
“সবাই শুধু তোমার রেকর্ড আর মাইলফলকগুলো নিয়েই কথা বলবে - কিন্তু আমি মনে রাখব সেই অশ্রুগুলোর কথা, যা তুমি কখনও কাউকে দেখাওনি; আমি মনে রাখব সেই যুদ্ধগুলো, যা কেউ দেখেনি; আর তোমার সেই নিঃশর্ত ভালোবাসা, যা তুমি এই ফরম্যাটটাকে দিয়েছ। প্রতিটি টেস্ট সিরিজের পর তুমি ফিরে এসেছো আরও একটু বেশি জ্ঞানী হয়ে, একটু বেশি স্থির হয়ে। তোমার এই পুরো যাত্রাটা দেখা ছিল আমার জন্য অনন্য এক সৌভাগ্য। কোনো এক অজানা কারণে আমি সবসময় ভেবেছি তুমি সাদা পোশাকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবে। কিন্তু সবসময়ের মত নিজের হৃদয়ের কথাই শুনেছো।”
- কথাগুলো বিরাট কোহলিকে নিয়ে বলেছেন তার সহধর্মিণী ও বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা। ক্রিকেটের প্রতি বিরাট কোহলির নিবেদন সবচেয়ে কাছ থেকে যিনি দেখেছেন, তার বলা কথাগুলোই বুঝিয়ে দেয় লাল বলের ক্রিকেটকে কীভাবে ধারণ করতেন ভারতীয় এই ব্যাটিং গ্রেট।
এই করতেন বলার কারণ, গত কয়েকদিনের গুঞ্জনকে সত্যি করে অনেকটা নীরবেই ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন কোহলি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে নাকি জোর চেষ্টাই ছিল অত্যন্ত ইংল্যান্ড সফরে তাকে খেলানোর। মাস দুয়েক আগেও ব্যাপারটি নিয়ে যে আলোচনা হতে পারে, সেটাই তো ছিল বিস্ময়কর। কারণ, টেস্টকেই তো সবচেয়ে বেশি লালন করলেন। তবে আনুশকা শর্মা যেমনটা বলেছেন, মনের কথা শুনেছেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন
| নাহিদ-তাসকিনদের নতুন বোলিং কোচ টেইট |
|
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসেও কোহলি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বর্ণিল এক চরিত্র হিসেবে। শচীন টেন্ডুলকার ভারতের ক্রিকেট ‘ঈশ্বর’, যিনি ছিলেন ব্যক্তি হিসেবে ধীরস্থির, শান্ত আর নিখুঁত ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী। আর কোহলি তার ঠিক বিপরীত। তিনি বুনো চরিত্রের ভীষণ আগ্রাসী একজন ক্রিকেটার, যিনি ব্যাটসম্যানশিপের চূড়ান্ত স্তরে থাকার পাশাপাশি মাঠে প্রতিপক্ষকে একচুল ছাড় দিতে নারাজ। অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে ভারতকে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে হয়। আর এই বিষয়গুলো অনেক সময়ই আড়াল হয়ে যায় হাজার হাজার রান বা সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরির স্তুতিগাথায়।
কোহলির অধিনায়কত্বে ভারত প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতে ২০১৮-১৯ মৌসুমে। তার সময়েই ভারত একটা লম্বা সময় ধরে থাকে টেস্টের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে।
লাল বলের ক্রিকেটে কোহলির অবসরের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শচীন বলেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটের পরের প্রজন্মকে এই ফরম্যাটের প্রতি আগ্রহী করে তোলায় তার উত্তরসূরি রেখেছেন বিশাল এক অবদান। খুব একটা ভুল বলেননি তিনি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে যে নিবেদন, আগ্রাসন দেখাতেন কোহলি, তা পুরো বিশ্ব ক্রিকেটেই ছিল উপভোগ্য এক বিষয়।
আর সেই কাজটা করতে গিয়ে অধিনায়ক হিসেবে বড় একটা পরিবর্তন আনেন ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কৃতিতে। ফিটনেস ও পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে একটা বিপ্লব এসেছে তার হাত ধরেই। কীভাবে টেস্টের প্রতিটি বলেই সমান একাগ্রতা নিয়ে লড়তে হয়, খাদের কিনারায় থেকেও আশার প্রদীপ জ্বালাতে হয়, সেটা সামনে থেকে দেখিয়েছেন ম্যাচের পর ম্যাচ ধরে।
সবসময়ই স্পিনে শক্তিশালী হওয়ায় ভারতের জন্য দেশের মাটিতে জেতাটা সহজ হলেও বিদেশের মাটিতে টেস্টে বড় সাফল্য পাওয়া ছিল ভীষণ অনিয়মিত ঘটনা। সেটা বুঝতে পেরে কোহলি সবার আগে জোর দেন গতিময়, আগ্রাসী পেসারদের দলে নেওয়ার। সেটার ফলও ভারত পায় হাতেনাতে। ‘সেনা’ দেশগুলোতে তার অধিনায়কত্বেই দলটি পায় নিজেদের ইতিহাসের সেরা সব সাফল্য। এই ফরম্যাটকে বিদায় জানানোর সময় কোহলি যখন দেখছেন দলে পেসারদের আধিপত্য এমনকি ঘরের মাটিতেও, তখন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন তিনি।
এক নজরে কোহলির টেস্ট ক্যারিয়ার :
• ১২৩টি টেস্ট
• ৯ হাজার ২৮৩ রান
• গড় : ৪৬.৮৫
• শতক : ৩০
• ডাবল সেঞ্চুরি : ৭ (ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ)
• ফিফটি ৩১
• সর্বোচ্চ : ২৫৪*
• অধিনায়ক হিসেবে ৬৮ ম্যাচে, ৪০টি জয় - ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
তবে টেস্টের কোহলিকে স্রেফ রান-সেঞ্চুরি দিয়ে মাপতে গেলে ভুলই করবেন আপনি। যে সময়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জোয়ারে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে পাঁচদিনের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ, সেই সময়েই কোহলি এই ফরম্যাটকে দিয়েছেন সর্বোচ্চ গুরুত্ব। ব্যাটিংয়ে প্রতিটি রানের জন্য তার লড়াই, ফিল্ডিংয়ে প্রতিটি বলেই আগ্রাসন দেখানো, উইকেট পতনে বুনো উল্লাসে মেতে ওঠা, এই জিনিসগুলোর কারণেই তিনি সবার চেয়ে আলাদা হয়ে থাকবেন। এভাবেই এই যুগে এসেও ভারতের তরুণ প্রজন্ম কোহলিকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়, হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট খেলার, রেকর্ড গড়ার, ইতিহাসের অংশ হওয়ার।
আরও পড়ুন
| রোহিতের পর টেস্ট অবসরের পথে কোহলিও? |
|
এই প্রসঙ্গে স্টিভেন স্মিথ একবার বলেছিলেন,
“সে শুধু একজন গ্রেট খেলোয়াড়ই নয়, একজন দুর্দান্ত প্রতিপক্ষও। খেলার মাঠে বিরাট শুধুমাত্র নিজের প্রাণশক্তিই নিয়ে আসে না, পুরো দলের মাঝেও সেটা ছড়িয়ে দেয়।”
খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দর্শকদের কাছেও কোহলি ছিলেন এমন একজন, যিনি টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তৈরি করতে পেরেছিলেন অন্যরকম এক আবেদন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তেমনই একজন যেমনটা বলেছেন,
“আমরা শুধু তাকে খেলতেই দেখতাম না, আমরা তার করা প্রতিটি রান, প্রতিটি চিৎকার, শূন্যে মারা প্রতিটি ঘুষিকেও অনুভব করতাম। সে কেবল ক্রিকেট খেলতই না, সে এটিকে কেন্দ্র করেই চলত।”
একজন স্পোর্টসম্যানের জন্য এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে! কোহলি সেটা করতে পেরেছেন, কারণ টেস্ট ক্রিকেটকে তিনি সত্যিকারের ভালোবাসাই দিয়ে গেছেন শেষ দিন পর্যন্ত। এই কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের বিদায়ী টেস্ট সিরিজে তিনি সংগ্রাম করে একটা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন, ছন্দে না থেকেও ছিলেন সিরিজের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। এতোটাই ছিল টেস্ট ক্রিকেটার কোহলির প্রভাব।
হার না মানা মানসিকতার কারণেই কোহলি ২০২০ সালের পর থেকে এই ফরম্যাটে সেরা ছন্দে না থেকেও লড়াই চালিয়ে যেতে পেরেছেন। আসলে ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের সময়টা বাদ দিলে কোহলির টেস্ট গড়টা থাকতে পারত আরও ইর্ষনীয়। এই মাপের একজন ব্যাটার কেন আর কীভাবে এত লম্বা সময় অফ ফর্মে আটকে থাকলেন, সেটা বড় এক রহস্যই থেকে যাবে। তবে ওয়ানডে গ্রেট কোহলিকে এরপরও আপনাকের টেস্টের সেরাদের কাতারের বিবেচনা করতেই হবে।
সেটা কেন, তা নিয়ে চলতে পারে নানা তর্ক। তবে ২০১৪ সালে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চতুর্থ ইনিংস রান তাড়ায় যে ইনিংসটি খেলেছিলেন, সেটা ক্রিকেটের প্রিয় একজন ছাত্র সহজে ভুলতে পারবেন না। একটা হেরে যাওয়া ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি কীভাবে দাগ কেটে যেতে পারে, সেটা অনুভব করতে হলে আপনাকে সেই ম্যাচটি দেখতে হবে বারবার।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর ৩৬৪ রানের টার্গেটে নেমে ড্রয়ের আশা বাদ দিয়ে ব্যাট চালান জয়ের লক্ষ্যে, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যা ছিল অবিশ্বাস্য এক চেষ্টাই। এই দফায়ও সেঞ্চুরি করে ছুটছিলেন জয়ের লক্ষ্যেই। তবে নাথান লায়নের বলে ক্যাচ দিয়ে তার ফেরার পরই পথ হারিয়ে ভারত ম্যাচও হেরে যায়। আউট হওয়ার পর চোখেমুখে যে অবিশ্বাস আর হতাশা ছিল কোহলির, ঠিক সেই কারণেই তিনি টেস্ট গ্রেট হয়ে উঠেছেন। জয়ের জন্য শেষ বিন্দু নিংড়ে দেওয়া কোহলি তাই লাল বলের ক্রিকেটের একজন বড় বিজ্ঞাপন হয়েই প্রাণবন্ত থাকবেন ইতিহাসের পাতায়।
No posts available.
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৪:২৭ পিএম
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২৯ পিএম

রোমারিও শেফার্ডের শর্ট বলে দারুণ পুল শটে ছক্কা মারলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু রান পেলেন না, উল্টো আউট হয়ে গেলেন। কারণ শট খেলাই আগেই অফ স্টাম্পে পা দিয়ে ফেলেন তিনি। পড়ে যায় বেলস। তাই হিট উইকেট হন তাসকিন আর ১৬ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হিট উইকেট হওয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার তাসকিন। আর তিন সংস্করণ মিলিয়ে দেশের ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে হিট উইকেট হলেন তিনি।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজটি শুরু করল বাংলাদেশ। ১৬৬ রানের লক্ষ্যে পাওয়ার প্লেতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। ২ বল বাকি থাকতে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় লিটন কুমার দাসের দল।
সপ্তম উইকেটে ২৩ বলে ৪০ রানের জুটি গড়ে আশা জাগিয়েছিলেন নাসুম আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টেনে নিতে পারেননি তারা।
দলের সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেন নাসুম। আর কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেননি। দশম উইকেটে ২০ রানের জুটিতে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন জেসন হোল্ডার ও জেডেন সিলস। আকিল হোসেন মাত্র ২২ রানে নেন ২ উইকেট।
একই মাঠে বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৬৫/৩ (আথানেজ ৩৪, কিং ৩৩, হোপ ৪৬, রাদারফোর্ড ০, পাওয়েল ৪৪; নাসুম ৪-০-১৫-০, তাসকিন ৪-০-৩৬-২, সাকিব ৪-০-৪৭-০, মোস্তাফিজ ৪-০-২৪-০, রিশাদ ৪-০-৪০-১)
বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ (সাইফ ৮, তামিম ১৫, লিটন ৫, হৃদয় ২৮, শামীম ১, সোহান ৫, সাকিব ৩৩, নাসুম ২০, রিশাদ ৬, তাসকিন ১০, মোস্তাফিজ ১১*; আকিল ৪-০-২২-২, সিলস ৪-০-৩২-৩, পিয়েরে ৪-০-৩৩-১, হোল্ডার ৪-০-৩১-৩, শেফার্ড ৩.৪-০-২৯-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ রানে জয়ী

হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছেন জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দল বরিশাল বিভাগের ফিজিওথেরাপিস্ট হাসান আহমেদ। তাঁর স্মরণে আজ চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
খুলনা বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ খুলনা ও বরিশাল ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে মাঠেই হার্ট অ্যাটাক করেন হাসান। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৪৭ বছর বয়সী এই ফিজিওকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এক বিবৃতিতে বিসিবি জানিয়েছে, হাসান আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রামে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দল কালো আর্মব্যান্ড পরবে। ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। আগামীকাল চলমান এনসিএলের চতুর্থ দিনের ম্যাচগুলোতেও হাসান আহমেদকে স্মরণ করা হবে।
প্রায় এক যুগের বেশি সময় জাতীয় লিগে বরিশালের ফিজিওর দায়িত্ব পালন করেছেন হাসান আহমেদ। এর বাইরেও ট্রমায় আক্রান্তদের জন্য গঠিত বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি।

ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তোলে টি-টোয়েন্টি থেকে রীতিমতো ছেঁটে ফেলা হয়েছিল বাবর আজমকে। নতুন করে যাদের পরখ করা হয়, তাঁরাও সন্তুষ্ট করতে পারেননি পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টকে। সমালোচনারমুখে ৯ মাস পর আবারও টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পড়ে অভিজ্ঞ বাবরের।
দক্ষিণ আফ্রিার বিপক্ষে আগামীকাল সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তন হতে পারে বাবরের। লম্বা সময় দলের বাইরে থাকা এই তারকা ব্যাটারের ব্যাটিং পজিশন কি হবে- নিশ্চিত করেছেন কোচ মাইক হেসন। টি-টোয়েন্টিতে অধিকাংশ ম্যাচে ওপেনিংয়ে খেলেছেন বাবর। তবে পাকিস্তানের সাদা বলের কোচ জানিয়েছেন, এবার ব্যাট হাতে দেখা যাবে তাঁকে তিন নম্বরে।
গতকাল রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে হেসন বলেন, ‘আমি অবশ্যই তাঁর দলে ফেরাকে সমর্থন করি। ফখর জামানকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পাঠানো হয়েছে, ফলে আরেকজন টপ অর্ডার ব্যাটারের জন্য জায়গা তৈরি হয়েছে। বাবরের জন্য এটা দারুণ সুযোগ। সম্ভবত সে তিন নম্বরে ব্যাট করবে, আর আমি আত্মবিশ্বাসী—এই ভূমিকায় সে দারুণ করবে।’
আরও পড়ুন
| লিটনদের সামনে কতগুলো মাইলফলকের হাতছানি |
|
বাবর আজম সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, সেঞ্চুরিয়নে গত বছরের ডিসেম্বরে। তারপর থেকে তাঁকে দেখা গেছে শুধু ওয়ানডে ও টেস্টে। তবে হেসনের ভাষায়, ‘সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও বাবর এখনো দলের অন্যতম ভরসার নাম।’
হেসন ব্যাখ্যা করেছেন উইকেটকিপার-ব্যাটার মোহাম্মদ হারিসের বাদ পড়ার কারণও, ‘হারিস তরুণ, তবে তাঁকে বেশ কয়েকবার সুযোগ দিয়েও আমরা ধারাবাহিক পারফরম্যান্স পাইনি। উন্নতির জায়গা এখনো অনেক।’হারিসের জায়গায় দলে সুযোগ পেয়েছেন স্পিন মোকাবিলায় ব্যাটিং দক্ষতার জন্য পরিচিত উসমান খান।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও পরবর্তী ত্রিদেশীয় সিরিজকে হেসন দেখছেন ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে, ‘এই দুটি সিরিজ আমাদের দল গঠনে সহায়তা করবে। বিভিন্ন কম্বিনেশন যাচাই করার সুযোগ পাব।’
পাকিস্তান এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও পরবর্তী ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের দল। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের স্কোয়াডও নির্ধারণ করেছে তারা।
হেসন জানান, তরুণ বোলার উসমান তারিককে তিনি ‘দারুণ স্পিন প্রতিভা’ হিসেবে দেখছেন। আর সুফিয়ান মুকিমকে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সুযোগ করে দিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

চোট কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলে ফিরেছেন টেম্বা বাভুমা। আগামী মাসে ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
গত মাসে ইংল্যান্ড সফরের তৃতীয় ওয়ানডেতে পায়ের পেশিতে চোট পাওয়ায় মাঠের বাইরে ছিটকে যান বাভুমা। যে কারণে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের প্রথম সিরিজেও খেলতে পারেননি।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া সাদা বলের (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) দুই সিরিজেও খেলবেন না বাভুমা। ভারতের বিপক্ষে মূল সিরিজের আগে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ ও ভারত ‘এ’ দলের ম্যাচে নামবেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজের স্কোয়াড থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এই একটিই। বাদ পড়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটার ডেভিড বেডিংহাম। ১৫ টেস্ট খেলা ব্যাটার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ ইনিংসে ৮২ রান করেন। তবে এর আগে ১২ ইনিংসে কোনো ফিফটি ছুঁতে পারেননি।
আরও পড়ুন
| লিটনদের সামনে কতগুলো মাইলফলকের হাতছানি |
|
স্পিন বিভাগে দক্ষিণ আফ্রিকা ধরে রেখেছে তিনজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারকে- কেশব মহারাজ, সাইমন হার্মার ও সেনুরান মুথুসামি। পাকিস্তান সিরিজে ভালো পারফর্ম করা এই ত্রয়ীর সঙ্গে জায়গা হয়নি অফ স্পিনার প্রেনেলান সুব্রায়েনের।
পেস বোলিং বিভাগে থাকছেন কাগিসো রাবাদা, কর্বিন বশ ও মার্কো ইয়ানসেন। চোটের জন্য পাকিস্তান সফর মিস করা লুঙ্গি এনগিডিও এই দলে নেই।
কলকাতায় আগামী ১৪ নভেম্বর শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে গুয়াহাটিতে, ২২ ডিসেম্বর থেকে। ভারত সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা আরও খেলবে তিন ওয়ানডে ও পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াড
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), এইডেন মার্করাম, রায়ান রিকেল্টন, ট্রিস্টান স্টাবস, কাইল ভেরেইনা, দেওয়াল্ড ব্রেভিস, জুবায়ের হামজা, টনি ডি জর্জি, কর্বিন বশ, উইয়ান মুল্ডার, মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ, সেনুরান মুথুসামি, কাগিসো রাবাদা, সাইমন হার্মার।

হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করেছেন জাতীয় ক্রিকেট লিগের দল বরিশাল বিভাগের ফিজিওথেরাপিস্ট হাসান আহমেদ। খুলনা বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার খুলনা ও বরিশালের মধ্যকার ম্যাচে তৃতীয় দিন সকালে মাঠেই হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি।
পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৪৭ বছর বয়সী এই ফিজিওকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
প্রায় এক যুগের বেশি সময় জাতীয় লিগে বরিশালের ফিজিওর দায়িত্ব পালন করেছেন হাসান আহমেদ। এর বাইরেও ট্রমায় আক্রান্তদের জন্য গঠিত বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি।
হাসান আহমেদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলতে নামবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এক মিনিট করে নীরবতা পালন করা হবে।
এছাড়া জাতীয় লিগে মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর আগেও শোকপালন করা হবে।