অ্যাবসুলেট সিনেমা….বার্সেলোনা ইন্তারের ম্যাচের পারফেক্ট হেডলাইন। যেন দম ফেলার নেই ফুসরত। যার শুরু প্রথম মিনিটে, চলেছে ৯০ মিনিট পর্যন্ত। নান্দনিক ফুটবল, ৬ গোলের মোহারণ, আর ১৭ বছর বয়সী এক তরুণের সব আলো কেড়ে নেওয়া। ক্লাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ নাইট যেমন হয় আর কী। যেই রাত ফুটবল সমর্থকদের মনে দাগ কেটে যাবে লম্বা সময়।
দিয়ারিও স্পোর্টসের ফ্রন্ট পেইজ বলছে, সব কিছুই সম্ভব ইয়ামালকে নিয়ে… নিজের শততম ম্যাচটাকে এতটাই রাঙিয়েছেন এই তরুণ। দারুণ একটা গোল, আর তার বা পায়ের জাদুতে ক্ষণে ক্ষণে সমর্থকদের ভাসিয়েছেন উচ্ছ্বাসে, আর নিয়েছেন ইন্তার ডিফেন্ডারদের কঠিন পরীক্ষা। এমনকি ইংল্যান্ডে বসা আর্লিং হলান্ডকে পর্যন্ত বাধ্য করেছেন তাকে নিয়ে পোস্ট দিতে।
এই ম্যাচে নায়ক আছে আরও একজন…ডেঞ্জেল ডামপ্রিস। দুই গোলের সঙ্গে, এক অ্যাসিস্ট সেই সাথে রক্ষণ সামলানোর ধকল তো ছিলই। এত সব তারকার ভিড়ে ডাচ ডিফেন্ডার নিজেকে চিনিয়েছেন নতুন করেই।
আরও পড়ুন
নিষেধাজ্ঞা কাজে লাগিয়ে রুডিগারের অস্ত্রোপচার, শাস্তি এড়ালেন বেলিংহাম |
![]() |
বল দখলের লড়াই, শট অন টার্গেট কিংবা পাস সব খানেই ইন্তার থেকে বেশ এগিয়ে ছিল বার্সা। বার্সার অল অ্যাটাকের জবাবে ইন্তারের অস্ত্র ছিল কাউন্টার অ্যাটাক। যেখানে দলটা ছিল বেশ সফল।
এদিন খেলার বয়স ৩০ সেকেন্ড না হতেই বার্সাকে চমকে দেয় ইন্তার। ডামপ্রিসের পাস থেকে দারুণ এক ব্যাকহিলে বল জালে জড়ান থুরাম। যা আবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোল, বার্সার বিপদ বাড়ে ২১ মিনিটে, এবার গোলের খাতায় নাম তোলেন ডামপ্রিস নিজেই। চোখ ধাঁধানো এক ওভারহেড কিকে স্তব্ধ করে দেন অলিম্পিক স্টেডিয়ামকে।
স্তব্ধ অলিম্পিক স্টিডিয়ামকে জাগিয়ে তুলতে ইয়ামাল সময় নিয়েছে মোটে তিন মিনিট। ২৪ মিনিটের মাথায় পাঁচ ইন্তার ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বা পায়ের আড়াআড়ি এক শটে বল জড়ান জালে। বার্সেলোনা সমর্থকেরা এমন একটা গোল নিশ্চিতই বারেবারে খুঁজে ফিরে দেখবেন।
৩৮ মিনিটে বার্সাকে সমতায় ফেরায় ফেরান তোরেস। যার পেছনের কারিগর পেদ্রি ও রাফিনিয়া। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের মাপা ক্রস খুঁজে নেয় রাফিনিয়াকে, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড হেডে সেটা বাডিয়ে দেন ফাঁকা জায়গায় দাঁড়ানো তোরসের দিকে। সহজ কাজটুকু করতে ভুল করেননি তোরস। তাতে ২-২ এর সমতায় থেকে বিরতিতে যায় দুই দল।
আরও পড়ুন
কোপা দেল রের ফাইনালে ‘অনিশ্চিত’ লেভানদভস্কি |
![]() |
বিরতি থেকে ফিরেও খেলা চলে একই তালে। ৬৪ মিনিটে আবারও সেই ডামপ্রিস হৃদয় ভাঙে বার্সার। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল এবার হেডে জালে জড়ান ডাচ ডিফেন্ডার। তবে সেই লিড টেকে মোটে ১২০ সেকেন্ট। ইন্তারের সেট পিসের জবাব বার্সাও দিয়েছে সেট পিস থেকেই। কর্নার থেকে আসা বল ইয়ামাল ‘ডামি’ করে ছেড়ে দিলে ফাঁকায় পেয়ে যান রাফিনিয়া। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বুলেট গতির শটে বল পাঠান জালের দিকে। তবে নিজেকে কিছুটা হতভাগা ভাবতেই পারেন রাফিনিয়া। ইয়ান সোমারের পিঠে লেগে বল জালে প্রবেশ করায় গোলটা কাউন্ট হয়েছে আত্মঘাতী গোল হিসেবেl হিসেবে।
৭২ মিনিটে অবশ্য আরও একবার গোলের দেখা পায় ইন্তার। তবে মেখেতেরিয়ানের গোল কাটা পড়ে অফ সাইডে। শেষ দিকে ইয়ামালও দারুণ একটা গোল করেই ফেলছিলেন, তবে পোস্টের বাঁধায় তা শেষ হয়নি। তাতে ৩-৩ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। আর অ্যাবসুলেট সিনেমার পরের পর্বের অ্যাকশন তোলা থাকে সান সিরোর জন্য।
১ জুলাই ২০২৫, ৬:৫৬ পিএম
১ জুলাই ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
১ জুলাই ২০২৫, ৩:২৬ পিএম
গত মৌসুমের পরই প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, আসছে মৌসুমে হান্সি ফ্লিকের পরিকল্পনায় জায়গা হবে না আনসু ফাতির। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল। ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য ধারে ফরাসি ক্লাব মোনাকোতে যোগ দিয়েছেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। সাথে এটাও জানানো হয়েছে, ২২ বছর বয়সী এই ফুটবলারের চুক্তির মেয়াদ ২০২৭-২৮ মৌসুম পর্যন্ত নবায়ন করা হয়েছে।
ইএসপিএন তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ফাতি ফ্রেঞ্চ লিগ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশগ্রহণের সম্ভাবনায় মোনাকোকে বেঁছে নিয়েছেন। গত মৌসুমে বার্সেলোনায় খুব অল্প সময় খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আর তাই ক্যারিয়ার নতুন করে গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চান নতুন থিকানায়া।
আরও পড়ুন
আলজেরিয়ায় স্টেডিয়ামে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪ |
![]() |
ফ্লিকের কোচিংয়ে ফিট থাকার পরও ফাতি গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র ১১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। এর মধ্যে মধ্যে মাত্র তিন ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে। গোটা মৌসুমে মাঠে ছিলেন মোটে ২৯৭ মিনিট।
অথচ ২০১৯ সালে অমিত প্রতিভা নিয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বার্সেলোনার জার্সিতে আলোড়ন সৃষ্টি করে অভিষেক হয় ফাতির। মাত্র ১৭ বছর ৪০ দিন বয়সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল করে তিনি হয়ে যান টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা।
তবে পরবর্তী কয়েক বছর চোটের কারণে থেমে যায় তার অগ্রগতি। ২০২৩ সালে তিনি ধারে নাম লেখান ব্রাইটনে। তবে সেখানেও সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি। ২৭ ম্যাচে গোল করেন চারটি।
এরপর গত গ্রীষ্মে বার্সেলোনায় ফিরলেও পারেননি ফ্লিকের মন জয় করতে। কাতালান ক্লাবটির হয়ে এখন পর্যন্ত ১২৩ ম্যাচে ২৯টি গোল করেছেন ফাতি। আর স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ১০টি ম্যাচ, করেছেন দুই গোল। ২০২৩ সালের পর আর জাতীয় দলে ডাক পাননি ফাতি।
সম্প্রতি আলজেরিয়ার শীর্ষ ফুটবল লিগে এমসি আলজেরের শিরোপা জয়ের আনন্দ উদযাপন করে গিয়ে গ্যালারি থেকে নিচে পড়ে প্রাণ হারান তিন ব্যক্তি। শোকাবহ এই ঘটনায় এবার চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে মারা গেছেন আরেকজন সমর্থক।
আলজেরিয়ান ক্লাব এমসি আলজের অফিশিয়াল ফেসবুকে পেজে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২১ জুন স্টেডিয়ামে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন সমর্থক মারা গেছেন।
এর মধ্য দিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার জনে। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার দিনই এক জন সমর্থকের মৃত্যু হয়। আর ২২ জুন আলজেরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের মধ্যে আরও দুইজন পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। আর চতুর্থ জনের মৃত্যু হলো এক সপ্তাহ পর।
আরও পড়ুন
সিটিকে হারিয়ে সৌদি লিগ সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ |
![]() |
এমসি আলজের আলজেরিয়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। ফলে চলতি মৌসুমে তারা ঘরোয়া লিগে শিরোপা জিতলে সেটা সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। তবে সেই উৎসব মুহূর্তেই রূপ নেয় শোকে।
আলজেরিয়া সংবাদমাধ্যম এবং স্টেডিয়ামে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে, ম্যাচ শেষে সমর্থকরা উদযাপন করার সময় স্টেডিয়ামের ওপরের দিকের গ্যালারির একটি অংশের লোহার বেষ্টনী ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এতে ওই সময়েই বেশ কয়েকজন নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন।
এই ঘটনার পর স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে শুরু হয় তুমুম সমালোচনা। এতে নড়েচড়ে বসে আলজেরিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা যৌথভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো বারবারই বলে আসছেন সৌদি প্রো লিগের উন্নতির বিষয়টি। তবে অনেকেই এখনও এই লিগ বা এখানকার দলগুলোকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তবে বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায় করে দিয়েছে আল হিলাল। ঐতিহাসিক এই জয়ের পর সৌদি ফুটবলকে নিয়ে করা সমালোচনার কড়া জবাব দিয়েছেন দিয়েছেন দলটির সার্বিয়ান মিডফিল্ডার সের্গেই মিলিনকোভিচ-সাভিচ।
গত সোমবার রাতে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে অনুষ্ঠিত শেষ ১৬-এর ম্যাচে সিটিকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে হিলাল। এই জয় প্রমাণ করে, সৌদি ক্লাবগুলোকে নিয়ে হেলাফেলা করার আর সুযোগ নেই। অথচ বিভিন্ন সমতে প্রো লিগকে ফরাসি লিগের চেয়ে সেরা বা শীর্ষ পাঁচ লিগের একটি বলে বেশ সমালোচিত হতে হয়েছে আল নাসর তারকা রোনালদোকে।
আরও পড়ুন
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর ‘মানসিক বিশ্রামের’ সন্ধানে গার্দিওলা |
![]() |
সিটিকে হারিয়ে সৌদি চ্যাম্পিয়ন হিলাল যেন তারই একটা জবাব দিয়েছে। সাভিচ এরপর জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
“এখন দেখি কে আমাদের সমালোচনা করতে আসে। তারা আমাদের নিয়ে যা যা বলে, আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, সেটা ঠিক না। আমরা রিয়াল মাদ্রিদ, সালজবুর্গ, পাচুকার বিপক্ষে ও আজকের ম্যাচেও নিজেদের প্রমাণ করেছি। আশা করি আমরা সামনেও এভাবেই এগিয়ে যাব।”
সৌদি প্রো লিগে ইউরোপিয়ান তারকাদের পাড়ি দেওয়াকে অনেকেই শুধুমাত্র অর্থকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত বলেই অভিহিত করেছেন। ফলে রোনালদো, নেইমার, করিম বেনজেমা, সাদিও মানেদের আগমনের পরও এই লিগকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় কমই। লাজিও ছেড়ে ২০২৩ সালে আল হিলালে যোগ দিয়ে সমালোচনা শুনতে হয়েছিল সাভিচকেও।
হিলালের দুর্দান্ত এই জয়ে কোচ সিমোনে ইনজাগির কৃতিত্বও কম নয়। ইন্টার মিলান ছেড়ে আসা ইতালিয়ান এই কোচ মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে দলের দায়িত্ব নেন। তার কোচিংয়ে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ইউরোপের সফলতম ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদকে রুখে দেয় দলটি। আর সিটির বিপক্ষে তো ধরা দিল জয়ই।
আরও পড়ুন
যেদিনই পারফর্ম করতে পারব না, অবসর নিয়ে ফেলব : নেইমার |
![]() |
ইনজাগির কাছেও এই জয় পাচ্ছে বাড়তি মর্যাদা।
“আমরা জানতাম, ম্যানচেস্টার সিটি কতটা শক্তিশালী দল। এটা যেন অনেকটা অক্সিজেন ছাড়াই মাউন্ট এভারেস্টে উঠার মতো কাজ। আমরা অসাধারণ খেলেছি। (পেপ) গার্দিওলা বিশ্বের সেরা কোচ, তবে আজ রাতে আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছি এবং জয়টা আমাদেরই প্রাপ্য ছিল।”
সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। তবে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে হেরে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে দলটি। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ে হতাশ হলেও পেপ গার্দিওলা তার দলের পারফরম্যান্সে খুশি। আর তাই এখন থেকেই শুরু করতে চান আগামী মৌসুমের প্রস্তুতি।
মঙ্গলবারের শেষ ১৬-এর ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে ৪-৩ গোলে হেরে যায় সিটি। প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করলেও একের বেশি গোল করতে ব্যর্থ হয় সিটি। বিরতির পর উল্টো ২-১ গোলে লিড নিয়েছিল আল হিলাল। আর্লিং হলান্ড পরে টানেন সমতা। অতিরিক্ত সময়ে আরেকটি গোল করলেও শেষ রক্ষা আর হয়নি সিটির। আর এতে বড় অবদান রেখে হিলালের মরক্কান গোলরক্ষক ইয়াসিন বাউনোর দুর্দান্ত সব সেভ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন
সিটিকে হারিয়ে সৌদি লিগ সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ |
![]() |
ম্যাচের পর গার্দিওলা হতাশা ভুলে খেলোয়াড়দের আগামী মৌসুমের জন্য ‘মাইন্ড রেস্ট’ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
“দুর্ভাগ্যজনক বিদায়, তবে খেলোয়াড়দের প্রশংসা প্রাপ্য। চার বছরে এমন সুযোগ একবারই আসে। আমরা আরও এগিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। আমাদের মানসিকভাবে বিশ্রাম নেওয়ার সময় এসেছে।”
সিটি ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে ২০২৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার সুবাদে। এই টুর্নামেন্টে খেলার কারণে দলটির খেলোয়াড়দের ব্যস্ত মৌসুম পার করার পরই আবার মাঠে নেমে যেতে হয়েছে। বিশ্রাম ছাড়া এভাবে টানা খেলাটা ফুটবলারদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে, আল হিলাল ম্যাচের আগে এই ব্যাপারে বলেছিলেন গার্দিওলাও।
আরও পড়ুন
৭ গোলের মারদাঙ্গা লড়াইয়ে সিটিকে বিদায় করে শেষ আটে আল হিলাল |
![]() |
তবে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের ক্ষণে ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন স্প্যানিশ এই কোচ।
“এই টুর্নামেন্টে আমাদের অভিজ্ঞতাটা ছিল দারুণ, দল ভালো খেলেছে। খেলোয়াড়রা যেভাবে অনুশীলন করেছে আর পারফর্ম করেছে, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। দিন শেষে পারফরম্যান্সে খুব সামান্য কিছু ব্যবধান পার্থক্য গড়ে দেয়। এই প্রতিযোগিতার মান ঠিক বিশ্বকাপের মতোই। আল হিলাল আমাদেরকে বেশ কয়েকবার ট্রানজিশনে আটকে দিয়েছে। আমরা সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু ক্লিনিক্যাল হতে পারিনি।”
অমিত প্রতিভা নিয়েই আগমন তার। তবে চোট-আঘাতে জর্জরিত এক ক্যারিয়ারে পারেননি শীর্ষে যেতে। এখন তো নেইমারের ফর্ম-ফিটনেস নিয়েই লড়াই চলমান। এরপর ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা ও আরও বেশি পারফর্ম করার আগ্রহই হয়ত তাকে অনুপ্রাণিত করেছে চালিয়ে যেতে। তবে এভাবে আর কতদিন? ব্রাজিল তারকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যেদিন আর নিজেকে মন মত খেলতে পারবেন না, সেদিনই বিদায় জানিয়ে দেবেন।
২০২২ বিশ্বকাপের সময় নেইমার আভাস দিয়েছিলেন, এটাই হয়ত তার শেষ বিশ্বকাপ। ত্রিশে পা রাখার আগেই তার এমন কথা বলার কারণ ছিল চোটের পর চোট, যা গত ৭-৮ বছর তাকে ভীষণ ভুগিয়েছে। গত ১৮ মাসের সিংহভাগ সময়ই একই কারণে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরেই। এরপরও তার সমর্থকদের আশা, অন্তত ২০২৬ বিশ্বকাপটা খেলবেন ৩৩ বছর বয়সী নেইমার।
আরও পড়ুন
সিটিকে হারিয়ে সৌদি লিগ সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ |
![]() |
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছেন নেইমারের একটি সাক্ষাৎকার, যা নিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী ব্রুনা বিয়ানকার্দির করা এক প্রশ্নে অবসর প্রশ্নে নেইমার স্পষ্ট করেন নিজের অবস্থান।
“ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাই আমার চালিকাশক্তি৷ আমি এখনও ফুটবলের প্রতি সেই একই ভালোবাসা অনুভব করি। খেলার আকাঙ্ক্ষা বলুন, মাঠে থাকার ইচ্ছার কথা বলুন বা প্রতিদিন অনুশীলনে যাওয়ার তাগিদ – এগুলোর সবই এই ভালোবাসা থেকেই আসে। আমি জানি, একদিন আমার পারফর্ম করার শক্তি ফুরিয়ে যাবে। আর তখনই আমি থেমে যাবো। তবে যতদিন পর্যন্ত এই ভালোবাসা থাকবে, ততদিন আমাকে এটা উপভোগ করতে হবে।”
২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে আল হিলালে যোগ দেন নেইমার। তবে ওই বছরই এসিএল চোট পেয়ে ছিটকে যান এক বছরের জন্য। গেল বছর ফিরে আবার শিকার হন চোটের। সৌদি ক্লাবটির সাথে চুক্তি বাতিল করে এই বছরই তিনি নিজের শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে আসেন। সম্প্রতি ক্লাবটির সঙ্গে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছেন নেইমার, যেখানে ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
অবশ্য সান্তোসে ফিরেও নেইমারের ফর্ম ধরে রাখা কঠিনই হয়ে যাচ্ছে। ইনজুরির কারণে ১৫ ম্যাচ খেলে কেবল ৩ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করতে পেরেছেন। চোটের কারণে এই বছর এখন পর্যন্ত জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনও হয়নি তার। এসবের সাথে প্রায়ই যোগ হয় সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের লাইফস্টাইল, যা বারবার তাকে বিতর্কিত করেছে।
আরও পড়ুন
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর ‘মানসিক বিশ্রামের’ সন্ধানে গার্দিওলা |
![]() |
নেইমার অবশ্য এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে নারাজ বলেই জানালেন।
“অন্যরা কী চিন্তা করবে, আমি সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। মানুষ তো আমাকে নিয়ে অনেক কিছুই বলে, অথচ তারা জানেও না যে আমার জীবনে কী কী ঘটে যায়। আমি সবসময় শুধু মাঠের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন চাই, ব্যক্তিগত জীবনের নয়।”
ব্রাজিলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার নেইমার বরং হতে চান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আদর্শ।
“আমি একজন ভালো মানুষ বলেই আমার বিশ্বাস। যারা আমাকে চেনে না, তারা অনেক সময় অকারণেই আমাকে ঘৃণা করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কিছুই দেখা যায়, যা আসলে সত্য না। আমার ক্যারিয়ার একদিন শেষ হবে, সময় চলে যাবে, নতুন প্রজন্ম আসবে। আমার চাওয়া একটাই, যারা আমাকে চেনে, শুধু তারাই আমার প্রকৃত মূল্যায়ন করুক।”