ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এই দুই দলের ম্যাচে থাকে বাড়তি উত্তাপ। ইউয়েফা নেশন্স লিগের এই আসরে প্রথম সাক্ষাতে ইতালির কাছে হেরে যায় ফ্রান্স। ফিরতি লড়াইয়ে তাই জয়ের বাড়তি অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন ফ্রান্স ডিফেন্ডার লুকাস দিগনে। তিনি বলেছেন, প্রতিশোধ নিতে তেতে থাকবেন তারা।
আগামী রোববার রাতে মিলানের সান সিরোতে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইতালি ও ফ্রান্স। প্যারিসের পার্ক দেস প্রিন্সেসে প্রথম লড়াইয়ে ৩-১ গোলে জিতেছিল ‘আজ্জুরি’রা। আগামী মার্চের কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য উভয় দলই ইতিমধ্যে তাদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। এরপরও এই ম্যাচে জয়ের জন্য যেন মরিয়া দিদিয়ে দেশমের দল।
আরও পড়ুন
‘কঠিন সময়’ পার করা এমবাপে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, মত ফ্রান্স কোচের |
![]() |
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে দিগনের কন্ঠে ফুটে উঠল সেটাই-
“অবশ্যই দলের মাঝে খেলার মাঠে প্রতিশোধ নেওয়ার একটা স্পিরিট আছে। আপনি যখন কোনো দলের কাছে (ইতালি) হেরে যান, তখন আপনি তাদের কাছে দুইবার হারতে চাইবেন না। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আর আমি মনে করি সবাই সেই চেতনায় উজ্জীবিত থাকবে।”
লুসিয়ানো স্পালেত্তির কোচিংয়ে এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত ফুটবল খেলছে ইতালি। নিজেদের গ্রুপে পাঁচ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ২০০৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। দুইয়ে থাকা ফ্রান্সের পয়েন্ট ১০।
আরও পড়ুন
আরও একবার ফ্রান্স দলের বাইরে এমবাপে, কোচের সাথে দ্বন্দের আভাস? |
![]() |
ম্যাচটা তাই সহজ হবে না ফ্রান্সের জন্য, মানছেন স্পালেত্তিও-
“তাদের দলের মাঝে খুব ভালো একটা সমন্বয় রয়েছে, তাদের স্কোয়াডটা খুব ভালো। তাদের ডাগআউটে একজন খুব ভাল কোচ (স্পালেত্তি) আছেন, যাকে আমি রোমাতে খেলার সময় থেকে চিনি এবং তিনি একজন দুর্দান্ত কৌশলী কোচ। পাশাপাশি একজন দুর্দান্ত মানুষও।”
২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
নিজেদের ফর্ম নড়বরে হলেও আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে ব্রাজিল কোচ ও খেলোয়াড়রা ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল সেলেসাওরা। তবে তাদের স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লিওনেল স্কালোনির দল। এমন একটা হারের পর হতাশায় নিমজ্জিত দরিভাল জুনিয়র। ব্রাজিল কোচের মতে, ম্যাচে তাদের একটা পরিকল্পনাও কাজে দেয়নি।
শুরু থেকেই ছন্দহীন ব্রাজিল ১২ মিনিটের মধ্যে দুই গোল হজম করে বসে। এরপর ম্যাথেউর কুনহার গোলে ব্যবধান কমালেও বিরতির আগে ও পরে আরও দুই গোল দিয়ে ৪-১ স্কোরলাইনে জয় তুলে নেয় আর্জেন্টিনা। এর মধ্য দিয়ে বাছাইয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চার বা তার বেশি গোল হজমের রেকর্ড গড়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন
পরিকল্পনা কাজে না লাগানোর হতাশা ব্রাজিল কোচের |
![]() |
ছন্দহীন ফুটবলে হতাশা থাকলেও, দরিভালের আশা ঘুরে দাঁড়ানোর। “প্রথম মিনিট থেকেই আজকের ম্যাচে আমাদের পরিকল্পনা কাজে দেয়নি। যা হয়েছে আমাকে সেটা মেনে নিতেই হবে। প্রতিপক্ষ আমাদের দাঁড়াতেই দেয়নি এবং জয়টা তাদেরই প্রাপ্য ছিল। আমাদের জন্য এটা বিশাল একটা ক্ষত। প্রক্রিয়াটা জটিল এবং কঠিন হয়ে গেল। তবে আমাদের এখান থেকে বের হওয়ার একটা উপায় খুঁজে বের করতে হবে।”
প্রায় ছয় বছর ধরে ব্রাজিলের বিপক্ষে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে মিস করে কয়েকটি ভালো সুযোগ। নাহলে ব্যবধানটা বড় হতে পারত আরও। এটাই বলে দেয়, ম্যাচে দরিভালের দলকে কতোটা ভুগতে হয়েছে। ফলে ম্যাচটির পর থেকেই বাতাসে ভাসছে গুঞ্জন, বরখাস্ত হতে পারেন ৬২ বছর বয়সী এই কোচ।
দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নেমে গেছে ব্রাজিল। এই অঞ্চল থেকে শীর্ষ চার দল বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে।
আরও পড়ুন
শারীরিক অবস্থার উন্নতি তামিমের |
![]() |
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রায় বছর ধরে নেই জয়ের দেখা। লিওনেল স্কালোনির বিশ্বকাপ জয়ী দলের সাথে ব্রাজিলের তফাতটা এখন তাই অনেক বেশিই। তবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে রাফিনিয়া হুংকার দিয়েই বলেছিলেন, উড়িয়ে দেবেন প্রতিপক্ষকে। তবে মাঠের খেলায় হয়েছে ঠিক এর উল্টোটা। ব্রাজিলের বিপক্ষে বড় জয়ের পর তাই রাফিনিয়াকে ধুয়ে দিয়েছেন রদ্রিগো দে পল ও পারেদেস।
বর্তমান বিশ্বকাপের পাশাপাশি কোপা আমেরিকারও চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। বিপরীতে ২০২২ বিশ্বকাপ থেকেই অধারাবাহিক ব্রাজিল নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। ফলে ম্যাচের আগে রাফিনিয়া যা বলেছিলেন, তা চমক হয়েই এসেছিল। বুধবার সকালের ম্যাচে অবশ্য দাঁড়াতেই পারেনি তার দল। ৪-১ গোলে জিতে দক্ষিণ আমেরিকা বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান মজবুত করেছেন স্কালোনির দল। ব্রাজিল দলের মত সেরা ছন্দে ছিলেন না রাফিনিয়াও।
আরও পড়ুন
ব্রাজিলকে গুঁড়িয়ে রাফিনিয়াকে একহাত নিলেন দে পল-পারেদেস |
![]() |
ম্যাচের পর দে পল বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের মন্তব্যে। “আমরা কখনই কাউকে অসম্মান করিনি। তবে গত কয়েক বছর ধরে আমাদের অনেকবারই অসম্মান করা হয়েছে। আমাদের কেউই সাহায্য করেনি। আমরা নিজেরাই সব কিছু অর্জন করেছি। আমরা নিজেদের প্রমাণ করেই যাব। গত ছয় বছর ধরে আমরা বিশ্বের সেরা জাতীয় দল। তাই আমাদের সম্মান করতে শিখুন।”
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৮ মিনিট পর লিড বাড়ান এনজো ফার্নান্দেস। বিরতির আগে ব্রাজিল ব্যবধান কমালেও ৩৭তম মিনিটে স্কোরলাইন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। আর দ্বিতীয়ার্ধে ৪-১ গোলের জয় নিশ্চিত করেন গুইলিয়ানো সিমিওনে।
রাফিনিয়ার কথার কারণে যে তেতে ছিলেন, সেটা জানালেন পারেদেসও। “আপনার আগ বাড়িয়ে এত কথা বলা ঠিক না, যখন আপনি মাঠে সেটা করে দেখাতে পারবেন না। যখনই রাফিনিয়া কথাটা বলল, তখনই আমরা সেরা হোয়াটসএপ গ্রুপে শেতার করেছি। আমরা সবসময় মাঠেই জবাবটা দেই।”
গত গ্রীষ্মে পালমেইরাস থেকে রিয়ালে নাম লেখান এন্দ্রিক। তার আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে অভিষেক হয়ে যায় জাতীয় দলে। এরপর খেলেছেন ১৩ ম্যাচ, করেছেন মাত্র তিনটি গোল। অধিকাংশ ম্যাচেই আবার মাঠে নেমেছেন বদলি হিসেবে। চলতি আন্তর্জাতিক বিরতিতেও তাই শুরুতে দলে জায়গা হয়নি ১৮ বছর বয়সী এই ফুটবলারের। পরে নেইমারের চোটে ডাক পান।
সম্প্রতি সাবেক ব্রাজিল কিংবদন্তি রোমারিওর সাথে এক পডকাস্টে এন্দ্রিক বলেছেন বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে তার আশঙ্কার কথা। “আমার আপনাকে সত্যটা বলতেই হবে। আমার মাথায় সারাক্ষণ একটা চিন্তা ঘুরতেই থাকে। আমার ভয়, হয়ত আমি বিশ্বকাপের দলে থাকব না। কারণ এটা আমার একটা স্বপ্ন। আমি বিশ্বকাপে থাকতে চাই এবং ব্রাজিলকে ষষ্ঠ শিরোপা জিততে সহায়তা করতে চাই।”
আরও পড়ুন
ব্রাজিলকে গুঁড়িয়ে রাফিনিয়াকে একহাত নিলেন দে পল-পারেদেস |
![]() |
ব্রাজিলের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজন হলেও বিতর্কের জন্ম দিয়ে রোমারিও বাদ পড়েন ১৯৯৮ বিশ্বকাপ থেকে। সেটা ছিল অবশ্য তার ক্যারিয়ারের শেষের দিকে। তবে এন্দ্রিকের চিত্রটা ভিন্ন। এই মৌসুমে রিয়ালের হয়ে যে নিজেকে প্রমাণের সুযোগই পাচ্ছেন না তরুণ এই ফরোয়ার্ড। ২৮ ম্যাচে করেছেন ৬ গোল, খেলেছেন মাত্র ৪৯৪ মিনিট।
এন্দ্রিকের আশা, অল্প সুযোগেই বাজিমাত করতে পারবেন তিনি। “আপনিও এর মধ্য দিয়েও গেছেন, আমার বাবা এমনকি আমাকে বলেছিলেন যে, আপনি (১৯৯৮) বিশ্বকাপে খেলার আশা করলেও দলে আর ডাক পাননি। তাই আমার এই ভয়টা আছে। অবশ্যই এটা কঠিন কাজ, বিশ্বের বড় ক্লাবে থাকা, সেরা খেলোয়াড়দের সাথে খেলা… আপনি সবসময় খেলার সুযোগ পেতে পারেন না। তবে জাতীয় দলে যখনই ডাক পাই, আমি নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করি।”
নিরাপত্তার কারণে নিজেদের ঘরের মাঠে খেলার বাস্তবতা নেই নিকট ভবিষ্যতে। লম্বা সময়ের জন্য তাই দেশের বাইরে হোম ভেন্যু বেছে নিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি করেছে আবু ধাবি ক্রিকেট অ্যান্ড স্পোর্টস হাবের (এডিসিএসএইচ) সাথে। ফলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের হবে দেশটির সব ধরনের খেলা।
চুক্তি অনুযায়ী, আফগানিস্তান এ এবং জাতীয় বয়সভিত্তিক ম্যাচের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হোস্ট হিসেবে রাখবে এবং অনুশীলন সুযোগ-সুবিধা পাবে আবুধাবিতে। আফগানিস্তান জাতীয় দলের দ্বিপাক্ষিক সব সিরিজও হবে এখানেই।
এসিবি, এডিসিএসএইচ, এবং আবুধাবি স্পোর্টস কাউন্সিলের (এডিএসসি) এর মধ্যে আলোচনার পরে এই ঘোষণাটি এসেছে, যেখানে তিন পক্ষ মিলে ‘বিশ্ব মঞ্চে আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের জন্য ক্রিকেটের সুযোগগুলো সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি’ নিশ্চিত করেছে।’
আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কোনো দলই সেখানে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি। ফলে লম্বা সময় ধরে আফগানিস্তান জাতীয় দল তাদের হোম ভেন্যু হিসেবে ভারতে ব্যবহার করেছে- দেরাদুন, লখনউ এবং গ্রেটার নইডাকে। পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতেও খেলেছে দ্বিপাক্ষিক হোম সিরিজ।
ব্রাজিলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কঠিন সময় পার করছেন দরিভাল জুনিয়র। তার কোচিংয়ে সেলেসাওরা যে ফুটবল খেলছে, তা মন ভরাতে পারছে না সমর্থকদের। ফলে পারফরম্যান্স একটু খারাপ হলেই ধেয়ে আসছে তীব্র সমালোচনা। ভালো করলেও আবার মিলছে না প্রশংসা। হতাশ দরিভাল মনে করেন, তিনি যাই করুন না কেন, একদল লোক অপেক্ষায় থাকে কেবল সমালোচনার করার দিকেই।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের কোচ হন দরিভাল। তার অধীনে গত বছরের কোপা আমেরিকায় শেষ আট থেকে বিদায় নেয় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সব মিলিয়ে তার সময়ে ১৫ ম্যাচের মধ্যে সাতটি ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে ব্রাজিল। ড্র ৬টি আর হার দুটিতে। ফলে দেশটিতে দরভালের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমাগতই উঠছে প্রশ্ন।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে ৬২ বছর বয়সী এই কোচ একহাত নিয়েছেন সমালোচকদের।
“আমরা এমন একটি দেশে বাস করি, যারা স্রেফ সমালোচনা করতে পছন্দ করে। এটা হতাশাজনক, তবে আমার কাছে ব্যাপারটা এমনই মনে হয়। আমরা এতোটাই সমালোচনা করতে পছন্দ করি যে আমরা প্রাপ্য সম্মানটাও কম দেই। তবে সময় সবাইকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যায়।”
দরিভাল কোচ হওয়ার আগে থেকেই ছন্দপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল ব্রাজিল। তিনি কোচ হওয়ার পর চিত্র বদলে যাওয়ার আশা ছিল সমর্থকদের। তবে সেটা আর হয়নি। কিছুটা সময় আগেও দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইয়ে ব্রাজিলের অবস্থান ছিল নাজুক। এখন তিন নম্বরে থাকলেও দলের খেলায় নেই অধারাবাহিকতা। উরুগুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয় ধরা দিয়েছে ৯৯তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলে।
দরিভাল অবশ্য মনে করছেন, তার কোচিংয়ে ভালোই করছে ব্রাজিল।
“আমি বুঝতে পারি যে ফুটবল কীভাবে কাজ করে, আর আমি চাপের মধ্যে থাকার চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করি। আমি কঠোর পরিশ্রম, নিবেদন, সম্মান এবং স্থিরতায় বিশ্বাস করি। আমি ১৫ টি ম্যাচ ধরে জাতীয় দলের দায়িত্বে আছি। তাই আপনি আমাকে স্রেফ এই সময়ের মধ্যে আমার কাজের জন্যই আমাকে দায়বদ্ধ রাখতে পারেন।”