১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:৩২ এম

টিম বাস থেকে নামছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা, প্রবেশ করবেন হোটেলে। স্বাভাবিকভাবেই লিওনেল মেসিকে ঘিরে আকর্ষণ বাকিদের চেয়ে ঢের বেশি। কিন্তু ওই বাস থেকে নামার সময় নজর কাড়লেন ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোও। বাস থেকে নামছেন, কাঁধে তার ব্যাগ, হাতে অক্সিজেন বুস্টার। বলিভিয়া যাত্রা মানেই যেন ফুটবলারদের বাড়তি আতঙ্ক, আলাদা দুশ্চিন্তা। যার নেই কোনো সমাধান, মানিয়ে নেওয়াই একমাত্র উপায়।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে আর্জেন্টিনা এখন বলিভিয়ায়। বুধবার রাতে রাজধানী লা পাজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বিশ্বচ্যাপিয়নরা। মেসি সে ম্যাচে খেলবেন কি না তা নিয়ে আছে সংশয়। ইকুয়েডরের বিপক্ষে নিজ ইচ্ছায় বদলি হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন, কোচ লিওনেল স্কালোনিও রবিবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেছেন মেসির খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটবে সোমবার অনুশীলনের পর।

বলিভিয়ার এই মাঠ অবশ্য মেসির জন্য নতুন কিছু নয়। নিজের ক্যারিয়ারে এই মাঠে চার ম্যাচ খেলেছেন, জিততে পেরেছেন মোটে একটায়। যদিও বলিভিয়া দক্ষিণ আমেরিকার দুর্বল দলগুলোর একটাই। তবে সেই গল্পটাই বদলে যায় যখন বলিভিয়া নিজেদের ঘরের মাঠে খেলে। নিজেদের মাঠের রাজা ওরা। ১৯৯৩ সালের পর থেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে আর জয়ের দেখাই পায়নি বলিভিয়া। এই সময়ে সবমিলিয়ে তারা খেলেছে ৬৫ ম্যাচ। অথচ ঘরের মাঠে শেষ ২৪ ম্যাচে তারা জিতেছে ১৪টায়, ড্র করেছে ১০টা।

ঘরের মাঠই আসলে বলিভিয়ার শক্তি। কিন্তু তার কৃতিত্ব পুরোটাই ভৌগলিক। সমুদ্রপৃষ্ঠ্ থেকে প্রায় ৩৬৫০ মিটার (১১,৯৭৫ ফিট) উঁচুতে অবস্থান দেশটির। ভিনদেশীদের জন্য অতো উঁচুতে যে কোনো খেলাই দুঃস্বপ্নের মতো। রোমেরোরা সে কারণেই হাতে করে অক্সিজেন বুস্টার নিয়ে প্রবেশ করেছেন বলিভিয়ায়।
এই গল্প অবশ্য নতুন কিছু নয়। বলিভিয়ায় ম্যাচ খেলতে গেলে যে আসল প্রতিপক্ষ উচ্চতা তা এতোদিনে প্রতিষ্ঠিত সত্য। হোম অ্যাডভান্টেজ পুরোটাই কাজে লাগানোর সুযোগ লাগে বলিভিয়ানদের সামনে। এই নিয়ে অবশ্য বহু আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে। ২০০৭ সালে ২৫০০ মিটারের উঁচুতে ফুটবল ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। তাতে ভেন্যু হিসেবে বলিভিয়া বাদও পড়েছিল। সে সময় ফিফার এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন খোদ ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তোপের মুখে পরে ফিফাও ২০০৮ সালে সেই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে। বলিভিয়াতে আবারও ফেরে ফুটবল।
আরও পড়ুন: মেসির কারিশমাতেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুভসূচনা আর্জেন্টিনার
ওই ঘটনার কিছুদিন পরই বলিভিয়ার মাঠে গিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনা হেরে এসেছিল ৬-১ গোলে। সে সময় আবার দলের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা। ওই হার আর্জেন্টিনার ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় হারগুলোর একটি।
অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এর আগেও বলিভিয়ায় গেছে আর্জেন্টিনার। বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ চলার সময় হাফটাইমে পুরো ব্রাজিল দলকে একসঙ্গে অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে গিয়ে মাঠেই একবার বমিও করতে হয়েছিল লিওনেল মেসিকে। এতো ফিরিস্তি শুনে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কী এমন উচ্চতা যার কারণে বিশ্বসেরা ফুটবলাররাই বেমালুম বোকা বনে যান বলিভিয়ায়?
উচ্চতা যত বেশি, বায়ুর চাপ তত কম। অর্থাৎ আপনার গ্রহণ করা অক্সিজেন রক্তে ট্রান্সফার করতে শরীরকে কসরত করতে হয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে শরীরও দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সহজ কথায় বললে, বলিভিয়ার যে উচ্চতা তাতে সেখানে স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে আরও ২০-২৫ শতাংশ শক্তি বেশি প্রয়োজন। অভ্যস্ততা না থাকলে সেটা আপনাকে ভোগাবেই- মেসি, নেইমার সবার বেলায় সত্য সেটা।
অবশ্য এখানেই শেষ নয়। অমন উচ্চতায় বলের স্বাভাবিক গতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে, বলের গতিপ্রকৃতির অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কথা প্রায় সময় বলেছেনও ফুটবলাররা। বলিভিয়া মূলত প্রতিপক্ষের এই অনভ্যস্ততার সুযোগটাই কাজে লাগায়। ঘরের মাঠের দূরন্ত্ব ফর্মের সঙ্গে বলিভিয়ার অ্যাওয়ে ফর্মের তফাৎও তাই প্রমাণ করে।
আর্জেন্টিনা বলিভিয়ার সঙ্গে খেলার আগে ওদের মাঠে অনুশীলন করবে একদিন। মানিয়ে নেওয়ার জন্য ওইটুকু সময়ই আছে স্কালোনির দলের। ২০২০ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বলিভিয়ার মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরেছিল তার দল। তাতে ১৫ বছর ধরে বলিভিয়ার মাঠে জয়হীন থাকার ‘ভুতুড়ে’ রেকর্ডটাও আর্জেন্টিনার পিছু ছেড়েছিল। যদিও সেই ম্যাচেও আর্জেন্টিনাকে ভুগতে হয়েছিল বলিভিয়ার উচ্চতায়।
এবার আর্জেন্টিনা লা পাজে পা রেখেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে। কিন্তু তবুও স্বস্তি নেই। ঘুরে ফিরে সেই ‘উচ্চতা’ প্রশ্নের সমাধান জানা নেই কারও। স্কালোনিই বোধ হয় সবচেয়ে ভালোভাবে জবাবটা দিয়েছেন, “অনেক কিছুই তো চেষ্টা করা হয়েছে, আর যে কোনো দলই ওখানে গিয়ে হিমশিম খায়। এই নিয়ে এতো কথা বলতে চাই না, কারণ এসব তো আর পরিবর্তন করা যাবে না। এটা পরিস্কার একটা অ্যাডভান্টেজ ওই দলের জন্য, কিন্তু এই নিয়ে আমাদের অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই।“
No posts available.
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৯ পিএম

সামনের আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে দলবল নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হবে লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্তিনেসদের। কারণ অ্যাঙ্গোলাসহ মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য হলুদ জ্বরের (ইয়োলো ফিভার) ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক সূচিতে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে আগামী সপ্তাহে অ্যাঙ্গোলায় যাবে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। লুয়ান্ডায় আগামী ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় হবে অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে ম্যাচটি।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, ওই ম্যাচের জন্য ডাক পাওয়া সব ফুটবলার ও টিম অফিসিয়ালদের বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে হলুদ জ্বরের টিকা। এর বাইরেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী, মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে যাওয়ার আগে আরও ৭টি প্রতিষেধক নিতে হবে।
তাই হলুদ জ্বর ছাড়াও পোলিও, হেপাটাইটিস এ, টাইফয়েড, কলেরা ও মেনিনজাইটিসের টিকা নিতে হবে মেসিদের। এর সঙ্গে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে হেপাটাইটিস বি, টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, ম্যালেরিয়া ও রেবিসের টিকা নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এতসব টিকা নেওয়ার শর্ত পূরণে সবার আগে স্পেনের হাসপাতালে গিয়েছেন জিওভানি লো সেলসো। এছাড়া ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনও প্রয়োজনীয় সব টিকা নিয়েছেন। তবে চোটের কারণে তার অ্যাঙ্গোলা সফর অনিশ্চিত।
অ্যাঙ্গোলায় প্রবেশের জন্য মেসিসহ দলের বাকি ফুটবলারদের সামনের দিনগুলোতে প্রয়োজনীয় সব টিকা নিতে হবে। অন্যথায় বিমানবন্দরে বেশ কিছু বিধিনিষেধের মুখে পড়তে পারেন তারা।
নভেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে এখন পর্যন্ত এটিই আর্জেন্টিনার একমাত্র ম্যাচ। আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে স্পেনে একটি অনুশীলন ক্যাম্প করবে আর্জেন্টিনা।

কী অসাধারণ বৈপরীত্যই না দেখা গেল! ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড যখন লিভারপুল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন থেকেই কনর ব্র্যাডলিকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছিল। বিধাতার কি লিলা, দু’জনের মুখোমুখি হওয়ার মঞ্চও প্রস্তুত হয়ে গেল দ্রুতই। আর সেই মঞ্চে অ্যানফিল্ডের ভালোবাসার জোড়ে উজ্জীবিত ছিলেন কনর ব্র্যাডলি, যেখানে ‘ঘরের ছেলে’ আর্নল্ডকে হজম করতে হতে হয়েছে অল রেডদের ঘৃণা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতকাল রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির আক্রমণভাগকে একরকম ভোঁতাই করে দেন ব্র্যাডলি। রিয়ালের বাম পাশ থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে একচুল ছাড়ও যে দেননি এই আইরিশ রাইট-ব্যাক। যতবারই আক্রমণে উঠেছেন, ব্র্যাডলির কাছেই পরাস্ত হতে হয়েছে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে।
ম্যাচের আগে অ্যানফিল্ডের দেয়ালচিত্রে লেখা হয়েছিল ‘আদিওস এল রাতা’ যার অর্থ ‘বিদায়, ইঁদুর’। এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়া আর্নল্ডের প্রতি প্রবল ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করে লিভারপুলের সমর্থকরা। ইংলিশ ক্লাবটির অনেক সমর্থকের চোখে এই রাইট-ব্যাক ‘বিশ্বাসঘাতক’।
আর্নল্ডের পজিশনেই খেলা ব্র্যাডলি দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সমর্থকদের সেই ক্ষোভে যেন আরও আগুন ঢালেন। প্রতিপক্ষের রক্ষণে ত্রাস ছড়াতে যার জুড়ি মেলা ভার, সেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ব্র্যাডলি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন যে ব্রাজিলিয়ান তারকা হয়ে উঠেছিলেন নিছক দর্শক। শারীরিক দৃঢ়তার সঙ্গে দারুণ আত্মবিশ্বাসে তিনি পুরোপুরি ছাপিয়ে যান ভিনিসিয়ুসকে।
ব্র্যাডলির প্রতিটি ট্যাকলে অ্যানফিল্ডে গর্জে ওঠে উল্লাসে। গ্যালারি থেকে ‘ব্র্যাডলি, ব্র্যাডলি’ স্লোগান—শুধু তার পারফরম্যান্সের জন্যই নয়, বরং প্রাক্তন হয়ে যাওয়া আর্নল্ডকেও যেন স্মরণ করিয়ে দিল নতুন নায়ক এসেছে, পুরনোটা এখন শুধুই ইতিহাস।
ব্র্যাডলির এমন পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লটকেও, কনর ব্র্যাডলি অসাধারণ ছিল। ভিনিসিয়ুসের মতো খেলোয়াড়ের বিপক্ষে এতবার ‘ওয়ান-ওয়ান’ অবস্থায় লড়াই করা সহজ নয়, কিন্তু সে ছিল দুর্দান্ত।’
আগের মৌসুমেও রিয়ালের বিপক্ষে দারুণ খেলেন ব্র্যাডলি। তবে এবার সেই পারফরম্যান্সকেও ছাড়িয়ে যান ২২ বছর বয়সী লিভারপুলের নতুন তারকা। অল রেডদের কোচ আর্নে স্লট যোগ করেন, ‘গত মৌসুমে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছিলেন, কিন্তু ৮০ মিনিটের পর চোটের কারণে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সেবার। এবার, ভিলার বিপক্ষে ৯০ মিনিট খেলার মাত্র তিন দিন পর, সে আবারও অসাধারণ তীব্রতায় পুরো ৯০ মিনিট ভিনিসিয়ুসকে সামলেছে।’
অথচ রিয়ালের বিপক্ষে মাঠে নামারই কথা ছিল না ব্র্যাডলির। একই পজিশনের জেরেমি ফ্রিম্পংয়ের চোটে রক্ষণভাগের ডানপাশ সামলানোর দায়িত্ব পান তিনি। সেই দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করেছেন তিনি। ফুটবল সাইট ‘সোফা স্কোর’ এর তথ্যমতে রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে ট্যাকলে শতভাগ সফল ছিলেন ব্র্যাডলি, সম্পন্ন করেন। একটি ইন্টারসেপশন করেন, সাতটি এরিয়াল ডুয়েল জেতেন। বল পুনরুদ্ধার করেন সাতবার এবং দুইটি ক্লিয়ারেন্স করেন ব্র্যাডলি।

চলতি বছর আর্জেন্টিনার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলপোস্টের নিচে থাকবেন না নিয়মিত গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। তাকে বিশ্রামে রেখে নতুন গোলরক্ষককে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান কোচ লিওনেল স্কালোনি।
আগামী ১৪ নভেম্বর এঙ্গোলার বিপক্ষে ২০২৫ সালে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। এখনও ওই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেননি স্কালোনি। খুব শিগগিরই এই ম্যাচের দল ঘোষণা করবেন আলবিসেলেস্তে কোচ।
তবে আর্জেন্টিনার ফুটবলভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্তিনেসকে রাখা হবে দলের বাইরে। এরই মধ্যে নিজের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মার্তিনেসের সঙ্গে কথা বলেছেন স্কালোনি।
মার্তিনেস থাকলে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই আর্জেন্টিনার প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক হন তিনি। তবে এবার তার অনুপস্থিতিতে বেঞ্চে থাকা গোলরক্ষকদের সুযোগ দেওয়ার ইচ্ছা স্কালোনির। তার মতে, এসব ম্যাচ দিয়েই সামনের সময়ের জন্য অভিজ্ঞতা পাবেন নতুনরা।
নিয়মিত গোলরক্ষকের অনুপস্থিতিতে এবার আর্জেন্টিনার গোলপোস্ট সামলানোর দায়িত্ব পেতে পারেন ওয়াল্টার বেনিতেজ। কয়েক মাস আগে পিএসভি ছেড়ে ইংলিশ ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেসে যোগ দিয়েছেন ৩২ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
বেনিতেজের পাশাপাশি জেরোনিমো রুল্লিও থাকবেন আর্জেন্টিনা দলে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সফরে পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে অভিষেক হওয়া ফাকুন্দো ক্যাম্বেসকে এবার এঙ্গোলাতেও নেওয়া হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।

জোড়া গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজি-বায়ার্ন মিউনিখ ম্যাচের নায়ক লুইস দিয়াজ। তবে ম্যাচের প্রথামার্ধের যোগ করা সময়ে আশরাফ হাকিমিকে ভয়াবহ এক ট্যাকল করে অনেকটা ভিলেনও বনে যান কলম্বিয়ান উইঙ্গার। দিয়াজের ট্যাকলে যে বড় চোটেই পড়েছেন হাকিমি।
দিনটিই ছিল হাকিমির ২৭তম জন্মদিন। এই দিনই যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পিএসজির রাইট-ব্যাককে। মরক্কোর এই তারকা ফুটবলার কাঁদতে কাঁদতে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন। চিকিৎসকরা তাঁকে উঠতে সাহায্য করলেও তিনি নিজের পায়ে ভর দিতে পারেননি এক মুহূর্তের জন্যও।
ম্যাচ শেষে হাকিমিকে দেখা যায় ক্রাচে ভর দিয়ে স্টেডিয়াম ছাড়তে। আহত পায়ে ছিল প্রটেকটিভ বুট। এতে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পিএসজি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হাকিমির চোট নিয়ে কিছুই জানায়নি। অবশ্য ম্যাচের পর ফরাসি ক্লাবটির অধিনায়ক মারকিনিয়োস জানিয়েছেন, প্রাথমিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে স্ক্যান ও টেস্টের পর আসবে চূড়ান্ত রিপোর্ট । ধারণা করা হচ্ছে গোড়ালির এই চোটে কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে ২৭ বছর বয়সী ফুল-ব্যাককে।
বায়ার্নের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে হাকিমির এই চোট মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবেই যেন হাজির হলো পিএসজির জন্য। ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে বাভারিয়ানদের বিপক্ষে ম্যাচটিতে চোটে পড়েছেন পিএসজির ব্যালন ডি’অর জয়ী উইঙ্গার উসমান দেম্বেলেও।
পিএসজির সঙ্গে হাকিমির চোট মরক্কোর জন্যও বড় ধাক্কা হয়ে এলো। আগামী ডিসেম্বরেই মরক্কোতে শুরু হচ্ছে আফ্রিকা কাপ অব নেশনস (আফকন)। এবার নিজ দেশে অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টে থেকে হয়তো ছিটকে যেতে পারেন জাতীয় দলের অধিনায়ক হাকিমি।

ম্যাচে তখন ২-০ গোলে এগিয়ে টটেনহ্যাম হটস্পার। তবে একজন লাল কার্ড দেখায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় তারা। সেই সুযোগে আক্রমণে উঠে আসে কোপেনহেগেন। সেই আক্রমণ ফিরিয়ে যেন উল্টো লিওনেল মেসি ভর করল মিকি ফন ডি ভেনের ওপর।
নিজেদের ডি-বক্সের কাছে বল পেয়ে একাই টেনে নেন হটস্পার সেন্টার হাফ। একে একে প্রতিপক্ষের পাঁচ ফুটবলারকে কাটিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে যান মিকি। পরে বাম পায়ের চমৎকার শটে গোলরক্ষককেও পরাস্ত করেন তিনি।
যা মনে করিয়ে দেয় লিওনেল মেসির আইকনিক সব গোল। যেখানে একাই প্রতিপক্ষকে ঘোল খাইয়ে বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন মহাতারকা। তার কথা মনে করানো গোলের পর ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসায় ভাসছেন মিকি।
ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে টটেনহ্যাম কোচ থমাস ফ্র্যাঙ্ক তো সরাসরি বলেই দেন, ওই মুহূর্তের জন্য মেসি হয়ে গিয়েছিলেন মিকি।
“দেখে মনে হয়েছিল, মিকি ফন ডি ভেন যেন লিওনেল মেসি হয়ে গেছে। নিজেদের ডি-বক্সের কাছ থেকে সোজা অন্য প্রান্তে বল নিয়ে গোল করা! দুর্দান্ত।”
এর মিনিট তিনেক পর আরেকটি গোল করেন হোয়াও পালিনহা। ঘরের মাঠে ৪-০ গোলের জয় পায় টটেনহ্যাম।
২০২৩ সালের আগস্টে উলফসবার্গ ছেড়ে টটেনহ্যামে যোগ দেন মিকি। ডিফেন্ডার হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে গোল করার ক্ষেত্রেও পারদর্শিতা দেখাচ্ছেন তিনি। তবে অন্য যে কোনো গোলের চেয়ে মঙ্গলবারের গোলটিই যে সবার সেরা, তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারও।
টিএনটি স্পোর্টসে নিজের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান মিকি।
“আমি ড্রিবলিং শুরু করি। তখন ভাবছিলাম যে, দেখি তারা আমাকে ধরতে পারে কিনা। কিন্তু তারা সেটি করতে পারেনি। আমার তখন ভালো অনুভূতি হচ্ছিল। দৌড়ানোর সময় দুর্দান্ত লাগছিল। আমার মনে হচ্ছিল, আজীবন দৌড়াতে পারব এখন।”
ইংল্যান্ডের সাবেক মিডফিল্ডার ওয়েন হারগ্রিভসও প্রশংসায় ভাসান মিকিকে,
‘সব সময়ের সেরা গোলগুলোর একটি এটি। সে প্রতিপক্ষকে এমনভাবে কাটিয়ে যাচ্ছিল যেন সেখানে কেউ ছিলই। দুর্দান্ত, অসাধারণ। মৌসুমের সেরা গোল।’