মাত্র আট মাস হলো ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এসেছেন, প্রথম মৌসুম কেটেছে একরাশ হতাশার মধ্য দিয়ে। রুবেন আমোরিমের চাকরি নিয়ে প্রায়ই তোলা হয় প্রশ্ন। তবে পর্তুগিজ এই কোচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে দেখছেন বড় স্বপ্ন। ইংলিশ ক্লাবটিতে আরও ২০ বছর কাটিয়ে দিতে চান তিনি।
আমোরিমের সাথে ইউনাইটেডের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত। সাথে রয়েছে সেটা এক বছর বাড়ানোর সুযোগ। হাতেগোনা কয়েকজন কোচ ছাড়া আধুনিক কোচরা কেউই ২০ তো নয়ই, ৫ বছরও একটি ক্লাবের কোচ হিসেবে থাকার সুযোগ পান না। পেপ গার্দিওলার মত যারা দুহাতে সাফল্য পেয়েছেন, কেবল তারাই এক ক্লাবে প্রায় ১০ বছর কাটাচ্ছেন।
আমোরিমেরও ইচ্ছা এমন লম্বা সময় ইউনাইটেডের ডাগআউটে থাকার। প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতিতে এভারটনের সাথে ম্যাচের পর তিনি বলেছেন সেই লক্ষ্যের কথাই।
“আমি এখানেই থাকতে চাই, আমি আরও ২০ বছর থাকতে চাই। সেটাই আমার লক্ষ্য। আমি মনে করি এটা সম্ভবও।”
গত নভেম্বর মাসে এরিক টেন হাগকে সরিয়ে আমোরিমকে দায়িত্ব দেয় ইউনাইটেড। লক্ষ্য ছিল তার হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু প্রথম মৌসুমে তার নেতৃত্বে ক্লাবটির হয় ভরাডুবি, বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগে। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমের পর সবচেয়ে বাজে অবস্থানে থেকে শেষ করে তারা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে ২০টি ম্যাচ হারে ইউনাইটেড, যা ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমের পর সর্বোচ্চ পরাজয়ের রেকর্ড। ইউরোপা লিগের ফাইনাল খেললেও তাই আমোরিমের অবস্থান মজবুত নয়।
এরপরও ভালো কিছু সম্ভব বলেই মানেন আমোরিম।
“আমি জানি গত মৌসুমে আমার বিশেষ কৃতিত্ব নেই। তবে আমি নতুন করে শুরু করতে প্রস্তুত।”
গেল মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪২টি ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছেন আমোরিম, যার মধ্যে জয় এসেছে মাত্র ১৭টিতে। ম্যাচ প্রতি পয়েন্টের হার ছিল মাত্র ১.৪০। আবার ইউরোপা লিগ না জিততে পারায় ২০২৫-২৬ মৌসুমে ইউরোপিয়ান কোনো প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না, যা শেষবার হয়েছিল ২০১৪-১৫ মৌসুমে।
৫ আগস্ট ২০২৫, ৬:১৪ পিএম
গত মৌসুমেও লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ জয়ে দুর্দান্ত অবদান রেখেছেন ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। আর এই কারণেই তার রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়ায় দলটির আক্রমণভাগে কিছুটা সৃষ্টিশীলতার ঘাটতি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই। তবে সেটা পুষিয়ে নেওয়ার কৌশল পেয়ে গেছেন আর্নে স্লট। লিভারপুল কোচ মনে করছেন, দলের নতুন সদস্য জার্মান মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান ভার্টজ সেই ভূমিকাটা নেবেন।
গত জুনে নিজেদের ট্রান্সফার ইতিহাসের রেকর্ড গড়ে লেভারকুসেন থেকে ভার্টজকে দলে টানে লিভারপুল। ২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার পেশাদার ক্লাব ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে ১৯৭টি ম্যাচে ৫৭টি গোল এবং ৬৫টি অ্যাসিস্ট করে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলে। তিনি লিভারপুলের যোগ দেওয়ার কিছুদিন আগেই অভিজ্ঞ রাইট-ব্যাক ট্রেন্ট শৈশবের ক্লাব ছেড়ে পাড়ি জমান রিয়ালে।
স্লট আশাবাদী, ট্রেন্ট যে কাজটা করে দিতেন আক্রমণে, সেই দায়িত্বটা ভালোভাবেই সামাল দেবেন ভার্টজ।
“ভার্টজ আমাদের আক্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি মনে করি প্রতিটি বিভাগেই উন্নতি করার সুযোগ সবসময় থাকে। আমরা আক্রমণে কিছু নতুন অস্ত্র যোগ করেছি এবং ফ্লোরিয়ান ভার্টজ এই জায়গায় অনেক সৃষ্টিশীলতা আনতে সক্ষম।”
গত সোমবার অ্যানফিল্ডে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নেয় লিভারপুল, যেখানে তারা জয় পায় ৩-২ গোলে। এই ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো লিভারপুলের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন ভার্টজ। ম্যাচে দারুণ ছন্দেই ছিলেন তিনি।
সামনে তাই আরও ভালো কিছুর অপেক্ষায় স্লট। “ট্রেন্টের বিদায়ে আমাদের আক্রমণে রক্ষণভাগ থেকে যে সৃষ্টিশীলতা যোগ হত, সেটা আমরা হারিয়েছি। তার সেই ক্রস এবং ফরোয়ার্ডদের খুঁজে বের করার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। তবে ফ্লোরিয়ান ভিন্ন পজিশনে খেললেও, সে একই রকম সৃষ্টিশীলতা আনতে পারবে।”
আগামী ১০ আগস্ট কমিউনিটি শিল্ডে এফএ কাপ জয়ী ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে মৌসুমে প্রথমবার মাঠে নামবে লিভারপুল। এরপর আগামী ১৫ আগস্ট অ্যানফিল্ডে বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে তাদের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ধরে রাখার অভিযান।
ক্যারিয়ারে জোড়া গোল কম করেননি নেইমার। তবে গত দুই বছর ধরে চোটের ধকলে একটা বড় সময় মাঠের বাইরেই থাকতে হয়েছে তাকে। এর প্রভাব পড়ে মাঠের পারফরম্যান্সেও। তবে সান্তোসের সবশেষ ম্যাচে যেন দেখা মিলেছে সেই পুরনো নেইমারের৷ দলকে জেতানোর পথে প্রায় দুই বছর পর এক ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন ব্রাজিলের এই তারকা ফরোয়ার্ড।
মঙ্গলবার সেরি আ-এর ম্যাচে জুভেনতুদেকে ৩-১ ব্যবধানে হারায় সান্তোস, যেখানে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন নেইমার। চলতি মৌসুমে লিগে এটি তার তৃতীয় গোল। আর এই জয় দিয়ে লিগের পয়েন্ট টেবিলে সান্তোস ১৫তম অবস্থানে আছে।
এই বছরের শুরুতে নেইমারের শৈশবের ক্লাব সান্তোস ফিরে আসার পর থেকেই সবার প্রত্যাশা ছিল, এবার নিজেকে ফিরে পাবেন এবং দলকেও সাহায্য করবেন সামনে থেকে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ভিন্ন কিছুই। বারবার চোটে পড়ায় বেশিরভাগ সময়ই তাকে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরেই।
সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য চোট কাটিয়ে ফেরার পর থেকে ধীরে ধীরে ছন্দ ফিরে পাচ্ছেন। ২০২২ সালের আগস্টের পর এই প্রথমবার তিনি টানা পাঁচটি পূর্ণ ম্যাচ খেলেছেন, যা বলে দেয়, টানা চারটি ম্যাচই এই সময়ে খুব কমই খেলতে পেরেছেন তিনি।
২০২২ সালের আগস্টেই ক্লাব ক্যারিয়ারে শেষ বার জোড়া গোল করেছিলেন নেইমার। আর ক্লাব ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর এটাই সাবেক বার্সেলোনা তারকার প্রথম জোড়া গোলের কীর্তি। সেবার ব্রাজিলের জার্সিতে প্রতিপক্ষ ছিল বলিভিয়া।
চমক জাগিয়ে টটেনহ্যাম হটস্পার ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার সময় থেকেই আলোচনায় সন হিউং-মিনের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাবে যোগ দেওয়ার বিষয়টি। সব ঠিক থাকলে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই পাড়ি জমাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই তারকা ফুটবলার, দাবি ইএসপিএন সহ শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলোর।
গত শনিবার সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে সন ঘোষণা দেন টটেনহ্যামের সাথে দীর্ঘ ১০ বছরের সম্পর্কের ইতি টানার। এর পরদিন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র হওয়া প্রাক-মৌসুম ম্যাচে খেলেন স্পার্সের জার্সিতে নিজের সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ। আর তাই ক্লাব কিংবদন্তিকে ৬৫তম মিনিটে বদলি হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় ঘিরে দাঁড়িয়ে গার্ড অব অনার দেন সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রা।
ইউরোপের পাট চুকিয়ে এবার সনের গন্তব্য হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। ইএসপিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ২০ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে সনের লস অ্যাঞ্জেলেস এফসিতে যোগ দেওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। কেবল মেডিকেল ও কাগজপত্র চূড়ান্ত করাটাই বাকি। আর সেটা হলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত লিওনেল মেসির সাথে একই লিগে খেলবেন সন। যদিও আর্জেন্টিনা তারকা খেলেন ইস্টার্ন কনফারেন্সে, আর সনের দল খেলে ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে।
৩৩ বছর বয়সী সন ২০১৫ সালে বায়ার লেভারকুসেন থেকে টটেনহ্যামে যোগ দেন। এরপর ক্লাবটির হয়ে ৪৫৪ ম্যাচে করেছেন ১৭৩ গোল। একবার জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ গোল্ডেন বুট। আর সেরা অর্জন চলতি বছর অধিনায়ক হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে ইউরোপা লিগ জেতা।
ঘটা করে নিজের ১৮তম জন্মদিন পালন করতে গিয়ে সমালোচনা সইতে হয়েছে বেশ। সেটার রেশ না কাটতেই এবার লামিন ইয়ামাল পড়েছেন জন্মদিনের উপহার হিসেবে পাওয়া তার একটি মুরাল নিয়ে। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ভিন্ন এক শিল্পী সেটি বিকৃতি করে দেন। শেষ পর্যন্ত ইয়ামালের মুরালটি আগের অবস্থায় ফিরে গেলেও তার আগে জন্ম দিয়েছে নতুন বিতর্কের।
গত জুলাইয়ে ইয়ামালের জন্মদিন উপলক্ষে তার একটি আর্টওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন খ্যাতনামা স্ট্রিট আর্টিস্ট ‘টিভিবয়। সেখানে বার্সেলোনা তারকাকে ‘এল’ চিহ্নিত একটি সুপারহিরো পোশাকে আঁকা হয়, যেখানে রাখা হয় লাল ব্যাকগ্রাউন্ড।
তবে অল্প সময়েই বার্সেলোনার গ্রাসিয়া অঞ্চলের এই মুরালকে ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক, যা শেষ পর্যন্ত গড়ায় রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদের দিকেও।
এর প্রেক্ষিতে কিছুদিন পরই মুরালটির চেহারা রাতারাতি বদলে যায়। সেখানে স্নো হোয়াইটের সাতটি বামনের ছবি যুক্ত করে দেন অন্য এক শিল্পী, যিনি আবার নিজের ছদ্মনাম ব্যবহার করেন এসব কাজ করে থাকেন। তার এই পদক্ষেপ ছিল ইয়ামালের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আচন্ড্রোপ্লাসিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের (বামন) বিনোদনের জন্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি সামাজিক সমালোচনা।
কেউ কেউ তার এই কাজের প্রশংসা করেন, কারণ তাদের কাছে এটি ছিল শিল্পকলা ও প্রতিবাদের মিশ্রণ হিসেবে। তবে অনেকে আবার আবার এটিকে ইয়ামালের প্রতি অসম্মান হিসেবেও দেখেন।
এসবের মাঝেই গত সোমবার বিকেলে টিভিবয় নিজেই আবার মুরালের পুরো ব্যাকগ্রাউন্ডটি রাঙিয়ে দেন আগের মতো লাল রঙে। সাথে মুছে দেন বামনদের ছবি এব মুরালটিকে তার আসল চেহারায় ফিরিয়ে আনেন।
উল্লেখ্য, গত মাসে ইয়ামালের জন্মদিনের প্রাইভেট পার্টিতে বেশ কয়েকজন বামনকে ভাড়া করে নেওয়া হয়েছিল। ইউরোপের অনেক দেশেই এই চর্চা থাকলেও ইয়ামালের এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে স্পেনের মানবাধিকার সংস্থা, জানায় তীব্র প্রতিবাদ।
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আরও একবার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লেন লিওনেল মেসির দেহরক্ষী ইয়াসিন চিউকো। লিগস কাপ ডিসিপ্লিনারি কমিটি জানিয়েছে, ইন্টার মায়ামির এক প্রতিনিধিকে চলতি লিগস কাপ ২০২৫ টুর্নামেন্টের বাকি সময়ের জন্য সমস্ত টেকনিক্যাল এরিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর ইএসপিএনের দাবি, এই প্রতিনিধিই মেসির দেহরক্ষী।
গত বুধবার রাতে ফোর্ট লডারডেলের চেইস স্টেডিয়ামে ইন্টার মায়ামি ও আটলাস ম্যাচের পর ঘটে যাওয়া এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটি। সেখানে নাম না বলা হলেও ইএসপিএন তাদের সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে, নিষিদ্ধ সেই ব্যক্তি চিউকো।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ওই ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের মধ্যে চলা কথোপকথন থামাতে গিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন চিউকো। এরপর আটলাস দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে হাতাহাতিও হয় তার।
বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান আটলাসের ডিফেন্ডার ম্যাথিউস ডোরিয়া। “চিউকোর মাঠে থাকার কোনো অনুমতিই নেই, বিশেষ করে বিষয়টি যখন খেলোয়াড়দের মধ্যেই হচ্ছিল।“
উল্লেখ্য, এর আগেও মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ম্যাচে চিউকোকে মাঠের পাশে টাচলাইনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে এরপরও তিনি তিনি ইন্টার মায়ামির নিরাপত্তা দলের একজন সদস্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।