১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম

অ্যাশেজের রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী এই টেস্ট সিরিজে কত শত গল্প যে আছে, সে হিসেব করতে দিন পার হবে। আর মাঠে দুই দলের মর্যাদার লড়াইয়ের প্রাণ যে সমর্থকরা। গ্যালারিতে দর্শক সারির স্লোগান, হাততালি কিংবা দুয়োধ্বনি ভিন্ন এক আমেজই সৃষ্টি করে।
আর দিন দশেক পরই শুরু হচ্ছে অ্যাশেজ। পার্থে শুরু হতে যাওয়া মহারণের প্রথম টেস্টে একধরনের হুঙ্কারই যেন দিয়ে রাখল ইংল্যান্ড। বেন স্টোকসরা যে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেতে যাচ্ছে। দলকে সমর্থন দিতে ৪০ হাজারেরও বেশি ইংল্যান্ড সমর্থককে দেখা যেতে পারে স্টেডিয়ামে।
ইংল্যান্ড ক্রিকেটের দর্শক বিখ্যাত গ্রুপ বর্মি আর্মি। এই সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস মিলার্ড জানিয়েছেন, কেবল যুক্তরাজ্য থেকেই অন্তত ৩৫,০০০ সমর্থক অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন, আর প্রবাসী ইংলিশদের যুক্ত করলে মোট সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের একটি জাতীয় দৈনিক দ্যা আই পেপারকে ক্রিস মিলার্ড বলেন, ‘আমরা ট্যুরিজম অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কাজ করছি, আর সব দিক থেকেই দেখা যাচ্ছে— এটি হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘অ্যাওয়ে’ অ্যাশেজ।’
২০২১-২২ সালের অ্যাশেজে যুক্তরাজ্যের সমর্থকদের অস্ট্রেলিয়া যেতে দেওয়া হয়নি, করোনা মহামারির কারণে বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়া ভ্রমন বন্ধ ছিল। শেষবার যখন ইংলিশ সমর্থকরা দলকে সমর্থন দিতে অসিদের দেশ সফর করে ২০১৭-১৮ সালে। তখন প্রায় ৩০ হাজার সমর্থক পুরো সিরিজে দলের সঙ্গে ছিল।
এ বছর সেই রেকর্ড সহজেই ভাঙবে। এমনকি কয়েক মাস আগেই অস্ট্রেলিয়া সফর করা ব্রিটিশ ও আইরিশ লায়নস রাগবি দলের আনুমানিক ৪০,০০০ সমর্থকের সংখ্যাও ছাড়িয়ে যাবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট সমর্থকদের উপস্থিতি।
এবারের অ্যাশেজ ঘিরে আগ্রহ এতটাই বেশি যে টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই রেকর্ড ভাঙে। জুন মাসে একদিনেই বিক্রি হয়েছিল ৩ লাখ ১১ হাজার টিকিট। এর মধ্যে ছয় ভাগের এক ভাগই কিনেছেন যুক্তরাজ্যের সমর্থকরা। সেই হিসেবে পুরো সিরিজে বিক্রি হওয়া এক মিলিয়ন টিকিটের মধ্যে দেড় লাখেরও বেশি থাকবে ইংল্যান্ড সমর্থকদের হাতে।
২০১৭-১৮ সালের মতো এবার আর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ইংলিশ ভক্তদের আলাদা করে রাখার নিয়ম রাখেনি, এবার তারা একসঙ্গে বসতে পারবেন। ফলে গ্যালারিতে ইংল্যান্ডের পতাকা আর ‘বার্মি আর্মি’র স্লোগান থাকবে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। মিলার্ড মনে করেন েএর প্রভাব দেখা যেতে পারে খেলাতেওম, ‘মজার ব্যাপার হলো, প্রতিটি স্টেডিয়ামে প্রথম যে ব্লকগুলোর টিকিট শেষ হয়েছে, সেগুলোই ইংলিশদের অংশ। এভাবেই হওয়া উচিত। তারা চায় সিরিজটা হোক এক মহাযজ্ঞ, আর তার শুরুটা হয় সমর্থকদের দিয়েই।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘খেলোয়াড়রাও নিজেরাই বলে— যেমন ২০২০ সালে নিউল্যান্ডস টেস্টের পঞ্চম দিনে, তারা বলেছিল যে বার্মি আর্মির বিরামহীন হর্ষধ্বনি ছাড়া সেই ম্যাচটা জেতা সম্ভব হতো না। আমরা কেবল ভক্ত, এর চেয়ে বেশি কিছু নই, কিন্তু যদি আমাদের উপস্থিতি ম্যাচের ফলাফলে সামান্য হলেও প্রভাব ফেলে, তাহলে সেটাই তো দারুণ ব্যাপার— তাই না ?’
No posts available.
১০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম
১০ নভেম্বর ২০২৫, ৮:৩৯ পিএম
১০ নভেম্বর ২০২৫, ৮:১১ পিএম
১০ নভেম্বর ২০২৫, ৭:১৭ পিএম

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে
সিরিজ খেলতে জাতীয় দলের সঙ্গে আছেন পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহ। এই ফাস্ট বোলার যখন
জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁর বাড়িতে তখন ভয়াবহ এক হামলা হলো।
সোমবার সকালে খাইবার পাখতুনখারার লোয়ার দিরের মায়ার এলাকায় নাসিম শাহ এর বাড়িতে বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচজন
অজানা বন্দুকধারী বাড়িতে গুলি চালানোর পর
সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
হামলাকারীরা বাড়িতে পার্ক করা একটি গাড়ি
ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং জানালা ভেঙেছে।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, নাসিম
শাহের বাড়ির প্রধান দরজায় গুলির চিহ্ন আছে। অবশ্য সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। নাসিম
শাহ ২০০৩ সালে এই
বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
বন্দুক হামলার ঘটনায় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্যা ট্রিবিউনকে এক পুলিশ মুখপাত্র জানিয়েছেন,
‘অজ্ঞাত হামলাকারীরা জাতীয় ক্রিকেট দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহের বাড়িতে গুলি চালিয়েছে। গুলিতে প্রধান দরজা, জানালা এবং একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং পাঁচজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। মায়ার থানা একটি মামলা রুজু করেছে, এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় পুলিশের মতে, যদিও তারা
দ্রুত পৌঁছায়, হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পরে মায়ার থানা পাঁচজন সন্দেহভাজনকে
আটক করে এবং তদন্ত
শুরু করে। পুলিশ সিসিটিভি
ফুটেজ যাচাই করছে হামলাকারীদের সনাক্ত
করার জন্য। স্থানীয়রা জানায়, ওই পরিবার শান্তিপ্রিয়
এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাদের কোন শত্রুতা নেই।
এই ঘটনার পর এলাকার নিরাপত্তা
বাড়ানো হয়েছে, বিশেষ করে নাসিম শাহের
বাড়ির আশেপাশে।
লোয়ার দির বা খাইবার
পাখতুনখারার আগে থেকেই অপরাধপ্রবণ
এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। গত সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি
নিরাপত্তা বাহিনী একটি সন্ত্রাস বিরোধী
অভিযান চালায়, যাতে ১৪ জন
আহত এবং সাতজন দির
স্কাউট নিহত হয়। ২০১১
সালে লোয়ার দিরে বোমা বিস্ফোরণে
চারজন নিহত হয়।
নাসিম শাহ সব সংস্করণে পাকিস্তানের
নিয়মিত সদস্য। ২০১৯ সালে মাত্র
১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। পাকিস্তানের হয়ে এখন পর্যন্ত ২০টি টেস্ট,
৩২টি ওডিআই এবং ৩২টি টি-টিয়োন্টি
ম্যাচ খেলেছেন ২২ বছর ডান হাতি পেসার। সব ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ১৪৬টি উইকেট
নিয়েছেন তিনি।

আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে
শুরু হবে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ। তিন জাতির এই টি-টোয়েন্টি
সিরিজের আগে বড় হোঁচট খেল জিম্বাবুয়ে। পিঠের চোটে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েছেন ব্লেসিং
মুজাবারানি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে
ঘরের মাঠে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয় জিম্বাবুয়ে। সেই সিরিজের শেষ
দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মিস করেছিলেন মুজাবারানি। প্রথম ম্যাচে ৪১ রান দিয়ে নিয়েছিলেন
দুই উইকেট।
মুজাবারানির পরিবর্তে জিম্বাবুয়ের
টি-টোয়েন্টি দলে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন নিউম্যান নিয়ামহুরি। ১৯ বছর বয়সী বাঁ হাতি এই
পেসার জাতীয় দলের হয়ে চারটি টেস্ট এবং চারটি ওয়ানডে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে
অভিষেক হয় তাঁর। নিয়ামহুরি চলতি বছর জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে
ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে থাকলেও কোনো ম্যাচে খেলেননি।
সিকান্দার রাজার নেতৃত্বে
জিম্বাবুয়ে দল ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯ নভেম্বর
একই ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে তারা। এরপর লাহোরে ২৩ নভেম্বর পাকিস্তান এবং
২৫ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে জিম্বাবুয়ে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল ২৯
নভেম্বর লাহোরে ফাইনাল খেলবে।
ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ের
টি-টোয়েন্টি দল :
সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক),
ব্রায়ান বেনেট, রায়ান বার্ল, গ্রেম ক্রেমার, ব্র্যাডলি ইভানস, ক্লাইভ মাদান্দে, টিনোটেন্ডা
মাপোসা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টাডিওয়ানাশে মারুমানি, টনি মুনিয়ঙ্গা, তাশিঙ্গা মুসেকিওয়া,
ডায়ন মায়ার্স, রিচার্ড ন্গারাভা, নিউম্যান নিয়ামহুরি, ব্রেন্ডান টেলর

আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। আইরিশদের বিপক্ষে লাল বলের ক্রিকেটের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। কুড়ি ওভারের সেই সিরিজের আগে দুঃসংবাদ পেল আয়ারল্যান্ড।
আইরিশ ওপেনার রস অ্যাডায়ার বাংলাদেশে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন। হাঁটুর চোটে পড়েছেন এই ব্যাটার। অ্যাডেয়ারের জায়গায় আয়ারল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে যুক্ত হবেন জর্ডান নিল। সফরকারীদের টেস্ট দলেও আছেন তিনি।
আইরিশ জাতীয় নির্বাচক অ্যান্ড্রু হোয়াইট অ্যাডায়ারের চোটের প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরের ঠিক আগে রসকে হারানো খুবই দুঃখজনক। ২০২৫ সালে যখন তার সুযোগ হয়েছিল, তখন সে টি-টোয়েন্টির ওপেনিংয়ে তার গুরুত্ব প্রমাণ করেছিল। আমরা বাংলাদেশে তার পারফরম্যান্স দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলাম।’
অ্যাডেয়ার গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৮ বলের অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই বছর তিনটি টি-টোয়েন্টিতে কিছুটা ছন্দে ফিরেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৮ রান এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৬ ও ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন ৩১ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার। তবে বাংলাদেশ সফর থেকে তার সরে যাওয়ায়, আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা কম।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটের প্রথম টেস্টের পর ১৯ নভেম্বর মিরপুরে হবে দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলির দুটি রেকর্ড নিজের করে নেন বাবর আজম। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের টপ অর্ডারের তারকা ব্যাটারকে হাতছানি দিচ্ছে আরও তিনটি অর্জন।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবক’টি হবে রাওয়াপিন্ডিতে। শাহীন আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে আছে।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে অবশ্য রান পাননি বাবর। প্রথম ম্যাচে ৭ রানের পর পরের দুই ম্যাচে ১১ ও ২৭ করে আউট হন ৩১ বছর বয়সী ব্যাটার। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিন্দুকদের মুখে কুলুপ এঁটে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বাবর আজম। লঙ্কাদের বিপক্ষে দারুণ তিনটি রেকর্ডের মালিক হতে পারেন তিনি।
পাকিস্তানের হয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরির রেকর্ড
পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওপেনার সাঈদ আনোয়ার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে শতক করার রেকর্ড ধরে রেখেছেন। পাকিস্তানের হয়ে লঙ্কাদের বিপক্ষে সাতবার সেঞ্চুরি করে শীর্ষে আছেন তিনি। ইনজামাম-উল-হক এবং মোহাম্মদ হাফিজের আছে চারটি করে শতক । আর বাবর আজম, রামিজ রাজা ও সালিম মালিক ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন। রানের খোঁজে থাকা বাবর এই তালিকার কতটা উপরে উঠতে পারেন সেটাই দেখার।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে রান
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বরাবরই ব্যাট হাসে বাবর আজমের। ওয়ানডেতে তাদের মুখোমুখি হয়ে ১১ ইনিংসে ৫৩.৫০ গড়ে করেছেন ৫৩৫ রান। তবে পাকিস্তানের ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ইমরান খানের (৬৩৬ রান) থেকে এখনো পিছনে আছেন বাবর। কিংবদন্তি ইমরান খানকে পেছনে ফেলতে তাঁর লাগবে ১০২ রান।
ঘরের মাঠে ৫০০০ আন্তর্জাতিক রান
বাবর আজম পাকিস্তানের মাটিতে অসাধারণ ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন। তিন ফরম্যাটে ঘরের মাঠে ৪৮৪৮ রান করেছেন ৫১.৫৭ গড়ে। ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে তাঁর লাগে আর ১৫২ রান করেন। জাভেদ মিয়াদাদ, ইনজামাম-উল-হক ও মোহাম্মদ ইউসুফের পর পাকিস্তানের মাটিতে ৫০০০ আন্তর্জাতিক রান পূর্ণ করা কেবল চতুর্থ ব্যাটার হবেন বাবর।

আজ ১০ নভেম্বর বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের রজত জয়ন্তী। ক্রিকেটের এলিট এরিনায় বাংলাদেশের একটি মাইলস্টোনের দিন আজ। এমন একটি দিনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমিদের মতো আমারও অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। এমন একটি দিনকে কী আমরা সেভাবে উদযাপন করতে পেরেছি ? এই দিনটিতে বিসিবির আয়োজন বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স, সিলেটে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট পূর্ব প্রিভিউ নিয়ে গণমাধ্যমের ব্যস্ততা টেস্টে বাংলাদেশের ২৫ বছর উদযাপনে কিছুটা বাধার দেয়াল তৈরি করেছে, সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিতে ইতিহাস সৃষ্টি করা আমিনুল ইসলাম বুলবুল যখন বিসিবির সভাপতি, তখন এই দিনটিকে একটু বেশিই উদযাপনের প্রত্যাশা করেছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।
তারপরও বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের রজত জয়ন্তীর দিনে চোখের সামনে ভেসে উঠছে অনেক অর্জন, ট্র্র্যাজেডি।
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট কভার করা সৌভাগ্যবান ক'জন ক্রীড়া সাংবাদিকের মধ্যে আমি একজন। ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর থেকেই টেস্ট অভিষেকের দিকে মুখিয়ে ছিলাম।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিতে লাল বলের মধ্যে বাঘের মুখ, গোলাকৃতির সেই লোগো থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ'র মধ্যে বাঘের প্রতিকৃতিতে এখন বিসিবির যে লোগোটা শোভা পাচ্ছে, টেস্ট অভিষেককে সামনে রেখে সেই লোগোর ডিজাইন আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম স্পন্সর কোকা কোলার সঙ্গে বিসিবির দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিটাও হয়েছিল টেস্ট অভিষেককে সামনে রেখে।
টেস্ট অভিষেককে সামনে রেখে প্রতিদিন কোনো না কোনো অনুষ্ঠানের নিউজ সংগ্রহ করাটাও ছিল তখন একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে নিত্যদিনের কাজ। মাত্র ক'দিনের মধ্যে গ্র্যাউন্ডসম্যান মরহুম আবদুল লতিফ এবং বর্তমানে বিসিবির পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিমের অক্লান্ত চেষ্টায় ঢাকা স্টেডিয়ামে অভিষেক টেস্টের উইকেট প্রস্তুত করাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।
প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে অচল হয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ এডি বারলোর অনুপস্থিতিতে সারওয়ার ইমরানকে ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্ব দিয়ে যে ভুল করেনি সে সময়ে বিসিবি, অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশ দল সমৃদ্ধ আগামীর জানান দিয়ে প্রকারান্তরে বোর্ডের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন।
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টকে সামনে রেখে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পরিবর্তে নাইমুর রহমান দুর্জয়ের ক্যাপ্টেনসি তুলে দেয়া নিয়েও কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের একাংশের চাপে সে সময়ের প্রধান নির্বাচক তানভির হায়দার ১৫ সদস্যের অভিষে টেস্ট স্কোয়াডে রাখেননি হাবিবুল বাশার সুমনকে। পা ঠিকমতো চলে না, এই অভিযোগে বাদ দেয়া হয়েছিল তাকে অভিষেক টেস্ট স্কোয়াড থেকে।
মিডিয়ার বিস্তর লেখালেখিতে সেই হাবিবুল বাশার সুমন স্কোয়াডে ঢুকে খেলেছেন অভিষেক টেস্ট। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে যোগ হয়েছে ৫০টি ম্যাচ। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ পেয়েছে প্রথম টেস্ট জয় এবং টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ।
মনে আছে, বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট উপলক্ষ্যে দৈনিক ইনকিলাব ট্যাবলয়েড সাইজের ১৬ পৃষ্ঠার একটি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছিল। সেই ক্রোড়পত্রটির দায়িত্বভার আমার উপর অর্পিত হয়েছিল। ওই ক্রোড়পত্রের প্রচ্ছদের জন্য একটি ছবি তুলতে ইনকিলাবের ফটো সাংবাদিক ইকবাল হোসেন নান্টু-ভাই-কে নিয়ে গিয়েছিলাম বিকেএসপি-তে। বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের এক ফাঁকে ভারপ্রাপ্ত কোচ সারোয়ার ইমরানকে অনুরোধ করে নান্টু ভাই-কে দিয়ে যে ছবিটি তুলেছি, ওই ছবিটিও ইতিহাসের স্বক্ষী।
অভিষেক টেস্ট কভারে প্রেস বক্সে পছন্দের আসন নিশ্চিত করতে টসে'র অনেক আগে স্টেডিয়ামে এসেছি। দেখেছি অভিষেক টেস্ট উপলক্ষ্যে ছোট্ট একটি আনুষ্ঠানিকতা। বিশেষ কয়েনে টস। বাংলাদেশ-ভারত, দুই দেশের দুই অধিনায়ক ( নাইমুর রহমান দুর্জয়, সৌরভ গাঙ্গুুলি) বাঙালী, টসেও তারা ইতিহাস।
ঢাকা স্টেডিয়ামে ৪ দিনে শেষ হওয়া বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের প্রতিটি দিনের ম্যাচ রিপোর্ট লিখেছি সে সময়ে প্রচার সংখ্যার অন্যতম শীর্ষে থাকা দৈনিক ইনকিলাব-এ। লিখেছি টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিয়ান হাবিবুল বাশার সুমন এবং টেস্টের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কৃতিত্বগাঁথা। প্রতিটি বলের নোট নোটবুকে লিখেছি।
তখন ম্যাচ চলাকালে কিংবা ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের জন্য ঢাকা স্টেডিয়ামে নির্ধারিত কোনো রুম বরাদ্দ ছিল না। প্রতিদিনের খেলা শেষে ঢাকা স্টেডিয়ামের প্লেয়ার্স ড্রেসিং রুমের সামনে ক্রিকেটারদের অনুভূতি নিয়েছি। অটোগ্রাফ শিকারিদের মতো দু'দলের ক্রিকেটারদের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করেছি।
টেস্টের দ্বিতীয় দিন ছিল পবিত্র সবে-ই-বরাতের ছুটি। ফলে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কৃতিগাঁথা সেঞ্চুরি নিয়ে বাংলাদেশের কোনো জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়নি রিপোর্ট। পাক্ষিক ক্রীড়া জগতের সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান দুলাল প্রেস বক্সে কর্মরত সাংবাদিকদের লেখা সমগ্র নিয়ে সেদিন ছাপিয়েছিলেন 'প্রেস বক্স' নামের একটি বুলেটিন।
ওই বুলেটিনে ছাপা হয়েছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কৃতি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে স্পোর্টস আর্কাইভ স্থাপন করা হলে, প্রেস বক্স বুলেটিনটা হতে পারে অন্যরকম এক সংগ্রহ।
৪র্থ দিনের পড়ন্ত বেলায় খেলার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে ফ্লাড লাইটের আলো জ্বালিয়ে টেস্ট শেষ করে ওই রাতেই ভারত ক্রিকেট দলকে ফ্লাইটে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
১৯৯৭-এ আইসিসি ট্রফি জয়ে আমাদের স্বপ্নের পরিধি গেছে বেড়ে। আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, নাইমুর রহমান দুর্জয়রা টেস্ট খেলার স্বপ্ন লালন করেছেন। আর আমরা যারা ওই সময়ে ক্রিকেট বিট সাংবাদিকের তকমা গায়ে লাগিয়েছি, তারা দেখতাম টেস্ট ম্যাচের রিপোর্ট লেখার স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখতাম বাংলাদেশের অন্তত ৫০টি টেস্ট কভারের। ভাগ্যক্রমে আমার ক্ষেত্রে সংখ্যাটি হয়েছে ওই প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুন।
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট, ৫০তম টেস্ট, ১০০তম টেস্ট ম্যাচের ম্যাচ ভেন্যু থেকে সরাসরি কভার করেছি। ২০০৮ স সালের জানুয়ারীতে নিউ জিল্যান্ডের ডানেডিনে বাংলাদেশের ৫০তম টেস্ট ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম স্মারক ক্রেস্ট, কোট পিন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম ফ্যান ক্লাব বেঙ্গল টাইগার্স এসব স্মারক আমার হাতে বুঝিয়ে দিয়েছিল। ওই টেস্টের প্রথম দিন লাঞ্চ ব্রেকের সময়ে বিশেষ দুটি স্মারক দুই অধিনায়ক আশরাফুল এবং ড্যানিয়েল ভেট্টরির হাতে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। আমি ছিলাম পাশে। এই ছবি এবং নিউজ ছাপা হয়েছে বাংলাদেশের বেশ ক'টি দৈনিকে।
ওই সফরে ৫ সাংবাদিক ( উৎপল শুভ্র, অঘোর মন্ডল, রানা হাসান, আজাদ মজুমদারের সঙ্গে আমি) কভার করেছি সেই টেস্ট। টেস্ট ভেন্যু হিসেবে ডানেডিনের অভিষেক, আবার সেই মাঠে তামিম ইকবাল-জুনায়েদ সিদ্দিকীর স্মরণীয় টেস্ট অভিষেকের স্বাক্ষী হতে পেরেছি।
২০১৭ সালে কলোম্বোর পি সারা ওভালেও বাংলাদেশের শততম টেস্টের স্বাক্ষী আমি। জয় দিয়ে শততম টেস্ট উদযাপনের আনন্দ উপভোগ করেছি। তার চেয়েও বড় কথা, বাংলাদেশের শততম টেস্টেও বেঙ্গল টাইগার্সের বিশেষ স্মারক দুই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এবং রঙ্গনা হেরাথের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন, বেঙ্গল টাইগার্সের গোলাম ফারুক ফটিক-সাব্বির আহমেদ রুবেল, সেখানেও ছিলাম আমি। ছবিসহ এই নিউজটিও ছাপা হয়েছে বেশ ক'টি দৈনিকে।
২০১৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ডে-নাইট টেস্ট শেষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট স্কোয়াডের অটোগ্রাফ সম্বলিত ব্যাটটি উপহার হিসেবে দিয়েছি বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে প্রতিপক্ষ দল ভারতের অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির হাতে। তবে অভিষেক টেস্ট কভারের জন্য অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড, বিসিবির বিশেষ উপহার ক্রেস্ট এর সঙ্গে টেস্ট অভিষেক ক্যাপ এবং বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশেষ স্মারকটি একটু বেশি যত্ন করে রেখেছি। সংগ্রহে আছে হোটেল শেরাটনের প্যাডে তৎকালীন প্রধান নির্বাচকের হাতে লেখা টেস্ট স্কোয়াডটিও রেখে দিয়েছি সযত্নে।
টেস্টের ২৫ বছরে বাংলাদেশ খেলেছে ১৫৪টি টেস্ট। টেস্ট ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও প্রায় ৮ বছর। সে পর্যন্ত ক্যারিয়ার টেনে নেয়াটা ছেড়ে দিয়েছি ভাগ্যের উপর।
এই ২৫ বছরে ১৫৪টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, যেখানে ২৩ টি জয়, ১৯টি ড্র, ১১২টি হার, সরল অঙ্কে এই হিসাবটাই আসবে সামনে। আইসিসির পূর্ণ সদস্য সব দেশের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের বৃত্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ, এটাও আক্ষেপ। বছরে গড়ে ৬.১৬টি টেস্ট খেলার সুযোগটাও ক্রিকেট মোড়লদের সঙ্গে ব্যবধান নির্নিত করবে। এই লম্বা সময়ে বাংলাদেশ পায়নি ৭ হাজার ক্লাবের কোনো সদস্যকে, তিনশ' উইকেটের দেখাও পায়নি কোনো বোলার। আড়াইশ উইকেট থেকে মাত্র ৪টি উইকেট দূরে থাকা সাকিবের অপেক্ষা বাড়ছে।
তবে টেস্টের রজত জয়ন্তীর দিনে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। হোম অব ক্রিকেটে আগামী ১৯ নভেম্বর প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টেস্ট ম্যাচের সেঞ্চুরি পূর্ণ হবে তার। টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৭ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদের দাবিদারও মুশফিকুর রহিম। আর ৬৭২ রান হলেই এই মাইলস্টোনে পা দিবেন তিনি।