
দ্রুত পড়ছে উইকেট, আরেকপ্রান্তে থিতু হয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন আজিজুল হাকিম তামিম। ওপেনিংয়ে নেমে ছক্কায় তুলে নিয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। যার সৌজন্যে আফগান যুবাদের বিপক্ষে ২ উইকেটের কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের যুব ওয়ানডে সিরিজ শেষ হলো ২-২ সমতায়। বৃষ্টির কারণে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছিল। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ২০৮ রান তোলে আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তাদের দেওয়া ২০৯ রানের লক্ষ্য ২৫ বল বাকি থাকতে তাড়া করেছে বাংলাদেশ যুবারা।
ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও রান তাড়ায় দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার শাহরিয়ার আহমেদ ফেরেন ৩ রানে। ১৫ রান আউট হন দুইয়ে নামা কালাম সিদ্দিকী। এক পর্যায়ে ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তবে তবে অপরপ্রান্তে ওপেনিংয়ে নামা তামিম দলকে জয়ের পথে রাখেন। ছক্কা মেরে ১১৭ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। পরের বলে আউট হয়ে গেলেও শাহরিয়া আল আমিন ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশের হয়ে রিজান হোসেন করেন ২৭ রান, আরেক ব্যাটার ফরিদ হাসান করেন ২৩ রান। আফগান স্পিনার ওয়ালিউল্লাহ জাদরান ২৫ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায়নি আফগানিস্তান। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান ওপেনার খালিদ আহমাদজাই। তবে আরেক ওপেনার ওসমান সাদাত ফিফটি তুলে নেন। সাদাতের ৬৮, মাহবুব খানের ৪০, উজাইরউল্লাহ নিয়াজাইয়ের ৩২ রানের কল্যাণে ২০৮ রান তোলে আফগানিস্তান।
No posts available.
৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৩৯ পিএম

আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। মহাযঞ্চের আগে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক পরিবর্তন নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সালমান আলি আগা।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) এক ভিডিও বার্তায় পাকিস্তান দলের অধিনায়ক কথা বলেছেন বিশ্বকাপে তাঁদের প্রস্তুতি, দলের ফিটনেস ও লক্ষ্য নিয়ে।
গ্রুপ ‘এ’ তে পাকিস্তানের সঙ্গী ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন উঠলেও আগা জানান, তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্বকাপ খেলবে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে বড় কোন পরিবর্তন হবে না বলে জানান আগা, ‘বিশ্বকাপের আগে বড় কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। যে কম্বিনেশন তৈরি হয়েছে, সেটাই থাকবে।’
সামনের দুটি বিশ্বকাপ জিততে চান আগা, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিততে চাই। এগুলো আমার স্বপ্ন। সত্যি হলে দারুণ লাগবে।’

২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সবশেষ বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশসেরা এই অলরাউন্ডার এরপর আর দেশের হয়ে খেলেননি। বেশ কয়েকবার সম্ভবনা জেগেছিল, সাকিবেরও ইচ্ছা ছিল মিরপুর শেরে বাংলায় ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলবেন।
সাকিবের সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তবে আশা মরেও যায়নি। কারণ, এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি তিনি। ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এখনও স্বপ্ন দেখেন মাতৃভূমিতে ফিরবেন, লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়াবেন।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন সাকিব। সেখান থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলছেন। ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি–টোয়েন্টিতে (আইএলটি টি–টোয়েন্টি) এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলা সাকিবের বর্তমান গন্তব্য আরব আমিরাত।
আইএলটি টি–টোয়েন্টি চলাকালীন ‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ নামক পডকাস্টে অংশ নেন সাকিব। তার সঙ্গে অতিথি ছিলেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলী।
পডকাস্টে সঞ্চালকের এক প্রশ্নে দেশের জার্সিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে ৪৪৭ ম্যাচ খেলা সাকিব বলেন,
“আমি অবশ্যই চাই বাংলাদেশে ফিরতে। কারণ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব।”
নিজের লাইফস্টাইল নিয়ে সাকিব বলেন,
“তুমি যে ‘স্বাভাবিক জীবন’-এর কথা বলছ, সত্যি বলতে আমি কখনোই সে জীবন চাইনি। আমি বাংলাদেশে যে জীবনটা কাটাচ্ছিলাম, সেটা আমার ভালোই লাগত। এমন না যে আমি সেই জীবনটা অপছন্দ করতাম। আমি তো আমার মতো করেই স্বাভাবিক জীবনে ছিলাম।”
সাকিব আরও বলেন, “আমার কখনো বেশি বন্ধু ছিল না। ছোটবেলা থেকেই বাইরে বেশি যেতাম না। আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়েছি, আর বড় হতে হতে ভালো দিকনির্দেশনা পেয়েছি। এগুলো আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’

পার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুই দিনে হারের পর ব্রিসবেনে পিংক বলের টেস্টে ইংল্যান্ড হারল ৮ উইকেটে। সিরিজের আগে বেন স্টোকস হুংকার দিয়ে ইতিহাস রচনার কথা জানালেও আদতে তা ধোপে টেকেনি। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট ২-০ পিছিয়ে যাওয়ার দারুণে মন খারাপ সফরকারীদের। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন স্টোকস তো বলেই দিলেন—দলে দুর্বলচিত্তের মানুষদের কোনো স্থান নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৬৫ রানের লক্ষ্য ১০ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছে স্মিথের দল। ম্যাচের চতুর্থ দিন খানিক লড়াই করেন বেন স্টোকস। তবে তাকে থামিয়ে দিয়ে অনায়াসেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আজ ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টোকস জানিয়েছেন, বিপদকালে তাঁর দল কতটা প্রেসার নিতে পেরেছে সেটাই আলচ্য।
তিনি বলেন, ‘‘ওরা (অস্ট্রেলিয়া) গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়া দুর্বলদের জায়গা নয়। আমরা দুর্বল নই, কিন্তু এখন ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছি। সামনে তিনটি ম্যাচ আছে, আমাদের কিছু একটা খুঁজে বের করতেই হবে।”
প্রথম ইনিংসে থিতু হয়ে যাওয়ার পর রান আউটে কাটা পড়লেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই এক প্রান্ত আগলে ব্যাট চালিয়ে যান স্টোকস। প্রায় ২২৯ মিনিট ক্রিজে পড়ে থেকে ১৫২ বল মোকাবিলা করে ফিফটি করেন ইংল্যান্ড অধিানয়ক।
স্টোকস যখন ব্যাট হাতে বাইশগজে নামেন তখন দল মৃতপ্রায়। সেটা জাগিয়ে তোলেন তিনি। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। তাই অনেকটা রাগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেকবার বলেছি। অস্ট্রেলিয়া সফর দুর্বল লোকদের জন্য না। তারমধ্যে যে ড্রেসিংরুমে ক্যাপ্টেন আমি, সেখানে তো কখনই নয়।’’
ম্যাচশেষে বিবিসির ‘টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল’-এ দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ইংল্যান্ড দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম জানিয়েছেন, দলের প্রস্তুতির মোটেও ঘাটতি ছিল না। বরং অতিরিক্ত অনুশীল হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রস্তুতির অভাব ছিল—আমি তা মনে করি না। বরং আমরা হয়তো একটু বেশি অনুশীলনই করেছি। এই ম্যাচের আগে পাঁচটি জোরালো ট্রেনিং সেশন ছিল। কখনো কখনো ঘাটতি পুষিয়ে নিতে গিয়ে অতিরিক্ত করার প্রবণতা তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন,‘‘ক্রিকেট কেবল শারীরিক বা টেকনিক্যাল প্রস্তুতির খেলা নয়, মানসিক প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ব্যাটিংয়ে ঘাটতি ছিল, বোলিংয়ে তো ছিলই, আর ফিল্ডিংতেও ঘাটতি চোখে পড়ার মতো। ভালো দলের বিরুদ্ধে ১০ উইকেট নেওয়াই কঠিন, সেখানে ১৫টা নিতে গেলে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় সবাই জানে।’’

ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি–টোয়েন্টিতে (আইএলটি টি–টোয়েন্টি) আজ এমআই এমিরেটসের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে সাকিব আল হাসানের। বাংলাদেশি অলরাউন্ডারের ফেরার ম্যাচ জয়ে রাঙল এমিরেটস। গালফ জায়ান্টসের কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর আজ ৪ রানে জিতল কাইরন পোলার্ডের নেতৃত্বাধীন দলটি।
জয়ে ফিরলেও ব্যাটিং–বোলিংয়ে খুব সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। প্রথমে ব্যাটিং করে ১২ বলে ১৬ রান করেন তিনি। আর দুই ওভার বল করে খরচ করেন ২৭ রান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৮৫ রান তোলে এমিরেটস। জবাবে শারজাহ ওয়ারিয়র্স করতে পারে ১৮১ রান।
এদিন ১২ বলে ১৬ করা সাকিবকে ‘ট্যাকটিক্যাল রিটায়ার্ড আউট’ করা হয়। ১২তম ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় বলেই প্রথম চার মারেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। দুই বল পর মারেন আরেকটি বাউন্ডারি। তবে এরপর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি তিনি। এমআই এমিরেটস তাকে উঠিয়ে নেয়।
তৃতীয় উইকেট পতনের পর ব্যাট করতে নেমে সিকান্দার রাজার দুটি ডট বল খেলার পর তৃতীয় বলে কাট করে বাউন্ডারি মারেন সাকিব। পরে রশিদ খানের বলে লফটেড ড্রাইভে কাভার দিয়ে মারেন দ্বিতীয় চার।
এরপর আরও ৬ বল খেলে ৭ রান নেন সাকিব, তবে আর বাউন্ডারি আসেনি। ১৬তম ওভার শেষে দেখা যায়, তিনি মাঠ ছাড়ছেন। ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে তখন মাইক হেইসম্যান বলেন—সাকিবকে ট্যাকটিক্যাল রিটায়ার্ড আউট করা হয়েছে।
এদিন সাকিব দুই ওভার বোলিং করেন। প্রথম ওভারের প্রথম বলেই লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন টম কোলহার–ক্যাডমোর। পরের পাঁচ বলে দেন পাঁচ রান।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে সিকান্দার রাজা তাকে চতুর্থ ও পঞ্চম বলে দুটি ছক্কা মারেন। দুই ওভার মিলিয়ে সাকিব খরচ করেন ২৭ রান, ইকোনমি রেট ১৩.৫।
টুর্নামেন্টে এমআইয়ের এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে গালফ জায়ান্টসের কাছে ৬ উইকেটে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেল তারা।

ব্রিসবেন টেস্টে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন বেন স্টোকস। ১৫২ বলে করে অর্ধশতক এলেও ইংল্যান্ডকে হারের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটের হারে অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে এখন স্টোকসের দল।
তবু লড়াইয়ে হাল ছাড়তে নারাজ ইংলিশ অধিনায়ক। ম্যাচশেষে স্টোকস জানালেন, তাঁর দল এখনও সিরিজ জেতার স্বপ্ন দেখছে— যা অ্যাশেজ ইতিহাসে শেষবার ঘটেছিল ৮৮ বছর আগে।
১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে প্রথম দুই টেস্ট হেরে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের অস্ট্রেলিয়া ফিরেছিল অবিশ্বাস্যভাবে। ব্রিসবেন ও সিডনিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। পরে মেলবোর্নে ব্র্যাডম্যানের ২৭০ রানের সৌজন্যে জিতে সিরিজে ফেরে তারা।
অ্যাডিলেডে ব্র্যাডম্যানের আরেক ডাবল সেঞ্চুরিতে সমতায় ফেরে অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্নে শেষ টেস্টে ১৬৯ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ইনিংস ও ২০০ রানে জেতান তিনি। সেই জয়ে অ্যাশেজ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
স্টোকস বিশ্বাস করেন, ইংল্যান্ডও পারে এমন ইতিহাস গড়তে। ইংলিশ অধিনায়ক বললেন, ‘আমি এই ড্রেসিংরুমের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখি। এখন আমাদের সামনে তিনটি ম্যাচ জিততেই হবে। লড়াই থেকে পিছু হটার প্রশ্নই আসে না, তবে অ্যাশেজ ফেরত পেতে হলে দ্রুত কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।’
অ্যাশেজের বাকি তিন টেস্ট হবে অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে। স্টোকস বলেন, ‘সবাই বলে, অস্ট্রেলিয়া দুর্বলদের জায়গা নয়। আমরা দুর্বল নই, কিন্তু জেতার মতো কিছু খুঁজে বের করতে হবে।’
অ্যাডিলেডে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর।