২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪:১৬ পিএম
দুই দেশেই ক্রিকেটের চেয়ে মেয়েদের নেটবল সেখানে বেশি জনপ্রিয়। ক্রিকেটটা তাদের শুধু জেতার জন্য না, টিকে থাকারও একটা লড়াই। একটা বিশ্বকাপ জেতা তাদের জন্য স্রেফ একটা ট্রফি ঘরে তোলা না, ‘ইটস মোর দ্যান দ্যাট’। প্রোটিয়াস নারী দলের পেসার আয়াবোঙ্গা খাকা এ বিষয়ে একটাই লাইন বলেছিলেন, ‘এনিথিং ইউ ওয়ান্ট, ইউ ক্যান ডু ইট’। আর এই অদম্য আত্মবিশ্বাসের বদলেই ২০২৪ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পেতে চলেছে নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা।
ক্রিকেটের ‘বিগ থ্রি’, ছেলেদের মত মেয়েদের ক্রিকেটেও থেকেছে সেই ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আর ইংল্যান্ডের আধিপত্য। আপনি যদি উইকিপিডিয়া খুলে মেয়েদের বিশ্বকাপের লিস্টটা দেখেন, তাহলে ২০ ওভারের ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে আপনি অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আর কিছুই দেখবেন না। আর এই চিত্র শুধু টি-টোয়েন্টি লড়াইয়েই নয়, ৫০ ওভারেও একই রাজত্ব।
এই আধিপত্যের ভীড়ে এবারের বিশ্বকাপ দিয়েছে আমাদের নতুন বার্তা। ভারত আর ইংল্যান্ড দুই দল উঠতে পারেনি সেমিফাইনালেই। আর ভয়ংকর অজিরা হেরেছে সেমিতে। তবে নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা আর অনেক বাধায় মোড়ানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই তিন দল এবারের সেমি নিশ্চিত করে রং পালটে দিয়েছে এবারের আসরের। আজ রোববার দুবাই প্রস্তুত এবার আমাদের নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দিতে।
চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক, দুই দলের ফাইনাল পর্যন্ত পথচলা। গেল আসরের ফাইনালিস্ট দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে। পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারলেও এরপর স্কটল্যান্ড আর বাংলাদেশের সঙ্গে বড় জয় নিয়ে গ্রুপ বি থেকে দ্বিতীয় হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আর নিউজিল্যান্ডও তাদের বিশ্বকাপ মিশনটা শুরু করে অনেকটা চমক দিয়েই। টুর্নামেন্টের অন্যতম হট ফেভারিট ইন্ডিয়াকে তারা হারায় একতরফাভাবে। পরের গল্পটা প্রোটিয়াদের মতই। ৬০ রানের বিশাল হার ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছে। এরপর শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয়। আর সেমিফাইনালে ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া পাত্তা পায়নি সাউথ আফ্রিকার কাছে। একই বছরে দুইবার হার তাদের কাছে। তবে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে উঠতে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে লড়তে হয়েছে শেষ বলঅব্দি।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ রাত ৮টায় শুরু হবে ফাইনালের লড়াই, যা কিনা দক্ষিণ টানা দ্বিতীয় ফাইনাল। আর কিউইদের ১৪ বছর পর ৩য়তম। আসরে আধিপত্য বিস্তার করেই এই মঞ্চে এসে দাঁড়িয়েছে দুইদল। আপনি যদি এবারের বিশ্বকাপের টপ রান স্কোরার দেখেন সেখানে আপনি দেখবেন প্রোটিয়াদের দুই ওপেনিং ব্যাটার লরা উলভারড্ট আর টাজমিন ব্রিটসকে। আপনি যদি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকা দেখেন, সেখানে সবার ওপরে নিউজিল্যান্ড স্পিন অলরাউন্ডার অ্যামেলিয়া ক্যার। দুই নম্বরে প্রোটিয়াস স্পিনার এন এমলাবা।
এই তালিকাগুলোতে দুই দলের সমান প্রভাব দেখলেও ইতিহাস অবশ্য একটু অন্য কথা বলে। ২০০৭ থেকে গেল বছর পর্যন্ত দুই দল টি টুয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ১৬ বার। যার ১১টাই জিতেছে নিউজিল্যান্ডের মেয়েরা। আর মাত্র ৪টিতে পেরে উঠেছিল সাউথ আফ্রিকা। শুধু টি টুয়েন্টিই নয়, ওয়ানডেতেও কিউই মেয়েরাও এগিয়ে। সেখানে ব্যবধানটা ১২ আর ৮ এর। এসব পরিসংখ্যান দেখে তাই ফাইনালে আপনারা এগিয়ে রাখতে পারেন নিউজিল্যান্ডকে। তবে ওই যে শুরুতে বলা প্রোটিয়াস পেসারের ওই কথাটা ভুললে চলবে না। ‘এনিথিং ইউ ওয়ান্ট, ইউ ক্যান ডু ইট’।
সেই সামর্থ্য দুই দলেরই আছে। চলুন দেখা যাক এই ম্যাচে দুই দলের কী প্লেয়ার কিংবা গেমচেঞ্জার হতে পারেন কারা। প্রোটিয়াস এ আসরে দেখিয়েছে তাদের স্ট্রং ব্যাটিং। স্পেশালি দ্য নেম ইজ লরা উলভার্ট। একমাত্র বাংলাদেশের ম্যাচ ছাড়া সব ম্যাচেই তিনি খেলেছেন চল্লিশোর্ধ ইনিংস। এই প্রোটিয়াস ওপেনার নিঃসন্দেহে হতে পারে কিউইদের ভয়ের কারণ।
আর অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের শক্তির জায়গা তাদের বোলিং লাইন আপ। আসরে প্রতি ম্যাচেই তাদের জয়ের মূল ভিত্তি গড়ে দিয়েছে বোলাররা। একমাত্র অজিরা গ্রুপ পর্বে তাদের সঙ্গে ১৪৮ করতে সক্ষম হয়েছিল। বাকি কোন ম্যাচে কোন প্রতিপক্ষরাই পেরোতে পারেনি ১২০-এর কোটা। পাকিস্তান তো গুটিয়েছিল মাত্র ৫৬ রানে। পেসার রোজামেরি মেইর, লিয়া তাহুহু আর স্পিন অররাউন্ডার অ্যামেলিয়া ক্যার। কিউই বোলিং লাইনআপে খাবি খেয়েছে সব দল। সঙ্গে থাকছে সোফি ডিভাইন, প্লিমারদের মত ব্যাটাররা।
এবারের আসরে আইসিসি বাড়িয়েছে প্রাইজমানির পরিমাণও। ফাইনাল জেতা দলকে আইসিসি থেকে প্রাইজমানি দেয়া হবে বাংলাদেশি টাকায় ২৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই ফাইনাল নিশ্চয়ই কোন কমতি রাখছে না রোমাঞ্চ ছড়াতে। তবে সব ছাপিয়ে আমাদের একটা কথা মনে রাখা উচিত ফ্যাসিনেশন না ক্রিকেটটা এই মেয়েগুলোর জন্য প্রয়োজন। তাই তো একটা শিরোপা, একটা টাইটেল ওদের জন্য অনেক বাড়তি কিছু। শোকেসে রাখা ট্রফি না, বিশ্বকাপটা ওদের উঠে দাঁনোর একটা পাথেয়।
No posts available.
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৯ এম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ এম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ এম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৬ এম
ভেন্যু বদলেও ফায়দা হলো না। বৃষ্টির বাগড়া এলো রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামেও। যে কারণে ভেসে গেল ঢাকা ও বরিশালের মধ্যকার সোমবার সকালের ম্যাচ।
প্রাথমিক সূচিতে ঢাকা-বরিশাল ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য আগেভাগেই ম্যাচটি সরিয়ে আনা হয়েছিল রাজশাহীতে।
আরও পড়ুন
‘আমরা হাত মেলানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম, ভারত করল না’ |
![]() |
সেখানেও প্রকৃতির ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তাই মাঠে নামা হয়নি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, জিসান আলম, সালমান হোসেন ইমনদের। দর্শকদের সঙ্গে হাসি-মজা করেই সময় কাটান তারা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির শুরু থেকেই দেখা দিচ্ছে বৃষ্টির বাধা। উদ্বোধনী ম্যাচে ৫ ওভার করে খেলতে পারে রাজশাহী ও ঢাকা মেট্রো। এরপর বৃষ্টিতে ভেসে যায় সিলেট-রংপুর ম্যাচ।
রাজশাহীর মাঠে সোমবার দুপুর ২টায় হওয়ার কথা খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যকার খেলা। আপাতত বৃষ্টি নেই রাজশাহীতে। তাই ম্যাচটি হওয়ার কিছু হলেও আশা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে নতুন ক্যাজুয়াল চুক্তি করার ঘোষণা দিল নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেসি)। এর অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সামনের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবেন না কেন উইলিয়ামসন। তবে আগামী বছরের বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে এভেইলেবল রাখছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
উইলিয়ামসন ছাড়াও বোর্ডের সঙ্গে ক্যাজুয়াল চুক্তি করেছেন ডেভন কনওয়ে, ফিন অ্যালেন, লকি ফার্গুসন ও টিম সেইফার্ট। তারা কেউই গত জুনে ঘোষিত এনজেসির কেন্দ্রীয় চুক্তির ২০ জনের তালিকায় নেই।
আরও পড়ুন
‘আমরা হাত মেলানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম, ভারত করল না’ |
![]() |
কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা মূলত বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ ও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলতে বাধ্য। সেই বেড়াজাল থেকে নিজেদের মুক্ত করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আরও বেশি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উইলিয়ামস-কনওয়েরা।
এই চুক্তির সুফল হিসেবে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডের সুপার স্ম্যাশের বদলে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে খেলবেন অ্যালেন, সেইফার্ট ও ফার্গুসন।
নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে সাবেক অধিনায়ক সোফি ডিভাইনও একই ধরনের চুক্তি করেছেন বোর্ডের সঙ্গে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের সবশেষ টেস্ট সিরিজটি খেলেননি উইলিয়ামসন। ওই সিরিজের পর ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টেও দেখা যায়নি তাকে৷ এর বদলে ইংল্যান্ডের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ, দা হান্ড্রেড ও টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট খেলেছেন উইলিয়ামসন।
তুলনামূলক দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উইলিয়ামসনের না থাকা তেমন বড় ঘটনা ছিল না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষেও না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন
হাত মেলায়নি ভারত, প্রেজেন্টেশনে এলেন না পাকিস্তানের অধিনায়ক |
![]() |
তবে বোর্ডের সঙ্গে ক্যাজুয়াল চুক্তির অংশ হিসেবে সামনের বছরের বিশ্বকাপের দলে বিবেচিত হওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে হবে ক্রিকেটারদের। তবে উইলিয়ামসনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রেখেছে এনজেসি। আর পায়ের সার্জারি করানো অ্যালেন এক্ষেত্রে ছাড় পেতে পারেন।
আগামী ১ থেকে ৪ অক্টোবর হবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজটি। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে এই সিরিজের দল ঘোষণা করতে পারে নিউ জিল্যান্ড।
যেকোনো খেলায় ভারত-পাকিস্তান লড়াই মানেই নতুন রোমাঞ্চ, উত্তেজনা আর আলোচনার খোরাক। ব্যতিক্রম নয় এশিয়া কাপও। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের এবারের লড়াইয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ক্রিকেটারদের সৌজন্যতা বিনিময় না করা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের ম্যাচের পর এই ঘটনায় ভারত অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদব বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে খেলাধুলার স্পিরিটের প্রসঙ্গ না আনাই ভালো। আর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হাত মেলাতে প্রস্তুত ছিলেন তারা।
ম্যাচে টসের সময় ন্যুনতম হাসি বিনিময় করেননি সুর্যকুমার ও পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা। টস করে ফেরার সময় হাতও মেলাননি দুজন। এমনকি পুরো সময় এতটা কাছে থেকেও কোনো কথাবার্তা হয়নি দুই অধিনায়কের মধ্যে।
আরও পড়ুন
‘আমরা হাত মেলানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম, ভারত করল না’ |
![]() |
ম্যাচ জুড়েও দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে কোনো হাসি-মজা বা হালকা মুহূর্ত কাটানোর ঘটনা দেখা যায়নি। আর সবচেয়ে বড় চমকটা দেখা যায়, ম্যাচ শেষ হওয়ার পর। পাকিস্তানকে উড়িয়ে সহজ জয়ের পর প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত না মিলিয়েই মাঠ ছেড়ে চলে যায় ভারতের ক্রিকেটাররা।
সতীর্থদের নিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন সালমান৷ পরে তিনিও বেরিয়ে যান মাঠ থেকে। এরপর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানেও হাজির হননি পাকিস্তান অধিনায়ক। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এটি নিয়ে প্রশ্ন হয় অনেক।
ভারত অধিনায়ক সুর্যকুমার বলেন, সরকারের নির্দেশনা পেয়ে তারা শুধু ম্যাচটি খেলতে মাঠে নেমেছিলেন। তাই কোনো সৌজন্যতার পথে হাঁটেননি।
“আমাদের সরকার ও বিসিসিআই- আজকে আমরা একই সমান্তরালে ছিলাম। বাকিটা আমরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি (হাত না মেলানোর)। আমরা এখানে শুধু ম্যাচটা খেলতে এসেছিলাম। আমরা যথাযথ একটা জবাব দিয়েছি।”
তার কথায় মূলত ইঙ্গিত করা হয়, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে। গত এপ্রিলে কাশ্মিরের পেহেলগামে ওই হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন। আহত হন আরও অনেকে। শুরু থেকেই এর দায় পাকিস্তানকে দিয়ে আসছে ভারত।
এমনকি পাকিস্তানের বিপক্ষে যে কোনো খেলাধুলাও বয়কটের আওয়াজ ওঠে ভারতে। শেষ পর্যন্ত বয়কট করা হয়নি ম্যাচ। তবে নিজেদের জায়গা থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সৌজন্যতা বিনিময় না করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের ক্রিকেটাররা।
এমন কাণ্ড খেলাধুলার স্পিরিটের লঙ্ঘন কিনা জানত্ব চাওয়া হয় সুর্যকুমারের কাছে। উত্তরে ভারত অধিনায়ক বলেন, খেলার উর্ধ্বে আছে জীবনের অনেক কিছু।
আরও পড়ুন
‘আমরা হাত মেলানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম, ভারত করল না’ |
![]() |
“জীবনের কিছু জিনিস স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের উর্ধ্বে। আমি এটি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানেও বলেছি। পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত সকলের পাশে আছি আমরা, তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। তাদের প্রতি আমরা সংহতি প্রকাশ করছি।”
পরপর দুই জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে ভারত। কোনো অঘটনা না ঘটলে পাকিস্তানও পাবে সুপার ফোরের টিকেট। ওই রাউন্ডে আবার মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান।
তখন আবার নতুন কোন আলোচনার জন্ম হয়, সেটিই যেন দেখার অপেক্ষা।
এই একটি ম্যাচ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ ছিল না। মাঠের খেলা নিয়ে যতটা না আলোচনা, এরচেয়ে দুই দেশের বৈরি সম্পর্ক, ম্যাচ বর্জন আর প্রতিবাদের মতো বিষয়ই সংবাদের শিরোনাম হয়েছে।
এশিয়া কাপে ‘এ’ গ্রুপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি শেষ হয়েছে ভারতের ৭ উইকেটের বড় জয়ে। উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচটি একপেশে লড়াইয়ে রূপ নেয় ম্যাড়ম্যাড়ে এক ম্যাচে। সূর্যকুমার যাদেবদের বিপক্ষে নূন্যতম লড়াইও করতে পারেনি সালমান আলি আগার দল।
অবশ্য ম্যাচের ফলাফলের চেয়ে দুই দলের নানান কাণ্ডই যেন এখন আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। প্রথমে ম্যাচের আগে টসের সময় সৌজন্য সূচক করমর্দন না করে বিতর্ক উষকে দেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার। এমনকি ম্যাচ শেষেও পাকিস্তান দলের সঙ্গে হাত মেলায়নি ভারতীয় দল।
ভারতের এমন আচারণে প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পাকিস্তান। সূর্যকুমার যাদবের দলের সঙ্গে নাকি করমর্দনের অপেক্ষায়ও ছিল পাকিস্তান দল। ম্যাচ শেষে পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা খেলা শেষে করমর্দনের জন্য প্রস্তুত ছিলাম। প্রতিপক্ষ সেটা করেনি বলে আমরা হতাশ। আমরা হাত মেলাতে এগিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তখনই ড্রেসিংরুমের পথে ছিল।’
আরও পড়ুন
হাত মেলায়নি ভারত, প্রেজেন্টশনে এলেন না পাকিস্তানের অধিনায়ক |
![]() |
ভারতের এমন অবস্থানের পর পাকিস্তানও প্রতিবাদ হিসেবে ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করে। ম্যাচ-পরবর্তী অনুষ্ঠানে পাকিস্তান অধিনায়কের অনুপস্থিত থাকার কারণ সম্পর্কেও কথা বলেন পাকিস্তান কোচ। এই সিদ্ধান্তকে হাত না মেলানোর ঘটনারই প্রতিক্রিয়া বলেন তিনি, ‘আমার মনে হয় এটা পুরো ঘটনারই একটি ধারাবাহিক প্রতিক্রিয়া। আমরা খেলা শেষে হাত মেলাতে চেয়েছিলাম, সেটা হয়নি এবং ঘটনাটা সেখানেই শেষ হয়ে যায়।’
ভারতের করর্মদন বর্জনের মতো আচারণকে ‘খেলোয়াড়সুলভের বিরুদ্ধে’ বলে বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট নাকি টসের সময় দুই অধিনায়ককে করমর্দন না করতে অনুরোধ করেছিলেন। এ কারণে ম্যাচ রেফরির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে পিসিবি।
ম্যাচ শেষে পিসিবি এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তান দলের ম্যানেজার নাভিদ আকরাম চিমা ম্যাচ রেফারির আচরণের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মহারণের আগেই আভাস দিয়ে রেখেছিল ভারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ করবে সূর্যকুমার যাদবের দল। গতকাল এশিয়া কাপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে সেটাই দেখা গেল।
দুবাইয়ে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন মাঠেও গড়ায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের সহজ জয়ের ম্যাচের আগে ও পরে হাত মেলানোর ‘সৌজন্যতা’ দেখায়নি ভারত। টসের পর ও ম্যাচ শেষে দুই দলের অধিনায়কের চোখাচোখি পর্যন্ত হয়নি।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানকে উড়িয়ে সেনাবাহিনীকে জয় উৎসর্গ করল ভারত |
![]() |
ভারতীয় দলের এমন অবস্থানের পর পাকিস্তান দলও প্রতিবাদ জানায় ম্যাচ শেষে প্রেজেন্টেশনে অনুপস্থিত থেকে। ভারতের অধিনায়কের হাত না মেলানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারেও হাজির হননি।
অবশ্য ভারতীয় দলের পাকিস্তানের সঙ্গে করর্মদন না করার যে পূর্ব নির্ধারিত ছিল সেটাই নিশ্চিত করেন সূর্যকুমার। ম্যাচ শেষে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার বলেন, ‘ম্যাচ শুরুর আগেই বিসিসিআই ও ভারত সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতীয় দল ঠিক করেছিল প্রতিপক্ষের সঙ্গে করমর্দন করা হবে না।’
পাকিস্তানের ক্ষোভের মাত্রা দ্বিগুন হয় যখন ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট নাকি টসের সময় দুই অধিনায়ককে করমর্দন না করতে অনুরোধ করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তান দল দৃশ্যতই হতাশ হয়।
এই ম্যাচের আগে গত এপ্রিলে কাশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই এশিয়া কাপে দু’দল মুখোমুখি হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এমনকি ভারতের ম্যাচ বর্জনের দাবিও ওঠে।
আরও পড়ুন
হাত মেলালেন না ভারত-পাকিস্তান অধিনায়ক |
![]() |
শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার আনুষ্ঠানিক নীতি জানায়, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না, তবে বহুপাক্ষিক টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। সেই নীতিতেই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
ঘটনাবহুল এই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তান। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। জবাবে ৭ উইকেট ও ২৫ বল হাতে রেখে হেসেখেলে জয় পায় ভারত।