৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০০ এম
ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পাকিস্তানের সামনে পাত্তাই পায়নি আফগানিস্তান। মোহাম্মদ নাওয়াজের হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেটে মাত্র ৬৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে তারা। ১৪১ রানের মাঝারি পুঁজি নিয়েও ৭৫ রানের সহজ জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
এশিয়া কাপে মাঠে নামার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ডে উঠেছে পাকিস্তান ও নাওয়াজের নাম। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব রেকর্ড।
৬৬
পুরুষ ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কোনো ফাইনালে দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর এটি। ২০২৪ সালের সাব-রিজিওনাল ইউরোপ কোয়ালিফায়ার গ্রুপ ‘বি’-এর ফাইনালে জার্সির বিপক্ষে ৬৯ রানে অলআউট হয়েছিল নরওয়ে।
২
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর এটি। গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৬ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। এছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো দলের চতুর্থ সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটি।
৫/১৯
পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে মাত্র ১৯ রানে ৫ উইকেট নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ছেলেদের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কোনো ফাইনালে ৫ উইকেট নেওয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার তিনি।
২০১৯ সালের প্যাসিফিক গেমসের ফাইনালে ভানুয়াতুর বিপক্ষে ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন পিএনজির নরম্যান ভানুয়া।
টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়া বিশ্বের তৃতীয় বোলার নাওয়াজ। এর আগে ২০২২ সালের এশিয়া কাপে ভুবনেশ্বর কুমার ও একই বছরের বিশ্বকাপে স্যাম কারান দেখিয়েছেন এমন কীর্তি।
৩
ম্যাচে নিজের প্রথম দুই ওভারে হ্যাটট্রিকসহ মাত্র ১ রানে ৪ উইকেট নেন নাওয়াজ। পাকিস্তানের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করা তৃতীয় বোলার তিনি। এর আগে ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফাহিম আশরাফ ও ২০১৯ সালে একই দলের সঙ্গে হ্যাটট্রিক করেন মোহাম্মদ হাসনাইন।
বল বাই বল পরিসংখ্যান থাকা ম্যাচগুলোর হিসেবে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা তৃতীয় বোলার নাওয়াজ। এর আগে ২০২১ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে উগান্ডার এলিজা ওটিয়েনো এবং ২০২২ সালে মাল্টার বিপক্ষে বেলজিয়ামের খালিদ আহমাদি করেছেন হ্যাটট্রিক।
১৫
ম্যাচে দুই দলের স্পিনাররা মিলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে স্পিন বোলিংয়ে পাওয়া তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড এটি। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়া ও হংকং ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন স্পিনাররা।
পাকিস্তানের স্পিনাররা নিয়েছেন ৯ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে এটিই তাদের সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের এশিয়ান গেমসে হংকংয়ের বিপক্ষেও ৯ উইকেট নিয়েছিল পাকিস্তানের স্পিনাররা।
২০
আফগানিস্তানের ইনিংসে প্রথম ওভারেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে আউট করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। এ নিয়ে ২০ বার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ওভারে উইকেট পেলেন পাকিস্তানের বাঁহাতি তারকা পেসার।
এই ফরম্যাটে তার চেয়ে বেশি প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার রেকর্ড আছে শুধু ওমানের বিলাল খানের, ২২টি।
৭-০
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজের সবকটি ম্যাচে জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। এবারই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টে সব ম্যাচে জিতল আগে ব্যাটিং করা দল।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:২৬ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:০১ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:৪১ পিএম
ট্রফি উঁচিয়ে ধরার বড় স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই মিশনে বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিপক্ষ হংকং। আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় দিয়েই আসর শুরুর প্রত্যাশা বাংলাদেশ দলের। তবে অতীত রেকর্ড মাথায় রাখলে, ম্যাচটি মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। এর পেছনে রয়েছে দুইটি জুজু- প্রথমত হংকং আর দ্বিতীয়টি আবু ধাবির মাঠ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত হংকংয়ের বিপক্ষে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য খেলেছেও শুধু একটি ম্যাচ। তবে সেটিও আবার নিজেদের ঘরের মাঠে। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিল হংকং।
চট্টগ্রামে হওয়া ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ১০৮ রানে অল আউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। অল্প পুঁজি নিয়েও অবশ্য বোলাররা লড়াই করেন। তবে মুনির দারের ২৭ বলে ৩৬ রানের সৌজন্যে ২ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটের জয় পায় হংকং।
ওই ম্যাচের প্রায় ১১ বছর পর আবার হংকংয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি হংকং। আর টানা তিন সিরিজ জিতে দারুণ ছন্দে আছে বাংলাদেশ। তাই ম্যাচটিতে পরিষ্কার ফেবারিট লিটন কুমার দাসেরই দল।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
তবে সেই জয়টি পেতে আবু ধাবি জুজুও কাটাতে হবে বাংলাদেশের। কারণ জায়েদ স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত জয়ের রেকর্ড নেই তাদের। ২০২১ সালে ওই মাঠে দুই টি-টোয়েন্টি খেলে ন্যুনতম লড়াইও করতে পারেনি বাংলাদেশ।
জায়েদ স্টেডিয়ামে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। পরে তাদেরকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচের একটিতেও ব্যাটে-বলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
ইংলিশদের বিপক্ষে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রান করে তারা। দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম। সেটিও কিনা ৩০ বল খেলে। আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। পরে ১৪.১ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
আর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চূড়ান্ত ভরাডুবির সামনে পড়ে বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নর্কিয়ার গতির ঝড়ে মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আট নম্বরে নামা শেখ মেহেদি হাসান ২৭ রান করে দলকে পঞ্চাশের আগে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচান।
চার বছর পর এবার অবশ্য প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল। তাই দুই জুজু কাটিয়ে উঠতে পারলেই জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম জয়ের পাশাপাশি হংকংকে প্রথমবার হারানোর কীর্তি গড়তে পারবে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান-হংকং ম্যাচ দিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে ভারত। দেশটির সাবেক অফ স্পিনারের মতে, এই টুর্নামেন্টে ভারতের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই। এমনকি বাংলাদেশ দল নিয়ে কথা বলারই কিছু দেখেন না তিনি।
এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার দলগুলোর সার্বিক সম্ভাবনা নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন অশ্বিন। যেখানে মূলত ভারতের এক আধিপত্যের কথাই বারবার বলেছেন তিনি। ভিডিওর একপর্যায়ের তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
“আমরা দেখুন এমনকি বাংলাদেশ নিয়েও কোনো কথা বলিনি। কারণ তাদের নিয়ে এখানে কথা বলার তো কিছু নেই। এসব দলগুলো কীভাবে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করবে?”
টুর্নামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে তাই এশিয়া কাপের বদলে আফ্রো-এশিয়া কাপ আয়োজনের পরামর্শ দেন অশ্বিন।
“তারা (আয়োজকরা) চাইলেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখানে যুক্ত করতে পারে এবং এটিকে আফ্রো-এশিয়া কাপ হিসেবে আয়োজন করতে পারে। যাতে টুর্নামেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। এখন যে অবস্থায় আছে, তাদের উচিত ভারত ‘এ’ দলকে এই টুর্নামেন্টে নিয়ে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা।”
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের উত্থান নিয়ে আলোচনা হয় অনেক। উদ্বোধনী ম্যাচে হংকংকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের শুরুটাও প্রত্যাশামাফিক করেছে তারা। তবে অশ্বিনের মতে, ভারতের বিপক্ষে হালে পানি পাবে না আফগানরা।
“এমনকি আফগানিস্তানের বোলারদের তথাকথিত হুমকির কথাও যদি বলি, ভারত ১৭০-এর বেশি রান করলে তারা কি সেটা তাড়া করতে পারবে? এটা তো অসম্ভরের কাছাকাছি।”
এসময় তিনি নিজেই অবশ্য ভারতকে হারানোর একটি তরিকা বলে দেন। তবে সেই তরিকা কেউ ব্যবহার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন না অশ্বিন।
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
“আমি একদিক থেকে আশা করি, অন্য কোনো দল যেন এই টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে। তাহলে অন্তত এশিয়া কাপে কিছুটা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফিরবে।”
“ভারতকে হারানোর একমাত্র উপায় হতে পারে, নিজেদের একটা ভালো দিনে কোনোভাবে ভারতকে ১৫৫ রানের মধ্যে আটকে রাখা এবং সেটি তাড়া করা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনিতে রোমাঞ্চকর, তবে এশিয়া কাপে ভারত এটিকে একতরফা বানিয়ে ফেলবে বলেই মনে হয়।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আয়োজনে বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ব্যাটিংয়ের বিশেষ প্রোগ্রাম- রান স্কোরিং ওয়ার্কশপ। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত চলবে এই কর্মশালা।
অস্ট্রেলিয়ান কোচিং বিশেষজ্ঞ অ্যাশলে রস ও ইয়ান রেনশ এই কোর্স পরিচালনা করছেন। যাদের মূল লক্ষ্য ব্যাটিং ও ব্যাটিং কোচিংয়ের সব দিককে ঘিরে কাজ করা। বিশেষ করে রান করার শিল্পকে আরও কার্যকরভাবে উন্নত করা।
কর্মশালার প্রথম দিনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা দেন রস। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধান করতে পারার সামর্থ্য এনে দেওয়াই মূলত তাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
“ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বোলারই একটা সমস্যা হাজির করে। খেলার পরিস্থিতি আরেকটা সমস্যা। সেরা ব্যাটাররা আসলে সেরা সমস্যা-সমাধানকারী। আমরা চাই খেলোয়াড়রা যেন সমস্যার সমাধান খুঁজে নেওয়ার মতো মানসিকতা গড়ে তোলে। কারণ কোচ মাঠে গিয়ে তাদের হয়ে খেলতে পারবে না। ব্যাটারদের সবসময় একাই নামতে হয়।”
“আমরা চাই ওরা যেন আত্মবিশ্বাসী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হয়। যখন তারা বিশ্বমানের বোলারদের বিপক্ষে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে, তখন যেন নিজেদের বলতে পারে- আমি ভালো সিদ্ধান্তগ্রহণকারী, আমি সমস্যা-সমাধানকারী, আমি যেকোনো চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারব। সফলতার জায়গা এটিই।”
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন দেশের ২০ জন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও কোচ। বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও কোচদের জ্ঞান ও দক্ষতায় মুগ্ধ রস।
“আমরা ভাগ্যবান, কারণ এখানে দারুণ জ্ঞানভান্ডার আছে। ইয়ান আর আমি তত্ত্বের কথা বলছি, কিন্তু এখানকার অসাধারণ ব্যাটাররা দেখাচ্ছেন, বাংলাদেশে কীভাবে জিনিসগুলো হয়। আমাদের কাজ মূলত ওদের ভেতরকার জিনিসগুলো বের করে আনা। জ্ঞান আসলে ওদের মধ্যেই আছে।”
কর্মশালায় অংশ নেওয়াদের তালিকায় আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শাহরিয়ার নাফীস, রাজিন সালেহর মতো বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়করা। এছাড়াও প্রথম দিন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এসব অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উপস্থিতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রশিক্ষক।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দল নিয়ে 'আত্মবিশ্বাসী' বুলবুলের দুই পরামর্শ |
![]() |
“আমরা সৌভাগ্যবান যে টেস্ট অভিষেকে ১৪৫ রান করা একজনকে (বুলবুল) পাচ্ছি। আমরা তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছি। তত্ত্ব নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি, কিন্তু পাশে যখন এমন ‘জীবন্ত গ্রন্থ’ থাকে, তখন দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।”
“আমরা যখন ধারণা নিয়ে আলোচনা করি, ওরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে- কীভাবে অনুশীলন করে, কোনটা তাদের জন্য কার্যকর, আর কীভাবে তারা সবচেয়ে ভালোভাবে কোচিং পেয়েছে। এই মিশ্রণ অসাধারণ এক শেখার পরিবেশ তৈরি করেছে।”
চলতি বছরের বিপিএল শেষ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় বিষফোঁড়ার নাম হয়ে গেছে ফিক্সিং। স্পট ফিক্সিং ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেক। সেগুলো তদন্তে এরই মধ্যে একাধিক কমিটি গঠন করেছে বিসিবি।
তবে এই সমস্যা গোঁড়া থেকে নির্মূল করতে চান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বিশেষ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাইকে নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে ফিক্সিং ঠেকানোর আশা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির। সেজন্য সবার কাছ থেকে ফর্মে সই নিয়ে নেবেন তিনি।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বিসিবির তিন দিনের বিশেষ ব্যাটিং প্রোগ্রাম- রান স্কোরিং ওয়ার্কশপ। যেখানে অংশ নিয়েছেন ২০ জন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও কোচ।
পরে আগামী সোমবার থেকে শুরু হবে লেভেল-থ্রি কোচিং কোর্স। সেখানে ১৫ জন স্থানীয় কোচের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। রান স্কোরিং ওয়ার্কশপের প্রথম দিন বুলবুল বলেছেন, এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয় কোচদের আরও প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্য তাদের।
তখন প্রশ্ন ওঠে, ফিক্সিং ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা বিসিবি? উত্তরে আরেকটি বিশেষ প্রোগাম শুরু করার আভাস দেন বুলবুল। তবে সেটি কেমন হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক।
“আমাদের যে ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রাম আছে, সেটার অংশ হিসেবে আমরা প্ল্যান করেছি যে, বাংলাদেশের যত নিবন্ধিত ক্রিকেটার আছে, আম্পায়ার, কোচ, ক্রিকেটার, অফিসিয়াল- তাদের সবাইকে আমরা শিক্ষা দেব, তাদের শেখাব। তাদের থেকে ফর্ম সই করিয়ে নেবো।”
“আমরা একটা প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছি শিগগিরই। সেটা হচ্ছে দেশে সকলের জন্য একটা... প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের যে দেশীয় আইন আছে, নৈতিক মূল্যবোধগুলো আছে, ধর্মীয় মূল্যবোধগুলো আছে, সেগুলো কীভাবে আমরা একটা ক্যাম্পেইন প্রোগ্রাম করা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। যাতে আমরা এটা (ফিক্সিং সমস্যা) বন্ধ করতে পারি।”
স্থানীয় কোচদের আরও প্রশিক্ষিত করতে বুধবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কোচিংয়ের বিশেষায়িত প্রোগ্রাম- রান স্কোরিং ওয়ার্কশপ। তিন দিনের এই বিশেষ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন দেশের ২০ জন ক্রিকেটার ও কোচ।
অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রখ্যাত প্রশিক্ষক অ্যাশলে রস ও ইয়ান রেনশর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কর্মশালার প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সহ-সভাপতি নাজমুল আবেদিন ফাহিম।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আবার শুরু হবে লেভেল-থ্রি কোচিং কোর্স। সেখানে লেভেল-২ কোর্স করা প্রায় ১৫ জন স্থানীয় কোচের অংশ নেওয়ার কথা। অস্ট্রেলিয়ার আরেক বিশেষজ্ঞ রস টার্নারের সঙ্গে লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স পরিচালনায় থাকবেন অ্যালান ক্যাম্পবেল ও জিওফ লসন।
রান স্কোরিং ওয়ার্কশপের প্রথম দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বুলবুল বলেছেন, এসব ওয়ার্কশপ ও কোচিং কোর্স থেকে দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশের কোচ পাঠাতে চান তারা।
“বলতে পারেন এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। আমাদের দেশের যে প্রশিক্ষকরা আছেন, তাদের কীভাবে আন্তর্জাতিক মানের কোচ হিসেবে তৈরি করতে পারি এবং আমাদের কোচরা এখন থেকে যেন বিদেশে গিয়েও কাজ করতে পারে, সেটাও আমাদের একটা বড় লক্ষ্য।”
এশিয়ার বাইরে আইসিসির বিভিন্ন সহযোগী সদস্য দেশগুলোতে বাংলাদেশের কোচদের পাঠানো যাবে বলে বিশ্বাস বুলবুলের।
“এশিয়া না শুধু, সহযোগী দেশগুলোর জায়গাটাও অনেক বড় হচ্ছে। প্রথমে দেখব আমাদের নিজস্ব যে কোচিংয়ের জায়গাগুলো আছে, সেখানে তারা কীভাবে কাজ করছে এবং তারা যদি আন্তর্জাতিক মানের হয়, অবশ্যই তারা বিদেশে গিয়ে কাজ করতে পারবে।
ব্যাটিংয়ের বিশেষায়িত কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, হান্নান সরকার, মার্শাল আইয়ুব, নাঈম ইসলাম, মোহাম্মদ আশরাফুল, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, নাদীফ চৌধুরি, আব্দুর রাজ্জাক, শাহরিয়ার নাফীস, তুষার ইমরান, সোহেল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, নাসিরউদ্দিন ফারুক সজীব, জাভেদ ওমর বেলিম, মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, রাজিন সালেহ, মিজানুর রহমান বাবুল ও শামসুর রহমান শুভ।
বুলবুলের আশা, কোচিং কোর্স ও নিজেদের খেলোয়াড়ি জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিশ্বমানের কোচ হতে পারবেন আশরাফুল, নাফীস, মাহমুদউল্লাহরা।
“এখানে দেখেন রিয়াদ, শাহরিয়ার নাফীস, মোহাম্মদ আশরাফুল, রাজিন সালেহ- এরা সবাই প্রথিতযশা সফল টেস্ট ক্রিকেটার। এখন তারা যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক ওপরে খেলে এবং কোচিং জ্ঞান যদি শূন্য থাকে, তাহলে হয়তো তাদের কোচ বানাতে পারবেন না।”
“তবে তারা যখন উচু মানের কোচিং কোর্স গ্রহণ করবে এবং তাদের খেলোয়াড়ি অভিজ্ঞতাও যুক্ত হবে, তখন ওই মিক্সটা পৃথিবীতে খুব বিরল। তো রিয়াদের মতো যারা এখানে এসেছে, শুধু খেলা না, বিশ্বমানের কোচ হওয়ার জন্য এটাই আমার কাছে মনে হয় প্রথম পদক্ষেপ।”