২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নিয়মিতই ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন। ফারভিজ মাহরুফ বাংলাদেশে তাই বেশ চেনা এক মুখই। সাবেক শ্রীলঙ্কান এই অলরাউন্ডার এসেছিলেন এবারের বিপিএলে ধারাভাষ্য দিতে। দেশে ফেরার আগে যতটুকু দেখেছেন কাজ থেকে, সেই অভিজ্ঞতায় তার কাছে বেশ উপভোগ্যই লেগেছে ব্যাটে-বলের লড়াই। তবে সেখানে নাহিদ রানার মত কয়েকজন বিশেষ নজর কেড়েছে মাহরুফের।
বাংলাদেশ ছাডার আগে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহরুফ কথা বলেছেন নাহিদ রানাকে নিয়ে তার সম্ভাবনার কথা। নানা প্রসঙ্গে এসেছে সাকিব আল হাসান সহ বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা দিকও।
প্রশ্ন : টুর্নামেন্টের যখন জমে উঠেছে, প্লে-অফও কড়া নাড়ছে দরজায়, এমন সময়ে বিপিএল ছেড়ে যেতে নিশ্চয়ই খারাপ লাগছে?
মাহরুফ : অবশ্যই। দেখুন, আমি আগেও বাংলাদেশ, বিপিএলে কাজ করেছি। এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে, কাজের পরিবেশও এখন অনেক চেনা লাগে। ফলে এখানে প্রতিবার কাজ করতে আসলে সেটা আমি উপভোগই করি। এবার যখন চুক্তি হল, তখনই জানতাম টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত থাকা হবে না আমার। তবে হ্যাঁ, কিছুটা খারাপ তো লাগবেই, কারণ মাঠের ক্রিকেটটা এবার অসাধারণ হচ্ছে বিপিএলে।
প্রশ্ন : মাঠের ক্রিকেটের কথা বললেন, এর আগেও বিপিএলে ধারাভাষ্য দিয়েছেন। উইকেট, বিশেষ করে মিরপুরে লো-স্কোরিং ম্যাচের কারণে খেলোয়াড়দের মাঝেও অতীতে হতাশা দেখে গেছে। তবে এবার শুরু থেকে সব ভেন্যুতেই বড় স্কোর হচ্ছে। এই পরিবর্তনটা কীভাবে দেখছেন?
মাহরুফ : এটা একটা ভালো প্রশ্ন, কারণ আপনি মাঠের ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ আছেন। এবার তো সবার আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঠের বাইরের বিষয়গুলো (হাসি)। নাহ, বলতেই হবে এবারের উইকেটের আচরণ খুবই ভালো হচ্ছে। আসলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মজা এখানেই। রান হবে, চার-ছক্কার মার হবে, দর্শকরা তো এসবই দেখতে চায়। সেদিক থেকে চিন্তা করলে, এবারের বিপিএলটা আসলেই উপভোগ্য হচ্ছে। তবে স্রেফ বড় রানই যে হচ্ছে, তাও না। বোলারদের জন্যও উইকেটে অনেক কিছু আছে। তাসকিন এক আসরের সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড করে ফেলল, এটা বলে দেয় বোলাররাও বেশ সাহায্য পাচ্ছে।
প্রশ্ন : নিজে একজন পেসার ছিলেন বলেই হয়ত তাসকিনের নামটা আগে নিলেন?
মাহরুফ : না না (হাসি)। এমন কিছু না। বাংলাদেশের অন্য পেসারদেরও আমি যথেষ্ট সম্মান করি। তবে তাসকিনের কথা আলাদা করে বলতেই হয়, কারণ দেখতেই পাচ্ছেন কি বোলিংটাই না করছে! এক ম্যাচে সাত উইকেট তো চাট্টিখানি কথা না। যদি তাই হত, তাহলে হরমেশাই আমরা এমন কীর্তি দেখতে পেতাম। এটার অর্থ হল সে আসলেই দুর্দান্ত ছন্দে আছে। সম্ভবত ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা পার করছে ও। বাংলাদেশের একজন পেসার এভাবে পারফর্ম করছে সব কন্ডিশনে, এটা দেখাটাও আনন্দের ব্যাপার।
প্রশ্ন : তাসকিনের কোন দিকটি দেখে মনে হচ্ছে যেখানে তিনি উন্নতি করেছেন?
মাহরুফ : এটা এক বাক্যে বলা আসলে কঠিন। তবে যদি বলতেই হয়, আমি বলব উইকেটের আচরণ বুঝে সেভাবে বল করার স্কিলটা সে খুব খুব ভালো রপ্ত করেছে। আপনি অনেক ভালো বোলার তখনই হবেন, যখন আপনি উইকেটের আচরণ, প্রতিপক্ষ এবং ব্যাটারদের শক্তিমত্তা বা দুর্বলতা বুঝে বোলিং করতে পারবেন। এই তাসকিনকে দেখে মনে হয়, ও প্রতিটা ডেলিভারি নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করে। আর এটাই ওকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের পেস বোলিং আর তাসকিনের কথার প্রসঙ্গে আপনার কাছে জানতে চাইব আরেকজনের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন নামটা?
মাহরুফ : আমার জীবনে কুইজের সবচেয়ে সহজ উত্তর হয়ত এটাই। অবশ্যই আমি জানি আপনি নাহিদ রানার কথাই বলবেন। আর সেটাই যৌক্তিক। পুরো বিশ্বেই টেস্ট ক্রিকেটে ঘণ্টায় ১৫০ কি.মি. গতিতে বল করা বোলার খুব বেশি পাবেন না। সেখানে বাংলাদেশ, যারা একটা সময় স্পিনের জন্যই বেশি পরিচিত ছিল, তাদের এখন তরুণ পেসার এমন গতিতে বল করছে, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দারুণ এক বিজ্ঞাপন। তার মাঝে অপার সম্ভাবনা আছে। বিপিএলেও দেখলাম তার বোলিং। সাদা বলের ক্রিকেটেও ও বাংলাদেশের জন্য বড় সম্পদ হতে যাচ্ছে। তবে তার ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই যুগে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ডাকও আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন না। বিসিবিকে তাই নাহিদের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে, যাতে টানা না খেলে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়।
প্রশ্ন : এবার জানতে চাইবা আরেক বাংলাদেশির ব্যাপারে, যিনি না চাইতেও এখন আছেন বিশ্রামে। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে জটিলতায় সাকিব আল হাসান এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল করা থেকে নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক ও নানা বাস্তবতায় জাতীয় দলেও নেই অনেকদিন ধরেই। বিপিএলেও নেই সাকিব। কতোটা মিস করছেন তার উপস্থিতি?
মাহরুফ : অনেক। দেখুন, সাকিব তো বাংলাদেশের একজন আইকন। খেলোয়াড় হিসেবে তার অর্জন কী, সেটা বিশ্ব জানে। দেশের মাটিতে খেলে অবসর নিতে চেয়েও সেটা সে পারেনি, এটা একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই হতাশার। আমি জানি না এখানে তার খেলতে মানার আসল কারণ কি, তবে এটা মেনে নেওয়ার ওর জন্য কঠিনই।
প্রশ্ন : বোলিং অ্যাকশন শুধরে সাকিবের পক্ষে কি ফিরে আসা সম্ভব মনে করছেন?
মাহরুফ : আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে বলব কেন নয়! লঙ্কা টি-টেন খেলার সময় বোলিংয়ের নিষেধাজ্ঞাটা পেল। এরপর ব্যাটার হিসেবে খুব ভালো করল। তবে কাছ থেকে দেখেছি সে বোলিং নিয়েও অনেক কাজ করেছে। আমার কাছে মনে হয়, এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ওর বেশি সময় লাগবে না।
প্রশ্ন : বিপিএলে ফেরা যাক। তাসকিন, নাহিদের কথা বললেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন কেউ আপনার নজর কাড়তে পেরেছে?
মাহরুফ : কঠিন প্রশ্ন। কারণ, এবার বাংলাদেশের অনেক তরুণ ক্রিকেটার ভালো করছে। যদি আলাদা করে বলতে হয়, তাহলে বলব মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের কথা। গত বছরও ওকে দেখেছিলাম, তখন হাতে এত বড় বড় শট ছিল না। তবে বোঝাই যাচ্ছে, টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং নিয়ে সে অনেক কাজ করেছে। শেষের দিকে নেমে নিয়মিতভাবে বড় শট খেলার স্কিল রপ্ত করাটা বিশেষ কিছুই। এছাড়া ইয়াসির (আলি), আবু হায়দার, মৃত্যুঞ্জয়রা (চৌধুরী) ভালো করছে।
প্রশ্ন : এবার আসি একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের মধ্যে মাঠের বাইরে দারুণ বন্ধুত্ব থাকলেও মাঠে নামলেও কয়েক বছর ধরেই এটা পেয়ে গেছে ভিন্ন মাত্রা। নানা রকমের উদযাপনের পর গত বিশ্বকাপের সেই টাইমড আউটের ব্যাপারটা মিলিয়ে এই দুই দলের ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। কীভাবে দেখেন বিষয়টি?
মাহরুফ : দেখুন, আমি এগুলো নিয়ে খুব বেশি চর্চার পক্ষে না। শ্রীলঙ্কান অনেকেই কোচ হিসেবে বা অন্য ভূমিকায় বাংলাদেশে কাজ করছেন। আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে সম্প্রতি খেলে এলেন। ক্রিকেট সম্পর্কটা তাই দারুণ রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। যেসব বিষয় টেনে আনলেন, সেটা স্রেফ সমর্থকদের জন্যই হচ্ছে আর সেটা খুব একটা মন্দও নয়। ভারত-পাকিস্তান বা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মত একটা নতুন দ্বৈরথ তো দেখতে পাচ্ছি আমরা।
প্রশ্ন : কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চাপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো ক্রমেই এর আবেদন হারিয়ে ফেলছে। তিন ফরম্যাটে ভবিষ্যৎ নিয়ে কি আপনি চিন্তিত?
মাহরুফ : সত্যি বলতে, একেবারেই না। টেস্ট ক্রিকেট আমার তো মনে হয় ইতিহাসের সেরা সময় পার করছে। সব দল এখন ফলাফলের জন্য খেলছে। ওয়ানডে ক্রিকেট কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে, তবে বিশ্বকাপ বলতে কিন্তু লোকেরা ৫০ ওভারের বিশ্বকাপই চিন্তা করে। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তো খেলাটির ভবিষ্যৎ। সব মিলিয়ে যদি বলেন, খুব বেশি চিন্তার নেই।
প্রশ্ন : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে টপকেই জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে কেমন করতে পারে বাংলাদেশ?
মাহরুফ : আমি তো বাংলাদেশ দলের বেশ সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছি। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে সুযোগ বেশিই থাকবে। যদি আগে ব্যাট করে ২৫০ রানের বেশি করে ফেলতে পারে, তাহলে ভারতকে চমকে দিতেও পারে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাটিতে অন্য দুটি ম্যাচ একটু কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে দলে ভারসাম্য আছে বেশ। সাকিব, তামিমের মত অভিজ্ঞদের পেলে আরও ভালো হত দলটা। তবে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিনরা তো আছেই। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে জায়গা করে নিলে আমি অবাক হবো না।
No posts available.
১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৬:২৭ পিএম
পছন্দের ফরম্যাটে চরম দুরবস্থা। সবশেষ ১২টি একদিনের ম্যাচের মধ্যে ১১টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে মেহেদী হাসান মিরাজদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। সবশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লাল-সবুজরা। সেই ধাক্কা সামলে আবারও মাঠে নামতে যাচ্ছে দল।
আগামী শনিবার থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। ২০২৭ বিশ্বকাপে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে এই সিরিজে জয় খুবই জরুরি মেহেদীদের জন্য। দেশের ক্রিকেটের টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
আরও পড়ুন
রাজশাহী ও বগুড়ায় বাংলাদেশ-আফগান যুবাদের সিরিজ |
![]() |
আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ১৮ তারিখ থেকে আমাদের ওয়ানডে সিরিজ। এর জন্য ইতিমধ্যে দল ঘোষণা হয়েছে। আপনারা তা দেখেছেন নিশ্চয়ই। অতি সম্প্রতি সাদা বলে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে আমাদের উল্লেখযোগ্য কিছু সাফল্য আছে। কিন্তু সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের পারফরম্যান্স নিকট অতীতের সাফল্যকেও একেবারে ম্লান করে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা ক্রিকেট দেখি, ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এমনকি যারা খেলে—আমার মনে হয় কেউই আশা করেনি এমন একটি ফল হতে পারে। এটা ঠিক, এখানে আমাদের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের দুর্বলতাগুলো প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। এগুলো আমাদের অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব কাটিয়ে উঠতে হবে।”
জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মনে করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম ভেন্যুতে সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। কারণ প্রতিপক্ষ দলে নেই রশিদ খানের মতো কোনো ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ বোলার, আর এখানকার উইকেটও আবুধাবির পিচ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষ এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আমরা আবুধাবি সেই পিচেও খেলছি না। হোমে মিরপুরের উইকেটে খেলছি এবং প্রতিপক্ষেও রশিদদের মতো কিংবা অন্যান্য যে স্পিনার ছিল, সেরকম স্পিনারদেরও মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির জায়গা। নিয়মিতভাবে ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারছি না। এই আফগানিস্তানের সঙ্গে একদমই হাফ অফ দ্য কোটাও ঠিকভাবে খেলতে পারিনি।”
আরও পড়ুন
এইচএসসি পরীক্ষা দিতে এশিয়া কাপ খেলেননি সাকিব |
![]() |
গাজী আশরাফ মনে করেন, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে না পারার কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন খেলোয়াড়রা। তিনি বলেন, “বুকে হতাশা বয়ে বেড়ানোটা একজন খেলোয়াড়ের জন্য অত্যন্ত কঠিন। শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিতে তারা সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন হয়ে আছে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এর মধ্যে দ্রুত সময়ে মাঠে ফিরে আসাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। এরকম একটি মানসিক অবস্থার পর মাঠে ফেরা সহজ নয়।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। প্রায় আট মাস পর দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, “অঙ্কনের নামটা নিশ্চয়ই অনেক উজ্জ্বল। তাকে এনে আমরা ডেপথটা বাড়িয়েছি।”
জাতীয় দলের পর এবার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ওয়ানডে সিরিজে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের। অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে পাঁচ ওয়ানডে খেলবে আফগান যুবারা। নিজেদের মাঠে এই সিরিজের আজ সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
২০ অক্টোবর ঢাকায় পা রাখার কথা রয়েছে আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। সূচি অনুযায়ী, সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে হবে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। শেষ তিন ম্যাচ হবে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে।
আরও পড়ুন
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মাসের সেরা ভারতের দুই ওপেনার |
![]() |
ঢাকায় নেমে সেদিন বগুড়া চলে যাবে আফগান দল। বগুড়ায় ২৮ অক্টোবর হবে প্রথম ওয়ানডে। প্রস্তুতির জন্য এক সপ্তাহ সাময় পাবে সফরকারীরা। দ্বিতীয় ওয়ানডে হবে ৩১ অক্টোবর।
১ নভেম্বর দুই দল চলে যাবে রাজশাহী। একদিন অনুশীলনের পর সেখানে তৃতীয় ওয়ানডে হবে ৩ নভেম্বর। ৬ ও ৯ নভেম্বর হবে শেষ দুই ম্যাচ। ১০ নভেম্বর ঢাকা ছেড়ে যাবে আফগানরা।
আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল এর আগে দুবার বাংলাদেশ সফর করেছিল। ২০১৭ সালে প্রথমবার, সবশেষ ২০২১ সালে এসেছিল তারা।
প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলোধুনো করে সেপ্টেম্বর মাস সাফল্যে রাঙিয়ে আইসিসির বড় স্বীকৃতি পেলেন ভারতের দুই দলের দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা ও স্মৃতি মান্ধানা। সেপ্টেম্বরে ‘প্লেয়ার অব দা মান্’ নির্বাচিত হয়েছেন তারা দুজন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবারের গত মাসের সেরা দুই ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়ার গত মাসের এশিয়া কাপে সাত ম্যাচে ২০০ স্ট্রাইক রেট ও ৪৪.৮৫ গড়ে আসরের সর্বোচ্চ ৩১৪ রান করেছিলেন অভিষেক। স্বদেশি স্পিনার কুলদিপ যাদব ও জিম্বাবুয়ের ব্রায়ান বেনেটকে টপকে মাসসেরা হয়েছেন তিনি।
মেয়েদের মাস সেরার দৌড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার তাজমিন ব্রিটস ও পাকিস্তানের সিদরা আমিনকে ছাড়িয়ে গেছেন মান্ধানা।
গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচে ৫৮, ১১৭ ও ১২৫ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সব মিলিয়ে ৪ ইনিংসে ৭৭ গড় ও ১৩৫.৬৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩০৮ রান।
২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। সাফল্যের আনন্দে ভাসছেন অনেকে, আবার কারও সঙ্গী হয়েছে হতাশা।
প্রায় ১৭ বছর আগে তাদের মতোই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ২০০৮ সালের এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ওই সময়ের তরুণ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার।
২০০৮ সালের এপ্রিলে পাকিস্তান সফরে গিয়ে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অংশ নিয়েছিলেন সাকিব। এরপর জাতীয় দল থেকে ছুটি নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে মন দেন তিনি। মাত্র দেড় মাস পড়াশোনা করে মে মাসে শেষ দিকে পরীক্ষায় বসেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার।
ওই পরীক্ষার জন্য জুন মাসে ঘরের মাঠে হওয়া কিটপ্লাই কাপ ও পরে পাকিস্তানে হওয়া এশিয়া কাপে খেলা হয়নি সাকিবের। তার বদলি হিসেবে আরেক তরুণ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে দলে ডেকে নিয়েছিলেন তখনকার নির্বাচক রফিকুল আলম।
পরে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৩.৯০ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন সাকিব।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পর দল থেকে বাদ পড়লেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এছাড়া খরুচে বোলিংয়ের পর পায়ের চোটে মাঠ ছেড়ে যাওয়া নাহিদ রানাও ওয়ানডে দলে জায়গা হারালেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সামনের ওয়ানডে সিরিজের জন্য বৃহস্পতিবার ১৬ জনের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এছাড়া প্রায় ৮ মাস পর ফিরেছেন সৌম্য সরকার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়া সিরিজে পরিবর্তন এই দুইটিই। এখনও চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় আফগান সিরিজের মতো ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দলেও নেই লিটন কুমার দাস।
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার শুরু হবে তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজ। এরপর একই মাঠে বাকি দুই ম্যাচ হবে যথাক্রমে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। পরে চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
গত ফেব্রুয়ারিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সবশেষ ওয়ানডে দলে ছিলেন সৌম্য। নাঈম বাদ পড়ায় তার জায়গায় এই বাঁহাতি ওপেনারকে ফেরানো হয়েছে দলে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১১ ইনিংসে ৪৭.৮৮ গড় ও ৭০.৫৪ স্ট্রাইক রেটে ৪৩১ রান করেছিলেন অঙ্কন। সব মিলিয়ে লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে ৯০ ইনিংসে ৪ সেঞ্চুরি ও ২৮ ফিফটিতে ৪৪.৫৩ গড়ে করেছেন ৩ হাজার ৪২৯ রান।
প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়া অঙ্কনকে একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য লড়তে হবে জাকের আলি অনিক ও নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে। ১৬ জনের দলে তারা ৩ জনই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয়েছে অঙ্কনের। তবে সাদা বলে এখনও বড়দের মঞ্চে নামা হয়নি তারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড
মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলি অনিক, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ।