
অনেক আশা নিয়েই এই মৌসুমে কিলিয়ান এমবাপেকে দলে টেনেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ভিন্ন পজিশনে ফরাসি তারকা যে খুব একটা খারাপ করছেন, তাও নয়। তবে প্রত্যাশা মেটাতে পারছেন না সেভাবে। ক্লাবের ফর্মও ভালো না হওয়ায় তাই ভালোই তোপের মুখে আছেন তিনি। তবে রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি মনে করেন, এমবাপেই তাদের মূল সমস্যা নন।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৯টি গোল করেছেন এমবাপে। তবে সমালোচনার মুখে আছেন স্ট্রাইকার হলেও শেষ নয় ম্যাচে মাত্র ২ বার জালের দেখা পেয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ী এই ফুটবলার। রয়েছে লিভারপুলের সাথে পেনাল্টি মিসের ঘটনাও। এমবাপের গোল না পাওয়া ম্যাচগুলোতে এটি ছাড়াও রিয়াল হেরেছে লিল, বার্সেলোনা ও এসি মিলানের কাছে।
গেতাফের বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য আনচেলত্তি সমালোচনা থেকে আগলেই রাখলেন এমবাপেকে।
“আমরা এটাকে একজন খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত সমস্যা বলে মনে করি না। অন্যান্য বিষয়ের মাঝেও সে এখানে মানিয়ে নিচ্ছে, আটটি গোল করেছে এবং আমাদের আক্রমণাত্মক খেলায় দারুণভাবে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা সবাই আরও ভালো করতে পারি।”
ক্লাবে কঠিন সময়ের মধ্যে থাকা এমবাপেকে চলতি মাসে আন্তর্জাতিক বিরতিতে নিজে খেলতে চাইলেও ফ্রান্স দলে তাকে রাখেননি কোচ দিদিয়ে দেশম। কারণ হিসেবে বলেন, মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় নেই সাবেক পিএসজি তারকা। লিভারপুল ম্যাচ চলাকালীন ও ম্যাচের পর শারীরিক ভাষাও ছিল ভীষণ নড়বড়ে।
এমবাপের সমস্যাটা মানসিক নয় বলেই মনে হচ্ছে আনচেলত্তির।
“এমবাপে হতাশাগ্রস্ত নন, সে জানে যে তাকে আরও ভালো করতে হবে। আমার অনেক খেলোয়াড়ই অতীতে পেনাল্টি মিস করেছে। আমাদের তার প্রতি সমর্থন ও সাহায্য অব্যাহত রাখতে হবে। এটি একটি দলগত সমস্যা, কারও ব্যক্তিগত সমস্যা নয়।”
সাম্প্রতিক ফর্মটা ভালো না হলেও লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে রিয়াল চার পয়েন্টে পিছিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। আনচেলত্তির দল অবশ্য একটি ম্যাচ কম খেলেছে।
No posts available.

রুবেন দিয়াস ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কারণ, ম্যাটি ক্যাশ আগে থেকেই নির্ধারণ করে রেখেছিলেন লক্ষ্য। ম্যানসিটি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা বারের ডান দিকে ঝুঁকে থাকার সুযোগটি কাজে লাগান অ্যাস্টন ভিলা ডিফেন্ডার। তাঁর বুলেটগতির শট দিয়াসের দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যবেধ করে ম্যানসিটি জালে।
তাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে ভিলা পার্কে আগত সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থক। নিজ দলের সমর্থকদের আনন্দ দিতে পেরে বেজায় খুশি ক্যাশ নিজেও। ব্যাটিং স্টাইল কিংবা গলফে বলে হিটিংয়ের মতো করে উদ্যাপন করেন তিনি। তার একমাত্র গোলে প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থ জয়ের দেখা পেল উনাই এমেরির দল। পয়েন্ট টেবিলে নয়ে উঠে এলো ভিলা।
ভিলা পার্কে এদিন এগিয়ে ছিল বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল সিটিজেনরা। ৫৩ শতাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে তারা। আর ১৮টি শট স্বাগতিকমুখে রেখে লক্ষ্যে রাখতে পারেন ৪টি। দুটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছিল। অগত্যা কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো ম্যানসিটি মুখে ৯টি শট নিয়ে তিনটি লক্ষ্যে রেখে একটি থেকে গোল আদায় করে এমেরির শিষ্যরা।
প্রিমিয়ার লিগে আজ বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে আর্সেনাল। এমিরাটস স্টেডিয়ামে দলের হয়ে গোল করেন এবেরেচি এজে।
এদিন ম্যাচ ঘড়ির ১৯তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন ক্যাশ। কর্নার থেকে বল ওয়ান টু শটে এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়াকে দেওয়া হয়। ঝোপ বুঝে বলটি বক্সের খানিক বাইরে থাকা ক্যাশের কাছে পাঠান তিনি। সেখান থেকে গোল আদায় করেন পোলান্ড রাইট-ব্যাক। এটাই ম্যাচের একমাত্র গোল।
এদিন বেশ নজরে ছিলেন হলান্ড। নতুন একটা লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিলেন নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড। এর আগে ২০১৮ সালের রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে টানা গোলের রেকর্ড (টানা ১২ ম্যাচে গোল ২৪ গোল) করেছিলেন আল নাসরের ফরোয়ার্ড রোনালদো। এই ১২ ম্যাচে হলান্ড মোট গোল করেছেন ২৪টি। অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে পর্তুগিজ তারকাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল তার। সেটি হলো না।
আজ খুব একটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি হলান্ড। ৯০ মিনিট মাঠে থেকে মোট গোলমুখে তিনটি শট নিতে পেরেছেন। ক্লিয়ান্সে ও হেড ক্লিয়ান্স করেছেন তিনটি। এরিয়াল ডুয়েল ও গ্রাউন্ড ডুয়েলে এগিয়ে থেকেও কাজের কাজ কিছুই করতে পারেননি।

ফিফা প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। গত শুক্রবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে কয়েকজন খেলোয়াড়ের অ্যাপ্রোচ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে কোচ পিটার জেমস বাটলার বলেছিলেন -'গাফিলতি সহ্য করব না।' । সফরের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচের আগে সুর বদলেছেন ব্রিটিশ কোচ।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আজ বাটলার বলেন, 'কয়েকজনের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলেছি। তাদের অ্যাপ্রোচ ও মাইন্ডসেট নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বিশেষ করে, এক-দুজন আছে, যাদের আমি সত্যিকারের ম্যাচ উইনার মনে করি এবং আগের ম্যাচে তারা তাদের সামর্থ্যটা মেলে ধরতে পারেনি।'
মিয়ানমারে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর ভুটানের নারী লিগে খেলতে যান ঋতুপর্ণা চাকমাসহ এই দলের ৯ জন ফুটবলার। বাকিদের নিয়ে চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে ক্যাম্প করেন বাটলার। থাইল্যান্ড যাওয়ার দু-দিন আগে দলের সঙ্গে যোগ দেন ঋতুপর্ণা, মারিয়া মান্দা ও তহুরা খাতুনরা।
থাইল্যান্ডে প্রথম ম্যাচে তিন গোলের হারের পর আজ সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাটলার, '৯ ফুটবলার আমাদের সঙ্গে কেবল দু-দিন অনুশীলন করেছে, যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।'
সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় থাইল্যান্ডকে মোকাবিলা করবেন আফঈদা খন্দকাররা।

মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) গোল্ডেন বুট ক্যাবিনেটে সাজিয়েছেন লিওনেল মেসি। ইন্টার মায়ামির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদও বাড়িয়েছেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত। নতুন চুক্তি ঘোষণার পরের ম্যাচেই আর্জেন্টাইন মহাতারকা করেছেন জোড়া গোল।
মেসির সতীর্থ রদ্রিগো দি পল মনে করেন, মেসির নতুন চুক্তি দলের পারফরম্যান্সে আরও বেশি ছন্দ এনেছে। মেসির ঔজ্জ্বল্যে ইন্টার মায়ামিও প্লে–অফ পর্বে দারুণ শুরু পেয়েছে। ন্যাশভিলকে হারায় ৩–১ গোলে। মেসির দীর্ঘদিনের আর্জেন্টাইন সতীর্থ দি পল জানালেন, অধিনায়কের প্রভাব ও সাম্প্রতিক ফর্ম পুরো দলকে উজ্জীবিত করছে।
দি পলের ভাষায়, ‘আমরা জানি, মেসি আমাদের সঙ্গে আরও কিছু বছর থাকবেন— এই জিনিসটা পুরো দলকে অতিরিক্ত প্রেরণা দিয়েছে। আমরা শুধু ওর খেলা উপভোগ করতে চাই।’
দি পলের মতে, মেসির মতো কেউ আর ফুটবলে আসবে না। এই মহাতারকার খেলা উপভোগ আনন্দের বললেন তিনি, ‘মেসি যা করছে, তা দেখে আমার সত্যিই আনন্দ হয়... তার মতো আর কেউ হবে না। দলে তাকে নিয়মিত পাশে পাওয়া মানে এক বিরাট সুবিধা।’
ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানোও ম্যাচ শেষে প্রশংসা করলেন মেসির পারফরম্যান্সের। কয়েক দিন আগে অনুশীলনে না থাকায় পিঠের ব্যথা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছিল, কিন্তু মাসচেরানো বললেন এ ব্যাপারে অতিরিক্ত চিন্তার কিছু ছিল না, ‘লিওকে ঘিরে যা ঘটে, সবসময়ই অনেক বড় করে দেখা হয়। আমরা শুধু তাকে একটু রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। মৌসুমের এই সময়ে কম খেলানোই কখনো বেশি লাভজনক হতে পারে—অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি না নিয়ে নিশ্চিত করা দরকার, যেন সামান্য অস্বস্তিও না বাড়ে।’
মেসির ভবিষ্যৎ এখন নিশ্চিত। ফলে এমএলএসের প্লে–অফে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে ইন্টার মায়ামি। দি পলের মতে, সতীর্থদের চোখে এটি শুধু এক চুক্তি নয়, বরং পুরো দলের জন্য নতুন করে অনুপ্রেরণার উৎস।

এল ক্লাসিকোর শেষ চার লড়াইয়ে বার্সেলোনার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। হজম করেছে ১৬ গোল। এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। রাফিনিয়া-রবের্ত লেভানদোভস্কিরা চোটে, বার্সেলোনা ডাগআউটে পাচ্ছে না কোচ হ্যান্সি ফ্লিককেও। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মাঠে নামার আগেই যেন কিছুটা এগিয়ে স্বাগতিক রিয়াল!
এটাও অবশ্য ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই- একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছাড়াই নিজেদের সবশেষ ম্যাচে চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকোসের জালে ৬ বার বল পাঠায় বার্সেলোনা। তবে সামনে যখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি রিয়াল মাদ্রিদ, অতিথিদের জন্য তখন খেলাটা মনস্তাত্বিক ও মাঠে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
লা লিগায় ৯ ম্যাচে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের অর্জন ২৪ পয়েন্ট। সমানসংখ্যক ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে বার্সেলোনা। এল ক্লাসিকো দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ।
আরও পড়ুন
| ‘ক্ষুধা এখনও কমেনি’—৯৫০তম গোলের পর রোনালদোর বার্তা |
|
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে সব মিলিয়ে বার্সেলোনাকে কাগজে-কলমে দুর্বল দল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে অনেক সময় এই চাপহীন অবস্থাই খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করে তুলতে পারে। বড় ম্যাচে ছোট ছোট লড়াইগুলোই নির্ধারণ করে দিতে পারে ম্যাচে ভাগ্য। সেদিক থেকে এল ক্লাসিকোয় লড়াইয়ের মধ্যে আছে ‘তিন বিশেষ লড়াই’- যা ক্লাসিকোর ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে।
লামিন ইয়ামাল বনাম আলভারো কারেরাস
গ্রীষ্মে যুক্ত হওয়া রিয়াল মাদ্রিদের আলভারো কারেরাসের জন্য এটি প্রথম এল ক্লাসিকো, কিন্তু তাঁর প্রতিপক্ষ লামিন ইয়ামাল একেবারে অপরিচিত নন। এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা—এটি চতুর্থবার।
প্রথম দেখা হয়েছিল দুই বছর আগে, যখন কারেরাস খেলছিলেন গ্রানাডায় ধারে। সেই ম্যাচেই ইয়ামাল করেছিলেন নিজের প্রথম লা লিগা গোল। গত মৌসুমে দুবার দেখা হয় তাঁদের, যখন কারেরাস খেলতেন বেনফিকার হয়ে। প্রথম সাক্ষাতে, বার্সেলোনার স্মরণীয় ৫–৪ গোলের জয়ে, গোল বা অ্যাসিস্ট না করলেও ইয়ামাল ছিলেন আক্রমণের প্রাণ। দ্বিতীয়বার মুখোমুখি হন চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে, যেখানে বার্সা ১–০ গোলে জেতে। ইয়ামাল সেই ম্যাচে ১০০ শতাংশ ড্রিবল সাফল্য অর্জন করেছিলেন।
এই ইতিহাসই বলে দেয়— রিয়াল ডিফেন্স ভাঙতে ইয়ামালের গতি ও কৌশল হবে বার্সার বড় অস্ত্র, আর কারেরাসের কাজ হবে তাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
ফেরান তোরেস বনাম থিবো কর্তোয়া
চোট কাটিয়ে ফেরান তোরেসের ফেরাটা বার্সেলোনার জন্য স্বস্তির। সম্ভবত তিনিই থাকবেন মূল স্ট্রাইকার হিসেবে। কিন্তু সামনে আছেন ইউরোপের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক—থিবো কর্তোয়া।
গত কয়েক ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন বেলজিয়ান এই কিপার। হেতাফের বিপক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ এক-অন-ওয়ান সেভে দলকে রক্ষা করেছেন, আর জুভেন্টাসের বিপক্ষে দুশান ভ্লাহোভিচকে শূন্য হাতে ফেরান।
আতলেতিকোর বিপক্ষে বড় হারের পর থেকে রিয়াল মাদ্রিদ টানা চার ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছে। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ফেরানের জন্য কাজটা সহজ নয়- কর্তোয়াকে পরাস্ত করা। তাঁর নিখুঁত ফিনিশিং ও পজিশন সেন্সই পারে কর্তোয়ার দেয়াল ভেদ করতে। এই লড়াইয়ের ফলাফলই হয়তো নির্ধারণ করবে এল ক্লাসিকোর স্কোরলাইন।
আরও পড়ুন
| এল ক্লাসিকোয় রিয়ালের সামনে 'আহত' বার্সেলোনা |
|
পাউ কুবারসি বনাম কিলিয়ান এমবাপে
বার্সেলোনার তরুণ ডিফেন্ডার পাউ কুবারসির জন্য এটি এক বড় পরীক্ষা। তাঁর প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্র কিলিয়ান এমবাপে। এই মৌসুমে ইতিমধ্যে লা লিগায় ১০ গোল করেছেন ফরাসি তারকা, যার কল্যাণে টেবিলের শীর্ষে রিয়াল। কিন্তু এমবাপের বিপক্ষে কুবারসির রেকর্ড বেশ আশাব্যঞ্জক।
এ পর্যন্ত ছয়বার মুখোমুখি হয়েছেন দুজন, এর মধ্যে পাঁচবারই জয়ী হয়েছেন কুবারসি। ম্যাচপ্রতি গড়ে ৭.২ ক্লিয়ারেন্স এবং এমবাপের বিপক্ষে ২.৫০ পয়েন্টের সাফল্যই প্রমাণ করে—বড় তারকার বিপক্ষেও শান্ত ও কার্যকর থাকেন তিনি। বার্সার জন্য এমবাপেকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই হবে ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি।
রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা— দুই নামই ফুটবলের আবেগের প্রতীক। কিন্তু এবারের এল ক্লাসিকো শুধু মর্যাদার নয়, অনেক দিক থেকেই ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’। ইয়ামালের কৌশল-দক্ষতা, তোরেসের ফিনিশিং, আর কুবারসির দৃঢ় রক্ষণ—এই তিন লড়াইয়ে লুকিয়ে আছে ম্যাচের ভাগ্যরেখা। রিয়ালের শক্তি যতই বেশি হোক, ইতিহাস বলে—এল ক্লাসিকোতে ভবিষ্যৎ কখনো আগেভাগে লেখা যায় না।

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো প্রমাণ করে চলেছেন— বয়স শুধু সংখ্যা। ৪০ বছর বয়সেও গোলমেশিনের ধার আগের মতোই। শনিবার সৌদি প্রো লিগে আল–হাজমের বিপক্ষে আল-নাসরের ২–০ গোলে জয়ের ম্যাচে নিজের ক্যারিয়ারের ৯৫০তম গোল করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
রোনালদোর পাশাপাশি স্বদেশী হোয়াও ফেলিক্সও জাল কাঁপান। এই জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আল–নাসর। তিন পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলে দুই নম্বরে থাকা আল–তাওয়াউনের চেয়ে এবং গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন আল–ইত্তিহাদের চেয়ে এগিয়ে আট পয়েন্টে।
আরও পড়ুন
| ‘৯৫০’ গোলের মাইলফলকে রোনালদো |
|
ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষদের জন্য একরকম সতর্কবার্তাও দিয়েছেন রোনালদো। ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘দলের জয়ে সহায়তা করতে পেরে খুশি, আর ৯৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরে গর্বিত! আরও চাই, ক্ষুধা এখনও কমেনি!’
এই বার্তাই যেন প্রতিপক্ষদের জন্য সতর্কবার্তা। ক্লাব ও দেশের জার্সিতে রোনালদো এখনো পুরো উদ্যমে খেলতে চান, থামতে চান না এত সহজে। পুরুষ ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক ইতিমধ্যে রোনালদোই। এখন লক্ষ্য আরও বড়— ১০০০ গোলের অবিশ্বাস্য মাইলফলক।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পরিবারের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি এখনই অবসরের কথা ভাবছেন না। রোনালদোর ভাষায়, ‘অনেকে, বিশেষ করে পরিবার, বলে— এবার থামো, সব কিছুই তো অর্জন করেছ। কিন্তু আমি মনে করি এখনো অনেক কিছু দেওয়া বাকি। আমি ক্লাব ও জাতীয় দলে অবদান রাখছি, তাই কেন থামব? হয়তো বেশি বছর নয়, কিন্তু যতদিন খেলব, উপভোগ করে খেলব।’
৭ অক্টোবর পর্তুগাল ফুটবল গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসে আজীবন সম্মাননা পাওয়ার পর রোনালদো বলেন, ‘২০ বছর আগে হয়তো বলতাম, আমি পুরো পৃথিবী জিতে নিতে চাই। এখন ভাবনা বদলেছে। বয়স শিখিয়েছে—দিন দিন করে বাঁচতে হয়। আমি প্রতিটি অনুশীলন, প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করতে চাই।’
আগামী মঙ্গলবার কিং কাপ অব চ্যাম্পিয়নসের শেষ ষোলোতে মুখোমুখি হবে আল–নাসর ও আল–ইত্তিহাদ। রোনালদো বনাম তাঁর সাবেক সতীর্থ করিম বেনজেমা। চার দিন পর লিগে আল–ফায়হার বিপক্ষে ম্যাচ, ৫ নভেম্বর এএফসি কাপে ভারতীয় ক্লাব গোয়ার বিপক্ষে খেলবে রোনালদোর দল। ব্যস্ত সূচির শেষে নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাবে আল–নাসর।
জাতীয় দলের হয়েও রোনালদোর মিশন চলছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ‘এফ’ গ্রুপের শীর্ষে থাকা পর্তুগাল আগামী মাসে আয়ারল্যান্ড ও আর্মেনিয়ার বিপক্ষে খেলবে। হাঙ্গেরির বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো। পর্তুগাল যদি আয়ারল্যান্ডকে হারায় অথবা ড্র করে আর হাঙ্গেরি না জেতে, তবে সরাসরি নিশ্চিত হবে তাদের বিশ্বকাপের টিকিট।
আরও পড়ুন
| এল ক্লাসিকোয় রিয়ালের সামনে 'আহত' বার্সেলোনা |
|
রোনালদো জানেন—ফুটবল জীবনের সূর্যাস্ত কাছে, তবু থামছেন না। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘আমি জানি সময় বেশি নেই, কিন্তু যতদিন আছি, ততদিন পুরোটা দিতে চাই।’এমন ক্ষুধার নামই—ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো!