আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সদ্য বিদায়ী ফারুক আহমেদের। শুক্তবার বিসিবির বোর্ড সভায় পরিচালকদের ভোটে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবারই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত কাউন্সিলর হিসেবে অনুমোদন পান আমিনুল। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমিনুলের বিসিবি সভাপতি হওয়ার প্রক্রিয়া। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে এনএসসি বাতিল করে ফারুক আহমেদের কাউন্সিলরশিপ। ফলে তিনি হারান সভাপতির পদ।
ফারুককের অপসারণের আগে থেকেই আলোচনায় ছিল বিসিবির সভাপতির পদে আমিনুলের নাম। তবে তিনি বিসিবির কাউন্সিলর না হওয়ায় পরিচালক হতে ছিল প্রক্রিয়ার কিছু জটিলতা। সেটা সমাধান হয় এনএসসির মাধ্যমেই।
এনএসসি থেকে বিসিবিতে পাঁচজন মনোনীত কাউন্সিলর থাকেন, যার দুজন পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই কাউন্সিলরদের একজনকে সরিয়ে তার জায়গায় আমিনুলকে মনোনয়ন দেয় এনএসসি।
এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে সরাসরি ফিরলেন দেশের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে বিসিবিতে অন্য কোনো ভূমিকায় দেখা যায়নি তাকে। এবার যোগ দিলেন বিসিবির ১৬তম সভাপতি হিসেবে।
আমিনুল বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে। তার কাজের মধ্যে রয়েছে হাই পারফরম্যান্স ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা। বিসিবির দায়িত্ব শেষে ভবিষ্যতে আবারও আইসিসিতে ফিরে যাওয়ার কথাও সম্প্রতি বলেছেন আমিনুল।
বয়স ৩৬ হলেও সাদা বলের ক্রিকেটে এখনও বিবেচনা করা হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পাওয়ার হিটারদের একজন হিসেবে। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নিজেকে সেভাবে দেখছিলেন না বলেই আচমকাই সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের। কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, দলের জন্য নিজেকে বোঝা বলে মনে হচ্ছিল তার।
অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
৩৬ বছর বয়সী ম্যাক্সওয়েল সোমবার ‘দ্য ফাইনাল ওয়ার্ড’ পডকাস্টে তার ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ২০ ওভারের ফরম্যাটে খেলবেন বলে জানিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেট থেকে এখনও অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেননি, তবে তার আবার টেস্টে খেলার সম্ভাবনা আর নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন
চোটে সিরিজ শেষ শরিফুলের |
![]() |
হঠাৎ কেন এভাবে অবসর, সেটা উল্লেখ করতে গিয়ে ম্যাক্সওয়েল টেনে আনেন ২০২২ সালে পা ভাঙার পর থেকে ওয়ানডেতে খেলার মত তার শারীরিক সক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয়টি।
“আমার কাছে মনে হচ্ছিল, আমার শরীরের নানা প্রতিক্রিয়ার কারণে ক্রমেই দলের জন্য বোঝা হয়ে যাচ্ছি। আমি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান জর্জ বেইলির সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে ২০২৭ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা উঠলে আমি বলি, ‘আমি সেখানে নিজেকে দেখছি না। এখন সময় এসেছে আমার জায়গায় নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়ার।’”
দুইবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী ম্যাক্সওয়েল যোগ দিলেন আরেক তারকা ব্যাটার স্টিভেন স্মিথের সাথে, যিনি সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।
ওয়ানডের পরিসংখ্যান দিয়ে ম্যাক্সওয়েলকে বিচার করতে গেলে তাকে আহামরি কোনো ক্রিকেটার মনে না হওয়ার কথা। ১৪৯ ম্যাচে ৩৩.৮১ গড়ে করেছেন ৩ হাজার ৯৯০ রান, আর বল হাতে ৭৭ উইকেট। তবে ম্যাক্সওয়েল নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা করেছেন স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে৷ তার ১২৬.৭০ স্ট্রাইক রেট ওয়ানডে ইতিহাসে ২০০০ রান পার করা ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ম্যাক্সওয়েলের ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তটি আসে ২০২৩ বিশ্বকাপে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে। প্রায় ৩০০ রানের টার্গেটে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে ৯১ রান থেকে জেতান অপরাজিত ২০১ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস, যা খেলার পথে তিনি বারবার পড়েন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে।
আরও পড়ুন
ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজ হার বাংলাদেশের |
![]() |
এটি ছিল ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়র মধ্যে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, এই ফরম্যাটে রান তাড়ায় প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, এবং ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ছয় নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
প্রথম দুই ম্যাচের মত আরও একবার জ্বলে উঠলেন তানজিদ হাসান তামিম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন পারভেজ হোসেন ইমন, জুটিতেই এল শতক। আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে এরপর অনায়াসেই দলগুলো এগিয়ে যায় দুইশ প্লাস স্কোরের দিকে। তবে মিডল অর্ডারে সেভাবে কেউই পারলেন না ফিনিশিংটা দিতে। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে মোহাম্মদ হারিসের অনবদ্য শতকে পেশাদার রান তাড়ায় সহজেই জয় তুলে নিল পাকিস্তান। তাতে একরাশ হতাশায় শেষ হল বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান জিতেছে ৭ উইকেটে। বাংলাদেশের করা ৬ উইকেটে ১৯৬ রান দলটি পাড়ি দিয়েছে ১৬ বল হাতে রেখেই। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল পাকিস্তান।
ব্যাট হাতে ফিনিশিংটা ভালো না হলেও বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় ভালোই। আগের ম্যাচে মলিন থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাহিবজাদা ফারহানকে। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ দেন রিশদ হোসেনকে।
ক্রিজে গিয়েই হাসান মাহমুদকে দুই চার মেরে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে শুরুটা করেন মোহাম্মদ হারিস। টি-টোয়েন্টি অভিষেকের ম্যাচে খালেদ আহমেদ প্রথম ওভারেই ছিলেন খরুচে। টানা দুই বলে হারিস মারেন চার ও ছক্কা। অন্যপ্রান্তে সাইম আইয়ুব অবশ্য ব্যাট চালাচ্ছিলেন ধীরলয়ে, প্রথম ২৪ বলে করেন ২৪ রান!
তবে সেই চাপ বুঝতে না দিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন হারিস। ছয় ওভারেই রান হয়ে যায় ৫৬। নিজের প্রথম ওভারে এসে ১২ রান দেন আগের দুই ম্যাচে ৫০-এর বেশি রান দেওয়া রিশাদ। পার্টটাইমার শামিম হোসেন তার করা প্রথম ওভারে ছক্কা হজম করেন সাইমের কাছে। মাত্র ২৫ বলে ফিফটি তুলে নেন হারিস।
ইনিংস এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ক্রমেই হাত খুলে খেলা সাইম ছিলেন ফিফটির পথেই। তবে ফিরতি স্পেলে এসে স্লোয়ারে তাকে বিভ্রান্ত করেন তানজিম। ২৯ বলে ৪৫ রানে থামেন তরুণ এই ওপেনার।
চার মেরে রানের খাতা খোলেন নাওয়াজ। অন্যপ্রান্তে মিরাজ আক্রমণে এসে নাওয়াজের হাতে ছক্কা ও চার খাওয়ার পর একই ওভারে হাসেন শেষ হাসি। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ২৬ রানে আউট হন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
ভুলে যাওয়ার মত এক সিরিজে আরও একবার মাঝের ওভারে দলকে হতাশ করেন রিশাদ। তিন বাউন্ডারিতে তৃতীয় ওভারে দেন ১৬ রান। দলের জয় নিশ্চিত করার পথে হারিস তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। অপরাজিত থাকেন মাত্র ৪৬ বলে ১০৭ রানে। আর অধিনায়ক সালমান আগা করেন ১৫।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ পেয়েছিল স্বপ্নের এক শুরু। সাম্প্রতিক সময়ে দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার তানজিদ বজায় রাখেন তার ফর্ম। সিরিজে প্রথমবারের মত রানের দেখা পাওয়া ইমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভড়কে দেন পাকিস্তানের বোলারদের। ফলে প্রতি ওভারেই হয় বাজে বল, আর রানও আসতে থাকে চার-ছক্কায় দ্রুততার সাথেই।
দুজনের মধ্যে ইমন ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। আবরার আহমেদের এক ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মেরে মাত্র ২৭ বলে পা রাখেন পঞ্চাশে। সাথে তানজিদও খেলেন কিছু বড় শট। তাতে ১০ ওভারে ৯৯ রান হয়ে যায়। এরপর অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেননি কেউই।
৩২ বলে ৪২ করে ফাহিম আশরাফের বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তানজিদের ইনিংস। পরের ওভারেই ফের উইকেট। এবার শাদাব খানের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন ইমন, শেষ হয় তার ১৯৪ স্ট্রাইক রেটে খেলা ৬৬ রানের ইনিংস, যা তিনি সাজান ৭ চার ও ৪ ছক্কায়।
তাওহীদ হৃদয় ও লিটন দাস এরপর কিছুটা চেষ্টা করেন রানের গতি ধরে রাখার। তবে এই সময়েই ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই দুজনের পাশাপাশি শামিম ও মিরাজের বিদায়ে রানের গতি কমে যায় বাংলাদেশের। ফলে আশা জাগিয়েও আর করা হয়নি ২০০ প্লাস স্কোর, যা শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য যথেষ্ট বলে প্রমাণিত আর হয়নি।
সিরিজ হার নিশ্চিত হওয়ার পর বাংলাদেশ শিবিরে আসল দুঃসংবাদ। চোটের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মিস করবেন পেসার শরিফুল ইসলাম, নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এক বিবৃতিতে বিসিবি আরও জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকবেন শরিফুল। পাকিস্তানের সাথে প্রথম দুই ম্যাচেই একাদশে ছিলেন এই বাঁহাতি এই পেসার।
আরও পড়ুন
অনুতপ্ত রাবাদা অতিরিক্ত ক্ষমা চাইতে অপারগ |
![]() |
বাংলাদশ জাতীয় দলের ফিজিও দেলোয়ার হোসেন সিভা বিসিবির দেওয়া বলেছেন, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বোলিং করার সময় চোট পান শরিফুল।
“শরিফুল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি চলাকালীন বোলিংয়ের সময় চোট পেয়েছেন। পরবর্তীতে এমআরআই স্ক্যানে দেখা গেছে, তার ডান পায়ের রেক্টাস ফেমোরিস মাসলে গ্রেড ১ মাত্রার স্ট্রেইন রয়েছে। এই চোটের কারণে শরিফুলকে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহ বিশ্রাম ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বিসিবি মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে তার রিহ্যাব চলবে।”
শরিফুলের চোট লিটন দাসের দলের জন্য বড় এক ধাক্কাই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টিতে হারের পর পাকিস্তানের সাথে প্রথম দুই ম্যাচেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচ গত শুক্রবার নিজের প্রথম ওভারে মাত্র তিন বল করার পর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন শরিফুল। প্রথম ম্যাচে ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
পেশাদার ক্যারিয়ারে আগে নেই এমন ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ে কাগিসো রাবাদার ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়াটা তাই বিস্ময়ের জন্মই দিয়েছিল। বড় শাস্তির আশঙ্কা থাকলেও পার পেয়ে যান অল্পেই। পুরো ঘটনাটি যেভাবে হয়েছে, তাতে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সতীর্থদের জন্য খারাপই লাগছে অভিজ্ঞ এই পেসারের। তবে এটাও বললেন, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্ষমা চাইবেন না তিনি।
চলমান আইপিএলের মাঝপথে রাবাদা দেশে ফিরে যান আচমকাই। এরপর জানা যায়, মাসখানেক আগে নেওয়া ড্রাগ টেস্টে তিনি পজিটিভ হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রাগ-নিরাপত্তা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী এরপর তাকে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড দেয় এক মাসের নিষেধাজ্ঞা। সেটা কাটিয়ে ডানহাতি এই পেসার এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার।
আরও পড়ুন
ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজ হার বাংলাদেশের |
![]() |
সেই ম্যাচ খেলতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সাথে সেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন রাবাদা।
“আমার সতীর্থদের কাছে আমি দায়বদ্ধ। আমরা সবাই একসঙ্গে অনেক পথ পাড়ি দিয়েছি, আর তাই সবচেয়ে কাছের মানুষদের কাছে আমার একটা ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন।”
নিজের ভুলকে স্বীকার করলেও অতিরিক্ত অনুশোচনায় ডুবতে নারাজ রাবাদা। “জীবন এগিয়ে যায়। আমি কখনোই ‘আমি শুধু ক্ষমা চাই' ধরনের কথা বোলার মানুষ না। তবে আমি আবারও বলছি, আমি এই কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করি না।
তবে সতীর্থরা চাইলে নিজের অবস্থান খুলে বলতেও প্রস্তুত রাবাদা।
“এই পরিস্থিতি মোটেও আদর্শ নয়। বলে রাখি, আমি কিন্তু এখানে বাহবা পাওয়ার জন্য আসিনি। আমি আবারও দলের সাথে যোগ দিচ্ছি। আমি ইতোমধ্যেই তাদের সাথে কথা বলেছি। আর সামনে যখন দীর্ঘ সময় একসঙ্গে থাকব, তখন এই বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাবে।”
রাবাদা গত মার্চে আইপিএল থেকে প্রথমে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে হঠাৎ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যান। পরে জানা যায়, গেল জানুয়ারিতে এসএ২০ চলাকালে তার মাদক পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তিনি যেসব নিষিদ্ধ মাদক গ্রহণ করেছিলেন, তার মধ্যে ছিল ক্যানাবিস, কোকেইন, হেরোইন বা এক্সট্যাসি।
আরও পড়ুন
ফারুকের অপসারণ, আইসিসির নিয়ম যা বলছে |
![]() |
এক মাসের নিষেধাজ্ঞা রাবাদা আবারও আইপিএলে ফিরে গুজরাট টাইটানসের সাথে যোগ দেন। খেলেন মোটে দুটি ম্যাচ। তবে ঠিক কী কারণে তিনি নিষিদ্ধ মাদক গ্রহণ করেছিলেন, সেই বিষয়ে তিনি এখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেননি।
ভেন্যু এক, আগে ব্যাটিং করা পাকিস্তানের স্কোরও ঠিক একই। রান তাড়ায় প্রথম ম্যাচের মত তানজিদ হাসান তামিম খেললেন প্রায় একই রকমের ক্যামিও ইনিংস। যথারীতি তিনি আউট হতেই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের জয়ের আশা। অন্য ব্যাটারদের সীমাহীন ব্যর্থতায় টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচ হারার অনেক আগেই হেরে বসল লিটন দাসের দল। একমাত্র প্রাপ্তি তানজিম হাসান সাকিবের ঝড়ো এক ফিফটি। এই বোলিং অলরাউন্ডার লড়াই করে জানান দিলেন, চাইলেই এই উইকেটে রান করা যায়।
লাহোরে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান পেয়েছে ৫৭ রানের দুর্দান্ত এক জয়। স্বাগতিকরা স্কোর দাঁড় করিয়েছিল ৬ উইকেটে ২০১। বাংলাদেশ অলআউট হওয়ার টেনেটুনে করতে পারে ১৪৪ রান।
এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ আগামী রোববার।
প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশের সামনে একই টার্গেট দিয়েছিল পাকিস্তান। সেদিন তানজিদ শুরুটা উড়ন্ত এনে দিলেও অন্য ব্যাটাররা পারেননি সেই সুর ধরে রাখতে। এদিন রান তাড়ায় সূচনাটা হয় আরও দারুণ। সালমান আঘার করা প্রথম ওভারে টানা তিন বাউন্ডারির সাথে এক্সট্রা কভারে ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে ১৭ রান রান আদায় করেন তানজিদ।
একপ্রান্ত থেকে তার আগ্রাসনে তিন ওভারেই হয়ে যায় ৩৮ রান। তবে পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাট হাসেনি টানা দ্বিতীয় ম্যাচে। হারিস রউফের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এক চারে করেন মাত্র ৮ রান। পরের ওভারেই ফের উইকেটের পতন।
এর এবার পাকিস্তান শিবিরে উল্লাস বয়ে আনেন ফাহিম আশরাফ, কারণ ডেঞ্জারম্যান তানজিদকে তিনি থামিয়ে দেন ৩৩ রানে। তরুণ এই ওপেনার ১৯ বলের ইনিংস সাজান ৫ চার ও এক ছক্কায়।
বাংলাদেশের ম্যাচ জেতার তাড়না বা সম্ভাবনা, দুটিরই যেন শেষ সেখানেই। লিটন এক ডিজিটে ফেরার পর আবরার আহমেদ মিডল অর্ডারে ধস নামান টানা দুই বলে তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলিকে শিকার বানিয়ে।
তাসের ঘরে মত ভেঙে পড়া ব্যাটিং লাইনআপে দাঁড়াতে পারেননি স্বীকৃত ব্যাটারদের আর কেউই। শামিম হোসেনকে অনুসরণ করে সিঙ্গেল ডিজিতে রিশাদ হোসেনও যখন সাজঘরে পথ ধরেন, ৭৭ রানেই নেই তখন বাংলাদেশের স্কোর ৭৭।
এরপর ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে লড়াই করেন তানজিম হাসান সাকিব। হারিসকে হাঁকান টানা দুই ছক্কা। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ আউট হওয়ার আগে করেন ২৩ রান।
ম্যাচ থেকে অনেক আগেই ছিটকে যাওয়া বাংলাদেশের এরপর হারের ব্যবধানটাই কেবল কমান তানজিম। খুশদিল শাহকে মারেন টানা দুই ছক্কা। মাত্র ২৯ বলে পা রাখেন পঞ্চাশে, যা এই ফরম্যাটে তার প্রথম। এরপরই অবশ্য সাইমকে ছক্কা মারতে গিয়ে শেষ হয় তানজিমের প্রতিরোধ। ১৯ রানে ৩ উইকেট আবরারের ঝুলিতে।
এর আগে বল হাতে বাংলাদেশ শুরু করে এই ম্যাচ দিয়ে দলে আসা মিরাজকে দিয়ে, আর অন্যপ্রান্তে পার্টটাইমার শামীম বল হাতে নেন শরিফুল ইসলাম তিন বল করার পর চোট পেলে। দ্বিতীয় ওভারে রান আউটে কাঁটা পড়েন সাইম আইয়ুব। মিরাজের করা দ্বিতীয় ওভারে দুটি ছক্কা মেরে সেই ধাক্কা বুঝতে দেননি সাহিবজাদা ফারহান।
স্পেলে নিজের প্রথম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা হজমে ১৭ রান গুনেন হাসান। তার দ্বিতীয় ওভারে আসে ১৬ রান। তাতে পাওয়ার প্লেতেই শক্ত অবস্থানে চলে যায় পাকিস্তান, রান হয় ৬৭। নিজের প্রথম ওভারটা ভালো করলেও দ্বিতীয় ওভারে খরুচে ছিলেন রিশাদ। তাকে দুই ছক্কায় ওড়ান ফারহান।
তার আগেই পূরণ করেন ফিফটি, মাত্র ২৯ বলে। অন্যপ্রান্তে আগের ম্যাচে দারুণ এক ইনিংস খেলা মোহাম্মদ হারিসও রান করছিলেন দ্রুততার সাথেই। তাতে দশ ওভারেই পূরণ হয় দলীয় শতক। ফিরতি স্পেলে এসে হারিসকে ৪১ রানে স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাচ বানান তানজিম।
এক ছক্কা হজমের পরের বলেই ফারহানকে ফেরান রিশাদ, তবে তার আগে তিনি খেলেন মাত্র ৪১ বলে ৭৪ রানের মারমুখী এক ইনিংস। ওই একটি উইকেট পেলেও তরুণ এই লেগ স্পিনার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে চার ওভারে দেন পঞ্চাশ বা তার বেশি রান (৫৫ ও ৫০)।
সেই তুলনায় শামীম ভালোই বল করেন। হাতে উইকেট থাকলেও শেষের দিকে পাকিস্তানের ব্যাটাররা সেভাবে রান বের করতে পারেননি। বাংলাদেশের বোলাররা ডেথ ওভারে তুলনামূলক ভালো বল করে স্কোরটা ২০১-এর বেশি যেতে দেননি।