২৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৩ এম
চলতি মৌসুমে দুটি এল ক্লাসিকোতে ছিল না কোনো প্রাণ। হেসেখেলেই জেতে বার্সেলোনা। কোপা দেল রের ফাইনালের প্রথমার্ধে এক গোল হজম করে যেন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগাল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলা হান্সি ফ্লিকের দল সমতা টানল শুরুতে, এরপর জুলস কুন্দের শেষ সময়ের গোলে নিশ্চিত করল মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
সেভিয়ায় রোববার কোপা দেল রের এল ক্লাসিকো ফাইনালে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কুন্দে। এই মৌসুমে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে এটি ফ্লিকের দলের হ্যাটট্রিক জয়। এই ফাইনালের আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কোপা দেল রের শিরোপার জয়ীদের তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। তারা এই প্রতিযোগিতা জিতেছে এই নিয়ে ৩২ বার। রিয়ালের নামের পাশে রয়েছে ২০টি, তারা আছে তিনে। দুইয়ে থাকা আথলেতিক বিলবাও জিতেছে ২৪ বার।
আরও পড়ুন
ফাইনাল উপভোগ করতে চান বার্সা কোচ |
![]() |
চলতি মৌসুমে এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। দুটিতেই ফ্লিকের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। উভয় ম্যাচেই বার্সেলোনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে মার খায় লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে জুলস কুন্দের হেড চলে যায় পোষ্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের আগে রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়াকে নিয়ে বিতর্কের কারণে বাড়তি চোখ ছিল তার দিকে। তবে সেই চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম দিকে ভালো কিছু সিদ্ধান্তই নেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিটে সেভাবে আক্রমণ শানাতে না পারা রিয়াল বড় ধাক্কা খায় ফেরলন্ড মন্ডির চোটে। ভঙ্গুর রক্ষণভাগে তার বদলি হিসেবে অনভিজ্ঞ ফ্রাঙ্ক গার্সিয়াকে নামান আনচেলত্তি। তবে তাতেও চিত্রে আসেনি কোনো বদল। বারবার উইং ধরে আক্রমণে উঠছিলেন ইয়ামাল, আর গতিতে হার মানাচ্ছিলেন রিয়ালের ডিফেন্ডারদের।
১৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের ভেতর পড়ে যান ফেদেরিকো ভালভের্দে, তখন বল তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বার্সেলোনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ক্রসে দারুণ এক হেডার লক্ষ্যেই রেখেছিলেন কুন্দে, তবে শেষ মুহূর্তে বাম হাতে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
এফএ কাপ জিতে ‘বড় ক্ষতি’ এড়াতে চান গার্দিওলা |
![]() |
তবে এর ৭ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে গতিতে রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে ছেলেখেলা করা ইয়ামাল বল বাড়ান বক্সের একটু বাইরে ফাঁকায় থাকা পেদ্রির দিকে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার সময় নিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় জুড বেলিংহাম ৩৫তম মিনিটে দানি সেবায়োসের পাস থেকে বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় আর মেলেনি গোল।
৪৩তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নার জটলার মধ্যে ডিফ্লেকশনের পর ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এর এক মিনিট বাদে আরেকটি কর্নার থেকেও বার্সেলোনা পেয়েছিল ভালো সুযোগ, তবে কাজে লাগাতে পারেনি।
একতরফা প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়াল গোলের জন্য নিতে পারে মাত্র একটি শট, সেটাও থাকেনি লক্ষ্যে। আর আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭টি শটের চারটিই রাখে লক্ষ্যে।
বিরতিতে রদ্রিগোর জায়গায় কিলিয়ান এমবাপেকে নামায় রিয়াল। এই অর্ধের শুরুতেই ভিন্ন ছন্দে হাজির হয় দলটি। ৪৮তম মিনিটে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান বেলিংহাম। প্রথম টাচে শট না নিয়ে কিছুটা কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নেন ভিনিসিয়ুস, যা ফেরান ওজসিচ সেজেনি। ফিরতি বল পেয়ে ফের ব্রাজিল তারকা শট নিলে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
এমবাপে মাঠে নামার পর থেকেই বেড়ে যায় রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৫৫তম মিনিটে ড্রিবলিং করে বক্সে প্রবেশ করে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। তবে আরও একবার প্রথম টাচে শট না করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফিফার বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির আগে টানা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এই অর্ধের শুরু থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটায়। আর সেটা হচ্ছিল যার কারণে, সেই এমবাপেই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে ম্যাচ ফেরান। বক্সের বাইরে বল নিয়ে আগুয়ান গতিতে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি তারকাকে টেনে ফেলে দেন পেদ্রি। রিয়ালের তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্রেফ হলুদ কার্ড পান তিনি।
এরপর ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বুলেট গতির এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপেই। এই প্রথম পেশাদার ক্যারিয়ারে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলের দেখা পেয়েছেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
রেফারি পরিবর্তন না হলেও ফাইনালে অংশ নেবে রিয়াল |
![]() |
একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া রিয়াল খানিক বাদে পেয়েছিল দারুণ সুযোগ। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ভিনিসিয়ুস পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ছয় গজে ফাঁকায় থাকা এমবাপের দিকে। তবে সেযাত্রায় বার্সেলোনা ক্লিয়ার করতে সমর্থ হয়।
প্রথমার্ধের ঠিক বিপরীত ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে এই দ্বিতীয়ার্ধে চেনাই ছিল দায়। একটা গোল হজমের পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিডও নিয়ে ফেলে রিয়াল। ৭৭তম মিনিটে আর্দা গুলেরের কর্নার থেকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক হেডারে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি।
৮২তম মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের কার্লিং শট নেন ইয়ামাল, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় থামান কোর্তোয়া। তবে এর একটু পর তার ভুলে গোল হজম করে বসে রিয়াল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলের দখল নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ ফেররান তরেস। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া, আর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার পারেননি ক্লিয়ারেন্স করতে।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল করে যেন প্রাণ ফিরে পায় বার্সেলোনা শিবির। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, ঠিক তখন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে রিয়ালকে প্রায় বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাউল আসেন্সিও। রাফিনিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে হজম করেন পেনাল্টি। তবে ভিএআর চেকের পর ডাইভ দেওয়ার কারণে পেনাল্টি বাতিল করে রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিট চলে আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণের মধ্য দিয়ে। ১০৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস পেয়ে বাঁদিক থেকে জটলার মধ্যে শট নেন তরেস, যা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যদি থাকত, খুঁজে নিত জালের ঠিকানা। কারণ, কোর্তোয়ারও চেয়ে দেখা ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই।
১০৭তম মিনিটে আরও একবার রিয়ালের জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনি অফসাইডে থাকাই এই দফায় হতাশই হতে হয় বার্সেলোনাকে। এর মিনিট পাঁচেক পর দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করেন রিয়াল মিডফিল্ডার গুলের। তার ক্রসে ঝাঁপিয়েও হেডার দিতে পারেননি বেলিংহাম।
১১৬তম মিনিটে রিয়ালের সর্বনাশ করেন লুকা মদ্রিচ। নিজেদের অর্ধে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান কুন্দে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্লেসিং শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়া। এর মিনিট খানেক বাদেই বার্সেলোনার বক্সে ফাউলের শিকার হন এমবাপে। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজলেও তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগে উত্তেজনা দেখা দেয় রিয়ালের ডাগআউটে। বদলি হিসেবে আগেই উঠে যাওয়া রুডিগার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একটা বস্তু ছুড়ে মারেন। শাস্তি হিসেবে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। এরপর যোগ হয় রিয়ালের হারের দুঃখ।
৪ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৩ পিএম
মূল লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেছে আগেই। তবুও তুর্কমেনিস্তানের সাথে নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেননি কোচ পিটার বাটলার। আগের ম্যাচে শক্তিশালী মায়ানমারকে হারিয়ে দেওয়া বাংলাদেশের মেয়েরা উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে প্রথম মিনিট থেকেই দাপট দেখালেন শামসুন্নাহার-ঋতুপর্ণারা। একপেশে ম্যাচে বিশাল জয় তুলে অপরাজিত থেকেই ম্যাচে গ্রুপ পর্ব শেষ করল বাংলাদেশ।
নারীদের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে মায়ানমারের ইয়াংগুনে 'সি' গ্রুপের শেষ ম্যাচে শনিবার তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
ডর্টমুন্ডের সাথে কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন রিয়াল কোচ |
![]() |
শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় বাংলাদেশে। চতুর্থ মিনিটেই জালের দেখা পান স্বপ্না রানী। তহুরা খাতুনের কাটব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন। এরপর প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। দুই মিনিট পর শামসুন্নাহার জুনিয়রের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
বক্সের ভেতর জটলার মধ্যে বল পেয়ে সহজেই টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ১৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোল করেন শামসুন্নাহার। শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রস গোলরক্ষক মিস করলে ফাঁকা পোস্টে বল পাঠাতে কোনো ভুল করেননি তিনি।
এরপর স্কোরলাইন বাড়াতে নামেন । ১৬তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এক চমৎকার শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মনিকা চাকমা। এক মিনিট পর দুর্দান্ত এক একক প্রচেষ্টায় গোল করেন আগের ম্যাচের জয়ের নায়িকা ঋতুপর্ণা চাকমা। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার নেওয়া শট গোলরক্ষকের হাত ফসকে আশ্রয় নেয় জালে।
ক্লাব বিশ্বকাপে শুরুটা আশানুরূপ না হলেও সময়ের সাথে সাথে ছন্দ ফিরে পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ৷ সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের সামনে এবার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, যারা শেষ আটে পেয়েছে কষ্টার্জিত জয়। তবে রিয়াল কোচ জাবি আলোনসো মনে করেন, জার্মান ক্লাবটির সাথে অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষাই।
নতুন কোচ আলোনসোর অধীনে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে আলা হিলালের সাথে ড্র করেছিল রিয়াল। তবে এরপর থেকে চেনা ছন্দে হাজির হয় দলটি। শেষ ১৬-তে ১-০ গোলে হারায় সেরি আ ক্লাব য়্যুভেন্তাসকে। অন্যদিকে আগের রাউন্ডে মন্টেরেকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে। শক্তির বিচারেও রিয়ালের চেয়ে পিছিয়ে থেকেই মাঠে নামতে যাচ্ছে ডর্টমুন্ড।
ম্যাচটিকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো অবশ্য প্রতিপক্ষকে দিয়েছেন যথেষ্ট সম্মানই।
“ভুলে গেলে চলবে না, ডর্টমুন্ড খুব ভালো একটা দল। (কোচ) নিকো কোভাচ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তারা ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। তাদের খেলায় একটা গতি এসেছে। তাদের বিপক্ষে তাই লড়াইটা সহজ হবে না। আমি মনে করি, খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।”
তবে এই ম্যাচেও হয়ত রিয়ালের শুরুর একাদশে জায়গা মিলবে না এমবাপের। টুর্নামেন্টের শুরুতে গ্যাস্ট্রোএনটেরাইটিসে আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। তাতে মিস করেন গ্রুপের তিন ম্যাচ। এরপর য়্যুভেন্তাসের বিপক্ষে মাঠে বদলি হিসেবে। মাঠে নেমেই দর্শকদের কাছ থেকে ফরাসি তারকা পান উষ্ণ অভ্যর্থনা, যা জানান দেয় যুক্তরাষ্ট্রে তার জনপ্রিয়তা।
তবে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও হয়ত তাকে দেখা যাবে না শুরুর একাদশে, আলোনসো দিলেন সেই আভাস।
“কিলিয়ান এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছে। গত তিনদিন থেকে তার অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই কারনেই আগের ম্যাচে সে কিছু মিনিট খেলেছিল। সে শুরুর একাদশে থাকবে কিনা, আগামীকাল (শনিবার) সকালে আমরা সেই সিদ্ধান্ত নেব। তবে সে মাঠে নামবে, এটা নিশ্চিত।”
দিয়াগো জতার মৃত্যুর খবর জানার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রুবেন নেভেস। আল হিলালের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে নেমে পারেননি আবেগ সামলাতে। সেখান থেকে সরাসরি পর্তুগালের এই ফুটবলার যোগ দিয়েছেন জতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। চোখের জলে সেখানে হাতে তুলে নিয়েছেন প্রিয় বন্ধুর কফিন।
শনিবার পর্তুগালের পোর্তোর কাছাকাছি মাত্রীজ দে গনডোমার চার্চে জতা ও তার ভাইয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই শহরেই গত শুক্রবার পরিবার-বন্ধুদের উপস্থিতিতে হয় তাদের শ্রদ্ধানুষ্ঠান। আল হিলালের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ আটের ম্যাচ থাকায় সেই অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারেননি নেভেস। তবে ম্যাচটা শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর চলে যান জতাকে শেষবারের মত বিদায় জানাতে।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যু বিশ্বাস হচ্ছে না রোনালদোর, বাকরুদ্ধ ক্লপ |
![]() |
স্পেনের উত্তরাঞ্চলে গত বৃহস্পতিবার গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। পর্তুগাল জাতীয় দলে দীর্ঘ সময় ধরে খেলার সুবাদে ২৮ বছর বয়সী জতার সাথে নেভেসের রয়েছে দারুণ এক বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রে বসেই যখন বন্ধুত অকাল প্রয়াণের খবর পাওয়ার পর থেকেই ভেঙে পড়েব নেভেস।
নেভেস সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে লিখেন,
“তারা বলে, আমরা যখন কাউকে হারিয়ে ফেলি, তখন তাকে ভুলে যাই। কিন্তু আমি তোমাকে কখনো ভুলব না ভাই আমার!”
গত শনিবার রাতে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্লুমিনেন্সে ও আল হিলালের ম্যাচে শুরুর আগে জতার স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। সেই সময় মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা নেভেস ও পর্তুগাল জাতীয় দলের আরেক সদস্য জোয়াও কানসেলো কান্না ধরে রাখতে পারেননি। তাদের অশ্রুসিক্ত মুখের ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভার প্রতি সম্মান জানাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন লিভারপুল দলের খেলোয়াড়রা। এই দুজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে পর্তুগাল যাচ্ছেন ক্লাবটির সদস্যরা, সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটাই দাবি ইএসপিএনের।
গত বুধবার রাতে স্পেনের উত্তরাঞ্চলে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জতা ও তার ভাই। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার প্রাক-মৌসুম অনুশীলনের জন্য ইংল্যান্ডে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সদ্যই পর্তুগালের হয় ইউয়েফা নেশন্স লিগ জেতা জতা। তবে মাঝপথেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি ও তার ভাই দুজনেই।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যুর শোকে ভেঙে পড়েছেন নেভেস-কানসেলো |
![]() |
শনিবার পর্তুগালের পোর্তোর কাছাকাছি মাত্রীজ দে গনডোমার চার্চে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। গনডোমার শহরেই জতার শৈশব কেটেছে। সেখানেই শুরু হয় তার ফুটবল যাত্রা। তিনি সহ তার পরিবারেরও বর্তমানে সেখানেই বসবাস। এই শহরেই গত শুক্রবার পরিবার-বন্ধুদের উপস্থিতিতে হয় তাদের শ্রদ্ধানুষ্ঠান।
২৮ বছর বয়সী জতার মৃত্যুর পর লিভারপুলের অ্যান্ডি রবার্টসন, মোহামেদ সালাহ ও ভার্জিল ফান ডাইকরা আবেগঘন শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন। ক্লাব কোচ আর্নে স্লট এবং মালিক ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ থেকেও এসেছে আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা।
জতার অকাল প্রয়াণ না হলে আগামী সোমবার থেকে নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু করত লিভারপুল। তবে ক্লাবের সাবেক এই খেলোয়াড়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা তাদের প্রাক-মৌসুমের প্রথম অনুশীলন সেশন স্থগিত করেছে। এছাড়াও ক্লাবটির পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে জতার পরিহিত ২০ নম্বর জার্সিকে অবসরে পাঠানোর।
নতুন মৌসুমের জন্য ক্লাব খোঁজার সময়ে মাঠের বাইরের ঘটনায় বড় ধাক্কা খেলেন থমাস পার্টে। সাবেক আর্সেনাল মিডফিল্ডারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ছয়টি অভিযোগ এনে চার্জ গঠন করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে। ভিন্ন ভিন্ন এসব ঘটনায় পার্টের বিরুদ্ধে তিনজন নারীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে মোট ছয়টি মামলা দায়েত করা হয়েছে। এদের মধ্যে এক নারীর অভিযোগ দুইবার ধর্ষণের, আরেক নারীর অভিযোগ তিনটি ধর্ষণের। আর তৃতীয় নারীর পার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন তাকে যৌন নিপীড়নের।
আরও পড়ুন
‘হৃদয়ের ডাক’ শুনে বার্সাকে হতাশ করে বিলবাওতেই থেকে গেলেন নিকো |
![]() |
অভিযোগের ভিত্তিতে ৩২ বছর বয়সী ঘানা জাতীয় দলের এই ফুটবলার আগামী ৫ আগস্ট ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে হাজির হবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
এই বিষয়ে তদন্ত টিমের প্রধান, ডিটেকটিভ সুপারিনটেনডেন্ট অ্যান্ডি ফারফি বিবৃতিতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
“এখন আমাদের মূল অগ্রাধিকার হলো অভিযোগকারী নারীদের প্রতি যতোটা সম্ভব সহায়তা প্রদান করা। কেউ যদি এই ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকেন বা তাদের কাছে কোনো তথ্য থাকে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
২০২০ সালে স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে আর্সেনালে যোগ দেন পার্টে। ২০২৪-২৫ মৌসুমেও ছিলেন মিকেল আর্তেতার দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। প্রিমিয়ার লিগে খেলেন ৩৫টি ম্যাচ, গোল করেন ৪টি।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যুর শোকে ভেঙে পড়েছেন নেভেস-কানসেলো |
![]() |
গত ৩০ জুন আর্সেনালের সাথে পার্টের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফলে তিনি এখন ফ্রি এজেন্ট হয়ে গেছেন। নতুন ক্লাবের সন্ধানে থাকা অবস্থায় ভিন্ন ঘটনায় এবার এসেছেন আলোচনায়।