য একেবারে মামুলি বানিয়ে ছাড়ে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও তাদিওয়ানাশে মারুমানি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে সাচিন গিলকে ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দেন বেনেট। জিম্বাবুয়ের ওপেনার চূড়ান্ত আক্রমণে আসে চতুর্থ ওভারে। লুকাস এনদাসনের এক ওভারে ছয়টি চার মারেন বেনেট।
ব্যক্তিগত ৫১ রানে ফিরে গেলেও দলকে ৭৬ রানের ভিত গড়ে দিয়ে যান। তার দৃষ্টিনন্দন ইনিংসটি ছিল ২টি ছক্কা ও ৮টি চারে সাজানো।
প্রথম উইকেটের পতনের পরও রান চাকা সচল রাখেন মারুমানি। সাজঘরে ফেরার আগে ২৭ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। বাকি পথ হেঁটে জয় বন্দরে পৌঁছান সিকান্দার রাজা।ও রায়ান বার্ল।
এর আগে পুশকার শর্মার সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে শুরুতেই দলকে বাজে ঘটনার সাক্ষী করান ধীরেন গণ্ডারিয়া। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে ইনিংসের প্রথম বলে সাজঘরে ফেরেন গণ্ডারিয়া। পরে অবশ্য রাকেব প্যাটালের সঙ্গে ছোট্ট জুটি গড়ার চেষ্টা করেন পুশকার। সে যাত্রা সফল হতে দেননি মুজরাবিন। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড করেন কেনিয়া ওপেনারকে।
পুশকার ১৭ বলে ১১রান করে যখন ফেরেন তখন দলীয় সংগ্রহ ৩১ রান। পরের ওভারে আরও একবার দলকে সমস্যায় ফেলেন সাচিন ভুদিয়া। থিতু হওয়ার আগেই তাকে ফেরান ব্রাড ইভানস।
দলের এমন ভঙ্গুর দশা সামাল দেওয়ার কাজটি ভালোভাবে সামাল দেন রাকেপ প্যাটেল। ৪৭ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন নেপালের এই স্পিন অলরাউন্ডার। যা ছিল ১ ছক্কা ও ৮ চারে সাজানো। মূলত রাকেপের একার কৃতিত্বে স্কোরবোর্ডে ১২২ রান জমা করতে পারে নেপাল।
নামিবিয়া-জিম্বাবুয়ে ছাড়াও আফ্রিকা মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপ নেবে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বিশ্বকাপের ফলের ভিত্তিতে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে তারা।
সামনের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা ১৭তম দল জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিক হিসেবে সবার আগে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয় ভারত, শ্রীলঙ্কার। এছাড়া গত আসরের সুপার এইটে খেলা সাত দল- বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি বিশ্বকাপে যায়।
গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত র্যাঙ্কিং বিবেচনায় নিশ্চিত হয় আরও তিন দল- পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিশ্বকাপ অংশগ্রহণ।
পরে আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই থেকে মূল পর্বে যায় কানাডা। আর ইউরোপিয়ান অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে নেদারল্যান্ডস ও ইতালি। এবার আফ্রিকা অঞ্চল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা-জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া অংশ নেবে।
আগামী ৮ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে ইস্ট-এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বাছাই। সেখানে বাকি ৩টি টিকিটের জন্য লড়বে ৯ দেশ।
৯ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশ দলকে উদ্ধার করলেন নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেন। মাত্র ১৮ বলে ৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে নিয়ে গেলেন জয়ের বন্দরে।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। ১৫২ রানের লক্ষ্য ৮ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে তারা।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ১০৯ রান যোগ করেন তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। দুজনই খেলেন পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস।
১২তম ওভারে প্রথম উইকেট পড়ার পর মাত্র ৯ রানের মধ্যে আরও ৫ উইকেট হারায় তারা। এরপর সোহান ১৩ বলে ২৩ ও রিশাদ ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলেন।
৪ ওভারে মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন রশিদ খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৫১/৯ (ইব্রাহিম ১৫, অতল ১০, গুরবাজ ৪০, রসুলি ০, ইশহাক ১, ওমরজাই ১৮, নবী ৩৮, শরাফউদ্দিন ১৭*, রশিদ ৪, নুর ৬; তাসকিন ৪-০-৪০-১, নাসুম ৪-০-১৮-১, সাকিব ৪-০-৩৩-২, মোস্তাফিজ ৪-০-২৪-১, রিশাদ ৪-০-৩৩-২)
বাংলাদেশ: ১৮.৪ ওভারে ১৫৩/৬ (তামিম ৫১, ইমন ৫৪, সাইফ ০, জাকের ৬, শামীম ০, সোহান ২৩*, সাকিব ০, রিশাদ ১৪*; ফরিদ ৩-০-২৬-১, ওমরজাই ২.৪-০-৩২-০, নবী ৩-০-২৭-০, রশিদ ৪-০-১৮-৪, নুর ৪-০-২১-১, শরাফউদ্দিন ২-০-২৫-০)
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী