১৪ অক্টোবর ২০২৫, ৪:১৭ পিএম
খেলাধুলার কারণে কত বিনোদনই উপভোগ করেন ভক্ত-সমর্থকেরা। তাই বলে এমন অদ্ভুত বিনোদন! ইউরোপীয় অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সান মারিনোর সামনে অদ্ভুত এক সমীকরণ।
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের সবার শেষের (২১০) দল সান মারিনোকে বড় ব্যবধানে হারতে হবে ম্যাচ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আগামী ১৯ নভেম্বর ‘এইচ’ গ্রুপের দল রোমানিয়ার আতিথেয়তা নেবে সান মারিনো। সেই ম্যাচেই হারতে হবে তাদের!
ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপীয় অঞ্চল থেকে ১৬টি দল বিশ্বকাপে জায়গা করবে। প্রথম পর্বে ১২টি গ্রুপ থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করবে। বাকি চারটি দল জায়গা করবে বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্ব- প্লে অফ খেলে।
প্রথম পর্বের ১২ গ্রুপের রানার্সআপ দল খেলবে প্লে-অফে। তাদের সঙ্গে সুযোগ পাবে উয়েফা নেশনস লিগের গ্রুপ পর্বের শীর্ষ চারটি দল- যারা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে ‘সেরা দুইয়ের’ বাইরে থাকবে।
আরও পড়ুন
একাদশে ফিরছেন শমিত, আজও নেই জামাল |
![]() |
ইউরোপীয় অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ‘এইচ’গ্রুপে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচ খেলে সব হেরেছে সান মারিনো। হজম করেছে ৩২ গোল। গ্রুপে সবার নিচে তারা। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে রোমানিয়া।
সরাসরি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ নেই সান মারিনোর। তবে সবশেষ নেশনস লিগে ‘ডি-১’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। এর সৌজন্যেই বিশ্বকাপের স্বপ্ন বেঁচে আছে তাদের। তাদের আগে ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্বের দ্বিতীয় পর্ব- ‘প্লে অফ’ নিশ্চিত করতে হবে।
এ জন্য গ্রুপের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী রোমানিয়াকে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ের মধ্যে থাকতে হবে। আর সেটি সম্ভব হতে পারে- আগামী ১৬ নভেম্বর বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার বিপক্ষে যদি রোমানিয়া না হারে এবং দুই দিন পর সান মারিনো যদি তাদের কাছে অনেক গোলে হারে।
রোমানিয়াও নেশনস লিগে নিজেদের গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল ছিল। তাদের পয়েন্ট ছিল আরেক গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সান মারিনোর চেয়ে বেশি। রোমানিয়া যদি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ের বাইরে চলে যায় তাহলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন শেষ হয়ে সান মারিনোর। রোমানিয়ার বিপক্ষে যদি মারিনো জেতে বা ড্র করে, তাহলে রোমানিয়া দুইয়ের বাইরেই চলে যাবে। তাতে নিজেদের পায়ে কুঠার আঘাতের মতো হবে সান মারিনোর জন্য।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের সাবার শেষের দল হয়েও সান মারিনোর প্লে-অফ পর্যন্ত যাওয়া নিশ্চয় সহজ ব্যাপার হবে না। যদি যায়, সেখান থেকে ‘পথ’ চ্যাম্পিয়ন হলে তো বিশ্বকাপেই চলে যাবে তারা। নতুন এক ইতিহাস রচিত হবে-র্যাঙ্কিংয়ে সবার শেষের দলটি বিশ্বকাপে! যদি ব্যপারটি বলার মতো সহজ নয়।
No posts available.
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৬:৫৫ পিএম
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২:৪১ পিএম
লিভারপুলের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক জয় দিয়ে আন্তর্জাতিক বিরতিতে যায় চেলসি। দু’সপ্তাহ পর ফিরে আবার জয় দিয়েই শুরু করল ব্লুজরা। বিপরীতে নটিহ্যাম ফরেস্টের দায়িত্ব নিয়ে এখনও দলকে জয়ের মুখ দেখাতে পারলেন না অ্যাঞ্জো পোস্তেকোগলু।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে চেলসি। সবক’টি গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে। জশ আচেমপোংয়ের গোলের পর পেদ্রো নেতোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে এঞ্জো মারেস্কার দল। শেষদিকে চেলসির তৃতীয় গোলটি আসে রেসে জেমসের নৈপুণ্যে।
এ জয়ে প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে এসেছে চেলসি। ৮ ম্যাচে ৪ জয়, ২ হার ও ২ ড্রয়ে ক্লাবটির সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। আর ৮ ম্যাচে মাত্র এক জয় নিয়ে ১৭ নম্বরে নটিংহ্যাম ফরেস্ট।
আরও পড়ুন
কারানের লড়াই ব্যর্থ, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত প্রথম টি-টোয়েন্টি |
![]() |
ফরেস্টের মাঠ সিটি গ্রাউন্ডে বল দখলে চেলসির সঙ্গে সমানে সামনেই লড়েছে স্বাগতিকরা। তবে আক্রমণেই পিছিয়ে ছিল তারা। ৫২ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৪টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে চেলসি। আর ৯টি শট নেওয়া ফরেস্টের গোলমুখে শট ছিল কেবল দুটি।
অবশ্য প্রথামার্ধে হতাশাজনক পারফরম্যান্সই ছিল চেলসির। ফরেস্টের হাই প্রেসিং চেলসিকে ভুল পাস খেলতে বাধ্য করে। প্রথামার্ধের শেষদিকে দলকে লিড এনে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আন্দ্রে সান্তোস। তবে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের হাফ-ভলি গোলপোস্টের নাগাল পায়নি।
বিরতির চার মিনিট পরই প্রথম গোল পেয়ে যায় চেলসি। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে সফরকারীরা। নেতোর চমৎকার এক ক্রস থেকে হেডে জাল কাঁপান আচেমপোং। তিন মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে চেলসি। প্রথম গোলের যোগানদাতা নেতো এবার গোলদাতার ভূমিকায়। ফ্রি-কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন পর্তুগিজ উইঙ্গার।
দু’দফা পিছিয়ে পড়ার পর দারুণ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করে ফরেস্ট। তবে জালের দেখা আর পাওয়া হয়নি পোস্তেকোগলুর দলের। উল্টো ৮৪ মিনিটে ০-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তারা। কর্নার থেকে আসা বল ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ফরেস্ট গোলকিপার মাৎজ সেলস, বল পেয়ে যান জেমস। দারুণ এক ভলিতে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি ইংলিশ ফুল-ব্যাক।
৮৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন চেলসির ফরাসি মিডফিল্ডার মালো গুস্তো। তবে দিকে ১০ জনের দলের বিপক্ষেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ফরেস্ট।
আরও পড়ুন
মিরপুরের স্পিন মঞ্চে ব্যাটারদের লড়াই |
![]() |
ফরেস্টের ডাগ-আউটের দায়িত্ব নিয়ে এ নিয়ে আট ম্যাচের একটিতেও জয় পেলেন না পোস্তেকোগলু। অধীনে। এটি ফরেস্টের শত বছরের বেশি সময়ের ইতিহাসে কোনো কোচের সবচেয়ে বাজে শুরু এটি।
হংকং, চায়নার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৩-৪ গোলে হারের পর ফিরতি ম্যাচে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। তাতে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই থেকে বিদায়ঘন্টাও বাজে হামজা-জামালদের।
হংকংয়ের মাঠে ড্র বাংলাদেশের জন্য ভাল ফল হলেও প্রত্যাশা তার চেয়েও বেশি ছিল সমর্থকদের। কোটি সমর্থকদের হৃদয় ভাঙে ১০ জনের হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় না পাওয়ায়। সেই দলে আছেন নারী ফুটবল দলের পোস্টারগার্ল ঋতুপর্ণা চাকমাও। বাংলাদেশের এমন ড্র-য়ে অভিজ্ঞ উইঙ্গার আজ বললেন— 'ভাল খেলেছে দল, কিন্তু কিছু তো করার নেই, ব্যাড লাক।'
ভুটানের নারী লিগে পারো এফসির হয়ে খেলে গতকালই দেশে আসেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনের সামনে কথা হয় ঋতুর সঙ্গে। বাংলাদেশের দুটি খেলাই দেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
কবে মাঠে ফিরবেন আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো, জানালেন রেড কোচ |
![]() |
ঋতুপর্ণার কাছে জানতে চাওয়া হয় গতরাতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলা দেখেছেন কিনা। ঋতুর উত্তর— 'দেখেছি, ওরা ভাল খেলেছে কিন্তু প্রতিপক্ষ (চাইনিজ তাইপে) অনেক শক্ত টিম।' এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুক্রবার রাতে শেষ হয় অর্পিতাদের অভিযান। প্রথম ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে ড্রয়ের পর ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫২ ধাপ এগিয়ে থাকা চাইনিজ তাইপের কাছে ৫-০ গোলে হারে কোচ সাইফুল বারী টিটুর দল।
বাংলাদেশ সিনিয়র নারী দল আগামী ২১ অক্টোবর যাবে থাইল্যান্ডে। সেখা ফিফা উইন্ডোতে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবেন আফঈদা খন্দকাররা। যে কারণে ঋতুপর্ণা, মনিকা চাকমারা ভুটান লিগ শেষ না হতেই ঢাকায় উড়িয়ে আনা।
চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেড থেকেও মেয়েদের আরেকটি দল গতকাল যোগ দিয়েছেন ফেডারেশনের ক্যাম্পে। ভুটানে থাকা দুই শামসুন্নাহার, স্বপ্না রানী, তহুরা ও মারিয়া মান্ডাদের দেশে আসার কথা আগামীকাল।
খুব দ্রুতই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন লামিনে ইয়ামাল। অভিষেকের পর থেকেই মাঠে চমক জাগানো পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে বার্সেলোনার ১০ নম্বর জার্সিও শোভা পেয়েছে তার গায়ে। ফুটবলবিশ্বে এখন এক বড় নামই স্প্যানিশ এই উইঙ্গার। নিজের এই বড় নামের যথাযথ ব্যবহারই বুঝি করছেন ইয়ামাল। এখন থেকে যে বার্সা তারকার স্বাক্ষর পেতে ভক্তদের পয়সা গুনতে হবে। ফ্রিতে আর ‘অটোগ্রাফ’ দিবেন না ইয়ামাল।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৮ বছর বয়সী ইয়ামালকে তাঁর প্রতিনিধি দল পরামর্শ দিয়েছে যেন এখন থেকে কোনো স্মারকসামগ্রীতে তিনি স্বাক্ষর না করেন। এটিকে তারা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, যার উদ্দেশ্য ইয়ামালে স্বাক্ষরের বাজারমূল্য বাড়ানো।
ইয়ামালের স্বাক্ষরকে মূলত ব্র্যান্ডে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অবশ্য বিষয়টি অহংকার বা ভক্তদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি জন্য নয় বরং একটি সুপরিকল্পিত বাণিজ্যিক কৌশলের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলছে ওই প্রতিবেদন। ইয়ামাল এমন একটি বাণিজ্যিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে আছেন, যেখানে তাঁর স্বাক্ষরকে একটি মূল্যবান ও বিক্রয়যোগ্য পণ্যে রূপান্তর করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রীড়া জগতে অনেকদিনই এমনটা হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন
কবে মাঠে ফিরবেন আর্জেন্টিনার লিসান্দ্রো, জানালেন রেড কোচ |
![]() |
বিখ্যাত প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন ইয়ামাল। যারা বিশ্বজুড়ে ক্রীড়া তারকাদের স্বাক্ষরিত পণ্য বিক্রয়ে বিশেষজ্ঞ। বার্সেলোনা উইঙ্গার ইয়ামাল সেই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করছেন বলেই তার ম্যানেজমেন্ট টিম আপাতত তাকে বিনামূল্যে স্বাক্ষর নিষেধ করছে।
ইয়ামালের ক্লাব বার্সেলোনাও প্রায়ই স্পনসরশিপ ও অন্যান্য চুক্তির প্রয়োজনে খেলোয়াড়দের স্বাক্ষরিত সামগ্রী ব্যবহার করে। ফলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ইয়ামালের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, যাতে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বাক্ষর তারা নিজেদের কাজের জন্য সংরক্ষণ করতে পারে।
ইয়ামালের বিজ্ঞাপন সংস্থাটি এখন এমন একটি কোম্পানির সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা করছে, যারা তাঁর স্বাক্ষরিত বুট, জার্সি এবং অন্যান্য ব্যবহৃত পণ্য বিক্রি করবে। এর পেছনে মূল কৌশল খুব সরল—যত কম পণ্য তিনি স্বাক্ষর করবেন, তত বেশি বাড়বে তার স্বাক্ষরের বাজারমূল্য।
এই চুক্তি যদি চূড়ান্ত হয় তবে ইয়ামালের সত্যিকারের স্বাক্ষরযুক্ত পণ্য কিনতে চাইলে, নির্দিষ্ট অফিসিয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই কিনতে হবে ভক্তদের।
আন্তর্জাতিক তারকায় পরিণত হওয়া ইয়ামালের নাম ইতোমধ্যেই জড়িয়ে গেছে বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে। বর্তমানে অ্যাডিডাস, বিটস, পাওয়ারএইড, ওপ্পো, কোনামি এবং নেস্কুইকের মতো বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বাসেডর তিনি। পাশাপাশি ইউনিসেফ-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন ইয়মাল।
লা লিগার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠে ১৫ সেকেন্ডের জন্য স্থির দাঁড়িয়ে রইলেন, তখন টিভির পর্দায় দেখা গেল আকাশ থেকে স্টেডিয়ামের দৃশ্য—খেলোয়াড়দের প্রতিবাদের দৃশ্যটি দেখানোই হলো না!
শুক্রবার রাতে এস্পানিওল ও রিয়াল ওভিয়েদোর ম্যাচে এমন ঘটনাই ঘটেছে। লা লিগার আয়োজিত এই ম্যাচে খেলোয়াড়েরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন, খেলার শুরুতে ১৫ সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকে নিজেদের অসন্তোষ জানাবেন। তাঁদের দাবি, বিদেশে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে লা লিগা যেন স্বচ্ছতা দেখায় এবং খেলোয়াড় সংগঠন এএফই’র (এএফই) সঙ্গে আলোচনায় বসে।
খেলা শুরু হওয়ার পর রেফারির প্রথম বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে যখন দুই দল স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল, তখন সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান ডিএজেডএন ক্যামেরা ঘুরিয়ে নিল আকাশে। স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখানো হলো ২১ সেকেন্ড ধরে। এরপরই আবার ফিরে এল মাঠের ছবিতে—তখন খেলা শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতেই লা লিগা নিশ্চিত করেছিল, ডিসেম্বরের শেষে ভিয়ারিয়াল–বার্সেলোনা ম্যাচ বিদেশে আয়োজন করা হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে খেলোয়াড় ও তাঁদের সংগঠন এএফইয়ের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁরা।
খেলোয়াড়দের অভিযোগ, বিষয়টা নিয়ে লা লিগার আচরণ ছিল গোপনীয় ও একপেশে। মঙ্গলবার লা লিগা, এএফই ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সময়সূচি নিয়ে জটিলতায় তা হয়নি। লা লিগা তিনটি বিকল্প তারিখ প্রস্তাব করলেও, এএফই সেটিকে সময়ক্ষেপণ বলেই মনে করেছে।
এমনকি প্রতিবাদের আগমুহূর্তে লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাস ছয় পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন এএফইকে, যাতে পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। কিন্তু তাতেও মন গলেনি খেলোয়াড়দের। তাঁদের উদ্বেগ মূলত— কতটি ম্যাচ বিদেশে আয়োজন হবে, আর সেখান থেকে অর্জিত অর্থ কীভাবে বণ্টন হবে।
এস্পানিওলের ২–০ গোলের জয়ের পর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো কাবরেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লা লিগার আচরণে। স্প্যানিশ দৈনিক দিয়ারিও এএসের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন,
‘আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে প্রতিবাদ করব। কিন্তু পরে লা লিগা বলল, নাকি অন্য কারণে সেটা হবে না! গত সপ্তাহে বৈঠকের অনুরোধ করা হয়েছিল, তারা পারেনি। এখন এমন সময় ঠিক করেছে, যখন সাত–আটটি দল ইউরোপে খেলছে। এরপর আবার বলছে, আরও পরে দেখা করা যাক—তখন তো সব বিক্রি হয়ে গেছে, ফেরার উপায় নেই।’
কাবরেরা আরও বলেন,
‘যদি সবকিছু এত স্বচ্ছ হয়, তাহলে আলাপ করতে সমস্যা কোথায়? তারা বলে গত দশ বছরে খেলোয়াড়দের ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে, কিন্তু যাঁদের বেতন বেড়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও কি একই নিয়ম? স্বচ্ছতা সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’
টিভি সম্প্রচারে প্রতিবাদ না দেখানো নিয়েও হতাশ কাবরেরা,
‘আমরা শুধু ১৫ সেকেন্ডের বিরতি চেয়েছিলাম—একটু দেখাতে চেয়েছিলাম যে আমরা একমত নই। কিন্তু তারা হয়তো ছাদের পাখি দেখিয়েছে। সত্যি বলতে, আমি বুঝি না কেন এটা দেখানো গেল না।’
লা লিগার এই আচরণে স্প্যানিশ ফুটবলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খেলোয়াড়েরা বলছেন, তাঁরা ম্যাচ বিদেশে আয়োজনের বিরোধী নন, কিন্তু চাইছেন ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা আর সম্মান—যা শুক্রবার রাতে তাঁদের চোখে পড়েনি একটুও।
প্রিমিয়ার লিগে মৌসুমের বড় ম্যাচ সামনে। কাল অ্যানফিল্ডে রুবেন আমোরিমের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ লিভারপুল। এই ম্যাচেও রক্ষণ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় কোচ আমোরিম।
আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেজ ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠের বাইরে আছেন হাঁটুর (এ সি এল) ইনজুরিতে। সম্প্রতি তিনি দলীয় অনুশীলনে ফিরেছেন বটে, তবে এখনো ম্যাচ খেলার মতো প্রস্তুত নন। আমোরিম পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, অ্যানফিল্ডে লিসান্দ্রোকে পাওয়া যাচ্ছে না।
লিসান্দ্রোর ফেরার প্রসঙ্গে ইউনাইটেড কোচ বলেন, ‘লিসা এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। সে ফিরছে, কিন্তু এখনো খেলার জন্য ফিট না।’ তবে কোচের কথায় ধারণা পাওয়া যায়, দ্রুতই মাঠে ফিরবেন এই ডিফেন্ডার।
মার্তিনেজের অনুপস্থিতি এই মৌসুমে ইউনাইটেডের রক্ষণভাগে বড় প্রভাব ফেলেছে। তাঁর উপস্থিতি ছাড়া দলটা রক্ষণে বেশ ভুগছে। কোচ আশা করছেন, মৌসুমের পরের দিকেই হয়তো দলে ফিরে আসবেন এই আর্জেন্টাইন।
শুধু মার্তিনেজ নন, ম্যান ইউনাইটেড পাচ্ছে না নুসাইর মাজরাউকেও। মরক্কোর এই ফুলব্যাক মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র তিন ম্যাচ খেলতে পেরেছেন, উরুর চোটে মাঠের বাইরে বেশ কিছুদিন। আমোরিম জানালেন, তাঁর ফেরার সময় নিয়েও নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। কোচ বলেন,
‘মাজরাউইয়ের ক্ষেত্রে এখনই সময় বলতে পারছি না। আমরা আশা করছি, শিগগিরই ও ফিরবে।’
চোটের ধাক্কায় ইউনাইটেডের রক্ষণভাগের বিকল্প কমে গেছে আরও। আর প্রতিপক্ষ যখন লিভারপুলের মতো দল, তখন বড় চিন্তার কারণই আমোরিমের জন্য।
তবে মাঝমাঠে খানিকটা স্বস্তির খবর আছে। অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেজ বৃহস্পতিবার অনুশীলনে অংশ নেননি, কিন্তু সেটা বিশ্রামের জন্যই। আন্তর্জাতিক ম্যাচ শেষে ক্লান্ত থাকায় কোচ তাঁকে বাড়তি বিশ্রাম দিয়েছেন। আমোরিম নিশ্চিত করেছেন, লিভারপুলের বিপক্ষে মাঠে নামবেন ফার্নান্দেজ,
‘যারা আন্তর্জাতিক দায়িত্ব থেকে ফিরেছে, তাদের একটু সময় দিচ্ছি। তবে সবাই খেলতে প্রস্তুত।’
প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে তিন জয় নিয়ে টেবিলের ১০ নম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। গত ম্যাচে সান্ডারল্যান্ডকে ২–০ গোলে হারিয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে তারা। তবে ধারাবাহিকতা এখনও অধরা।
রবিবার আনফিল্ডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলের মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। তারপরই অপেক্ষা ব্রাইটন ম্যাচের। তত দিনে যদি মার্তিনেজ ও মাজরাউইয়ের ফিটনেস নিয়ে ভালো খবর আসে, সেটাই হবে কোচ আমোরিমের জন্য সবচেয়ে বড় জয়ের খবর। আপাতত তাঁর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—দুই প্রধান রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ছাড়া আনফিল্ডে টিকে থাকা।