৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০১ পিএম
দুই দলের শেষ দেখায় শেষ হাসিটা ছিল চিটাগং কিংসের। তবে এবার আগে ব্যাটিং করলেও দলটি পারল না দেড়শ করতেও। মোহাম্মাদ আলির ফাইফার সামলে একাই লড়লেন শামিম হোসেন। তাতে একটা ফাইটিং স্কোর তার দল পেল বটে, তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালকে তা পারল না সামান্য চ্যালেঞ্জ জানাতে। ম্যাচ জেতানো ফিফটিতে তাওহীদ হৃদয় দলকে এনে দিলেন দাপুটে জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশাল জিতেছে ৯ উইকেটে। কুড়ি ওভারে চিটাগংয়ের স্কোর ছিল ৯ উইকেটে ১৪৯। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বরিশাল এই রান পাড়ি দিয়েছে ১৬ বল হাতে রেখেই।
ফাইনালে যাওয়ার জন্য আরেকটা সুযোগ পাবে চিটাগং। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আগামী বুধবার তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। সোমবার প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচে দলটি ৯ উইকেটে হারায় রংপুর রাইডার্সকে।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা চিটাগংয়ের ইনিংসকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতেই পারে। যেখানে এক অংশে থাকবেন শামিম হোসেন, আর অন্য অংশে দলটির বাকি ব্যাটাররা। ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করে খাওয়াজা নাফায়কে পরের বলে রীতিমতো স্তব্ধ করে দেন কাইল মায়ার্স। অফস্ট্যাম্পের বেশ বাইরে পিচ করা ডেলিভারিটি ইনসুইং করে শেষ পর্যন্ত বোল্ড করে দেয় নাফায়কে। ব্যাটারের বিস্ময় বলে দিচ্ছিল, কতোটা ‘আনপ্লেয়বল’ ছিল ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের সেই ডেলিভারিটি।
গ্রাহাম ক্লার্কও রানের খাতা খোলেন চার মেরে। তবে তাকেও ফেরান সেই মায়ার্সই। দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে ৩৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় চিটাগং। একপ্রান্ত আগলে পারভেজ হোসেন ইমন ব্যাট করলেও ব্যাটে ছিল না আগ্রাসনের সুর। ক্রিজে গিয়ে ঠিক সেই কাজটাই করেন শামিম, ইবাদত হোসেনকে মারেন দুটি চার।
তিনি ছন্দময় ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও সেভাবে তাল মেলাতে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইমনকে। ২৬ বলে ২০ রানে থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ নবিকে দুই ছক্কা মেরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কিছুটা। অতি আগ্রাসী হয়ে রিশাদ হোসেনের বলে তাকে ক্যাচ দিয়ে ইমনের ১০০ স্ট্রাইক রেটে করা ৩৬ রানেদ ইনিংসের।
তবে আপন ছন্দে ব্যাট করা শামিম মাত্র ২৯ বলে পা রাখেন পঞ্চাশে। রিশাদের পর ইবাদতের ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে একটি করে চার ও ছয়ের মার। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে দলের প্রায় অর্ধেক রানই করেন শামিম। ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস সাজান ৯ চার ও ৪ ছক্কায়।
ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ দুই বলে উইকেট সহ ওভারে চার উইকেট নেন আলি। উপহার দেন ২৪ রানে ৫ উইকেটের দুর্দান্ত এক বোলি ফিগার।
রান তাড়ায় বরিশাল শুরু থেকেই ছিল লক্ষ্যের পথে স্থির। পাওয়ার প্লেতে কেবল বাজে বল পেলেই আগ্রাসী শটের চেষ্টা করেছেন তামিম ইকবাল ও তাওহীদ হৃদয়। আলিস আল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামের করা দুটি ওভারে আসে দুটি করে বাউন্ডারি। তাতে ছয় ওভারে হয়ে যায় ৪০ রান।
৫৫ রানের ওপেনিং জুটির অবসান ঘটান খালেদ আহমেদ। আসরে বেশ ভালো বোলিং করা এই ডানহাতি এই পেসার তামিমকে থামান ২৯ রানে। তবে বল ও রানের ব্যবধান চেপে বসার আগেই ক্রিজে গিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন দাভিদ মালান।
মালান তার স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও অন্যপ্রান্তে তাওহীদকে অনেকটা সময় স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে ৩৫ বলে মাত্র ৩৫ একই সময়ে মাত্র ১১ বলেই ২২ রান করে ফেলেন মালান, ফলে তাওহীদের ওপর চাপটা সেভাবে বাড়েনি।
আর সেটাই তিনি কাজে লাগান বাকি ইনিংস জুড়ে। ৪৫ বলে পঞ্চাশ করার পর তাওহীদ ম্যাচ দ্রুত শেষ করার দিকেই মনোযোগী হন। মালানকে দর্শক বানিয়ে একাই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। শামিমকে চার মেরে জয়সূচক রানটা আসে জাতীয় দলেই এই ব্যাটারের কাছ থেকেই।
তাওহীদ অপরাজিত থাকেন ৮২ রানে। ৫৬ বলের ইনিংস সাজান ৯টি চার ও দুই ছক্কায়। আর আগের ম্যাচে ফিফটি করা মালানের অবদান ২২ বলে ৩৪।
No posts available.
২১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৬ এম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম
অনেক সময় একটি জয়ই বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। যেমনটা হয়েছে বাংলাদেশ দলের বেলায়ও। ওয়ানডেতে ধুঁকতে থাকা দলটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জেতার পর ৩-০ ব্যবধানে সিরিজের ট্রফি ঘরে তোলার ব্যাপারে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।
আফগানিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর গেল গেল রব উঠে গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে। নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে টানা ৪ সিরিজ হেরে যাওয়ার ধাক্কা ভালোভাবে নেয়নি সমর্থকরাও। আরব আমিরাত থেকে দেশে ফেরার পর উত্তেজিত জনতার আক্রোশের মুখে পড়েন ক্রিকেটাররা।
সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে ক্যারিবিয়ানদের দাঁড়াতেই দেয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
প্রথম ম্যাচে সহজ জয়ের পর এখন আলোচনায় আসছে সিরিজ হোয়াইটওয়াশের আলোচনা। গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারের নিজেদের দেশে সেই পরাজয়ের বদলা নেওয়া সুযোগ।
সেই মিশনে মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দুপুর দেড়টায় শুরু হবে খেলা।
ওয়ানডে অধিনায়কত্ব হারানোর ইঙ্গিত আগেই পেয়েছিলেন। গতকাল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে নিশ্চিত হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাঁর জায়গায় ওয়ানডেতে পাকিস্তানের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদিকে।
রিজওয়ানকে সরানোর কোনো কারণ জানায়নি পিসিবি। তবে এমন সিদ্ধান্ত মোটেও ভালো লাগেনি পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ আমিরের। সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় বর্তমান পরিস্থিতিতে পিসিবির এই সিদ্ধান্ত যথোপযুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেন আমির।
রিজওয়ানের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে বলে মনে করেন আমির, ‘আমি মনে করি না যে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হয়েছে। সে তো কোনো বাজে ওয়ানডে অধিনায়ক ছিল না।”
আরও পড়ুন
অভাবনীয় হারের ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্যোতির রেকর্ড |
![]() |
রিজওয়ানের নেতৃত্বে বড় দুই দলের বিপক্ষে পাকিস্তানের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আমির বলেন, ‘রিজওয়ান দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জিতিয়েছে — এমন কৃতিত্ব তো আমাদের অনেক বড় বড় অধিনায়কও অর্জন করতে পারেননি। এসব আমরা ভুলে গেলে চলবে না।’
রিজওয়ান পাকিস্তানের হয়ে ২০টি ওয়ানডে ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন। এর মধ্যে তার নেতৃত্বে ৯টি জয়ের বিপরীতে দল হেরেছে ১১টিতে, জয় শতাংশ ৪৫। ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর, অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের সফরের আগে তাকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি উভয় ফরম্যাটে অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অবশ্য টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দলকে সাফল্য এনে দিতে পারেননি রিজওয়ান। তাঁর অধিনায়কত্বে পাকিস্তান চারটি ম্যাচ হারের পর টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় । নিউজিল্যান্ড সফরের আগে রিজওয়ানের জায়গায় অলরাউন্ডার সালমান আলি আগা-কে অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দেয় পাকিস্তান।
গত বছর রিজওয়ানের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে পাকিস্তান সিরিজ জিতলেও এ বছর পারফরম্যান্স অনেকটাই নিম্নগামী। বিশেষ করে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম পর্বেই ছিটকে যাওয়াটা বড় ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে বারবার অধিনায়কত্ব পরিবর্তন আনা মোটেও ভালো কিছু নয় বলছেন আমির, ‘অধিনায়কত্ব এক সিরিজ ভালো বা খারাপ হলেই মাপা উচিত নয়। আমরা সবাই সাবেক খেলোয়াড়, বিশ্লেষক — এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। আমরা আমাদের ক্রিকেটে স্থিতিশীলতা রাখতে দিই না।’
আমির আরও বলেন, “একজন অধিনায়ক রাতারাতি তৈরি হয় না। একজনকে প্রস্তুত করতে দুই-তিন বছর সময় লাগে। কিন্তু এখানে এক সিরিজ খারাপ গেলেই তাকে বদলে দেওয়া হয়। আমি মনে করি না এটা সঠিক সিদ্ধান্ত। রিজওয়ান একজন স্মার্ট অধিনায়ক, তার মধ্যে নেতৃত্বের স্বাভাবিক গুণ আছে।’
আরও পড়ুন
রিজওয়ানকে সরিয়ে পাকিস্তানের নেতৃত্বে শাহীন আফ্রিদি |
![]() |
রিজওয়ানের জায়াগায় শাহীনকে অধিনায়ক করার প্রসঙ্গে আমির বলেন, ‘যদি শাহীনকে অধিনায়ক করতেই হতো, তাহলে তাকে আগে সহ-অধিনায়ক বানানো যেত এবং সেখান থেকে বিচার করা যেত সে কেমন করছে । বিশেষ করে ওর ফিটনেস বিবেচনায় রেখে।’
পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম পরীক্ষা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজ। আগামী ৪ নভেম্বর হবে সিরিজের প্রথম ম্যাচ।
জয়ের ৪ বলে প্রয়োজন ৯ রান। বড় শটের বিকল্প ছিল না নিগার সুলতানা জ্যোতির। মিড অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারলেনও বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু সীমানা পার করতে পারলেন না। ধরা পড়ে গেলেন লং অফে। মাথা নিচু করে ধীরে পায়ে তিনি ফিরে গেলেন ডাগ আউটে।
সেখানে দাঁড়িয়ে দেখলেন বাকি ৩ বলে দলের অভাবনীয় এক পরাজয়। তীরে এসে তরী ডোবানোর গল্পে জ্যোতির দায়ও অনেক। তবে এর মাঝেই ব্যাট হাতে একটি রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে রান তাড়ায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক এখন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
চামারি আতাপাত্তুর বলে ক্যাচ আউট হওয়া বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৬ চারে ৯৮ বলে ৭৭ রানের ইনিংস। দলকে জেতাতে না পারলেও, রুমানা আহমেদকে টপকে ওয়ানডে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন জ্যোতি।
আহমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে ২৫৭ রানের লক্ষ্যে ৯৪ বলে ৭৫ রান করেছিলেন রুমানা। সেই ম্যাচটিও অবশ্য জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সেদিন ৯ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানে থেমেছিল সালমা খাতুনের দল।
প্রায় এক যুগ পর রুমানাকে ছাড়িয়ে দলকে জেতানোরও সুযোগ ছিল জ্যোতির সামনে। শেষ ১২ বলে ৬ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১২ রান। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ৯ বলের মধ্যে ২ বল স্ট্রাইকে ছিলেন জ্যোতি।
অথচ অধিনায়ক যদি দায়িত্ব নিয়ে শেষের দুই ওভারে বেশিরভাগ বল খেলতে পারতেন, তাহলে হয়তো ভিন্নও হতে পারত ম্যাচের ফল।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো গতকাল এক প্রতিবেদনে লিখেছিল, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডের নেতৃত্বও হারাতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সে প্রতিবেদনের ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই কপাল পুড়ল পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের।
রিজওয়ানকে সরিয়ে পাকিস্তান ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড পিসিবি।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আজ পিসিবির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাদা বলের কোচ মাইক হেসন, হাই পারফরম্যান্স ডিরেক্টর আকিব জাভেদ এবং নির্বাচক কমিটির সদস্যরা। সবার সম্মতিক্রমেই শাহীনকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শাহীন। পিএসএলেও তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে অধিনায়ক করা হলো ২৫ বছর বয়সী এই পেসারকে।
পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ফয়সালাবাদে, ৪ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের নামের পাশে মাত্র ১টি জয়। অথচ একটু এদিক-ওদিক হলেই তাদের জয়ের সংখ্যা হতে পারত ৪টি। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুযোগ পেয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি তারা।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির কাছে, ৩টি ম্যাচে এমন হার হৃদয়বিদারক।
পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল তারা। মাত্র ৭৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েও শেষ পর্যন্ত চাপ ধরে রাখতে পারেনি জ্যোতির দল।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ৭৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নেয় তারা। কিন্তু এরপর একের পর এক ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে পরাজয়ই সঙ্গী হয় তাদের।
এবার মুম্বাইয়ে সবশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ ২ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। কিন্তু ১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচটি হেরে যায় বাংলাদেশ।
তাই যেখানে ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যেতে পারত জ্যোতির দল, সেখানে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে তাদের।
লঙ্কানদের কাছে হারের পর অধিনায়ক বলেছেন, চাপের মুহূর্তে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি তারা।
“আমরা ৩টি ম্যাচ এমন হারলাম। এটি অবশ্যই হৃদয় বিদারক। কোনো কোনো মুহূর্তে, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের পরিকল্পনায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। আমরা নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি, স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারিনি।”
“এই ধরনের রান তাড়ায় আমরা টিভিতে দেখেছি, অন্য দলগুলো ক্রিজে নিজেদের ধরে রেখেছে। কিন্তু আমরা সেটি পারিনি। আমরা এই চাপ নিতে পারিনি। আমাদের এটি নিয়ে ভাবতে হবে।”
২০৪ রানের লক্ষ্যে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর শারমিন আক্তার সুপ্তাকে নিয়ে জুটি গড়েন জ্যোতি। তবে পেশিতে টান লাগায় ১০২ বলে ৬৪ রানে থাকা অবস্থায় মাঠ ছেড়ে উঠে যান সুপ্তা। ফলে ছেদ পড়ে ৮২ রানের জুটির।
জ্যোতির মতে, সুপ্তার ওই চোটই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
“যেভাবে ব্যাটিং করছিলাম, শুরু থেকেই এটি আমাদের ম্যাচ ছিল। আমি আর সুপ্তা খুব ভালো ব্যাটিং করছিলাম। সে যখন ক্র্যাম্পের কারণে বাইরে চলে গেল, মোমেন্টামও কিছুটা বদলে গেছে।”
“কারণ তখন স্বর্ণা এসেছে এবং আমাদের আবার জুটি গড়তে হয়েছে। ভালো যাচ্ছিল। তবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছি। এই রান তাড়ার করার মতো ছিল।”