
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আজ রাতে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে পর্তুগাল। প্রতিপক্ষের মাঠে এই ম্যাচে জিতলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দল।
ঘরের মাঠে পর্তুগালের বিপক্ষে এই ম্যাচে জিততে প্রাণপনে লড়বে আয়ারল্যান্ডও। ম্যাচটিতে হারলেই যে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে আইরিশদের।
গ্রুপ ‘এফ’ থেকে চার ম্যাচে ৩ জয় ও ১ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পর্তুগাল। সমান ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে হাঙ্গেরি। এক পয়েন্ট কমে তিনে আয়ারল্যান্ড। আর তিন পয়েন্ট আর্মেনিয়ার। তাতে প্লে অফে খেলার আশা বেঁচে আছে পয়েন্ট টেবিলের শেষ তিনটি দলেরই।
এক মাস আগে লিসবনে রুবেন নেভেসের শেষ মুহূর্তের গোলে আয়ারল্যান্ডকে হারায় পর্তুগাল। এবার ফিরতি ম্যাচে আইরিশতের মুখোমুখি হওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষ সমর্থকদের দুয়োধ্বনির শিকার হতে পারেন বলে জানান রোনালদো। তবে এমন কিছু হলে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আল নাসরের তারকা ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
| নেপাল ম্যাচ দেখাবে টি-স্পোর্টস, শেষ মুহূর্তে টিকিট কেনার হিড়িক |
|
বুধবার মিডিয়ার সঙ্গে আলাপে রোনালদো জানিয়েছেন, তিনি জানেন যে বুশের শিকার হতে পারেন, তবে তার একমাত্র মনোযোগ থাকবে দলের জয় এবং তার শেষ ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে খেলার লক্ষ্যে।
আয়ারল্যান্ডের মাঠে ভালো ছেলে হয়ে থাকার চেষ্টা করবেন রোনালদো, ‘আমি এখানে সমর্থকদের খুব পছন্দ করি। তারা জাতীয় দলকে যে সমর্থন দেন, তা সত্যিই অসাধারণ। আবার এখানে খেলতে আসা আমার জন্য আনন্দের বিষয়। অবশ্যই ম্যাচটি কঠিন হবে। আশা করি তারা খুব বেশি দুয়োধ্বনি দিবে না। আমি শপথ করছি, ভালো ছেলে হওয়ার চেষ্টা করব।
অবশ্য নিজের আসল কাজ গোল করতে মুখিয়ে আছেন রোনালদো, ‘তবে অবশ্যই আমি আমার কাজ করব। আমি খেলার চেষ্টা করব, গোল করার চেষ্টা করব এবং আমার দলকে সাহায্য করব। আমি নিশ্চিত ম্যাচটি কঠিন হবে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ দেখায় রোনালদোর রাতটা মোটেই সুখকর ছিল না। সেই ম্যাচে আইরিশ গোলকিপার কাওইমিন কেলাহের পর্তুগিজ মহাতারকার একটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন।
ওই ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের ভক্তরা অভিযোগ করেছিলেন, রোনালদো ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছেন। তবে সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে রোনালদো বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক, কারণ তারা জানে যদি তারা হেরে যায়, তারা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবে। তাই তারা খেলার আগে নানা ছলচাতুরী করতে চেষ্টা করে।’
সম্প্রতি রোনালদো নিশ্চিত করেছেন এই বিশ্বকাপই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। তবে ৪০ বছর বয়সী এই তারকা আরও কিছু ট্রফি জেতার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জাতীয় দলের হয়ে ১৪৩ আন্তর্জাতিক গোলের মালিক রোনালদোর লক্ষ্য কেবল নিজেকে ঘিরে নেই, ‘একটি জাতীয় দল একজন ভালো খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে না, তবে ভালো খেলোয়াড় থাকলে দল অনেক সাহায্য পায়, বিশেষ করে গোলের মাধ্যমে। আমার জন্য গোল করা সবসময় ভালো। আমি এই বিশ্বকাপ খেলতে চাই, তবে আমরা ধাপে ধাপে এগোব।’
No posts available.
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৯:০৪ এম

সন্দেহাতীতভাবে বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। স্প্যানিশ ক্লাবটির হয়ে কতশত স্বরণীয় মুহূর্তের জন্ম দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা সে হিসেব করে কূল পাওয়া যাবে না। নিজেদের ইতিহাসের সেরা ফুটবলারকে চিরস্বরনীয় করে রাখতে ভাস্কর্য স্থাপন করবে বার্সা।
সম্প্রতি কাউকে ঘুণাক্ষরেও টের পেতে না দিয়ে ক্যাম্প ন্যুতে ঘরে যান মেসি। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে কোনো একদিন সাবেক ক্লাবে ফেরারও বার্তা দেন ইন্টার মায়ামির মহাতারকা। তবে আপাতত মেসির ফেরা অবাস্তাব বলেন বার্সেলোনার সভাপতি জোয়ান লাপার্তা। অবশ্য বার্সা কিংবদন্তিকে ক্যাম্প ন্যুতে ইতিহাসের সেরা শ্রদ্ধা জানানোর পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি।
বার্সার প্রধান স্টেডিয়াম ক্যাম্প ন্যু’এর সংস্কার কাজ প্রায়ই শেষ হয়ে এসেছে। বার্সেলোনা সভাপতি নিশ্চিত করেছেন ক্যাম্প ন্যু বাইরে লিওনেল মেসির একটি ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। লাপার্তা বলেন,
‘আমরা সকল কিউল (বার্সা সমর্থক) চাই, লিও মেসির একটি ভাস্কর্য স্পোটিফাই ক্যাম্প ন্যুতে থাকুক। আমরা এর ওপর কাজ করছি, এবং যদি মেসির পরিবার একমত হয়, ডিজাইন তৈরি হলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
লাপার্তা আরও যোগ করেন,
‘মেসি সবসময় বার্সার অংশ হয়ে থাকবেন। তিনি জানেন আমাদের দরজা সবসময় তার জন্য খোলা। আমরা তার প্রতি পূর্ণ সম্মান রাখি। বার্সার থেকে সেরা শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য মেসি।’
ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়ামের বাইরে ক্লাবটির কিংবদন্তি জোয়ান ক্রুইফ ও লাসজলো কুবালার ভাস্কর্য আছে। তাদের মতো মেসিকেও কাতালান ক্লাবটি চিরস্বরণীয় করে রাখতে প্রতিমূর্তি তৈরির করবে বলে জানান বার্সা সভাপতি,
‘মেসির স্পোটিফাই ক্যাম্প ন্যুতে একটি ভাস্কর্য থাকা উচিত, ঠিক ক্রুইফ এবং কুবালার মতো। তিনি এমন একজন আইকনিক খেলোয়াড়, যার ছাপ বার্সার হৃদয়ে চিরঅম্লান থাকবে।’
২০২১ সালে হঠাৎ বার্সেলোনা ছাড়তে হয় মেসিকে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির একাডেমিতে যোগ দেন তিনি। ক্লাবটিতে ২১ বছরে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল করেছেন এবং ১০টি লা লিগা শিরোপা, চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি এবং তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন ৩৮ বছর বয়সী ফুটবলার।

কাতালান ডার্বিতে লামিনে ইয়ামালের সেই গোল এখনো চোখে লেগে থাকার কথা ফুটবলপ্রেমীদের। গত মৌসুমে স্পেনিওলের বিপক্ষে বার্সেলোনার তরুণ তারকা উইঙ্গারের চোখ ধাঁধানো বাঁকানো শট গোলকিপার জোয়ান গার্সিয়াকে পরাস্ত করে।
ইয়ামালের সেই গোল বর্ষসেরা (ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড) গোলের জন্য মনোনীত হয়েছে। গতকাল ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড এবং মার্টা অ্যাওয়ার্ডের মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। মূলত পুরুষ ও নারী ফুটবলে সারা বছরে সেরা সব গোলের মধ্যে সবচেয়ে সেরা গোলের স্বীকৃতি স্বরুপ পুসকাস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
বর্ষসেরা গোলের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে ১১টি গোল। সবশেষ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতা ম্যাচে ডেকলান রাইসের দুর্দান্ত ফ্রি-কিক আছে এই তালিকায়।
সবশেষ পুসকাস জিতেছিলেন চেলসির আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলেজান্দ্রো গারনাচো। ২০২৪ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এভারটনের বিপক্ষে অসাধারণ ওভারহেড কিকে জন্য এই স্বীকৃতি পান তিনি।
পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ী নির্ধারিত হবে ফ্যানদের ভোট এবং `ফিফা লেজেন্ডস’ প্যানেলের ভোটের সমন্বয়ে। ১১ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত ফুটবলারদের সেরা গোল বাছাই করা হয়।
ফিফার বাছাই করা সেরা ১১ গোল দেখে নিন: https://www.fifa.com/en/cat/6qqB054aCB8jEeL7HRWpOe
পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের জন্য ভোট দিতে ফিফার অফিসিয়াল সাইটে নিবন্ধন করতে হবে ফ্যানদের। নিবন্ধনের পর তারা তাদের তিনটি প্রিয় গোলকে ক্রমান্বয়ে ভোট দিতে পারবেন। প্রথম পছন্দে ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় পছন্দে ৩ পয়েন্ট, এবং তৃতীয় পছন্দে ১ পয়েন্ট।
দেখে নেওয়া যাক কারা পেল পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের মনোনয়ন :
আলার্রান্ড্রো (ক্রুজেইরো), আলেসান্দ্রো ডেইলোয়া (ক্যালিয়ারি), পেদ্রো দে লা ভেগা (সিয়াটল সাউন্ডার্স), সান্তিয়াগো মন্টিয়েল (ইনডিপেন্ডিয়েন্ট), আমর নাসের (ফার্কো), কার্লোস ওরান্তিয়া (এটলাস), লুকাস রিবেইরো (মমেলোদি সান্ডাউন্স), ডেকলান রাইস (আর্সেনাল), রিজকি রিদো (পার্সিজা জাকার্তা), কেভিন রোদ্রিগেজ (কাসিমপাশা), লামিনে ইয়ামাল (বার্সেলোনা)।

কোথায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে বিশ্বকাপে টিকিট কাটার আনন্দে থাকার কথা পর্তুগালের। শেষ পর্যন্ত আইরিশদের মাঠে হারের হতাশার সঙ্গে দলের সেরা তারকার লাল কার্ড হজম করতে হয়েছে তাদের। মরার ওপর খাঁরার ঘা হিসেবে অপেক্ষা করছে আরো বিপদ।
আয়াল্যান্ডের ডাবলিনে আভিভা স্টেডিয়ামে ৬১ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আয়ারল্যান্ডের ডিফেন্ডার দারা ও’শিয়াকে কনুই দিয়ে আঘাত করে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখলেও পরে ভিডিও সহকারী রেফারির (ভার) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে লাল কার্ড দেখেন ৪০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবার লাল কার্ড দেখার পর ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের অন্তত প্রথম ম্যাচে নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। আল নাসরের ফরোয়ার্ড রোনালদোকে লাল কার্ডের জন্য বাধ্যতামূলক এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করতে হবে। যা প্রয়োগ হবে পর্তুগালের আর্মেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। এই ম্যাচে জয় পেলে দল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো যৌথ আয়োজনের বিশ্বকাপে পৌঁছে যাবে পর্তুগাল।
আরও পড়ুন
| ‘ব্যাড বয়’ রোনালদোর প্রথম লাল কার্ড, হেরেই গেল পর্তুগাল |
|
ফিফার শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী, ‘গুরুতর ফাউল প্লের জন্য অন্তত দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করতে হবে। হিংস্র আচরণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা অন্তত তিন ম্যাচ বা প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য” হতে পারে। যেখানে কনুই দিয়ে আঘাত করার মতো আচরণও অন্তর্ভুক্ত। ফিফার এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে প্রযোজ্য, কোনো প্রীতি ম্যাচের জন্য নয়।
ম্যাচ শেষে পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ রোনালদোর লাল কার্ড প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই লাল কার্ডটি এসেছে এমন একজন অধিনায়কের জন্য যাকে আগে কখনও এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি — এটা কৃতিত্বের যোগ্য। আজকের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এটা একটু কঠিন। সে প্রায় ৫৮-৬০ মিনিট বক্সে আটকে ছিল, টানা ধাক্কা খাচ্ছিল, তখন আসলে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করে রোনালদো।’
পর্তুগাল কোচের মতে এটি গুরুতর কিছু নয়, ‘আমি মনে করি এই কাজটি ক্যামেরায় যতটা মনে হচ্ছে তার চেয়েও কম গুরুতর। আমি মনে করি এটা পুরো শরীরি লড়াই ছিল, কনুই নয়।’
ম্যাচের আগে পর্তুগালের অধিনায়ক রোনালদো আশা করেছিলেন দর্শকদের দুয়োধ্বনির মধ্যেও ‘ভাল ছেলে’ হিসাবে খেলার চেষ্টা করবেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না আল নাসর ফরোয়ার্ড।

ক্লাব কিংবা জাতীয় দল গোলের ধারা চলছেই কিলিয়ান এমবাপের। গতকাল রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ফ্রান্স। বড় জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেন এমবাপে। একটি করে গোল আসে হুগো একিতিকে ও মাইকেল ওলিসে।
এই জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করল ফ্রান্স। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘ডি’ থেকে পাঁচ ম্যাচে ৪ জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে দিদিয়ের দেশমদের দল। গোল ব্যবধানে সমান সাত পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে দুইয়ে ও তিনে থাকা আইসল্যান্ড ও ইউক্রেন প্লে অফ খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল।
নিজেদের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে দাপট দেখিয়ে একের পর এক গোল করে স্বাগতিকরা। মাইকেল ওলিসে বক্সের ভেতর ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স, সেখান থেকেই গোলের বন্যা শুরু।
আরও পড়ুন
| ৭০ বছর পর ‘নতুন নামে’ রিয়াল মাদ্রিদের হোম ভেন্যু |
|
রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড এমবাপে এগিয়ে এসে ঠান্ডা মাথায় চিপ করে পানেনকা শটে বল জালে পাঠান। আর গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন ডাইভ দিয়ে ভুল দিকে চলে যান।
পেনাল্টি পেতে পারত ইউক্রেনও। বক্সের ভেতর দায়োত উপামেকানোর চ্যালেঞ্জে রেফারি স্লাভকো ভিনচিচ খেলা চালিয়ে যেতে বলেন। ভিএআর মনিটর দেখার পরও তিনি তার আগের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।
৭৬ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করেন বায়ার্ন মিউনিখের উইঙ্গার ওলিসে। ৭ মিনিট পর আবার গোলে দেখা পায় ফ্রান্স। ফুটবল ক্যারিয়ারের ৪০০তম গোল পূর্ণ করেন এমবাপে। আর জাতীয় দলের হয়ে তার গোলসংখ্যা এখন ৫৫। ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করা অলিভিয়ে জিরুর (৫৭) রেকর্ডের আরও কাছে এখন এমবাপে।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দুই মিনিট বাকি থাকতে এমবাপে নিঃস্বার্থভাবে বল বাড়িয়ে দেন একিতিকেকে। লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড ইউক্রেনের গোলকিপারের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে ফ্রান্সের হয়ে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলটি করেন।

‘ভালো ছেলে’ হয়ে আয়ারল্যান্ডের মাঠে খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে কথা রাখতে পারলেন না ‘সিআর সেভেন’। উল্টো জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো লাল কার্ড দেখার তেতো অভিজ্ঞতা হলো রোনালদোর। আর তাঁর এমন দুর্দশার রাতে হেরেছে পর্তুগালও।
বিশ্বকাপ বাছাপর্বে গতকাল রাতে আয়াল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছে পর্তুগাল। ম্যাচের ৬১ মিনিটে আইরিশ ডিফেন্ডার দারা ও’শেকে ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় রোনালদোকে শুরুতে হলুদ কার্ড দেখানো হলেও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির পরামর্শে তা লাল কার্ডে পরিবর্তন করা হয়। জোড়া গোল করে আয়ারল্যান্ডের জয়ের নায়ক ট্রয় প্যারোট।
আরও পড়ুন
| ভারতের বিপক্ষে খেলবেন কি না, জানালেন হামজা-জায়ান |
|
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি জিতলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হতো পর্তুগালের। তবে হারের পরও রোনালদোদের সুযোগ ভালোভাবেই টিকে আছে। আগামী রোববার আর্মেনিয়াকে হারালেই বিশ্বকাপে পৌঁছে যাবে পর্তুগাল।
এই হারের পর পাঁচ ম্যাচে ৩ জয়, এক হার ও এক ড্রয়ে পর্তুগালের পয়েন্ট ১০। একই সময়ে হাঙ্গেরি ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে। এক পয়েন্ট কম নিয়ে তিনে আয়ারল্যান্ড। গ্রুপ ‘এফ’ থেকে আর্মেনিয়া ছাড়া বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ টিকে আছে তিন দলেরই।
ডাবলিনে পৌঁছে রোনালদো ভদ্র আচরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—“গুড বয়” হওয়ার কথা বলেছিলেন। সুইডিশ রেফারি গ্লেন নিয়বার্গ—যাকে ম্যাচের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল যেন রোনালদো ম্যাচ পরিচালনায় প্রভাব ফেলতে না পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত আল নাসর তারকাকে লাল কার্ড দেখানো ছাড়া কোনো পথ খোলা ছিল না তাঁর।
ডাচ ক্লাব এজেড আল্কমারের ফরোয়ার্ড প্যারট প্রথমার্ধে দুই গোল করে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন। ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি রোনালদো। নিজেদের মাঠে ১৭তম মিনিটে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। জশ কুলেনের সেট-পিস থেকে লিয়াম স্কেলস দূরের পোস্টে গিয়ে বল বক্সে ফেলেন, আর প্যারট খুব কাছ থেকে বল জালে ঠেলে দেন।
প্রথামার্ধের আট মিনিট আগে জোয়াও নেভেসের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। রুবেন দিয়াসের ক্রসে জোয়াও ফেলিক্সের হেড নেওয়া শট জালের উপর দিয়ে চলে যায়। তবে বিরতির ঠিক আগে আয়ারল্যান্ড লিড দ্বিগুণ করতে পারত। তবে তাদের শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
পিছিয়ে পড়ে পর্তুগাল চাপ বাড়ালেও স্রোতের বিপরীতে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে প্যারট দ্বিতীয় গোলটি করেন।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর দু'মিনিটের মধ্যেই পর্তুগাল ব্যবধান কমাতে পারত। দ্বিতীয়ার্ধে নামা রেনাতো ভেইগা, বার্নার্দো সিলভার কর্নার থেকে বল ঠেলে ভিতিনিয়ার সামনে ফেলেন। কিন্তু ফাঁকা অবস্থায় থেকেও বল জালে জড়াতে পারেননি পিএসজি মিডফিল্ডার। শট নষ্ট করেন।
আরও পড়ুন
| পুরোনো রোগে ম্লান হামজা ম্যাজিক |
|
পর্তুগাল বড় ধাক্কা খায় ৫৯ মিনিটে। ও’শেয়াকে হাত নাড়ানোর ঘটনায় রোনালদোকে প্রথমে কেবল হলুদ কার্ড দেখানো হয়, পরে সেটা ভারে লাল কার্ডে পরিণত হয়।
সাইডলাইনে রোনালদো ও হলগ্রিমসনের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলাপ হয়, যা করমর্দনে শেষ হয়। তবে দুজনই জানতেন, ওই মুহূর্তেই ম্যাচ কার্যত শেষ। পর্তুগালের একের পর এক আক্রমণের মধ্যেও আয়ারল্যান্ড শেষ পর্যন্ত দারুণভাবে জয় নিশ্চিত করে। পর্তুগালের হয়ে ২২৬তম ম্যাচ প্রথম লাল কার্ড দেখার অভিজ্ঞতা হলো রোনালদোর। পুরুষদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলে লাল কার্ড দেখলেন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারে অবশ্য ১৩ বার লাল কার্ড দেখেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
লাল কার্ড মাঠ ছাড়ার সময় আয়ারল্যান্ড সমর্থকদের ব্যঙ্গ–বিদ্রূপের দিকে রোনালদো করতালি ও ‘থাম্বস আপ’ দেখান। দশজনের দলে পরিণত হওয়া পর্তুগালের লড়াই কার্যত সেখানেই শেষ হয় ।এরপর আর ম্যাচেই ফিরতে পারেনি সফরকারীরা।