
এল ক্লাসিকোর শেষ চার লড়াইয়ে বার্সেলোনার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। হজম করেছে ১৬ গোল। এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। রাফিনিয়া-রবের্ত লেভানদোভস্কিরা চোটে, বার্সেলোনা ডাগআউটে পাচ্ছে না কোচ হ্যান্সি ফ্লিককেও। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মাঠে নামার আগেই যেন কিছুটা এগিয়ে স্বাগতিক রিয়াল!
এটাও অবশ্য ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই- একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছাড়াই নিজেদের সবশেষ ম্যাচে চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকোসের জালে ৬ বার বল পাঠায় বার্সেলোনা। তবে সামনে যখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি রিয়াল মাদ্রিদ, অতিথিদের জন্য তখন খেলাটা মনস্তাত্বিক ও মাঠে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
লা লিগায় ৯ ম্যাচে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের অর্জন ২৪ পয়েন্ট। সমানসংখ্যক ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে বার্সেলোনা। এল ক্লাসিকো দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ।
আরও পড়ুন
| ‘ক্ষুধা এখনও কমেনি’—৯৫০তম গোলের পর রোনালদোর বার্তা |
|
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে সব মিলিয়ে বার্সেলোনাকে কাগজে-কলমে দুর্বল দল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে অনেক সময় এই চাপহীন অবস্থাই খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করে তুলতে পারে। বড় ম্যাচে ছোট ছোট লড়াইগুলোই নির্ধারণ করে দিতে পারে ম্যাচে ভাগ্য। সেদিক থেকে এল ক্লাসিকোয় লড়াইয়ের মধ্যে আছে ‘তিন বিশেষ লড়াই’- যা ক্লাসিকোর ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে।
লামিন ইয়ামাল বনাম আলভারো কারেরাস
গ্রীষ্মে যুক্ত হওয়া রিয়াল মাদ্রিদের আলভারো কারেরাসের জন্য এটি প্রথম এল ক্লাসিকো, কিন্তু তাঁর প্রতিপক্ষ লামিন ইয়ামাল একেবারে অপরিচিত নন। এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা—এটি চতুর্থবার।
প্রথম দেখা হয়েছিল দুই বছর আগে, যখন কারেরাস খেলছিলেন গ্রানাডায় ধারে। সেই ম্যাচেই ইয়ামাল করেছিলেন নিজের প্রথম লা লিগা গোল। গত মৌসুমে দুবার দেখা হয় তাঁদের, যখন কারেরাস খেলতেন বেনফিকার হয়ে। প্রথম সাক্ষাতে, বার্সেলোনার স্মরণীয় ৫–৪ গোলের জয়ে, গোল বা অ্যাসিস্ট না করলেও ইয়ামাল ছিলেন আক্রমণের প্রাণ। দ্বিতীয়বার মুখোমুখি হন চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে, যেখানে বার্সা ১–০ গোলে জেতে। ইয়ামাল সেই ম্যাচে ১০০ শতাংশ ড্রিবল সাফল্য অর্জন করেছিলেন।
এই ইতিহাসই বলে দেয়— রিয়াল ডিফেন্স ভাঙতে ইয়ামালের গতি ও কৌশল হবে বার্সার বড় অস্ত্র, আর কারেরাসের কাজ হবে তাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
ফেরান তোরেস বনাম থিবো কর্তোয়া
চোট কাটিয়ে ফেরান তোরেসের ফেরাটা বার্সেলোনার জন্য স্বস্তির। সম্ভবত তিনিই থাকবেন মূল স্ট্রাইকার হিসেবে। কিন্তু সামনে আছেন ইউরোপের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক—থিবো কর্তোয়া।
গত কয়েক ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন বেলজিয়ান এই কিপার। হেতাফের বিপক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ এক-অন-ওয়ান সেভে দলকে রক্ষা করেছেন, আর জুভেন্টাসের বিপক্ষে দুশান ভ্লাহোভিচকে শূন্য হাতে ফেরান।
আতলেতিকোর বিপক্ষে বড় হারের পর থেকে রিয়াল মাদ্রিদ টানা চার ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছে। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ফেরানের জন্য কাজটা সহজ নয়- কর্তোয়াকে পরাস্ত করা। তাঁর নিখুঁত ফিনিশিং ও পজিশন সেন্সই পারে কর্তোয়ার দেয়াল ভেদ করতে। এই লড়াইয়ের ফলাফলই হয়তো নির্ধারণ করবে এল ক্লাসিকোর স্কোরলাইন।
আরও পড়ুন
| এল ক্লাসিকোয় রিয়ালের সামনে 'আহত' বার্সেলোনা |
|
পাউ কুবারসি বনাম কিলিয়ান এমবাপে
বার্সেলোনার তরুণ ডিফেন্ডার পাউ কুবারসির জন্য এটি এক বড় পরীক্ষা। তাঁর প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্র কিলিয়ান এমবাপে। এই মৌসুমে ইতিমধ্যে লা লিগায় ১০ গোল করেছেন ফরাসি তারকা, যার কল্যাণে টেবিলের শীর্ষে রিয়াল। কিন্তু এমবাপের বিপক্ষে কুবারসির রেকর্ড বেশ আশাব্যঞ্জক।
এ পর্যন্ত ছয়বার মুখোমুখি হয়েছেন দুজন, এর মধ্যে পাঁচবারই জয়ী হয়েছেন কুবারসি। ম্যাচপ্রতি গড়ে ৭.২ ক্লিয়ারেন্স এবং এমবাপের বিপক্ষে ২.৫০ পয়েন্টের সাফল্যই প্রমাণ করে—বড় তারকার বিপক্ষেও শান্ত ও কার্যকর থাকেন তিনি। বার্সার জন্য এমবাপেকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই হবে ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি।
রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা— দুই নামই ফুটবলের আবেগের প্রতীক। কিন্তু এবারের এল ক্লাসিকো শুধু মর্যাদার নয়, অনেক দিক থেকেই ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’। ইয়ামালের কৌশল-দক্ষতা, তোরেসের ফিনিশিং, আর কুবারসির দৃঢ় রক্ষণ—এই তিন লড়াইয়ে লুকিয়ে আছে ম্যাচের ভাগ্যরেখা। রিয়ালের শক্তি যতই বেশি হোক, ইতিহাস বলে—এল ক্লাসিকোতে ভবিষ্যৎ কখনো আগেভাগে লেখা যায় না।
No posts available.

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো প্রমাণ করে চলেছেন— বয়স শুধু সংখ্যা। ৪০ বছর বয়সেও গোলমেশিনের ধার আগের মতোই। শনিবার সৌদি প্রো লিগে আল–হাজমের বিপক্ষে আল-নাসরের ২–০ গোলে জয়ের ম্যাচে নিজের ক্যারিয়ারের ৯৫০তম গোল করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
রোনালদোর পাশাপাশি স্বদেশী হোয়াও ফেলিক্সও জাল কাঁপান। এই জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আল–নাসর। তিন পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলে দুই নম্বরে থাকা আল–তাওয়াউনের চেয়ে এবং গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন আল–ইত্তিহাদের চেয়ে এগিয়ে আট পয়েন্টে।
আরও পড়ুন
| ‘৯৫০’ গোলের মাইলফলকে রোনালদো |
|
ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষদের জন্য একরকম সতর্কবার্তাও দিয়েছেন রোনালদো। ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘দলের জয়ে সহায়তা করতে পেরে খুশি, আর ৯৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরে গর্বিত! আরও চাই, ক্ষুধা এখনও কমেনি!’
এই বার্তাই যেন প্রতিপক্ষদের জন্য সতর্কবার্তা। ক্লাব ও দেশের জার্সিতে রোনালদো এখনো পুরো উদ্যমে খেলতে চান, থামতে চান না এত সহজে। পুরুষ ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক ইতিমধ্যে রোনালদোই। এখন লক্ষ্য আরও বড়— ১০০০ গোলের অবিশ্বাস্য মাইলফলক।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পরিবারের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি এখনই অবসরের কথা ভাবছেন না। রোনালদোর ভাষায়, ‘অনেকে, বিশেষ করে পরিবার, বলে— এবার থামো, সব কিছুই তো অর্জন করেছ। কিন্তু আমি মনে করি এখনো অনেক কিছু দেওয়া বাকি। আমি ক্লাব ও জাতীয় দলে অবদান রাখছি, তাই কেন থামব? হয়তো বেশি বছর নয়, কিন্তু যতদিন খেলব, উপভোগ করে খেলব।’
৭ অক্টোবর পর্তুগাল ফুটবল গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসে আজীবন সম্মাননা পাওয়ার পর রোনালদো বলেন, ‘২০ বছর আগে হয়তো বলতাম, আমি পুরো পৃথিবী জিতে নিতে চাই। এখন ভাবনা বদলেছে। বয়স শিখিয়েছে—দিন দিন করে বাঁচতে হয়। আমি প্রতিটি অনুশীলন, প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করতে চাই।’
আগামী মঙ্গলবার কিং কাপ অব চ্যাম্পিয়নসের শেষ ষোলোতে মুখোমুখি হবে আল–নাসর ও আল–ইত্তিহাদ। রোনালদো বনাম তাঁর সাবেক সতীর্থ করিম বেনজেমা। চার দিন পর লিগে আল–ফায়হার বিপক্ষে ম্যাচ, ৫ নভেম্বর এএফসি কাপে ভারতীয় ক্লাব গোয়ার বিপক্ষে খেলবে রোনালদোর দল। ব্যস্ত সূচির শেষে নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাবে আল–নাসর।
জাতীয় দলের হয়েও রোনালদোর মিশন চলছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ‘এফ’ গ্রুপের শীর্ষে থাকা পর্তুগাল আগামী মাসে আয়ারল্যান্ড ও আর্মেনিয়ার বিপক্ষে খেলবে। হাঙ্গেরির বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো। পর্তুগাল যদি আয়ারল্যান্ডকে হারায় অথবা ড্র করে আর হাঙ্গেরি না জেতে, তবে সরাসরি নিশ্চিত হবে তাদের বিশ্বকাপের টিকিট।
আরও পড়ুন
| এল ক্লাসিকোয় রিয়ালের সামনে 'আহত' বার্সেলোনা |
|
রোনালদো জানেন—ফুটবল জীবনের সূর্যাস্ত কাছে, তবু থামছেন না। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘আমি জানি সময় বেশি নেই, কিন্তু যতদিন আছি, ততদিন পুরোটা দিতে চাই।’এমন ক্ষুধার নামই—ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো!

মৌসুমের শুরু থেকে চোট সমস্যায় ভুগছে বার্সেলোনা। একের পর এক আক্রমণভাগের খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না দলটি। এবার খেল বড় ধাক্কা—হ্যামস্ট্রিং চোট থেকে ফেরার পথে নতুন করে ব্যথা অনুভব করেছেন রাফিনিয়া।
প্রায় এক মাস ধরে মাঠের বাইরে থাকা ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গার সম্প্রতি সীমিত অনুশীলনে ফিরেছিলেন। লক্ষ্য ছিল এল ক্লাসিকোয় অন্তত কিছুটা সময় খেলা। কিন্তু দ্য অ্যাথলেটিকের প্রতিবেদন, অনুশীলনের সময় আবারও চোটের ঝুঁকিতে পড়েছেন রাফিনিয়া। অন্তত আরও এক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে তাঁকে।
বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কুস সর্গ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'রাফিনিয়ার মতো একজন খেলোয়াড়কে যেকোনো দলই মিস করবে। তবে যা হয়েছে, তা মেনে নিয়ে আমাদের সামলাতে হবে।'
আরও পড়ুন
| আল নাসরকে জিতিয়ে রোনালদোর ‘৯৫০’ |
|
চোটের কারণে দানি ওলমো ও আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনও নেই দলে। দীর্ঘ সময় ধরে মাঠের বাইরে রয়েছেন গাভি, টের স্টেগেন, লেভানদভস্কি ও হোয়ান গার্সিয়া।
ফেরান তোরেস সপ্তাহজুড়ে অনুশীলনে ছিলেন, তবে সতর্কতার কারণে জিরোনার বিপক্ষে খেলানো হয়নি। সর্গ জানিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাঁকে দেখা যেতে পারে সীমিত সময়ের জন্য। লামিন ইয়ামালও চোট থেকে ফিরেছেন।
জুলেন কুন্দেও রয়েছেন দলে, যদিও সপ্তাহের শুরুতে তার চোট নিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে সবচেয়ে বড় অনুপস্থিতি ডাগআউটে—টাচলাইন নিষেধাজ্ঞার কারণে এল ক্লাসিকোয় থাকতে পারবেন না প্রধান কোচ হান্সি ফ্লিক।
বার্সেলোনার চোট সংকটের এই সময় এল ক্লাসিকোতে মাঠে নামা দলের জন্য বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। কোচ নিষিদ্ধ, চোটের কারণে নেই তারকা খেলোয়াড়দের অনেকে। বলাই তো যায়, রিয়ালের বিপক্ষে আজ 'আহত' বার্সেলোনা খেলবে!

ধীরে ধীরে হাজার গোলের কাঙ্খিত মাইলফলকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এরই মধ্যে তিনি পৌঁছে গেছেন ৯৫০ গোলের চূড়ায়। আল নাসরকে এনে দিয়েছেন টানা ষষ্ঠ জয়।
সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে শনিবার রাতে আল হাজমকে ২-০ গোলে হারায় আল নাসর। প্রতিপক্ষের মাঠে দলের জয়ে একটি করে গোল দেন হোয়াও ফেলিক্স ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
এ নিয়ে লিগের শুরুর ছয় ম্যাচই জিতল আল নাসর। পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই রয়েছে তারা। সমান ম্যাচে মাত্র ৫ পয়েন্ট পাওয়া আল হাজমের অবস্থান ১৪তম।
আরও পড়ুন
| সালাহর গোলের পরও টানা ৪ ম্যাচ হারল লিভারপুল |
|
প্রতিপক্ষের মাঠে পূর্ণ আধিপত্য দেখিয়েই খেলে আল নাসর। ম্যাচের প্রায় ৬৪ শতাংশ সময় বলের দখল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে তারা। গোলের জন্য করে মোট ১২টি শট। যার মধ্যে ৭টিই ছিল লক্ষ্য বরাবর। তবে দুটির বেশি গোল তারা পায়নি।
ম্যাচের ২৫ মিনিটে বাম পাশ দিয়ে এগিয়ে দিয়ে দারুণ ক্রস দেন আয়মান ইয়াহিয়া। ডি-বক্সের মাঝে থেকে বেশ খানিকটা লাফিয়ে চমৎকার হেডে বল জালে জড়ান ফেলিক্স।
প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি আল নাসর।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৬০ মিনিটের সময় গোলরক্ষককে একা পান রোনালদো। তবে গোল করতে পারেননি। উল্টো পড়ে গিয়ে পেনাল্টির আবেদন করেন পর্তুগিজ মহাতারকা। ভিএআর দেখে তার আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি।
তবে ৮৮ মিনিটে আর ভুল হয়নি রোনালদোর। কিছুক্ষণ আগে বদলি নামা ব্রাজিলিয়ান তরুণ ওয়েসলি গাসোভার পাস থেকে বাম পায়ের টোকায় জালের ঠিকানা খুঁজে নেন পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ী ফুটবলার। পেশাদার ক্যারিয়ারে এটি তার ৯৫০তম গোল।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরই হতে পারছে না লিভারপুল। একের পর এক পরাজয়ের ধাক্কায় উল্টো জর্জরিত অবস্থায় পড়ে যাচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা। সবশেষ তারা হেরে গেল ব্রেন্টফোর্ডের কাছে।
প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার রাতের ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরেছে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগে এ নিয়ে টানা ৪ ম্যাচ হারল তারা।
৯ ম্যাচে ৪ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয় নম্বরে নেমে গেছে লিভারপুল। সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দশে ব্রেন্টফোর্ড। ৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল।
নিজেদের ঘরের মাঠে দাপুটে ফুটবলই খেলেছে ব্রেন্টফোর্ড। বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকলেও গোলের জন্য মোট ১৭টি শট করে ৮টিই লক্ষ্যে রাখে তারা। বিপরীতে লিভারপুলের ১৫টি শটের মধ্যে লক্ষ্য বরাবর ছিল ৫টি।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই স্বাগতিক দলকে এগিয়ে দেন ড্যাঙ্গো আউত্তারা। এর পাঁচ মিনিট পর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মোহামেদ সালাহ। পরে ২০ মিনিটের মাথায় ফ্লোরিয়ান ভার্টজও হতাশ করলে সমতা ফেরান হয়নি লিভারপুলের।
উল্টো ম্যাচের ৪৫ মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ করে দেন ব্রেন্টফোর্ডের জার্মান উইঙ্গার কেভিন শ্যাড। তবে অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে মিলোস কার্কেজের গোলে ব্যবধান কমিয়ে বিরতিতে যায় অল রেডরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ভুল করে বসেন ভার্জিল ফন ডাইক। ডি-বক্সের মধ্যে তিনি ড্যাঙ্গোকে ফাউল করলে ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে ব্যবধান ৩-১ করে দেন ইগোর থিয়াগো।
ম্যাচে ফিরতে মরিয়া লিভারপুল বেশ কিছু জোরাল চেষ্টা চালায়। তবে তেমন সফল হয়নি। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে মোহামেদ সালাহ গোল করলে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় লিভারপুল। কিন্তু এরপর আর জালের দেখা পায়নি তারা।

তবে কি অনামিশার রাতের অবসান ঘটল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভাগ্যে ? ভোরের আলো বুঝি উঁকি দিতে শুরু করেছে বনেদি ক্লাবটির দুয়ারে। হারতে হারতে ক্লান্ত বিধ্বস্ত ক্লাবটি যে টানা তৃতীয় জয়ের দেখা পেল।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এবার ব্রাইটনের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাথিউস কুনহা ও কাসেমিরোর গোলের পর ব্রায়ান এমবুয়েমোর জোড়া গোলে দারুণ এক জয় পায় রেড ডেভিলরা। ব্রাইটনের হয়ে ব্যবধান কমানো দুটি গোল করেন ড্যারি ওয়েলব্যাক ও চারালাম্পোস কোস্তুলাস।
সান্ডারল্যান্ড ও লিভারপুলের বিপক্ষে জয়ের পর ব্রাইটনের বিপক্ষে দারুণ এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে চারে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নয় ম্যাচে ৫ জয়, এক ড্র ও ৩ হারে রুমেন আমোরিমের দলের অর্জন ১৬ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তিনে ম্যানচেস্টার সিটি। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ব্রাইটন।
ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে ২৪ মিনিটে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কাসেমিরোর পাস থেকে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন কুনহা। মিনিট দশেক পরই ব্যবধান দ্বিগুন করে স্বাগতিকরা। এবার গোলদাতার ভূমিকায় কাসেমিরো। লুক শ’ এর অ্যাসিস্ট থেকে বুলেট শট নেন কাসেমিরো। বল ব্রাইটনের মিডফিল্ডার আয়ারির পিঠে লেগে দিক পরিবর্তন করে, তাতে সফরকারী দলের গোলকিপার বার্ট ভারব্রুগেনকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়ায় জালে।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে কখনও প্রিমিয়ার লিগ হারের অভিজ্ঞতা নেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ৩২৬টি ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে ৩০১ বার, আর ২৫টি ম্যাচ শেষ হয়েছে ড্রয়ে। দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাওয়া ক্লাবটি হয়তো এই পরিসংখ্যানেও নির্ভার থাকতে পারছিল না।
৬১ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন এমবুয়েমা। বেঞ্জামিন সেস্কোর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ড্রিবলিংয়ের পর প্রতিপক্ষের একজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন ক্যামেরুনের এই মিডফিল্ডার।
৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর সহজ এক জয়ই দেখছিল ইউনাইটডে। তবে ৭৪ মিনিটে ব্যবধান কমানোর পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আরেক গোলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয় ব্রাইটন। শেষ পর্যন্ত যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে জোড়া গোল পূর্ণ করে ব্যবধান ৪-২ করেন এমবুয়েলা। কেটে যায় সব শঙ্কা। আর তিন পয়েন্ট অর্জনের স্বত্বি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।