২ নভেম্বর ২০২৪, ৭:৫৮ পিএম
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেই বাতাসে চাউর হচ্ছিল একটি খবর যে, তিন ফরম্যাটের অধিনায়কত্বই নাকি ছেড়ে দিতে চান নাজমুল হোসেন শান্ত। স্বাভাবিকভাবে তাতে ঘুরেফুরে আসছে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক কে হবেন, সেই প্রশ্নটি। আর এই আলোচনায় সাদা বলের অধিনায়ক হিসেবে অনেকেই বিবেচনা করতে চাচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়কে। তিনি নিজে কী ভাবছেন? তরুণ এই ব্যাটার বল তুলে দিয়েছেন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজম্যান্টের হাতে।
টেস্ট ক্রিকেটে না হলেও বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে বেশ কিছুটা সময় ধরেই নিয়মিত মুখ তাওহীদ। সাদা বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ও তিনি। শান্ত যদি শেষ পর্যন্ত সব বা এক-দুটি ফরম্যাটের দায়িত্ব ছেড়ে দেন, তাই সেখানে ভালোভাবেই আসবে তাওহীদের নাম। আপাতত সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের অধিনায়ক থাকছেন শান্তই।
এই সিরিজ খেলতে দলের একাংশ আজ শনিবার দেশ ছেড়েছে। তার আগে মিরপুর শের-বাংলা-স্টেডিয়ামে কথা বলেন তাওহীদ। সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে নিজের নাম প্রসঙ্গে তুলে ধরেন নিজ অবস্থান। “টি-টোয়েন্টির অধিনায়কের ব্যাপারে বিসিবি সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আমার বিষয় নয়। তবে আমি মনে করি, এটা শুধু আমার বা দু-একজন দিয়ে হবে না। বিসিবি বা যারা দায়িত্বে আছেন, তারা ভালো জানেন। আমার মনে হয় দলের ভালোর জন্য যার কাছে যাওয়া উচিত, তাকেই অধিনায়কত্ব দেওয়া উচিত। আর যার কাছে যাবে, তার জন্য শুভকামনা।”
ঘরোয়া ক্রিকেটেও তাওহীদের নেই বলার মত অধিনায়কত্ব করার মত অবস্থা। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দলের পারফরম্যান্সও খুব ভালো নয়। সামগ্রিকভাবে তাই অধিনায়ক কে হবেন, বা কে হতে পারেন সেই ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হলেন না এই ডানহাতি ব্যাটার। “আমি এই ব্যাপারে এখন কথা বলতে চাচ্ছি না। সামনে যেহেতু একটা সিরিজ আছে, সেখানেই মনোযোগ দিচ্ছি।”
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এক বছরে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে বেশ কম। শেষ সিরিজে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ধরা দিয়েছিল ২-১ ব্যবধানে। তবে এরপর কেটে গেছে সাত মাস। তাছাড়া অন্য দুই ফরম্যাটে গত কয়েক মাসে যায়নি ধারাবাহিক ভালো সময়। দুই ফরম্যাট মিলে টানা সাত ম্যাচ হারের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। আর এই কারণেই ওয়ানডে সিরিজ হলেও কিছুটা চাপ থাকবে শান্তর দলের ওপর।
তাওহীদ অবশ্য এই সিরিজ নিয়ে বেশ ইতিবাচক। “আশা করি, ভালোভাবে শুরু করতে পারবো। এই সংস্করণে যেহেতু ভালো খেলি, এবার অবশ্যই ভালোভাবে শুরু করতে চাই। আমাদের যে সামর্থ্য সে অনুযায়ী খেলতে পারলে ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ।”
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের তিন ম্যাচের ওয়ানডে শুরু হবে আগামী ৬ নভেম্বর। পরের দুই ম্যাচ ৯ ও ১১ নভেম্বর। সবগুলো ম্যাচ দেখা যাবে টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:১০ পিএম
৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯:১৫ পিএম
৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:২৯ পিএম
৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:১০ পিএম
ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ধবলধোলাই করে প্রথম টি-২০তেই অঘটনের শিকার বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সিলেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬৯ রানের বড় পুঁজি দাঁড় করায় আইরিশরা। জবাবে ১৫৭ তে থামে টাইগ্রেসরা।
সিলেটের ফ্ল্যাট উইকেটে টস জিতে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা ছিল সাবধানী। ৩য় ওভারে জাহানারের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন ১৩ বলে ১০ করা অ্যামি হান্টার। পাওয়ারপ্লেতে রান আসে ৩৫। তবে, পরের ওভারেই আউট বিগ ব্যাশ খেলে আসে প্রেন্ডারগেস্ট। ১৫ বলে ওঁর ব্যাটে রান ১১।
গ্যাবি লুইসের সাথে লিয়া পলের দারুণ পার্টনারশিপটা শুরু এরপরই। দুজনই মনোযোগ দিয়েছেন রানের চাকা সচল রাখতে। ভালো বল সমীহ করলেও বাজে বলে আসছিল বাউন্ডারি। ১০ ওভার শেষে বোর্ডে জমা ৬৭।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের কাছে হারের পর আইসিসির শাস্তি পেলেন ২ ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার |
১১ থেকে ১৫। ঐ ৫ ওভারের প্রতিটাতেই অন্তত একটা চার বা ছয় আদায় করেছে আইরিশ ব্যাটাররা। ঐ ত্রিশ বলে রান এসেছে ৬৩। ১৫ ওভার শেষে বড় স্কোরের পথে আয়ারল্যান্ড। রান দুই উইকেটে ১৩০।
শেষ ৫ ওভারে ভালোই কামব্যাক করেছে বাংলাদেশ। ৪২ বলে ৬০ করে ফারিহা তৃষ্ণার শিকার গ্যাবি লুইস। টিকতে পারেন নি ডেলানি। ৫ বলে ২ করে আউট হয়েছেন নাহিদার বলে। তবে, লিয়া পলকে থামানো যায় নি। ৪৫ বলে অপরাজিত ছিলেন ৭৯ করে। ১০ চারের সাথে হাঁকিয়েছেন ২ ছয়। স্ট্রাইকরেট নজরকাড়া ১৭৫.৫৬।
১৭০ রানের টার্গেট। নারী ক্রিকেটে যা পাহাড়সম। ঐ রান টপকাতে চাই ভালো শুরু। দিলারা আক্তার আর শোভানা মোস্তারি ব্যাট করেছেন সেটা মাথায় রেখেই। শুরু থেকেই খেলেছেন অ্যাটাকিং ক্রিকেট। পাওয়াপ্লেতে ৫৬ তুলে দারুণ শুরু বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন
টি-টোয়েন্টিতেও ৩-০? বাংলাদেশের সব ম্যাচ দেখুন টি-স্পোর্টসে |
৭ থেকে ১৪, এই আট ওভারের সাতটাতেই কোন বাউন্ডারি পায় নি বাংলাদেশ। মাঝে শুধু নবম ওভারেই এসেছে চার বা ছয়। ফ্রেয়া সারজেন্টের ঐ ওভারে একটা ছয় মারেন দিলারা। একটা ছক্কার সাথে ২ চার আসে শোভানার ব্যাটে। শুধু ঐ ওভারেই বাংলাদেশ তুলেছিলো ২১ রান।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ৯৬। শেষ দশে চাই ৭৪। আস্কিং রানরেট ধরাছোঁয়ার মধ্যে, আয়ারল্যান্ড ক্যাচই ছেড়েছে অন্তত হাফ ডজন। তারপরও টাইগ্রেসরা উ্ইকেট হারিয়েছে নিয়মতি বিরতিতে। ৩৫ বলে ৪৬ করে প্রেন্ডারগেস্টের শিকার শোভানা। ৪১ বলে ৪৯ করে আউট হয়েছেন দিলারা। দুই সেট ব্যাটার আউট হয়ে যাওয়ায় রান রেট বাড়ছিল তরতর করে।
শেষ ছয় ওভারে দরকার ৬০ রান। শেষ তিনে চাই ৩৩। আঠারতম ওভারে এলো ১৫ রান। শেষ দুইয়ে চাই ১৮ রান। ঐ সময় জোড়া উইকেট মেডেন প্রেন্ডারগেস্টের। ১৩ বলে ২৩ করে শারমিন আক্তার অপরাজিত থাকলেও জয়ের বন্দরে পৌঁছানো হয় নি বাংলাদেশের। ৭৯ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা লিয়া পল। ১ম ম্যাট ১২ রানে হেরে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় টেস্ট হেরে বাংলাদেশের সাথে টেস্ট সিরিজ ড্র করার হতাশার মধ্যে দুঃসংবাদ পেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ক্রিকেটার। আইসিসির আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে দলটির জেডেন সিলস এবং কেভিন সিনক্লেয়ারকে।
দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালীন উইকেট নেওয়ার পর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের দিকে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি করার জন্য সিলসকে তার ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তার শৃঙ্খলা সংক্রান্ত রেকর্ডে একটি ডিমেরিট পয়েন্টও যুক্ত হয়েছে। ২৪ মাসের মধ্যে এটা তার এই ধরনের প্রথম অপরাধ।
আরও পড়ুন
তাইজুলের ফাইফারে বাংলাদেশের দুর্দমনীয় জয় |
সিলসের জরিমানা আইসিসি কোড অফ কন্ডাক্ট ফর প্লেয়ার এবং প্লেয়ার সাপোর্ট পার্সোনেলের লঙ্ঘনের সাথে সম্পর্কিত, যেসব আচরণ খেলার চেতনার পরিপন্থী-এর সাথে যুক্ত।
সিলস একাদশে থাকলেও সিনক্লেয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন বদলি ফিল্ডার হিসেবে নেমে। মাঠের আম্পায়ারদের সতর্কতা উপেক্ষা করা এবং বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার কারণে তার ম্যাচ ফির ১৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। সিনক্লেয়ার যা করেছেন, তা খেলোয়াড় এবং প্লেয়ার সাপোর্ট কর্মীদের জন্য আইসিসির আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।
সিলস এবং সিনক্লেয়ার তাদের নিজ নিজ অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং ম্যাচ রেফারির দেওয়া শাস্তি মেনে নিয়েছেন। ফলে আনুষ্ঠানিক শুনানির আর প্রয়োজন হয়নি।
আরও পড়ুন
জাকের ঝড়ে স্মরণীয় এক জয়ের স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশ |
প্রথম টেস্টে হেরে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চার দিনের মধ্যে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে নেয় ১০১ রানে। পুরো ম্যাচে কয়েকবারই দুই দলের খেলোয়াড়দের একে অন্যকে ‘স্লেজিং’ করতে দেখা গেছে।
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের, এমনকি পাকিস্তানের কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার বেশ আগে থেকেই যা বলে আসছিলেন, ঠিক সেটাই হয়ত সঠিক হতে চলেছে। আর তা হল নিজেদের মাটিতে পুরো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতেই হবে পাকিস্তাব ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি)। ভারতের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলেই শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট আয়োজনে রাজি হতে যাচ্ছে তারা। তবে এটা মেনে নিতে বিনিময়ে নিজেদের বেলাতেও হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার শর্ত দিয়েছে পিসিবি, এমনটাই দাবি ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর।
গত কয়েক মাস ধরেই আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের অংশগ্রহণের বিষয়টি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড শুরু থেকেই স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানে গিয়ে খেলবে না তারা এবং তাদের ম্যাচ যেন আয়োজন করা হয় দ্বিতীয় আরেকটি দেশে। পাকিস্তান লম্বা সময় পর্যন্ত এই প্রস্তাবে রাজি না হলেও বরফ নাকি অবশেষে গলতে শুরু করেছে। তবে এক্ষেত্রে পিসিবির দাবি, ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে হওয়া সব আইসিসি ইভেন্টে তাদের ম্যাচও যেন হাইব্রিড মডেলে রাখা হয়।
আরও পড়ুন
ভারতের অনাগ্রহ, নাছোড়বান্দা পাকিস্তান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছেই |
তিন পক্ষের মধ্যে আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে। ইএসপিএনক্রিকইনফো তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে যে, পিসিবি গত সপ্তাহে দুবাইতে আইসিসি এবং বিসিসিআইয়ের সাথে বৈঠকে তার প্রস্তাব পেশ করেছে। সেখানে তারা ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাইরে ভিন্ন একটি একটি ন্যায়সঙ্গত এবং দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিরও আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ভারতে হতে যাওয়া বৈশ্বিক ইভেন্টগুলির সময় পাকিস্তানের ভিন্ন আরেকটি দেশে খেলার চুক্তির কথা।
তবে পিসিবি কি এটা স্রেফ আগামী তিন বছর নাকি ২০৩১ সাল পর্যন্ত চাচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
২০৩১ সালের ভারত ছেলেদের তিনটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে। যার মধ্যে রয়েছে ২০২৬ সালে শ্রীলঙ্কার সাথে যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং শ্রীলঙ্কার সাথে, ২০২৯ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং যৌথভাবে বাংলাদেশের সাথে ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। পাশাপাশি ২০২৫ সালে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপও হবে ভারতের। সহ-আয়োজক ইভেন্টগুলোর ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা না হলেও ঝামেলা হতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের মুখোমুখি ম্যাচে, যেখানে ভারত কোনোভাবে চাইবে না আরেকটি দেশে খেলতে। আবার পাকিস্তানও এক ম্যাচের জন্য রাজি হবে না ভারতে যেতে।
আরও পড়ুন
‘ভারত-পাকিস্তান আছে বলেই আইসিসি টিকে আছে’ |
ভারত ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) পুরো বিষয়টি নিয়ে চুপচাপই আছে এখনও। তবে এটা ধারণা করা যায় যে, তারা তাদের টুর্নামেন্টের জন্য হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব গ্রহণ করতে রাজি নয়। আর এই কারণেই আইসিসি বোর্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পিসিবি প্রস্তাবটি নিয়ে পুনরায় বৈঠক করবে এবং সেটা যাচাই করে দেখবে। আর পিসিবি এবং বিসিসিআই উভয়কেই তাদের নিজ নিজ সরকার থেকে এই সিদ্ধান্তটির অনুমোদন নিতে হবে। সেই বৈঠকের তারিখ হিসেবে আইসিসি অস্থায়ীভাবে আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নির্ধারণ করেছে আইসিসি।
পুরো সিরিজে বাংলাদেশ তো বটেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজও ব্যাটিং করেছে ভীষণ ধীরলয়ে। তবে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষকে চমকে দেয় সফরকারীরা। গোটা ইনিংসেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ পায় এমন স্কোর, যা শেষ পর্যন্ত এনে দেয় দুর্দান্ত এক জয়। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ মনে করেন, ইতিবাচক ক্রিকেট ছাড়া এই ম্যাচ জেতার আর উপায়ও ছিল না।
১৮ রানের লিড নিয়ে বাংলাদেশ যখন দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নামে, তখন টিকে থাকার চেয়ে রান করাটাই ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অসুস্থতার কারণে মুমিনুল হক আট নম্বরে নেমে যাওয়া ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া শাহাদাত হোসেন দিপু (২৬ বলে ২৮) ও মিরাজ (৩৯ বলে ৪২) দুজনই খেলেন ক্যামিও ইনিংস। সাথে ওপেনার সাদমান ইসলাম ও শেষের দিকে জাকের আলি অনিকের ফিফটিও আসে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মন্ত্রেই।
আরও পড়ুন
সিরিজে সমতা আনতে পারবেন মিরাজ-তাসকিনরা? |
সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ বলেছেন, দ্রুত রান তোলার চেষ্টাই তাদের নিয়ে গেছে জয়ের পথে। “বার্তাটা এই ছিল যে, আমাদের ইতিবাচক খেলতে হবে। সৌরভ (মুমিনুল হক) ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ার পর দলের সবাই একটু চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম, কারণ ওই জায়গাটায় ব্যাট করাটা কঠিন। দিপুকে আমি তিনে খেলতে বলেছিলাম, ও রাজি হয়েছে। ওকে শুধু একটা কথা বলেছিলাম যে, ‘এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক ব্যাটিংটাই করো। প্রথম বল মারার মতো পেলে মেরে দাও। কেউ তোমাকে কিছু বলবে না।’ সেভাবেই খেলেছে ও, ওর ২৮টা রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
মাটি কামড়ে পড়ে থাকা ব্যাটিং করার কাজটা ভালো করা দিপু তিনে নেমে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবিদার অবশ্যই। তবে চারে নেমে মিরাজ যেভাবে ক্যারিবিয়ান পেসারদের দম নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে রান বের করেছেন একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে, সেটাও ম্যাচের ভাগ্য বদলে রেখেছে বিশাল ভূমিকা। সাথে জাকেরের প্রায় ১০০ স্ট্রাইক রেটে ৯১ এর সুবাদে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ওভারপ্রতি ৪.৪৭ রানে, যা সিরিজেরই সর্বোচ্চ।
মিরাজের মতে, যেভাবেই হোক দ্রুত রান করাটাই ছিল সেরা পন্থা। “আমি যখন চার নম্বরে গেলাম, একই মানসিকতা নিয়ে খেললাম। কারণ এই উইকেটে রান করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আর ক্রিকেটারদের প্রতিও এই বার্তা ছিল যে, প্রতিটা রানই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ব্যাটসম্যান যেন স্রেফ রানের জন্য খেলে। আমরা এই পরিকল্পনাতেই খেলেছি।”
আরও পড়ুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসেই ‘টার্নিং পয়েন্ট’ দেখছেন মিরাজ |
নাজমুল হোসেন শান্তর চোটে প্রথমবার টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়া মিরাজ বাংলাদেশকে এনে দিলে ক্যারবিয়ানে ১৫ বছর পর প্রথম টেস্ট জয়, সাথে সিরিজ হয়েছে ড্র। স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাসটা একটু বেশি তাই। “খুবই ভালো লাগছে। প্রথম ম্যাচে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিততে পেরেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অজর্ন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটি পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।”
ওয়ানডে সিরিজে জয়ের অভ্যাস আগেই গড়া হয়েছে বাংলাদেশের। স্রেফ জয়ই নয়, ইতিহাসও গড়া হয়েছে বেশ। আয়ারল্যান্ডের মেয়েদের বিপক্ষে রেকর্ড রান, রেকর্ড রান তাড়া, সর্বোচ্চ বাউন্ডারি, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান, ফিফটি। সিরিজ জুড়ে এসব হয়েছে প্রায় প্রতিটিতেই। সিরিজ শেষে ৩-০, এমন উল্লাস তো বাংলাদেশের মেয়েদেরই মানায়।
ওয়ানডের পাঠ চুকিয়ে এবার নিগার সুলতানা জোতির দলের গন্তব্য সিলেট। তিন ম্যাচের টোয়েন্টি খেলতে চা, পাহাড় আর প্রকৃতির সিলেটে বাংলাদেশ চাইবে ২০ ওভারেও ৩-০ তে জিততে।
ওয়ানডেতে রীতিমতো দাপট দেখিয়েছেন টপ অর্ডার ব্যাটাররা। দেড় বছর পর ওয়ানডেতে প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা শারমিনের সামনে এবার টি-টোয়েন্টিতেও নতুন শুরুর সুযোগ। এই ফরম্যাটে ল প্রায় দুই বছর পর ডাক পেয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
আরও পড়ুন
ইতিবাচক ক্রিকেট খেলে জয়ের আনন্দে ভাসছেন মিরাজ |
বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ জয়ে শারমিনের অবদান ৭০.৩৩ গড়ে ২১১ রান। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার করেন দুইশর বেশি রান। প্রথম ম্যাচে রেকর্ড ১৪ চার মারা শারমিনের ব্যাট থেকে পরের দুই ম্যাচে আসে আরও ১৫টি বাউন্ডারি। এটিও এক সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারের রেকর্ড।
শারমিন সুপ্তার সাথে বাকি ব্যাটারদের সামনেও সুযোগ নিজেদের মেলে ধরার। এমনিতে টি-টোয়েন্টি মানেই যেনো ব্যাটিং ব্যর্থ দল। এবার অবশ্য একেবারেই ভিন্নটা ছিল ওয়ানডে সিরিজে।
অধিনায়কের দিকেও তাকিয়ে দল। ওয়ানডে সিরিজে খুব একটা সুযোগ না মিললেও নিগার সুলতানা জ্যোতি টি-টোয়েন্টিতে বড় আশার নাম। ম্যাচে, রানে, গড়ে, রেকর্ডে নিগার নামের মতোই ছড়াতে হচ্ছে।
অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারও দিতে চাচ্ছেন নিজের সেরাটা। লেগ স্পিনের সাথে কার্যকরী বোলিং আর বড় ছয় মারার কাজটা ভালোই করতে পারেন। এর প্রমাণ তিনি দিয়েছেন প্রথম ওয়ানডেতেই।
দলের বাকিরাও ছন্দে, ঠিকঠাক। শক্তির জায়গা বোলিং আর আশার জায়গা ব্যাটিং। যা আশাহত না করলে আসছে আরেকটা সিরিজ জয়ও।
আরও পড়ুন
‘বিশ্বের যেকোনো ব্যাটিং অর্ডারকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বাংলাদেশ’ |
এর আগে আইরিশদের সাথে ১১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে ৮ ম্যাচ জয়ের সাথে হার বাকি তিন ম্যাচে। সিলেটে এর আগে একবারই খেলেছিল দুই দল। দশ বছর আগে সে ম্যাচ লাল সবুজের প্রতিনিধিরা জিতেছিল। এবারও নিগারের দল চাইবে সেই স্মৃতিই ফেরাতে।
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টির সবকটাই আপনি দেখতে পাবেন দেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল টি স্পোর্টসের নিজস্ব প্রডাকশনে, যা শুরু হচ্ছে আগামীকাল দুপুর ২টায়, সিলেটে।