
শুরুতেই দুই তারকা ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে গেল রংপুর রাইডার্স। এরপর সাইফ হাসান, ইফতিখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ তিনটি চল্লিশোর্ধ ইনিংস দলটিকে এনে দিল বড় স্কোরের মঞ্চ। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান দিলেন ফিনিশিং টাচ। রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হলেও লড়াই জমাতে ব্যর্থ হল ঢাকা ক্যাপিটালস। তবে শেখ মাহেদি হাসানের এক স্পেলই গড়ে দিল ম্যাচের ব্যবধান। তাতে ভর করে বড় জয় দিয়েই আসর শুরু করল রংপুর।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর জয় পেয়েছে ৪০ রানে। দলটির করা ৬ উইকেটে ১৯১ রানের জবাবে ঢাকার ইনিংস থেমেছে ৯ উইকেটে ১৫১ রানে।
দুই চার ও এক ছক্কায় রংপুরকে উড়ন্ত সূচনার এনে দেওয়ার আভাস ছিল স্টিভেন টেলরের ব্যাটে। তবে বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের এই বাঁহাতি ব্যাটার। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ার আগে ৭ বলে করেন ১৪। ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসও পারেননি সুবিধা করতে। আলাউদ্দিন বাবুর প্রথম শিকার হন তিনি।
আরও পড়ুন
| ঝড়ো ফিফটির কৃতিত্ব মাহমুদউল্লাহকেই দিলেন ফাহিম |
|
শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিতে ক্রিজে গিয়েই আক্রমণ চালান ইফতেখার। পাকিস্তানের এই ব্যাটারের একপ্রান্তে সাবলীলভাবে রান বের করলেও কিছুটা সংগ্রাম করতে হচ্ছিল সাইফ হাসানকে। শুরুর দিকে দ্রুত কয়েকটি চার মারা ইফতেখারও ইনিংসে মাঝপথে কিছুটা রানের গতি কমিয়ে ফেলেন।
তবে দুই ব্যাটার মিলেই এরপর রানের চাকা সচল করেন চার-ছক্কার মারে। বিশেষ করে সাইফ। ফিফটির পথে ছিলেন ভালোভাবেই। শেষ পর্যন্ত ফিরতে স্পেলে এসে তাকে থামান বাবু। বড় শট মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় সাইফের দুই চার ও দুই ছক্কায় সাজানো ৪০ রানের ইনিংস।
এক ওভার বাদে ফিফটির আরও কাছে গিয়ে হতাশ হতে হয় ইফতেখারকে। সেই বাবুর বলেই সীমানা পার করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় পাকিস্তান ব্যাটারের ৪৯ রানের ইনিংস, যেখানে চারের মার ছিল ৮টি।
১৭তম ওভার করা মুস্তাফিজুরকে চারটি চার মেরে রানের চাকা সচল রাখেন খুশদিল ও সোহান। রংপুর অধিনায়ক এরপর বাবুর এক ওভারে হাঁকান তিনটি চার। আউট হওয়ার আগে খেলেন ১১ বলে ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংস।
শেষ ওভারে দুই ছক্কা মারা খুশদিল অপরাজিত থাকেন ২৩ বলে ৪৬ রানে।
বড় রান তাড়ায় জাতীয় দলের দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম ঢাকাকে এনে দেন আদর্শ সূচনা। দুজনই ভালো বলকে সম্মান করে বাজে বল পেলেই মারেন বড় শট। তাতে পাওয়ার প্লেতে দারুণ কিছু শটে তারা যোগ করেন ৫৮ রান। তখনই ত্রাতা হিসেবে হাজির হন মাহেদি।
আরও পড়ুন
| মাহমুদউল্লাহ-ফাহিম তান্ডবে দুর্দান্ত জয়ে বিপিএল শুরু বরিশালের |
|
চলতি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২০ ওভারে সিরিজ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন মাহেদি। সেই ফর্ম ধরে রেখে ফিরতি স্পেলে এসে ৩০ রান করা তানজিদকে ফেরান তিনি। প্রথম বলেই হাবিবুর রহমানের কাছে ছক্কা হজম করলেও একই ওভারে তরুণ এই ব্যাটারকেও সাজঘরের পথ দেখান মাহেদি।
নিজের শেষ ওভারে ফের জোড়া আঘাত মাহেদির। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে প্রথমে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন (২১ বলে ৩১)। এরপর বাঁহাতি ফরমানউল্লাহ সাফিকে দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে বোল্ড করেন দেন। ওখানেই শেষ হয় ঢাকার জয়ের শেষ আশা।
এরপর বাকিটা ছিল কেবলই দলটির হারের ব্যবধান কমানোর লড়াই। ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মাহেদিই রংপুরের সেরা বোলার। ১৫ রানে ২ উইকেট নেন খুশদিল।
No posts available.

ক্লাব অনুদান, প্রাইজমানি, জার্সি এবং ট্রান্সপোর্ট অ্যালাউন্স ৫০ শতাংশ বাড়িয়েও বিরোধীদের মন গলাতে পারেনি সিসিডিএম। ক্রিকেটারদের রুটি-রুজির বিষয়টিও বিবেচনায় আনেনি ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে গত ৭ অক্টোবর সকল লিগ বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন ক্লাব অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের একটি অংশ।
প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে ২০ টি ক্লাবের মধ্যে ১০টি ক্লাব তাদের পক্ষে আছে বলে গণমাধ্যমকে জানালেও ক্লাব অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের নির্বাচনী প্যানেলকে নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের ক্লাব ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব বর্জনকারীদের ডাকে সাড়া দেয়নি। নির্বাচন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে ক্লাব অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিসিবির সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের ক্লাব শাইনপুকুরও বর্জনকারীদের বৃদ্ধাঙ্গুুুলি দেখিয়ে ক্রিকেটারদের দলবদলে অংশ নিয়েছে।
ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের বর্জনের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের ২০টি ক্লাবের মধ্যে ৮টি ক্লাব আনুষ্ঠানিক দলবদলে অংশগ্রহন থেকে বিরত থেকেছে। সূর্যতরুণ, ওরিয়েন্ট, আম্বার স্পোর্টিং, পারটেক্স স্পোর্টিং, কাকরাইল বয়েজ, খেলাঘর, কলাবাগান এবং গাজী টায়ার্স প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে ২ দিনব্যাপী খেলোয়াড়দের দলবদলে অংশ নেয়নি। ১৩ লাখ ৫০ হাজার করে নির্ধারিত ক্লাব অনুদানের চেকও নেয়নি এই ৮টি ক্লাব।
গত ৫ নভেম্বর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেলোয়াড়দের দলবদলের প্রথম দিন ৮টি ক্লাবের পক্ষে (বিকেএসপি, ব্লুজ ক্রিকেটার্স, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রিকেট ক্লাব , ওল্ড ডিওএইচএস, প্রাইম দোলেশ্বর, শেখ জামাল ক্রিকেটার্স, শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব এবং উত্তরা ক্রিকেট ক্লাব)।
সাইন করেছেন ৪৭ জন ক্রিকেটার। দলবদলের দ্বিতীয় দিনে (৬ নভেম্বর) আরও ৮৯ জন ক্রিকেটার নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। এদিন দলবদলে সরব ছিল বারিধারা ডেজলার্স, বসুন্ধরা রাইডার্স, ঢাকা স্পার্তান্স এবং লালমাটিয়া ক্লাব)। দলবদলের আনুষ্ঠানিকতার ২ দিনে নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন ১০৬ ক্রিকেটার। এর বাইরে ৮৯ জন ক্রিকেটার টোকেন তুলে তা কাছে রেখেছেন। ফ্রি ক্রিকেটার হিসেবে তারা যে কোনো ক্লাবে যোগ দিতে পারবেন। তবে এদের অধিকাংশের সঙ্গে পুরোনো ক্লাবের যোগাযোগ হয়েছে।
লিগ শুরুর আগে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে পারে বর্জনকারী ক্লাবগুলো, এমন সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছেন সিসিডিএম-এর চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন-' নানা মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কারো কারো চাপে প্রকাশ্যে দলবদলে অংশ নিতে আসেনি চার-পাঁচটি ক্লাব। তবে ওই ক্লাবগুলোর অফিসিয়ালরা কিন্তু পুরোনো ক্রিকেটারদের অধিকাংশকে রেখে দিয়েছে। বেশ কিছু ক্রিকেটারকে টোকেন তুলতে পাঠিয়েছেন তারা। যারা টোকেন তুলেছেন, তাদের অনেকেই এইসব ক্লাবকে টোকেন জমা দিয়ে পুরোনো ক্লাবে থেকে যেতে পারেন।'
এদিকে ক্রিকেটারদের রুটি রুজির পথ বন্ধ করে লিগ বর্জনকারী ক্লাবসমূহের বিপক্ষে সোচ্চার হতে চাইছে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। কোয়াবের নব নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ মিঠুন এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যানকে। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরু হওয়ার কথা। তার আগে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বসে বিষয়টা সুরাহা করতে চান সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন-' বিসিবির নির্বাচনে পক্ষ-বিপক্ষ নতুন কিছু নয়।
তবে নির্বাচনের ইস্যুতে এর আগে কখনো কিন্তু লিগ বর্জনের ডাক কেউ দেননি। নির্বাচনকালীন সময়ে বিভেদ ভুলে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লিগে অংশ নিয়েছেন। সে কারণেই অংশগ্রহনমূলক লিগ আয়োজনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে চাই। আইসিসির সভায় যোগ দিতে বিসিবি সভাপতি এখন দেশের বাইরে। উনি দেশে ফিরে আসার পর কোয়াব এবং সিসিডিএম নেতৃবৃন্দ বসে একটা গ্রহনযোগ্য সমাধানের পথ বের করব। যদি বিরোধীদের সবাইকে আনতে না পারি, তখন যারা স্বোচ্ছায় অংশ নিতে চায়, তাদেরকে নিয়ে লিগ আয়োজন করা হবে। বাকিদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বাইলজ অনুযায়ী।'
প্রথম বিভাগ থেকে এক আসরে অবনমন হওয়ার কথা ২টি ক্লাবের। সেখানে ৮টি ক্লাব লিগে অংশগ্রহন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে বড় ধরণের সংকট তৈরি হবে। এক সঙ্গে এতো ক্লাব অবনমন হলে তো দ্বিতীয় বিভাগ থেকে সম সংখ্যক ক্লাবকে দিতে হবে প্রমোশন। এটাই ভাবনায় ফেলেছে সিসিডিএমকে।
৭টি ভেন্যু ঠিক করে, মানসম্পন্ন পীচ প্রস্তুত করেও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়লে দূর্ভাবনা বাসা বাধারই কথা সিসিডিএম-এর।

ভারতের ১৬৮ রানের লক্ষ্যে জবাবটা ভালোভাবেই দিচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ৬৭ রান। তবে এরপরই যেন ছন্দপতন। সফরকারীদের স্পিন বিষে নাকাল হয়ে নাটকীয় ধসে মাত্র ২৮ রানে হারায় শেষ ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। টানা দুই জয়ে শেষ পর্যন্ত সিরিজে এগিয়ে গেল সূর্যকুমার যাদবের দল।
কুইন্সল্যান্ডে আজ পাঁচ ম্যাচের সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের জয় ৪৮ রানের। ১৬৮ রানের জবাবে ১৮.২ ওভারে ১১৯ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যাবধানে এগিয়ে গেলো ভারত। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যাক্ত হয়েছিল।
টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্বান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু এনে দেন ভারতের দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিল। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৪৯ রান তোলে ভারত।
সপ্তম ওভারে দলীয় ৫৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। অ্যাডাম জাম্পার বলে টিম ডেভিডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে অভিষেক করেন ২৮ রান। এরপর তিনে নামা শিভাম দুবে ফেরেন ২২ রান করে।
এদিন ধীরস্থির ব্যাটিং করেন গিল। ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন। এরপর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের ১০ বলে ২০, অক্ষর প্যাটেলের ১১ বলে অপরাজিত ২১ রানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৭ রান করে ভারত। নাথান এলিস ও অ্যাডাম জাম্পা নেন তিনটি করে উইকেট।
জবাব দিতে নেমে ভালো শুরু করে অস্ট্রেলিয়াও। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৪৮ রান। ১৯ বলে ২৫ রান করেন ওপেনার ম্যাথুউ শর্ট। অধিনায়ক মিচেল মার্শ করেন ২৪ বলে ৩০ রান। ৬৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মিডল অর্ডারের কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি।
জশ ইংলিশ ১২, টিম ডেভিড ১৪, জশ ফিলিপে ১০, মার্কাস স্টয়নিস ১৭ রানে ফেরেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ফেরেন ২ রান করে। ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে শেষ পর্যন্ত ১৮.২ ওভারে ১১৯ রান করে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
ভারতের হয়ে ম্যাচের সফলতম বোলার ওয়াশিংটন সুন্দর। ডানহাতি এই বোলার মাত্র ১.৩ ওভারে তিন রান দিয়ে উইকেট নেন। দুই উইকেট নিয়ে ব্যাটে-বলে দলের জয়ে দারুণ অবদান রাখা অক্ষর প্যাটেল হন ম্যাচসেরা। এ ছাড়া শিভাম দুবেও নেন দুটি উইকেট।
শনিবার গ্যাবায় সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল।

জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল এখন নতুন পরিচয় পেয়েছেন। আয়ারল্যান্ড সিরিজে মেহেদী হাসান মিরাজদের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। অভিজ্ঞতার দিক বিবেচনায় দেশের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের ওপর আস্থা রেখেছে দেশীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি।
আশরাফুলের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হবে আয়ারল্যান্ড সিরিজ। অতিথিদের বিপক্ষে দুইটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। সিরিজের আগে আজ মিরপুরে নিজের ইচ্ছা, আগ্রহ ও নতুন দায়িত্ব নিয়ে কথা বলেছেন আশরাফুল।
তিনি বলেন, “প্রত্যেক মানুষেরই একটা স্বপ্ন থাকে। ক্রিকেট খেলা শেষ হওয়ার পর আমি সেকেন্ড লাইফ হিসেবে কোচিং করার কথা ভাবেছিলাম। যেহেতু আমার ক্রিকেট জীবনে অনেক ভালো ইনিংস আছে এবং খারাপ ইনিংসও আছে, সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই। এ কারণেই কোচিংয়ে আসতে চেয়েছি।”
আশরাফুল আরও যোগ করেন, “তিন বছর আগে একটা সুযোগ আসে। আবুধাবিতে লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স হচ্ছিল। তখন বুলবুল ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, লেভেল থ্রি কোর্স হবে, তুই চলে আয়। আমি নিজের খরচে গিয়েছিলাম এবং কোর্স সম্পন্ন করেছি।”
নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, “শেষ দুই বছর রংপুর রাইডার্স আমাকে বড় ব্রেক দিয়েছে গ্লোবাল টি-২০ টুর্নামেন্টে কাজ করার জন্য। সেখানে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তারপর বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ—এমনকি মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গুলশান ইয়ুথের হয়ে কাজ করেছি। পাশাপাশি কয়েকটি একাডেমিতেও কোচিং করেছি।”
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আরও বলেন, “মাঝে মাঝে আবার আমি ক্রিকেটও খেলতাম, আসলে খেলাটা এত ভালো করি যে ছাড়তে পারছিলাম না। ইংল্যান্ডে শেষ দুই বছর ক্রিকেটও খেলেছি। সবার একটা স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে কাজ করার। যেহেতু আমি ক্রিকেটের মানুষ, আজ বিসিবি আমাকে আয়ারল্যান্ড সিরিজে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। তাই টিমটাকে দেখতে চাই।”
আশরাফুল বলেন, “যখন খেলতাম তখনও স্বপ্ন দেখতাম, ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হব, ভালো কিছু করব। এখন কোচিং লাইনে থাকায়, আমার ইচ্ছা আমাদের ব্যাটসম্যানরা প্রত্যেক সেকেন্ড ইনিংসে বড় বড় রান করবে। এটাই আমার লক্ষ্য।”

পার্থে ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এবারের অ্যাশেজ সিরিজ। প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব দেবেন স্টিভেন স্মিথ। পিঠের চোটের কারণে ম্যাচটি খেলতে পারছেন না নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে ফিরবেন এই পেসার।
জুলাইয়ে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে খেলেছেন কামিন্স। সেই সফর থেকে ফেরার পর পিঠে ব্যথা অনুভব করেন এই পেসার। এরপর পিঠে লাম্বার স্ট্রেস চোট ধরা পড়ার পর থেকেই বোলিংয়ে ফিরতে পারেননি।
পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে এখন সংক্ষিপ্ত রান-আপ থেকে বল করছেন ৩২ বছর বয়সী কামিন্স। পুরোপুরি ফিট হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন এই তারকা, 'সবকিছু পরিকল্পনামতো চলছে, এমনকি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো। প্রতিটি সেশনে উন্নতি হচ্ছে। পার্থে পৌঁছে পুরো রান-আপে বল করার মতো অবস্থায় থাকব বলে আশা করছি।'
৪ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে শুরু হবে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্ট। দিবারাত্রির সেই ম্যাচ দিয়েই ফেরার লক্ষ্য কামিন্সের, 'এখন লক্ষ্য দ্বিতীয় টেস্ট। পার্থে শক্ত অনুশীলন সেশন পাব, তখনই বুঝব আমি ঠিক কোথায় আছি।'
বর্তমান অ্যাশেজের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ২-২ ড্র করেছিল অজিরা। সেবার কামিন্স ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোট ১৯ টেস্টে ২৪.১০ গড়ে ৯১ উইকেট নিয়েছেন এই তারকা অলাউন্ডার। প্রথম টেস্টে কামিন্সের জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন মিচেল স্টার্ক, সঙ্গে থাকবেন জশ হ্যাজলউড ও স্কট বোল্যান্ড।
অ্যাশেজে কতগুলো ম্যাচ খেলবেন সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে চান না কামিন্স। 'যতটা সম্ভব খেলতে চাই। যদি কোনো ম্যাচে ৪০-৫০ ওভার বল করতে হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যেই পরের ম্যাচ থাকে, তখন বিশ্রাম নেওয়া লাগতে পারে। আপাতত মূল লক্ষ্য পুরোপুরি ফিট হওয়া।'
ইংল্যান্ড গত ১০টি অ্যাশেজ সিরিজের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জিতেছে মাত্র একবার, ২০১০-১১ মৌসুমে। পাঁচ টেস্টের সিরিজ শেষ হবে ৮ জানুয়ারি।

পাঁচ দলের অংশগ্রহণে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শুরু হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম আসর। তার আগে, আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে অংশগ্রহণকারী ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করেছে আয়োজক কমিটি।
ফ্র্যাঞ্চাইজি রেজিস্ট্রেশন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, চূড়ান্ত এই তালিকা প্রকাশ করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
বিপিএলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর—এই পাঁচ শহরের দল অংশ নেবে। আসরে অংশগ্রহণকারী দলগুলো ঢাকা ক্যাপিটালস, চট্টগ্রাম রয়্যালস, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স, রংপুর রাইডার্স ও সিলেট টাইটান্স নামে খেলবে এবার।
বসুন্ধরা গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন টগি স্পোর্টস আগের মতোই ‘রংপুর রাইডার্স’ নামেই পরিচিত থাকবে। চট্টগ্রামের টাইএঙ্গেল স্পোর্টস খেলবে ‘চট্টগ্রাম রয়্যালস’ নামে। নাবিল গ্রুপ মালিকানাধীন রাজশাহী ফ্রাঞ্চাইজি খেলবে ‘রাজশাহী ওয়ারিয়র্স’ নামে। ফ্রাঞ্চাইজিটি এবারই প্রথম বিপিএলে অংশ নিচ্ছে। যে কারণে নাম পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস মালিকাধীন ঢাকা খেলবে ‘ঢাকা ক্যাপিটালস’ নামে। সিলেট খেলবে ‘সিলেট টাইটান্স’ নামে।
এর আগে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান জানিয়েছেন, ‘অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা, অভিজ্ঞতা এবং ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বিবেচনা করেই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হয়েছে।’
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন মালিকানা পেলেও কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আগের নাম পরিবর্তন করতে পারবে না, তবে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ব্যাপারে শিথিল আয়োজক কমিটি। সে সুবিধা পেল রাজশাহী ফ্রাঞ্চাইজি।