২১ অক্টোবর ২০২৫, ৯:৩১ পিএম

মূল ম্যাচের শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ৫ রান। বোলিংয়ে সাইফ হাসান। প্রথম দুই বলে রান নিতে ব্যর্থ আকিল হোসেন। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিনি স্ট্রাইক দিলেন সেট ব্যাটার শাই হোপকে। তবে হোপও ১ রানের বেশি নিতে পারলেন না।
সমীকরণ দাঁড়াল ২ বলে ৩ রান। বড় শট মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন আকিল। শেষ বলে উড়িয়ে মারলেন শেষ ব্যাটার খ্যারি পিয়েরে। স্কয়ার লেগের দিকে গিয়ে ক্যাচ নিতে পারলেন না নুরুল হাসান সোহান। এরই মধ্যে ২ রান নিয়ে নিলেন হোপ ও পিয়েরে।
ফলে টাই হয়ে যায় ম্যাচ। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই প্রথম টাই হয় বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ।
সুপার ওভারে বোলিংয়ের দায়িত্ব নেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন শাই হোপ। পরের বলে মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন শেরফান রাদারফোর্ডকে। ক্রিজে আসেন ব্র্যান্ডন কিং। পরের তিন বলে ৫ রান নিয়ে নেন হোপ ও কিং।
শেষ বলে মোস্তাফিজের কাটার হোপের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে। ফলে ১০ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সফরকারীদের হয়ে বোলিংয়ে আসেন আকিল হোসেন। ব্যাটিংয়ে নামেন সাইফ ও সৌম্য সরকার। প্রথম বলই আকিল করেন ওয়াইড। পরেরটি 'নো' বল করেন তিনি। সৌম্য নিয়ে নেন ২ রান। পরে ফ্রি হিটে আসে ১ রান। স্ট্রাইক পান সাইফ।
সাইফ প্রথম বল খেলেন ডট। পরের বলে ১ রান নিয়ে সৌম্যকে ব্যাটিং দেন তিনি। ৩ বলে ৫ রানের সমীকরণে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ আউট হন সৌম্য। পরে ব্যাটিংয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। লেগ বাই থেকে ১ রান নেন তিনি।
শেষ বলে বাকি থাকে ৪ রান। ওয়াইড করে বসেন আকিল। পরের বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি সাইফ। তাই সুপার ওভারে ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
মূল ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২১৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসও থামে ৯ উইকেটে ২১৩ রানে।
সুপার ওভার রোমাঞ্চের আগে ম্যাচটি ছিল পুরোপুরি স্পিন রাজত্বের। প্রথম ইনিংসে পুরো ৫০ ওভার স্পিনার দিয়ে বোলিং করিয়ে অনন্য ইতিহাস গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪ ওভার স্পিনার দিয়ে করানোর রেকর্ড ছিল শ্রীলঙ্কার, ৩টি আলাদা ম্যাচে।
পরের ইনিংসে বাংলাদেশেরও বেশিরভাগ বোলিং করেন স্পিনাররাই। সব মিলিয়ে পুরো ম্যাচে দুই দলের স্পিনাররা করেন ৯২ ওভার। এটিও বিশ্ব রেকর্ড। ভারতের দেরাদুনে ২০১৯ সালে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে দুই দলের স্পিনাররা মিলে করেছিলেন ৪৭০ বল বা ৭৮.২ ওভার।
ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে সাইফ হাসানের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দীর্ঘ ভ্রমণ করে আগের মাঝ রাতে ঢাকায় পৌছেই দুপুরে খেলতে নেমে যাওয়া আকিল হোসেনের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের ওপেনার।
স্পিন স্বর্গে এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনরা।
একপ্রান্ত আগলে রেখে এগোচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। দলের একশ পূর্ণ হওয়ার পর তিনিও ধরেন ড্রেসিং রুমের পথ। ৩ চার ও ১ ছক্কায় মাত্র ৫০.৫৬ স্ট্রাইক রেটে ৮৯ বলে ৪৫ রান করেন সৌম্য। ক্যারিয়ারে অন্তত ২০ বল খেলা ইনিংসে এটিই তার সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট।
নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেনের আগে নামানো হয় নাসুম আহমেদকে। তাকে নিয়ে ২৫ রানের জুটি গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর সোহানের সঙ্গে সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ৩৫ রান। ২৪ বলে ২৩ রান করে ফেরেন সোহান।
৪৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৬৩ রান। মনে হচ্ছিল দুইশও করতে পারবে না তারা। তবে ভিন্ন ভাবনাই ছিল রিশাদের। স্রোতের বিপরীতে ঝড় তোলেন তরুণ অলরাউন্ডার। ৩টি করে চার-ছক্কায় ২৭৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৪ বলে ৩৯ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে অন্তত ১০ বলের ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড। রিশাদের ঝড়ে ২১৩ রান করে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচ পর পুরো ৫০ ওভার খেলার কৃতিত্বও দেখায় তারা।
অষ্টম উইকেটে মিরাজের সঙ্গে ২৪ বলে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫০ রানের জুটি গড়েন রিশাদ। ৫৮ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩ উইকেট নিতে ১০ ওভারে ৬৫ রান দেন গুদাকেশ মোতি। এছাড়া আকিল হোসেন ও আলিক আথানেজ নেন ২টি করে উইকেট। ১০ ওভারে ৩ মেডেনসহ মাত্র ১৪ রান খরচ করেন আথানেজ।
পরে রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই ব্র্যান্ডন কিংয়ের উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে শুরুর চাপ সামাল দেন আলিক আথানেজ ও কেসি কার্টি। তবে দুজনের কেউই সম্ভাবনাময় ইনিংস বড় করতে পারেননি।
আথানেজ ২৮ ও কার্টি ৩৫ রান করে ফেরেন। এরপর রিশাদ, তানভির ইসলাম, নাসুমদের ঘূর্ণির সামনে আকিম অগাস্ত, শেরফান রাদারফোর্ড, মোতি, রস্টোন চেজরাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
একপ্রান্তে আগলে রেখে কিছুক্ষণ চেষ্টা করেন শাই হোপ। তাকে বেশ ভালো সঙ্গ দেন জাস্টিন গ্রিভস। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৪৪ রানের জুটি। ৪৫তম ওভারে কভার থেকে সরাসরি থ্রোয়ে ২৬ রান করা গ্রিভসকে রান আউট করেন মিরাজ।
এরপর আকিল হোসেনকে নিয়ে শেষের চেষ্টা করেন হোপ। নবম উইকেট জুটিতে আসে ৩৪ রান। পরে শেষ ওভারে সাইফের সেই জাদু। ৫ রানের সমীকরণে মাত্র ৪ রান দিয়ে ম্যাচ সুপার ওভারে নেন সাইফ। ৬৫ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন হোপ।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন রিশাদ। এছাড়া নাসুম ও তানভির নেন ২টি করে উইকেট।
একই মাঠে বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২১৩/৭ (সাইফ ৬, সৌম্য ৪৫, হৃদয় ১২, শান্ত ১৫, মাহিদুল ১৭, মিরাজ ৩২, নাসুম ১৪, সোহান ২৩, রিশাদ ৩৯; আকিল ১০-১-৪১-২, চেজ ১০-২-৪৪-০, পিয়েরে ১০-০-৪৩-০, মোতি ১০-০-৬৫-৩, আথানেজ ১০-৩-১৪-২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২১৩/৯ (আথানেজ ২৮, কিং ০, কার্টি ৩৫, অগাস্ত ১৭, হোপ ৫৩*, রাদারফোর্ড ৭, মোতি ১৫, চেজ ৫, গ্রিভস ২৬, আকিল ১৬, পিয়েরে ২*; নাসুম ১০-০-৩৮-২, মিরাজ ১০-১-৩৮-০, মোস্তাফিজ ৮-০-৪০-০, তানভির ১০-০-৪২-২, রিশাদ ১০-০-৪২-৩, সাইফ ২-০-৯-১)
ফল: ম্যাচ টাই (সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ রানে জয়ী)
No posts available.
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:৩৩ পিএম

দীর্ঘ ছয় বছরের প্রতীক্ষা শেষে গত নভেম্বরে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ফিরেছিল টেস্ট। সেই ম্যাচে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল পিচের অসম বাউন্স। তবে কলকাতা টেস্টের পিচকে ‘সন্তোষজনক’ রেটিং দিয়েছেন আইসিসি ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন।
এই রেটিংয়ের ফলে শাস্তি বা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়েছে ইডেন গার্ডেন্স। আইসিসির চার ধাপের পিচ রেটিং ব্যবস্থায় ‘সন্তোষজনক’ দ্বিতীয় স্তরের মান। এর উপরে রয়েছে ‘ভালো’ ও ‘খুব ভালো’ আর নিচের দুই ধাপ হলো ‘অসন্তোষজনক’ ও সর্বনিম্ন ‘অনুপযুক্ত’।
কলকাতার টেস্টে প্রথম ওভার থেকেই পিচে অসম বাউন্স চোখে পড়ে। ম্যাচ যত এগিয়েছে, ততই বেড়েছে টার্নের মাত্রা। পেসার ও স্পিনার-উভয়ের জন্যই সহায়ক হয়ে ওঠে উইকেটটি। পুরো ম্যাচে কোনো দলই এক ইনিংসে ২০০ রান করতে পারেনি। চতুর্থ ইনিংসে ১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৯৩ রানে।
ম্যাচ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় ইডেন গার্ডেন্সের পিচ। ম্যাচ শেষে ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর বলেন, ‘আমরা যা চেয়েছিলাম পিচ ঠিক তেমনই ছিল।’
যদিও গোয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্টের আগে ব্যাটিং কোচ সিতাংশু কোটাক ভিন্ন বক্তব্য দেন। কোটাক জানান, ইডেন গার্ডেন্সের কিউরেটর সুজন মুখার্জিকে রক্ষা করতেই এমন মন্তব্য করেছিলেন গম্ভীর। তাঁর মতে, অসম বাউন্সে ভারতীয় দল বিস্মিত হয়েছিল এবং এমন পিচ তাঁরা আদৌ চায়নি।
গোয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট তুলনামূলক ব্যাটিং-বান্ধব পিচ ছিল। সেখানেও বড় জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নেয় প্রোটিয়ারা।
সম্প্রতি পিচের রেটিং নিয়ে আলোচনা চলছে জোরেশোরেই। অ্যাশেজের বক্সিং ডে টেস্ট শেষে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) পিচকে ‘অসন্তোষজনক’ ঘোষণা করেছে আইসিসি। এর সঙ্গে মাঠটি পেয়েছে ১ ডিমেরিট পয়েন্টও। আলোচনা হলেও বলা যায় এই যাত্রায় বেঁচে গেল ইডেন গার্ডেন্স।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
আজ এক শোকবার্তায় বিসিবি সভাপতি বলেন,
‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য এক গভীর ক্ষতি। পাশাপাশি যাঁরা তাঁর নেতৃত্ব ও জনসেবার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন- সবার জন্যই এটি এক বেদনাদায়ক মুহূর্ত।’
শোকবার্তায় ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে আমিনুল ইসলাম বলেন,
‘তিনি ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি যে উৎসাহ ও সমর্থন যুগিয়েছিলেন সে জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর আগ্রহ এবং দেশকে একসূত্রে গাঁথার ক্ষেত্রে এই খেলাটির গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি ছিল আন্তরিক ও দীর্ঘস্থায়ী।’
তিনি বলেন,
‘বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের ক্রিকেট অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়, যা দেশের ক্রিকেটের শক্ত ভিত গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।’
বিসিবি সভাপতি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের আধুনিকায়নের পথে খালেদা জিয়ার প্রয়াত পুত্র আরাফাত রহমানের অবদানও অবিচ্ছেদ্য। তাঁর দূরদর্শী চিন্তা ও উদ্যোগ দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
শোকবার্তায় বিসিবির পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার, স্বজন এবং দেশ-বিদেশে অবস্থানরত শোকাহত মানুষের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আমিনুল ইসলাম বলেন,
‘আল্লাহ যেন বেগম খালেদা জিয়াকে জান্নাত নসিব করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের এই শোক সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য দান করেন।’
উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার ভোর ৬ টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন। এর মধ্যে ছিল লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যা।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের আবহে আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দুটি ম্যাচ স্থগিত রাখা হয়েছে। শোক ও সম্মান জানিয়ে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
ম্যাচ স্থগিত থাকলেও বিকেলে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
বুলবুল বলেন,
‘১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের পর আমাদের বিভিন্ন জায়গায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল তৎকালীন বিএনপির পক্ষ থেকে মিন্টু রোডে আয়োজিত সংবর্ধনা। আমি তখন দলের ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলাম। বক্তৃতার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি ভুল বলায় পুরো মঞ্চ কিছুক্ষণ নীরব হয়ে যায়। পরে সঙ্গে সঙ্গে ভুল সংশোধন করি। ঘটনাটি আজও আমার মনে গভীরভাবে দাগ কেটে আছে।’
তিনি আরও বলেন,
‘আমরা যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করতাম, তখন তিনি আমাদের দাওয়াত দিতেন। আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত ছিল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার গ্রহণ—যে পুরস্কারটি তিনি নিজ হাতে আমার গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন,
‘বিসিবির পক্ষ থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেছি। আগামীকাল শোক দিবস উপলক্ষে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই—আমরা সবাই দেশের নাগরিক এবং আমরা সবাই শোকাহত।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় সহায়তার কথা স্মরণ করে বুলবুল বলেন,
‘২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন ভেন্যু নির্মাণে যে সহযোগিতা পাওয়া গেছে, তা দেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।’

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটে মঙ্গলবার স্থগিত করা দুই ম্যাচের নতুন সূচি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সিলেটে আগামী ৪ জানুয়ারি (রোববার) হবে এই ম্যাচ দুইটি।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিসিবি জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকারের ঘোষিত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর কোনো বিপিএল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে না। এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১ ও ২ জানুয়ারি) নির্ধারিত ম্যাচগুলো পূর্ব ঘোষিত সূচি অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল সিলেট টাইটান্স ও চট্টগ্রাম রয়্যালসের। পরে সন্ধ্যার ম্যাচে খেলার কথা রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালসের। এখন আগামী রোববার খেলবে তারা।
এর আগে বিকেলে বিপিএলের ফেইসবুক পেজে প্রকাশিত এক বার্তায় জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবারের ম্যাচগুলো হবে বুধবার। তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বিসিবি।
এদিকে আগামী সোমবার থেকে বিপিএলের খেলা হওয়ার কথা ছিল চট্টগ্রামে। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে পরবর্তী ম্যাচগুলোর সংশোধিত সূচি শিগগিরই প্রকাশ করবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ওমান। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলটির নেতৃত্ব দেবেন ওপেনার জতিন্দর সিং। তবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আমির কালিমকে দলে না রাখা। এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্সের পরও ৪৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জায়গা পাননি চূড়ান্ত স্কোয়াডে।
ঘোষিত দলে সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উইকেটকিপার–ব্যাটার ভিনায়ক শুক্লা। বছরের শুরুতে এশিয়া কাপে যে দল খেলেছিল, সেখান থেকে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছে ওমান ক্রিকেট বোর্ড।
নতুন করে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে ও জে ওডেড্রা। পাশাপাশি পেস আক্রমণ শক্তিশালী করতে দলে যুক্ত করা হয়েছে শফিক জান ও জিতেন রামানন্দিকে। রামানন্দি, ওডেড্রা ও ওয়াসিম আলি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলেছিলেন। শফিক জান ওমানের হয়ে অভিষেক করেন এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে, যেখানে খেলেছিলেন সোনাভালেও।
এশিয়া কাপের দলে থাকা কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে এবার বাদ পড়েছেন আমির কালিম। সেই টুর্নামেন্টে তিনি ওমানের হয়ে দুটি ফিফটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও খেলেন। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে চূড়ান্ত বিশ্বকাপ দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
অধিনায়ক জতিন্দর সিং ওমানের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আগের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি দলে জায়গা পাননি, তবে এবার নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন তিনি।
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে খেলবে ওমান। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ওমান।
ওমানের বিশ্বকাপ দল:
জতিন্দর সিং (অধিনায়ক), ভিনায়ক শুক্লা (সহ-অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাদিম, শাকিল আহমদ, হাম্মাদ মির্জা, ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে, ফয়সাল শাহ, নাদিম খান, সুফিয়ান মেহমুদ, জে ওডেড্রা, শফিক জান, আশিস ওডেডারা, জিতেন রামানন্দি, হাসনাইন আলি শাহ।