২৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৩ এম
চলতি মৌসুমে দুটি এল ক্লাসিকোতে ছিল না কোনো প্রাণ। হেসেখেলেই জেতে বার্সেলোনা। কোপা দেল রের ফাইনালের প্রথমার্ধে এক গোল হজম করে যেন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগাল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলা হান্সি ফ্লিকের দল সমতা টানল শুরুতে, এরপর জুলস কুন্দের শেষ সময়ের গোলে নিশ্চিত করল মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
সেভিয়ায় রোববার কোপা দেল রের এল ক্লাসিকো ফাইনালে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কুন্দে। এই মৌসুমে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে এটি ফ্লিকের দলের হ্যাটট্রিক জয়। এই ফাইনালের আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কোপা দেল রের শিরোপার জয়ীদের তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। তারা এই প্রতিযোগিতা জিতেছে এই নিয়ে ৩২ বার। রিয়ালের নামের পাশে রয়েছে ২০টি, তারা আছে তিনে। দুইয়ে থাকা আথলেতিক বিলবাও জিতেছে ২৪ বার।
আরও পড়ুন
ফাইনাল উপভোগ করতে চান বার্সা কোচ |
![]() |
চলতি মৌসুমে এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। দুটিতেই ফ্লিকের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। উভয় ম্যাচেই বার্সেলোনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে মার খায় লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে জুলস কুন্দের হেড চলে যায় পোষ্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের আগে রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়াকে নিয়ে বিতর্কের কারণে বাড়তি চোখ ছিল তার দিকে। তবে সেই চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম দিকে ভালো কিছু সিদ্ধান্তই নেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিটে সেভাবে আক্রমণ শানাতে না পারা রিয়াল বড় ধাক্কা খায় ফেরলন্ড মন্ডির চোটে। ভঙ্গুর রক্ষণভাগে তার বদলি হিসেবে অনভিজ্ঞ ফ্রাঙ্ক গার্সিয়াকে নামান আনচেলত্তি। তবে তাতেও চিত্রে আসেনি কোনো বদল। বারবার উইং ধরে আক্রমণে উঠছিলেন ইয়ামাল, আর গতিতে হার মানাচ্ছিলেন রিয়ালের ডিফেন্ডারদের।
১৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের ভেতর পড়ে যান ফেদেরিকো ভালভের্দে, তখন বল তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বার্সেলোনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ক্রসে দারুণ এক হেডার লক্ষ্যেই রেখেছিলেন কুন্দে, তবে শেষ মুহূর্তে বাম হাতে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
এফএ কাপ জিতে ‘বড় ক্ষতি’ এড়াতে চান গার্দিওলা |
![]() |
তবে এর ৭ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে গতিতে রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে ছেলেখেলা করা ইয়ামাল বল বাড়ান বক্সের একটু বাইরে ফাঁকায় থাকা পেদ্রির দিকে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার সময় নিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় জুড বেলিংহাম ৩৫তম মিনিটে দানি সেবায়োসের পাস থেকে বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় আর মেলেনি গোল।
৪৩তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নার জটলার মধ্যে ডিফ্লেকশনের পর ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এর এক মিনিট বাদে আরেকটি কর্নার থেকেও বার্সেলোনা পেয়েছিল ভালো সুযোগ, তবে কাজে লাগাতে পারেনি।
একতরফা প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়াল গোলের জন্য নিতে পারে মাত্র একটি শট, সেটাও থাকেনি লক্ষ্যে। আর আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭টি শটের চারটিই রাখে লক্ষ্যে।
বিরতিতে রদ্রিগোর জায়গায় কিলিয়ান এমবাপেকে নামায় রিয়াল। এই অর্ধের শুরুতেই ভিন্ন ছন্দে হাজির হয় দলটি। ৪৮তম মিনিটে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান বেলিংহাম। প্রথম টাচে শট না নিয়ে কিছুটা কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নেন ভিনিসিয়ুস, যা ফেরান ওজসিচ সেজেনি। ফিরতি বল পেয়ে ফের ব্রাজিল তারকা শট নিলে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
এমবাপে মাঠে নামার পর থেকেই বেড়ে যায় রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৫৫তম মিনিটে ড্রিবলিং করে বক্সে প্রবেশ করে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। তবে আরও একবার প্রথম টাচে শট না করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফিফার বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির আগে টানা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এই অর্ধের শুরু থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটায়। আর সেটা হচ্ছিল যার কারণে, সেই এমবাপেই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে ম্যাচ ফেরান। বক্সের বাইরে বল নিয়ে আগুয়ান গতিতে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি তারকাকে টেনে ফেলে দেন পেদ্রি। রিয়ালের তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্রেফ হলুদ কার্ড পান তিনি।
এরপর ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বুলেট গতির এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপেই। এই প্রথম পেশাদার ক্যারিয়ারে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলের দেখা পেয়েছেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
রেফারি পরিবর্তন না হলেও ফাইনালে অংশ নেবে রিয়াল |
![]() |
একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া রিয়াল খানিক বাদে পেয়েছিল দারুণ সুযোগ। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ভিনিসিয়ুস পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ছয় গজে ফাঁকায় থাকা এমবাপের দিকে। তবে সেযাত্রায় বার্সেলোনা ক্লিয়ার করতে সমর্থ হয়।
প্রথমার্ধের ঠিক বিপরীত ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে এই দ্বিতীয়ার্ধে চেনাই ছিল দায়। একটা গোল হজমের পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিডও নিয়ে ফেলে রিয়াল। ৭৭তম মিনিটে আর্দা গুলেরের কর্নার থেকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক হেডারে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি।
৮২তম মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের কার্লিং শট নেন ইয়ামাল, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় থামান কোর্তোয়া। তবে এর একটু পর তার ভুলে গোল হজম করে বসে রিয়াল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলের দখল নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ ফেররান তরেস। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া, আর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার পারেননি ক্লিয়ারেন্স করতে।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল করে যেন প্রাণ ফিরে পায় বার্সেলোনা শিবির। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, ঠিক তখন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে রিয়ালকে প্রায় বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাউল আসেন্সিও। রাফিনিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে হজম করেন পেনাল্টি। তবে ভিএআর চেকের পর ডাইভ দেওয়ার কারণে পেনাল্টি বাতিল করে রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিট চলে আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণের মধ্য দিয়ে। ১০৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস পেয়ে বাঁদিক থেকে জটলার মধ্যে শট নেন তরেস, যা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যদি থাকত, খুঁজে নিত জালের ঠিকানা। কারণ, কোর্তোয়ারও চেয়ে দেখা ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই।
১০৭তম মিনিটে আরও একবার রিয়ালের জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনি অফসাইডে থাকাই এই দফায় হতাশই হতে হয় বার্সেলোনাকে। এর মিনিট পাঁচেক পর দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করেন রিয়াল মিডফিল্ডার গুলের। তার ক্রসে ঝাঁপিয়েও হেডার দিতে পারেননি বেলিংহাম।
১১৬তম মিনিটে রিয়ালের সর্বনাশ করেন লুকা মদ্রিচ। নিজেদের অর্ধে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান কুন্দে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্লেসিং শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়া। এর মিনিট খানেক বাদেই বার্সেলোনার বক্সে ফাউলের শিকার হন এমবাপে। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজলেও তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগে উত্তেজনা দেখা দেয় রিয়ালের ডাগআউটে। বদলি হিসেবে আগেই উঠে যাওয়া রুডিগার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একটা বস্তু ছুড়ে মারেন। শাস্তি হিসেবে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। এরপর যোগ হয় রিয়ালের হারের দুঃখ।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৫৩ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:৫০ পিএম
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচটা একদমই ভালো যায়নি নিকোলাস ওতামেন্ডির। একুয়েডরের বিপক্ষে বুধবার ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর এই লাল কার্ডের জন্য আগামী বছর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে দর্শক হয়েই থাকতে হবে ওতামেন্ডিকে।
আকাশী-সাদা জার্সিতে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলেই জাতীয় দলকে বিদায় বলার ঘোষণা দিয়েছেন ওতামেন্ডি। একুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘তেলেফ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অবসর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান ৩৭ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার।
আরও পড়ুন
এমবাপের উদ্দেশ্যে ‘বানরের আওয়াজ করায়’ দর্শক গ্রেপ্তার |
![]() |
“সামনের এই বিশ্বকাপই হবে আমার জাতীয় দলের হয়ে শেষ প্রতিযোগিতা। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি এই জার্সি পরে নিজের সেরাটা দিতে।”
অবসরের ঘোষণা ছাড়াও ফুটবলে ক্যারিয়ারে নিজের উত্থান-পতন নিয়ে কথার ঝাপি খুলে বসেন ওতামেন্ডি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সংগ্রাম আর লড়াই করে যোদ্ধার মতো এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
“প্রথম ডিভিশনে খেলাই আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল, তারপর সেখান থেকে জাতীয় দলে পৌঁছানো তো আরও কঠিন। আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে, জীবনে সবকিছুর দাম আছে। যোদ্ধার মতো লড়তে হবে, নিজের সেরাটা দিতে হবে। আর যেদিন কিছু হবে না, পরের দিন আবার চেষ্টা করতে হবে। সেটাই জীবন।”
আরও পড়ুন
ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে সিটির বড় ধাক্কা |
![]() |
২০০৯ সালে পানামার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয় ওতামেন্ডির। এরপর আলবিসেস্তাদের হয়ে ১২৮ ম্যাচ খেলে ৭টি গোলও করেছেন তিনি।
জাতীয় দলে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারের জীবনের সেরা মূহূর্ত কোনটি এমন প্রশ্নে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপকেই বেছে নেন তিনি।
“কাতারের সেই দিনগুলো এখনও চোখের সামনে ভাসে। কুটি (ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো) তখন শ্যাম্পেন খাচ্ছে, সিগার টানছে, এক কথায় সবকিছু যেন পাগলাটে। এই স্মৃতিগুলো সারাজীবন মাথায় গেঁথে থাকবে। সেই শিরোপার কোনও তুলনা হয় না।”
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
বর্তমানে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার হয়ে খেলছেন ওতামেন্ডি। আর্জেন্টিনার ভেলাসে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে আর্জেন্টিনায় ফিরবেন কিনা জানতে চাইলে ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দেন তিনি।
“সত্যি বলতে, এখনও কিছু জানি না। ২০২৬ বিশ্বকাপের পর সেটা ভেবে দেখব, দেখা যাক। ফিদেও (ডি মারিয়া) ফিরে এসেছে, চমৎকার খেলছে। লেয়াও (পারেদেস)। তারা আমার বন্ধু, আর ওদের খুশি দেখে আমারও খুব আনন্দ হয়।”
গ্যালারিতে বসে বর্ণবাদী আচরণের মাশুল দিলেন স্পেনের এক দর্শক। কিলিয়ান এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী অঙ্গভঙ্গি ও আওয়াজ করায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই দর্শকের। ইএসপিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের ন্যাশনাল পুলিশ জানিয়েছে এই খবর।
স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে গত ২৪ আগস্ট রিয়েল ওভেইদোর মাঠে খেলতে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। নবাগত দলটির বিপক্ষে এমবাপের জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানের সহজ জয় পায় স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি।
বুধবার স্পেনের পুলিশ জানিয়েছে, ওই ম্যাচের এক পর্যায়ে এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বানরের আওয়াজ ও অঙ্গভঙ্গি করেন এক দর্শক। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে এমবাপের প্রথম গোলের পর এই কাজটি করেই অভিযুক্ত সেই দর্শক।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই দর্শককে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ম্যাচের পরপরই এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল লা লিগা কর্তৃপক্ষ। প্রায় দুই সপ্তাহ পর সেই দর্শককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
পরে এই মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্বেষমূলক অপরাধের আদালতে। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৬০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা।
সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। পরে ওই ঘটনায় তিন দর্শককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সবশেষ মৌসুমে চোটের কারণে বড় মূল্য চুকাতে হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটিকে। গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের চোটে শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে পড়তে হয় ইংলিশ ক্লাবটিকে। এবার নতুন মৌসুম শুরু হতে না হতেই ফের ইনজুরি হানা দিল পেপ গার্দিওলার শিবিরে।
জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বুরকিনো ফাসোর বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর চোটে পড়েছেন ম্যান সিটির মিশরিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর মারমুশ। এরই মধ্যে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ম্যানচেস্টারে ফিরছেন ২৬ বছর বয়সী ফুটবলার।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
প্রাথমিক স্ক্যানে চোট গুরুতর বলে নিশ্চিত করেছে ম্যান সিটি। তাতে আগামী রোববার ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে সিটির।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মারমুশের সবশেষ অবস্থা জানিয়েছে সিটি।
“ওমর মারমুশ মিশরের হয়ে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকালে হাঁটুর চোট পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মিশরে করা স্ক্যান অনুযায়ী, তিনি রোববারের ম্যানচেস্টার ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। তিনি এখন ম্যানচেস্টারে ফিরছেন, যেখানে আরও পরীক্ষা হবে এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
সিটি কোচ গার্দিওলার জন্য মারমুশের এই চোট বড় ধাক্কা হয়েই এলো। এর আগে ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে পড়েছেন মাতেও কোভাচিচ, যোস্কো গাভার্দিওল, সাভিনহো, রায়ান চেরকি, আব্দুকাদির খুসানোভ, রিকো লুইস ও নিকো ও’রেইলি।
এর আগে সিটি ডিফেন্ডার জন স্টোন্স ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ক্যাম্পে যোগ দিলেও পেশির চোটের কারণে কোনো ম্যাচ না খেলেই ফেরত আসেন।
তারকা ফুটবলারদের চাকচিক্যময় জীবন নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ থাকে সবসময়ই। ইউরোপীয় ফুটবল কিংবা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবগুলোয় ফুটবলারদের পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ ঢালছে। তাতে দ্রুতই জীবন বদলে যাচ্ছে তরুণ অনেক ফুটবলারদের। বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করেন তারা।
তবে সবকিছুরই তো নেতিবাচকতা আছে। দূর থেকে ফুটবলারদের জীবন আর্কষণীয় মনে হলেও মুদ্রার উল্টো পিঠও নাকি আছে। রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে তেমনটাই বলছেন।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যাক্তিগত জীবনের পর্দার আড়ালের কথা বলেন তিনি। নিজের সন্তানদেরও নাকি কখনও ফুটবলকে বেছে নেওয়ার উপদেশ দেবেন না এমবাপে।
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
ফুটবলকে মনে প্রাণে ধারণ করেন বলেই সব নেতিবাচকতা ভুলে থাকছেন এমবাপে।
“খেলাটার প্রতি এই টানটা যদি না থাকত, তাহলে ফুটবলের দুনিয়ার অন্ধকার দিকগুলো আমাকে বহু আগেই দূরে সরিয়ে দিত।”
মাঠের খেলার বাইরেও অনেক দিক থাকে যা সমর্থকদের ধারণার মধ্যে থাকে না। দর্শকদের এসব বিষয় দেখতে হয় না বলে তাদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন এমবাপে।
“আমি সবসময় বলি, যারা স্টেডিয়ামে এসে শুধু খেলা দেখতে পারে, তারা খুব সৌভাগ্যবান কারণ তারা জানে না এর পেছনে কী চলে, কোন গোপন জগৎ আছে।”
আরও পড়ুন
দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা, জিমে সময় কাটালেন ফুটবলাররা |
![]() |
যে অঢেল অর্থের হাতছানি ফুটবলারদের জীবনে বড় প্রভার রাখে, সেই টাকাই যত নষ্টের গোড়া বলে মনে করেন ফরাসি তারকা।
“যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা। আমি আমার সন্তানদের কখনও ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে বলব না।”
মূলত গত মৌসুমে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পরই যত ঝামেলায় পড়েন এমবাপে। গত জুলাইয়ে পিএসজির বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি ফৌজদারি অভিযোগ (যেখানে তিনি হয়রানি ও ব্ল্যাক মেইলের অভিযোগ এনেছিলেন) প্রত্যাহার করে নেন।
তবে এমবাপে এখনও দাবি করছেন তার ৫৫ মিলিয়ন ইউরো বেতন ও বোনাস ফরাসি ক্লাবটি বকেয়া রেকেছে। সেই অর্থ আদায়ের জন্য তিনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন
রেফারির সিদ্ধান্তে খুশি নন মার্তিনেজ |
![]() |
অবশ্য সাবেক ক্লাবের সঙ্গে কোনো বিদ্বেষ নয়, শুধু প্রাপ্য অর্থটাই ফেরত চান এমবাপে।
“পিএসজির প্রতি আমার কোনো বিদ্বেষ নেই। আমি ক্লাবটিকে ভালোবাসি, এখনও সেখানে আমার বন্ধুরা আছে। কিন্তু এই পথটাই একমাত্র উপায়, আমার প্রাপ্যটা ফেরত পাওয়ার জন্য।”
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু ২-১ গোলের জয়ে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেন এমবাপে।
ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে জাতীয় দলের হয়ে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের মালিক রিয়াল তারকা। থিয়েরি হেনরিকে ছাপিয়ে ফ্রান্সের হয়ে তার গোল এখন ৫২, শীর্ষে থাকা অলিভার জিরুর গোল ৫৭।
কথায় বলে, স্বপ্ন সবসময় বড় দেখতে হয়। সেই দলে আছেন লামিন ইয়ামাল। ফুটবল ক্যারিয়ারে দারুণ শুরু করা স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের স্বপ্ন তাই অনেকগুলো ব্যালন ডি'অর জেতা।
ফ্রান্সের প্যারিসে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করা হবে এবারের ব্যালন ডিঅর পুরস্কার। পিএসজির ফরাসি তারকা ওসমান দেম্বেলের পাশাপাশি ইয়ামালও এবারের ব্যালন জয়ের অন্যতম দাবীদার।
সেই আলোচনা চলার মাঝেই এক পডকাস্টে ইয়ামাল জানিয়েছেন নিজের স্বপ্নের কথা।
আরও পড়ুন
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দুই ‘জুজু’ |
![]() |
“আমি আমার বন্ধুদের বলেছি, আমি একটি ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি না। আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি।”
এখন পর্যন্ত বার্সেলোনা ও স্পেনের হয়ে ইয়ামালের যেমন পারফরম্যান্সে, তাতে এই স্বপ্ন দেখা অবশ্যই যৌক্তিক। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বার্সেলোনার হয়ে একশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইয়ামাল। গত মৌসুমে ১৮ গোলের সঙ্গে করেছেন ২৫টি অ্যাসিস্ট।
গোল-অ্যাসিস্টের বাইরেও স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন ইয়ামাল।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
সেই একই ছন্দ ধরে রেখে নতুন মৌসুমের শুরুটাও করেছেন উড়ন্ত। লা লিগায় প্রথম তিন ম্যাচে দুই গোল করে ফেলেছেন ইয়ামাল। তার মতে, শেষ পর্যন্ত ব্যালন জিততে না পারলে, দায়টা থাকবে তার ওপরেই।
“আমার মতে, আমি এটি (ব্যালন ডি অর) জেতার মতো একজন ফুটবল। আর এটি যদি না হয়, তার মানে দাঁড়াবে আমি সব কিছু ঠিকভাবে করিনি অথবা আমি সব কিছু করতে চাইনি।”
“আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জিততে চাই এবং যখন এই দিন আসবে, আমি অনেক খুশি হবো।”
তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের আগে দলকে অনেক কিছু জেতাতে চান ইয়ামাল।
“আমি শুধু জিততে থাকতে চাই। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে অনেক কিছু জিততে চাই।”