
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন প্লেয়ার্স লিস্টে নাম উঠিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ম্যাচের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। ছিলেন সেই দিন ৯৯ রানে ব্যাটিংয়ে।
আর মাত্র ১ রান হলেই শততম টেস্টে সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ডে ১০ কৃতিমানের পাশে শোভা পাবে মুশফিকুর রহিমের নাম। এমন একটি স্মরণীয় মুহূর্তের স্বাক্ষী হতে দ্বিতীয় দিন বল মাঠে গড়ানোর বেশ আগেই হাজির দর্শক, বিসিবির একদল পরিচালক। তবে সেই একটি রানের জন্য মুশফিককে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে দ্বিতীয় দিনের নবম বল পর্যন্ত। বাঁ হাতি স্পিনার হামফ্রিসের প্রথম ওভারের ৬টি বলের সব কটি ডট করেছেন মুশফিক। দ্বিতীয় ওভারে পেসার জর্ডান নিল-এর প্রথম বলে লিটন সিঙ্গল নিয়ে প্রান্ত বদল করলে মুশফিকের প্রতীক্ষার অবসান হয়। ১ বল ডট করে পরের বলে
ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গল নিয়েই ঢুকে গেলেন টেস্টের আর একটি অভিজাত ক্লাবে। কলিন কাউড্রে, জাভেদ মিয়াদাদ, গর্ডন গ্রীনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট এবং ডেভিড ওয়ার্নারের পর ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন মুশফিক।
ভাবুন তো, যে ক্লাবের সদস্যপদ পাননি ভারত, শ্রীলঙ্কা, নিউ জিল্যান্ডের মতো দেশের কোনো লিজেন্ডারি, সেই ক্লাবে মুশফিকুর রহিম!
সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরির ইনিংসটি থেমেছে ১০৬ রানে। বাঁ হাতি স্পিনার হামফ্রিসের এক্সট্রা বাউন্স ব্যাকফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে স্লিপে বালবার্নির ডাইভিং ক্যাচে থেমেছেন মুশফিক। ২৮৪ মিনিটের ইনিংসে মেরেছেন তিনি ৫টি বাউন্ডারি। ৪র্থ উইকেট জুটিতে লিটনকে সঙ্গে নিয়ে ১০৭ রানে দিয়েছেন মুশফিক নেতৃত্ব।
মুশফিকুরের ইতিহাসময় টেস্টে লিটন ফিরেছেন ছন্দে। মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট ম্যাচটি প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে লিটনের শততম ম্যাচ। এমন ম্যাচে ১১ রান করে ৬ষ্ঠ বাংলাদেশী হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে ৬ষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে পেয়েছেন ৩ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ। স্পিনার গ্যাভিন হোয়ে-কে প্যাডেল সুইপ শটে বাউন্ডারিতে পূর্ণ করেছেন ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি। ১৫ মাস পর তার টেস্ট সেঞ্চুরিটি ১৪ ইনিংস বিরতি দিয়ে। মুশফিকুর রহিমের মতো লিটনকেও থামিয়েছেন হামফ্রিস। এবং যথারীতি লিটনও দিয়েছেন স্লিপে ক্যাচ। ২৭৩ মিনিটের ইনিংসে ১২৮ রানে মেরেছেন লিটন ৮ চার, ৪ ছক্কা। এমন একটি দিনে ফিফটি হাতছাড়া করেছেন মিরাজ। ৪৭ রানের মাথায় লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়ের বলে হাফ হার্টেড শট নিতে যেয়ে পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ মিরাজ। যে ইনিংসে মেরেছেন মিরাজ ৪ চার, ১ ছক্কা।
প্রথম দিন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৯২/৪। দ্বিতীয় দিন শেষ ৬ জুটি যোগ করেছে ১৮৪ রান। থেমেছে বাংলাদেশ ৪৭৬-এ। দ্বিতীয় দিনের টি ব্রেকের আধ ঘন্টা আগে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস।
২ বছর আগে আইরিশ অফ স্পিনার ম্যাকব্রাইন বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে পেয়েছিলেন ইনিংসে ৬ উইকেট (৬/১১৮)। সেটাই ছিল প্রথম ১০ টেস্টে তার একমাত্র ৫ উইকেটের ইনিংস। মিরপুরে ফিরে আবার দেখা পেয়েছেন ৬ উইকেট (৬/১০৯)। আগের দিনের ৪ উইকেটের পাশে দ্বিতীয় দিনের শেষ স্পেলে (২.১-০-৯-২) ম্যাকব্রাইন ২ উইকেট পেয়ে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেছেন।
মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখার পথে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ দল। স্টালির্ংকে রিভিউ আপীলে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুটা করেছেন পেসার খালেদ (৬-০-৩০-১)। সময় গড়ানোর সাথে সাথে উইকেটে টার্ন এবং বাউন্স পেয়ে বাংলাদেশের তিন স্পিনার ( হাসান মুরাদ ১০-৩-১০-২, মিরাজ ৩-০-১১-১, তাইজুল ৩-০-৬-১) ছড়িয়েছেন আতঙ্ক। তিন স্পিনারের ঘূর্নিতে রীতিমতো দিশেহারা আয়ারল্যান্ড আরও একটি ইনিংস হারের মুখে। সাড়ে ৭ ঘন্টা ফিল্ডিং করে অতিষ্ঠ আয়ারল্যান্ড টপ এবং মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ব্যাটিংয়ে ক্লান্তি ফুটে উঠেছে। ব্যাটিংয়ে নেমে দিনের শেষ ১৬৮ মিনিট হারিয়েছে সফরকারীরা ৯৮ রানে ৫ উইকেট। ফলো অন থেকে বাঁচতে তাদেরকে করতে হবে শেষ ৫ উইকেটে আরও ১৭৯ রান।
No posts available.
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৩৭ পিএম
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:৩২ পিএম

মাউন্ট মঙ্গানুইতে চলছে রান উৎসব। প্রথম দিন রেকর্ডের পসরা সাজিয়ে সেই উৎসব শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। আজ দ্বিতীয় দিনেও কিউইদের রান বন্যার জবাব দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজও।
এক উইকেটে ৩৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউ জিল্যান্ড আজ ইনিংস ঘোষণা করেছে আরো ২৪১ রান যোগ করে। ১৫৫ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৫৭৫ রান তুলে ক্ষান্ত হয় স্বাগতিকরা। ১৭৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ডেভন কনওয়ে করেন ডাবল সেঞ্চুরি।
এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত দৃঢ়তায় কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৩ ওভারে ১১০ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে সফরকারীদের। ক্যারিবিয়রা পিছিয়ে এখনো ৪৬৫ রানে। ফিফটি করেছেন ব্র্যান্ডন কিং (৫৫), জন ক্যাম্পেবেলের রান ৪৫।
প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনটা বেশ ভালোয় শেষ করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিং সহায়ক পিচ আর কন্ডিশনের সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি দুই ক্যারিবিয় ওপেনার। এর আগে দিনের শুরুতে বোলাররাও নিউ জিল্যান্ডের রান তোলার গতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
নিউ জিল্যান্ডের বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনারই। প্রথম দিনে টম লেথামের শতক আর দ্বিতীয় দিনে কনওয়ের দ্বি-শতক। ৩১ চারে ৩৬৭ বলে ২২৭ করা কনওয়ের এটি টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। এর আগেও অবশ্য একবার ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার।
বাকি ব্যাটারদের মধ্যে ফিফটি করেন রাচিন রবীন্দ্র। ১০৬ বলে ৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। এছাড়া কেইন উইলিয়ামসনের ৩১ গ্লেন ফিলিপসের ২৯ আর এজাজা প্যাটেল করেন ৩০।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জায়ডিন সিলস, অ্যাডারসন ফিলিপ ও জাস্টিন গ্রিভস। কেমার রোচ ও রোস্টন চেজের শিকার একটি।

অ্যাশেজে চলছে স্নিকো বিতর্ক। অ্যাডিলেড টেস্টে স্নিকোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং এই প্রযুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্ক।
তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনের ঘটনা— গতকাল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি ৭২ রানে ব্যাট করছিলেন। জশ টাংয়ের বলে তাঁর ব্যাটে হালকা ছোঁয়া লেগে বল উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়ে। আউটের জোরাল আবেদন উঠলেও মাঠের আম্পায়ার নট আউট দেন।
ইংল্যান্ড রিভিউ নিলে তৃতীয় আম্পায়ার স্নিকোমিটারে একটি শব্দের স্পাইক লক্ষ্য করেন। তবে সেটি বল ব্যাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ের সঙ্গে মেলেনি। শব্দটি কয়েক ফ্রেম আগেই এসেছিল। অডিও-ভিডিওর এই অসামঞ্জস্যতার কারণে নট আউটের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
আজ স্নিকোমিটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিবিজি স্পোর্টস পুরো দায়ভার স্বীকার করে জানায়, অপারেটরের ভুলে বোলারের প্রান্তের মাইক্রোফোন নির্বাচন করা হয়েছিল। এর ফলেই অডিও ও ভিডিওর মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। এই ত্রুটি স্বীকারের পর আইসিসি ইংল্যান্ডকে তাদের হারানো একটি রিভিউ ফেরত দেয়।
স্নিকো নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। প্যাট কামিন্সের বলে উসমান খাজা প্রথম স্লিপে সম্ভাব্য ক্যাচ ধরেছেন কি না সিদ্ধান্তে জেমি স্মিথকে নট আউট দেওয়া হয়। তৃতীয় আম্পায়ার স্নিকো দেখে জানান, বলটি স্মিথের হেলমেটে লেগেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়দের দাবি বলটি গ্লাভসে লেগেছিল।
স্টাম্প মাইক্রোফোনের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে স্টার্ক বলেন,
‘স্নিকোকে বাদ দেওয়া উচিত। এটাই সবচেয়ে খারাপ প্রযুক্তি। ওরা আগের দিন ভুল করেছে, আজও আরেকটা ভুল করল।’
দুই ওভার পরে কামিন্সের বলে স্মিথ ক্যাচ আউট হন, যা নিয়ে মাঠে হতাশা প্রকাশ করেন স্মিথ ও বেন স্টোকস। স্নিকোতে দেখা যায়, বল ব্যাট পেরোনোর এক ফ্রেম পর স্পাইক এসেছে।
স্নিকো নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিংও। চ্যানেল সেভেনকে তিনি বলেন,
‘এখানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা অন্য দেশগুলোর প্রযুক্তির মতো ভালো নয়। আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই কথা বলবেন। তাঁরা এটা বিশ্বাস করতে পারেন না।’
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কোচ মার্কাস ট্রেস্কোথিক স্নিকো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানের আহ্বান জানান,
‘গতকাল আমরা একটি খারাপ সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছি, আর আজও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিষয়টি ঠিক করতে হবে।’

বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলেই সাফল্য পেলেন রিশাদ হোসেন। পরের ওভারে তৃতীয় বলে নিলেন আরেকটি উইকেট। তবে তৃতীয় ওভারটি আর ভালো গেল না বাংলাদেশের লেগ স্পিনারের। বিগ ব্যাশে বৃহস্পতিবার তাই মিশ্র দিন কাটল তার।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) মেলবোর্ন স্টারসের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে রিশাদের হোবার্ট হারিকেন্স। আগে ব্যাট করে ১৫৮ রানের বেশি করতে পারেনি হোবার্ট। ৪ ওভার বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে যায় মেলবোর্ন।
৩ ওভারে ৩৩ রান খরচ করে ২ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ। তৃতীয় ওভারে খরুচে বোলিংয়ের পর তাকে আর আক্রমণে আনেননি হোবার্ট অধিনায়ক নাথান এলিস।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৯ নম্বরে নেমে ৩ বলে এক বাউন্ডারিতে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাদ। বেন ম্যাকডারমট ৫২ বলে ৬৯, টিম ডেভিড ৩১ বলে ৩১ রান করলে কোনোমতে দেড়শ পার করে হোবার্ট হারিকেন্স।
পরে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম আক্রমণে আসেন রিশাদ। তৃতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন থমাস রয়েস। পরের ওভারে আরেক ওপেনার জো ক্লার্ককে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচে পরিণত করেন রিশাদ হোসেন।
দুই ওভার শেষে রিশাদের নামের পাশে দাঁড়ায় ১৪ রানে ২ উইকেট। এরপর দশম ওভারে আবার বোলিং করতে এলে তার শেষ তিন বলে দুই ছক্কার সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন মার্কাস স্টয়নিস। ওভারে খরচ হয় মোট ১৯ রান।
বাকি সময়ে বোলিং পাননি রিশাদ। হোবার্টের বাকি বোলাররাও আর কোনো উইকেট নিতে পারেননি।
৭ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন স্টয়নিস। আরেক অপরাজিত ব্যাটার ক্যাম্পবেল কেলাওয়ে ২৭ বলে করেন ৪১ রান।

আইপিএল নিলামে ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কার্তিক শর্মাকে দলে ভেড়ায় চেন্নাই সুপার কিংস। রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া ১৯ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার ব্যাটারের যাত্রাটা ছিল বন্ধুর-কন্টকময়।
কার্তিকের পরিবার রাজস্থানের ভরতপুরের বাহনেরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ক্রিকেট প্রশিক্ষণের খরচ জোগাতে পৈতৃক জমি বিক্রি করতে হয়েছিল পরিবারকে। মা নিজের গয়না বিক্রি করেন ছেলের স্বপ্নপূরণে।
কার্তিকের ক্রিকেট যাত্রা সম্পর্কে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কার্তিকের বাবা মনোজ শর্মা। যেখানে উঠে এসেছে দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই ও তাঁর পরিবারের অদম্য ইচ্ছাশক্তির গল্প।
গোয়ালিয়র এক টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে অর্থের অভাবে না খেয়ে থাকতে হয়েছিল কার্তিক ও তাঁর বাবাকে। মনোজ ছেলের সঙ্গে গিয়েছিলেন, ধরে নিয়েছিলেন চার-পাঁচ ম্যাচেই দল বাদ পড়বে- এতদিন থাকার সামর্থ্যই তাঁদের ছিল।
কিন্তু কার্তিকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দল ফাইনালে উঠে যায়। তখন হাতে আর টাকা না থাকায় বাবা-ছেলেকে থাকতে হয় আশ্রয়কেন্দ্রে। সেই স্মৃতির স্মরণ করে কার্তিকের বাবা মনোজ আইএএনএসকে বলেন,
‘একদিন তো আমাদের না খেয়েই ঘুমোতে হয়েছিল। ফাইনাল জিতে পুরস্কারের টাকা পাওয়ার পরেই আমরা বাড়ি ফিরতে পেরেছিলাম।’
জমি ও গহণা বিক্রি করার কথা স্বরণ করে মনোজ বলেন,
‘ওটা আমাদের জীবনের খুব কঠিন সময় ছিল, কিন্তু আমরা কখনও কার্তিকের স্বপ্ন ভাঙতে দিইনি। আমার স্ত্রী রাধা ও আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম- যেভাবেই হোক কার্তিককে ক্রিকেটার বানাব।’
কার্তিকের ক্রিকেটীয় প্রতিভা ধরা পড়ে খুব ছোটবেলাতেই। মাত্র আড়াই বছর বয়সে ব্যাট হাতে বল মেরে বাড়ির দু’টি ফটোফ্রেম ভেঙে ফেলেন কার্তিক।
মনোজ নিজেও একসময় ক্রিকেটার ছিলেন, কিন্তু চোটের কারণে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবন থেমে যায়। তিনি বলেন,
‘আমি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি, তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমার সন্তান করবে। আজ যা কল্পনারও ঊর্ধ্বে।’
প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কার্তিকের পথ মসৃণ ছিল না। অনূর্ধ্ব-১৪ ও অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলার পর টানা চার বছর দলে জায়গা পাননি। তবুও হাল ছাড়েননি কার্তিক। আইএএনএসকে তিনি বলেন,
‘আমি শুধু খেলে গেছি। বাবা আমাকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিতেন। শেষে অনূর্ধ্ব-১৯, তারপর রঞ্জি ট্রফিতে সুযোগ পাই।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্সই শেষ পর্যন্ত আইপিএলের দরজা খুলে দেয় কার্তিকের। হঠাৎ খ্যাতি পেলেও মাটিতেই পা রাখছেন তিনি।

বছরের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে শুরু। এরপর টানা ব্যস্ত সূচির মধ্যে ঢুকে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তাই সামনের বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিপিএলেও জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের পথে হাঁটবে বিসিবি।
সিলেটে আগামী ২৬ ডিসেম্বর শুরু হবে বিপিএলের দ্বাদশ আসর। প্রায় এক মাসের ব্যাট-বলের লড়াই শেষে টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে আগামী বছরের ২৩ জানুয়ারি। এর দুই সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন আসর।
মূল পর্বের খেলা শুরুর আগে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশের। তাই বিপিএলে কোনো ক্রিকেটার চোট পেলে বা অত্যধিক ক্লান্ত হয়ে গেলে তার পক্ষে বিশ্বকাপে স্বাভাবিক পারফরম্যান্স করা একদমই সহজ হবে না।
তাই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হলেও, এর শুরু থেকেই ক্রিকেটারদের ফিটনেস ও ওয়ার্কলোডের দেখভাল করবে বিসিবি। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানিয়েছেন বোর্ডের ক্রিকেট অপ্সের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
“আমাদের সবদিকে খেয়াল থাকবে। বিপিএলে যাদের খেলা আগে শেষ হয়ে যাবে তাদেরকে নিয়ে কাজ শুরু হয়ে যাবে কিন্তু বিপিএল ফাইনাল খেলার অনেক আগে থেকেই। আমরা হয়তো দেখবো যে, যারা প্লে অফে ওঠেনি, তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যারা জাতীয় দলের সম্ভাব্য খেলোয়াড় তাদের নিয়ে আমরা কাজ করা শুরু করে দেব।”
এসময় তার পাশে থাকা অপ্সের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস পুরো প্রক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করেন।
“আমরা গত বছরও এই পদক্ষেপটা নিয়েছিলাম, এবারও থাকছে। বোর্ডের একজন ট্রেনার পুরো বিপিএল কাভার করবেন। জিপিএসের মাধ্যমে জাতীয় দলের সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্টজুড়ে ওয়ার্কলোড ম্যানেজ হবে। ওই ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে যদি কোন প্লেয়ার রেড জোনে থাকে, সেইটা ওই ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে কমিউনিকেটেড করে দেওয়া হবে, এই ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিতে হবে।”
আরও পড়ুন
| রংপুর রাইডার্স-বিএসজেএ মিডিয়া কাপের সেমিফাইনালে কালের কণ্ঠ |
|
ফাহিম জানান, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ দুটো খেলার জন্য জানুয়ারির ২৮ তারিখেই ভারতে চলে যাবে বাংলাদেশ দল।
“বিপিএল শেষ হওয়ার পরপরই কিন্তু ছোট্ট করে ঘরেই ঘরের মাটিতেই কিছু ট্রেনিং প্রোগ্রাম হবে দুই তিন দিনের জন্য। কারণ সময় খুব কম। দল খুব সম্ভবত যদি ভুল না করে থাকি... এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে হয়তো দলটা ২৮ তারিখে চলে যাবে বেঙ্গালুরুতে।”
“ওখানে আমরা দুটো প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলব বিশ্বকাপের ঠিক আগে। একটা নামিবিয়ার সঙ্গে, অন্যটা আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তাই ব্যাঙ্গালুরুতে আমরা ২৮ তারিখে চলে যাব, আইসিসির মূল টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে।”
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের শুরু হবে বাংলাদেশের পথচলা।