
প্রথম লেগে বার্সেলোনা তিন গোল হজম করায় রক্ষণভাগ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ঘরের মাঠে উজ্জীবিত ইন্তার মিলান কাউন্টার এটাকে শুরুটা করল দুর্দান্ত। বিরতির আগেই দুই গোল খেয়ে কোনঠাসা হয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের দল। দারুণ এক কামব্যাকে একে একে তিন গোল দিয়ে এক পর্যায়ে বার্সেলোনাই পাচ্ছিল জয়ের সুবাস। তবে এই ইন্তার যে হার মানার নয়। ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে শেষ হাসি হাসল সিমোনে ইনজাগির দল।
সান সিরোতে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ইন্তার। দুই লেগ মিলিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি জিতেছে ৭-৬ ব্যবধানে। ২০২৩ সালের পর আবারও দলটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে আর্সেনাল বা পিএসজি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে গতিতে ইন্তার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল, অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাপ-ইনের। তবে পাস না বাড়িয়ে গোলের জন্য শট নিয়ে ব্যর্থ হন ফেররান তরেস।
আরও পড়ুন
| পর্তুগাল দলে ডাক পেলেন ছেলে, ‘গর্বিত’ বাবা রোনালদো |
|
ম্যাচের প্রথম দিকে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ এড়িয়ে আক্রমণে যেতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইন্তারকে। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে ৭৪ বার প্রতিপক্ষকে অফসাইডে ফেলেছে দলটি।
১৭তম মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইন্তারের বক্স থেকে বলের দখল নিয়ে লম্ব ক্রস বাড়ান, বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্সকে বিপদে ফেলে বল নিয়ে ফেদেরিকো দিমার্কো পাস দেন লাউতারোকে। তবে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি আর, এর আগে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
মিনিট তিনেক বাদে ডান দিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে নিকোলা বারেল্লার নেওয়া জোরাল শট কোনোমতে সেভ করে ওয়েচেজ সেজনি। তবে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ পার করে শেষ পর্যন্ত ইন্তারের লিড নেওয়ায় ভূমিকা রাখেন প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ডেনজেল ডামফ্রিস।
পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বল পেয়ে ডান দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। বার্সেলোনার রক্ষণভাগের চেয়ে বক্সে ইন্তারের খেলোয়াড়ই বেশি। সেজনি এগিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গেলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন ডামফ্রিস, যেখান থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ ম্যাচে এটি লাউতারোর ৯ নম্বর গোল। এই গোলটি ইন্তারের জন্য গুরুত্বছিলপূর্ণ ছিল, কারণ এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে গোল দিয়ে এই লড়াইয়ের আগে ১০ ম্যাচের একটিতেও হারেনি সেরি আর ক্লাবটি। আর সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ ৪৯টি হোম ম্যাচে মাত্র একটিতে আগে গোল করে হারের রেকর্ড ছিল ইন্তারের।
আরও পড়ুন
| মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
|
ওই গোলের খানিক বাদে ইন্তারের বক্সের ভেতর পেদ্রির শট প্রতিপক্ষের একজনের হাতে লাগলে ওঠে পেনাল্টির দাবি। তবে রেফারি তা নাকোচ করে দেন।
৩৬তম মিনিটে বিরতির আগে নিজেদের সেরা সুযোগটা পায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইন্তারের কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে পেছনে ফেলে ডান দিক থেকে একটা শট নেন, যা শেষ চলে যায় অল্পের জন্য পোষ্টের বাইরে দিয়ে। অল্পের জন্য ট্যাপ-ইন করতে ব্যর্থ হন তরেস।
তবে একের পর এক আক্রমণে ইন্তারকে ব্যতিব্যস্ত রাখেন ইয়ামাল, যাকে নিয়ে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি। ডাবল মার্কিং করে তার পরিকল্পনা ছিল ইয়ামালকে আটকানোর।
তবে কাজটা ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিন হয়ে ওঠে। ৩৯তম মিনিটে ফের গতি দিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল। তবে ছয় গজের ভেতর শেষ সময়ে দুর্দান্ত এক স্লাইড ট্যাকেল করে সেযাত্রায় দলকে রক্ষা করেন বাস্তোনি।
এরই মাঝে ম্যাচের ধারার বিপরীতে পেনাল্টি হজম করে বসে বার্সেলোনা। লাউতারোকে আটকাতে বক্সের ভেতর ফাউল করেন পাউ কুবার্সি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁদিকে বল জালে পাঠান হাকান কালহানোগলু।
দুই গোল খেয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা বিরতির আগে মাত্র ছয়টি শট থেকে একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৫১তম মিনিটে ফের ইন্তার বল জালে পাঠালেও এবার আর গোল মেলেনি অফসাইডের কারণে।
এর ঠিক দুই মিনিট পর বার্সেলোনার ক্যামব্যাকের সূচনা করেন এরিক গার্সিয়া। জটলার মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে সান সিরোতে স্তব্ধতা নিয়ে আসেন তিনি। সেই গোলের রেশ না কাটতেই আরও একটি গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। তবে ছয় গজ থেকে নেওয়া তার শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান সোমের।
তবে আরেকটি রেমোনটাডার স্বপ্নের বিভর বার্সেলোনা আক্রমণের ঢেউয়ে বেসামাল ইন্তার বেশিক্ষণ পারেনি সামাল দিতে। বাঁদিক থেকে জেরার্ড মার্তিনের দারুণ এক ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে গোল করেন দানি ওলমো।
ছন্দহীন ইন্তার ৬৮তম মিনিটে বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছিল। আগুয়ান ইয়ামালকে ফাউল করে শুরুতে পেনাল্টি উপহার দিয়ে ফেলেছিলেন হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে রেফারি পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান ভিএআরে দেখে, যেখানে দেখা যায় ফাউলটি করা হয়েছিল ঠিক বক্সের বাইরে।
৭৯তম মিনিটে কাট করে বক্সের ভেতর থেকে গতিময় এক শট নেন ইয়ামাল, তবে পোষ্টের নিয়ে আস্থার পরিচয় দেন সোমের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ স্কোরলাইনে লড়াই যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, তখনই চিত্রে হাজির পুরো ম্যাচে প্রায় অচেনা ছন্দে থাকা রাফিনিয়া।
৮৭তম মিনিটে মিলান শিবিরকে হতাশায় ভাসিয়ে বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে তার নেওয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন সোমের, তবে ফিরতি বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল হয়নি তার।
আরও পড়ুন
| অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
|
এই গোলের মধ্য দিয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রাফিনিয়া। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩টি গোলের সাথে তার নামের পাশে রয়েছে ৮টি অ্যাসিস্ট। এক মৌসুমে গোলে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার সমান (২১টি) রয়েছে কেবল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
এই গোলের পর বার্সেলোনার জয় যখন ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন মিলান শিবিরে আশার আলো নিয়ে আসেন ফ্রান্সেস্কো এসেরবি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম মৌসুমে একটি গোলও না করা অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার প্রথম গোলের জন্য বেছে নেন সেরা উপলক্ষ্য।
ডান দিক থেকে স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস বাড়ান ডামফ্রিস। রক্ষণ ছেড়ে স্ট্রাইকার বনে যাওয়া এসেরবি বল রিসিভ করে কিছুটা সময় নিয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে বল পাঠান জালে, যা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না সেজনির।
ম্যাচের এমন সময়ে গোল, স্বাভাবিকভাবে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দলের সাথে মেতে ওঠেন এসেরবিও। উদযাপন করার সময় তিনি জার্সি খুলে ফেলেন এবং এজন্য তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তবে তাতে আর কীইবা আসে যায়!
এই গোলের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে শালকের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রায়ান গিগসের পর এসেরবি (৩৭ বছর ৮৫ দিন) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় (৩৭ বছর ১৪৮ দিন) হিসেবে জালের দেখে পেয়েছেন।
জয়ের সুবাস পেতে পেতে এমন একটা গোল খেয়ে বসলে একটা দলের মানসিকতায় তাতে আসতে পারে বড়সড় আঘাত। বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও হয় ঠিক তাই। তার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় ইন্তার।
ডান দিক থেকে উঠে মার্কাস থুরাম দাভিদ ফ্রাত্তেসিকে পাস বাড়ান। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বক্সের ভেতরে মেহেদি তারেমির সাথে ওয়ান-টু খেলে এরপর প্লেসিং শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এটি ছিল এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বার্সেলোনার হজম করা ২৪তম গোল, যা এক আসরে ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের জন্য মরিয়া বার্সেলোনা খেলে অল আউট ফুটবল। ইয়ামালের ক্রস থেকে বদলি নামা রবার্ট লেভানদভস্কির হেড অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
পাল্টা আক্রমণ থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ফ্রাত্তেসির শট ঠেকান সেজনি। ১১৪তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ইয়ামাল। অনেকটা নিচে নেমে বলের দখল নিয়ে লেভানদভস্কি পাস দেন ইয়ামালকে। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে তরুণ এই উইঙ্গার নেন শট, যা এক হাতে কোনোমতে আটকে ইন্তার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন সমের।
বাকি সময়ে বার্সেলোনার একের পর আক্রমণ সামাল দেওয়ার মাঝে সুযোগ তৈরি করে ইন্তারও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি শট কোনো দলই। তাতে দুই বছরে মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্তার।
No posts available.
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ পিএম

সেলহার্স্ট পার্কে আজ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মাত্র ৩৮ শতাংশ বল দখলে রাখতে সক্ষম হয় ক্রিস্টাল প্যালেস। অথচ ম্যাচজুড়ে প্রতিপক্ষমুখী ১৬ বার শট নিয়েছে অলিভার গ্লাসনারের শিষ্যরা।
মুহুর্মুহু আক্রমণ চালিয়েও ৩–০ গোলে হেরে যায় ক্রিস্টাল প্যালেস। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, পুরো ম্যাচজুড়ে স্নায়ুচাপে ভুগেছেন সিটিজেন কোচ পেপ গার্দিওলা। ম্যাচ শেষে তিনি প্রতিপক্ষের দাপটের কথা স্বীকার করেন।
সিটিজেন বস গার্দিওলা বলেন,
“এখানে খেলতে আসা সত্যিই খুব কঠিন। জেরেমি পিনো, মাতেতা ও ইসমাইলা সারকে নিয়ে তারা যখন আক্রমণে ওঠে, তা দেখোর মতো হয়ে ওঠে।”
তিনি যোগ করেন,
“ক্রিস্টাল প্যালেসের ডিফেন্সও দুর্দান্ত—খুবই শক্ত। মোটকথা, তারা একটি ভালো দল। এই মৌসুমে তারা যা করছে, সেটাই তার প্রমাণ।”
প্রিমিয়ার লিগে টানা চার জয় তুলে নিয়েছে ম্যানসিটি। পয়েন্ট টেবিলেও এগিয়ে তারা। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে সিটিজেনদের ব্যবধান মাত্র দুই পয়েন্ট। লিগের মাঝপথে কিছুটা পথ হারালেও এখন আবার দাপুটে ছন্দে ফিরেছে গার্দিওলার দল।
পেপ বলেন,
“আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, নিয়মিত পরিশ্রম করছি। এখনও আমরা সেরা অবস্থায় নেই, আরও উন্নতি করতে হবে। তবে এটা ঠিক যে আমরা ভালো অবস্থানে আছি এবং খেলোয়াড়রা দারুণ পারফর্ম করছে।”
এ সময় মাতেউস নুনেসের প্রশংসা করেন গার্দিওলা। তাঁর মতে, মাতেউস একজন অসাধারণ ফুলব্যাক। পর্তুগিজ এই ডিফেন্ডারের সঙ্গে আর্লিং হলান্ডের দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে বলেও মনে করেন স্প্যানিশ কোচ।
তিনি বলেন,
“মাতেউস দিন দিন আরও ভালো হচ্ছে। সে একজন দারুণ ফুলব্যাক, আর হলান্ডের সঙ্গে তার বোঝাপড়াও চমৎকার।”
হলান্ডের জোড়া গোলের বিপরীতে একটি গোল করেন ফিল ফোডেন। তবে পারফরম্যান্সে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন পেপ।
তিনি বলেন,
“ফোডেন আজ খুব একটা ভালো খেলেনি। সে বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেছে। প্রতিটি কাজে সে একটু তাড়াহুড়ো করছিল। তাকে আরও শান্তভাবে খেলতে হবে, বল ধরে রাখতে হবে এবং ঠিক সময় বুঝে গতি বাড়াতে হবে। তবে এসব বলার পরও বলতে হয়, দলের জন্য সে দারুণ কাজ করছে।”

ম্যাচ ঘড়ির তখন ১২ মিনিট। সহজ লক্ষ্য পূরণ করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল ক্রিস্টাল প্যালেসের। তা হেলায় নষ্ট করেন জেরেমি পিনো। তাতেই ম্যানেজার অলিভার গ্লাসনারের মাথায় হাত। বিড় বিড় করে এটা-ওটা বলতে থাকেন। নিজ মাথার চুল হাতের মুষ্টিতে ভরে হেঁচকা টানও দেন।
এমনও হয় না কী, ইশ! তখন কত কী বলছিলেন ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যানেজার।
প্রিমিয়ার লিগের রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ঘরের মাঠ সেলহার্স্ট পার্কে ম্যানচেস্টার সিটিকে আতিথ্য দিয়েছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। মুহুর্মুহু আক্রমণ চালিয়েও গোল করতে না পারার ব্যর্থতা শেষ পর্যন্ত ইশ আর আক্ষেপে পরিণত হয় দ্য ঈগলসের।
পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাওয়ার মিশনে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩–০ গোলে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। অতিথি দলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন আর্লিং হলান্ড। অন্য গোলটি করেন ফিল ফোডেন। লিগে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হলান্ডের গোল সংখ্যা দাঁড়াল ১৭। আর টানা চার ম্যাচে গোল পেলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার ফিল ফোডেন।
ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে গেল ম্যানসিটি। সিটিজেনদের বর্তমান পয়েন্ট ৩৪। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে ২ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। তবে অ্যাস্টন ভিলা নিশ্বাস ফেলছে সিটির ঘাড়ে—৩৩ পয়েন্ট ভিলার।
ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ম্যানসিটির। অতিথিরা ৬২ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছে, ৩৮ শতাংশ ছিল ক্রিস্টালের। তবু মোট শটে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। বল দখলে পিছিয়ে থেকেও জোরালো আক্রমণ চালিয়েছে তারা।
ক্রিস্টাল ১৬ বার শট নিয়েছে, যার মধ্যে ৪টি গোলমুখে। অতিথিরা ৭টি শটের মধ্যে ৬টি গোলমুখে রাখতে সক্ষম হয়। বিগ চাঞ্চ তৈরিতেও এগিয়ে সিটি। ২টি বড় সুযোগ তৈরি করেছে তারা, একটিই তৈরি করেছে ক্রিস্টাল। তবে তা থেকে গোল আদায় হয়নি।
বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হওয়া ম্যাচের ৪০ মিনিটে ডেডলক ভাঙে ম্যানচেস্টার সিটি। সিটিজেনদের লিড উপহার দেন হলান্ড। মাতেউস নুনেসের ক্রস হেডারে ক্রিস্টাল প্যালেসের জালে গোল করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
হলান্ডের গোলের মাত্র কিছু মিনিট পরই সিটির ওপর ঝড় বয়ে যায়। ৩০ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইবার বিপদ থেকে বেঁচে যায় সফরকারীরা। বিশেষ করে ফিলিপ মাতেতাকে রুখে যেভাবে দারুণ এক সেভ করলেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা, তা ছিল দেখার মতো।
এর আগে ম্যাচের ১২তম মিনিটে ক্রিস্টাল প্যালেস একপ্রকার গোল পেতে যাচ্ছিল। মধ্যমাঠ থেকে ওঠা আক্রমণে সামনে কেবল সিটি গোলকিপারকে বাঁধা হিসেবে পান জেরমি পিনো। ওয়ান-টু পজিশনে থাকা ক্রিস্টাল ফরোয়ার্ড সেই সুযোগ নষ্ট করেন। ক্রসবারে লেগে বল মাঠের বাইরে চলে যায়। ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় ম্যানসিটি।
দ্বিতীয়ার্ধে লিড দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। এবার ত্রাতা হয়ে এলেন ফিল ফোডেন। বক্সের বাইরে থেকে পায়ের শটে জালে গোল করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থ ম্যাচে গোল পেলেন এই লেফট উইঙ্গার। এর আগে সান্ডারল্যান্ড, ফুলহ্যাম ও লিডসের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি।
৮০ মিনিটে একটি গোল শোধের সুযোগ পায় ক্রিস্টাল প্যালেস। সার গোলমুখে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু তা সিটি ডিফেন্সের বাধায় ফিরে আসে। কয়েক ধাপে আক্রমণ চালায় তারা, তবে কার্যত ব্যর্থ হয়।
৮৩ মিনিটে বদলি হয়ে নামা এডওয়ার্ড এনকেতিয়াহ স্ব-উদ্যোগে চেষ্টা চালান। সিটির কয়েকজন ড্রিবলিং করে বক্সের বাইরে থেকে বুলেটগত শট নেন। এ যাত্রাতেও ঝাঁপিয়ে দলকে রক্ষা করেন ইতালির গোলরক্ষক।
৮৭ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ওঠে সিটি। একাই নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে আক্রমণে যান সাভিনহো। যদিও ডি-বক্সে ক্রিস্টাল গোলকিপার হেন্ডারসনের বাধার মুখে পড়েন। সেখান থেকে পেনাল্টি পায় সিটি, যা আদায় করেন হলান্ড। মাটি কামড়ে যাওয়া বল সুনিপুনভাবে জালে যায়।
এই মৌসুমে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হলান্ড শট নিয়েছেন ৫৯টি, আর ১৭টি গোল করেছেন। লিগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইগর থিয়াগোর থেকে হলান্ড ছয়টি গোল এগিয়ে রয়েছেন। সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি তাঁর অ্যাসিস্ট সংখ্যা—৩টি।

সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে আজ রোববার ভারতের ইস্টবেঙ্গলের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি। এক ম্যাচ হাতে থাকতেই বিদায় ঘণ্টা বেজেছে বাংলাদেশের ক্লাবটির।
নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে বাংলাদেশের ক্লাবের জালে ৪ গোল দেয় ইস্টবেঙ্গল। সপ্তম মিনিটে গোলবন্যা শুরু হয় ফাজিলার ইকুয়াপুথের মাধ্যমে। এরপর তিনি হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২৭ ও ৪৫ মিনিটে গোল করে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৪ ও ৯০ মিনিটেও জাল কাঁপান ফাজিলা। একাই ৫ গোল করেন ফাজিলা। অন্য দুই গোল আসে সুলঞ্জনা রাউল ও জ্যোতি চৌহানের কাছ থেকে।
তিন ম্যাচে এক ড্র ও ২ হারে এক পয়েন্ট নিয়ে ৫ দলের মধ্যে টেবিলের তলানিতে নাসরিন। প্রথম ম্যাচে নেপালের এপিএফের কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে তারা। এরপর ড্র করে করাচি সিটির বিপক্ষে।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর শেষ ম্যাচে ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবেন সানজিদা-প্রীতিরা।

আগামী মঙ্গলবার ফিফার বর্ষসেরা ‘দ্য বেস্ট’ পুরস্কারে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। শনিবার আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কাতারের দোহায় বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে ড্র অনুষ্ঠান। ফিফার ওয়েবসাইটে এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
ফিফা জানিয়েছে, দোহার ফেয়ারমন্ট কাতারা হলে গালা ডিনারে ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ নামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। অন্তত ৮শ অতিথি এতে উপস্থিত থাকবেন।
৮টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে ২০২৫ বর্ষসেরা পুরস্কার। এখানে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন সমর্থকরা। ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি ভোটের মাধ্যমে সমর্থকরা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারজয়ী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানিয়েছে ফিফা।
সমর্থকদের পাশাপাশি বিজয়ী নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ছেলে ও মেয়েদের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক, কোচ এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

৭১ শতাংশের বিপরীতে ২৯ শতাংশ—বল পজিশনের পরিস্থিতি দেখলেই স্পষ্ট, আজ সেলহার্স্ট পার্কে রীতিমতো প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। মুহুর্মুহু আক্রমণে স্বাগতিকদের ভীত করলেন আর্লিং হলান্ড ও ফিল ফোডেন। ফলশ্রুতিতে প্রথমার্ধে ১–০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় পেপ গার্দিওলার দল।
বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হওয়া ম্যাচের ৪০ মিনিটে ডেডলক ভাঙে ম্যানচেস্টার সিটি। সিটিজেনদের লিড উপহার দেন হলান্ড। মাতেউস নুনেসের ক্রস হেডারে ক্রিস্টাল প্যালেসের জালে লক্ষ্যবেদ করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। প্রিমিয়ার লিগে এটি তাঁর ১৬তম গোল। লিগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইগর থিয়াগোর থেকে হলান্ড পাঁচটি গোল এগিয়ে রয়েছেন।
এই মৌসুমে হলান্ড গোলমুখে শট নিয়েছেন ৫৮টি, যার মধ্যে আদায় করেছেন ১৬টি গোল। সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি তাঁর অ্যাসিস্ট সংখ্যা—৩টি।
হলান্ডের গোলের মাত্র কিছু মিনিট পরই সিটির ওপর ঝড় বয়ে যায়। ৩০ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইবার বিপদ থেকে বেঁচে যায় সফরকারীরা। বিশেষ করে ফিলিপ মাতেতাকে রুখে যেভাবে দারুণ এক সেভ করলেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা, তা ছিল দেখার মতো।
এর আগে ম্যাচের ১২তম মিনিটে ক্রিস্টাল প্যালেস একপ্রকার গোল পেতে যাচ্ছিল। মধ্যমাঠ থেকে ওঠা আক্রমণে সামনে কেবল সিটি গোলকিপারকে বাঁধা হিসেবে পান জেরমি পিনো। ওয়ান-টু পজিশনে থাকা ক্রিস্টাল ফরোয়ার্ড সেই সুযোগ নষ্ট করেন। ক্রসবারে লেগে বল মাঠের বাইরে চলে যায়।
২৮তম মিনিটে ডি-বক্সের কয়েক গজ দূর থেকে শট নেন ফিল ফোডেন। তার ঝাজালো শট ছিল দেখার মতো, তবে দোন্নারুমা দারুণ দক্ষতায় পাঞ্চ করে বল নিরাপদ দুরত্বে পাঠিয়ে দেন।
৩৫ মিনিটে সেট-পিস থেকে ফ্রি কিকে শট নেন পিনো। গোলপোস্টের ৩৫ গজ দূর থেকে নেওয়া চিপ শট কিছুক্ষণ ডি-বক্সে এর-ওর হেডে ঘুরতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বলটি বারে লেগে মাঠের বাইরে যায়।