২৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৩ এম

চলতি মৌসুমে দুটি এল ক্লাসিকোতে ছিল না কোনো প্রাণ। হেসেখেলেই জেতে বার্সেলোনা। কোপা দেল রের ফাইনালের প্রথমার্ধে এক গোল হজম করে যেন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগাল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলা হান্সি ফ্লিকের দল সমতা টানল শুরুতে, এরপর জুলস কুন্দের শেষ সময়ের গোলে নিশ্চিত করল মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
সেভিয়ায় রোববার কোপা দেল রের এল ক্লাসিকো ফাইনালে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কুন্দে। এই মৌসুমে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে এটি ফ্লিকের দলের হ্যাটট্রিক জয়। এই ফাইনালের আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কোপা দেল রের শিরোপার জয়ীদের তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। তারা এই প্রতিযোগিতা জিতেছে এই নিয়ে ৩২ বার। রিয়ালের নামের পাশে রয়েছে ২০টি, তারা আছে তিনে। দুইয়ে থাকা আথলেতিক বিলবাও জিতেছে ২৪ বার।
আরও পড়ুন
| ফাইনাল উপভোগ করতে চান বার্সা কোচ |
|
চলতি মৌসুমে এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। দুটিতেই ফ্লিকের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। উভয় ম্যাচেই বার্সেলোনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে মার খায় লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে জুলস কুন্দের হেড চলে যায় পোষ্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের আগে রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়াকে নিয়ে বিতর্কের কারণে বাড়তি চোখ ছিল তার দিকে। তবে সেই চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম দিকে ভালো কিছু সিদ্ধান্তই নেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিটে সেভাবে আক্রমণ শানাতে না পারা রিয়াল বড় ধাক্কা খায় ফেরলন্ড মন্ডির চোটে। ভঙ্গুর রক্ষণভাগে তার বদলি হিসেবে অনভিজ্ঞ ফ্রাঙ্ক গার্সিয়াকে নামান আনচেলত্তি। তবে তাতেও চিত্রে আসেনি কোনো বদল। বারবার উইং ধরে আক্রমণে উঠছিলেন ইয়ামাল, আর গতিতে হার মানাচ্ছিলেন রিয়ালের ডিফেন্ডারদের।
১৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের ভেতর পড়ে যান ফেদেরিকো ভালভের্দে, তখন বল তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বার্সেলোনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ক্রসে দারুণ এক হেডার লক্ষ্যেই রেখেছিলেন কুন্দে, তবে শেষ মুহূর্তে বাম হাতে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
| এফএ কাপ জিতে ‘বড় ক্ষতি’ এড়াতে চান গার্দিওলা |
|
তবে এর ৭ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে গতিতে রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে ছেলেখেলা করা ইয়ামাল বল বাড়ান বক্সের একটু বাইরে ফাঁকায় থাকা পেদ্রির দিকে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার সময় নিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় জুড বেলিংহাম ৩৫তম মিনিটে দানি সেবায়োসের পাস থেকে বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় আর মেলেনি গোল।
৪৩তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নার জটলার মধ্যে ডিফ্লেকশনের পর ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এর এক মিনিট বাদে আরেকটি কর্নার থেকেও বার্সেলোনা পেয়েছিল ভালো সুযোগ, তবে কাজে লাগাতে পারেনি।
একতরফা প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়াল গোলের জন্য নিতে পারে মাত্র একটি শট, সেটাও থাকেনি লক্ষ্যে। আর আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭টি শটের চারটিই রাখে লক্ষ্যে।
বিরতিতে রদ্রিগোর জায়গায় কিলিয়ান এমবাপেকে নামায় রিয়াল। এই অর্ধের শুরুতেই ভিন্ন ছন্দে হাজির হয় দলটি। ৪৮তম মিনিটে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান বেলিংহাম। প্রথম টাচে শট না নিয়ে কিছুটা কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নেন ভিনিসিয়ুস, যা ফেরান ওজসিচ সেজেনি। ফিরতি বল পেয়ে ফের ব্রাজিল তারকা শট নিলে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
এমবাপে মাঠে নামার পর থেকেই বেড়ে যায় রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৫৫তম মিনিটে ড্রিবলিং করে বক্সে প্রবেশ করে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। তবে আরও একবার প্রথম টাচে শট না করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফিফার বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির আগে টানা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এই অর্ধের শুরু থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটায়। আর সেটা হচ্ছিল যার কারণে, সেই এমবাপেই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে ম্যাচ ফেরান। বক্সের বাইরে বল নিয়ে আগুয়ান গতিতে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি তারকাকে টেনে ফেলে দেন পেদ্রি। রিয়ালের তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্রেফ হলুদ কার্ড পান তিনি।
এরপর ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বুলেট গতির এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপেই। এই প্রথম পেশাদার ক্যারিয়ারে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলের দেখা পেয়েছেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
| রেফারি পরিবর্তন না হলেও ফাইনালে অংশ নেবে রিয়াল |
|
একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া রিয়াল খানিক বাদে পেয়েছিল দারুণ সুযোগ। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ভিনিসিয়ুস পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ছয় গজে ফাঁকায় থাকা এমবাপের দিকে। তবে সেযাত্রায় বার্সেলোনা ক্লিয়ার করতে সমর্থ হয়।
প্রথমার্ধের ঠিক বিপরীত ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে এই দ্বিতীয়ার্ধে চেনাই ছিল দায়। একটা গোল হজমের পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিডও নিয়ে ফেলে রিয়াল। ৭৭তম মিনিটে আর্দা গুলেরের কর্নার থেকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক হেডারে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি।
৮২তম মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের কার্লিং শট নেন ইয়ামাল, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় থামান কোর্তোয়া। তবে এর একটু পর তার ভুলে গোল হজম করে বসে রিয়াল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলের দখল নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ ফেররান তরেস। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া, আর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার পারেননি ক্লিয়ারেন্স করতে।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল করে যেন প্রাণ ফিরে পায় বার্সেলোনা শিবির। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, ঠিক তখন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে রিয়ালকে প্রায় বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাউল আসেন্সিও। রাফিনিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে হজম করেন পেনাল্টি। তবে ভিএআর চেকের পর ডাইভ দেওয়ার কারণে পেনাল্টি বাতিল করে রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিট চলে আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণের মধ্য দিয়ে। ১০৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস পেয়ে বাঁদিক থেকে জটলার মধ্যে শট নেন তরেস, যা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যদি থাকত, খুঁজে নিত জালের ঠিকানা। কারণ, কোর্তোয়ারও চেয়ে দেখা ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই।
১০৭তম মিনিটে আরও একবার রিয়ালের জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনি অফসাইডে থাকাই এই দফায় হতাশই হতে হয় বার্সেলোনাকে। এর মিনিট পাঁচেক পর দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করেন রিয়াল মিডফিল্ডার গুলের। তার ক্রসে ঝাঁপিয়েও হেডার দিতে পারেননি বেলিংহাম।
১১৬তম মিনিটে রিয়ালের সর্বনাশ করেন লুকা মদ্রিচ। নিজেদের অর্ধে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান কুন্দে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্লেসিং শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়া। এর মিনিট খানেক বাদেই বার্সেলোনার বক্সে ফাউলের শিকার হন এমবাপে। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজলেও তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগে উত্তেজনা দেখা দেয় রিয়ালের ডাগআউটে। বদলি হিসেবে আগেই উঠে যাওয়া রুডিগার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একটা বস্তু ছুড়ে মারেন। শাস্তি হিসেবে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। এরপর যোগ হয় রিয়ালের হারের দুঃখ।
No posts available.
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৩ এম

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচে বিকেল ৫টায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে সুযোগ পেয়েছেন নবিরন খাতুন। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মিডফিল্ডার মুনকি আক্তার।
গত শুক্রবার থাই মেয়েদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে যে কারণে রক্ষণে একজন বেশি নিয়েছেন কোচ পিটার বাটলার। কেননা নবিরন রক্ষণে খেলেন। যেখানে নেতৃত্ব অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের কাছে। তার সঙ্গে রক্ষণে আছেন শামসুন্নাহার সিনিয়র, কোহাতি কিসকু ও শিউলি আজিমরা।
মিডফিল্ডে অভিজ্ঞ মারিয়া মান্ডার সঙ্গে থাকবেন মনিকা চাকমা। ফরোয়ার্ডে ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন ও শামসুন্নার জুনিয়র খেলছেন। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে ইউটিউব লাইভে।
তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে সাত পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামছে থাইল্যান্ড। আগের ম্যাচের পরই বাংলাদেশ কোচ আভাস দিয়েছিলেন তাদের বেঞ্চের শক্তি নিয়ে। তাদের আরেকটি দল যে বেঞ্চে বসে আছে তাও জানিয়েছিলেন। সতর্ক বাটলার যে কারণে ফাইভ ব্যাকলাইন নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন।
বাংলাদেশ একাদশ:
রূপনা চাকমা (গোলকিপার), শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার (সিনিয়র), আফঈদা খন্দকার (অধিনায়ক), কোহাতি কিসকু, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, শামসুন্নাহার (জুনিয়র), নবিরন খাতুন।

মাঠে প্রতিপক্ষকে একচুলও ছাড় দিতে রাজি নন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। শুধু কি মাঠের পারফরম্যান্স? রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে উষকে দিলে পরিণতিটাও যে ভালো হয়না সেটা প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের ভালো করেই জানা। মেজাজ হারিয়ে বিপদেও পড়েছেন মাঝেমধ্যে।
সবশেষ গতকাল রাতে এল ক্লাসিকোয় ভিনির রুদ্ররূপ দেখেন বার্সেলোনার তারকা ফুটবলার লামিনে ইয়ামাল। রিয়ালকে নিয়ে ম্যাচের আগে ১৮ বছর বয়সী উইঙ্গারের মন্তব্যে এমনিতেই তেঁতে ছিল ক্লাবটির ফুটবলাররা। ২-১ ব্যবধানে জয়ের পর ইয়ামালের ওপর ক্ষোভ উগরে দেওয়ার অপেক্ষাতেই যেন ছিলেন ভিনি।
ম্যাচ শেষে ইয়ামাল মাঠ ছাড়ার সময় তেড়ে যান ভিনিসিয়ুস। তাকে আটকাতে রীতিমতো হিমশিম খায় সতীর্থ আর দলের স্টাফরা। ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে রিয়াল তারকা নাকি বলেছিলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
আরও পড়ুন
| ‘ফিফা আসিয়ান কাপ’ শুরুর ঘোষণা ফিফা সভাপতির |
|
অবশ্য গোলমাল শেষে ‘শান্তির বার্তা’ দিলেন ভিনিসিয়ুস। সমর্থকদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান দেখানোর কথা বলেন তিনি, ‘সব মাদ্রিদিস্তাদের জন্য, বিশেষ করে যারা বার্নাব্যুয়ে এসে প্রাণভরে আমাদের সমর্থন করেছেন। এটাই এল ক্লাসিকো, যেখানে মাঠে ও মাঠের বাইরে অনেক কিছুই ঘটে। আমরা সব সময় ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু অনেক সময় সম্ভব হয় না।’
ভিনিসিয়ুস আরও যোগ করেন, ‘আমাদের কারও প্রতি অসম্মান দেখানোর কোনো ইচ্ছা নেই—না তরুণ খেলোয়াড়দের, না সমর্থকদের প্রতি। আমরা জানি, যখন মাঠে নামি, তখন নিজের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করতে হয়, আর আজ সেটাই করেছি।’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স ছিল ভিনিসিয়ুসের। গোল বা অ্যাসিস্ট পেলেও আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্তে থেকে বার্সার রক্ষণভাগের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন ২৫ বছর বয়সী উইঙ্গার। কাতালান ক্লাবের রাইট ব্যাক জুলেস কুন্দেকে নাচিয়ে ছাড়েন তিনি। কোচ জাবি আলোনসো তাকে তুলে নিয়ে রদ্রিগোকে নামানোর সময় অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় ভিনিকে।

গ্রীষ্মকালীয় দল বদলে সবচেয়ে বেশি খরুচে ক্লাব ছিল লিভারপুল। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে তারকা ফুটবলারদের দলে ভেড়ানোয় অল রেডদের ধারে-কাছে ছিল কম ক্লাবই। তবে এতো এতো তারকার ছাপ পড়ছে না মাঠের খেলায়। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়নদের অবস্থা এখন এককথায় শোচনীয়।
সবশেষ ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ২-৩ গোলে হারে লিভারপুল। ২০২১ সালের পর আরেকবার প্রিমিয়ার লিগ টানা চার ম্যাচ হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় অ্যান ফিল্ডের ক্লাবটির। একের পর এক হারে পয়েন্ট টেবিলেও নিম্নমুখী যাত্রা অব্যহত রেখেছে আর্নে স্লটের দল। শীর্ষে থাকা আর্সেনাল থেকে ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা লিভারপুল সাত নম্বরে অবস্থান করছে।
লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের এমন দুর্দশার কারণ কি হতে পারে ? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে অনেকেই। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড ওয়েইন রুনির মতে লিভারপুলের অনেক সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা নেতৃত্ব। স্লটের দলে নেতার ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না কাউকে।
আরও পড়ুন
| রিয়াল খেলোয়াড়দের কথার আক্রমণে জর্জরিত ইয়ামাল, বার্নাব্যুতে 'ভিনিসিয়ুস আগ্নেয়গিরি’ |
|
সম্প্রতি ‘দ্য ওয়েইন রুনি শো’ এর একটি এপিসোডে রুনি বলেন, “নেতৃত্বের অভাব সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিশেষ করে অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক এবং দলের প্রধান ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহর শরীরী ভাষা এই সময়ে উদ্বেগের কারণ।’
তিনি আরও যোগ করেন,‘কেউই এই পরিস্থিতি আশা করেনি। এটি খুব দ্রুত এসেছে এবং খুব শক্তভাবে আঘাত করেছে। এখন তারা সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছে।’
দলের দুই সিনিয়র ফুটবলারের মধ্যে নেতার আচারণ দেখছেন না রুনি, ‘শরীরী ভাষা অনেক কিছুই বলে। আমরা দুজনের শরীরী ভাষায় মধ্যেই পার্থক্য লক্ষ্য করেছি। তারা দলের শীর্ষ দুই খেলোয়াড়। তাদের শরীরী ভাষা যদি ঠিক না থাকে, তা বাকি সবার ওপর প্রভাব ফেলে।’
লিভারপুলের পরের ম্যাচ ক্রিস্টল প্যালেসের বিপক্ষে। কারাবাও কাপের চতুর্থ রাউন্ডে ক্লাবটির মুখোমুখি হবে তারা। ক্রিস্টল প্যালেসের বিপক্ষে সবশেষ দেখায় ১-২ গোলে হেরেছে সালাহরা।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলন। গতকাল থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের জন্য নতুন একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো। এই প্রতিযোগিতার নাম হবে ‘ফিফা আসিয়ান কাপ’।
নতুন টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়ে ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফিফা আসিয়ান কাপের মাধ্যমে আমরা দেশগুলোকে একত্রিত করছি। এই প্রতিযোগিতা বিশাল সাফল্য বয়ে আনবে। এটি আসিয়ান অঞ্চলের জাতীয় দলের ফুটবলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমাদের খেলাধুলার বিকাশে সহায়ক হবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইতোমধ্যেই আয়োজিত হচ্ছে আসিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টের সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন ভিয়েতনাম। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় শিরোপা জেতে ভিয়েতনাম।
ইনফান্তিনো জানান, নতুন এই টুর্নামেন্টটি ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচ উইন্ডোর সময় অনুষ্ঠিত হবে, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন লিগের খেলোয়াড়রা তাদের জাতীয় দলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
সবশেষ পূর্ব তিমোর আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের ১১তম সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে। ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফুটবলবিশ্বে ১১ একটি প্রতীকী সংখ্যা, কারণ প্রতিটি দলের ১১ জন খেলোয়াড় থাকে।’
২০২৬ সালের বিশ্বকাপের মহাদেশীয় বাছাইপর্বে তৃতীয় রাউন্ডের পর একমাত্র আসিয়ান দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এগিয়ে ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেনি দেশটি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নতুন এই টুর্নামেন্টটি আরব কাপের ফরম্যাটে আয়োজিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিফা জানিয়েছে, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সবকিছু চূড়ান্ত করবে তারা।

ম্যাচের আগেই আভাস ছিল এমন কিছুর। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। দুই দলের ফুটবলারদের তেড়েফুঁড়ে আসা, বিবাদে জড়ানোর মতো ঘটনা এল-ক্লাসিকোর পুরোনো দিনের আমেজই যেন ফিরিয়ে এনেছে।
বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ দ্বৈরথে এবার আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়ানোর কাজটা করেন লামিনে ইয়ামাল। ‘রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে এরপর অভিযোগও করে’ তাঁর এমন মন্তব্যে তেতে ওঠে মাদ্রিদ শিবির। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সা উইঙ্গার ইয়ামালের দিকে তেড়ে গিয়ে সেই ক্ষোভই বুঝি উগরে দিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-দানি কার্ভাহালরা।
বিবাদে জড়িয়ে পড়েন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার কোর্তোয়াও
লা লিগায় গতকালের ম্যাচটি কিলিয়ান এমবাপে ও জুড বেলিংহামের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন পেদ্রি। আর তাতেই ডাগ-আউটে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
রেফারির ম্যাচ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজতেই সেই উত্তেজনা রূপ নেয় বাক-বিতণ্ডা, হাতাহাতি, আর ধাক্কাধাক্কিতে। রিয়ালের ফুটবলারদের ক্ষোভটা ছিল মূলত ইয়ামালের ওপর। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় ইয়ামাল যখন হেঁটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন তাঁকে হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু বলছেন কার্ভাহাল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, রিয়ালের রাইট ব্যাক কার্ভাহাল ইয়ামালকে বলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো। এখন বলো দেখি!’ তখন ইয়ামাল কার্ভাহালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে থামিয়ে দেন রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
আক্রমণাত্মক আর মারমুখি ভঙ্গিতে দেখা যায় ভিনিসিয়ুসকে। সতীর্থ সহ অনেকেও আটকাতে পারছিলেন না ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে। নিজের জাতীয় দলের সতীর্থ রাফিনিয়ার দিকেও তেড়ে যান ভিনি। ওই সময় ভিনিসিয়ুস নাকি ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
ম্যাচ শেষে এমন উত্তেজনা নিয়ে বার্সার মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি ইয়ং বলেন, ‘আমি মাঠে ছিলাম, হঠাৎ দেখলাম অনেক খেলোয়াড় এবং স্টাফ জড়ো হয়েছে। ম্যাচ যখন শেষ হলো তখন মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা লামিনের দিকে দৌড়ে গেল। আমার কাছে এটা কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে।’
ব্রাজিলের জাতীয় দলের সতীর্থকে থামাতে নেমে পড়েন রাফিনিয়াও
ডাচ মিডফিল্ডার কারভাহাল ও ইয়ামালের মধ্যে কথার লড়াই নিয়ে বলেন, ‘যেহেতু তুমি (কারভাহাল) লামিনের সতীর্থ (স্পেন দলের), তুমি তো তাকে চেন এবং যদি মনে করো তাঁর এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি, তাহলে তুমি তাকে কল করতে পারতে, মাঠে এমনটা করার বদলে।’
অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসোর কাছে এসব স্বাভাবিকই মনে হয়েছে, ‘যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আমার মনে হয় না আমাদের এখান থেকে বেশি অর্থ খুঁজে বের করা উচিত। এটা ফুটবল। আর এল-ক্লাসিকোর মতো ম্যাচে এসব হবেই।’
বিপরীতে বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ মাঠের খেলাতেই মনোযোগ দিতে বলছেন, ‘সত্যি বলতে, আমি বুঝতে পারিনি কি ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত বেঞ্চের মধ্যে অনেক লোক চিৎকার করছিল, তবে আমার মনে হয় আমাদের খেলার দিকে মনোযোগ দেওয়াই উচিত।’
ম্যাচ পরবর্তী দুই দলের বাক-বিতণ্ডায় জড়ানোর ঘটনায় ৬ জনকে হলুদ কার্ড এবং একজনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। রিয়ালের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও আর বার্সেলোনার ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে । সরাসরি লাল কার্ড দেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার আন্দ্রে লুনিন।