২ নভেম্বর ২০২৪, ৬:২৫ পিএম
ক্লাবের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়েও গত মৌসুমে লাউতারো মার্তিনেজের যে অর্জন, তাতে অনেকেই তাকে রেখেছিলেন ব্যালন ডি’অরের বিবেচনায়। তবে শেষ পর্যন্ত শীর্ষ পাঁচেও জায়গা হয়নি আর্জেন্টিনা স্ট্রাইকারের। তিনি নিজেও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ করেছেন খানিকটা হতাশা। তবে ইতালির বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক ডিফেন্ডার মার্কো মাতেরাজ্জি মনে করেন, মেসির প্রশংসার চেয়ে এই খেতাবের মাহাত্ব বেশি হতে পারে না।
‘এল তোরো’ খ্যাত লাউতারো ইন্তার মিলানের হয়ে জেতেন সেরি আর শিরোপা। আর আর্জেন্টিনার হয়ে জেতেন কোপা আমেরিকা। এই দুই প্রতিযোগিতাতেই তিনি হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। এরপরও ব্যালন ডি’অরের ভোটে সাত নম্বর স্থান পান লাউতারো। এরপর তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শীর্ষ পাঁচের মধ্যে অন্তত থাকার আশা ছিল তার।
আরও পড়ুন
লোকেরাই ঠিক করবে তারা আমাকে কীভাবে মনে রাখবে : মেসি |
![]() |
এই প্রসঙ্গে ‘গাজ্জেতা’-এর সাথা সম্প্রতি কথা বলেছেন ইতালির হয়ে ২০০৬ বিশ্বকাপ জেতা মাতেরাজ্জি। আর সেখানে উত্তরসূরির প্রতি বলেন ইতিবাচক কথা। “লাউতিকে (লাউতারো মার্তিনেজ) অবশ্যই স্রেফ মেসির কথায় মনোযোগ দিতে হবে, কারণ তার রায় ব্যালন ডি'অর জুরির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।”
ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে মেসি বলেছিলেন যে, লাউতারো ২০২৩-২৪ মৌসুমে তার অর্জনের বিবেচনায় অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে এই পুরস্কারের বেশি প্রাপ্য।
আরও পড়ুন
‘রোনালদোই শুধু মেসিকে হারাতে পেরেছে , ২০ বছরে তাদের অর্জন অবিশ্বাস্য’ |
![]() |
সব জায়গাতেই লাউতারো সফল একটা মৌসুম কাটালেও তার হাতে ব্যালন ডি’অর বলতে গেলে কেউই দেখেননি সেভাবে। কয়েক মাস আগে থেকেই মূল লড়াইটা হয়ে আসছিল রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রদ্রির মধ্যে। শেষ পর্যন্ত এটি উঠেছে তারই হাতে।
বিজয়ী নিয়ে আপত্তি না থাকলেও লাউতারোর অবস্থান নিয়ে হতাশ মাতেরাজ্জিও। “চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী কারভাহাল ও ইউরো জয়ী রদ্রিকে নিয়ে অভিযোগ করতে পারি না। কিন্তু লাউতারো ইন্তার ও আর্জেন্টিনার হয়েও ট্রফিও জিতেছেন। তাই যখন সে বলল যে সে আরও ভালো কিছু আশা করেছিল, সেটা ঠিকই ছিল”
No posts available.
২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৪ এম
২২ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৫৯ এম
২২ অক্টোবর ২০২৫, ১:০০ এম
২১ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১৪ পিএম
জলঘোলা হলো অনেক। লা লিগার ক্লাবগুলো জানাল প্রতিবাদ। ম্যাচটি নিয়ে অসন্তোষ ছিল প্রায় সবারই। শেষ পর্যন্ত বাতিলই হলো লা লিগায় বার্সেলোনা-ভিয়ারিয়ালের মায়ামিতে হতে যাওয়া ম্যাচটি। তাতে স্প্যানিশ লিগটির এই ম্যাচ এখন আগের সূচি অনুযায়ী ভিয়ারিয়ালের নিজস্ব মাঠ এস্তাদিও দে লা সেরামিকায় হবে।
গত কয়েক সপ্তাহে স্পেনে তৈরি হওয়া ‘অনিশ্চিত পরিস্থিতির’ কথা উল্লেখ করে লা লিগা কর্তৃপক্ষ গতকাল এক ঘোষণায় মায়ামিতে বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসে।
লা লিগা এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে এই প্রকল্পটি—যা স্প্যানিশ ফুটবলের আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও অনন্য সুযোগ তৈরি করেছিল—এখন আর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দেশের সীমানার বাইরে একটি অফিসিয়াল ম্যাচ আয়োজন প্রতিযোগিতার বৈশ্বিক বিকাশে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতো। যুক্তরাষ্ট্রের মতো কৌশলগত বাজারে ক্লাবগুলোর আন্তর্জাতিক উপস্থিতি, খেলোয়াড়দের অবস্থান এবং স্প্যানিশ ফুটবলের দৃশ্যমানতা বাড়াতে সাহায্য করত এই পদক্ষেপ।’
সপ্তাহ দুয়েক আগে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা ম্যাচটি যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের অনুমোদন দেয়। ফিফার নিয়মাবলিতে এমন উদ্যোগে বাধা দেওয়ার মতো কোনো কারণ খুঁজে পায়নি বলে জানায় তারা। এরপরই লা লিগার ফুটবলাররা একযোগে প্রতিবাদ করে।
আরও পড়ুন
অক্টোবরের সেরা ম্যাজিকেল মেসি |
![]() |
স্প্যানিশ ফুটবলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে লা লিগার খেলোয়াড়রা সপ্তাহান্তের ম্যাচগুলোর শুরুতে প্রথম ১৫ সেকেন্ড স্থির দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্প্যানিশ লিগটির ‘স্বচ্ছতার অভাব এবং অসংগতির’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় ফুটবলাররা।
লা লিগার ম্যাচ স্পেনের বাইরে আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসলেও সব নিয়ম মেনেই এই বার্সা-ভিয়ারিয়ালের ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয় বলে জানায় লিগটির কতৃপক্ষ, ‘প্রকল্পটি সব ফেডারেটিভ নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি প্রতিযোগিতার সততা বা ভারসাম্যে কোনো প্রভাব ফেলত না, যা সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও নিশ্চিত করেছে। তারা কেবল অন্য কারণ দেখিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।’
লা লিগার ক্লাবগুলো ও ফুটবলারসহ বার্সেলোনার খেলোয়াড় ও কোচ হান্সি ফ্লিকও শুরু থেকেই অতিরিক্ত ভ্রমণের এই পরিকল্পনা পছন্দ করেননি। জানুয়ারির শুরুতেই কাতালান ক্লাবটিকে সৌদি আরবে যেতে হবে স্প্যানিশ সুপার কাপের জন্য। ফলে এ ভ্রমণ বাড়তি ক্লান্তি আনবে বলে মনে করেন অনেকে।
বার্সেলোনার ডাচ মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি ইয়ং অক্টোবরের শুরুতে বলেছিলেন, ‘এটা খেলোয়াড়দের জন্য ভালো নয়। এত ভ্রমণ করতে হয়, সেটা ক্লান্তিকর। প্রতিযোগিতার দিক থেকেও এটা ন্যায্য নয়—এটা আমাদের জন্য কার্যত নিরপেক্ষ মাঠে একটি অ্যাওয়ে ম্যাচ হয়ে যেত।’
বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখিয়ে নিয়মিতই এখনো দলের জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন লিওনেল মেসি। গোল-অ্যাসিস্টে ইন্টার মায়ামিকে জেতানো আর্জেন্টাইন মহারতারকা হলেন এমএলএসের (মেজর লিগ সকার) অক্টোবরের সেরা ফুটবলার।
মৌসুমের শেষটায় দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মেসি এ নিয়ে এমএলএসের ২০২৫ মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো মাস সেরা হলেন। আর মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর পাঁচবার এই স্বাকৃতি পেয়েছেন তিনি।
এমএলএসে সদ্য শেষ হওয়া অক্টোবরে ইন্টার মায়ামির ১০ গোলে অবদান রাখেন মেসি। পাঁচ গোলের সঙ্গে সতীর্থদের দিয়ে করা আরও পাঁচটি গোল। সবশেষ ন্যাশভিল এসসির বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল যেন রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর পুরো মাসের প্রতিচ্ছবি। সেই ম্যাচে হ্যাটট্রিক গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেন তিনি।
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল বৃষ্টির রাতে পিএসজি-আর্সেনাল-ইন্টারের ‘ভূমিধস’ জয় |
![]() |
মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করে গোল্ডেন বুটও নিজের করে নেন জাদুকরী মেসি। পুরো মৌসুমে ২৮ ম্যাচ খেলে ৪৫টি গোলে অবদান রেখেছেন ৩৮ বছর বয়সী মহাতারকা। ২৯ গোলের সঙ্গে ১৬টি অ্যাসিস্ট করে এমএলএসের ইতিহাসে এক মৌসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলে অবদান রাখার রেকর্ড করেন তিনি।
রেকর্ডকে জীবন সঙ্গী বানিয়ে ফেলা মেসি আরও একগুচ্ছ মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। এমএলসে টানা দুই মৌসুমে ৩৬টির বেশি গোলে অবদান রাখা একমাত্র খেলোয়াড় তিনি। ২০২৪ মৌসুমে ২০ গোল ও ১৬ অ্যাসিস্ট করে তিনি জিতেছিলেন ল্যান্ডন ডোনোভান এমভিপি পুরস্কার।
এবার নিয়মিত মৌসুম শেষ হওয়ার পর এবার মেসিকে হাতছানি দিচ্ছে আরেকটি ইতিহাস। যুক্তরাষ্ট্রের লিগটির ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা দুই মৌসুমে টুর্নামেন্ট সেরা হতে পারেন মেসি।
লেভারকুজেনকে তাদের উঠানেই গোলের মালা পিএসজির
ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সামনে দাড়াতেই পারছে না কোনো দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগের ম্যাচে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনাকে তাদের মাটিতেই হারানোর পর এবার জার্মান ক্লাব লেভারকুজেনকে বিধ্বস্ত করল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
লেভারকুজেনের মাঠ বে অ্যারেনাতে পিএসজি পেয়েছে ‘ভূমিধস’ জয়। গোল উৎসবে মেতে প্রতিপক্ষকে তারা ধসিয়ে দিয়েছে ৭-২ গোলে। ৭ মিনিটে উইলিয়ান পাচোর গোলে পিএসজি এগিয়ে যাওয়ার পর আলেক্স গার্সিয়া ৩৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরে স্বাগতিকরা।
এরপরই খেল দেখায় লুইস এনরিকের দুরন্ত পিএসজি। একে একে বিরতির আগে আরও তিনবার লেভারকুজেনের জালে বল পাঠিয়ে ব্যবধান ৪-১ করে তারা। জোড়া গোল করেন দেজিরে দুয়ে দুটি। একবার লক্ষ্যভেদ করেন খিচা কাভারাস্কেইয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল উৎসবে শামিল হন নুনো মেন্দেস, উসমান দেম্বলে ও ভিতিনিয়া। মাঝে লেভারকুসেনের হয়ে আরেকটি গোল করে কেবল ব্যবধান কমান আলেক্স গার্সিয়া।
আরও পড়ুন
আশার সঙ্গে বাস্তবতাও বোঝালেন বসুন্ধরা কিংস সভাপতি |
![]() |
তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে সবার থেকে এগিয়ে থাক পিএসজি এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। আর কাস্পার হুলমান্দের লেভারকুজেন তিন ম্যাচে দুই ড্র ও এক হারে ২৭ নম্বরে আছে।
১৩ মিনিটেই লণ্ডভণ্ড আতলেতিকো
প্রথামার্ধে কোনো গোলের দেখাই মিলল না। বিরতির পর দেখা গেল আর্সেনারের রুদ্ররূপ। আতলেতিকো মাদ্রিদকে বিধ্বস্ত করতে মাত্র ১৩ মিনিট সময় নিল গানাররা। শেষ পর্যন্ত মিকেল আর্তেতার দল ৪-০ গোলে দিয়াগো সিমিওনেল দলকে উড়িয়ে ক্ষান্ত হল।
ঘরের মাঠ এমিওটেস স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে তাণ্ডবের শুরুটা করেন গাব্রিয়েল মাগালিয়ায়েস। ৫৭ মিনিটে তাঁর প্রথম গোলের পর সাত মিনিট পর দ্বিতীয় আঘাত হানেন আরেক ব্রাজিলিয়ান গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির সৌজন্যে।
প্রথামার্ধে খানিকটা লড়াইয়ের চেষ্ঠা চালানো জুলিয়ান আলভারেজরা এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ৬৭ ও ৭০ মিনিটে জোড়া গোল করে দলের হয়ে হালি পূর্ণ করেন আর্সেনালের সুইডিশ ফরোয়ার্ড ভিক্টর ইয়োকেরেস।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০২৫-২৬ মৌসুমে এ নিয়ে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে আর্সেনাল। বিপরীতে সমান ম্যাচে একটি জয় পাওয়া আতলেতিকো ৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে।
খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে সহজ জয় ইন্টারের
বেলজিয়াসের ক্লাব ইউনিয়ন সেন্ট জিলোয়েসের বিপক্ষে হেসেখেলেই জয় পাওয়ার কথা ইন্টার মিলানের। হয়েছেও তাই। ক্লাবটির তাদের মাঠেই ৪-০ গোলে হারায় লাউতারো মার্টিনেজরা। প্রথমার্ধে দুই গোলে পর বিরতির পর আসে দুই গোল।
আরও পড়ুন
ফারমিনের হ্যাটট্রিক, রাশফোর্ডের জোড়ায় বার্সেলোনার বড় জয় |
![]() |
৪১ মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রাইসের গোলের পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মার্টিনেজ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান ৩-০ করেন ইন্টারের তুর্কি মিডফিল্ডার হাকান চানালু্। ৭৬ মিনিটে ম্যাচের শেষ গোলটি আসে সফরকারীদের ফরোয়ার্ড ফ্রান্সেসকো পিও এস্পোসিটোর নৈপুণ্যে।
অদম্য হলান্ডের ছুটে চলা
আর্লিং হলান্ডকে রুখে সাধ্য কার ? মাঠে নামলেই মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করা ‘গোলমেশিন’ ম্যানচেস্টার সিটির আরেকটি জয়ে জাল কাঁপালেন। ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গতকাল রাতে সিটির ২-০ গোলের জয়ে হলান্ডের গোলের সঙ্গে বাকি গোলটি আসে বের্নাদো সিলভার সৌজন্যে।
ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে অপ্রতিরোধ্য হলান্ড গোল করে দারুণ এক রেকর্ডে নাম লেখান। ১৭ মিনিটে বল জালে জড়িয়েই নরওয়েজিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড স্পর্শ করেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড। টানা ১২ ম্যাচে গোল করে পর্তুগিজ মহাতারকার রেকর্ডে ভাগ বসালেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগের ম্যাচে মোনকোর বিপক্ষে ড্রয়ের পর জয়ে ফেরা সিটির পয়েন্ট এখন সাত। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে আছে সিটিজেনরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল বৃষ্টির রাতে বড় জয় পেয়েছে ডাচ ক্লাব পিএসভি আইন্দহোভেন। লুকা মড্রিচের ক্লাব নাপোলিকে তারা গুড়িয়ে দিয়েছে ৬-২ গোলে। এ ছাড়া ডেনমার্কের ক্লাব এফসি কোবেনহেভেনকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসল।
নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের বিপক্ষে জয়ের পর প্যারিস সেন্ট জার্মেইর বিপক্ষে হার। চ্যাম্পিয়নস লিগের ২০২৫-২৬ মৌসুমে অম্ল-মধুর পথচলা লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা আজ দেখাল তাদের পুরোনো রূপ। নিজেদের দিনে কী করতে পারেন কাতালান যোদ্ধারা— তা আরেকবার দেখল এস্তাদি ওলিম্পিক লুইস স্টেডিয়ামে আগত প্রায় ৫৬ হাজার দর্শক।
ফিফা আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফেরার পর নিজেদের প্রথম ম্যাচে অতিথি অলিম্পিকোসোকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলায় মাতেন হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ৬-১ গোলে তারা স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে গ্রীস জায়ান্টদের। বার্সেলোনার হয়ে ফারমিন লোপেজ তিনটি, মার্কাস রাশফোর্ড দুটি এবং প্যানাল্টি থেকে একটি গোল করেন লামিন ইয়ামাল।
এদিন নিজেদের মাঠে মাত্র ৭ মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। মধ্যমাঠ থেকে ড্রিবলিং করতে করতে একাই বল টেনে অতিথি বক্সের কাছে চলে যান ফারমিন লোপেজ। সেখান থেকে আলতো শটে বল বাড়ান লামিন ইয়ামাল বরাবর। বক্সের ভেতরে থাকা স্পেন তারকার সুযোগ ছিল জালে লক্ষ্যভেদের।
সেটা ইয়ামাল করেননি, বলতে গেলে পারেননি। গোলকিপার কনস্তান্তিনোস জোলাকিস তাঁর সামনে পড়ে যান। বলটি তিনি তালুবন্দি করতে গিয়ে হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। উপায়ান্তর না পেয়ে ফের লোপেজ বরাবর বল পাঠান ইয়ামাল। অতিথি সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিতে এরচেয়ে বেশিকিছু করার উপায়ও ছিল না স্পেন রাইট উইঙ্গারের। ফারমিন পেয়ে গেলেন ২০২৫-২৬ মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় গোল। দলকেও এনে দেন উৎসব-আমেজময় লিড।
ফারমিন দলকে দ্বিতীয়বার উৎসবে মাতান ৩৮ মিনিটে। বাঁ-প্রান্ত থেকে বক্সের সামনে স্পেন ফরোয়ার্ডকে পাস দেন ফার্নান্দেজ। কাটব্যাক করে সোজা বক্সে ঢুকে পড়েন ফারমিন। তড়িৎ শট নেন জালে। পেয়ে যান নিজেদের দ্বিতীয় গোল। দল পায় ২-০ লিড।
৫৪ মিনিটে পেনালটি পায় বার্সেলোনা। স্পট কিক থেকে বারের ডান দিকে শট নেন আয়ুব এল কাবি। সিজনি ঠিকঠাক জাম্প দেন। কিন্তু নাগালের বাইরে ছিল বল। বরং বারে লেগে তা জাল স্পর্শ করে সুন্দরভাবে। একটি গোল শোধ করে অতিথিরা।
এর আগে অবশ্য নাটকীয়তা ঘটেছিল। পডেন্সের ক্রসে হেডারে গোল করেন এল কাবি। কিন্তু তার আগে গার্সিয়ার হাত স্পর্শ করে বল। ফাউল দিতে কুন্ঠাবোধ করেননি রেফারি। এরপর আরও কিছু বিশ্লেষণ করা হয়, যেখানে দেখা যায়, পডেন্স গোলের মুহূর্তে অফসাইড ছিলেন। এই কারণে, পেনাল্টি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আরও সঠিক ছিল।
৫৬ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় অলিম্পিয়াকোস। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হেজে। তাতে দুর্বল হয়ে পড়ে দল। আহত দলের ওপর মুর্হুমুহু আক্রমণ শুরু করে স্বাগতিকরা।
৬৮ মিনিটেই সাফল্য পায় বার্সা। মার্কাস রাশফোর্ড ডি বক্সে পড়ে যান। ওয়ান টু পজিশনে ছিলেন তিনি। কেবল গোলকিপার ছিল সামনে। সুযোগও ছিল গোল করার। কাটব্যাক করে ডানপ্রান্তে বলটি পাঠানোর পরই কনস্তান্তিনোস জোলাকিসের হাতে লেগে মাটিতে পড়ে যান ইংলিশ ফরোয়ার্ড। ভিআর চেকে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জানায় রেফারি। সেখান থেকে সফল স্পটকিকে গোল করেন লামিন ইয়ামাল। আসরে এটি দ্বিতীয় গোল বার্সা রাইট উইঙ্গারের।
৭০ মিনিটে হ্যাট্রিকের দারুণ সুযোগ মিস করেন ফারমিন। জুলস কুন্ডের পাস থেকে পাওয়া বল শট নিয়েছিলেন গোলমুখে। সেটা বারের ডানপ্রান্ত দিয়ে বের হয়ে যায়। ঠিক একমিনিট পরই দ্বিতীয় গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইয়ামালের। বার্সা মধ্যমণি বক্সের ভেতর একাই তিনজনকে পরাস্ত করে বাঁ-পাশ দিয়ে আক্রমণ যান। সেটা ভেস্তে যায়, অলিম্পিয়াকোসের রক্ষণভাগের কল্যাণে।
৭৩ মিনিটে অনেকটা বলে কয়ে গোল দেন রাশফোর্ড। ঠান্ডা মাথায় চোখ বুলিয়ে ডান পায়ের নিখুঁত শট নেন অতিথি জালে। এক্ষেত্রে রোলান্ড আরাউহোর অবদান অস্বীকার করা যাবে না। তার পাস থেকেই গোলটি আদায় করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
৭০ মিনিটে সুযোগ মিস করলেও ৭৭ মিনিটে হ্যাটট্রিক করতে ভুল করেননি ফারমিন। বালদের চিপ শট বক্সের ভেতর পেয়ে যান স্পেনের ২২ বর্ষী ফরোয়ার্ড। কীর্তি গড়তেও একটুও ভুল করেননি।
রাশফোর্ড আরও একবার দেখান জাদু। মধ্যমাঠ থেকে পেদ্রির দেওয়া লং পাস অলিম্পিয়াকোসের ডি বক্সের সামনে সুযোগ সন্ধানী রাশফোর্ড পেয়ে যান। যদিও তার সামনে ছিল অতিথির রক্ষণ দেয়াল। নিজেকে প্রমাণ করার দিনে এসব বাঁধা যে তুচ্ছ, সেটা প্রমাণ করতে ভুলেননি। ঠিকই ২০২৫-২৬ চ্যাম্পিয়নস লিগে আদায় করে নিলেন নিজের চতুর্থ গোল। একই সঙ্গে জানান দিলেন, স্বপ্নের ক্লাবে স্বপ্নপূরণে তিনি যে কতটা মরিয়া।
নিজেদের মাঠে বার্সার জাল ছিল বিস্তৃত। ৭৩ শতাংশ বল দখলে রেখেছেন পেদ্রিরা। মাত্র ২৭ শতাংশ বল দখলে ছিল অতিথিদের। ১৪টি অলিম্পিয়াকোস মুখে শট ছিল যার, ৭টিই ছিল গোলমুখে। বিপরীতে যাচ্ছেতাই ছিল অতিথিরা। মাত্র ৫টি শট ছিল স্বাগতিকমুখে। যার দুটি ছিল অন টার্গের। গ্রীসের দলটি বড় সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে মাত্র ২ বার।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে অংশ নিতে আজ বিকেলে দেশ ছেড়েছে বসুন্ধরা কিংস। শনিবার থেকে শুরু লিগের গ্রুপ পর্বের খেলা। প্রতিযোগিতার প্রিলিমিনারি রাউন্ডে সিরিয়ান ক্লাব আল কারামাহকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে ওঠে বাংলাদেশ ফুটবল লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।
ঘরোয়া লিগের অন্যতম সফল ক্লাবটি এএফসি মঞ্চে সেভাবে সফলতা পায়নি। তবে এবার কি ঘুচবে সেই আক্ষেপ? ক্লাব সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান বলছেন, ‘আশা আছে।’ তবে বাস্তবতার পথটাও যে কঠিন, সেটি তিনি স্বীকার করেছেন।
চ্যালেঞ্জ লিগে বসুন্ধরা কিংস পড়েছে ‘বি’ গ্রুপে। ২৫ অক্টোবর বসুন্ধরা কিংসের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ওমানের ক্লাব আল সিব। ২৮ অক্টোবর লেবাননের আল আনসারের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে তারা। ৩১ অক্টোবর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক দল আল কুয়েত।
চার দলের গ্রুপ থেকে পয়েন্টের শীর্ষ দল উঠবে কোয়ার্টার ফাইনালে। এই গ্রুপে থাকা আল সিবের এএফসি মঞ্চে সফলতা আছে। ২০২২ সালে ওমানের ক্লাবটি জিতেছে এএফসি কাপ। আল কুয়েত এএফসির মঞ্চে অন্যতম অভিজ্ঞ দল। এশিয়ান অঞ্চলের ভিন্ন প্রতিযোগিতায় তিনটি শিরোপা তাদের।
হেভিওয়েট তিন দলের গ্রুপ থেকে সেরা হওয়াটা মোটেও সহজ হবে না বসুন্ধরা কিংসের। তারপরও স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই। প্রতিযোগিতার প্রিলিমিনারি রাউন্ডে আল কারামাহর বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ জেতার পর বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ কাপ জিতেছে ঢাকার জায়ান্টরা। রাকিব হাসেন, তপু বর্মণ, দরিয়েলতনদের লক্ষ্য তাই সুনিদিষ্টি- যে কোনো মূল্যে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ভালো ফল অর্জন।
দল নিয়ে আশাবাদী হলেও বাস্তবতাও জানা বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসানের। আজ নিজ অফিসে বসে টি-স্পোর্টসের এই প্রতিবেদককে বলেন,
‘সত্যিকার অর্থে এ বছর থেকে এএফসিতে ভালো কিছু করা কঠিন। ফর্মেশন পরিবর্তন হওয়ায় সেটি আরও কঠিন। আগে যেমন দক্ষিণ এশিয়া জোনের সঙ্গে খেলতাম। এখন অধিকাংশ সময় মধ্যপ্রাচ্যের দলগুলোর সঙ্গে খেলতে হবে। তৃতীয় কিংবা চতুর্থ টায়ার এখানে বিষয় না। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ধরেন ভারতের সেরা দলও হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের তৃতীয় সারির কিংবা চতুর্থ সারির দলের চাইতে ভালো হবে না। ফলে কম্পিটিশন আগের চেয়ে অনেক বেশি।’
কঠিন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সর্বশেষ দলবদল মৌসুমে ঘর গুছিয়ে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। মোহামেডান থেকে ইমানুয়েল সানডে, টনি, আবাহনীর রাফায়েল আগুস্তসহ কিউবা মিচেলদের মতো ফুটবলারদের দলে ভিড়িয়েছে তারা। যে কারণে কিংসের এএফসি মিশনে আশাও দেখছেন ইমরুল হাসান,
‘এ বছর কোনো মতে দলটা করেছি। ফলে আমরা যে সর্বোচ্চটা দিয়ে দল গোছাতে পেরেছি তেমনটাও না। মোটামুটি একটা ব্যালেন্স দল করেছি। তবে আশা তো থাকেই ভালো কিছু করার।’
চ্যালেঞ্জ লিগে ভালো করতে ফর্টিস এফসি থেকে তিন বিদেশি ফুটবলার ইসা জেল্লা, ওকাফোর এবং পা ওমর বাবুকে নিয়ে কুয়েতের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় বসুন্ধরা কিংস। দলের ভারসাম্য নিয়ে ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন,
‘আমরা এবার স্থানীয় এবং বিদেশী যে খেলোয়াড় নিয়েছি মোটামুটি ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল হয়েছে। ফর্টিস থেকে তিনজন বিদেশী খেলোয়াড় নিয়েছি। সব মিলিয়ে এবার কম্বিনেশন মোটামুটি ভালো হয়েছে। আমরা আশা করছি এবার দলের কাছ থেকে ভালো কিছু পাবো।’
চ্যালেঞ্জ লিগের প্রিলিমিনারি ম্যাচে হেড কোচ ছাড়াই খেলে বসুন্ধরা কিংস। এরপর দলে যোগ দেন আর্জেন্টাইন অভিজ্ঞ কোচ মারিও গোমেজ। তার অধীনে কিংস জিতেছে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ কাপ। আবার ফেডারেশন কাপে ফর্টিস এফসির সঙ্গে ড্র করে দলটি। এরপর বাংলাদেশ ফুটবল লিগের প্রথম ম্যাচে পিডব্লিউডির বিপক্ষে জোড়া গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
তবে সোমবার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই ফর্টিসকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে লিগের প্রথম জয় তুলে নেয় ফেডারেশন কাপের ৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। নতুন কোচ মারিও গোমেজকে নিয়ে ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসানের মন্তব্য,
‘আসলে একটা কোচকে মূল্যায়ন করতে গেলে আরও কিছু সময় প্রয়োজন। অলওভার যেটা দেখেছি বা পেয়েছি, আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়েছে দলের সঙ্গে সে মিশে যেতে পেরেছে। দলের সব কিছু সে রপ্ত করতে পেরেছে। সে সামনের দিকে আরও ভালো কিছু দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।’
সেই ভালোটা যদি এএফসি মঞ্চে হয়, নতুন করে যদি লেখা হয় ইতিহাস, তবে তো কথাই নেই...