ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা হলেও কিছু কিছু ম্যাচ ও পরিস্থিতি থাকে, যেখানে একটি ম্যাচে নির্দিষ্ট দলের জেতা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ওভারের আগে ঠিক তেমনই এক সমীকরণে ছিল রংপুর রাইডার্স। তবে শেষ ওভারে ২৬ রান নিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান। এমন একটি ইনিংস খেলার পর রংপুর অধিনায়ক বলেছেন, কাইল মায়ার্সের প্রথম বলে ছক্কা মেরেই জয়ের আশা বেড়ে যায় তার।
সোহান ক্রিজে যান ১৯তম ওভারে। তিনি অন্যপ্রান্তে থাকা অবস্থায় দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে প্রায় হারের দুয়ারে চলে যায় রংপুর। ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। সেখান থেকে প্রথম বলে ছক্কা মেরে জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন সোহান। এরপর টানা দুই বাউন্ডারি মারার পর পর ছয় ও চার মেরে শেষ বলে সমীকরণ নিয়ে আসেন এক বলে মাত্র ২ রানে। শেষ বলে ছক্কা মেরে অভিজ্ঞ এই কিপার-ব্যাটার তার দলকে এনে দেন দুর্দান্ত এক জয়।
আরও পড়ুন
৬,৪,৪,৬,৪,৬ - রুপকথার গল্প লিখে রংপুরকে জেতালেন সোহান |
![]() |
ম্যাচে সেরার খেতাব জেতা সোহান সংবাদ সম্মেলনে এসে শুনিয়েছেন রোমাঞ্চে ভরপুর শেষ ওভারের পেছনের গল্প। “আমি যখন ক্রিজে যাচ্ছিলাম, তখন খুশদিল আমাকে বলছিল যে, এই জায়গা থেকেও আমাদের পক্ষে জেতা সম্ভব। আর শেষ ওভারের আগে রাব্বি ভাই বললেন, ‘তুমি ৬টা বল খেলো। শেপে থাকলে হয়ে যাবে। এটা আমাদের মাঝে যোগাযোগ থেকেই হয়েছে। প্রথম বলে ছয় মারার পর বিশ্বাসটা আরও বেড়েছে যে সম্ভব।”
বরিশালের সেরা বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদির চার ওভারের কোটা আগেই পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় শেষ ওভারের জন্য দলটি বেছে নেয় মিডিয়াম পেসার মায়ার্সকে। ২০ রানের বেশি ডিফেন্ড করার কাজটা পার্টটাইম বোলাররা অধিকাংশ সময়ই করে ফেলেন সফলভাবে। তবে সোহানকে করা ওভারটিতে একেবারেই এলেমেলো বোলিং করেছেন।
তবে সোহান মনে করেন, কাজটা তবুও বেশ কঠিনই ছিল। “দেখেন, বোলার যেই থাকুক, তাদের বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। তবে যেটা বললাম, রাব্বি ভাইয়ের সাথে যখন কথা হচ্ছিল, তখন থেকেই বিশ্বাসটা হচ্ছিল।”
সোহানের ক্যারিয়ারে এমন কাছাকাছি ইনিংস আগেও রয়েছে বেশ কিছু। কয়েকটি জেতাতে পেরেছেন, আবার কয়েকবার হয়েছেন ব্যর্থ। তবে শেষের দিকে নেমে ফিনিশিং টাচ দেওয়ার যে দায়িত্ব, অন্তত রংপুরের জার্সিতে সে কাজে বেশ সফলই তিনি।
আরও পড়ুন
মায়ার্সের মারমুখী ফিফটিতে রান পাহাড়ে বরিশাল |
![]() |
এমন একটা ইনিংস খেলার পরও যদি তাকে নিয়ে মাতামাতি না হয়, তাহলে অবাক হবেন না বলে জানিয়েছেন সোহান। “ইনিংসটা বলতে, আমি যখন নামি, ২০-৩০ রান সবাই ভুলেই যায়। এটা নতুন কিছু না। তবে সবচেয় বড় ব্যাপার যেটা, দলের জন্য অবদান রাখতে পারছি। আর যেহেতু দলকে জেতাতে পেরেছি, তাই এটা আমার খেলা অন্যতম সেরা ইনিংস।”
No posts available.
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:২৫ পিএম
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:০৬ পিএম
এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে জয় ধারা অক্ষুণ্ন রেখেছে ঢাকা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রাজশাহীকে ২৮ রানে হারিয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন নেতৃত্বাধীন দলটি। চার ম্যাচে এটি তৃতীয় জয় ঢাকার। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে দলটি। দ্বিতীয়তে চট্টগ্রাম। একটি ম্যাচ কম খেলেছে বন্দর নগরীর দলটি।
মঙ্গলবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ১৫০ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২২ রানে আটকে যায় রাজশাহী। নিজেদের সবশেষ ম্যাচে চিটাগংয়ের বিপক্ষে হারের পর আবারও ব্যর্থ হলো দলটি।
তৃতীয় জয়ের খোঁজে নেমে আহামরি ব্যাটিং উপহার দিতে পারেনি ঢাকার ব্যাটাররা। তবে বেশ ধারাবাহিক ছিল দলটির টপঅর্ডারের ব্যাটাররা। দলের প্রথমসারির চার ব্যাটার দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করেন। আশিকুর রহমান ও রায়ান রাফসানের ওপেনিং জুটি ভাঙে ৫০ রানে, ব্যক্তিগত ২২ রানে আশিকুর ফিরলে।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙলে আরিফুল ও মাইদুলের সঙ্গে ছোট দুটি জুটি গড়েন রায়ান। তবে ব্যক্তিগত ৩২ রানে তিনি ফিরলে রান কিছুটা থিতু হয়ে পড়ে। যদিও ততক্ষণে চালিয়ে ব্যাটিং করেন অঙ্কন। তিনি ফিরলে ফের চাপে পড়ে দল। অঙ্কন ব্যক্তিগত ৩৫ রানে ফেরার পর দলের স্কোরবোর্ডে ৫ রান যুক্ত হতেই চার ব্যাটারকে হারায় ঢাকা। সবশেষ সুমন খানের ৫ বলের ক্যামিও ইনিংসে ১৫০ রানের পুঁজি পায় ঢাকা।
জবাবে শুরুতেই রাজশাহীকে বিপদে ফেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। নাজমুল হক অপুর স্পিনে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের বিদায়ের পর হাবিবুর রহমান সোহান ও সাব্বির হোসেন মিলে দলের বিপদ কাটানোর চেষ্টা করেন। দুজনের ছোট্ট জুটি ভাঙে ৩১ রানে, সোহান ফিরলে। দ্বিতীয় জুটি ভাঙার পর প্রিতম কুমারের সঙ্গে জুটি গড়েন সাব্বির হোসেন। এই জুটিতে পার হয় দলীয় ফিফটি। তবে তাইবুর রহমানের বিদায়ে ভাঙে জুটি।
সাব্বিরের ফেরার পর আর দাঁড়াতে পারেননি রাজশাহী। মূলত ঢাকার স্পিনার নাজমুল হক অপু ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি প্রিতম-গোলাম কিবরিয়ারা দাঁড়াতেই পারেননি। সবমিলিয়ে দলটি করতে পার ১২২ রান।কোটার চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ১০ রান খরচায় তিনটি উইকেট তোরেন অপু। মাহফুজ রাব্বি ২টি এবং মোসাদ্দেক হোসেন একটি উইকেট তোলেন।
দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেটকে ২৩ রানে হারিয়েছে ঢাকা মেট্রো। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬১ রান করে মেট্রো। জবাবে ৯ উইকেটে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট।
আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। টুর্নামেন্টের সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কমানো হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ম্যাচ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হবার কথা থাকলেও কমানো হয়েছে দুটি ম্যাচ। সিরিজের তিনটি ম্যাচ হবে ২৭, ২৯ এবং ৩১ জানুয়ারি।
এবারের গ্রীষ্মে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরের মাঠে কোন ওয়ানডে সিরিজ নেই। ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশের মাটিতে খেলবে প্রোটিয়ারা। আগামী মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট, তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে তারা। এরপর ভারতে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ঘরের মাঠে সিরিজ কম হওয়ার আরেকটি বড় কারণ হলো, ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন স্টেডিয়াম। দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
ইন্টারন্যাশনাল লিগ (আইএল) টি-টোয়েন্টির সামনের আসরগুলোর খেলা হতে পারে সৌদি আরবেরও মাঠে। সৌদি আরব ক্রিকেট ফেডারেশনের সঙ্গে নতুন পার্টনারশিপে যুক্ত হয়েছে টুর্নামেন্টটি। গালফ অঞ্চল এই লিগ ছড়িয়ে দেওয়ার বড় পদক্ষেপ এটি।
কবে বা কয়টি ম্যাচ খেলা হবে সৌদি আরবে, সেই বিষয়ে এখনও কোনো দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। তবে সৌদি রাজতন্ত্রের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর এবার সামনের আসরগুলোতে দেশটিতে ম্যাচ আয়োজনের সবকিছু প্রায় নিশ্চিত।।
নতুন পার্টনারশিপের ফলে টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলার সুযোগও পাবেন সৌদি আরবের ক্রিকেটাররা। নতুন আসরের খেলোয়াড় নিলাম হবে বুধবার। যেখানে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সৌদি আরবের অন্তত একজন ক্রিকেটার দলে নিতে হবে।
বর্তমান সূচি অনুযায়ী, আইএল টি-টোয়েন্টির চতুর্থ আসরের খেলাগুলো হবে আবু ধাবি, দুবাই, শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আগামী ২ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ৬ দল ও ৩৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট শেষ হবে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি।
এশিয়া কাপের ফাইনালের পর এবার সামনে অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুতেও হয়তো খেলা হবে না হার্দিক পান্ডিয়া। ওয়ানডে সিরিজে তাকে ছাড়াই খেলতে হবে পারে ভারতীয় দলের।
সুপার ফোরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওভার বোলিং করার সময় চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে চলে যান পান্ডিয়া। এরপর আর মাঠে ফেরা হয়নি তার।
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পান্ডিয়াকে ৪ সপ্তাহের বিশ্রামে থাকতে বলেছে চিকিৎসকরা। যার ফলে অস্ট্রেলিয়া সফরের ওয়ানডে সিরিজে তার পক্ষে খেলা সম্ভব নয়। এমনকি অনিশ্চয়তা থাকবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও।
এমনকি প্রত্যাশার দ্রুত সেরে উঠলেও হয়তো ওয়ানডে সিরিজে খেলা হবে পান্ডিয়ার। সেক্ষেত্রে তাকে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাবে ভারত।
পার্থ স্টেডিয়ামে আগামী ১৯ অক্টোবর শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। পরের দুই ম্যাচ হবে ২৩ ও ২৫ তারিখ। এরপর ২৯ অক্টোবর শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
তিন বছর স্বীকৃত ক্রিকেট খেলে ফেলার পর অবশেষে টি-টোয়েন্টির স্বাদ পেলেন আইচ মোল্লা। প্রথম ম্যাচেই ব্যাট-বল হাতে বাজিমাত করলেন তরুণ মিডল-অর্ডার ব্যাটার। ব্যাট হাতে ফিফটির পর বোলিংয়ে উইকেট নিয়ে তিনিই জিতলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবারের প্রথম ম্যাচে সিলেটকে ২৩ রানে হারায় ঢাকা মেট্রো। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬১ রান করে মেট্রো। জবাবে ৯ উইকেটে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট।
চার ম্যাচে মেট্রোর এটি দ্বিতীয় জয়। ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে তারা। সমান ম্যাচে সিলেটের ঝুলিতে ৩ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বিদেশি লিগ খেলা বন্ধ |
![]() |
মেট্রোর জয়ে বড় অবদান আইচের। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম ম্যাচে ৩৩ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ২৩ বছর বয়সী ব্যাটার। পরে বল হাতে ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মেট্রোর দুই ওপেনার করেন মন্থর শুরু। মাহফিজুল ইসলাম রবিন ২৩ বলে ১৮ রান করে আউট হন। নাঈম শেখের ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ বলে ৩৬ রান।
এরপর ঝড় তোলেন আইচ ও সাদমান ইসলাম। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে ৬১ বলে গড়ে তোলেন ৯৬ রানের জুটি। শেষ ওভারে আউট হন সাদমান। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩২ বলে করেন ৪৯ রান। আইচের ব্যাট থেকে আসে ৬ চারে সঙ্গে ২টি ছক্কা।
রান তাড়ায় সিলেটের ব্যাটাররা ভালো শুরু পেলেও কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। খালিদ হাসান ২৪, অমিত হাসান ২৪, আসাদুল্লা আল গালিব ২৩ রান করে আউট হন। অধিনায়ক জাকির হাসানের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান।
মেট্রোর পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শহিদুল ইসলাম। এছাড়া মারুফ মৃধা ও আবু হায়দার রনির ঝুলিতে জমা পড়ে ২টি করে উইকেট।