৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০১ পিএম
দুই দলের শেষ দেখায় শেষ হাসিটা ছিল চিটাগং কিংসের। তবে এবার আগে ব্যাটিং করলেও দলটি পারল না দেড়শ করতেও। মোহাম্মাদ আলির ফাইফার সামলে একাই লড়লেন শামিম হোসেন। তাতে একটা ফাইটিং স্কোর তার দল পেল বটে, তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালকে তা পারল না সামান্য চ্যালেঞ্জ জানাতে। ম্যাচ জেতানো ফিফটিতে তাওহীদ হৃদয় দলকে এনে দিলেন দাপুটে জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশাল জিতেছে ৯ উইকেটে। কুড়ি ওভারে চিটাগংয়ের স্কোর ছিল ৯ উইকেটে ১৪৯। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বরিশাল এই রান পাড়ি দিয়েছে ১৬ বল হাতে রেখেই।
ফাইনালে যাওয়ার জন্য আরেকটা সুযোগ পাবে চিটাগং। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আগামী বুধবার তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। সোমবার প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচে দলটি ৯ উইকেটে হারায় রংপুর রাইডার্সকে।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা চিটাগংয়ের ইনিংসকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতেই পারে। যেখানে এক অংশে থাকবেন শামিম হোসেন, আর অন্য অংশে দলটির বাকি ব্যাটাররা। ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করে খাওয়াজা নাফায়কে পরের বলে রীতিমতো স্তব্ধ করে দেন কাইল মায়ার্স। অফস্ট্যাম্পের বেশ বাইরে পিচ করা ডেলিভারিটি ইনসুইং করে শেষ পর্যন্ত বোল্ড করে দেয় নাফায়কে। ব্যাটারের বিস্ময় বলে দিচ্ছিল, কতোটা ‘আনপ্লেয়বল’ ছিল ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের সেই ডেলিভারিটি।
গ্রাহাম ক্লার্কও রানের খাতা খোলেন চার মেরে। তবে তাকেও ফেরান সেই মায়ার্সই। দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে ৩৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় চিটাগং। একপ্রান্ত আগলে পারভেজ হোসেন ইমন ব্যাট করলেও ব্যাটে ছিল না আগ্রাসনের সুর। ক্রিজে গিয়ে ঠিক সেই কাজটাই করেন শামিম, ইবাদত হোসেনকে মারেন দুটি চার।
তিনি ছন্দময় ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও সেভাবে তাল মেলাতে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইমনকে। ২৬ বলে ২০ রানে থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ নবিকে দুই ছক্কা মেরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কিছুটা। অতি আগ্রাসী হয়ে রিশাদ হোসেনের বলে তাকে ক্যাচ দিয়ে ইমনের ১০০ স্ট্রাইক রেটে করা ৩৬ রানেদ ইনিংসের।
তবে আপন ছন্দে ব্যাট করা শামিম মাত্র ২৯ বলে পা রাখেন পঞ্চাশে। রিশাদের পর ইবাদতের ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে একটি করে চার ও ছয়ের মার। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে দলের প্রায় অর্ধেক রানই করেন শামিম। ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস সাজান ৯ চার ও ৪ ছক্কায়।
ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ দুই বলে উইকেট সহ ওভারে চার উইকেট নেন আলি। উপহার দেন ২৪ রানে ৫ উইকেটের দুর্দান্ত এক বোলি ফিগার।
রান তাড়ায় বরিশাল শুরু থেকেই ছিল লক্ষ্যের পথে স্থির। পাওয়ার প্লেতে কেবল বাজে বল পেলেই আগ্রাসী শটের চেষ্টা করেছেন তামিম ইকবাল ও তাওহীদ হৃদয়। আলিস আল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামের করা দুটি ওভারে আসে দুটি করে বাউন্ডারি। তাতে ছয় ওভারে হয়ে যায় ৪০ রান।
৫৫ রানের ওপেনিং জুটির অবসান ঘটান খালেদ আহমেদ। আসরে বেশ ভালো বোলিং করা এই ডানহাতি এই পেসার তামিমকে থামান ২৯ রানে। তবে বল ও রানের ব্যবধান চেপে বসার আগেই ক্রিজে গিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন দাভিদ মালান।
মালান তার স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও অন্যপ্রান্তে তাওহীদকে অনেকটা সময় স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে ৩৫ বলে মাত্র ৩৫ একই সময়ে মাত্র ১১ বলেই ২২ রান করে ফেলেন মালান, ফলে তাওহীদের ওপর চাপটা সেভাবে বাড়েনি।
আর সেটাই তিনি কাজে লাগান বাকি ইনিংস জুড়ে। ৪৫ বলে পঞ্চাশ করার পর তাওহীদ ম্যাচ দ্রুত শেষ করার দিকেই মনোযোগী হন। মালানকে দর্শক বানিয়ে একাই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। শামিমকে চার মেরে জয়সূচক রানটা আসে জাতীয় দলেই এই ব্যাটারের কাছ থেকেই।
তাওহীদ অপরাজিত থাকেন ৮২ রানে। ৫৬ বলের ইনিংস সাজান ৯টি চার ও দুই ছক্কায়। আর আগের ম্যাচে ফিফটি করা মালানের অবদান ২২ বলে ৩৪।
No posts available.
এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে পেলেন তানজিদ হাসান তামিম ও তানজিম হাসান সাকিব। ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে এগোলেন তামিম। আর বোলারদের তালিকায় লাফ দিলেন সাকিব।
ছেলেদের র্যাঙ্কিংয়ের সাপ্তাহিক হালনাগাদ যথারীতি বুধবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি।
তামিম, সাকিব ছাড়াও র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছে জাকের আলি অনিকের। এছাড়া পিছিয়েছেন লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদরা।
আরও পড়ুন
কেমন গেলো সাকিবের সিপিএল |
![]() |
আফগানিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৩১ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে ৪ ধাপ এগিয়েছেন তামিম। বর্তমানে ৫৬৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ৩৫ নম্বরে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের ব্যাটারদের তিনিই সবার ওপরে।
এছাড়া ৩ ধাপ এগিয়ে ৫৭ নম্বরে উঠেছেন অনিক। এশিয়া কাপে গড়পড়তা ব্যাটিং করা তাওহিদ হৃদয় ধরে রেখেছেন নিজের ৪৮ নম্বর জায়গা। লিটন কুমার দাস ১ ধাপ পিছিয়ে ৪২ ও পারভেজ হোসেন ইমন ৮ ধাপ পিছিয়ে ৭৫ নম্বরে নেমে গেছেন।
ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ভারতের অভিষেক শর্মা।
বোলারদের তালিকায় ৫ ধাপ এগিয়ে ৪২ নম্বরে উঠেছেন সাকিব। তবে পিছিয়েছেন তার সামনে থাকা বাংলাদেশের বোলাররা। ৪ ধাপ পিছিয়ে ১৫ নম্বরে নেমে গেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেখ মেহেদি হাসান ২ ধাপ পিছিয়ে ২০ নম্বরে আর তাসকিন এখন ৫ ধাপ পিছিয়ে ৩০ নম্বরে।
রিশাদ হোসেনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। নিজের ২৪ নম্বর স্থান ধরে রেখেছেন এই লেগ স্পিনার।
বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছেন বরুণ চক্রবর্তী। আর অলরাউন্ডারদের তালিকায় এক নম্বর স্থান ধরে রেখেছেন তার স্বদেশি হার্দিক পান্ডিয়া।
অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ব্যাটিং, বোলিং ও অলরাউন্ডারদের তালিকায় শীর্ষে থাকা তিনজনই ভারতের।
ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের কাছে হেরে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) এলিমিনেটরে শেষ হয়ে গেছে অ্যান্টিগা এন্ড বারবুডা ফ্যালকনস ও সাকিব আল হাসানের এবারের যাত্রা। ছয় দলের মধ্যে চতুর্থ হওয়ার আসরে ব্যাটে-বলে অ্যান্টিগার সেরা পারফর্মারই ছিলেন সাকিব।
গত ১৪ আগস্ট টুর্নামেন্টের শুরু থেকে অ্যান্টিগার বিদায় নেওয়া পর্যন্ত সবকটি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ১১ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ব্যাট করে ১৩৮.৪৬ গড়ে তার সংগ্রহ ১৮০ রান। আর ২৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে তিনি শিকার করেন ৬ উইকেট।
আরও পড়ুন
বৃথা গেল সাকিবের তাণ্ডব, বিদায় নিলো দল |
![]() |
সিপিএলের এবারের আসরে অ্যান্টিগার জার্সিতে সাকিবের চেয়ে বেশি রান করতে পেরেছেন শুধু দুজন- কারিমা গোর (১০ ইনিংসে ২১৯) ও আমির জাঙ্গু (৪ ইনিংসে ১৮৫)। তবে তাদের দুজনেরই স্ট্রাইক রেট সাকিবের চেয়ে কম।
বোলিংয়েও সাকিবের চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পেরেছেন অ্যান্টিগার দুজন ক্রিকেটার- জেডেন সিলস (১০ ইনিংসে ১০ উইকেট) ও ওবেদ ম্যাকয় (৭ ইনিংসে ৯ উইকেট)।
তবে সাকিবের মতো ব্যাটে-বলে সমান তালে পারফর্ম করতে পারেননি অ্যান্টিগার কোনো ক্রিকেটার। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তিনি দলের সেরা ক্রিকেটার। বলা যায়, অ্যান্টিগার চতুর্থ হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান সাকিবেরই।
আসরের শুরুটা অবশ্য ঠিক সাকিবসুলভ ছিল না। প্রথম পাঁচ ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিংয়ে তেমন অবদান রাখতে পারেননি তিনি। অবশ্য ওই ম্যাচগুলোতে তাকে বোলিংয়ে ব্যবহারই করেননি ইমাদ ওয়াসিম। পাঁচ ম্যাচে তাকে মোট ৫ ওভার বোলিং দেন অ্যান্টিগা অধিনায়ক।
শেষ পর্যন্ত গত ২৪ আগস্ট সেইন্ট কিটস এন্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের বিপক্ষে প্রথম অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখান সাকিব। সেদিন ২ ওভারে ১১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। পরে রান তাড়ায় ১৮ বলে ২৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলায় জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সাকিবের সেরা ব্যাটিংয়ের দেখা মেলে সেইন্ট লুসিয়া কিংসের বিপক্ষে ৩১ আগস্টের ম্যাচে। সেদিন চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়ে ৫টি করে চার-ছক্কার মারে মাত্র ২৬ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন সাকিব।
সেদিন স্ট্রাইক রেট ছিল ২৩৪.৬১! যা তার ক্যারিয়ারে ফিফটি করা ইনিংসগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপে কি খেলবে না পাকিস্তান, সিদ্ধান্ত আজ |
![]() |
বুধবার ভোরে ত্রিনবাগোর বিপক্ষে বিদায় নেওয়ার ম্যাচেও ঝড় তোলেন সাকিব। সুনিল নারিনের টানা চার বলে তিন চার ও এক ছক্কা মারেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে মাত্র ৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ২৬ রানের টর্নেডো ইনিংস। কিন্তু সেটি দলের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
সিপিএল অভিযান শেষ করে এখন কিছু দিন বিরতি পাবেন সাকিব। এরপর আগামী মাসে কানাডার সুপার সিক্সটি (টি-টেন) টুর্নামেন্টে মন্ট্রিয়ল টাইগার্সের হয়ে খেলার কথা তার।
কানাডার ভ্যাঙ্কুবারে আগামী ৮ অক্টোবর শুরু হবে কানাডা সুপার সিক্সটি টুর্নামেন্ট। ছয় দল ও ছয় দিনের আসরের পর্দা নামবে ১৩ অক্টোবর।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৫ এম
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সামনের টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে পাবে না নিউ জিল্যান্ড। তার জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দেবেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েল।
তিন ম্যাচের সিরিজের জন্য ১৪ জনের দল ঘোষণা করেছে নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেসি)। দলে ফিরেছেন দুই পেসার কাইল জেমিসন ও বেন সিয়ার্স।
তবে চোটের কারণে দুই অভিজ্ঞ পেসার লকি ফার্গুসন ও অ্যাডাম মিলনেকে পাবে না কিউইরা।
গত মাসে পেটের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন স্যান্টনার। আশা ছিল, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগেই সুস্থ হয়ে যাবেন বাঁহাতি স্পিনার। কিন্তু যথাসময়ে সেরে উঠতে পারেননি তিনি।
এছাড়া হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিটকে গেছেন ফার্গুসন আর পায়ের চোটে খেলতে পারবেন না মিলনে। এর আগে বিভিন্ন চোটে উইল ও'রোরক, গ্লেন ফিলিপস ও ফিন অ্যালেনকে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।
গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়েতে খেলা ত্রিদেশীয় সিরিজে ছিলেন না জেমিসন ও সিয়ার্স। প্রথম সন্তান জন্মের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন জেমিসন। আর চোটের কারণে খেলতে পারেননি সিয়ার্স।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে আগামী ১, ৩ ও ৪ অক্টোবর হবে সিরিজের ম্যাচগুলো।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ড স্কোয়াড:
মাইকেল ব্রেসওয়েল (অধিনায়ক), মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, জ্যাকব ডাফি, জ্যাক ফোকস, ম্যাট হেনরি, বেভন জ্যাকবস, কাইল জেমিসন, ড্যারিল মিচেল, রাচিন রবীন্দ, টিম রবিনসন, বেন সিয়ার্স, টিম সেইফার্ট, ইশ সোধি।
ছয় নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন সাকিব আল হাসান। বোলিংয়েও করলেন কিপটে বোলিং। কিন্তু বাকিদের থেকে সমর্থন পেলেন না বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। হেরে গিয়ে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) থেকে বিদায় নিলো অ্যান্টিগা এন্ড বারবুডা ফ্যালকনস।
গায়ানায় বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোরে সিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের কাছে ৯ উইকেটে হেরেছে সাকিবের অ্যান্টিগা। আগে ব্যাট করে তারা পায় ১৬৬ রানের পুঁজি। নিকোলাস পুরান ও অ্যালেক্স হেলসের ঝড়ে সহজেই জিতে যায় ত্রিনবাগো।
ম্যাচে প্রথমে ব্যাট হাতে মাত্র ৯ বলে ২৬ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন সাকিব। বল হাতে ৩ ওভারে দেন ২৪ রান। এর মধ্যে প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাকিরা কেউই তেমন কিছু করতে পারায় বিদায়ঘণ্টা বাজল তার দলের।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভাঙে অ্যান্টিগার উদ্বোধনী জুটি। এরপর ১০৮ রানের জুটি গড়েন আন্দ্রেস গাউস ও আমির জাঙ্গু। পরে মাত্র ২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। গাউস ৬১ ও জাঙ্গু ৫৫ রান করে ফেরেন।
১৮তম ওভারের প্রথম বলে ইমাদ ওয়াসিম আউট হলে ক্রিজে যান সাকিব। তখন বাকি ছিল ১৭ বল। এর মধ্যে ৯টি মোকাবিলা করে ২৬ রান নেন সাবেক বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। আর বাকি ৮ বল খেলে করে মাত্র ৯ রান।
ক্রিজে গিয়ে সুনিল নারিনের প্রথম বল ডট খেলেন সাকিব। এরপর চালান তাণ্ডব। ইনসাইড আউট শটে মারেন প্রথম চার। পরের বলে স্লগ সুইপে মারেন আরেকটি বাউন্ডারি। প্যাডল স্কুপ করে টানা তৃতীয় চার মারেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটার।
সেখানেই থামেননি সাকিব। নারিনের ওভারের শেষ বলে চমৎকার শটে লং অন দিয়ে তিনি মারেন ম্যাচে নিজের একমাত্র ছক্কা। এরপর ইনিংসের শেষ বলে আন্দ্রে রাসেলের বলে আরেকটি চার মেরে অ্যান্টিগাকে ১৬৬ রানে নিয়ে যান বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
রান তাড়ায় শুরুতে কলিন মুনরোর উইকেট হারায় ত্রিনবাগো। এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি হেলস ও পুরান। দুজনের মাত্র ৮৬ বলে ১৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। চলতি আসরে যে কোনো উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ জুটি।
১১তম ওভারে সাকিবকে প্রথম বোলিংয়ে আনেন ইমাদ ওয়াসিম। ওই ওভারে মাত্র ২ রান দেন সাকিব। নিজের পরের ওভারে সাকিবের খরচ মাত্র ৫ রান। পরপর দুই ওভারে কিপটে বোলিং করা সাকিবকে টানা তৃতীয় ওভার দেন অ্যান্টিগা অধিনায়ক।
তখন আর থেমে থাকেননি পুরান। বাঁহাতি স্পিনারের বলে দুই ছক্কার মাঝে মারেন একটি চার। ওভার থেকে নেন মোট ১৭ রান।
শেষ পর্যন্ত ৩ চার ও ৮ ছক্কায় ৫৩ বলে ৯০ রান করেন পুরান। হেলসের ব্যাট থেকে আসে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৪০ বলে ৫৪ রান।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হাত না মেলানোর রেষ ধরে পুরো এশিয়া কাপ বয়কটের কথা ভাবছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসি দাবি না মানায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বুধবারের ম্যাচটি নাও খেলতে পারে তারা। এমনকি বয়কট করতে পারে পুরো এশিয়া কাপ।
তবে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাতে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়েছে, বুধবার সকালের মধ্যেই এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে তারা।
“এশিয়া কাপের ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। এই বিষয়ে আলোচনা এখনও চলছে। কালকের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাকিস্তানের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই যেকোনো সিদ্ধান্তে যাবে বোর্ড।”
ঘটনা মূলত গত রোববার ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচের। সেদিন টসের সময় হাত মেলাননি দুই অধিনায়ক। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পিসিবি অভিযোগ করে, ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট দুই দলের অধিনায়ককে হাত মেলাতে মানা করেছেন।
তাই তাকে এশিয়া কাপ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় পিসিবি। এই বিষয়ে আইসিসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে টসের সময় হাত না মেলানো নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সঙ্গে ম্যাচ রেফারি পাইক্রফটের কোনো ভূমিকা ছিল না।
আইসিসি জানায়, পাইক্রফট কেবল মাঠে উপস্থিত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) কর্মকর্তাদের বার্তাই পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগাকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে কিছু না বলে এসিসির নির্দেশই তিনি জানিয়েছেন।
রোববারের ওই ঘটনার পর এখন পাকিস্তান-সংযুক্ত আরব আমিরাত ম্যাচ ঘিরে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এই ম্যাচেও ৬৯ বছর বয়সী পাইক্রফটই দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্তু সেই ম্যাচটি আদৌ আর মাঠে গড়াবে কিনা সেটিই এখন অনিশ্চিত।
ম্যাচ বয়কটের হুমকির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে পূর্ব নির্ধারিত ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলেনেও উপস্থিত হয়নি পাকিস্তান। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাচ রেফারিকে সরানোর দাবি না মানার কারণেই সংবাদ সম্মেলন বয়কট করা হয়েছে।
সেই ধারাবাহিকতায় এখন পুরো টুর্নামেন্টই তারা বয়কট করে কিনা, সেটিই দেখার!