প্রথম লেগে বার্সেলোনা তিন গোল হজম করায় রক্ষণভাগ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ঘরের মাঠে উজ্জীবিত ইন্তার মিলান কাউন্টার এটাকে শুরুটা করল দুর্দান্ত। বিরতির আগেই দুই গোল খেয়ে কোনঠাসা হয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের দল। দারুণ এক কামব্যাকে একে একে তিন গোল দিয়ে এক পর্যায়ে বার্সেলোনাই পাচ্ছিল জয়ের সুবাস। তবে এই ইন্তার যে হার মানার নয়। ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে শেষ হাসি হাসল সিমোনে ইনজাগির দল।
সান সিরোতে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ইন্তার। দুই লেগ মিলিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি জিতেছে ৭-৬ ব্যবধানে। ২০২৩ সালের পর আবারও দলটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে আর্সেনাল বা পিএসজি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে গতিতে ইন্তার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল, অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাপ-ইনের। তবে পাস না বাড়িয়ে গোলের জন্য শট নিয়ে ব্যর্থ হন ফেররান তরেস।
আরও পড়ুন
পর্তুগাল দলে ডাক পেলেন ছেলে, ‘গর্বিত’ বাবা রোনালদো |
![]() |
ম্যাচের প্রথম দিকে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ এড়িয়ে আক্রমণে যেতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইন্তারকে। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে ৭৪ বার প্রতিপক্ষকে অফসাইডে ফেলেছে দলটি।
১৭তম মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইন্তারের বক্স থেকে বলের দখল নিয়ে লম্ব ক্রস বাড়ান, বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্সকে বিপদে ফেলে বল নিয়ে ফেদেরিকো দিমার্কো পাস দেন লাউতারোকে। তবে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি আর, এর আগে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
মিনিট তিনেক বাদে ডান দিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে নিকোলা বারেল্লার নেওয়া জোরাল শট কোনোমতে সেভ করে ওয়েচেজ সেজনি। তবে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ পার করে শেষ পর্যন্ত ইন্তারের লিড নেওয়ায় ভূমিকা রাখেন প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ডেনজেল ডামফ্রিস।
পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বল পেয়ে ডান দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। বার্সেলোনার রক্ষণভাগের চেয়ে বক্সে ইন্তারের খেলোয়াড়ই বেশি। সেজনি এগিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গেলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন ডামফ্রিস, যেখান থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ ম্যাচে এটি লাউতারোর ৯ নম্বর গোল। এই গোলটি ইন্তারের জন্য গুরুত্বছিলপূর্ণ ছিল, কারণ এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে গোল দিয়ে এই লড়াইয়ের আগে ১০ ম্যাচের একটিতেও হারেনি সেরি আর ক্লাবটি। আর সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ ৪৯টি হোম ম্যাচে মাত্র একটিতে আগে গোল করে হারের রেকর্ড ছিল ইন্তারের।
আরও পড়ুন
মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
![]() |
ওই গোলের খানিক বাদে ইন্তারের বক্সের ভেতর পেদ্রির শট প্রতিপক্ষের একজনের হাতে লাগলে ওঠে পেনাল্টির দাবি। তবে রেফারি তা নাকোচ করে দেন।
৩৬তম মিনিটে বিরতির আগে নিজেদের সেরা সুযোগটা পায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইন্তারের কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে পেছনে ফেলে ডান দিক থেকে একটা শট নেন, যা শেষ চলে যায় অল্পের জন্য পোষ্টের বাইরে দিয়ে। অল্পের জন্য ট্যাপ-ইন করতে ব্যর্থ হন তরেস।
তবে একের পর এক আক্রমণে ইন্তারকে ব্যতিব্যস্ত রাখেন ইয়ামাল, যাকে নিয়ে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি। ডাবল মার্কিং করে তার পরিকল্পনা ছিল ইয়ামালকে আটকানোর।
তবে কাজটা ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিন হয়ে ওঠে। ৩৯তম মিনিটে ফের গতি দিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল। তবে ছয় গজের ভেতর শেষ সময়ে দুর্দান্ত এক স্লাইড ট্যাকেল করে সেযাত্রায় দলকে রক্ষা করেন বাস্তোনি।
এরই মাঝে ম্যাচের ধারার বিপরীতে পেনাল্টি হজম করে বসে বার্সেলোনা। লাউতারোকে আটকাতে বক্সের ভেতর ফাউল করেন পাউ কুবার্সি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁদিকে বল জালে পাঠান হাকান কালহানোগলু।
দুই গোল খেয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা বিরতির আগে মাত্র ছয়টি শট থেকে একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৫১তম মিনিটে ফের ইন্তার বল জালে পাঠালেও এবার আর গোল মেলেনি অফসাইডের কারণে।
এর ঠিক দুই মিনিট পর বার্সেলোনার ক্যামব্যাকের সূচনা করেন এরিক গার্সিয়া। জটলার মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে সান সিরোতে স্তব্ধতা নিয়ে আসেন তিনি। সেই গোলের রেশ না কাটতেই আরও একটি গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। তবে ছয় গজ থেকে নেওয়া তার শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান সোমের।
তবে আরেকটি রেমোনটাডার স্বপ্নের বিভর বার্সেলোনা আক্রমণের ঢেউয়ে বেসামাল ইন্তার বেশিক্ষণ পারেনি সামাল দিতে। বাঁদিক থেকে জেরার্ড মার্তিনের দারুণ এক ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে গোল করেন দানি ওলমো।
ছন্দহীন ইন্তার ৬৮তম মিনিটে বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছিল। আগুয়ান ইয়ামালকে ফাউল করে শুরুতে পেনাল্টি উপহার দিয়ে ফেলেছিলেন হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে রেফারি পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান ভিএআরে দেখে, যেখানে দেখা যায় ফাউলটি করা হয়েছিল ঠিক বক্সের বাইরে।
৭৯তম মিনিটে কাট করে বক্সের ভেতর থেকে গতিময় এক শট নেন ইয়ামাল, তবে পোষ্টের নিয়ে আস্থার পরিচয় দেন সোমের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ স্কোরলাইনে লড়াই যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, তখনই চিত্রে হাজির পুরো ম্যাচে প্রায় অচেনা ছন্দে থাকা রাফিনিয়া।
৮৭তম মিনিটে মিলান শিবিরকে হতাশায় ভাসিয়ে বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে তার নেওয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন সোমের, তবে ফিরতি বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল হয়নি তার।
আরও পড়ুন
অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
![]() |
এই গোলের মধ্য দিয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রাফিনিয়া। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩টি গোলের সাথে তার নামের পাশে রয়েছে ৮টি অ্যাসিস্ট। এক মৌসুমে গোলে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার সমান (২১টি) রয়েছে কেবল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
এই গোলের পর বার্সেলোনার জয় যখন ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন মিলান শিবিরে আশার আলো নিয়ে আসেন ফ্রান্সেস্কো এসেরবি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম মৌসুমে একটি গোলও না করা অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার প্রথম গোলের জন্য বেছে নেন সেরা উপলক্ষ্য।
ডান দিক থেকে স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস বাড়ান ডামফ্রিস। রক্ষণ ছেড়ে স্ট্রাইকার বনে যাওয়া এসেরবি বল রিসিভ করে কিছুটা সময় নিয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে বল পাঠান জালে, যা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না সেজনির।
ম্যাচের এমন সময়ে গোল, স্বাভাবিকভাবে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দলের সাথে মেতে ওঠেন এসেরবিও। উদযাপন করার সময় তিনি জার্সি খুলে ফেলেন এবং এজন্য তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তবে তাতে আর কীইবা আসে যায়!
এই গোলের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে শালকের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রায়ান গিগসের পর এসেরবি (৩৭ বছর ৮৫ দিন) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় (৩৭ বছর ১৪৮ দিন) হিসেবে জালের দেখে পেয়েছেন।
জয়ের সুবাস পেতে পেতে এমন একটা গোল খেয়ে বসলে একটা দলের মানসিকতায় তাতে আসতে পারে বড়সড় আঘাত। বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও হয় ঠিক তাই। তার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় ইন্তার।
ডান দিক থেকে উঠে মার্কাস থুরাম দাভিদ ফ্রাত্তেসিকে পাস বাড়ান। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বক্সের ভেতরে মেহেদি তারেমির সাথে ওয়ান-টু খেলে এরপর প্লেসিং শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এটি ছিল এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বার্সেলোনার হজম করা ২৪তম গোল, যা এক আসরে ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের জন্য মরিয়া বার্সেলোনা খেলে অল আউট ফুটবল। ইয়ামালের ক্রস থেকে বদলি নামা রবার্ট লেভানদভস্কির হেড অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
পাল্টা আক্রমণ থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ফ্রাত্তেসির শট ঠেকান সেজনি। ১১৪তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ইয়ামাল। অনেকটা নিচে নেমে বলের দখল নিয়ে লেভানদভস্কি পাস দেন ইয়ামালকে। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে তরুণ এই উইঙ্গার নেন শট, যা এক হাতে কোনোমতে আটকে ইন্তার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন সমের।
বাকি সময়ে বার্সেলোনার একের পর আক্রমণ সামাল দেওয়ার মাঝে সুযোগ তৈরি করে ইন্তারও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি শট কোনো দলই। তাতে দুই বছরে মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্তার।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৫৩ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:৫০ পিএম
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচটা একদমই ভালো যায়নি নিকোলাস ওতামেন্ডির। একুয়েডরের বিপক্ষে বুধবার ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর এই লাল কার্ডের জন্য আগামী বছর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে দর্শক হয়েই থাকতে হবে ওতামেন্ডিকে।
আকাশী-সাদা জার্সিতে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলেই জাতীয় দলকে বিদায় বলার ঘোষণা দিয়েছেন ওতামেন্ডি। একুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘তেলেফ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অবসর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান ৩৭ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার।
আরও পড়ুন
এমবাপের উদ্দেশ্যে ‘বানরের আওয়াজ করায়’ দর্শক গ্রেপ্তার |
![]() |
“সামনের এই বিশ্বকাপই হবে আমার জাতীয় দলের হয়ে শেষ প্রতিযোগিতা। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি এই জার্সি পরে নিজের সেরাটা দিতে।”
অবসরের ঘোষণা ছাড়াও ফুটবলে ক্যারিয়ারে নিজের উত্থান-পতন নিয়ে কথার ঝাপি খুলে বসেন ওতামেন্ডি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সংগ্রাম আর লড়াই করে যোদ্ধার মতো এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
“প্রথম ডিভিশনে খেলাই আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল, তারপর সেখান থেকে জাতীয় দলে পৌঁছানো তো আরও কঠিন। আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে, জীবনে সবকিছুর দাম আছে। যোদ্ধার মতো লড়তে হবে, নিজের সেরাটা দিতে হবে। আর যেদিন কিছু হবে না, পরের দিন আবার চেষ্টা করতে হবে। সেটাই জীবন।”
আরও পড়ুন
ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে সিটির বড় ধাক্কা |
![]() |
২০০৯ সালে পানামার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয় ওতামেন্ডির। এরপর আলবিসেস্তাদের হয়ে ১২৮ ম্যাচ খেলে ৭টি গোলও করেছেন তিনি।
জাতীয় দলে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারের জীবনের সেরা মূহূর্ত কোনটি এমন প্রশ্নে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপকেই বেছে নেন তিনি।
“কাতারের সেই দিনগুলো এখনও চোখের সামনে ভাসে। কুটি (ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো) তখন শ্যাম্পেন খাচ্ছে, সিগার টানছে, এক কথায় সবকিছু যেন পাগলাটে। এই স্মৃতিগুলো সারাজীবন মাথায় গেঁথে থাকবে। সেই শিরোপার কোনও তুলনা হয় না।”
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
বর্তমানে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার হয়ে খেলছেন ওতামেন্ডি। আর্জেন্টিনার ভেলাসে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে আর্জেন্টিনায় ফিরবেন কিনা জানতে চাইলে ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দেন তিনি।
“সত্যি বলতে, এখনও কিছু জানি না। ২০২৬ বিশ্বকাপের পর সেটা ভেবে দেখব, দেখা যাক। ফিদেও (ডি মারিয়া) ফিরে এসেছে, চমৎকার খেলছে। লেয়াও (পারেদেস)। তারা আমার বন্ধু, আর ওদের খুশি দেখে আমারও খুব আনন্দ হয়।”
গ্যালারিতে বসে বর্ণবাদী আচরণের মাশুল দিলেন স্পেনের এক দর্শক। কিলিয়ান এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী অঙ্গভঙ্গি ও আওয়াজ করায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই দর্শকের। ইএসপিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের ন্যাশনাল পুলিশ জানিয়েছে এই খবর।
স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে গত ২৪ আগস্ট রিয়েল ওভেইদোর মাঠে খেলতে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। নবাগত দলটির বিপক্ষে এমবাপের জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানের সহজ জয় পায় স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি।
বুধবার স্পেনের পুলিশ জানিয়েছে, ওই ম্যাচের এক পর্যায়ে এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বানরের আওয়াজ ও অঙ্গভঙ্গি করেন এক দর্শক। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে এমবাপের প্রথম গোলের পর এই কাজটি করেই অভিযুক্ত সেই দর্শক।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই দর্শককে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ম্যাচের পরপরই এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল লা লিগা কর্তৃপক্ষ। প্রায় দুই সপ্তাহ পর সেই দর্শককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
পরে এই মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্বেষমূলক অপরাধের আদালতে। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৬০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা।
সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। পরে ওই ঘটনায় তিন দর্শককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সবশেষ মৌসুমে চোটের কারণে বড় মূল্য চুকাতে হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটিকে। গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের চোটে শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে পড়তে হয় ইংলিশ ক্লাবটিকে। এবার নতুন মৌসুম শুরু হতে না হতেই ফের ইনজুরি হানা দিল পেপ গার্দিওলার শিবিরে।
জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বুরকিনো ফাসোর বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর চোটে পড়েছেন ম্যান সিটির মিশরিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর মারমুশ। এরই মধ্যে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ম্যানচেস্টারে ফিরছেন ২৬ বছর বয়সী ফুটবলার।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
প্রাথমিক স্ক্যানে চোট গুরুতর বলে নিশ্চিত করেছে ম্যান সিটি। তাতে আগামী রোববার ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে সিটির।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মারমুশের সবশেষ অবস্থা জানিয়েছে সিটি।
“ওমর মারমুশ মিশরের হয়ে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকালে হাঁটুর চোট পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মিশরে করা স্ক্যান অনুযায়ী, তিনি রোববারের ম্যানচেস্টার ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। তিনি এখন ম্যানচেস্টারে ফিরছেন, যেখানে আরও পরীক্ষা হবে এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
সিটি কোচ গার্দিওলার জন্য মারমুশের এই চোট বড় ধাক্কা হয়েই এলো। এর আগে ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে পড়েছেন মাতেও কোভাচিচ, যোস্কো গাভার্দিওল, সাভিনহো, রায়ান চেরকি, আব্দুকাদির খুসানোভ, রিকো লুইস ও নিকো ও’রেইলি।
এর আগে সিটি ডিফেন্ডার জন স্টোন্স ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ক্যাম্পে যোগ দিলেও পেশির চোটের কারণে কোনো ম্যাচ না খেলেই ফেরত আসেন।
তারকা ফুটবলারদের চাকচিক্যময় জীবন নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ থাকে সবসময়ই। ইউরোপীয় ফুটবল কিংবা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবগুলোয় ফুটবলারদের পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ ঢালছে। তাতে দ্রুতই জীবন বদলে যাচ্ছে তরুণ অনেক ফুটবলারদের। বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করেন তারা।
তবে সবকিছুরই তো নেতিবাচকতা আছে। দূর থেকে ফুটবলারদের জীবন আর্কষণীয় মনে হলেও মুদ্রার উল্টো পিঠও নাকি আছে। রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে তেমনটাই বলছেন।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যাক্তিগত জীবনের পর্দার আড়ালের কথা বলেন তিনি। নিজের সন্তানদেরও নাকি কখনও ফুটবলকে বেছে নেওয়ার উপদেশ দেবেন না এমবাপে।
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
ফুটবলকে মনে প্রাণে ধারণ করেন বলেই সব নেতিবাচকতা ভুলে থাকছেন এমবাপে।
“খেলাটার প্রতি এই টানটা যদি না থাকত, তাহলে ফুটবলের দুনিয়ার অন্ধকার দিকগুলো আমাকে বহু আগেই দূরে সরিয়ে দিত।”
মাঠের খেলার বাইরেও অনেক দিক থাকে যা সমর্থকদের ধারণার মধ্যে থাকে না। দর্শকদের এসব বিষয় দেখতে হয় না বলে তাদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন এমবাপে।
“আমি সবসময় বলি, যারা স্টেডিয়ামে এসে শুধু খেলা দেখতে পারে, তারা খুব সৌভাগ্যবান কারণ তারা জানে না এর পেছনে কী চলে, কোন গোপন জগৎ আছে।”
আরও পড়ুন
দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা, জিমে সময় কাটালেন ফুটবলাররা |
![]() |
যে অঢেল অর্থের হাতছানি ফুটবলারদের জীবনে বড় প্রভার রাখে, সেই টাকাই যত নষ্টের গোড়া বলে মনে করেন ফরাসি তারকা।
“যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা। আমি আমার সন্তানদের কখনও ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে বলব না।”
মূলত গত মৌসুমে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পরই যত ঝামেলায় পড়েন এমবাপে। গত জুলাইয়ে পিএসজির বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি ফৌজদারি অভিযোগ (যেখানে তিনি হয়রানি ও ব্ল্যাক মেইলের অভিযোগ এনেছিলেন) প্রত্যাহার করে নেন।
তবে এমবাপে এখনও দাবি করছেন তার ৫৫ মিলিয়ন ইউরো বেতন ও বোনাস ফরাসি ক্লাবটি বকেয়া রেকেছে। সেই অর্থ আদায়ের জন্য তিনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন
রেফারির সিদ্ধান্তে খুশি নন মার্তিনেজ |
![]() |
অবশ্য সাবেক ক্লাবের সঙ্গে কোনো বিদ্বেষ নয়, শুধু প্রাপ্য অর্থটাই ফেরত চান এমবাপে।
“পিএসজির প্রতি আমার কোনো বিদ্বেষ নেই। আমি ক্লাবটিকে ভালোবাসি, এখনও সেখানে আমার বন্ধুরা আছে। কিন্তু এই পথটাই একমাত্র উপায়, আমার প্রাপ্যটা ফেরত পাওয়ার জন্য।”
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু ২-১ গোলের জয়ে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেন এমবাপে।
ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে জাতীয় দলের হয়ে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের মালিক রিয়াল তারকা। থিয়েরি হেনরিকে ছাপিয়ে ফ্রান্সের হয়ে তার গোল এখন ৫২, শীর্ষে থাকা অলিভার জিরুর গোল ৫৭।
কথায় বলে, স্বপ্ন সবসময় বড় দেখতে হয়। সেই দলে আছেন লামিন ইয়ামাল। ফুটবল ক্যারিয়ারে দারুণ শুরু করা স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের স্বপ্ন তাই অনেকগুলো ব্যালন ডি'অর জেতা।
ফ্রান্সের প্যারিসে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করা হবে এবারের ব্যালন ডিঅর পুরস্কার। পিএসজির ফরাসি তারকা ওসমান দেম্বেলের পাশাপাশি ইয়ামালও এবারের ব্যালন জয়ের অন্যতম দাবীদার।
সেই আলোচনা চলার মাঝেই এক পডকাস্টে ইয়ামাল জানিয়েছেন নিজের স্বপ্নের কথা।
আরও পড়ুন
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দুই ‘জুজু’ |
![]() |
“আমি আমার বন্ধুদের বলেছি, আমি একটি ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি না। আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি।”
এখন পর্যন্ত বার্সেলোনা ও স্পেনের হয়ে ইয়ামালের যেমন পারফরম্যান্সে, তাতে এই স্বপ্ন দেখা অবশ্যই যৌক্তিক। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বার্সেলোনার হয়ে একশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইয়ামাল। গত মৌসুমে ১৮ গোলের সঙ্গে করেছেন ২৫টি অ্যাসিস্ট।
গোল-অ্যাসিস্টের বাইরেও স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন ইয়ামাল।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
সেই একই ছন্দ ধরে রেখে নতুন মৌসুমের শুরুটাও করেছেন উড়ন্ত। লা লিগায় প্রথম তিন ম্যাচে দুই গোল করে ফেলেছেন ইয়ামাল। তার মতে, শেষ পর্যন্ত ব্যালন জিততে না পারলে, দায়টা থাকবে তার ওপরেই।
“আমার মতে, আমি এটি (ব্যালন ডি অর) জেতার মতো একজন ফুটবল। আর এটি যদি না হয়, তার মানে দাঁড়াবে আমি সব কিছু ঠিকভাবে করিনি অথবা আমি সব কিছু করতে চাইনি।”
“আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জিততে চাই এবং যখন এই দিন আসবে, আমি অনেক খুশি হবো।”
তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের আগে দলকে অনেক কিছু জেতাতে চান ইয়ামাল।
“আমি শুধু জিততে থাকতে চাই। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে অনেক কিছু জিততে চাই।”