
দুই দলের সবশেষ দিবারাত্রির টেস্টের প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে বেঁধে দিয়েছিলেন ম্যাচের সুর। ভারতের বিপক্ষে আরেকটি দিবারাত্রির টেস্টের প্রথম বলেই আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইয়াশাশভি জয়সওয়ালকে ফিরিয়ে দিলেন মিচেল স্টার্ক। অভিজ্ঞ এই পেসারের ফাইফারে ঘুরে দাঁড়াতেই পারল না ভারতের ইনিংস। সম্ভব হলো না দুইশ ছোঁয়াও। শুরুতেই উইকেট হারালেও অস্ট্রেলিয়ার দিনটা শেষ করল সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেই।
অ্যাডিলেড ওভালে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফ্রির দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ভারত গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৮০ রানেই। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১ উইকেটে ৮৬ রান, পিছিয়ে আছে ৯৪ রানে।
আরও পড়ুন
| অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ফেলে আইপিএলের নিলামে যাচ্ছেন স্পিন কোচ ভেট্টোরি |
|
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং লাইনআপের ওপর দাপট দেখিয়ে শতক হাঁকান জয়সওয়াল। ওই ইনিংসে স্টার্ককে বেধড়ক পিটুনিই দিয়েছিলেন ভারত ওপেনার। ফলে এই দুজনের লড়াইয়ের আশায় ছিলেন সবাই। তবে এবার শতভাগ সফল নন অজি তারকা পেসার। সুইং করা ডেলিভারিটি আঘাত হানে জয়সওয়ালের প্যাডে। গোল্ডেন ডাকের তেতো অভিজ্ঞতা হয় তরুণ এই ব্যাটারের।
এই ম্যাচ দিয়ে একাদশ ফেরা অধিনায়ক রোহিত শর্মা ওপেনিং ছেড়ে নেমে যান ছয় নম্বরে। প্রথম টেস্টে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে খেলা লোকেশ রাহুল প্রথম ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের সামাল দেন সলিড ডিফেন্সে। এই টেস্ট দিয়ে একাদশে ফেরা তিনে নামা শুবমান গিল প্রথম ওভারে ক্রিজেই গিয়েই মারেন তানা দুই বাউন্ডারি।
এরপর রয়েসয়ে খেলে রাহুলকে দেন যোগ্য সঙ্গ। জমে যাওয়া এই জুটিতে যোগ হয় ৬৯ রান। দুজনই যখন পুরোপুরি সেট, তখন ফের আঘাত হানেন সেই স্টার্কই। ৬ চারে ৩৭ রানে শেষ হয় রাহুলের প্রতিরোধ। ভারতকে আরও চাপে ফেলে আগের ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান বিরাট কোহলিকেও ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি এই পেসার। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল তাড়া করে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এই তারকা ব্যাটার।
জশ হ্যাজলউডের চোটে এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া স্কট বোল্যান্ড দিবারাত্রির টেস্টে বরাবরই দারুণ এক বোলার। সেই খ্যাতি ধরে রেখে জোড়া ধাক্কায় ভারতের চাপ আরও বাড়িয়ে দেন তিনি। ৩১ রান করা গিলের পর শিকার বানান ২৩ বলে ৩ করা রোহিতকেও। ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারত চলে যায় ব্যাকফুটে।
আরও পড়ুন
| অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে গিলকে ‘পাচ্ছে না’ ভারত |
|
স্বভাবসুলত আগ্রাসী ব্যাটিং না করে কিছুটা ধরে খেলার দিকেই মনোযোগী ছিলেন রিশাভ পান্ত। তবে পারেননি বড় স্কোর গড়তে। ২ বাউন্ডারিতে করতে পারেন ২১ রান। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংটা করেন এই ম্যাচ দিয়েই একাদশে আসা অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিন। খেলেন ২২ বলে ২২ রানের ক্যামিও।
তবে ভারতের দেড়শ পার করে দুইশ রানের কাছাকাছি যাওয়ার একমাত্র কৃতিত্ব পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিতিশ রেড্ডির। প্রথম টেস্টেও জানান দিয়েছিলেন ব্যাট হাতে নিজের সামর্থ্যের। এবার দলের বিপদে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে পরীক্ষাই নেন অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের। সমান তিনটি করে চার ও ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৪২ রান।
৪৮ রানে ৬ উইকেট নেন স্টার্ক। টেস্টে এই নিয়ে ১৫বার ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট পেলেন তিনি।
পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসেও দুইশর কম করেও শেষ পর্যন্ত বড় জয় পেয়েছিল ভারত, যেখানে অবদান রাখেন দলটির পেসাররা। এবারও শুরু থেকেই অজি ওপেনারদের প্রতিটি রানের জন্য রীতিমত সংগ্রাম করিয়ে ছাড়েন জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ। বিশেষ করে বুমরাহকে ব্যাটাররা যেন একটু বেশিই সমীহ করে খেলছিলেন। সাথে হারশিত রানাও আঁটসাঁট বোলিং ধরে রাখেন চাপটা।
আরও পড়ুন
| অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে গিলকে ‘পাচ্ছে না’ ভারত |
|
ফলে রানের জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকা দুই ওপেনার নাথান ম্যাকসুইনি ও উসমান খাজা কয়েকবার বেঁচে যান অল্পের জন্য। তাদের অতিরিক্ত ডিফেন্সিভ ব্যাটিং দেখে ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রি বলছিলেন, এই ধরণের ব্যাটিং ভারতকে ম্যাচে ফেরার বিশ্বাসটা বাড়িয়ে দিতে পারে। ১০ ওভারে রান আসে মাত্র ২৪।
শেষ পর্যন্ত ফর্মের তুঙ্গে থাকা বুমরাহ শেষ পর্যন্ত পান সাফল্যের দেখা। অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে রোহিতের ক্যাচ শেষ হয় খাজার ১৩ রানের সংগ্রামী ইনিংস।
সেই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জই। কারণ, টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নতুন ম্যাকসুইনি প্রথম টেস্টে পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। আর মার্নাস লাবুশেন তো লম্বা সময় ধরেই নেই রানের মধ্যে। বেশ খানিকটা সময়েই তাই দুই ব্যাটারকে ভারতের পেসারদের সামনে দিতে হয় কঠিন পরীক্ষা।
বুমরাহর কয়েকটি ইনসুইঙ্গার দুই ব্যাটারকে পারেননি অল্পের জন্য আউট করতে। কয়েকটি দুর্দান্ত আউটসুইঙ্গার আবার পরাস্ত করে পুরোপুরিভাবে। তবে সেই সময়ে দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাটিংয়ের সুফল ধীরে ধীরে পেতে শুরু করেন ম্যাকসুইনি ও লাবুশেন।
রানের চাকাও তাতে সচল হয় কিছুটা। দুজনই হাঁকান চমৎকার কিছু শটে বাউন্ডারি। রানের জন্য সংগ্রাম করতে থাকা লাবুশেন কিছু শটে মনে করান সেরা সময়ের কথা। আর তরুণ ম্যাকসুইনিও নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিয়ে ক্রমশ ব্যাটিংয়ে দেখান আত্মবিশ্বাসের ছাপ। দর্শকদের আনন্দে মাতিয়ে নিতিশকে মারেন টানা দুটি চার।
আরও পড়ুন
| শাহিন-নাসিম-রউফ তোপে উড়ে গেল অস্ট্রেলিয়া, সিরিজ জয় পাকিস্তানের |
|
জমে ওঠা এই জুটি একবার রান-আউটে কাঁটা পড়ার খুব কাছাকাছি গিয়ে রক্ষা পায়। ফিরতি স্পেলে শেষ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থে বোলিং করে আরও একবার ব্যাট-বলের লড়াই জমিয়ে তোলেন বুমরাহ। সেটা সামলে দিনটা শেষ পর্যন্ত পার করে দিতে সমর্থ হন ম্যাকসুইনি-লাবুশেন জুটি।
ম্যাকসুইনি অপরাজিত আছেন ৩৮ রানে, আর লাবুশেনের সংগ্রহ ২০ রান।
No posts available.
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ এম
২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। দলে নেই অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও অভিজ্ঞ স্পিনার নাথান লায়ন।
কামিন্সের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেবেন স্টিভ স্মিথ। পিঠের চোট কাটিয়ে গত ম্যাচে ফিরলেও ঝুঁকি এড়াতে পুরো অ্যাশেজ সিরিজ থেকেই তাঁকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়া কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড।
চোটের কারণে দল থেকে ছিটকে গেছেন নাথান লায়ন। ডান পায়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের অস্ত্রোপচার করতে হবে তাঁকে। ফলে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকতে পারেন অভিজ্ঞ এই অফ-স্পিনার। তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে টড মারফিকে।
এছাড়া চোট কাটিয়ে ফেরা পেসার ঝাই রিচার্ডসনও দলে জায়গা পেয়েছেন। কামিন্সের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন তিনি। অ্যাডিলেড টেস্টে না খেললেও দলে রাখা হয়েছে মাইকেল নেসার, বিউ ওয়েবস্টার ও ব্রেন্ডন ডগেটকে।
অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ রানে জিতে এরই মধ্যে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে অ্যাশেজ সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও সফরকারী ইংল্যান্ড।
অ্যাশেজে চতুর্থ টেস্টের অস্ট্রেলিয়া দলঃ
স্টিভ স্মিথ (অধিনায়ক), স্কট বোল্যান্ড, অ্যালেক্স ক্যারি, ব্রেন্ডন ডগেট, ক্যামেরন গ্রিন, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, উসমান খাজা, মার্নাস লাবুশেন, টড মারফি, মাইকেল নেসার, ঝাই রিচার্ডসন, মিচেল স্টার্ক, জেক ওয়েদারাল্ড, বো ওয়েবস্টার।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে এখন অচলাবস্থা চলমান। আইসিসির সদস্যপদ সংক্রান্ত নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগে গত সেপ্টেম্বর দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। দেউলিয়া ঘোষণা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটকে। এমন অচলাবস্থার কারণে যেন দেশটির ক্রিকেটাররা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য উদ্যেগ নিচ্ছে আইসিসি।
বর্তমানে কার্যত যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতনের দায়িত্ব নিজ হাতে নিয়েছে আইসিসি। আইসিসির সঙ্গে এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির (ইউএসওপিসি)।
এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের স্থগিতাদেশ চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রামের সব দিক পরিচালনা ও প্রয়োজনে অর্থায়ন করতে আইসিসি প্রস্তুত। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দলের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচিত ও চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন পরিশোধের দায়ও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
আগামী জানুয়ারি জিম্বাবুয়েতে হয়ে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশ নেবে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট দল । ফেব্রুয়ারি–মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আর ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক গেমসেও খেলবে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে আইসিসি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের অচলাবস্থা যেন কোনোভাবেই বৈশ্বিক আসরে দেশটির অংশগ্রহণ ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। পাশাপাশি, ২০২৮ অলিম্পিক দিয়ে শত বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট ফেরানোর আইসিসির পরিকল্পনাও বাধাগ্রস্ত হতে দেওয়া হবে না।
আইসিসি আরও জানায়, দেউলিয়া ঘোষণার পর তারা যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, যাতে খেলোয়াড় ও হাই পারফরম্যান্স স্টাফদের বেতন পরিশোধ করা যায়। তবে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি ইউএসএ ক্রিকেট। ফলে আইসিসি এখন দেখছে, প্রয়োজনে তারা সরাসরি খেলোয়াড়দের অর্থ পরিশোধ করতে পারে কি না, যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের পক্ষ হয়ে।
আইসিসির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেটারদের প্রতিই আমাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব। ইউএসএ ক্রিকেটের দেউলিয়া প্রক্রিয়া তাদের আইসিসি ইভেন্ট বা লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ অলিম্পিকের প্রস্তুতিতে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আইসিসি হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম পরিচালনা ও অর্থায়নে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক সংকট সমাধানে আইসিসির নরমালাইজেশন কমিটি তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। পাশাপাশি, মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) সহ দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোর অনুমোদন ও তদারকি সরাসরি আইসিসি করবে।

আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে আছেন তাসকিন আহমেদ। সবশেষ দুই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়া তাসকিন আজ আবুধাবি নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে নিলেন আরও দুই উইকেট। তবে দারুণ শুরুর পরও নিজের শেষ ওভারে বেদড়ক মার খেলেন তাসকিন।
গতকাল ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে নিয়েছেন ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে তাসকিন নিয়েছিলেন ২ উইকেট। আজ ৪ ওভারে ৪১ রান খরচ করে বাংলাদেশি পেসারের শিকার দুই উইকেট। এ নিয়ে শারজা ওয়ারিয়র্সের হয়ে টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে তাসকিন নিয়েছেন আট উইকেট।
আজ পাওয়ার প্লে এর প্রথম তিন ওভারে দারুণ বোলিং করেন তাসকিন। এই তিন ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে দুই উইকেট পান ৩০ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার। তবে শেষ ওভারে গড়বড় পাকিয়ে ফেলেন। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে চারটি ছয় হজম করেন।
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা শারজা ওয়ারিয়র্স প্রথম ওভারেই উইকেট পায় তাসকিনের নৈপুণ্যে। প্রথম ওভারে মাত্র একটি চার হজম করার বিপরীতে ফিল সল্টকে ফেরান তাসকিন। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারেও একইভাবে তাসকিনের ওভারে একটি চার মেরে আরেকটি উইকেট হারায় আবুধাবি নাইট রাইডার্স। এবার অ্যালেক্স হেলসকে আউট করেন তাসকিন।
দলীয় ১৯তম ওভারে বাকি থাকা এক ওভার করতে আসেন তাসকিন। ক্রিজে তখন দুই মারকুটে ব্যাটার আন্দ্রে রাসেল ও জেসন হোল্ডার। তাসকিনের ওই ওভার থেকে দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটার ২৫ রান তুলে নেয়।
আবুধাবি নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে এই ম্যাচে শারজা ওয়ারিয়র্সের হয়ে সেরা বোলার আদিল রাশিদ। এই লেগ স্পিনার চার ওভারে ১৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। ৩ ওভারে ১২ রান খরচ করে দুই উইকেট শিকার ওয়াসিম আকরামের। তাসকিনদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৩৪ রান করেছে আবুধাবি।

অনেকেই মজা করে বলছেন ‘বাজবলের’ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। ঐতিহ্যের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নূন্যতম লড়াইটাও করতে ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সের পর অনেকে ইংলিশদের দলের প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শেষ দেখছেন। তবে বেন স্টোকসের কোচিং করিয়ে নাকি বেশ মজা পাচ্ছেন ম্যাককালাম। ইংল্যান্ড দলের দায়িত্বও আপাতত ছাড়ার কথা মাথায় আনছেন না।
ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়েই বেশ বাজিমাত করেছিলেন ম্যাককলাম। আগ্রাসী ক্রিকেটে প্রতিপক্ষকে কচুকাটা করতে বেশ পারদর্শী হয়ে তাঁর দল। তবে দ্রুতই মুদ্রার উল্টোপিঠও দেখতে শুরু করেন। ‘বাজবল’ দিয়ে কাবু করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়াকে। অজিদের ডেরায় এবার স্টোকসরা ধবলধোলাইয়ের প্রবল শঙ্কায় আছে। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই কোচ ম্যাককালামকে বরখাস্ত নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
ম্যাককালাম অবশ্য স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি ইংল্যান্ড দলের দায়িত্বে থাকতে চান, যদিও ভবিষ্যৎতের সিদ্ধান্ত যে নিজের হাতে নেই সেটা ভালো করেই জানা ৪৪ বছর বয়সী নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই ক্রিকেটারের।
আরও পড়ুন
| ‘দল সাজানো বেশ কঠিন হবে’, রংপুরের গভীরতা নিয়ে মিকি আর্থার |
|
শত চাপের মধ্যেই চাকরি ছাড়তে না চাওয়া ম্যাককালান বলেন, ‘কাজটা ভালো। মজা লাগে। ছেলেদের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে হয়। কিছু অর্জন করতে রোমাঞ্চকর ক্রিকেট খেলতে হয়, আমার জন্য এটা হলো মানুষের ভেতর থেকে সেরাটা বের করে আনা।’
তবে চাকরি বাঁচানোর জন্য নাকি বিশেষ কিছু করছেন না ম্যাককালাম, ‘আপনি চাইবেন খেলোয়াড়দের থেকে সেরাটা বের করতে। আমি চাকরি রক্ষার জন্য কিছু করি না। মূল বিষয় হলো খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করা এবং তাদের সঙ্গে যা সম্ভব তা অর্জনের চেষ্টা করা।’
ইংল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি আছে ম্যাককলামের। যার মধ্যে ঘরের মাঠে অ্যাশেজ সিরিজও আছে। ইংল্যান্ডের কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয় আগামী গ্রীষ্ম পর্যন্ত চাকরি থাকবে কিনা, জবাবে ম্যাককালাম বলেন, ‘আমি জানি না। এটা আসলে আমার ওপর নির্ভর করছে কি না। আমি শুধু কাজটা চালিয়ে যাব, এখানে যা ঠিকভাবে করতে পারিনি তার থেকে শিক্ষা নেব এবং কিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করব। এই ধরনের প্রশ্ন অন্য কারো জন্য, আমার জন্য নয়।’
২০২২ সালে শুরু হয় ইংল্যান্ড দলে স্টোকস-ম্যাককালাম জুটি। এই জুটি প্রথম ১১ টেস্টের ১০টিতেই জিতে। তবে এরপরই পথ হারায়। এ পর্যন্ত ৩৩ টেস্টের মধ্যে ইংল্যান্ডের জয় ১৫টি, হার ১৬টি।
আগামী মঙ্গলবার শুক্রবার মেলবোর্নে হবে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট। চাকরি বাঁচানোর প্রয়োজনে হোক কিংবা উপভোগের মন্ত্র, অন্তত শেষ দুটো ম্যাচে ইতিবাচক ফল নিয়ে ইংল্যান্ডে ফিরতে মরিয়া হয়ে থাকার কথা ম্যাককলামের।

গত ১৪ ডিসেম্বর সিডনির বন্ডি বিচে ভয়াবহ গুলির ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন। হামলাকারী সাজিদ আকরাম ও তার ছেলে যখন গুলি চালায়, ইহুদি ধর্মীয় উৎসব হানুকাহ উদযাপনের অনুষ্ঠান চলছিল তখন। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তির শিকার হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার উসমান খাজা ও তাঁর পরিবার।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত খাজা অস্ট্রেলিয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বর্তমানে অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলছেন তিনি। হামলার সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না থাকলেও, তাকে ও তাঁর পরিবারকে লক্ষ্য করে ইসলামবিদ্বেষী ও বর্ণবাদী মন্তব্য করা হয়।
বিষয়টি সামনে এনেছেন খাজার স্ত্রী র্যাচেল খাজা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু আপত্তিকর মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করে র্যাচেল খাজা লেখেন, ‘গত এক সপ্তাহে আমরা যে মন্তব্যগুলো পেয়েছি, তার একটি ছোট অংশ সংগ্রহ করেছি। এগুলো নতুন কিছু নয়, কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় এসব আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।‘
আরও পড়ুন
| বক্সিং ডে টেস্টে একাধিক পরিবর্তন আসছে অস্ট্রেলিয়ার |
|
কিছু মন্তব্যে খাজার মেয়েদেরকে উদ্দেশে চরম ঘৃণামূলক ভাষা ব্যবহার করা হয়। তাদেরকে পাকিস্তানেও ফিরে যেতে বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। ইহুদিবিদ্বেষ, ইসলামবিদ্বেষ কিংবা বর্ণবাদ-কোনোটাই আমাদের মেনে নেওয়া উচিত নয়।‘
হামলার ঘটনার পর উসমান খাজা নিজেও নিন্দা জানিয়েছেন। এর আগে বন্ডি বিচ হামলার ঘটনায় যৌথ বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।