১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৮ এম

অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। হার-জিতে লাজ বা শঙ্কা তৈরির সুযোগ ছিল না। তবে এটি ছিল আর্জেন্টিনার বছরের শেষ ম্যাচ। তাই স্বাগতিকদের বিন্দুমাত্র ছাড় না দিয়ে ২–০ গোলে জিতেছে তারা। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল দুটি করেন লিওনেল মেসি ও লাউতারো মার্তিনেজ।
বর্তমানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের
৮৯ নম্বর দলটির বিপক্ষে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার খেলল আর্জেন্টিনা। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের
আগে প্রথম দেখায়ও একই ব্যবধানে জিতেছিল তারা।
লুয়ান্ডার এস্তাদিও ১১ দে নভেম্ব্রোতে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার ম্যাচে আধিপত্য ছিল আর্জেন্টিনার। স্বাগতিকদের নিজেদের মাঠেই ঘোরতর চাপে রেখেছে সফরকারীরা। প্রায় ৬৬ শতাংশ বল দখলে রাখে তারা। অন-টার্গেটে ৩টি শট নিয়ে দুটি থেকেই গোল আদায় করে আর্জেন্টিনা।
এদিন শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে আর্জেন্টিনা। ২১ মিনিটে মেসি অপ্রত্যাশিতভাবে একটি সহজ সুযোগ মিস করেন। মার্তিনেজের দুর্দান্ত পাসে অ্যাঙ্গোলার রক্ষণভাগ ভেদ করে গোলের সুযোগ পান মেসি, কিন্তু তাঁর শটটি দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিকদের গোলকিপার পেদ্রো মার্কেস!
৩৬ মিনিটে বাঁ দিক থেকে আক্রমণে যায় স্বাগতিকরা। তবে আর্জেন্টিনার গোলকিপার রুলি আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন। বলটি গ্লাভসবন্দী করে নেন তিনি।
৩৮ মিনিটে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন মেসি। বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যান থিয়াগো আলমাদা। তাঁর দুর্দান্ত কাটব্যাকে মেসির কাছে বল যায়, তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় মেসির শটটি।
৩৯ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান মেসি। পা ছোঁয়ালেই বিপদ ঘটতে পারত। ভাগ্য এবারও তাঁর বিপক্ষে থাকে। কয়েক সেকেন্ড পরই কর্নার কিক নেন ইন্টার মিয়ামির অধিনায়ক; তাঁর বাঁ-পায়ের শট সরাসরি গ্লাভসবন্দী করেন পেদ্রো মার্কেস।
তিন মিনিট পর মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দেন লাউতারো মার্তিনেজ। মিডফিল্ড থেকে বল আসে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের কাছে। প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার ফ্রেডির সঙ্গে বোঝাপড়া করে ডি-বক্সের দিকে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। সেখান থেকে ডান পায়ে নিশানা ভেদ করেন ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ৪৭ মিনিটে শোধের লক্ষ্য পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। ফ্রেডি একাই বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। কিন্তু রোমেরো ও নিকোলাস তালিয়াফিকোর বাঁধায় থেমে যান। হাল না ছেড়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে এগিয়ে বারের কাছে পৌঁছালেও বিধি বাম—সমতায় ফিরতে পারেনি অ্যাঙ্গোলা।
৮১ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। মেসি বল নিয়ে একাই বক্সে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে কাটব্যাকে বল দেন লাউতারোকে। লাউতারো আবার পাস ফেরত দেন মেসিকে, আর সেখান থেকেই গোল আদায় করেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তারকা।
৮৬ মিনিটে মাঠ ছাড়েন মেসি। বদলি হিসেবে নামেন পানিচেলি। এর আগে মিনিটখানেক আগেই বদলি করে তোলা হয় ম্যাক অ্যালিস্টার ও লাউতারো মার্তিনেজকে। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি বছর শেষ করে ২০২৬ সালে পা দেবার প্রস্তুতি সেরে রাখল আর্জেন্টিনা।
No posts available.
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৫:৪০ পিএম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৫ পিএম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম

ভিলেমস্টাডের শহরতলির কুয়াশাচ্ছন্ন একটি সকাল। কুরাসাওয়ের ঐতিহ্যবাহী একটি পরিবার কফির আড্ডায় মগ্ন। ঘুমকাতুরে পরিবেশ, বাতাসে মৃদু সুগন্ধ। পাশের বাড়ির খুঁটিতে উড়ছিল লাল-নীল মিশেলে দেশটির জাতীয় পতাকা। একটি মনোমুগ্ধকর আবহ বটে!
পরিবারের আলোচনায়—ফুটবল। দুঃখের দিন গলিয়ে সুদিনে ফেরা ফুটবল। ১৯২৪ সালের নিভু নিভু জ্বলা ফুটবল ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কানাগলি পেরিয়ে সমতল ভূমিতে। আর মাত্র একটি পয়েন্ট মিললেই স্বপ্ন আরও প্রসারিত হবে—ক্যারিবিয়ান সাগরের মাঝখানে, ভেনেজুয়েলার উত্তরে প্রায় দেড় লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশের।
গতকালই বারমুডাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কুরাসাও। গ্রুপে ৫ ম্যাচে তিন জয় দিয়ে ১১ পয়েন্ট দলটির। পরবর্তীতে জ্যামাইকাকে পরাজিত করা অথবা ন্যূনতম ড্র হলেই স্বপ্নের উপাখ্যান—সরাসরি বিশ্বকাপ টিকিট। মূলত এ নিয়েই উৎসবের আমেজ এখনও ফিফার বড় কোনো টুর্নামেন্ট না খেলা দেশটিতে।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কুরাসাওয়ের সাফল্য:
কনকাকাফ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কুরাসাও প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর বিপক্ষে। ম্যাচটি ছিল গোলশূন্য ড্র। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা বারমুডার বিপক্ষে ৩-২ এবং তৃতীয় ম্যাচে জ্যামাইকার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয় পায়।
প্রথম ম্যাচের মতো চতুর্থ ম্যাচটিও হয় ড্র। তবে এবার দুই দলই একটি করে গোল হজম করে। পঞ্চম ম্যাচে বারমুডাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয়। তাদের পরবর্তী এবং বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ জ্যামাইকা। দেশটির বিপক্ষে এর আগের ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল কুরাসাও।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কুরাসাওয়ের পয়েন্ট ১১। দ্বিতীয় স্থানে জ্যামাইকার ১০। শেষ ম্যাচে যে বা যারা জিতবে, তারাই টিকিট পাবে বিশ্বকাপে। সে ক্ষেত্রে ১৯ নভেম্বরের ম্যাচটি ডু-অর-ডাই। হারলেও কোয়ার্টার খেলার সুযোগ আছে।
কুরাসাওয়ের ইতিহাস ও ফুটবল যাত্রা:
১৮১৫ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত কুরাসাও অ্যান্ড ডিপেনডেন্সিস কলোনির অংশ ছিল। এরপর ১৯৫৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তারা ছিল নেদারল্যান্ডস এন্টিলিসের অংশ। ২০১০ সালের অক্টোবরে ডাচ এন্টিলিস বিলুপ্তির পর থেকে কুরাসাও রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়। বর্তমানে তারা মূলত কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অন্তর্গত স্বায়ত্তশাসিত একটি রাষ্ট্র।
কুরাসাওয়ের আধুনিক ফুটবল যাত্রা ২০১১ সালে। তবে টেরিটরি অব কুরাসাও ন্যাশনাল ফুটবল টিম নামে যাত্রা শুরু করে ১৯২৪ সালে। একই বছরে অভিষেক ম্যাচ খেলে প্রতিবেশি দেশ আরুবার বিপক্ষে।
২০১১ সালের মার্চে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে কুরাসাও। আগস্টে প্রথম ম্যাচ খেলে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে। ম্যাচটিতে ১-০ গোলে হেরে যায়।
হার দিয়ে শুরু হলেও ফুটবলে কুরাসাওয়ের যাত্রা দারুণ। খুব দ্রুত র্যাঙ্কিংয়েও উপরের দিকে উঠে আসে। বর্তমানে দলটির র্যাঙ্কিং ৮২।
পরাজয়েও ডরায় না কুরাসাও ফুটবল যোদ্ধারা:
ফুটবলের শুরুতে একের পর এক ধাক্কা। রাষ্ট্রীয় টানাপোড়ন, সঙ্গে ছিল গুছিয়ে উঠতে না পারার হতাশা। এরই মধ্যে ২০১৭ সালের ক্যারিবিয়ান কাপে ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জ্যামাইকাকে হারিয়ে চমক দেখায় দলটি। এবিসি’স টুর্নামেন্টেও ২০২১ ও ২০২২ সালে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৯ সালে কনকাকাফ নেশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালেও ওঠে তারা।
কুরাসাওয়ের যাত্রা এখানেই শেষ নয়। ২০২২ বিশ্বকাপের টিকিট না পেলেও বাছাই পর্বে ৬ ম্যাচে ৩টি জয়, ২টি ড্র এবং মাত্র ১টি হার হয়েছে।
কখনও হতাশ নয় কুরাসাও ফুটবলাররা:
আর্জেন্টিনার কাছে ৭-০ ব্যবধানে হারের পর কানাডার সঙ্গে ড্র। পরিস্থিতি যেমনই হোক, হতাশ নয় কুরাসাওয়ের ফুটবলাররা। বরং প্রতিপক্ষ কিংবা বড় দলের বিপক্ষে খেলতে পারাতেই তাদের আনন্দ। আর্জেন্টিনা বা লিওনেল মেসির সঙ্গে খেলতে পেরে যেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন দলটির গোলকিপার ইলয় রোম,
“সে সময়টা কঠিন ছিল। সে (মেসি) আমার বিরুদ্ধে গোল করেছে। তবে তার কিছু শটও আমি ঠেকিয়েছি। পরে সেও আমাকে বলেছে যে আমি কিছু ভালো সেভ করেছি। এটা আমার কাছে অনেক কিছু।”
কুরাসাওয়ের স্বপ্ন আঁকছেন যাঁরা:
জেরভেন কাস্টানিয়ার—২৯ বছর বয়সি কুরাসাওয়ের এই স্ট্রাইকার এখন পর্যন্ত ৫টি ম্যাচ খেলেছেন। গোল পেয়েছেন ৫টি। তিনি একাই দলকে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। ফলস নাইনের ভূমিকা ছাড়াও লেফট উইঙ্গে বেশ দক্ষ কাস্টানিয়ার।
কেনজি গরের নামও উল্লেখযোগ্য। এই লেফট উইঙ্গার এখন পর্যন্ত তিনটি গোল করেছেন। ফুটবল রেটিংয়েও উজ্জ্বল তিনি। এছাড়া দলের অভিজ্ঞ গোলকিপার রোম (৩৬) দীর্ঘ সময় ধরে কুরাসাওকে টেনে উপরে নিয়ে যাচ্ছেন।
১৯ নভেম্বর কুরাসাওয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে কী না জানা নেই। হয়তো হবে, নাও হতে পারে। তবে সকাল-সাঁঝ কিংবা ডিনার পার্টির আলোচনায় ওঠা ‘ফুটবল’ যে তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেছে, তা তাদের উচ্ছ্বাস দেখেই বুঝা যায়।

কিলিয়ান এমবাপে পার করেছেন স্বপ্নের এক রাত। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে ইউক্রেনকে ৪–০ গোলে হারিয়েছে ফ্রান্স। ফরাসিদের হয়ে জোড়া গোল করেন এমবাপে। তাতেই দারুণ এক মাইলস্টোন স্পর্শ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।
ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে বুধবার রাতে ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করার পর ৮৩তম মিনিটে আরেকটি গোল করেন এমবাপে। এই দুই গোলে ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছেন তিনি। ২৬ বছর বয়সী এই তারকা পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারে ৪০০ গোল।
এই বয়সে যেভাবে ছুটছেন তাতে মনে হচ্ছে লিওনেল মেসি ও রোনালদোকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। এমন অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রচেষ্টায় কোনো কমতি রাখতে চান না এমবাপে।
“ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ১ হাজার গোল? সেটি ছোঁয়া অবাস্তব। তবে অভাবনীয় কিছুর চেষ্টা করা যাক! আমাদের একটাই ক্যারিয়ার, চেষ্টা করে যেতে হবে।”
ইউক্রেনের বিপক্ষে এই জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করেছে ফ্রান্স। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘ডি’ থেকে পাঁচ ম্যাচে ৪ জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল। গোল ব্যবধানে সমান ৭ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে দুইয়ে ও তিনে থাকা আইসল্যান্ড ও ইউক্রেন প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল।
এমবাপে আরও বলেন,
“খুবই গর্বিত সেখানে (বিশ্বকাপে) জায়গা করে নিতে পেরে। এটাকে কখনোই হালকা করে দেখা উচিত নয়। এখন এটা হয়তো আমাদের জন্য খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তবে ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসে সবসময়ই ব্যাপারটি এমন ছিল না।”

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আয়ারল্যান্ডের কাছে ২–০ গোলে হেরেছে পর্তুগাল। এই ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম লাল কার্ড দেখেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ম্যাচ শেষে আয়ারল্যান্ড কোচ হেইমির হালগ্রিমসন এটিকে রোনালদোর ‘মূর্খতাপূর্ণ মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
ডাবলিনে গতকাল ম্যাচের ৬১ মিনিটে আইরিশ ডিফেন্ডার দারা ও’শিয়াকে কনুই দিয়ে আঘাত করে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখেন রোনালদো। পরে রেফারি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। মাঠ ছাড়ার সময় রোনালদো ও হেইমিরের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য–বিনিময়ও হয়, যদিও শেষে দুজনই করমর্দন করেন।
ম্যাচ শেষে আইরিশ কোচ হেইমির বলেন,
‘রোনালদো আমাকে বলেছে, আমি নাকি রেফারির ওপর চাপ দিচ্ছিলাম। আসলে এটা পুরোই তার কাজের ফল। তার ওই আচরণই তাকে লাল কার্ড দিয়েছে, আমার কারণে কিছু হয়নি। এটা তার এক মূর্খতাপূর্ণ মুহূর্ত।’
এই ম্যাচে একটি বিরল রেকর্ড হয়েছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আভিভা স্টেডিয়ামে এটি টানা তৃতীয় সরাসরি লাল কার্ড। এর আগে হাঙ্গেরির রোল্যান্ড সালাই ও আর্মেনিয়ার টাইগ্রান বারসেঘিয়ান একই মাঠে লাল কার্ড দেখেন। এ বিষয়ে হেইমির মনে করেন দর্শকদের পরিবেশই প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারে,
‘এখানকার দর্শকদের পরিবেশই হয়তো প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে। এমন আবহ অনেক জায়গায় নেই।’
রোনালদোর লাল কার্ড দেখাকে অপ্রত্যাশিত মনে করেন পর্তুগাল কোচ রবার্তো মার্তিনেজ,
‘২২৬ ম্যাচে কখনও লাল কার্ড না পাওয়া একজন খেলোয়াড়। আজকের সিদ্ধান্তটা একটু কঠিন ছিল। তাকে পুরো ম্যাচজুড়ে ধরা, টানা, ঠেলাঠেলি করা হয়েছে। ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলে কনুই মনে হলেও এটা পুরো শরীরের ধাক্কা।’
মার্তিনেজের অভিযোগ, আইরিশ কোচ রেফারিদের ওপর প্রভাব ফেলতে চাইছিলেন।
‘ওদের কোচ রেফারিকে প্রভাবিত করা নিয়ে মন্তব্য করছিলেন। তারপরই এমন নাটকীয়ভাবে ডিফেন্ডার পড়ে গেল। এতে আমাদের খারাপ লেগেছে।’
আয়ারল্যান্ডের কাছে হারলেও এখনো বিশ্বকাপে সরাসরি কোয়ালিফাই করার সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি পর্তুগালের। নিজেদের শেষ ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা আর্মেনিয়াকে হারাতে পারলেই সরাসরি বিশ্বকাপে পৌঁছে যাবে পর্তুগাল। তবে লাল কার্ড দেখায় রবিবার আর্মেনিয়ার বিপক্ষে দেখা যাবে না পর্তুগালের অধিনায়ক রোনালদোকে।

মৌসুমের শেষ আন্তর্জাতিক বিরতি, আজ আফ্রিকার মাটিতে বছরের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে আর্জেন্টিনা। লুয়ান্ডার এস্তাদিও ১১ দে নভেমব্রোতে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে মাঠে নামবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজন করা হচ্ছে ম্যাচটি। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদন, ম্যাচের শুরু থেকে খেলবেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি জয়ে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে আর্জেন্টিনা। ভেনেজুয়েলাকে ১–০ এবং পুয়ের্তো রিকোকে ৬–০ গোলে উড়িয়ে দেয় লিওনেল স্কালোনির দল। তবে অ্যাঙ্গোলার মাঠে নামার আগে স্কালোনি পাচ্ছেন না বেশ কয়েকজন মূল খেলোয়াড়কে।
এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত গোলরক্ষকদের সুযোগ দিতে। হাঁটুর চোটে নেই মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। হলুদজ্বরের বাধ্যতামূলক টিকা না নেওয়ায় যেতে পারেননি হুলিয়ান আলভারেজ, নাহুয়েল মোলিনা ও জিলিয়ানো সিমিওনে। দলে চমক হিসেবে ডাক পেয়েছেন জোয়াকিন পানিচেল্লি, জিয়ানলুকা প্রেস্তিয়ান্নি, ম্যাক্সিমো পেরোনে আর ফিরেছেন ভ্যালেন্টিন বারকো।
আরও পড়ুন
| বার্সেলোনার কিংবদন্তি মেসির সম্মানে ভাস্কর্য হবে ক্যাম্প ন্যুতে |
|
আর্জেন্টিনার লিগে এই সপ্তাহেই নির্ধারিত হচ্ছে প্লে-অফ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জায়গা— তাই দেশের লিগের খেলোয়াড়দের এই দফায় ডাকেননি স্কালোনি। এই ম্যাচেই প্রথমবার মাঠে দেখা যাবে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য আর্জেন্টিনার নতুন জার্সি। কয়েক দিন আগেই উন্মোচিত হয়েছে সেই জার্সি, যার অভিষেক হতে যাচ্ছে লুয়ান্ডাতেই।
অ্যাঙ্গোলায় যাওয়ার আগে পুরো সপ্তাহ স্পেনের এলচেতে অনুশীলন করেছে দল। বৃহস্পতিবার ম্যানুয়েল মার্তিনেজ ভালেরো স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার ওপেন প্র্যাকটিস দেখতে জড়ো হন ২০ হাজারের বেশি দর্শক। অনুশীলন শেষে এলচে ক্লাবের অংশীদার ক্রিস্তিয়ান ব্রাগারনিক বিশেষভাবে উপহার দেন ক্লাবের ‘১০ নম্বর’ জার্সি লিওনেল মেসির হাতে।
অন্যদিকে অ্যাঙ্গোলা ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাই থেকেই ছিটকে গেছে। গ্রুপ ‘ডি’-তে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ হয়ে শেষ করেছে তারা। সামনে আর কোনো বড় টুর্নামেন্ট নেই— তাই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এই ম্যাচটি তাদের জন্য মর্যাদার লড়াই, আর নিজেদের নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগও।
আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য একাদশ
গোলরক্ষক: জেরোনিমো রুলি
রক্ষণ: হুয়ান ফয়থ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওতামেন্দি, নিকোলাস তাগলিয়াফিকো
মাঝমাঠ: রদ্রিগো দি পল, আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, জিওভানি লো সেলসো/নিকোলাস পাজ
আক্রমণ: লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্টিনেজ, থিয়াগো আলমাদা
কোচ: লিওনেল স্কালোনি
অ্যাঙ্গোলার সম্ভাব্য একাদশ
গোলরক্ষক: হুগো মার্কেস
রক্ষণ: ক্লিনটন মাথা, ডেভিড কার্মো, কিয়ালোন্ডা গ্যাসপার, তো কার্নেইরো
মাঝমাঠ: ফ্রেডি, বেনি মুকেন্দি, টিচার
আক্রমণ: জিটো লুভুম্বো, মাবুলুলু, চিকো বানজা
কোচ: পাত্রিস বোয়ামেল

সন্দেহাতীতভাবে বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। স্প্যানিশ ক্লাবটির হয়ে কতশত স্বরণীয় মুহূর্তের জন্ম দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা সে হিসেব করে কূল পাওয়া যাবে না। নিজেদের ইতিহাসের সেরা ফুটবলারকে চিরস্বরনীয় করে রাখতে ভাস্কর্য স্থাপন করবে বার্সা।
সম্প্রতি কাউকে ঘুণাক্ষরেও টের পেতে না দিয়ে ক্যাম্প ন্যুতে ঘরে যান মেসি। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে কোনো একদিন সাবেক ক্লাবে ফেরারও বার্তা দেন ইন্টার মায়ামির মহাতারকা। তবে আপাতত মেসির ফেরা অবাস্তাব বলেন বার্সেলোনার সভাপতি জোয়ান লাপার্তা। অবশ্য বার্সা কিংবদন্তিকে ক্যাম্প ন্যুতে ইতিহাসের সেরা শ্রদ্ধা জানানোর পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি।
বার্সার প্রধান স্টেডিয়াম ক্যাম্প ন্যু’এর সংস্কার কাজ প্রায়ই শেষ হয়ে এসেছে। বার্সেলোনা সভাপতি নিশ্চিত করেছেন ক্যাম্প ন্যু বাইরে লিওনেল মেসির একটি ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। লাপার্তা বলেন,
‘আমরা সকল কিউল (বার্সা সমর্থক) চাই, লিও মেসির একটি ভাস্কর্য স্পোটিফাই ক্যাম্প ন্যুতে থাকুক। আমরা এর ওপর কাজ করছি, এবং যদি মেসির পরিবার একমত হয়, ডিজাইন তৈরি হলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
লাপার্তা আরও যোগ করেন,
‘মেসি সবসময় বার্সার অংশ হয়ে থাকবেন। তিনি জানেন আমাদের দরজা সবসময় তার জন্য খোলা। আমরা তার প্রতি পূর্ণ সম্মান রাখি। বার্সার থেকে সেরা শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য মেসি।’
ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়ামের বাইরে ক্লাবটির কিংবদন্তি জোয়ান ক্রুইফ ও লাসজলো কুবালার ভাস্কর্য আছে। তাদের মতো মেসিকেও কাতালান ক্লাবটি চিরস্বরণীয় করে রাখতে প্রতিমূর্তি তৈরির করবে বলে জানান বার্সা সভাপতি,
‘মেসির স্পোটিফাই ক্যাম্প ন্যুতে একটি ভাস্কর্য থাকা উচিত, ঠিক ক্রুইফ এবং কুবালার মতো। তিনি এমন একজন আইকনিক খেলোয়াড়, যার ছাপ বার্সার হৃদয়ে চিরঅম্লান থাকবে।’
২০২১ সালে হঠাৎ বার্সেলোনা ছাড়তে হয় মেসিকে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির একাডেমিতে যোগ দেন তিনি। ক্লাবটিতে ২১ বছরে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল করেছেন এবং ১০টি লা লিগা শিরোপা, চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি এবং তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন ৩৮ বছর বয়সী ফুটবলার।