২৯ জুলাই ২০২৪, ৪:৪০ এম
একটা ক্লাব যখন মূল একাদশে স্বীকৃত স্ট্রাইকার ছাডাই লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে, তা বলে দেয় দলটির আক্রমণভাগ কতোটা সমৃদ্ধ। করিম বেনজেমার বিদায়ের পর বড় মাপের ফরোয়ার্ড দলে না টেনেই অবিশ্বাস্য সেই কাজটাই গত মৌসুমে করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই মৌসুমে অবশ্য আক্রমণে শক্তি এরই মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগোদের সাথে যোগ দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে ও এন্দ্রিক। তাদের একত্র করে রিয়ালের চোখ নিজেদের আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার।
স্রেফ কাগজে-কলমে যদি হিসেব করা হয়, তাহলে এই চারজনকে নিয়ে গড়া যেকোনো দলের আক্রমণেরই ‘ক্লিক’ করার কথা। তবে খোদ রিয়ালেই ইতিহাস রয়েছে, সব বড় মাপের তারকা দলে টানা মানেই নিশ্চিত সাফল্য নয়৷ উল্টো জিদান-রোনালদো-ফিগো-বেকহামদের বিখ্যাত ‘গ্যালোকটিকোস’-দের ব্যর্থ হতেও দেখেছে ক্লাবটি৷ এছাড়া ২০০৯-১০ সালে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, বেনজেমা, কাকা, মেসুত ওজিল, সামি খেদিরাদের দলে টেনেও রাতারাতি সাফল্য পায়নি রিয়াল। বরং বলা যায়, প্রথম কয়েক মৌসুমে মেলেনি আশানুরূপ সাফল্যও।
আর সেই কারণে সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, রিয়ালের নতুন আক্রমণ নিয়ে চিন্তার কারণও রয়েছে কিছু। সবচেয়ে বড় বিষয় লেফট উইংয়ে কে থাকবেন প্রথম পছন্দ, সেই বিষয়টি। ভিনিসিয়ুস ও এমবাপে দুজনই এই পজিশনে বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই খেলোয়াড়। রিয়ালে লম্বা সময় ধরেই এই পজিশনটি আছে ভিনিসিয়ুসের দখলে। তিনি যে মাপের খেলোয়াড় এবং পজিশনটি যেভাবে নিজের করে নিয়েছেন, তাতে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়াটা হবে বড় বোকামি।
আবার এমবাপেকে তার সেরা পজিশন ছাড়া খেলানোটাও খুব বিচক্ষণ কাজ হবে না হয়ত। ফ্রান্স ও পিএসজিতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ‘ফলস নাইন’ বা স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন তিনি। তবে একেবারেই ভালো করতে পারেননি। সরাসরি বলেও দিয়েছেন কয়েকবার, এই পজিশনে খেলাট উপভোগ করেন না তিনি। তবে রিয়ালে নিজের আনুষ্ঠানিক পরিচিতির দিন অবশ্য জানিয়েছেন, কোচ ও দল যেখানে চাইবে, সেখানেই খেলবেন তিনি।
আর কোচ কার্লো আনচেলত্তি যে আভাস দিয়েছেন, তাতে এমবাপেকে অন্তত মৌসুমের শুরুতে খেলতে হতে পারে স্ট্রাইকার ও রাইট উইং পজিশনে। উল্লেখ্য, রিয়ালে ফরাসি তারকা পেয়েছেন স্বীকৃত স্ট্রাইকারদের ‘৯ নম্বর জার্সিও। এটি অবশ্যই বড় ব্যাপার না হলেও, এখান থেকে এটা স্পষ্ট যে ক্লাব তার কাছ থেকে স্ট্রাইকারের মতোই গোলের সার্ভিস চাইবে।
প্রশ্নটা এখানেই, নতুন দেশ, নতুন ক্লাব, নতুন একটা লিগে ভিন্ন পজিশনে শুরুর কয়েকটা ম্যাচে যদি এমবাপে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে আনচেলত্তি কি ফরমেশনে বদল আনবেন তার জন্য? কারণ, শুরুতে ভালো না করলে প্রত্যাশার চাপ এমবাপের ওপর তাতে আরও যে চেপে বসবে। আবার তার সেরাটা বের করে আনতে ভিনিসিয়ুসকে লেফট উইং থেকে সরিয়ে দিলে সেটা দলের ওপর ভিন্ন প্রভাবও ফেলতে পারে। ক্লাবে যে ব্রাজিলিয়ান তারকা বেশ জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের একজন।
এমবাপেকে রাইট উইংয়ে খেলানোর যে কথা বলা হচ্ছে, সেটাও বেশ ঝুকিপূর্ণ। এমনিতেও গত দুই মৌসুমে অনেকটা সময় এই পজিশনে রদ্রিগোকে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা জানাচ্ছেন মিডফিল্ডার ফেদে ভালভের্দে। এমবাপে যদি এই পজিশনে মূল একাদশে খেলেন নিয়মিত, তাহলে রদ্রিগোকে একটা বড় সময় কাটাতে হবে বেঞ্চেই। ক্লাবে দারুণ সব কীর্তির পর বদলি খেলোয়াড়ের রোল নিশ্চয় ভালোভাবে নেবেন না তিনি।
এই দুই পজিশনের পর আসে স্ট্রাইকারের বিষয়টি। ব্রাজিল জাতীয় দলে বদলি নেমে কিছু ভালো পারফরম্যান্স উপহার দিলেও এন্দ্রিক এখনও আছেন শুরুর দিনগুলোতে। বয়স মাত্র ১৭। তুমুল প্রতিভা থাকলেও ফলে পরিণতবোধের ঘাটতি আছে বেশ। কোপা আমেরিকায় যা স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। রিয়ালের মত একটি ক্লাবে শীর্ষ পর্যায়ের ধারাবাহিকভাবে গোল করার জন্য তিনি যোগ্য কিনা, তা নিয়ে তাই প্রশ্ন থেকেই যায়।
আর এমবাপে যদি স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেন, তাহলে এন্দ্রিকের ওপর চাপ বাড়বে বেশ। কারণ, তখন অল্প সুযোগ পেলে সেটাই কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প থাকবে না তার সামনে। একজন উঠতি খেলোয়াড়ের জন্য রিয়ালের মাপের একটি ক্লাবে খেলাটাই বিশাল চাপের। সেখানে যদি শুরুতেই সেরাটা দেওয়ার চাপও যোগ হয়, তাহলে সেটা গড়বড় হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। ফলে এই পজিশনটি রিয়ালের জন্য ভালো চিন্তার বিষয় হতে পারে যদি এমবাপে বা এন্দ্রিক শুরুটা ভালো না করতে পারেন।
এই চারজন বাদে মিডফিল্ডার হলেও গত মৌসুমে রিয়ালের আক্রমণের প্রাণ হওয়া জুড বেলিংহামকেও বিবেচনায় রাখতে হবে। এমবাপে দলে আসায় তার ভূমিকাটা কেমন হবে, সেটা নিশ্চিত নয়। ৪-৩-৩ ফরমেশনে তিনি কী আগের মত ওপরে উঠে খেলার স্বাধীনতা পাবেন, নাকি মিডফিল্ডার হিসেবেই মূল কাজটা সামলাবেন, সেটাই আলোচনার বিষয়। এখানে এটাও মাথায় রাখতে হবে, গত মৌসুমে রিয়াল ছেড়েছেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার টনি ক্রুস, যিনি প্রায় এক যুগ ধরে ছিলেন দলটির মাঝমাঠের কান্ডারি।
তার চলে যাওয়ায় মিডফিল্ড পরিকল্পনায় নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তন আনতে হবে আনচেলত্তিকে। আরেক অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচের বয়স হতে যাচ্ছে ৩৯। ফলে তিনিও একাদশে নিয়মিত থাকবেন না। যা আভাস দিচ্ছে, ফরমেশনে পরিবর্তন এনে বেলিংহামকে নিচে নেমেই হয়ত খেলাবেন রিয়াল কোচ।
সব মিলিয়ে রিয়ালের নতুন যে আক্রমণ লাইনআপ, তার মাঝে অবিশ্বাস্য সম্ভাবনা থাকলেও নতুন-পুরনো খেলোয়াড়দের একসাথে ভালো করার জন্য বেশ কিছু বিষয়কে ‘ক্লিক’ করতে হবে। আর নানা সমীকরণের প্রভাবে সেই কাজটা আনচেলত্তির জন্য মোটেও সহজ হতে যাচ্ছে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এমবাপেকে ভিন্ন পজিশনে খেলিয়ে সেরাটা বের করে আনা, এন্দ্রিককে পরিণত করা এবং দলীয় সাম্য ধরে রাখাটাই হবে ইতালিয়ান কোচের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি যদি তা পারেন, রীতিমতো উড়বে রিয়াল। আর যদি না পারেন? উত্তরটা রিয়ালের সমর্থকরা জানেন, তবে দেখতে চাইনেন না নিশ্চয়।
No posts available.
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৬:৫৫ পিএম
বাংলাদেশ ফুটবল লিগের নতুন মৌসুম শুরু হয় ঢাকা আবাহনী ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে। গত ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথম রাউন্ডের খেলা শেষে লম্বা বিরতি। ২২ দিন পর আবার মাঠে গড়াচ্ছে লিগের খেলা। কাল ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামছে আবাহনী এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
কুমিল্লার ভাষা শহীদ ধীনেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বেলা পৌনে ৩টায় আবাহনীকে মোকাবেলা করবে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। একই সময়ে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে মোহামেডানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। আর মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ।
আরও পড়ুন
ভাগ্যের কাছেই 'হেরেছে' বাংলাদেশ — হামজাদের ড্র নিয়ে ঋতুপর্ণা |
![]() |
পরের দিন মাঠে গড়াবে দুটি ম্যাচ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফর্টিস এফসি খেলবে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে। বেলা সাড়ে ৫টায় গড়াবে ম্যাচটি। দিনের অপর ম্যাচে মানিকগঞ্জে মুখোমুখি হবে পিডব্লিউডি ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। বাংলাদেশ ফুটবল লিগের ম্যাচ সরাসরি দেখা যাবে চ্যানেল টি-স্পোর্টস-এ।
কাল-পরশু লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড খেলা শেষে আবার ৩৫ দিনের বিরতি। আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে মাঠে গড়াবে তৃতীয় রাউন্ডের খেলা। ঘরোয়া লিগের খেলা সাধারণত শুক্রবার ও শনিবার হয়ে থাকে। এমনটাই হয়ে আসছিল বিগত বছরগুলোতে। তবে বিশেষ কারণে এবার লিগের খেলা হবে রোববার ও সোমবারে।
লিগের প্রথম রাউন্ড শেষ হয়েছে অঘটনে। বসুন্ধরা কিংস ২-২ গোলে ড্র করে লিগের নবাগত পিডব্লিউডির সঙ্গে। ফর্টিসের কাছে ০-২ ব্যবধানে হারে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। আর আবাহনী গোলশূন্য ড্র করে পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জের সঙ্গে।
আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের খেলা। গ্রুপস্টেজে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি বসুন্ধরা কিংস। 'বি' গ্রুপে বসুন্ধরা কিংস খেলবে কুয়েতে। ২৫ তারিখ তাদের প্রতিপক্ষ আল সিব। ২৮ অক্টোবর কিংস মাঠে নামবে আল আনসারের বিপক্ষে। শেষ দিনে বাংলাদেশের লিগের পাঁচবারের চ্যাস্পিয়নদের প্রতিপক্ষ আল কুয়েত।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের পর আগামী ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল খেলবে ভারতের বিপক্ষে। ঘরের মাঠে হতে যাওয়া সেই ম্যাচটি এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের। যে কারণে ঘরোয়া লিগের বিরতি পড়ছে।
লিভারপুলের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক জয় দিয়ে আন্তর্জাতিক বিরতিতে যায় চেলসি। দু’সপ্তাহ পর ফিরে আবার জয় দিয়েই শুরু করল ব্লুজরা। বিপরীতে নটিহ্যাম ফরেস্টের দায়িত্ব নিয়ে এখনও দলকে জয়ের মুখ দেখাতে পারলেন না অ্যাঞ্জো পোস্তেকোগলু।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে চেলসি। সবক’টি গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে। জশ আচেমপোংয়ের গোলের পর পেদ্রো নেতোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে এঞ্জো মারেস্কার দল। শেষদিকে চেলসির তৃতীয় গোলটি আসে রেসে জেমসের নৈপুণ্যে।
এ জয়ে প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে চেলসি। ৮ ম্যাচে ৪ জয়, ২ হার ও ২ ড্রয়ে ক্লাবটির সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। আর ৮ ম্যাচে মাত্র এক জয় নিয়ে ১৭ নম্বরে নটিংহ্যাম ফরেস্ট।
আরও পড়ুন
কারানের লড়াই ব্যর্থ, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত প্রথম টি-টোয়েন্টি |
![]() |
ফরেস্টের মাঠ সিটি গ্রাউন্ডে বল দখলে চেলসির সঙ্গে সমানে সামনেই লড়েছে স্বাগতিকরা। তবে আক্রমণেই পিছিয়ে ছিল তারা। ৫২ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৪টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে চেলসি। আর ৯টি শট নেওয়া ফরেস্টের গোলমুখে শট ছিল কেবল দুটি।
অবশ্য প্রথামার্ধে হতাশাজনক পারফরম্যান্সই ছিল চেলসির। ফরেস্টের হাই প্রেসিং চেলসিকে ভুল পাস খেলতে বাধ্য করে। প্রথামার্ধের শেষদিকে দলকে লিড এনে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আন্দ্রে সান্তোস। তবে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের হাফ-ভলি গোলপোস্টের নাগাল পায়নি।
বিরতির চার মিনিট পরই প্রথম গোল পেয়ে যায় চেলসি। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে সফরকারীরা। নেতোর চমৎকার এক ক্রস থেকে হেডে জাল কাঁপান আচেমপোং। তিন মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে চেলসি। প্রথম গোলের যোগানদাতা নেতো এবার গোলদাতার ভূমিকায়। ফ্রি-কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন পর্তুগিজ উইঙ্গার।
দু’দফা পিছিয়ে পড়ার পর দারুণ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করে ফরেস্ট। তবে জালের দেখা আর পাওয়া হয়নি পোস্তেকোগলুর দলের। উল্টো ৮৪ মিনিটে ০-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তারা। কর্নার থেকে আসা বল ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ফরেস্ট গোলকিপার মাৎজ সেলস, বল পেয়ে যান জেমস। দারুণ এক ভলিতে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি ইংলিশ ফুল-ব্যাক।
৮৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন চেলসির ফরাসি মিডফিল্ডার মালো গুস্তো। তবে দিকে ১০ জনের দলের বিপক্ষেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ফরেস্ট।
আরও পড়ুন
মিরপুরের স্পিন মঞ্চে ব্যাটারদের লড়াই |
![]() |
ফরেস্টের ডাগ-আউটের দায়িত্ব নিয়ে এ নিয়ে আট ম্যাচের একটিতেও জয় পেলেন না পোস্তেকোগলু। অধীনে। এটি ফরেস্টের শত বছরের বেশি সময়ের ইতিহাসে কোনো কোচের সবচেয়ে বাজে শুরু এটি।
হংকং, চায়নার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৩-৪ গোলে হারের পর ফিরতি ম্যাচে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। তাতে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই থেকে বিদায়ঘন্টাও বাজে হামজা-জামালদের।
হংকংয়ের মাঠে ড্র বাংলাদেশের জন্য ভাল ফল হলেও প্রত্যাশা তার চেয়েও বেশি ছিল সমর্থকদের। কোটি সমর্থকদের হৃদয় ভাঙে ১০ জনের হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় না পাওয়ায়। সেই দলে আছেন নারী ফুটবল দলের পোস্টারগার্ল ঋতুপর্ণা চাকমাও। বাংলাদেশের এমন ড্র-য়ে অভিজ্ঞ উইঙ্গার আজ বললেন— 'ভাল খেলেছে দল, কিন্তু কিছু তো করার নেই, ব্যাড লাক।'
ভুটানের নারী লিগে পারো এফসির হয়ে খেলে গতকালই দেশে আসেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনের সামনে কথা হয় ঋতুর সঙ্গে। বাংলাদেশের দুটি খেলাই দেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
কবে মাঠে ফিরবেন আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো, জানালেন রেড কোচ |
![]() |
ঋতুপর্ণার কাছে জানতে চাওয়া হয় গতরাতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলা দেখেছেন কিনা। ঋতুর উত্তর— 'দেখেছি, ওরা ভাল খেলেছে কিন্তু প্রতিপক্ষ (চাইনিজ তাইপে) অনেক শক্ত টিম।' এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুক্রবার রাতে শেষ হয় অর্পিতাদের অভিযান। প্রথম ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে ড্রয়ের পর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫২ ধাপ এগিয়ে থাকা চাইনিজ তাইপের কাছে ৫-০ গোলে হারে কোচ সাইফুল বারী টিটুর দল।
বাংলাদেশ সিনিয়র নারী দল আগামী ২১ অক্টোবর যাবে থাইল্যান্ডে। সেখা ফিফা উইন্ডোতে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবেন আফঈদা খন্দকাররা। যে কারণে ঋতুপর্ণা, মনিকা চাকমারা ভুটান লিগ শেষ না হতেই ঢাকায় উড়িয়ে আনা।
চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেড থেকেও মেয়েদের আরেকটি দল গতকাল যোগ দিয়েছেন ফেডারেশনের ক্যাম্পে। ভুটানে থাকা দুই শামসুন্নাহার, স্বপ্না রানী, তহুরা ও মারিয়া মান্ডাদের দেশে আসার কথা আগামীকাল।
খুব দ্রুতই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন লামিনে ইয়ামাল। অভিষেকের পর থেকেই মাঠে চমক জাগানো পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে বার্সেলোনার ১০ নম্বর জার্সিও শোভা পেয়েছে তার গায়ে। ফুটবলবিশ্বে এখন এক বড় নামই স্প্যানিশ এই উইঙ্গার। নিজের এই বড় নামের যথাযথ ব্যবহারই বুঝি করছেন ইয়ামাল। এখন থেকে যে বার্সা তারকার স্বাক্ষর পেতে ভক্তদের পয়সা গুনতে হবে। ফ্রিতে আর ‘অটোগ্রাফ’ দিবেন না ইয়ামাল।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৮ বছর বয়সী ইয়ামালকে তাঁর প্রতিনিধি দল পরামর্শ দিয়েছে যেন এখন থেকে কোনো স্মারকসামগ্রীতে তিনি স্বাক্ষর না করেন। এটিকে তারা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, যার উদ্দেশ্য ইয়ামালে স্বাক্ষরের বাজারমূল্য বাড়ানো।
ইয়ামালের স্বাক্ষরকে মূলত ব্র্যান্ডে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অবশ্য বিষয়টি অহংকার বা ভক্তদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি জন্য নয় বরং একটি সুপরিকল্পিত বাণিজ্যিক কৌশলের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলছে ওই প্রতিবেদন। ইয়ামাল এমন একটি বাণিজ্যিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে আছেন, যেখানে তাঁর স্বাক্ষরকে একটি মূল্যবান ও বিক্রয়যোগ্য পণ্যে রূপান্তর করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রীড়া জগতে অনেকদিনই এমনটা হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন
কবে মাঠে ফিরবেন আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো, জানালেন রেড কোচ |
![]() |
বিখ্যাত প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন ইয়ামাল। যারা বিশ্বজুড়ে ক্রীড়া তারকাদের স্বাক্ষরিত পণ্য বিক্রয়ে বিশেষজ্ঞ। বার্সেলোনা উইঙ্গার ইয়ামাল সেই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করছেন বলেই তার ম্যানেজমেন্ট টিম আপাতত তাকে বিনামূল্যে স্বাক্ষর নিষেধ করছে।
ইয়ামালের ক্লাব বার্সেলোনাও প্রায়ই স্পনসরশিপ ও অন্যান্য চুক্তির প্রয়োজনে খেলোয়াড়দের স্বাক্ষরিত সামগ্রী ব্যবহার করে। ফলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ইয়ামালের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, যাতে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বাক্ষর তারা নিজেদের কাজের জন্য সংরক্ষণ করতে পারে।
ইয়ামালের বিজ্ঞাপন সংস্থাটি এখন এমন একটি কোম্পানির সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা করছে, যারা তাঁর স্বাক্ষরিত বুট, জার্সি এবং অন্যান্য ব্যবহৃত পণ্য বিক্রি করবে। এর পেছনে মূল কৌশল খুব সরল—যত কম পণ্য তিনি স্বাক্ষর করবেন, তত বেশি বাড়বে তার স্বাক্ষরের বাজারমূল্য।
এই চুক্তি যদি চূড়ান্ত হয় তবে ইয়ামালের সত্যিকারের স্বাক্ষরযুক্ত পণ্য কিনতে চাইলে, নির্দিষ্ট অফিসিয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই কিনতে হবে ভক্তদের।
আন্তর্জাতিক তারকায় পরিণত হওয়া ইয়ামালের নাম ইতোমধ্যেই জড়িয়ে গেছে বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে। বর্তমানে অ্যাডিডাস, বিটস, পাওয়ারএইড, ওপ্পো, কোনামি এবং নেস্কুইকের মতো বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বাসেডর তিনি। পাশাপাশি ইউনিসেফ-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন ইয়মাল।
লা লিগার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠে ১৫ সেকেন্ডের জন্য স্থির দাঁড়িয়ে রইলেন, তখন টিভির পর্দায় দেখা গেল আকাশ থেকে স্টেডিয়ামের দৃশ্য—খেলোয়াড়দের প্রতিবাদের দৃশ্যটি দেখানোই হলো না!
শুক্রবার রাতে এস্পানিওল ও রিয়াল ওভিয়েদোর ম্যাচে এমন ঘটনাই ঘটেছে। লা লিগার আয়োজিত এই ম্যাচে খেলোয়াড়েরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন, খেলার শুরুতে ১৫ সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকে নিজেদের অসন্তোষ জানাবেন। তাঁদের দাবি, বিদেশে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে লা লিগা যেন স্বচ্ছতা দেখায় এবং খেলোয়াড় সংগঠন এএফই’র (এএফই) সঙ্গে আলোচনায় বসে।
খেলা শুরু হওয়ার পর রেফারির প্রথম বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে যখন দুই দল স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল, তখন সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান ডিএজেডএন ক্যামেরা ঘুরিয়ে নিল আকাশে। স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখানো হলো ২১ সেকেন্ড ধরে। এরপরই আবার ফিরে এল মাঠের ছবিতে—তখন খেলা শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতেই লা লিগা নিশ্চিত করেছিল, ডিসেম্বরের শেষে ভিয়ারিয়াল–বার্সেলোনা ম্যাচ বিদেশে আয়োজন করা হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে খেলোয়াড় ও তাঁদের সংগঠন এএফইয়ের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁরা।
খেলোয়াড়দের অভিযোগ, বিষয়টা নিয়ে লা লিগার আচরণ ছিল গোপনীয় ও একপেশে। মঙ্গলবার লা লিগা, এএফই ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সময়সূচি নিয়ে জটিলতায় তা হয়নি। লা লিগা তিনটি বিকল্প তারিখ প্রস্তাব করলেও, এএফই সেটিকে সময়ক্ষেপণ বলেই মনে করেছে।
এমনকি প্রতিবাদের আগমুহূর্তে লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাস ছয় পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন এএফইকে, যাতে পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। কিন্তু তাতেও মন গলেনি খেলোয়াড়দের। তাঁদের উদ্বেগ মূলত— কতটি ম্যাচ বিদেশে আয়োজন হবে, আর সেখান থেকে অর্জিত অর্থ কীভাবে বণ্টন হবে।
এস্পানিওলের ২–০ গোলের জয়ের পর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো কাবরেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লা লিগার আচরণে। স্প্যানিশ দৈনিক দিয়ারিও এএসের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন,
‘আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে প্রতিবাদ করব। কিন্তু পরে লা লিগা বলল, নাকি অন্য কারণে সেটা হবে না! গত সপ্তাহে বৈঠকের অনুরোধ করা হয়েছিল, তারা পারেনি। এখন এমন সময় ঠিক করেছে, যখন সাত–আটটি দল ইউরোপে খেলছে। এরপর আবার বলছে, আরও পরে দেখা করা যাক—তখন তো সব বিক্রি হয়ে গেছে, ফেরার উপায় নেই।’
কাবরেরা আরও বলেন,
‘যদি সবকিছু এত স্বচ্ছ হয়, তাহলে আলাপ করতে সমস্যা কোথায়? তারা বলে গত দশ বছরে খেলোয়াড়দের ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে, কিন্তু যাঁদের বেতন বেড়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও কি একই নিয়ম? স্বচ্ছতা সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’
টিভি সম্প্রচারে প্রতিবাদ না দেখানো নিয়েও হতাশ কাবরেরা,
‘আমরা শুধু ১৫ সেকেন্ডের বিরতি চেয়েছিলাম—একটু দেখাতে চেয়েছিলাম যে আমরা একমত নই। কিন্তু তারা হয়তো ছাদের পাখি দেখিয়েছে। সত্যি বলতে, আমি বুঝি না কেন এটা দেখানো গেল না।’
লা লিগার এই আচরণে স্প্যানিশ ফুটবলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খেলোয়াড়েরা বলছেন, তাঁরা ম্যাচ বিদেশে আয়োজনের বিরোধী নন, কিন্তু চাইছেন ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা আর সম্মান—যা শুক্রবার রাতে তাঁদের চোখে পড়েনি একটুও।