
প্রথম দিনের খেলা শেষে আম্পায়ার যখন বেলস ফেলে দেন, মুশফিকুর রহিম তখনও ৯৯ রানে অপরাজিত। একটি রানের জন্য তাই অপেক্ষা করতে হয় ১৭ ঘণ্টার বেশি। তবে আবার মাঠে বেশি অপেক্ষা করেননি মুশফিক। প্রথম ওভারেই তিনি করে ফেললেন ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই কাঙ্খিত মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। দেশের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নেমে শতক করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম তুলে রাখলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
টেস্ট ইতিহাসে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে মুশফিকের আগে সেঞ্চুরি করা ব্যাটার ১০ জন। এবার তিন অঙ্ক ছুঁয়ে যেন একাদশ পূর্ণ করলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
১৯৬৮ সালে প্রথম নিজের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন কলিন কাউড্রি। এরপর একে একে এই তালিকায় যুক্ত হন গর্ডন গ্রিনিজ, জাভেদ মিঁয়াদাদ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং (দুই ইনিংসেই), গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট ও ডেভিড ওয়ার্নার।
এই দশজনের মধ্যে শততম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন রুট ও ওয়ার্নার। ২০২২ সালে শততম টেস্টে শতকের তালিকায় যোগ দেন ওয়ার্নার। মুশফিকের সামনে এবার রুট ও ওয়ার্নারের সঙ্গী হওয়ার সুযোগ।
শততম টেস্টে মুশফিকের চেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি আছে শুধু গর্ডন গ্রিনিজ। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি শততম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন ৩৮ বছর ১১ মাস ১২ দিন বয়সে। এই ম্যাচের শুরুতে মুশফিকের বয়স ৩৮ বছর ৬ মাস ১১ দিন।
টেস্ট ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে মুশফিকের এটি ১৩তম সেঞ্চুরি। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে এটিই সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড। ৭৫ টেস্টে ১৩টি সেঞ্চুরি আছে বাঁহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হকেরও।
প্রথম দিন প্রথম সেশনে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছিল মুশফিকের। ৯৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা চাপে বাংলাদেশ। সেখান থেকে মুমিনুলের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক।
মুমিনুল ৬৩ রান করে আউট হয়ে গেলে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক। প্রথম দিনে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৯০ রান।
সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পথে একদমই ঝুঁকি নেননি অভিজ্ঞ ব্যাটার। সাবধানী ব্যাটিংয়ে রয়েসয়ে খেলে ১৯৫ বলে মাত্র ৫ চার মেরে কাঙ্খিত মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি।
No posts available.
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৪:৫৪ পিএম
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৪:১১ পিএম
২১ নভেম্বর ২০২৫, ২:০৩ পিএম

প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ডকে ফলোঅন করানোর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। তবে মিরপুর টেস্টে ফলোঅনের চেয়েও নিরাপদ জয় গুরুত্বপূর্ণ স্বাগতিকদের কাছে। ২১১ রানে এগিয়ে থেকেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামাই পছন্দ করল তারা।
দুই ওপেনান মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম দারুণ ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যে পূরণের দিকেই যাচ্ছে বাংলাদেশের লিড। তৃতীয় দিন শেষে সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৫৬ রান। সব মিলিয়ে লিড দাঁড়াল ৩৬৭ রান।
সাদমান ১১০ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত আছেন। ১৯ রান থেকে কাল আবারও ব্যাটিংয়ে নামবেন মুমিনুল হক। তার আগে জয-সাদমানের পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসের সৌজন্যে প্রথম টেস্টের পর এবার দ্বিতীয়টিতেও শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল বাংলাদেশ।
২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৪ ও ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন। টানা দুই ম্যাচে শতরানের সেই উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। ১০ বছর পর মিরপুরে তাঁদের স্মৃতি ফেরালেন জয়-সাদমান। আয়ারল্যান্ডের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়ে।
তার আগে আয়ারল্যান্ডের শেষ ব্যাটার ম্যাথু হামফ্রিজকে ফিরিয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে বসলেন তাইজুল ইসলাম। দুজনের টেস্ট ক্যারিয়ারেই এখন উইকেট ২৪৬টি।
তাইজুলের ঘূর্ণি জাদুতে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ড অলআউট হয় ২৬৫ রানে। ব্যাটারদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ১৭১ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থেকে যান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লরকান টাকার।
গতকাল ৫ উইকেটে ৯৮ রানে দিনের খেলা শুরু করে বাকি ৫ উইকেটে আরও ১৬৭ রান যোগ করেছে আইরিশরা। টাকারের ৭৫ ছাড়াও জর্ডান নিল ৪৯ ও স্টিফেন ডোহেনি করেন ৪৬ রান।
তাইজুল ৪টি, হাসান মুরাদ ও খালেদ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।

তৃতীয় দিনে মিরপুরের ২২ গজী পিচে যে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস ছিল, স্পিনারদের ছোবলে আইরিশদের লন্ডভন্ড হওয়ার আভাস ছিল, তা দেখেনি দর্শক। সারা দিন পড়েছে ৬টি উইকেট। যে ৬টি উইকেটের বিপরীতে দুদল যোগ করেছে ৩২৩রান।
বোলারদের গর্জে ওঠা বোলিংয়ে পিচে ভূমিকম্প ওঠেনি। তবে সাত সকালে স্টেডিয়ামে জড়ো হওয়া হাজার খানেক দর্শক এবং প্রেস বক্সে জনা পনের সাংবাদিক, ২ জন প্রেস বক্স স্কোরার, একদল কমেন্টেটর এবং টিভি প্রডাকশন কর্মীরা টের পেয়েছেন প্রকৃতির রুদ্ররূপ, ভূমিকম্প। দিনের প্রথম ড্রিংকস ব্রেক শেষে ২৬ সেকেন্ডের এক ঝাঁকুনিতে কাঁপিয়ে দিয়েছে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। আতঙ্কে খেলা ৩ মিনিট স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছেন দুই আম্পায়ার।
শততম টেস্ট নিজে রাঙিছেন মুশফিক। করেছেন ১০০-তে একশ। টিমমেটদেরও করেছেন মাইলস্টোন টেস্টে উদ্বুদ্ধ। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন লিটন, বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ৬ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছেন। টেস্টের তৃতীয় দিনটি রাঙিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
টেস্টে উইকেট শিকারে দুই বাঁ হাতি স্পিনার সাকিব-তাইজুলের লড়াইটা জমে উঠেছে বেশ ক'বছর ধরেই। গত বছরের অক্টোবরে কানপুর টেস্টের পর থেমে গেছে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার। তাতেই পেছন থেকে ছুটতে ছুটতে সাকিবকে টপকে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাইজুল। সিলেট টেস্টে দুই ইনিংস মিলে ৫ উইকেট পেয়ে সাকিবকে ছুঁয়ে ফেলতে দরকার ছিল মিরপুর টেস্টে ৪ উইকেট। মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন হামফ্রিসকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে সাকিবকে ছুঁয়েছেন তাইজুল। টেস্টে ২৪৬ উইকেট পেতে সাকিবের লেগেছে ১৭ বছর, সেখানে ১১ বছরে সাকিবের শিকার সংখ্যা স্পর্শ করেছেন তাইজুল। সাকিব যেখানে ৭১ টেস্টে ২৪৬ উইকেট শিকার করেছেন, সেখানে ৫৭ টেস্টে সাকিবের সমান উইকেট শিকার করেছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল।
লাকি গ্রাউন্ড মিরপুরে টেস্ট খেলতে নেমে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের (৮/৩৯) অতীত থেকে একটু বেশিই প্রেরণা খুঁজে পান তাইজুল। শুক্রবার তার দুটি স্পেলে শিকার সংখ্যা ৪-এ (৪/৭৬) প্রিয় ভেন্যুতে আরও একটি কৃতি গড়েছেন তাইজুল।
মিরপুরের রাজা সাকিবকে ১৩ মাস আগে টেস্ট বোলিংয়ে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তাইজুল। সাকিব যেখানে লাকি ভেন্যুতে ২১ টেস্টে ৭৬ শিকারে থমকে দাঁড়িয়েছেন, সেখানে ১৭ টেস্টে তাইজুলের উইকেট সংখ্যা ৮৬টি। এক ভেন্যুতে টেস্টে উইকেট শিকারের সেঞ্চুরির তালিকায় মুরালীধরন, এন্ডারসন,স্টুয়ার্ট ব্রড, রঙ্গনা হেরাথের পাশে জায়গা করে নিতে দরকার তাইজুলের ১৪টি উইকেট। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে আড়াইশ উইকেট থেকে ৪টি শিকার দূরে এখন তাইজুল।
মুশফিকুর রহিমের অভিজাত ক্লাবের সদস্যপদের টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২১১ রানের লিড নিয়েও আয়ারল্যান্ডকে ফলো অনে বাধ্য করেনি বাংলাদেশ। ক্লান্ত বোলারদের বিশ্রাম দিতে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালই করেছে বাংলাদেশ। ৩৬৭ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে পিচে বল যেভাবে মুভমেন্ট এবং টার্ন পেয়েছে, তাতে তৃতীয় দিন ঝটপট ইনিংস গুটিয়ে ফেলার শঙ্কা ছিল আইরিশদের। দ্বিতীয় দিন শেষে আয়ারল্যান্ডের স্কোর যখন ৯৮/৫, তখন তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই তাদেরকে অল আউটের অঙ্ক কষেছেন সবাই। তবে তৃতীয় দিনে পিচ অস্বাভাবিক আচরণ করেনি। বরং ব্যাটারদের রেখেছে স্বস্তিতে। তাতেই প্রথম ঘন্টায় উইকেটহীন ৬৪, প্রথম সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান যোগ করে লাঞ্চের পর ৮২ মিনিট পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিয়েছে আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় দিনে আয়ারল্যান্ড যোগ করেছে শেষ ৫ উইকেটে ১৬৭ রান। তা সম্ভব হয়েছে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটির ৮১ এবং ৮ম উইকেট জুটির ৭৪ রানে। এর কৃতিত্বটা দিতে হবে লরকান টাকার-ডোহানি-জর্ডান নিল-কে। লরকান টাকার ২৪৭ মিনিটের অবিচ্ছিন্ন ইনিংসে ৭৫ রানে ছিলেন অপরাজিত। ডোহানি থেমেছেন ৪৬ রানে। জর্ডান নিল ১ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন ( ৮৩ বলে ৪৯)।
এদিন শেষ ১৫৬ মিনিট ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিং জুটি ১১৯ রান করেছে। ২০তম টেস্টে হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছেন মাহামুদুল হাসান জয়। পেয়েছেন ফিফটি (৯১ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৬০)। আর এক ওপেনার সাদমান আছেন ৬৯ রানে ব্যাটিংয়ে। মুমিনুল ১৯রানে অবিচ্ছিন্ন আছেন। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৫৬/১।
৩৬৭ রানের লিডে জয়ের পূর্বাভাস পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। তবে শান্ত'র দল দ্বিতীয় ইনিংস কতোদূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়, তার উপর নির্ভর করছে চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষের টার্গেট। ম্যাচের ফল কী নির্ধারিত হবে চতুর্থ দিনে, না টেনে নিয়ে যাবে ৫ম দিনে, সেদিকেই তাকিয়ে এখন সবাই।

ভারতের বিপক্ষে গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খেল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁজরের পেশির টানের (রিব বোন স্ট্রেস) চোটে পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন কাগিসো রাবাদা।
কলকাতায় গত মঙ্গলবার ট্রেনিংয়ের সময় চোট পাওয়ার পর থেকে আর বোলিং করেননি রাবাদা। গুয়াহাটিতেও বুধবার কোনো ট্রেনিং সেশনে তিনি অংশ নেননি এই পেসার।
কলকাতায় প্রথম টেস্টেও খেলতে পারেননি রাবাদা। চোট পুরোপুরি না সারায় গুয়াহাটির ম্যাচেও তাকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ) এক বিবৃতিতে জানায়, মেডিকেল টিম রাবাদার চোট নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় এখনো অস্বস্তি থাকায় ভারতের বিপক্ষে চলমান সফর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
চোটের কারণে এখন চার সপ্তাহের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন রাবাদা। প্রথম ধাপ প্রোটিয়া মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে হবে। দ্বিতীয় টেস্ট শেষে দেশে ফিরে যাবেন রাবাদা।
ফলে টেস্টের পর ভারতের বিপক্ষে আসন্ন তিন ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও খেলতে পারবেন না এই তারকা পেসার।

আয়ারল্যান্ডের শেষ ব্যাটার ম্যাথু হামফ্রিজকে ফিরিয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে বসলেন তাইজুল ইসলাম। দুজনের টেস্ট ক্যারিয়ারেই এখন উইকেট ২৪৬টি।
এই ইনিংসে তাইজুল সব মিলিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আয়ারল্যান্ড অলআউট হয়েছে ২৬৫ রানে। প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে এগিয়ে থাকলেও ফলো-অন করায়নি বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ১৭১ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থেকে যান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লরকান টাকার।
গতকাল ৫ উইকেটে ৯৮ রানে দিনের খেলা শুরু করে বাকি ৫ উইকেটে আরও ১৬৭ রান যোগ করেছে আইরিশরা। টাকারের ৭৫ ছাড়াও জর্ডান নিল ৪৯ ও স্টিফেন ডোহেনি করেন ৪৬ রান।
দিনের শুরুতেই ক্যাচ ছেড়ে ডোহেনিকে জীবন দেস মাহমুদুল হাসান জয়। ইবাদত হোসেন চৌধুরীর বলে গালিতে ক্যাচ নিতে পারেননি জয়, ১২ রানে বেঁচে যান ডোহেনি। বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে প্রথম ঘণ্টায় কোনো উইকেট হারায়নি আয়ারল্যান্ড।
ভূমিকম্পের পর জোড়া আঘাত করলেন তাইজুল। তাতেই ফেরে বাংলাদেশের স্বস্তি। ৫৯তম ওভারে তিন বলের মধ্যে তিনি ফেরান ডোহেনি ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে।
ওভারের প্রথম বলে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হন ৭৭ বলে ৪৬ রান করা ডোহেনি। এক বল পর স্টাম্প এলোমেলো হয়ে যায় ম্যাকব্রাইনের (০)। ষষ্ঠ উইকেটে ডোহেনি ও টাকার ১৫০ বলে ৮১ রানেন দারুণ এক জুটি গড়েন।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কাভার-পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে ফিফটি করেন। ১০৬ বলে ৬ চারে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি করলেন তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর আবার প্রতিরোধ গড়ে আয়ারল্যান্ড। অষ্টম উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়েন টাকার ও জর্ডান নিল।
দ্বিতীয় নতুন বল নিতেই সাফল্য পেলেন ইবাদত হোসেন। ৮৩তম ওভারে জর্ডান নিলকে ফিরিয়ে ৭৪ রানের অষ্টম উইকেট জুটি ভাঙেন অভিজ্ঞ পেসার। মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি করতে পারলেন না নিল।
দ্বিতীয় নতুন বলে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তৃতীয় বলেই তিনি কট বিহাইন্ডে ফেরান গ্যাভিন হোয়েকে (৪)। আয়ারল্যান্ডের শেষ ব্যাটার ম্যাথু হামফ্রিজকে (৪) ফিরিয়ে তাইজুল বসেন সাকিবের পাশে। তাইজুল ৪টি, হাসান মুরাদ ও খালেদ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৭৬
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৮.৩ ওভারে ২৬৫ (টাকার ৭৫*, ডোহেনি ৪৬, ম্যাকব্রাইন ০, নিল ৪৯, হোয়ে ৪, হামফ্রিজ ৪; ইবাদত ১২-১-৪৭-১, খালেদ ৮-০-৩৯-২, তাইজুল ৩৫.৩-৬-৭৬-৪, মুরাদ ২১-৩-৫৩-২, মিরাজ ৯-১-৩৮-১, মুমিনুল ৩-১-৫-০)

অভিজ্ঞ প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজলউড নেই, অস্ট্রেলিয়াকে সে অভাব টেরই পেতে দিচ্ছেন না মিচেল স্টার্ক। দলকে টেনে নিচ্ছেন একাই। তাঁর তোপের মুখে পার্থে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে রীতিমতো কাঁপছে ইংলিশরা। এই পেসারের আগুন ঝরা বোলিংয়ে ১৭২ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড।
পার্থে স্টার্ক গুনে গুনে নিয়েছেন ৭ উইকেট, টেস্টে ১৭তম বার ফাইফারের স্বাদ পেলেন তিনি। দিনের শুরুতে প্রথম ৬ ওভারের প্রথম স্পেলেই 'অন্যরকম সেঞ্চুরি' করে অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ পেসার অ্যাশেজে নিজের নাম লিখলেন এক বিশেষ মাইলফলকে। ২০২৫-২৬ অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে তুলে নিয়ে তিনি পৌঁছান অ্যাশেজে ১০০ উইকেটের ক্লাবে। অস্ট্রেলিয়ার ১৩তম বোলার হিসেবে অর্জন করলেন এই সাফল্য।
প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই আগুন ঝরানো স্পেলে একে একে জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট ও জো রুটকে ফেরান স্টার্ক। নিজের প্রথম ওভারেই ক্রলিকে আউট করে ইংলিশ ধসের শুরুটা করেন। তারপর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউতে ফেরান বেন ডাকেটকে।
তবে সবচেয়ে বড় শিকার ছিল জো রুটকে সাত বল খেলে শূন্য রানে ফিরিয়ে দেওয়া—যা স্টার্ককে পৌঁছে দেয় ইতিহাসের পাতায়। অ্যাশেজ ইতিহাসে স্টার্ক এখন অস্ট্রেলিয়ার ১৩তম বোলার, যাঁদের উইকেট সংখ্যা তিন অঙ্কে পৌঁছাল।
ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়া পর আরও চারটি উইকেট নেন স্টার্ক। অ্যাশেজে ৪৩ ইনিংসে মোট ১০৪ উইকেট নিয়ে স্টার্ক অস্ট্রেলিয়ার সফল বোলার হিসেবে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করলেন। তাঁর গড় ২৬.৭৯, স্ট্রাইক রেট ৪৫—দুটোই প্রমাণ করে বড় মঞ্চে তিনি কতটা কার্যকর।
অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি
শেন ওয়ার্ন — ১৯৫ উইকেট, ৩৬ ম্যাচ
গ্লেন ম্যাকগ্রা — ১৫৭ উইকেট, ৩০ ম্যাচ
হিউ ট্রাম্বল — ১৪১ উইকেট, ৩১ ম্যাচ
ডেনিস লিলি — ১২৮ উইকেট, ২৪ ম্যাচ
মন্টি নোবেল — ১১৫ উইকেট, ৩৯ ম্যাচ
রে লিন্ডওয়াল — ১১৪ উইকেট, ২৯ ম্যাচ
নাথান লায়ন — ১১০ উইকেট, ৩১ ম্যাচ
ক্লারি গ্রিমেট — ১০৬ উইকেট, ২২ ম্যাচ
বিল ও’রেইলি — ১০২ উইকেট, ১৯ ম্যাচ
জর্জ গিফেন — ১০১ উইকেট, ২৬ ম্যাচ
চার্লি টার্নার — ১০১ উইকেট, ১৭ ম্যাচ
টেরি অ্যালডারম্যান — ১০০ উইকেট, ১৭ ম্যাচ
মিচেল স্টার্ক — ১০৪ উইকেট, ২৩ ম্যাচ