
প্রথমবার দেশের বাইরের কোনো লিগে খেলছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ভুটানের নারী ফুটবল লিগে সুযোগ পেয়ে পূরণ হলো বিদেশি লিগে খেলার স্বপ্নও। রয়েল থিম্পু কলেজ এফসির (আরটিসি) হয়ে মাঠে সময়টাও কাটছে স্বপ্নের মতো। সেখানে রীতিমতো ‘গোল মেশিন’ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই স্ট্রাইকার। ভুটান লিগ, জাতীয় দলে শুরুর দিকের গল্প এবং এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে আজ টি স্পোর্টসের সঙ্গে ভুটান থেকে কথা বলেছেন। মুঠোফোনে শামসুন্নাহারের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুবেল রেহান।
টি-স্পোর্টস: ভুটান লিগে এবারই প্রথম, কেমন সময় কাটছে?
শামসুন্নাহার: হ্যাঁ, এবারই প্রথম। অনেক দিনের একটা ইচ্ছে ছিল দেশের বাইরের লিগে খেলা, সেটা পূরণ হলো। সব মিলিয়ে ভালো কাটছে, আলহামদুলিল্লাহ।
টি-স্পোর্টস: নিজের ইচ্ছে পূরণ হলো রয়েল থিম্পু কলেজ এফসির মাধ্যমে, ক্লাবটির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?
শামসুন্নাহার: আছে সব দিক থেকে ভালো। সুযোগ-সুবিধা সব ভালোই। এখানে আলাদা করে থাকি না। এটা একটা কলেজের ক্লাব। এখানে ছেলে-মেয়েদের আলাদা করে হোস্টেল আছে। তবে আমরা বাইরে একটা ফ্ল্যাটে থাকি। এখানে নিজেদের মতো করে থাকা যায়, চাইলে রান্না করেও খাওয়া যায়। একটা ইউনিটের মতো, পাঁচটা বেড, ওয়াশিং মেশিন, মানে সব কিছুই আছে, নিজেদের মতো আর কি।
টি-স্পোর্টস: আপনি তো বসুন্ধরা কিংসের হয়েও খেলেছেন, থিম্পুর সঙ্গে তুলনা করলে কোন ক্লাবেকে এগিয়ে রাখবেন?
শামসুন্নাহার: বসুন্ধরা কিংসে সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি, এই ক্লাবের (রয়েল থিম্পু কলেজ) চেয়ে, কারণ আমি দুই ক্লাবে খেলছি তো...। এ ছাড়া থিম্পুতে টাকা-পয়সাও কম, যেটা বসুন্ধরা কিংসে বেশি ছিল। পেশাদার দিক থেকে বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে। আর এটা তো একটা কলেজের ক্লাব।
টি-স্পোর্টস: থিম্পুর হয়ে মাঠে নামলেই গোলের ফুলঝুরি, শুনেছি গোলের সংখ্যাই নাকি ভুলে গেছেন, এখন পর্যন্ত কত গোল করেছেন?
শামসুন্নাহার: একটু দেখে বলি, আমি লিখে রেখেছিলাম (হাসি)। গোল ২২টা, অ্যাসিস্ট ২৩টা। প্রথম ম্যাচের আর গতকালকে (শনিবার) ম্যাচে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়েছি। এর আগে কখনও এমন নোট করিনি। কিন্তু এবার সিভি বানাতে গিয়ে দেখলাম কোনো কিছু মনে নেই। বাংলাদেশ দলে কত গোল করছি, কম ম্যাচ খেলছি সেসব কিছুই মনে ছিল না। এবার এই লিগে প্রথমবার বলে লিখে রেখেছিলাম।
টি-স্পোর্টস: ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তুলেছেন একাধিক ম্যাচে, পুরস্কারের টাকায় কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে?
শামসুন্নাহার: টাকা তো এখনও দেয়নি। কি করব জানি না। পেলে তহুরাকে খাওয়াবো (হাসি)!
টি-স্পোর্টস: তহুরাও ম্যাচসেরা হয়েছে, তাঁর পক্ষ থেকে কী আশ্বাস পেলেন!
শামসুন্নাহার: আসলে এভাবে তো হিসেব করে হয় না। বন্ধুদের মধ্যে এমন হিসেব চলে না। বাইরে খেতে গেলে কখনও সে বিল দেয়, আবার কখনো আমি দিই।
টি-স্পোর্টস: ভুটানের কোন ব্যাপারগুলো দেখে এখন পর্যন্ত আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
শামসুন্নাহার: আমি তো তেমন একটা বাইরে যাই না। খেলা, প্রাকটিসের বাইরে আমি বাসাতেই থাকতে পছন্দ করি। তহুরাও তেমন একটা ঘুরতে যায় না। সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশ থেকে যারাই ভুটানে আসছে সবাই ঘুরাঘুরি করছে, কিন্তু আমি আর তহুরা এতটা যাইনি কোথাও। কারণ ভালো লাগে না, আরটিসি কলেজের মধ্যেই অনেক সুন্দর। তবে ইচ্ছা আছে একদিন যাব।
টি-স্পোর্টস: ঋতুপর্ণা-মনিকারাও অন্য ক্লাবের হয়ে খেলছেন, সেখানে জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে দেখা-আলাপ হয়?
শামসুন্নাহার: না সেভাবে কখনো যাওয়া হয়নি। তবে সবশেষ যেদিন ট্রান্সপোর্ট আর সিটির খেলার দিন ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম। পরে মারিয়া আপু তাদের ওখানে আমাদের নিয়ে গেছে। সেখানেও আমাদের মতো ভালো সুযোগ-সুবিধা। নিজেরা রান্না করেও খেতে পারে। অনেক দিন পর সেদিন বাংলা খাবার খেয়েছিলাম।
টি-স্পোর্টস: বাংলাদেশের হয়ে একসঙ্গে খেলেন, ভুটানে তচঁরা প্রতিপক্ষ, মধুর কোনো খুনসুটি আছে?
শামসুন্নাহার: ম্যাচে আমরা সবাই সবার সেরাটা দিই। এমনিতে খেলা শেষের পরে আমরা অনেক মজা করি। দুষ্টুমি করে বলি- আজকে আসিস তুই আমার সাইড দিয়া, ঠ্যাঙ ভাইঙা দিমু। আমি শামসুন্নাহারকে (সিনিয়র) দাদী ডাকি, ও আমাকে নাতি বলে। ম্যাচের আগে ওকে বলছিলাম আজকে তোর পাস দিয়ে খেলব একটু দেইখা, শুইনা খেলিস। এ রকম অনেক মজা হয়। তবে ওই দিন ম্যাচটা অনেক ফাইটিং ছিল।
টি-স্পোর্টস: বাইরে থেকে দেশের কোন জিনিসগুলো বেশি মিস করছেন?
শামসুন্নাহার: সত্যি বলতে দেশের খাবার মিস করি। এখানে কমিউনিকেশন একটা সমস্যা তো আছেই, ইংরেজিতে কথা বলতে হয়। আমি ইংরেজিতে ততটা সাবলীল না। তবে ম্যাচে কোনো সমস্যা হয় না।
টি-স্পোর্টস: জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া, তারপর বিদেশি লিগে খেলছেন, কখনও ভেবেছিলেন ক্যারিয়ারটা এত সমৃদ্ধ হবে?
শামসুন্নাহার: দেশের বাইরে খেলার স্বপ্নটা দেখা শুরু হয় জাতীয় দলে খেলার পর থেকে। দেশের বাইরে খেলার বিষয়টি তো জানতামই না, এমনকি জাতীয় দল কি সেটাও তো জানতাম না। মজায়-মজায় খেলাটা শুরু করি। পরে তো স্যারেরা বলতো, সাবিনা (খাতুন) অনেক ভালো খেলে, পরে খেলা দেখতে চাইতাম সাবিনা আপুর। জেএফএ কাপ খেলার পর আমরা দুজনের বিকেএসপিতে যাই। যদিও সেই বছর আমাকে আর ঋতুপর্ণাকে বাদ দিয়ে দেয় (হাসি), ছোট ছিলাম তো বেশি তাই। পরে ২০১৭ সালে বাফুফের ক্যাম্পে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের জন্য সুযোগ পাই। তারপর থেকে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম দেশের জন্য খেলা কি।
টি-স্পোর্টস: কতটা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ এখানে?
শামসুন্নাহার: শুরুতে খেলা নিয়ে সমস্যা হতো না। প্রাইমারি লেভেলের পর যখন জেলাভিত্তিক খেলতাম, অনেক দূরে খেলতে যেতাম, তখন অনেক সময় খেলতে যেতে দিতে চাইতো না বাসা থেকে। খেলা নিয়ে কত মিথ্যা কথা বলেছি, লুকিয়ে লুকিয়ে খেলতে গিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা, ধোবাউড়া জেলায়। এমনও আছে বলছি, স্কুলে যাই, পরে রাস্তার পাশে ব্যাগ রেখে অনুশীলনে যেতাম। এই খেলার জন্য মার খেয়েছি হিসেব নেই।
টি-স্পোর্টস: পরিবারের শাসন আর নিজের চেষ্টা সব মিলিয়ে স্বার্থক?
শামসুন্নাহার: তখন যদি পিছিয়ে যেতাম বা মার খেয়ে খেলা ছেড়ে দিতাম, তাহলে এখানে আজ আসতে পারতাম না। মার খেয়েছি, খেলছি... আসলে ফুটবলের জন্য একটা ভালো লাগা ছিল তাই এসব কিছু মনে হতো না।
টি-স্পোর্টস: ফুটবলার না হলে, অন্য কোন পেশা বেছে নিতেন?
শামসুন্নাহার: ফুটবলার না হলে আসলে জানি না কি হতাম। ফুটবল শুরুই তো করছিলাম ক্লাস-থ্রি থেকে। ওই সময় তো আর কি হবো অতদূর ভাবার বয়স হয়নি। তারপর ধীরে ধীরে ফুটবলের মধ্যেই ডুবে গেলাম। আর কিছু নিয়ে ভাবার সময় হয়নি।
টি-স্পোর্টস: দলে আপনার প্রিয় বন্ধু কে?
শামসুন্নাহার: প্রিয় বন্ধু বলতে ওই রকম কেউ-ই নেই। আমরা যারা ময়মনসিংহের আছি সবাই এক হয়ে থাকি। এটা তহুরা কিংবা আরও যারা আছে তারাও এভাবেই চিন্তা করে।
টি-স্পোর্টস: এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু দেখেন?
শামসুন্নাহার: চেষ্টা করব কম্পিটিটিভ ম্যাচ খেলতে। গ্রুপের অন্য দলগুলো অনেক ভালো টিম, তারা নিয়মিতই এশিয়ান কাপ, বিশ্বকাপও খেলে, তাদের বিপক্ষে খেলাটাও তো আমাদের জন্য অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। তারপরও মাঠে যখন নামবো চেষ্টা করব দেশের জন্য সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিতে।
টি-স্পোর্টস: ফুটবলে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শামসুন্নাহার: কি বলব... ইচ্ছে তো আছে- অনেক স্বপ্নও আছে। সামনে অনেক সুযোগ আছে, কষ্ট করি, দেখা যাক কোথায যেতে পারি। জাতীয় দলের জন্য, দেশের জন্য অনেক কিছু করতে চাই। যেন মানুষ মনে রাখে শামসুন্নাহার জুনিয়র নামে কেউ একজন ছিল।
No posts available.

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টানা চার ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেলো লিভারপুল। শনিবার রাতে অ্যাস্টন ভিলাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
লিভারপুলের জয়ে গোল করেছেন মোহাম্মদ সালাহ ও রায়ান গ্র্যাভেনবার্চ। ক্লাবের হয়ে সালাহর এটি ২৫০তম গোল। জয়ে পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে অল রেডরা।
ঘরের মাঠ এনফিল্ডে ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখায় লিভারপুল। তবে প্রথমার্ধে কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না দলটি।
আরও পড়ুন
| মেসির গোলের পরও জিততে পারল না মায়ামি |
|
বিরতির ঠিক আগে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে ভিলার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের ভুলে গোলের সুযোগ পান সালাহ। সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করে জালে বল জড়ান।
লিভারপুলের হয়ে এটি মিসরীয় ফরোয়ার্ডের ২৫০তম গোল। ইয়ান রাশ (৩৪৬) ও রজার হান্টের (২৮৫) পর ক্লাবের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে আড়াইশ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সালাহ।
দ্বিতীয়ার্ধে আরেকটি গোল পায় লিভারপুল। ৫৮ মিনিটে রায়ান গ্র্যাভেনবার্চের দারুণ শটে ২-০ হয় স্কোরলাইন। বাকি সময় আর কোনো গোল না হলেও সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্নে স্লটের দল।
ম্যাচের পর সালাহর প্রশংসা করে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট বলেন, ‘এক ক্লাবের হয়ে ২৫০ গোল করা অবিশ্বাস্য। আজ সে শুধু আক্রমণেই না, রক্ষণেও দারুণ খেলেছে।’
চার ম্যাচের হতাশা কাটিয়ে জয়ে সালাহ নিজেও ছিলেন উচ্ছসিত, ‘জয়টা খুব দরকার ছিল। আমরা কিছু ম্যাচ হেরেছি।এখন আবার জয়ের পথে ফিরেছি। লিভারপুলের মতো ক্লাবের হয়ে ২৫০ গোল করা সত্যিই গর্বের।’
আরও পড়ুন
| মেসির গোলের পরও জিততে পারল না মায়ামি |
|
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লিভারপুল। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে তারা।
অন্যদিকে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে নেমে গেছে অ্যাস্টন ভিলা। আগামী মঙ্গলবার ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলবে লিভারপুল।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর যোগ করা হলো অতিরিক্ত ৬ মিনিট। এরমাঝেও আরও বিরতির কারণে সেটি গিয়ে ঠেকল ১৫ মিনিটে। যেখানে একদম শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে আল নাসরকে দারুণ এক জয় এনে দিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাঠে শনিবার রাতে আল ফায়হাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আল নাসর৷ লিগে এ নিয়ে সাত ম্যাচে টানা সাত জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে সৌদি ফুটবলের জায়ান্ট ক্লাবটি।
ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখিয়ে খেলে আল নাসর। প্রায় ৬৬ শতাংশ সময় বলের দখল নিজেদের কাছেই রাখে তারা। গোলের জন্য করে মোট ১৪টি শট। এর ৫টি ছিল লক্ষ্য বরাবর।
তবে ম্যাচের প্রথম গোলটি করে আন্ডারডগ হিসেবে খেলতে নামা আল ফায়হাই। স্বাগতিক দর্শকদের চমকে দিয়ে ১৩তম মিনিটে দারুণ দক্ষতায় ফায়হাকে এগিয়ে দেন ডেভিড রেমেসেইরো (জেসন নামে অধিক পরিচিত)।
মিনিট পাঁচেক পর ফায়হার জাল কাঁপান কিংসলে কোম্যান৷ কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় আল নাসর তারকার এই গোল।
তবে ৩৭ মিনিটে ভুল করেননি রোনালদো। হোয়াও ফেলিক্স ও কোম্যানের দারুণ মেলবন্ধনের পর কোম্যানের পাস থেকে ম্যাচে সমতা ফেরান পর্তুগিজ সুপারস্টার।
আরও পড়ুন
| মেসির গোলের পরও জিততে পারল না মায়ামি |
|
এরপর গোলের একাধিক সুযোগ পায় দুই দলই। কিন্তু ম্যাচের স্কোরলাইন বদলাতে পারছিল না তারা। অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে খুলে যায় আল নাসরের ভাগ্য।
আব্দুল্লাহ আল আমরি ডি-বক্সের মধ্যে ফাউলের শিকার হলে লম্বা সময় ধরে ভিএআর চেক করে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের ১৫তম মিনিটে সেই পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করে দলকে জেতান রোনালদো৷ জোড়া গোল করে তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

লিওনেল মেসির শেষ সময়ের গোলেও রক্ষা হলো না ইন্টার মায়ামির। রোববার বাংলাদেশ সময় ভোরে মেজর লিগ সকার (এমএলএস) কাপ প্লে অফের প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগে ন্যাশভিল এফসির কাছে ২-১ গোলে হেরেছে মায়ামি।
২০২১ সালের পর এটাই ন্যাশভিলের প্রথম প্লে-অফ জয়। সেবারও তারা প্রথম রাউন্ডে ২-১ গোলে হারিয়েছিল অরল্যান্ডোকে।
ন্যাশভিলের মাঠ জিওডিস পার্কে নবম মিনিটেই পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন স্যাম সারিজ। মায়ামির গোলরক্ষক রোকো রিওস নভো ভুল দিকে ঝাঁপ দিলে সহজেই গোল করেন তিনি।
আরও পড়ুন
| অপ্রতিরোধ্য আর্সেনাল, হোঁচট খেল ইউনাইটেড |
|
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ন্যাশভিল। হানি মুকতারের কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জশ বাওয়ার।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে মায়ামি। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাচ্ছিল দলটি। শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিটে গোল করেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি। রদ্রিগো দে পলের পাস থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে ব্যবধান কমান তিনি।
ন্যাশভিলের বিপক্ষে এটি তার তিন ম্যাচে ষষ্ঠ গোল। তবুও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মায়ামিকে। পুরো ম্যাচে মায়ামির শট ছিল ১০টি, ন্যাশভিলের ৯টি। তবে অন টার্গেটে এগিয়ে ছিল ন্যাশভিল ৫-৩ ব্যবধানে।
এই জয়ে তিন ম্যাচের এই প্লে অফ সিরিজে সমতা ফেরাল ন্যাশভিল। এখন সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে ৮ নভেম্বর, মায়ামির মাঠ ফোর্ট লডারডেলে।
সিরিজের বিজয়ী দল উঠবে কনফারেন্স সেমিফাইনালে, যেখানে প্রতিপক্ষ হবে সিনসিনাটি বা কলম্বাস ক্রু।

শুক্রবার ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোর সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গত মৌসুমের গোল্ডেম বুট জিতেছেন কিলিয়ান এমবাপে। এর পরদিনই জোড়া গোলে যেন জানান দিলেন নতুন মৌসুমের জন্যও প্রস্তুত তিনি।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চলতি মৌসুমেও দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন এই তারকা। তার নৈপুণ্যে লা লিগায় বড় জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবার রাতে নিজেদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে তারা।
রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেছেন এমবাপে। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে লা লিগায় ১১ ম্যাচে তার গোল এখন ১৩টি। দলের বাকি দুটি গোল করেছেন জুড বেলিংহাম ও আলভারো কারেরাস।
আরও পড়ুন
| অপ্রতিরোধ্য আর্সেনাল, হোঁচট খেল ইউনাইটেড |
|
এই জয়ের ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিয়ারিয়ালের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের ১৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন এমবাপে। ৩১ মিনিটে আরদা গুলারের পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই ফরোয়ার্ড।
এরপর আরও একটি পেনাল্টির সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। তবে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট রুখে দেন ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক।
এক মিনিট পরই বিরতির ঠিক আগ মূহুর্তে গোল করেন বেলিংহাম। বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে বল জালে পাঠান ইংলিশ তারকা। প্রথমার্ধ শেষে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরো সময় নিয়ন্ত্রণে রেখেও গোল পাচ্ছিল না রিয়াল। শেষ পর্যন্ত ৮২ মিনিটে দারুণ এক শটে গোল করেন কারেরাস, ৪-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় রিয়ালের।
গত সপ্তাহে এল ক্লাসিকোতে বদলি হিসিবে ম্যাচ থেকে উঠানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভিনিসিয়ুস। তবে এই ম্যাচে শুরু থেকেই খেলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
| প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা ইয়ামালের |
|
এই জয়ে ১১ ম্যাচে ১০ জয় ও ৩০ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ। এনফিল্ডে আগামী মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে তারা।
দিনের অন্য ম্যাচে রায়ো ভায়েকানোকে ৪-০ গোলে হারিয়ে বার্সেলোনাকে হটিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভিয়ারিয়াল। ১১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৩। ১০ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বড় দলগুলোর হারের সুযোগ ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছে আর্নেনাল। সবশেষ টানা পাঁচ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আরও জেঁকে বসেছে গানাররা। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মিকেল আর্তেতার দল টানা নয় ম্যাচে জয় পেল। একই সময়ের অন্য ম্যাচে টানা তিন জয়ের পর ড্র করল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
আজ বার্নলির বিপক্ষে ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে আর্সেনাল। প্রতিপক্ষের মাঠে ভিক্টর ইয়োকেরেসের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন ডেকলান রাইস।
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বরে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করল আর্সেনাল। এক ম্যাচ কম খেলে দুই নম্বরে থাকা বোর্নমাউথের পয়েন্ট ১৮। আর চলতি মৌসুমে লিগে ষষ্ঠ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে বার্নলে।
নিজেদের মাঠে আর্সেনালের বিপক্ষে বল দখলে ভালোই লড়েছে বার্নলি। তবে আক্রমণে সফরকারীদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। ৫৪ শতাংশ বল দখলে রেখে ১১টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে আর্সেনাল। যেখানে পুরো ম্যাচে মাত্র দুটি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ১৪ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন ইয়োকেরেস। আরেকবার কর্নার থেকে লক্ষ্যভেদ করল আর্সেনাল। রাইসের নেওয়া কর্নার থেকে হেডে গোল করেন সুইডিশ ফরোয়ার্ড। ৩৫ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করা গোলটি আসে আগের গোলের যোগানদাতার নৈপুণ্যে। ইয়োকেরের নিঁখুত পাস থেকে বল পান লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ড। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ ক্রস করলেন িএই উইঙ্গার, সেখান থেকে দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়ান রাইস।
মূল্যবান এক পয়েন্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের
প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে খালি হাতেই ফেরার দিকে এগোচ্ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে ৮১ মিনিটে ৮১তম মিনিটে আমাদ দিয়ালো দুর্দান্ত এক ভলিতে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে করম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
নটিংহ্যামের মাঠ সিটি গ্রাউন্ডে ২-২ গোলে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রথমে ক্যাসেমিরোর গোলে এগিয়ে যায় রুবেন আমোরিমের দল। বিরতির পর দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল হজম করে বসে রেড ডেভিলরা। এরপর শেষ দিকে দলকে গুরুত্বপূর্ণি একটি পয়েন্ট এনে দেওয়া গোলটি করেন দিয়ালো।
এই ড্রয়ের পর ১০ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে ইউনাইটেড। বিপরীতে অবনমন অঞ্চলে থাকা ফরেস্ট ৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে অবস্থান করছে।
প্রথমার্ধে কাসেমিরোর হেডে থেকে করা গোলে টানা চতুর্থ জয় পেতে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে ম্যাচের চিত্র পুরো উল্টে যায়। ৪৮ মিনিটে ডানদিক থেকে রায়ান ইয়েটসের ক্রসে ফরেস্ট অধিনায়ক মরগান গিবস-হোয়াইট ইউনাইটেডর রাইট-ব্যাক আমাদকে পরাস্ত করে বল দখলে নিয়ে দলকে সমতায় ফেরান।
দুই মিনিট পরই আবার আক্রমণ ফরেস্টের। ডানদিক থেকে আরেকটি বিপদজনক ক্রস ইউনাইটেডের রক্ষণ হুমকির মুখে পড়ে। ইগর জেসুসের হেড কয়েকজন খেলোয়াড়ে থেকে বক্সে পড়লে ঠাণ্ডা মাথায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রেড ডেবিলদের গোলকিপার সানে ল্যামেন্সকে পরাস্ত করেন নিকোলো সাভোনা।
পিছিয়ে পড়ে সমতাসূচক গোলের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাতে থাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৮১ মিনিটে আসে সুযোগ। ব্রুনো ফার্নান্দেসের একটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, তারপরই আমাদ এক লাফিয়ে ওঠা বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের বাইরে থেকেই প্রথম ছোঁয়ায় ভলিতে বল জালে পাঠান।
জয়সূচক গোলটিও পেয়ে যেতে পারত আমোরিমের দল। শেষ মুহূর্তে আমাদের আরেকটি শট জয় ফরেস্টের মুরিলো গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করে দলকে রক্ষা করেন।