
২০২৪ সালে তিন সংস্করণেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে সে বছর শুরুর দিকে তিনি টি–টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। এরপর শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগেই তাকে না জানিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। সবশেষ গত জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ও ৭৮ রানে হারের পর লাল বলের ক্রিকেটর নেতৃত্বও ছেড়ে দেন শান্ত।
ব্যাট হাতে অধিনায়ক শান্ত সবসময়ই অন্যরকম। নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে আসলে তাঁর ব্যাট একটু বেশিই চওড়া হয়ে যায়। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম ইনিংসে করেছেন বরাবর ১০০। টেস্টে অধিনায়ক শান্তের সেঞ্চুরি সংখ্যা চারটি। অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদশের টেস্ট ইতিহাসে একমাত্র মুশফিকুর রহিমেরই সমান সংখ্যাক শতক আছে। অধিনায়কত্বের চাপ সামলে ব্যাটিংয়ে ভালো করার মন্ত্র কি জানালেন শান্ত।
আরও পড়ুন
| ম্যাচসেরা হওয়ার পরও হতাশ জয় |
|
শান্ত অবশ্য বললেন ব্যাটিংয়ের সময় কেবল ব্যাটার হিসেবেই নিজেকে ভাবেন তিনি। সিলেটে আইরিশদের বিপক্ষে দাপুটে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে নেতৃত্ব থাকাকালীন পারফরম্যান্স নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমি মনে করি জাস্ট শুরু হয়েছে। এখনো লম্বা সময় যাওয়ার বাকি, বাট ভালো স্টার্ট হয়েছে আমি মনে করি। বাট হ্যাঁ, আমি সবসময় যেটা বলি যে আমি ব্যাটিংয়ের সময় একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে পছন্দ করি। আমার ভেতরে একবারের জন্যও মনে হয় না যে আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে খেলছি। চিন্তা করি যে কিভাবে একজন ব্যাটার হিসেবে অবদান করতে পারি। ওইটাই আসল ফোকাস থাকে, আর যখন ফিল্ডিংয়ে থাকি তখন আমি ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার যে দায়িত্বগুলো আছে ঐ সেগুলো আমি চেষ্টা করি পালন করার।’
দুই সংস্করণের নেতৃত্ব হারানোর পর টেস্টেরও অধিনায়কত্ব হারিয়ে কেমন সময় কেটেছিল টপ অর্ডারের এই ব্যাটারের? ‘প্রথম কিছুদিন খানিকটা কঠিন সময় গেলে, তারপর নাকি রিল্যাক্সেই সময় কাটিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক, ‘প্রথম কিছুদিন কঠিন ছিল, টু বি ভেরি অনেস্ট। বাট হ্যাঁ, তারপরে অনেকটা রিল্যাক্স হয়ে গিয়েছিলাম এবং এনজয় করেছি পুরো সময়টা, নিজেকে সময় দিয়েছি, পাশাপাশি ফ্যামিলিকে সময় দিয়েছি, দক্ষতার দিক থেকে নিজের ক্রিকেটটা আর একটু কিভাবে উন্নতি করা যায়, মানসিকভাবে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু আমি মনে করি যে ওই সময়টা আমার খুব ভালো কেটেছে।’
জুনে অধিনায়কত্ব ছাড়ার আগে মোট ১৪টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত টেস্টে যা বাংলাদেশের তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ জয় পায় ৪টি। এবার দ্বিতীয় দফায় প্রথম ম্যাচেই জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি।
No posts available.

সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৪৭ রানের দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এমন অসাধারণ জয়ের পরও কিছুটা হাতাশা রয়ে গেল মাহমুদুল হাসান জয়ের। ম্যাচসেরা পুরস্কারও হাতে তুলেছেন এই তরুণ ওপেনার। খেলেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের সেরা ইনিংস।
এই ইনিংস দিয়ে ছন্দ খোঁজা জয়ের দারুণ এক প্রত্যাবর্তনও হলো। এত অর্জনের মধ্যেও কেন হতাশ তিনি? ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে জানালেন নিজের আরেকটু রান ক্ষুধার কথা- ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ না করতে পারার আক্ষেপ ২৪ বছর বয়সী ব্যাটারের। টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১৬৯ রানে অপরাজিত ছিলেন জয়। ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও তৃতীয় দিন ফেরেন ২৮৬ বলে ১৭১ রানে।
আজ চতুর্থ দিন টেস্ট জেতার পর ম্যাচসেরা জয় বলেন, ‘ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারায় একটু হতাশ লাগছে, তবে শেষ পর্যন্ত ভালোই খেলেছি। সব মিলিয়ে খুশি। মুশফিক ভাইয়ের ১০০তম টেস্ট নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। এই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো ছিল, নিজের পরিকল্পনা সহজ রাখারই চেষ্টা করেছি।’
আরও পড়ুন
| ইনিংস জয়ে রজত জয়ন্তী উৎসব উদযাপন |
|
জয় সবশেষ টেস্ট ফিফটি করেছিলেন দুই বছর আগে। সেঞ্চুরির বিরতিটা আরও বেশি- ৪২ মাসের! স্পষ্টই, লাল বলে একদমই ছন্দে ছিলেন না। শ্রীলঙ্কা সফরে দল থেকেও বাদ পড়েন। তবে ঘরোয়া লিগে দারুণ পারফরম্যান্সের কল্যাণে আবারও জাতীয় দলে ফেরেন। প্রয়োজন ছিল প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি বড় ইনিংস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট সে কাজটি সারলেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে।
জয়ের নির্মল ব্যাটিং অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেছেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় দিন ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে জয়কে বিশেষণও দিলেন, ‘জয় অনেক সুন্দর ব্যাটিং করছে।’
মিরপুরে আগামী বুধবার থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। জয়-সাদমানরা পরের টেস্ট নিশ্চয় রানে রাঙাতে চাইবেন।

সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের আবহ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। ইনিংস হার এড়াতে শেষ ৫ উইকেটে ২১৬ রানের দুরূহ টার্গেটের মুখে পড়া আয়ারল্যান্ডও বেশি কিছু স্বপ্ন দেখেনি। চতুর্থ দিন জয়ের আনুষ্ঠানিকতায় লেগেছে বাংলাদেশের ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট।
টেস্টের প্রথম ২৫ বছরে বাংলাদেশ দলের পারফরমেন্স ছিল না বলার মতো। ১৫৪ টেস্টে ২২ টি জয়ের মধ্যে ৩টি ছিল ইনিংস ব্যবধানে। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে ইনিংস ও ১৮৪ রানের ব্যবধানে জয়টি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। ২০২০ সালে সেই মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস এবং ১০৬ রানে জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশ দলের। এ বছরের এপ্রিলে বাগে পাওয়া জিম্বাবুয়েকে চট্টগ্রামে একই ব্যবধানে হারানোর অতীত আছে বাংলাদেশের।
গত ১০ নভেম্বর ছিল টেস্টে বাংলাদেশের রজত জয়ন্তী উৎসব। হোটেল সোনারগাঁয়ে ক্রিকেট কনফারেন্স চলাকালে কেক কেটে টেস্টের রজত জয়ন্তীর উৎসবে নতুন রজত জয়ন্তীকে স্বাগত জানিয়েছে বিসিবি। সিলেটে বসে সেই বার্তাটা পেয়ে চাঙ্গা নাজমুল হাসান শান্ত'র দল বিসিবিকে দারুণ কিছু উপহার দিতে চেয়েছিল। ক্রিকেটারদের তরফ থেকে সেই উপহারটাই পেলো নব নির্বাচিত ক্রিকেট বোর্ড। আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস এবং ৪৬ রানে হারিয়ে ক্রিকেটের এলিট এরিনায় নুতন দিনের শুরু করে প্রকারান্তরে টেস্টের রজত জয়ন্তী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দল।
এক টেস্টে অনেক রেকর্ড দেখেছে সিলেটের দর্শক। দেশের মাটিতে গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫৬০/৬ ডি. ছিল এতোদিন সর্বোচ্চ। সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ স্কোর (৫৮৭/৮ডি.) করেছে বাংলাদেশ।
এক ইনিংসে প্রথম ৪ ব্যাটারের সবার ফিফটি ( সাদমান-জয়-মুমিনুল-শান্ত), এমন রেকর্ডও এই প্রথম বাংলাদেশ করেছে চলমান টেস্টে। এই চার ব্যাটারের সবাই ৮০ করেছেন ( জয় ১৭১, সাদমান ৮০, মুমিনুল ৮২, শান্ত ১০০)। টেস্ট ইতিহাসে এমন ঘটনা আছে ১২টি। তবে এমন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের প্রথম। ২০০৭ সালে মিরপুরে ভারতের প্রথম চার ব্যাটারের সবার সেঞ্চুরির রেকর্ডটা অবশ্য মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে।
এক দশক পর টেস্টে প্রথম ইনিংসে প্রথম দুই পার্টনারশিপে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ ( ১৬৮ও ১৭৩ ) দেখেছে সিলেট।
টেস্টের তৃতীয় দিন হামফ্রিসকে শিকারে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ৫০০ উইকেটের মাইলস্টোন ছুঁয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল। চতুর্থ দিন আরও ২টি উইকেট শিকার করে টেস্টে সাকিবের অনেক কাছে চলে এসেছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। ৭১ ম্যাচে ২৪৬ উইকেট শিকারে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার গেছে থমকে। তাকে আইডল মেনে পেছনে ছুটতে ছুটতে তাইজুলের শিকার সংখ্যা এখন ৫৬ টেস্টে ২৪২ উইকেট। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে আড়াইশ উইকেটের মাইলফলকের হাতছানি দিচ্ছে এখন তার সামনে।
চতুর্থ দিনে উইকেট যতোটা ভেঙ্গে স্পিনারদের ফেভার করবে বলে ধারণা করেছেন যারা, তাদের সেই ধারণা ভুল প্রমানিত হয়েছে। বরং এই দিনটিও ছিল ব্যাটারদের জন্য স্বস্তির। আয়ারল্যান্ড এদিন শেষ ৫ উইকেটে যোগ করতে পেরেছে ১৬৯ রান সে কারণেই। ঘন্টায় ১৪৮ কিলোমিটার গতির বল করে আয়ারল্যান্ড ব্যাটারদের কাঁপিয়ে দিতে পারেননি বাংলাদেশ পেসার নাহিদ রানা। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটির ৩৩, ৭ম জুটির ৬৬ এবং নবম জুটির ৫৪ রানের কল্যানে দ্বিতীয় ইনিংসে স্কোর আড়াইশ (২৫৪/১০) পেরুতে পেরেছে আয়ারল্যান্ড।
অভিষিক্ত বাঁ হাতি স্পিনার হাসান মুরাদ প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ২ টি উইকেট ( ২০-৫-৪৭-২)। দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার সংখ্যা দ্বিগুনে উন্নীত করেছেন (১১-১-৬০-৪)। তৃতীয় দিনের পড়ন্ত বেলায় তার ৩ ওভারের স্পেলে ( ৩-০-৮-২) ইনিংস জয়ের আবহ পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনে তার একটি স্পেলে (১১-২-৫২-২) ইনিংস ব্যবধানে হার মানতে বাধ্য হয়েছে আয়ারল্যান্ড। অন্য এন্ডে অভিজ্ঞ তাইজুলের (২৩.২-৩-৮৪-৩) সঙ্গে লড়াইটা ভালই জমিয়ে দিয়েছিলেন হাসান মুরাদ।
চতুর্থ দিনে শুরুটা ভালোই করেছিল আয়ারল্যান্ড। তবে তাইজুলের বলে সুইপ খেলতে যেয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন হামফ্রিস (১৬)। ৭ম জুটি ইনিংস হার এড়ানোর যুদ্ধ করেছে। তবে বালবার্নি-ম্যাকার্থির পার্টনারশিপ ৬৬-তে থামিয়ে দিয়েছেন হাসান মুরাদ। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ৩৮ রান করা বলবার্নি।
লাঞ্চ থেকে ফিরে ফিফটি করে নাহিদ রানার বাউন্সারে পুল খেলতে চেয়েছিলেন ম্যাকব্রিন। কিন্তু টাইমিংটা সেভাবে হয়নি। শর্ট মিড উইকেটে থাকা ফিল্ডার হাসান মুরাদের হাতে ক্যাচ দেন ম্যাকব্রিন ( ১০৬ বলে ৫২)। নবম উইকেট জুটি ৫৪ রানে বিচ্ছিন্ন করেছেন হাসান মুরাদ। ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারতে চেয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়েছেন নিল (৫৩ বলে ৩৬)। ক্যাচটি তৃতীয় প্রচেষ্ঠায় নিয়েছেন সাদমান।
রেকর্ডগাঁথা এই টেস্ট থেকে প্রেরণা নিয়ে মিরপুরে আরও ভাল কিছু'র প্রত্যাশা এখন ক্রিকেটারদের কাছে। শেষ টেস্টেও কর্তৃত্ব নিয়ে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশের স্বপ্ন এখন দেখছে বাংলাদেশ সমর্থকরা।

আয়ারল্যান্ডের লেজের দিকের ব্যাটাররা কেবল বিরক্ত বাড়াচ্ছিলেন বাংলাদেশি বোলারদের। দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যাচ্ছিল সফরকারীরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচর তৃতীয় দিনেই ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ বড় ব্যবধানেই জিতল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে আইরিশরা থেমেছে ২৫৪ রানে। এই দাপুটে জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। ২৮৬ বলে ১৭১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলা মাহমুদুল হাসান জয় হন ম্যাচসেরা।
চতুর্থ দিনে ৫ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে খেলা শুরু করে আয়ারল্যান্ড। প্রথম সেশনে ২ উইকেট হাারয় আইরিশরা। ম্যাথু হামফ্রেসকে ফেরান তাইজুল ইসলাম আর আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি হাসান মুরাদের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। ৬৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেছেন ডান হাতি ব্যাটার।
আরও পড়ুন
| ইনিংস ব্যবধানে জয় থেকে তিন উইকেট দূরে বাংলাদেশ |
|
তবে চোয়ালবদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। লাঞ্চের আগে তুলে নেন ফিফটি। ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান তুলে লাঞ্চে যায় আয়ারল্যান্ড।
লাঞ্চ থেকেই ফিরিয়েই উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ম্যাকব্রাইনে আউট করেন নাহিদ রানা । নাহিদ রানার বাউন্সারে পুল খেলতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে বল চলে যায় শর্ট মিড উইকেটে থাকা ফিল্ডার হাসান মুরাদের হাতে। ৫২ রানে ফেরেন ম্যাকব্রাইন।
১৯৮ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর ইনিংস হার এড়াতে লড়াই চালিয়ে যান ম্যাককার্থি এবং নেইল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়ে তারা। ৫৩ বলে ৩৬ করা নেইলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মুরাদ। পরের ওভারে ২৭ বলে ২৫ রান করা ম্যাককার্থিকে ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তাইজুল।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন হাসান মুরাদ। ৩ উইকেট তাইজুল ইসলামের। নাহিদ রানা নেন ২ উইকেট।
আগামী বুধবার মিরপুরে হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ।

জয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকেই সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। রেকর্ডময় দিনে রান উৎসবের পর আইরিশদের পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে নাজমুল হোসেন শান্তের দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ চতুর্থ দিনে জয় থেকে মাত্র তিন উইকেট দূরে আছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান নিয়ে লাঞ্চে আয়ারল্যান্ড। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে সফরকারীদের এখনো প্রয়োজন ১০৩ রান। উইকেটে আছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন (৫২) ও জর্ডান নেইল (৬)।
প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৬ রানে হারিয়েছে ৫ উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে। প্রথম ওভারেই উইকেট পেতে পারত বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের দ্বিতীয় বলে আম্পায়ার এলবিডব্লু দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচেন ম্যাথু হামফ্রিজ। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগেছিল।
আরও পড়ুন
| অ্যাশেজের আগে স্টোকসের ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত |
|
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনও। বাঁহাতি ব্যাটারের ব্যাটের বাইরের কানা লেগে, লিটন দাসের পা ছুঁয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর গলার কাছাকাছি জায়গায় লাগে। কিছুক্ষণ শুয়ে থাকেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ফিজিও এসে চিকিৎসা দেন।
ষষ্ঠ উইকেটে হামফ্রিজ-ম্যাকব্রাইনের ৩১ রানের জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। এরপর আটে নামা অ্যান্ডি বালবার্নিকে নিয়ে বাংলাদেশী বোলারদের হতাশা বাড়ান ম্যাকব্রাইন। দুই অ্যান্ডি মিলে প্রতিরোধ গড়ে ৬৬ রানের জুটি গড়েন।
১১৯ বল স্থায়ী হওয়া জুটির সমাপ্তি ঘটান হাসান মুরাদ।বাঁহাতি স্পিনারের দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লু হন অ্যান্ডি বালবার্নি। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৩ বলে ৩৮ করেন তিনি। তবে সতীর্থদের বিদায়ের মধ্যে একপ্রান্ত আগলে রাখেন ম্যাকব্রাইন। চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ে ১০২ বলে ফিফটি করেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটার।

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার লড়াই সামলে রাওয়ালপিন্ডিতে ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ শুরু করেছে পাকিস্তান। আর ম্যাচের পরদিন তারা পেয়েছে আইসিসির দুঃসংবাদ। দলের প্রত্যেকের ম্যাচ ফি থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে ২০ শতাংশ অর্থ।
মূলত স্লো ওভার রেটে ধরা পড়েছে পাকিস্তান। প্রায় চার ঘণ্টায় শেষ হওয়া ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৪ ওভার পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তাই আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ওভারের জন্য ৫ শতাংশ করে মোট ২০ শতাংশ ম্যাচ কেটে নেওয়ার শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী অবশ্য ম্যাচ চলাকালেও পেনাল্টি দিতে হয়েছে পাকিস্তানের। শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ৪৬তম ওভার শেষে বাকি ৪ ওভারের জন্য ত্রিশ গজের বৃত্তের ভেতরে একজন বেশি ফিল্ডার রাখতে হয়েছে তাদের।
সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শ্রীলঙ্কাকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান হাসারাঙ্গা। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের বন্দরে দলকে নিতে পারেননি অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। দুর্দান্ত এক জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পাকিস্তান।
ম্যাচ শেষে দুই আম্পায়ার অ্যালেক্স ওয়ার্ফ ও আসিফ ইয়াকুবের সঙ্গে থার্ড আম্পায়ার শরফুদৌল্লা ইবনে শহীদ সৈকত এবং চতুর্থ আম্পায়ার রশিদ রিয়াজের অভিযোগের ভিত্তিতে পাকিস্তানকে শাস্তি দেন ম্যাচ রেফারি আলি নাকভি।
পাকিস্তান অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি।