
১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে নরওয়ে। তাদের জন্য কাজটা এতটাই সহজ যে ইতালির বিপক্ষে হার, জিত কিংবা ড্রয়ে কোনো সমস্যা নেই; কেবল ৯ গোল বা তার বেশি ব্যবধানে না হারলেই হয়।
ইতালি এই মুহূর্তে ঠিক তিন পয়েন্ট পেছনে টেবিলের শীর্ষে থাকা নরওয়ের। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে খেলা ৭ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জাল ৩৩ বার কাঁপিয়ে নরওয়ে গোল হজম করেছে মাত্র ৪টি।
তাই নরওয়ের জালে ৯ গোল দিয়ে ম্যাচ জেতা কঠিন থেকে কঠিনতর হবে ইতালির জন্য। কেননা সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে আজ ৯ গোলের ব্যবধানেই জিততে হবে চারবারের বিশ্বকাপজয়ীদের। যা এক প্রকার অসম্ভবই বটে।
শেষ পর্যন্ত এমনটা হলে ইতালিকে খেলতে হবে বিশ্বকাপ প্লে-অফ। যেখানে তারা সুইডেনের কাছে হেরে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপ এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার কাছে হেরে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ খেলতে পারেনি। এবারও সেই প্লে-অফের পরীক্ষা দিতে হতে পারে ইতালিকে।
No posts available.
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ এম
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১৬ এম

ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনও ঠিকঠাক পর্তুগিজ ভাষা ঠাউরে উঠতে পারেননি কার্লো আনচেলত্তি। তবে ব্রাজিলের ফুটবলের ভাষা অনেকটাই রপ্ত করে ফেলেছেন ইতালিয়ান কোচ। এরই মধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপের মাস্টার প্ল্যান সাজিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মাস ছয়েক আগে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন আনচেলত্তি। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করার পাশাপাশি রক্ষণেও তিনি দিয়েছেন বাড়তি মনোযোগ।
তার কোচিংয়ে খেলা প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছিল ব্রাজিল। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যেন অন্যরকম এক সতর্কবার্তাই পেয়েছেন আনচেলত্তি। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা।
আরও পড়ুন
| স্কালোনির কোচিংয়ে স্বপ্নপূরণ আর্জেন্টিনার ৫৯ ফুটবলারের |
|
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আনচেলত্তির কোচিংয়ে সাত ম্যাচের চারটি জিতেছে ব্রাজিল। ড্র হয়েছে এক ম্যাচ। আর তারা হেরে গেছে বাকি দুই ম্যাচ। যেখানে ১২ গোল করেছে ব্রাজিল। বিপরীতে হজম করেছে শুধু ৪ গোল।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য রক্ষণ জমাট রাখার পথেই হাঁটতে চান আনচেলত্তি। সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই জোর দিয়ে বলেছেন ৬৬ বছর বয়সী ইতালিয়ান কোচ।
“ব্রাজিলের সবশেষ বিশ্বকাপ জয়ের আসরগুলোতে রক্ষণভাগের অনেক ভূমিকা ছিল। সেই দলগুলোতে প্রতিভাধর অনেকে ছিলেন, যারা খেলা উপভোগ করতেন। একইসঙ্গে তারা এটিও নিশ্চিত করতেন যেন রক্ষণ কোনোভাবে উন্মুক্ত না হয়ে যায়।”
“১৯৯৪ বিশ্বকাপের কথা আমার মনে আছে। দুজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, পেছন দিক একদম জমাট আর সামনে বেবেতো ও রোমারিও ছিলেন পার্থক্য গড়ার জন্য। বিশ্বকাপের জন্য আমি এমনটাই ভাবছি। শক্ত রক্ষণভাগ থাকলে কোয়ালিটি খেলোয়াড়রা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।”
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০২ সালের পর শিরোপা জিততে পারেনি ব্রাজিল। আগামী বছরও যদি ব্যর্থ হয় তারা, তাহলে বিশ্বকাপখরা বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ বছরে! যা নিশ্চিতভাবেই হতে দিতে চান না আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন
| উড়তে থাকা সেনাগালকে থামিয়ে ব্রাজিলের প্রতিশোধ |
|
সেটি করার জন্য রক্ষণে জোর দিতে চান তিনি। তাই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সেন্টার-ব্যাক খেললেও, ব্রাজিল দলে এডেন মিলিতাওকে রাইট-ব্যাক হিসেবে খেলানোর পরিকল্পনা করেছেন আনচেলত্তি। সামনের দিনগুলোতে নির্ভরযোগ ফুল-ব্যাক খোঁজার মিশন চালু রাখবেন তিনি।
“অন্যান্য রাইট-ব্যাকের চেয়ে মিলিতাওয়ের ধরন কিছুটা আলাদা। তার কাছ থেকে আমার কিছুটা ভিন্ন চাওয়া থাকবে। রক্ষণে আরও শক্তি বাড়াতে আমরা বিশ্বকাপে তাকে এভাবে ব্যবহার করতে পারি। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩ গোল হজম করে আমরা ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। সেসব জায়গায় উন্নতির চেষ্টা থাকবে।”

আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফলতম কোচ লিওনেল স্কালোনি। তার কোচিংয়ে এরই মধ্যে একটি বিশ্বকাপ, দুইটি কোপা আমেরিকা ও একটি ফিনালিসিমা জিতে নিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। আর এই সাফল্য পাওয়ার পথে ৫৯ জন ফুটবলারকে তিনি দিয়েছেন স্বপ্নপূরণের স্বাদ।
যে কোনো ফুটবলারের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন থাকে নিজ দেশের জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করা। স্কালোনির কোচিংয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ৫৯ জন ফুটবলারের। আর্জেন্টিনার প্রধান কোচ হিসেবে সাত বছরে ৫৯ জন ফুটবলারের অভিষেক করিয়েছেন স্কালোনি।
প্রায় নিয়মিতই প্রীতি ম্যাচ বা তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ পেলেই নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ পথে হাঁটেন স্কালোনি। তার এই পরিকল্পনার কারণেই মূলত গত কয়েক বছরে কখনও তেমন সংকটে পড়তে হয়নি আর্জেন্টিনার। কারণ সবসময়ই প্রস্তুত থাকেন কেউ না কেউ।
অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সবশেষ ম্যাচে প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন কেভিন ম্যাক-অ্যালিস্টার, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি, হোয়াকিন পানিচেল্লি ও ম্যাক্সিমো পেরোনে। এর আগে পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে ৬-০ গোলে জেতা ম্যাচে অভিষেক হয় ফাকুন্দো ক্যাম্বেসের।
২০১৮ সালে গুয়াতেমালার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে কোচিং অধ্যায় শুরু করেন স্কালোনি। সেদিন জেরোনিমো রুলি, রেনজো সারাভিয়া, এজেকুয়েল পালাসিওস, গনসালো মার্তিনেস, জিওভানি সিমেওনে, ওয়াল্টার কানেমান, আলান ফ্রাঙ্কো, মাতিয়াস ভার্গাস, ফ্রাঙ্কো সার্ভি, ফ্রাঙ্কো ভাসকেসের অভিষেক হয়।
গত বছর অসংখ্য ফুটবলারের অভিষেক করান স্কালোনি। কোপা আমেরিকার আগে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম খেলেন ওয়াল্টার বেনিতেজ, ভ্যালেন্তিন কারবোনি ও ভ্যালেন্তিন বারকো। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অভিষেক হয় আরও তিন জনের- ভ্যালেন্তিন ক্যাস্তেয়ানোস, নিকোলাস পাজ, জুলিয়ানো সিমেওনে।
সাত বছরের এই অধ্যায়ে স্কালোনির সবচেয়ে বড় সাফল্য নিশ্চিতভাবেই ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জয়। ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলা শুরুর একাদশের সাতজনেরই অভিষেক হয় স্কালোনির কোচিংয়ে।
সব মিলিয়ে কাতার বিশ্বকাপের দলে থাকা আর্জেন্টিনার ২৬ ফুটবলারের মধ্যে ১৩ জনই তাদের যাত্রা শুরু করেন স্কালোনির কোচিংয়ে। তারা হলেন- রদ্রিগো ডি পল, হুয়ান ফয়েথ, লিসান্দ্রো মার্তিনেস, গনসালো মন্তিয়েল, অ্যালেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, নাহুয়েল মোলিনা, এনজো ফার্নান্দেস ও থিয়াগো আলমাদা।
স্কালোনির কোচিংয়ে অভিষেক হওয়া ৫৯ ফুটবলার
জেরোনিমো রুলি, রেনজো সারাভিয়া, এজেকুয়েল পালাসিওস, গনসালো মার্তিনেস, জিওভানি সিমেওনে, ওয়াল্টার কানেমান, আলান ফ্রাঙ্কো, মাতিয়াস ভার্গাস, ফ্রাঙ্কো সার্ভি, ফ্রাঙ্কো ভাসকেস, সান্তিয়াগো আস্কাসিবার, রদ্রিগো বাত্তালিয়া, রদ্রিগো ডি পল, হুয়ান ফয়েথ, গাস্তোন গিমেনেস, পাওলো গাসানিগা, লিসান্দ্রো মার্তিনেস, গনসালো মন্তিয়েল, হোয়াইট সানডে, মাতিয়াস সুয়ারেস, এস্তেবান আন্দ্রাদা, ইভান মারকোন, মাতিয়াস জারাচো, হুয়ান মুসলো, লুকাস মার্তিনেজ কুয়ার্তা, নিকোলাস দোমিঙ্গেস, আলেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার, লেওনার্দো বালার্দি, আদোলফো গাইচ, লুকাস ওকাম্পোস, নিকোলাস গনসালেস, ফাকুন্দো মেদিনা, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, হুলিয়ান আলভারেস, নাহুয়েল মোলিনা, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, লুকাস বোয়ে, মারকোস সেনেসি, থিয়াগো আলমাদা, নাহুয়েন পেরেস, এনজো ফার্নান্দেস, আলেহান্দ্রো গারনাচো, ফাকুন্দো বুয়োনানোর্তে, ভ্যালেন্তিন বারকো, ওয়াল্টার বেনিতেজ, ভ্যালেন্তিন কারবোনি, ভ্যালেন্তিন ক্যাস্তেয়ানোস, নিকোলাস পাজ, জুলিয়ানো সিমেওনে, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো, হোসে মানুয়েল লোপেজ, লাউতারো রিভেরো, হানিবাল মোরেনো, ফাকুন্দো কামবেসেস, কেভিন ম্যাক-অ্যালিস্টার, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি, হোয়াকিন পানিচেল্লি, ম্যাক্সিমো পেরোনে।

জর্জিয়ার বিপক্ষে জয় আর ওদিকে তুরস্কের হারেই বিশ্বকাপে পৌঁছে যেত স্পেন। নিজেদের কাজটা ভালোভাবেই করেছে লা রোজারা। তবে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে তুরস্কের ২-০ গোলের জয়ে খানিকটা বিলম্বই হলো তাদের। ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বলতে গেলে আর এক কদম দূরে আছে স্পেন।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্জিয়াকে আজ ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন। বড় জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন মিকেল ওয়ারজাবাল। একবার করে বল জালে পাঠিয়েছেন মার্টিন জুবিমেন্দি ও ফেরান তরেস।
এই জয়ে গ্রুপ ‘ই’ থেকে পাঁচ ম্যাচের সবক’টিতে জিতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে স্পেন। তিন পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে তুরস্ক। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে তিনে জর্জিয়া।
আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা লামিনে ইয়ামালকে ছাড়াই মাঠে নামে স্পেন। তবে দলের প্রধান তারকাকে ছাড়াই র্যাঙ্কিংয়ে ৭০ নম্বর দলকে উড়িয়ে দিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা স্পেন। ৬১ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৪টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। আর ছয়টি শট নেওয়া জর্জিয়া গোলমুখে রাখে দুটি শট।
১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে নেন ওয়ালজাবাল। রিয়াল সোসিয়েদাদের ফরোয়ার্ডের গোলের ১১ মিনিট পর ব্যবধান ২-০ করেন জুবিমেন্দি। ফাবিয়ান রুইজের নিখুঁত পাস থেকে বল জালে জড়ান আর্সেনালের ২৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
৩৪ মিনিটে আরেক দফা এগিয়ে যায় স্পেন। এবার গোলদাতার নাম ফেরান তরেস। আক্রমনভাগের বাঁ দিক থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে বলটি গোলের সামনে দিয়ে পাঠান ওয়ারজাবাল। বল পান তরেস, লক্ষ্যে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬৩ মিনিটে শেষ গোলটি করে স্পেন। নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করার সঙ্গে দলের হালি গোলও পূরণ করেন তিনি।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে স্পেনের পরের ম্যাচ তুরস্কের বিপক্ষে। আগামী ১৮ নভেম্বর ম্যাচটিতে হারলেও বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে তারা। গোল ব্যবধানে অনেকটাই পিছিয়ে থাকায় স্পেনের বিপক্ষে জয় পেলেও প্লে অফ খেলতে হবে তুরস্ককে।

সবশেষ জাপানের বিপক্ষে হারের পর দলের সামর্থ্য নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে নিন্দুকেরা। তবে এই ব্রাজিল যে বদলে যাওয়া এক দল সেটা আবার মাঠেই প্রমাণ দিল তারা। একের পর এক আক্রমণের ঢেউয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ত্রাস ছড়াতে থাকেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-রদ্রিগোরা। জয়ের ব্যবধানটা হতে পারত আরো বড়। এরপরও এই ব্রাজিল দলকে নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন সমর্থকরা।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে আজ সেনেগালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে দারুণ এক পারফরম্যান্সই উপহার দিল ব্রাজিল। ঘরের মাঠে আফ্রিকার এই দেশটির বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলোত্তির দল। ব্রাজিলের আক্রমণভাগের ভরসার প্রতীক হয়ে যাওয়া এস্তেভাওয়ের নৈপুণ্যে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ানো গোলটি আসে কাসেমিরোর পা থেকে।
সেনেগালের বিপক্ষে ব্রাজিলের এটি প্রথম জয়। আফ্রিকার দেশটির টানা ২৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার যাত্রাও ইতি টেনে দিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এর আগে সবশেষ ২০২৩ সালে প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের কাছে হালি খেয়ে ৪-২ গোলে হেরেছিল তারা। ২০১৯ সালে হয়েছিল ১-১ গোলের ড্র। তাতে এই জয় প্রতিশোধও নেওয়া হয়ে গেল সেলেসাওদের।
সেনেগালের বিপক্ষে কেবল বল দখলের লড়াইয়েই পিছিয়ে ছিল ব্রাজিল। র্যাঙ্কিংয়ে ১৮ নম্বর দেশটির বিপক্ষে গোলের সুযোগ তৈরি, শট নেওয়া কিংবা গোলমুখে শট রাখায় দাপট ছিল সেলেসাওদেরই। ৪৮ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রেখে ১৪টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে ব্রাজিল। বিপরীতে ১১টি শট নেয় মাত্র একবারই লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে সফরকারী দল।
ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই সেনেগালের রক্ষণভাগকে তটস্থ রাখে ব্রাজিল। ভিনিসিয়ুসদের নেওয়া কিছু শট গোলপোস্টের বাইরে, কিছু সেভ করেন সেনেগালের গোলকিপার। ২৮ মিনিটে সফলতা আসে চেলসির উইঙ্গার এস্তেভাওয়ের সৌজন্যে।
আক্রমণটা শুরু হয় কাসেমিরোকে দিয়ে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডারের পাস প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে দিক বদলায়, বল চলে যায় বক্সের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা এস্তেভাওয়ের কাছে। দৌড়ে এসে প্রথম ছোঁয়াতেই যে শটটা নিল, তা দারুণভাবে বাঁক খেয়ে জালের কোণায় গিয়ে জড়ায়।
মিনিট সাতেক পরই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ব্রাজিল। রদ্রিগোর ফ্রি-কিক থেকে বল পান কাসেমিরো। সেনেগালের ডিফেন্ডাররা এই মিডফিল্ডারকে ঠিকঠাক মার্ক করে রাখতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্দন্ত এক বাঁকানো শটে জাল কাঁপান কাসেমিরো।
প্রথামারর্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে তেমন একটা গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। লক্ষ্যে রাখতে পারেনি দুই দলই। ৫১ মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল সেনেগাল। স্বাগতিকতের গোলকিপার এডারসনের ভুলে গোল পেতে পারত সফরকারীরা। তবে সেনেগালের এভার্টনের উইঙ্গার ইলিম্যান নদিয়ে ঠিকঠাক শটই নিতে ব্যর্থ হন।
দারুণ এই জয়ের পর আগামী ১৮ নভেম্বর তিউনিসিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল

ফুটবল ক্যারিয়ারে ভুল যাওয়ার মতো একটি রাত ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। রাগ নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে দলকে এখন অনেকটা দলকে বিপদেই ফেলে দিয়েছেন আল নাসরের মহাতারকা। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে লাল কার্ড দেখে এখন নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় আছেন রোনালদো। সেই ঘটনায় নিজের ভুল নাকি বুঝতে পেরেছেন তিনি।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে আগামীকাল আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। এই ম্যাচে জয় কিংবা ড্র করলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে রবার্তো মার্টিনেজের দল। তবে পঁচা শামুকে পা কেঁটে হারলেই বিপদে পড়তে হতে পারে তাদের। অন্য ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে আয়াল্যান্ডের জয় পেলেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে চলে যাবে আইরিশরা। তাতে প্লে অফের বাঁধা উতরে বিশ্বকাপ খেলতে হবে পর্তুগালেকে।
মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে রোনালদোকে পাচ্ছে না পর্তুগাল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের শুরুর একাধিক ম্যাচেও হয়তো ‘সিআর সেভেনকে’ ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে পর্তুগালকে। প্রতিপক্ষের ফুটবলারকে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে দলকে বিপদেই ফেলে দিলেন তিনি।
আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে পর্তুগালের মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ বলছেন, নিজের ভুল হয়েছে বুঝতে পারছেন রোনালদো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেন,
‘ম্যাচের উত্তাপ, ওই মুহূর্তের আবেগ, ইতিবাচক ফল না পাওয়ার হতাশা—ফুটবলে এমন ঘটনা ঘটেই। এমন এক মুহূর্তে ক্রিস (রোনালদো) এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল যা তার জন্য বিপদ হয়ে আসে। অবশ্যই, সে জানে এটা সে করতে চায়নি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে। সে জানে সে ভুল করেছে, এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে, রোববার আমাদের সাহায্য করতে পারবে না।’
রবিবার পর্তুগাল গ্রুপ এফ–এর ষষ্ঠ ম্যাচে আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হবে। আর্মেনিয়া ইতোমধ্যেই বাদ পড়ে গেছে, আর পর্তুগাল ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ জিতলেই তাদের পথ অনেকটাই সহজ হবে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কোচ মার্টিনেজের রক্ষণভাগের ভুলগুলোই তাদের ভুগিয়েছে বলছেন ব্রুনো,
‘সবকিছু আমাদের পরিকল্পনা মতো হয়নি। আমরা খুব কম সুযোগ তৈরি করেছি কারণ ফাইনাল থার্ডে আমাদের খেলোয়াড় ছিল কম। আমার মনে হয় আমাদের বিল্ড-আপ খুব গভীর থেকে শুরু হচ্ছিল এবং আয়ারল্যান্ডের রক্ষণের জন্য তা যথেষ্ট ধীর ছিল। আক্রমণে উঠার ক্ষেত্রে আমাদের আরও কৌশলী হওয়া উচিত ছিল।’
প্রতিপক্ষ হিসেবে আর্মেনিয়াকে নিয়ে ব্রুনো বলেন,
‘আমরা আগেও আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হয়েছি। তারা আক্রমণে খুবই গতিময়, মাঝমাঠে বেশ মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে, খুব আগ্রাসী দল। তারা আমাদের কী ধরনের সমস্যায় ফেলতে পারে, আমরা জানি।’