
ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক অধ্যায়ে জুড়ে গেল রঞ্জি ট্রফির নাম। ভারতের ঐতিহ্যবাহী প্রথম শ্রেণির এই টুর্নামেন্টে একই ইনিংসে হ্যাটট্রিক করলেন দুই বোলার। দীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
আসামের তিনসুকিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা মাঠে শনিবার ম্যাচের প্রথম দিন স্বাগতিক দলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন সার্ভিসেসের বাঁহাতি পেসার মোহিত জাঙরা ও বাঁহাতি স্পিনার অর্জুন শর্মা। ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই এক ইনিংসে দুই বোলারের পূর্ণ হ্যাটট্রিকের প্রথম ঘটনা।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগেও এক ইনিংসে দুটি হ্যাটট্রিক দেখা গেছে। তবে দুবারই সেটি করেছিলেন একজন বোলার।
আরও পড়ুন
| এনসিএলে প্রথম দিনেই চার সেঞ্চুরি |
|
১৯০৭ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম এক ইনিংসে দুই হ্যাটট্রিক করেন মিডলসেক্সের অ্যালবার্ট ট্রট। পরে ১৯৬২ সালের রঞ্জি ট্রফিতে সার্ভিসেসের হয়ে নর্দার্ন পাঞ্জাবের বিপক্ষে এক ইনিংসেই দুটি হ্যাটট্রিক করেন জোগিন্দর সিং রাও।
এর বাইরে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ান একাদশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাইভ রাইস ও গার্থ লা রুক্সও হ্যাটট্রিকের দেখা পান। তবে রাইসের প্রথম দুটি উইকেট ছিল প্রথম ইনিংসে। তাই একই ইনিংসে ভিন্ন দুই বোলারের হ্যাটট্রিক মূলত মোহিত ও অর্জুনেরই।
ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে অর্জুনের স্পিন ভেলকির সামনে পড়ে আসাম। ১২তম ওভারে পরপর তিন বলে রিয়ান পরাগ, সুমিত গদিগাওঙ্কার ও শিবশংকর রয়কে আউট করেন বাঁহাতি স্পিনার।
পরে ১৫তম ওভারের শেষ বলে প্রদুন সাইকিয়া এবং ১৭তম ওভারের প্রথম দুই বলে মুখতার হোসেন ও ভর্গব লহকারকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন মোহিত।
জোড়া হ্যাটট্রিকের তোপে মাত্র ১০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় আসাম। ৪৬ রানে ৫ উইকেট নেন অর্জুন আর মোহিতের শিকার ৫ রানে ৩ উইকেট।
আরও পড়ুন
| অ্যালেনার ইতিহাস, প্রোটিয়াদের গুঁড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া |
|
এরপর সার্ভিসেসও বেশি দূর যেতে পারেনি। রিয়ান পরাগ ৫ ও রাহুল সিং ৪ উইকেট নিলে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় তারা।
আসামও দ্বিতীয় ইনিংসে সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। মাত্র ৫৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা। অর্থাৎ দুই দল মিলিয়ে প্রথম ইনিংসে পড়েছে মোট ২৫ উইকেট।
No posts available.
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৭:০৫ পিএম
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৫:৪২ পিএম
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১২ পিএম

ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক কীর্তি গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাশলে গার্ডনার। একই সময়ে ব্যাটিং, বোলিং ও অলরাউন্ডার- তিন বিভাগেই র্যাঙ্কিংয়ের সেরা তিনে উঠলেন ২৮ বছর বয়সী এই তারকা ক্রিকেটার।
মেয়েদের ক্রিকেটের র্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদ মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। যেখানে এমন উচ্চতায় উঠেছেন গার্ডনার, যেখানে হয়তো আগে পৌঁছাতে পারেননি কোনো নারী বা পুরুষ ক্রিকেটার।
সবশেষ এই হালনাগাদে অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে গার্ডনার। ব্যাটারদের তালিকায় তিনি দ্বিতীয় ও বোলারদের মধ্যে তিন নম্বরে অবস্থান করছেন।
চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ব্যাট হাতে ৮৮.৩৩ গড় ও ১২৮.০১ গড়ে ২৬৫ এবং চমৎকার অফ স্পিনে ৭ উইকেট নিয়েছেন গার্ডনার। এর পুরস্কার হিসেবেই র্যাঙ্কিংয়ের তিন বিভাগেই পেয়েছেন সেরা তিনে থাকার কৃতিত্ব।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে ৩২৬ রানে নিয়ে যান গার্ডনার। সেদিন তিনি খেলেন ৮৩ বলে ১১৫ রানের ইনিংস।
পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে মাত্র ৭৩ বলে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতান গার্ডনার।
এসব পারফরম্যান্সের সৌজন্যে ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে ৬ ধাপ লাফিয়ে দুইয়ে উঠেছেন তিনি। তার ওপরে শুধু ভারতের স্মৃতি মান্ধানা।

প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করে সত্তর পেরিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন জিসান আলম। দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরির আরও কাছে পৌঁছালেন তিনি। কিন্তু জাদুকরী তিন অঙ্ক ছোঁয়া হলো না ঢাকা বিভাগের তরুণ ওপেনারের।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে ড্র হয়েছে ঢাকা ও রংপুরের মধ্যকার ম্যাচ। শেষ দিনে সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার বেদনায় পুড়েছেন জিসান।
সিলেটের একাডেমি মাঠে প্রথম ইনিংসে ২২১ রানে অলআউট হয় ঢাকা। জবাবে ৩৫৮ রানের পুঁজি গড়ে ১৩৭ রানের লিড পায় রংপুর। দ্বিতীয়বারে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৩৩ রান করে ঢাকা।
রংপুরের সামনে দাঁড়ায় ১৯৭ রানের লক্ষ্য। শেষ দিনে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করে আকবরের দল।
ক্যারিয়ারের ৩৪তম সেঞ্চুরি করা নাঈম ইসলামের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
মঙ্গলবার ম্যাচের শেষ দিনে জিসানের ব্যাট থেকে আসে ১৪ চারে ৯৭ রানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে আশিকুর রহমান শিবলি ও জিসান মিলে গড়েন ১৩০ রানের জুটি। শিবলির ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান।
সিলেটের মূল মাঠে ময়মনসিংহ ও সিলেটের মধ্যকার ম্যাচটিও নিষ্ফলা ড্র হয়। চার দিনের শেষ হয়নি ম্যাচের তিন ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে আবু হায়দার রনি ও আরিফুল ইসলামের সেঞ্চুরিতে ৪০১ রান করে জাতীয় লিগে প্রথম খেলতে নামা ময়মনসিংহ। জবাবে সৈকত আলির ১৭৫ রানের সঙ্গে বাকিদের অবদানে ৪৮৯ রান করে সিলেট।
৮৮ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৭২ রান করে ময়মনসিংহ। এরপর ড্র মেনে নেয় দুই দল। আরিফুল ৬২ ও নাঈম শেখ করেন ৫৮ রান।
আরিফুলের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে প্রথম যুব ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। আলোকস্বল্পতায় ৪ ওভার আগেই থেমে যাওয়া ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ৫ রানের জয় পেয়েছে স্বাগতিক যুবারা।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৫ রান করে আফগানিস্তান। রান তাড়ায় ৪৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান করে বাংলাদেশ।
এরপর আর আলোকস্বল্পতায় খেলা সম্ভব হয়নি। ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা।
সিরিজে শুভসূচনার পেছনে বড় কারিগর ইকবাল হোসেন ইমন ও কালাম সিদ্দিকি এলিন। বল হাতে যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেন ইমন। আর ব্যাটিংয়ে এই ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেন কালাম।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য তেমন ভালো হয়নি। মাত্র ১৫ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই তারকা ব্যাটার জাওয়াদ আবরার ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
তৃতীয় উইকেটে রিফাত বেগের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন কালাম। ৩০ বলে ২৬ রান করে ফেরেন রিফাত।
এরপর ম্যারাথন জুটি গড়েন কালাম ও রিজান হোসেন। ভাগ্যের সহায়তাও পান দুজন। উইকেটের পেছনে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩৯ রান যোগ করেন কালাম ও রিজান। নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই আউট হয়ে যান কালাম। তার ব্যাট থেকে আসে ১১ চারে ১১৯ বলে ১০১ রান।
এরপর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে নিয়ে এগোতে থাকেন রিজান। কিন্তু আলোর অভাবে পুরোটা খেলে ম্যাচ জেতানো হয়নি তার।
২ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৯৬ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন রিজান। আব্দুল্লাহ করেন ১৯ বলে ১২ রান।
আফগানিস্তানের পক্ষে ৪৭ রানে ২ উইকেট নেন মুজিব উর রহমানের মতো একই অ্যাকশনে বোলিং করা ওয়াহিদউল্লাহ জাদরান।
ম্যাচের প্রথমভাগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫ রান পায় আফগানিস্তান। খালিদ ওমরজাইকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটি ভাঙেন ইমন। পরের ওভারে আরেক ওপেনার ওসমান সাদাতকে ফেরান মোহাম্মদ সবুজ।
চার নম্বরে নেমে হাল ধরেন উজাইরউল্লাহ নিয়াজাই। তবে অন্য প্রান্ত থেকে তেমন সমর্থন পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ১৩৭ বলে ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন উজাইরউল্লাহ। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাকে থাকতে হয় পরাজিত দলে।
১০ ওভারে এক মেডেনসহ ৫৭ রানে ৫ উইকেট নেন ইমন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার রিজানের শিকার ৫৪ রানে ২ উইকেট।
একই মাঠে শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯: ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (খালিদ ৩৪, ওসমান ১৫, ফয়সাল ৩৩, উজাইরউল্লাহ ১৪০*, মাহবুব ১২, বরকত ১, আজিজউল্লাহ ১৪, খাতির ৩, ওমরজাই ০, জাইতুল্লাহ ০; ফাহাদ ৬.৪-০-৩৬-০, ইমন ১০-১-৫৭-৫, সবুজ ৫.২-০-৩০-১, রাতুল ৭-০-৩৪-০, রিজান ১০-০-৫৪-২, রাফি ৭-০-৩০-০, তামিম ৪-০-২৩-১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৬ ওভারে ২৩১/৪ (জাওয়াদ ১০, রিফাত ২৬, তামিম ০, কালাম ১০১, রিজান ৭৫*, আব্দুল্লাহ ১২*; ওমরজাই ৮-০-৩৬-১, ওয়াহিদউল্লাহ ১০-০-৪৭-২, খাতির ৬-০-৩৫-০, জাইতুল্লাহ ১০-০-৩৪-১, মাহবুব ৬-০-৩২-০, উজাইরউল্লাহ ৬-০-৪৩-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দে বড় ধাক্কা দিয়েছে প্রথম টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং ব্যর্থতা। হতাশার পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করে এখন কিছুটা চাপেই পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সিআরবিতে উন্মোচন করা ট্রফি ঘরেই রাখতে বাকি দুই ম্যাচে তাদের লিখতে হবে প্রত্যাবর্তনের গল্প।
সেই মিশনে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু সন্ধ্যা ৬টায়।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের পর মঙ্গলবার অনুশীলন রাখেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে যাওয়া ক্যারিবিয়রাও বাতিল করে তাদের রুটিন অনুশীলন। তবে ঐচ্ছিক অনুশীলনে সাগরিকার তপ্ত রোদের মাঝের ঘাম ঝরান সফরকারীদের কয়েকজন ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন
| রাব্বির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তাইজুলদের হারাল চট্টগ্রাম |
|
সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে এখন জয়ের বিকল্প নেই। স্বাগতিকরা চাইলে নিজেদের সাম্প্রতিক অতীত থেকেই নিতে পারে অনুপ্রেরণা। যেখানে প্রথম ম্যাচ হেরেও বাকি দুইটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজের ট্রফি জিতেছে তারা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ২৪টি তিন ম্যাচের সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৬টি তারা জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। সেই ছয় সিরিজের আবার ২টিতে প্রথম ম্যাচ হারের পরও সিরিজ নিজেদের করেছে বাংলাদেশ।
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম ম্যাচ হেরেও পরের দুইটি জিতে সিরিজ নিজেদের করেছে তারা। চলতি বছর জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরেও প্রথম ম্যাচ হেরে কামব্যাকের গল্প লিখেছে তারা।
এবার মাস তিনেক আগের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারলেই মিলবে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে তৃতীয় সিরিজ জয়ের স্বাদ।
সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য হতাশার উপাখ্যানও কম নেই বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে শুরু। এবার আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও, ওয়ানডে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ।
গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর তারা জিতে যায় ওয়ানডেতে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে সব ম্যাচ হারলেও, টি-টোয়েন্টিতে আবার স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।
একই পরিণতি দেখা যায়, চলতি বছরের শ্রীলঙ্কা সফরে। যেখানে ওয়ানডে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে আবার জেতে তারা। পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর ওয়ানডেতে মেলে হতাশা।
এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এরই মধ্যে ওয়ানডে সিরিজ জিতে গেছে বাংলাদেশ। তবে গত কয়েক সিরিজের মতো সাদা বলের আরেক সিরিজে নিশ্চয়ই হারতে চাইবে না তারা।
প্রথম ম্যাচে রভম্যান পাওয়েল ও শাই হোপের ঝড়ের পরও সফরকারীদের ১৬৫ রানে থামিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রান তাড়ায় পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকেই যায় তারা। শেষের ব্যাটাররা লড়াই করলেও পরাজয় এড়াতে পারেননি।
আরও পড়ুন
| ফোনে নির্দেশ ‘ভারতকে ছাড় দাও’—বিস্ফোরক অভিযোগ ম্যাচ রেফারির |
|
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অনুমিতভাবেই ব্যাটারদের ব্যর্থতার কথা বলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব। তার বিশ্বাস, বাকি দুই ম্যাচে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।
“আমরা একদম শুরু থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে, আমরা ভালো করে আসছি টি-টোয়েন্টিতে। আজকে একটা আমরা হেরে গেছি, বাজে দিন ছিল। পরবর্তী দুই ম্যাচে আমরা কামব্যাক করব ইনশাল্লাহ। এখানে আর কোনো ব্যাকফুটে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
“আরেকটা ম্যাচ হারলে সিরিজ হেরে যাব। আর এটা ঘরের মাঠ, অবশ্যই চেষ্টা করব সিরিজ জেতার, যে করেই হোক। কারণ বিদেশে যেহেতু ভালো করে আসছি, এখানে আমরা একটা বাড়তি সুবিধা অবশ্যই পাব। তাই পরবর্তী দুইটা ম্যাচ আমাদের জিততে হবে।”
পরের দুই ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে ব্যাটারদের ভালো করার বিকল্প নেই। চলতি বছর এই ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে কারও কাছ থেকেই রান পাচ্ছে না বাংলাদেশ। বিশেষ করে শুরুতেই ভেঙে পড়ছে টপ-অর্ডার।
২০২৫ সালে খেলা ২০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই ৫০ রান হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর ৫টি ম্যাচে দলীয় স্কোর ৩০ ছোঁয়ার আগেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন তিন ব্যাটার। যা শুরুতেই পেছনে ঠেলে দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
তাই বাকি দুই ম্যাচে বড় দায়িত্ব নিতে হবে ওপরের সারির ব্যাটারদের।

ভারতকে ওয়ানডে সিরিজ অনায়াসে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কাল থেকে শুরু হচ্ছে দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ক্যানবেরায় মঠে নামার আগে সফরকারীদের রীতিমতো হুঙ্কার ছুঁড়লেন অজি ওপনোর ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়ার এই বিধ্বংসী ব্যাটার জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের ব্যাটিং লাইনআপ এতটাই শক্তিশালী, ইচ্ছে করলে যেকোনো স্কোর তোলা সম্ভব।
ক্রিকেট ডটকম ডটএইউকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হেড জানিয়েছেন, দলের মিডল ও লোয়ার অর্ডারে এত বেশি ‘পাওয়ার’ আছে, শুরুতে ধীরগতিতে খেলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বললেন,
‘আমাদের ব্যাটিং লাইনে যত পাওয়ার আছে, শুরু থেকেই সেটা কাজে লাগাতে হবে। টিম ডেভিড, মার্কাস স্টয়নিস, জশ ইংলিস, ক্যামেরন গ্রিন আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল— এরা সবাই যখন পেছনে অপেক্ষা করছে, তখন শুরুতেই বল নষ্ট করে ফেললে চলবে না। এটা বিশাল শক্তি।’
ডেভিড, স্টয়নিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো পাওয়ার হিটার পেছনের দিকে থাকায় টপ অর্ডাররা দারুণ আত্মবিশ্বাস পায়। হেড আরও যোগ করেন, এ কারণেই অস্ট্রেলিয়া এখন আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে ঝুঁকছে।
অজিদের লক্ষ্য শুরু থেকেই পাওয়ার-প্লে ওভারগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার। হেড বলেন,
‘আমরা যদি শুরুটা ভালো করতে পারি, তাহলে যেকোনো স্কোর তোলা সম্ভব। তাই মিচ (মিচেল মার্শ) আর আমার পরিকল্পনা হলো শুরু থেকেই পাওয়ারপ্লে ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনকে কাজে লাগানো। এটা গত দুই বছর ধরে আমাদের বড় শক্তি হয়ে আছে। একদিনের ক্রিকেট বা টি-টোয়েন্টি— দুই ফরম্যাটেই আমরা পাওয়ার-প্লের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা বেপরোয়া হতে চাই না, কিন্তু কিছু সময় সেটি দেখতেও পারে এমন মনে হতে। হ্যাঁ, লক্ষ্য একটাই— যত বেশি সম্ভব রান তোলা।’
অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া ইতিমধ্যেই এই সিরিজকে ‘হাই-স্কোরিং ব্যাটল’ বলে আখ্যা দিয়েছে। হেড-মার্শের জুটি টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এখন অন্যতম ভয়ঙ্কর ওপেনিং কম্বিনেশন।
এরই মধ্যে হেড নিজের অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের সঙ্গে বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) চুক্তি নবায়ন করেছেন। স্থানীয় মিডিয়া এটাকে ‘নো-ব্রেইনার’ পদক্ষেপ বলেই অভিহিত করেছে। কারণ হেড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য পারফর্মার।