সান্তোস নামটি শুনলে ফুটবলপ্রেমীদের মনে সবার আগে ভেসে ওঠে একটি নাম - পেলে। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের কল্যাণে বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিতি পাওয়া ব্রাজিলের এই ক্লাবটিতে তার পরবর্তী সময়ের সেরা প্রতিভাবানদের একজন নেইমার। পেশাদার ক্যারিয়ার এখানে শুরু করার পর ছেড়েছেন ঠিকানা। তবে এক বছর বাদে দেশটির শীর্ষ লিগে ফিরে সাবেক বার্সেলোনা তারকাকে ক্লাবে টানার জন্য বেশ আশাবাদী হয়ে উঠছে সান্তোস।
২০২৩ সালে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের শীর্ষ লিগ থেকে রেলিগেটেড হয় সান্তোস। তবে গত সোমবার রাতে সেরি বি-এর ম্যাচে করিতিবাতেকে ২-০ গোলে হারিয়ে ব্রাজিলের সেরি আ-তে তার স্থান নিশ্চিত করেছে আবার।
আরও পড়ুন
নেইমারের চুক্তি বাতিলের ‘চিন্তা করছে’ আল হিলাল! |
![]() |
২০১১ সালে নেইমারের হাত ধরেই সান্তোস তাদের প্রথম কোপা লিবার্তাদোরেস শিরোপা জিতেছিল। ২০১৩ সালে যোগ দেন বার্সেলোনায়। এরপর সেখান থেকে পিএসজি ঘুরে এখন আছেন সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে, যেখানে তার চুক্তি শেষ আগামী বছরের জুনে।
গত মঙ্গলবার সান্তোসের সভাপতি মার্সেলো তেক্সেইরা বলেছেন, তিনি নেইমারকে ফেরানোর আশা ছাড়ছেন না-
“আমরা নিজেদের লক্ষ্যের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট আছি। তার (নেইমারের) বাবা এবং তার কর্মীরাও এটা জানেন। তারা আমাকে চেনেন, তারা সান্তোসকেও ভালোভাবে জানেম। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, কারণ (আল হিলালে) তার একটি চুক্তি আছে।"
তেক্সেইরা আরও বলেছেন, আগামী রোববার সান্তোস ও সিআরবির ম্যাচে নেইমারকে তাদের স্টেডিয়ামে স্বাগত জানানো হবে। এই ম্যাচে জয় পেলে তা সান্তোসের সেরি বি শিরোপা নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন
মাঠে ফিরে আনন্দের সীমা নেই নেইমারের, ব্রাজিলের জার্সিতে ফিরবেন কবে? |
![]() |
গত বছরের অক্টোবরে এসিএল চোটের শিকার হন নেইমার। সেরে উঠে মাঠে ফেরেন গত মাসে। তবে মাত্র দুটি ম্যাচ বদলি হিসেবে খেলার পর আবার পেশীতে চোট পেয়েছেন। ডিসেম্বরের আগে তার আর মাঠে ফেরার সম্ভাবনা নেই।
দুই বছরের চুক্তির একটা বড় সময় নেইমার চোটের কারণে খেলতে না পারায় আল হিলালের মালিকপক্ষ তাকে আগেই ছেড়ে দিতে চান বলে খবর। গুঞ্জন রয়েছে, আগামী জানুয়ারিতে দুই পক্ষের সম্মতিতে বাতিল হতে পারে ৩২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের চুক্তি।
আরও পড়ুন
১ বছর পর প্রস্তুত নেইমারের ফেরার মঞ্চ |
![]() |
আর এই কারণেই উঠে আসছে সান্তোসের নাম। কারণ, এসিএল চোট থেকে সেরে ওঠার পর নেইমার বারবার সান্তোসের ম্যাচ দেখার এবং দলের খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলার ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যে। সব দিক মিলিয়ে তাই বাস্তবিকভাবেই তার আগামী বছর সান্তোসে ফেরার সম্ভাবনা জোড়াল বলেই ধরা হচ্ছে।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৭ এম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৫৯ এম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৪৩ এম
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ২০০৫ আসরের চ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসি। ২০ বছর আগে আর্জেন্টিনা যুবা দলকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করে গোলল্ডে বলও জিতেছিলেন ইন্টার মায়ামির মহাতারকা। পরের আসরে আরেকবার এই ট্রফি ঘরে তুলে আলবিসেলেস্তারা। এরপর আর এই শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি আর্জেন্টিনার।
আজ মরক্কোর বিপক্ষে ফাইনালে সুযোগ ছিল ১৮ বছরের খরা কাটানোর। তবে আফ্রিকার দেশটির বিপক্ষে ০-২ গোলে হেরে স্বপ্নভাঙে আর্জেন্টিনার। স্বাভাবিকভাবেই হারের পর কান্নায় ভেঙে পড়ে এই প্রতিযোগিতার ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন
প্রতিপক্ষের দুই লাল কার্ডের ম্যাচে এমবাপের গোলে রিয়ালের জয় |
![]() |
ফাইনাল হারের পর আর্জেন্টিনা যুবাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন মেসি। ইনস্টাগ্রাম পেজে দলের প্রতি সমর্থন আর স্বান্ত্বনার সুরে মেসি লিখেন, ‘মাথা উঁচু রাখো, ছেলেরা! তোমরা অসাধারণ একটি টুর্নামেন্ট খেলেছো। যদিও আমরা সবাই চেয়েছিলাম তোমরা শিরোপা তুলে ধরবে। তবুও তোমাদের অসাধারণ সব সাফল্য আমরা উপভোগ করছি এবং যেভাবে তোমরা তোমাদের হৃদয় দিয়ে নীল ও সাদা জার্সির জন্য লড়েছে, আমরা গর্বিত।’
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ফাইনালে ওঠা আর্জেন্টিনা শিরোপার মঞ্চে এসে হোঁচট খায় মরক্কোর কাছে। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচে বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি আমাদের বিশ্বকাপে আগের ম্যাচগুলো থেকে আলাদা ছিল। আমরা আমাদের শক্তি পুরোপুরি দেখাতে পারিনি। আমরা ঘুরে দাড়াতে বা একটি গোল করতে পারিনি।’
অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতার সঙ্গে প্রতিপক্ষকেও কৃতিত্ব দিলেন আর্জেন্টিনার কোচ, ‘জয়টা তাদের প্রাপ্য। তারা শারীরিকভাবে খুব শক্তিশালী। আমাদের কিছু খেলোয়াড় পুরোপুরি পারফর্ম করতে পারেনি। ফলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচটি।’
গত দুই দশকে ইউরোপিয় ফুটবলে ক্রিশ্চিয়োনো রোনালদো-লিওনেল মেসির দ্বৈরথের কাছে সবকিছুই ম্লান মনে হতো। সর্বকালের অন্যতম দুই সেরা ফুটবলার ইউরোপ ছেড়েছেন অনেকদিন হলো। মেসি-রোনালদোর সময় অন্যদের সবসময় ছায়া হয়েই থাকতে হয়েছে। সময় বদলেছে। চলতি মৌসুমে ইউরোপের সেরা হওয়ার দৌড় চলছে তিন মহারথীর মধ্যে। আর্লিং হলান্ড, হ্যারি কেইন ও কিলিয়ান এমবাপে।
২০২৫-২৬ মৌসুমে তিন ফরোয়ার্ড আছেন দুর্দন্ত ছন্দে। নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে মাঠে নামলেই গোল উৎসবে মেতে উঠছেন হলান্ড-কেইন-এমবাপে। তাতে মৌসুমের শুরুতেই সর্বোচ্চ গোলদাতার হওয়ার লড়াই বেশ জমে উঠেছে। নিজেদের সবশেষ ম্যাচেও তিন তারকাই জালের দেখা পেয়েছেন। মৌসুমের প্রথমভাগেই যেভাবে নিয়মিত গোল করে দলের জয়ে অবদান রেখে যাচ্ছেন এই ফরোয়ার্ড ত্রয়, তাতে ব্যালন ডি’অর জয়েও হাড্ডহাড্ডি এক লড়াই দেখা যেতে পারে। তবে মৌসুমে শেষ হতে এখনো অনেকদূর, তার আগে দেখে নেওয়া যাক নতুন মৌসুমে এই তিন তারকার পরিসংখ্যান।
আর্লিং হলান্ড (ম্যান সিটি ও নরওয়ে)
‘গোলমেশিন’ নাম পাওয়া হলান্ড আছেন ছন্দের তুঙ্গে। ২০২৫-২৬ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচে গোলের দেখা পাননি নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৮ ম্যাচে ১১ গোল করে ম্যানচেস্টার সিটিকে লিগ শিরোপার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে দারুণ অবদান রাখছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ মৌসুমে দুই ম্যাচ খেলে করেছেন তিন গোল।
সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড অ্যালান শিয়ারারের ভাষায়, ‘যদি আদর্শ সেন্টার ফরোয়ার্ড তৈরি করতে চাও, হালান্ডকে দেখো—তার মধ্যে গতি, শক্তি, হেডের ক্ষমতা, শক্তিশালী ডিফেন্ডারদের ভয় না পাওয়া—সবই আছে, প্রায় নিখুঁত।’
জাতীয় দলের জার্সিতেও সমানতালে জালে পাঠিয়ে যাচ্ছেন হলান্ড। নরওয়েকে ১৯৯৮ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপে খেলার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। নরওয়ের হয়ে ছয়টি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১২ গোল করেছেন ‘দানবীয়’ এই ফরোয়ার্ড।
হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ ও ইংল্যান্ড)
গত শনিবার বুন্দেসলিগার ‘ডের ক্লাসিকার’-এ বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গোল করে এই মৌসুমে ক্লাব ও দেশের হয়ে ২২ গোল হলো কেইনের। ২০২৩ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর থেকে অসাধারণ ধারাবাহিকতায় দেখিয়ে যাচ্ছেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। তবে এ মৌসুমে যেন সবকিছু ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বুন্দেসলিগায় এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১২ গোলের সঙ্গে তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন কেইন। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চেলসি ও পাফোসের বিপক্ষে চারবার লক্ষ্যভেদ করেছেন ৩২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেইন জাতীয় দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ছয় ম্যাচে করেছেন তিন গোল। প্রথম ইউরোপীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে তাঁর দেশও।
কিলিয়ান এমবাপে ( রিয়াল মাদ্রিদ ও ফ্রান্স)
পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর প্রথম কয়েক মাসের হতাশা এখন অতীত। অবশ্য সেই হতাশার মৌসুমেও ঠিকই লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার ট্রফি পিচিচি জিতেছেন। এবার নতুন মৌসুমে তো আরও ক্ষুরধার ফরাসি ফরোয়ার্ড। নতুন কোচ জাবি আলোনসোর রিয়ালে আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা এমবাপে। ক্ষিপ্র গতি, বল নিয়ন্ত্রণ আর নিঁখুত ফিনিশিংয়ের মিশেলে প্রতিপক্ষকে নিয়মিতই নাকানি-চুবানি খাইয়ে ছাড়ছেন। এখন পর্যন্ত এ মৌসুমে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলে ১১ ম্যাচে ১৫ গোল করেছেন এমবাপে। লা লিগায় সর্বোচ্চ ১০ গোল তার, চ্যাম্পিয়নস লিগে মাত্র দুই ম্যাচে ৫ গোল। বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড টানা সাত মৌসুম নিজ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ছয়বার সাবেক ক্লাব পিএসজির হয়ে, আর রিয়ালের জার্সিতে প্রথম মৌসুমেই সেই কৃতিত্ব ধরে রেখেছেন তিনি।
ফ্রান্সের হয়ে করেছেন তিন ম্যাচে তিন গোল । এই মৌসুমে ক্লাব ও দেশের হয়ে ১৪ ম্যাচে কেবল একবার গোল পাননি। টানা ১১ ম্যাচ ধরে জালের দেখা তো পাচ্ছেনই।
গেতাফের বিপক্ষে স্বস্তির জয়ে স্প্যানিশ লা লিগার শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে গিয়ে ম্যাচের ৮০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের করা গোলে ১-০ ব্যবধানেই জিতল জায়ান্ট ক্লাবটি।
রিয়ালের কাজ সহজ করে দিয়েছে গেতাফেই। ম্যাচের ৭৭ থেকে ৮৪- এই ৭ মিনিটের মধ্যে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেছেন স্বাগতিক দলের দুই ফুটবলার অ্যালান নিওম ও অ্যালেক্স স্যানক্রিস।
দুই লাল কার্ডের মাঝে ৮০তম মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন এমবাপে। জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে এ নিয়ে টানা ১১ ম্যাচে গোল করলেন ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। তার হাতেই ওঠে চলতি লিগে সপ্তম ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
স্কোরলাইন অবশ্য বোঝাতে পারবে না, কতটা দাপুটে ফুটবল খেলেছে রিয়াল। পুরো ম্যাচে প্রায় ৭৫ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদের দখলে। গোলের জন্য মোট ২৩টি শট করে তারা। এর মধ্যে ১০টি ছিল লক্ষ্য বরাবর। কিন্তু গোল শুধু একটিই।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পায় রিয়াল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপে, ডেভিড আলাবা, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৫৫ মিনিটের সময় মাস্তানতুয়োনোর বদলি হিসেবে ভিনিসিয়ুসকে নামান জাভি আলোনসো। পরে তিনিই হয়ে যান পার্শ্বনায়ক।
ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন নিওম। এক মিনিট পেরোনোর আগেই ডান পাশের সাইডলাইনের কাছে ভিনিসিয়ুসকে কনুই দিয়ে ধাক্কা মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি। যা নিয়ে প্রতিবাদ জানানোয় খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ।
পুনরায় খেলা শুরু হতেই জাল খুঁজে নেন এমবাপে। আর্দা গুলারের চমৎকার পাস থেকে গোল করেন ফরাসি তারকা।
মিনিট চারেক পর ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন সানক্রিস। ৯ জনের দল নিয়ে আর গোল শোধ করতে পারেনি গেতাফে।
৯ ম্যাচে ৮ জয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন রিয়াল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে নেমে গেছে বার্সেলোনা। ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে গেতাফে।
দীর্ঘ ১৮ বছরের খরা কাটাতে পারল না আর্জেন্টিনা। আরও লম্বা হলো তাদের অপেক্ষা। আলবিসেলেস্তেদের হতাশায় ডুবিয়ে ইতিহাস গড়ল মরক্কো। প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল আফ্রিকান দেশটি।
চিলির সান্তিয়াগোতে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে হওয়া শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারায় মরক্কো। দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে একাই দুই গোল করেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড ইয়াসির জাবিরি।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই মরক্কোর প্রথম শিরোপা। এত দিন ২০০৫ সালের আসরে রানার্স-আপ হওয়া ছিল তাদের সেরা সাফল্য। প্রায় ২০ বছর পর এবার নতুন ইতিহাস লিখল তারা।
অন্য দিকে ১৯৮৩ সালের পর আবার রানার্স-আপ হলো আর্জেন্টিনা। এর আগে-পরে ছয়বার ট্রফি ঘরে তুলেছে আলবিসেলেস্তেরা। তবে ২০০৭ সালের পর আর এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা।
ফাইনালের দুইটিসহ টুর্নামেন্টে মোট ৫ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা ইয়াসির। তবে গোল্ডেন বুট অবশ্য জিততে পারেননি তিনি। তবে আসর জুড়ে ভালো খেলায় সিলভার বল জেতেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড।
টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফুটবলের প্রদর্শনীতে আসরের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন মরক্কোর ওথমান মামা।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগপর্যন্ত নক আউট পর্বে কোনো গোল হজম না করা আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি জেতেন গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কার।
শিরোপার মঞ্চে ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখিয়েই খেলে আর্জেন্টিনা। কিন্তু গোলের তালা ভাঙতে না পারায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। গোলের জন্য মোট ২০টি শট করেন লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াদের উত্তরসূরিরা। কিন্তু জাল খুঁজে পায়নি। বিপরীতে ৪টি শট লক্ষ্যে রেখেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়ে যায় মরক্কো।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে আচমকা আক্রমণে আর্জেন্টিনাকে চমকে দেয় মরক্কো। ডি-বক্সের মুখে গোলরক্ষককে একা পেয়ে শট করেন ইয়াসির। তখনই দুজনের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। তবে ফাউল দেননি রেফারি।
তাই খেলার শুরুতেই 'গ্রিন কার্ড' ব্যবহার করে ভিএআর রিভিউয়ের আবেদন করে মরক্কো। এতে দেখা যায়, ডি-বক্সের ঠিক বাইরে হয়েছে ফাউল। তাই পেনাল্টি পায়নি মরক্কো। তবে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
ওই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকে বল জালে জড়ান ইয়াসির। তার উঁচু করে নেওয়া বাম পায়ের বাঁকানো শট তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি।
পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ২৮তম মিনিটে উল্টো দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে তারা। পাল্টা আক্রমণে ওথমান মামার ক্রস পেয়ে বাম পায়ের ছোঁয়ায় দ্বিতীয় গোল করেন ইয়াসির।
এরপর ব্যবধান কমাতে একের পর এক চেষ্টা করতে থাকে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। বারবার মরক্কোর রক্ষণে হানা দিলেও সে অর্থে জোরাল কোনো আক্রমণ করতে পারেনি তারা। এমনকি লক্ষ্য বরাবরও ছিল না বেশিরভাগ শট।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর দেওয়া হয় অতিরিক্ত আরও ৫ মিনিট। সেই সময় শেষ হওয়ার বাঁশি বাজাতেই উল্লাসে মাতেন মরক্কোর ফুটবলাররা আর গ্যালারিতে শুরু হয় লাল জার্সির উচ্ছ্বাস।
একই দিন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে দ্বিতীয় মিনিটে করা ওস্কার পেরেয়ার গোলে ফ্রান্সকে হারায় কলম্বিয়া।
ম্যাচের ৮৪তম মিনিট। গোলের
ব্যবধান ১-১। মনে হচ্ছিল, পয়েন্ট ভাগাভাগিতে শেষ হবে লিভারপুল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যাচ। আচমকা দৃশ্যপট বদলে দেন হ্যারি মাগুইর। কর্নার থেকে ছুটে আসা তীব্রগতির বল
এর-ওর পা ছুঁয়ে পৌঁছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডারের কাছে। তার শক্তিশালী হেডার
খুঁজে নেয় লিভারপুলের জাল। তাতেই প্রিমিয়ার লিগ ২০২৫-২৬ মৌসুমের প্রথম দেখাতেই অল রেডসদের
হারাল দ্য রেড ডেভিলসরা।
প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল এবার বেশ ছন্দহীন। লিগে সবশেষ ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসির কাছে হারের পর নিজেদের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ম্যান ইউনাইটেডকে আতিথেয়তা দেয় তারা। প্রত্যাবর্তন তো হলোই না, উল্টো আরও একবার পয়েন্ট খোয়াল আর্নে স্লটের দল।
লিগে ৯ ম্যাচে এটি লিভারপুলের
টানা তৃতীয় হার। অন্যদিকে ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে রুবেন আমোরিমদের। সমালোচনার মুখে থাকা
এই পর্তুগিজ কোচের দলের ৪ জয়, ৩ হার ও ১ ড্র। টানা দুই জয়ে নিজেদের নতুন করে জানান
দিল ম্যান ইউনাইটেড।
আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে
নয়টায় শুরু হওয়া ম্যাচে মাত্র দুই মিনিটেই এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ব্রুনো
ফের্নান্দেস বল বাড়ান ডান পাশে থাকা আমাদ দিয়ালোকে। তিনি এগিয়ে গিয়ে বক্সের ভেতর দৌড়ে
আসা ব্রায়ান মবেমোর উদ্দেশে বল বাড়ান, আর মবেমো দুর্দান্ত শটে জাল কাঁপান। নতুন মৌসুমে
ক্যামেরুন ফরোয়ার্ডের এটি দ্বিতীয় গোল।
৩২তম মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে কোডি গাকপো শট হেডে জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন মোহাম্মদ সালাহ। কিন্তু ইউনাইটেড গোলকিপার বলটি গ্লাভসে বন্দি করেন। দুই মিনিট পর শোধের আরেকটি সুযোগ পায় লিভারপুল। নিজেদের অর্ধ থেকে উঠে আসা লং পাস ধরে গোলের চেষ্টা করেন মোহাম্মদ ইসাক, তবে অফসাইডে পড়ে যান নিউক্যাসল থেকে আসা এই স্ট্রাইকার। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের পরও প্রথমার্ধ ১-০ ব্যবধানে শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৮তম মিনিটে
খেলা জমিয়ে দেন কোডি গাকপো। চিয়েসার পাস ধরে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। ৮৪ মিনিট
পর্যন্ত ম্যাচ ছিল ১-১। মনে হচ্ছিল, ম্যাচটি ড্র হতে যাচ্ছে। ঠিক তখনই মাগুইর বদলে
দেন চিত্র।
কর্নার থেকে ব্রায়ান মবেমোর নেওয়া তীব্র শট ফেদেরিকো চিয়েসার গায়ে লেগে ফিরে আসে ব্রুনো ফের্নান্দেসের পায়ে। তিনি নিখুঁতভাবে বল বাড়িয়ে দেন ম্যাগুয়েরের কাছে, যিনি শক্তিশালী হেডে গোল আদায় করেন। এটি ইংলিশ ডিফেন্ডারের মৌসুমের প্রথম গোল, যদিও এর আগে একটি অ্যাসিস্ট ছিল তার।
ম্যাচ হারলেও বল দখলে এগিয়ে
ছিল স্বাগতিকরা। মোহাম্মদ সালাহ ও ভার্জিল ফন ডাইকেরা বল নিজেদের কাছে রেখেছে প্রায়
৬৩ শতাংশ সময়। ইউনাইটেডের দখলে ছিল মাত্র ৩৭ শতাংশ বল। লিভারপুলের ১৯টি শটের মধ্যে
৬টি ছিল লক্ষ্য বরাবর, আর ইউনাইটেডের ১২টি শটের মধ্যে ৪টি ছিল অন টার্গেট।
অতিথি দলের জয়ে বড় অবদান
রাখেন গোলকিপার সেনে লামেন্স। বেলজিয়ামের এই গোলরক্ষক মোট ৫টি নিখুঁত শট ঠেকান। তার
টাইমলি লং পাসও ছিল দেখার মতো।