৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩:২২ পিএম
দাবিটা চলে আসছে বিপিএলের একদম শুরু থেকেই। একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হাতে দল দিয়ে দেওয়ার সেই আহ্বান বারবার শোনা গেলেও এখনও তা আর বাস্তবে রুপ নেয়নি। প্রতি আসরেই তাই থাকে শঙ্কা-অনিশ্চয়তা। দল আসে নতুন, বাদ হয়ে যায় আগের মালিকানা। এই চিত্রের পরিবর্তন দেখতে চান তামিম ইকবাল। অভিজ্ঞ এই ওপেনার মনে করেন, আইপিলের মত বিপিএলেও লম্বা সময়ের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
তামিমের এমন মন্তব্য এসেছে সদ্য সমাপ্ত আসরকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এবারই প্রথম বিপিএলে অংশ নেয় ঢাকা ও রাজশাহীর নতুন মালিকানার দল। চিটাগং কিংস এবার ফিরেছে ১১ বছর বাদে। আবার টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবার অংশই নেয়নি। বিশ্বের শীর্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলের দিকে তাকালে দেখা যায়, সেই প্রথম আসর থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলছে নিয়মিতভাবে। আবার খেলোয়াড়দের নিলামে তোলা হলেও দলগুলো চাইলেই পারে পুরনোদের ধরে রাখতে।
তবে বিপিএলে প্রতিটি আসর শুরুর আগে খেলোয়াড়রা থাকেন অনিশ্চয়তায় যে এবার কোন দলে খেলবেন। বিপিএল ২০২৫-এর ফাইনালের পর তামিম দিয়েছেন সমাধানের পথ। “আমার কাছে মনে হয়, এই যে আমরা এত কষ্ট করে একটা ফ্যানবেজ তৈরি করেছ… ঠিক এই জিনিসটাই কিন্তু প্রথম বিপিএল থেকে সবাই চাইছে। প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজির যাতে একটা ফ্যানবেজ তৈরি হয়। এখন যদি আইপিএলের উদাহরণ দিই, সেখানে এই নিয়মটা কিন্তু কখনো বদলে যায় না। সেখানে দএর মূল খেলোয়াড়রা কিন্তু একই রাখে। আমি মানছি যে তিন বছরের একটা চক্র শেষ হয়ে গেছে, সামনে হয়ত আবার পাঁচ বছরের চক্র আসবে। কিন্তু এই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আসল ক্রিকেটারদের ধরে রাখার একটা সুযোগ তো অবশ্যই দেওয়া উচিত। নাহলে এতদিন ধরে আপনি যে পুরো জিনিসটা গড়ে তুলেছেন, সেটা তো নষ্ট হয়ে যাবে। ৫-৬ এমনকি অন্তত চারজন খেলোয়াড়ও যদি ধরে রাখার সুযোগ রাখা হয়, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজির ফ্যানবেজটা আরও বড় হবে।”
রংপুর, বরিশাল ও খুলনাই এই মুহূর্তে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি, যারা অনেকটা সময় ধরে একটা ধারা বজায় রেখে নিয়মিতভাবে বিপিএলে অংশ নিচ্ছে। পেশাদারভাবে দল পরিচালনা করা থেকে শুরু করে বছরব্যাপী নানাভাবে তাদের দেখা যায় সক্রিয় থাকতে। তবে প্রতি বছর নিয়ম বদলে যাওয়ায় চাইলেও অনেক খেলোয়াড়দের ধরে রাখা যায় না। এই বছরই আবার বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে তিন বছরের চক্রের স্বত্বের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগামী আসর থেকে তাই শুর করতে হবে অনেকটা নতুন করেই।
তামিম মনে করেন, একজন খেলোয়াড়কে যেন চাইলেই ফ্র্যাঞ্চাইজি ধরে রাখতে পারে, সেই সুযোগ রাখা উচিত হবে। “আমি আশা করব যখনই তারা পরের বছরের জন্য নিয়মকানুনগুলো করবেন, তখন যেন এসব বিষয় মাথায় থাকে। সমস্যা যেটা হয়, দলের মালিকানাই বদল হয়ে যায়। তবে এরপরও দল তো একই থাকছে। মালিক বদলালেও খেলোয়াড় রিটেইন করার সুযোগটা রাখা উচিত। এরপর কেউ যদি মনে করে তারা সেটা করবে না, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।”
বরিশাল ও রংপুর এই মুহূর্তে বিপিএলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। তামিমের মতে, এই ধরণের পেশাদার ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সমর্থন দেওয়া উচিত সবার। “আমি মনে করি বিসিবির উচিত এই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের পাশে থাকা। কারণ, উনারাই কিন্তু বিপিএলকে বদলে দিতে পারবেন। শুধু বিপিএল না, উনারা যদি ক্রিকেটের সাথেও থাকেন, আমি মনে করি তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভালো করবে।”
No posts available.
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পর দল থেকে বাদ পড়লেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এছাড়া খরুচে বোলিংয়ের পর পায়ের চোটে মাঠ ছেড়ে যাওয়া নাহিদ রানাও ওয়ানডে দলে জায়গা হারালেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সামনের ওয়ানডে সিরিজের জন্য বৃহস্পতিবার ১৬ জনের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এছাড়া প্রায় ৮ মাস পর ফিরেছেন সৌম্য সরকার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়া সিরিজে পরিবর্তন এই দুইটিই। এখনও চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় আফগান সিরিজের মতো ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দলেও নেই লিটন কুমার দাস।
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার শুরু হবে তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজ। এরপর একই মাঠে বাকি দুই ম্যাচ হবে যথাক্রমে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। পরে চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
গত ফেব্রুয়ারিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সবশেষ ওয়ানডে দলে ছিলেন সৌম্য। নাঈম বাদ পড়ায় তার জায়গায় এই বাঁহাতি ওপেনারকে ফেরানো হয়েছে দলে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১১ ইনিংসে ৪৭.৮৮ গড় ও ৭০.৫৪ স্ট্রাইক রেটে ৪৩১ রান করেছিলেন অঙ্কন। সব মিলিয়ে লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে ৯০ ইনিংসে ৪ সেঞ্চুরি ও ২৮ ফিফটিতে ৪৪.৫৩ গড়ে করেছেন ৩ হাজার ৪২৯ রান।
প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়া অঙ্কনকে একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য লড়তে হবে জাকের আলি অনিক ও নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে। ১৬ জনের দলে তারা ৩ জনই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয়েছে অঙ্কনের। তবে সাদা বলে এখনও বড়দের মঞ্চে নামা হয়নি তারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড
মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলি অনিক, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন যুক্ত হয়েছেন আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি লখনৌ সুপার জায়ান্টসের (এলএসজি) সঙ্গে। তবে এবার খেলোয়াড় নয়, স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর হিসেবে দলটির সঙ্গে কাজ করবেন কিউই তারকা ব্যাটার। লখনৌর স্বত্বাধিকারী সঞ্জীব গোয়েঙ্কা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একই সঙ্গে কেকেআরের স্পিন পরামর্শক কার্ল ক্রোকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে লখনৌর নতুন স্পিন-বোলিং কোচ হিসেবে। এলএসজি আরও জানিয়েছে, আগের মতোই দলের প্রধান কোচ থাকছেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং পেস বোলিং কোচের দায়িত্বে থাকছেন ভারত অরুণ।
উইলিয়ামসনকে নিয়োগের প্রসঙ্গে গোয়েঙ্কা লিখেছেন,
‘তার নেতৃত্বগুণ, কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, খেলার গভীর বোঝাপড়া ও খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা—সব মিলিয়ে তিনি আমাদের দলের জন্য অমূল্য সংযোজন।’
উইলিয়ামসন এর আগে একই ফ্র্যাঞ্চাইজির দক্ষিণ আফ্রিকার দল ডারবান সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলেছিলেন। ৩৫ বছর বয়সী উইলিয়ামসনও লখনৌয় নতুন ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত,
‘এলএসজিতে যোগ দিতে পেরে আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত। এখানে প্রতিভাবান একটি দল ও দুর্দান্ত কোচিং স্টাফ আছে, যাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। আইপিএলে যুক্ত হওয়া সব সময়ই বিশেষ কিছু, কারণ এটি বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট।’
নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবশেষ খেলেছেন গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর না নিলেও তিনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি (ক্যাজুয়াল) চুক্তি করেছেন, ফলে তাঁর ম্যাচ সংখ্যা হবে সীমিত।
২৬ অক্টোবর থেকে টাউরাঙ্গায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে উইলিয়ামসনের। আইপিএলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকলেও গত দুই মৌসুমে তাঁর খুব একটা ভূমিকা ছিল না। ২০২৩ সালে গুজরাট টাইটানসের হয়ে প্রথম ম্যাচেই হাঁটুর চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান তিনি। ২০২৪ সালে একই দলের হয়ে মাত্র দুই ম্যাচ খেলেন, করেন ২৭ বলে ২৭ রান। ২০২৫ সালের মেগা নিলামে কোনো দলই তাঁকে দলে নেয়নি।
সম্প্রতি ইংল্যান্ডে ‘দ্য হান্ড্রেডে’ লন্ডন স্পিরিটের হয়ে খেলেছেন উইলিয়ামসন। সেখানে আট ইনিংসে তাঁর রান ছিল ২০৪, স্ট্রাইক রেট ১২৯.৯৩—ভালো কিন্তু খুব চোখে পড়ার মতো নয়। দলটি আট দলের মধ্যে সপ্তম হয়েছিল।
লখনৌর প্রধান কোচ ল্যাঙ্গার বলেন,
‘প্রতি মৌসুমেই আমরা আশাবাদ নিয়ে নামি, ২০২৬ আইপিএলেও এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা এমন একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি গড়ে তুলতে চাই, যেটি নিয়ে গোয়েঙ্কা পরিবার, আমাদের খেলোয়াড়, স্পনসর, সমর্থক—সবাই গর্ব করতে পারে। গত মৌসুমের পর থেকেই আমরা নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু করেছি। লখনৌয়ের একানা স্টেডিয়াম নীল আলোয় ভরে উঠবে, সেই অপেক্ষায় আছি।’
উইলিয়ামসন এবারই প্রথমবারের মতো কোনো দলের সাপোর্ট স্টাফের ভূমিকায় যুক্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী জাতীয় দলের ক্রিকেটার মারুফা আক্তার। তবে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ হতে পারেননি তরুণ এই পেসার।
বাকি সব সময়ে উত্তীর্ণ হলেও, ভূগোলে অকৃতকার্য এসেছে মারুফার ফল। বিকেএসপির উচ্চ মাধ্যমিক শাখার উপাধ্যক্ষ ড. মো: শামীমুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন এই খবর। তবে এই বিষয়ে পরীক্ষার খাতা আবার নিরীক্ষার জন্য আবেদন করবেন তারা।
“মারুফা আমাদেরকে জানিয়েছে, ভূগোল পরীক্ষা খারাপ দেয়নি সে। তাই আমরা কলেজের পক্ষ থেকে মারুফার ভূগোল পরীক্ষার খাতা পুনরায় নিরীক্ষার জন্য আবেদন করব। এরপর দেখা যাক, নতুন ফলে কী আসে।”
তাই এই মুহূর্তে বলা যায়, নিরীক্ষার জন্য ঝুলে আছে মারুফার এইচএসসি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল।
এছাড়া ছেলে ক্রিকেটারদের মধ্যে বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধা ৪.২৫ জিপিএ পেয়েছে উত্তীর্ণ হয়েছেন। লেগ স্পিনার ওয়াসি সিদ্দিকি পেয়েছেন ৪.০৮ পয়েন্ট। চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে থাকা পেসার রোহানাত দৌল্লাহ বর্ষণও কৃতকার্য হয়েছেন।
বিকেএসপি থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছে মোট ১৫৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৪৭ জন। যেখানে পাসের হার ৯৪.২৩ শতাংশ।
ক্রীড়াবিদদের এই প্রতিষ্ঠান থেকে ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন ৬ জন। এদের মধ্যে ‘গোল্ডেন এ প্লাস’ পেয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন বাস্কেটবলের শাহরিয়ার।
এছাড়া ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন টেবিল টেনিসের জয় ইসলাম, এথলেটিকসের মাসুম মোস্তফা এবং ক্রিকেটের নাভিদ আল হাসান, মেহরাব হাসান ও জান্নাতুল ফেরদৌস এষা।
এর বাইরে আর্চারি থেকে ৩.০৮ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছেন অলিম্পিয়ান সাগর ইসলাম। এশিয়া কাপে স্বর্ণজয়ী আরেক আর্চার আব্দুর রহমান আলিফ পেয়েছেন ৩.৮৩ পয়েন্ট।
হকি থেকে পাঁচজনের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। অনুর্ধ্ব-১৮ দলের খেলা থাকায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি মেহেদী হাসান ও দ্বীন ইসলাম।
অনূর্ধ্ব-২১ দলের ২০ জনের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন হুজাইফা ইসলাম, তানভীর হাসান সিয়াম ও তৈয়ব আলী। এর মধ্যে দুজন মেহেদী ও তৈয়ব যুব বিশ্বকাপের ২০ জনের স্কোয়াডে নেই।
আলোচনটা চলছে অনেকদিনই। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মা খেলবেন কি খেলবেন না ? প্রশ্নটা এখন আর কেবল ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের নয়, একজন নিঁখাদ ক্রিকেটভক্তেরও জিজ্ঞাসা। তবে উত্তরটা এখনও অজানা।
ভারতীয় ক্রিকেট দল এখন অস্ট্রেলিয়ায়। আগামী রোববার পার্থে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে অজিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে শুবমান গিলের দল। স্কোয়াডে আছেন বিরাট-রোহিত দুজনই। ম্যাচের আগে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে একটি বার্তা দেন বিরাট। যেখানে তিনি লিখেন,
‘আপনি তখনই বাস্তবে ব্যর্থ হন, যখন আপনি হাল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।’
এমন সময়ে কোহলি এমন বার্তা দিলেন যখন তাঁর বিশ্বকাপে দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে চলছে জল্পনা । কোহলির এই পোস্টে অনেকেই অনেক রকম অর্থ খুঁজে নিচ্ছেন।
সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মেন্টর দিনেশ কার্তিক বলছেন দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার কোহলি ২০২৭ বিশ্বকাপে ফিরতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। টপ অর্ডারের এই ব্যাটার নাবি সম্প্রতি লন্ডনে ছুটির সময়ও নিয়মিত অনুশীলনে সময় দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিওতে কার্তিক বলেন,
‘সে (কোহলি) ২০২৭ বিশ্বকাপে খেলতে আগ্রহী। লন্ডনে, দীর্ঘ বিরতির সময়ও তিনি নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সপ্তাহে দুই-তিনটি সেশন ক্রিকেট অনুশীলন করেছেন। সে বিশ্বকাপে খেলতে সত্যিই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
২০২৭ বিশ্বকাপে কোহলির বয়স হবে ৩৮। দলে জায়গা টিকিয়ে রাখতে পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই সেটা ভালো করেই জানা কোহলির। আর টিকে থাকার এই লড়াইয়ে কি চাপে আছেন তিনি ?
কার্তিক অবশ্য তা মনে করছেন না। কঠিন চাপে কোহলি কতটা স্থিতিশীল ও আত্মবিশ্বাসী সেটা নতুন করে প্রমান করার কিছু নেই বলছেন তিনি,
‘সে থাকলে কোনো চাপ নেই, কারণ কোহলি জানেন চাপের মধ্যে কীভাবে খেলতে হয়। তিনি বারবার সেটা দেখিয়েছেন এবং আমি খুব আত্মবিশ্বাসী যে তিনি আবারও এটা করতে পারবেন।’
ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কোহলি। ৩০২ ম্যাচে ২৯০ ইনিংসে ৫৭.৮৮ গড়ে ১৪ হাজার ১৮১ রান করেছেন ৩৬ বছর বয়সী ডান হাতি ব্যাটার। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ৫১টি সেঞ্চুরি ও ৭৪টি করা কোহলির এই সংস্করণে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ রান ১৮৩।
এই বছর সাতটি ওয়ানডেতে ৭ ইনিংসে ২৭৫ রান করেছেন কোহলি। সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ব্যাট হাতে নেমেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। গত মার্চে সেই টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে ২১৮ রান করে দলের শিরোপা জয়ে অবদান রেখেছেন তিনি।
২০০০-২০০১ মৌসুমে ৮ দলের জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) আয়োজনে তৎকালীন ৬টি বিভাগীয় দলের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ঢাকা মেট্রোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। জাতীয় ক্রিকেট লিগে অভিষেকের পর সেই আসরেই থেমে গিয়েছিল বিমানের সঙ্গে ঢাকা মেট্রোর যাত্রা। ২০১১-১২ মৌসুমে রংপুর বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করায় ৮ দলের জাতীয় লিগ আয়োজনে ঢাকা মেট্রোকে পুনরায় দেয়া হয় দেশের প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে খেলার সুযোগ। সেই থেকে টানা ১৩টি আসরে অংশ নিয়েছে ঢাকা মেট্রো। ১৪টি আসরে অংশ নিয়ে রানার্স আপের স্বাদও পেয়েছে রাজধানীর প্রতিনিধিত্বকারী দলটি। সর্বশে মৌসুমে (২০২৪-২৫) রানার্স আপ ঢাকা মেট্রো। তবে জাতীয় ক্রিকেট লিগের আসন্ন আসরে নতুন বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহকে খেলার সুযোগ দিয়ে ঢাকা মেট্রোকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটি। বুধবার টুর্নামেন্ট কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
ঢাকা মেট্রো পরিচালনার দায়িত্ব শুরু থেকে ন্যস্ত হয়েছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশের (সিসিডিএম) উপর। তবে শুরু থেকে ব্যাক আপ দল হিসেবে জোড় মেলাতে এনসিএলে খেলার সুযোগ দেয়া হয়েছে ঢাকা মেট্রোকে। ২০০০-২০০১ সালে ঢাকা মেট্রোকে এনসিএলে খেলার সুযোগ দেয়া হয়েছে এই যুক্তিতে। পরের মৌসুমে ঢাকা মেট্রোকে বাদ দেয়ার পেছনেও একই কারণ। ১০ বছর পর ২০১১-১২ মৌসুমে ঢাকা মেট্রোকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, সেখানেও কারণ একই। আবার ২০২৫-২৬ মৌসুমে ঢাকা মেট্রোকে বাদ দেয়ার কারণও অভিন্ন। ময়মনসিংহকে অন্তর্ভুক্ত করায় ঢাকা মেট্রোকে বাদ না দিলে অংশগ্রহনকারী দলের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ এ। অংশগ্রহনকারী দলসমূহের সংখ্যা জোড় না হলে সূচি তৈরিতে সমস্যা হয়, ঢাকা মেট্রোকে বাদ দেয়ার সপক্ষে এটাই যুক্তি বিসিবির হেড অব ক্রিকেট অপারেশন্স হাবিবুল বাশার সুমনের-' ৯টি দলকে নিয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগ যদি সিঙ্গল লিগ ফরম্যাটেও আয়োজনেও সূচি তৈরি করতে সমস্যা হবে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের পরিধি বেড়ে যাবে।'
তবে ঢাকা মেট্রোর হয়ে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে এক দশক পার করা সামছুর রহমান শুভ-সাদমান ইসলাম অনীকদের বক্তব্য ভিন্ন। কোয়াবের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং বিসিবির কাউন্সিলর সামছুর রহমান শুভর বক্তব্য-' বিপিএলে তো ৭টা ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে খেলা হয়। সেখানে তো সূচি তৈরিতে সমস্যা হয় না। জাতীয় লিগে ৯টি টিম খেললে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ১৫-২০জন বেশি ক্রিকেটারের খেলার সুযোগ থাকবে। আমরা হিসাব করে দেখছি ৮টি দলকে নিয়ে জাতীয় লিগ আয়োজন করতে হলে যতোটা সময় লেগে যায়, তার চেয়ে এক সপ্তাহ বেশি দরকার হবে ৯টি দলকে নিয়ে এনসিএল আয়োজনে। ময়মনসিংহ বিভাগের অংশগ্রহনকে অবশ্যই সমর্থন করি। তবে এনসিএলে রাজধানীর প্রতিনিধিত্ব থাকবে না, তা কী করে হয় ?'
ঢাকা মেট্রোকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না সিসিডিএম-এর নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন-' সর্বশেষ আসরে ঢাকা মেট্রো রানার্স আপ। ঢাকা মেট্রোতে যারা দীর্ঘদিন ধরে খেলছে, তাদের মধ্যে বন্ডিংটা দারুণ। এমন একটা সময়ে ঢাকা মেট্রোকে এনসিএল থেকে বাদ দিলে সিসিডিএমকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে।'
এনসিএলে এখন ম্যাচ ফি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার টাকা। ৯টি দলকে নিয়ে আসরটি আয়োজন করা হলে অপরিহার্য ক্রিকেটারদের এক একজন ম্যাচ ফি থেকে ৮ ম্যাচে পাবেন ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতা, যাতায়ত খরচা তো আছেই। অংশগ্রহনকারী দলের সংখ্যা বেড়ে গেলে বাজেটও যাবে বেড়ে। তবে ২১ অক্টোবর থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ শুরু হয়ে নভেম্বরের পুরোটা সময় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ চলাকালে জাতীয় লিগ ভুগবে খেলোয়াড় সংকটে। এটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে টুর্নামেন্ট কমিটি এবং নির্বাচকদের।
পরিস্থিতির মুখে ৯টি দলকে নিয়ে এনসিএল আয়োজন অসম্ভব বলে মনে করছেন হাবিবুল বাশার সুমন-' আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে এনসিএল শুরু হবে। হাতে সময় মাত্র ১০ দিন। প্রতিটি দলের প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। ম্যাচ ভেন্যুতে দলগুলোকে আগে-ভাগে পাঠাতে হবে। ইতোমধ্যে ৮টি টিম চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন কীভাবে ঢাকা মেট্রোকে নিব ?'
তবে ঢাকা মেট্রোর খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়া আছে বলেই এই দলটির অধিকাংশ খেলোয়াড় ময়মনসিংহ বিভাগীয় দলের হয়ে খেলবে, এমনটাই জানিয়েছেন হাবিবুল বাশার সুমন-' ঢাকা মেট্রোর বেশ ক'জন খেলোয়াড়রা ময়মনসিংহ বিভাগের হয়ে খেলবে। ঢাকা বিভাগীয় দলে যেসব ক্রিকেটারের বাড়ি ময়মনসিংহ বিভাগে, তাদেরকেও এই দলে রাখা হয়েছে। মোসাদ্দেক যেহেতু ময়মনসিংহের ছেলে, তাই রাখা হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগীয় দলে।'
ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রিকেট দল গঠনে ঠিকই ঢাকা মেট্রোর ক্রিকেটারদের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একজন কিংবা দুই জন নয়, নির্বাচকরা ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য যে ২০ জন ক্রিকেটারের নাম প্রস্তাব করেছেন তার মধ্যে ১২ জন সর্বশেষ আসরের রানার্স আপ ঢাকা মেট্রোর হয়ে খেলেছেন। ঢাকা মেট্রোর সামছুর রহমান শুভ, নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মাহফিজুল ইসলাম, আনিসুল ইসলাম ইমন, আবু হায়দার রনি, মারুফ মৃধা, আরিফ আহমেদ,শহিদুল ইসলাম সিয়াম, এইচ মোল্লা, রাকিবুল হাসান এবং আল আমিন জুনিয়রের ঠিকানা এখন ময়মনসিংহ বিভাগ। ঢাকা বিভাগীয় ক্রিকেট দল থেকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবদুল মজিদ এবং শুভাগতহোম চৌধুরীকে পাঠানো হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।
বিসিবি যখন রিজিওনাল ক্রিকেট প্রবর্তনের কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে, তখন ঢাকা মেট্রোও পড়বে এই ক্যাটাগরিতে। অথচ, রাজধানীর প্রতিনিধিত্বকারী এই দলটিকে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে!