৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪:০৩ পিএম

চোটের কারণে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র না খেলায় রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম ও প্রধান পেনাল্টি টেকার এখন কিলিয়ান এমবাপেই। তবে গেতাফের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েও পেনাল্টি নেননি ফরাসি তারকা। সেটা নিতে দেন জুড বেলিংহামকে। ব্যক্তিগত অর্জনের কথা না ভেবে এমবাপের এই উদারতা মনে ধরেছে কার্লো আনচেলত্তির। তার চোখে এটা দলের প্রতি নিবেদনের দারুণ এক প্রতিফলন।
মৌসুমের শুরুতেই পেনাল্টির দায়িত্ব এমবাপে ও ভিনিসিয়ুসের মধ্যে ভাগ করে দেন আনচেলত্তি। ব্রাজিল তারকা না থাকায় অবধারিতভাবে তাই পেনাল্টি নেওয়ার কথা এমবাপেরই। তবে গেতাফের বিপক্ষে ম্যাচে এক গোল করা সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড পেনাল্টি পেলে তা নিতে দেন বেলিংহামকে। আগের ম্যাচে লিভারপুলের বিপক্ষে স্পট কিক থেকে মিস করার কারণেই হয়ত বাড়তি চাপ নিতে চাননি বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার।
তবে যেই কারণেই হোক, এমবাপের এই কাজটা ভালো লেগেছে বলেই মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আনচেলত্তি। “এখানে বিতর্কের কিছু নেই। এর দুটি দিক রয়েছে। গেতাফের বিপক্ষে এমবাপে যা করেছে, আপনি এটিকে তার জড়তা হিসাবে দেখতে পারেন, অথবা আপনি এটিকে আমাদের মতো দেখতে পারেন, যা হল দায়িত্ব এবং দল স্বার্থ এগিয়ে রাখার মত একটি কাজ। তিনি অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন একজন খেলোয়াড়। তিনি হয়ত ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিভা হতে পারেন, তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে দলকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, আমি এটাকে অনেক মূল্যবান বলে মনে করি।”
আনচেলত্তির কাছে এমবাপের এটা স্রেফ উদারতা হলেও অনেকেই মনে করছেন, এটা ফ্রান্স ফরোয়ার্ডের নিজের সামর্থ্যের প্রতি বিশ্বাসের ঘাটতি। বিশেষ করে দলের অন্যতম বড় তারকা হওয়ার পরও তার লিভারপুল ম্যাচে মিসের পরের ম্যাচে পেনাল্টি ছেড়ে দেওয়া নেতা হিসেবেও তাকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে আলোচনার মুখে।
আনচেলত্তি অবশ্য এই ধরনের কোনো চিন্তাই করার পক্ষে নন বলেই জানিয়েছেন। “আমি ব্যাপারটা সেভাবে দেখি না। ড্রেসিংরুমের মধ্যে এতা দলের জন্য, তার সতীর্থদের জন্য, আমাদের সবার জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যেমনটা আগেই বলেছি, আমরা তার এই কাজের মূল্য দিই। দলের প্রতি নিবেদনের এটা একটা দুর্দান্ত নজির।”
গ্রীষ্মের দলবদলে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে নাম লেখানো এমবাপে এখন পর্যন্ত এই মৌসুমে গোল করেছেন ১০টি। লেফট উইঙ্গার হলেও ভিনিসিয়ুস থাকায় মূলত খেলতে হচ্ছে স্ট্রাইকার হিসেবে। গত দুই ম্যাচ ধরে অবশ্য প্রিয় পজিশনেই খেলছেন এমবাপে।
No posts available.
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫২ এম
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৫৩ এম
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৩ এম

ইন্টার মিলানের স্প্যানিশ গোলকিপার হোসেপ মার্টিনেজের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে মারা গেছেন ৮১ বছর বয়সী এক হুইলচেয়ার আরোহী। ইতালির কোমো প্রদেশে এই ঘটনা ঘটে।
ইতালীয় পুলিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ‘ইন্টার মিলানের অ্যাপিয়ানো জেনটিলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন গোলকিপার মার্টিনেজ। তাঁর গাড়িটি কোমো প্রদেশে রাস্তার পাশে সাইকেলের লেনে এক বৈদ্যুতিক হুইলচেয়ারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। হুইলচেয়ারটি তাঁর লেনে চলে এসেছিল।মার্টিনেজ সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে জরুরি সেবায় কল করেন এবং লোকটিতে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানোর আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।’
আরও পড়ুন
| ইয়ামালকে বির্তক থেকে বাঁচাতে নতুন পরিকল্পনা বার্সার |
|
দূর্ঘটনায় আহত হননি মার্টিনেজ। তবে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নিকটস্থ হাসপাতালে রক্তে অ্যালকোহল ও মাদকের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা করা হয় এই গোলকিপারকে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ রাস্তার টায়ার মার্ক পরীক্ষা করছে, যাতে ব্রেকিং দূরত্ব এবং গাড়ির প্রাথমিক গতি পরীক্ষা করা যায়।
ঘটনার পর বুধবার ফিওরেন্টিনার বিপক্ষে সিরি ‘আ’ ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলন বাতিল করেছে ইন্টার মিলান। ক্লাবটি এই দুর্ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
২০২৪ সালে জেনোয়া থেকে ইন্টার মিলানে যোগ দেওয়া ২৭ বছর বয়সী স্পেনের এই গোলরক্ষক এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ১২টি ম্যাচ খেলেছেন। মার্তিনেজ এর আগে লাস পালমাস ও আরবি লাইপজিগের হয়েও খেলেছেন।

সম্প্রতি মাঠের খেলা থেকে বাইরের নানান বিষয় নিয়েই সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন লামিনে ইয়ামাল। সবশেষ মৌসুমেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দলের শিরোপা জয়ে অবদান রাখেন বার্সেলোনার তারকা উইঙ্গার। তবে চলতি মৌসুমে তাঁর ব্যাক্তিগত জীবন নিয়েই যেন আগ্রহ বেশি অনেকের। ইয়ামাল কি করছেন, কি বলছেন, কোথায় যাচ্ছেন তা নিয়েই যত কৌতুহল ভক্তদের।
মাঠের বাইরের এসব বিষয় বার্সার সেরা ফুটবলারের খেলায় প্রভাব ফেলতেই পারে। অনেকের মতে সবশেষ এল ক্লাসিকোতে ইয়ামালের ছন্দহীনতার কারণ বিতর্কিত মন্তব্য আর উদাসীনতা। দলের আক্রমণের প্রাণভোমরাকে তো আর এভাবে ছেড়ে দেওয়া যায় না। সেই শঙ্কা থেকেই এবার ১৮ বছর বয়সী স্প্যানিশ উইঙ্গারের ক্লাব তাকে নিয়ে নাকি নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্ত’ জানিয়েছে , ‘বার্সেলোনা আশা করে ইয়ামাল পুরোপুরি পেলভিক চোট কাটিয়ে দলে নিয়মিত হয়ে উঠবেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার মন্তব্যের কারণে খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন
| বাঁচা-মরা ম্যাচের আগে জোড়া সুসংবাদ-দুঃসংবাদ শোনালেন আর্সেনাল কোচ |
|
এল ক্লাসিকোর আগে একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ‘রিয়াল চুরি করে, এরপর অভিযোগ করে’ এমন মন্তব্য করেন ইয়ামাল। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার হয়। সেই রেশ ছড়িয়ে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচেও। ইয়ামালের পায়ে বল গেলেই দুয়োধ্বনি দিতে থাকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর গ্যালারি। পরে ম্যাচ শেষে তো কত কি হয়ে গেল। বার্সার তারকার ওপর রাগ ঝাড়েন রিয়ালের কয়েকজন ফুটবলার।
এল ক্লাসিকোর আগে ইয়ামালের মন্তব্যে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে না তাঁর ক্লাব বার্সেলোনা। ইয়ামালের মন্তব্য ‘এল ক্লাসিকোর আগে রিয়ালের প্রতিশোধী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে’ বলে মনে করছে কাতালান ক্লাবটি।
আপাতত ইয়ামালের পুরোপুরি সেরে ওঠা ও পারফরম্যান্সে ফেরাকে শীর্ষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বার্সেলোনা। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের খবর, বার্সেলোনা ইয়ামালের মন্তব্যকে ‘এক তরুণ খেলোয়াড়ের ভুল’ হিসেবে মূল্যায়ন করলেও, একই ঘটনা যাতে আবার না ঘটে সেজন্য ইয়ামালের এজেন্ট জর্জ মেন্ডেসের সঙ্গে সমন্বয় করে তরুণ তারকার কথাবার্তা, আচরণ ও ব্যক্তিগত জীবন ব্যবস্থাপনা করবে।’ ভবিষ্যতে ইয়ামালের অপ্রয়োজনীয় বিবৃতি বা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া প্রতিরোধ করতে চায় বার্সা।

আরেকটি শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে পড়লেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সৌদি ক্লাব আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর প্রতিযোগিতামূলক কোনো শিরোপার ছোঁয়া না পাওয়া পর্তুগিজ মহারতারকার আরও একটি টুর্নামেন্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে হলো।
গতকাল রাতে কিংস কাপের শেষ ষোলোতে করিম বেনজেমার আল ইত্তিহাদের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যায় আল নাসর। দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময় ১০ জন নিয়েও রোনালদোদের হারাতে বেগ পেতে হয়নি আল ইত্তিহাদের।
রাউন্ড অব সিক্সটিনে দলের হারে নিষ্প্রভ ছিলেন রোনালদোও। ‘সিআর সেভেনে’র হতাশার ম্যাচে আলো ছড়ান তার সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ বেনজেমা। শুরুতে দলকে এগিয়ে দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। এরপর এঞ্জেলো গ্যাব্রিয়েলের গোলে আল নাসর সমতা ফিরলেও হুসেম আওয়ারের নৈপুণ্যে জয়সূচক গোল পেয়ে যায় আল ইত্তিহাদ।
আরও পড়ুন
| বাঁচা-মরা ম্যাচের আগে জোড়া সুসংবাদ-দুঃসংবাদ শোনালেন আর্সেনাল কোচ |
|
আল আউয়াল পার্কে শুরুটা দুর্দান্তই ছিল আল নাসরের। বলের দখল থেকে শট নেওয়াতেও প্রতিপক্ষ থেকে এগিয়ে ছিল রোনালদোরা। তবে খেলার ধারার বিপরীতে গোল পায় আল ইত্তিহাদই। ম্যাচের ১৫ মিনিটে দ্রুত এক পাল্টা আক্রমণ থেকে মুসা দিয়াবি মাঝমাঠে বেনজেমার সঙ্গে ওয়ান-টু করে ডান প্রান্তে ছুটে যান, এরপর নিখুঁত এক ক্রসে বাঁ দিক থেকে বক্সে সাবেক রিয়াল তারকা বেনজেমাকে খুঁজে নেন। ফরাসি ফরোয়ার্ড ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে দলকে লিড এনে দেন।
রোনালদোকে পুরো সময় ভালোভাবে আটকে রাখে আল ইত্তিহাদের রক্ষণ। ৩০ মিনিটে সমতায় ফিরে আল নাসর। অ্যাঞ্জেলো গ্যাব্রিয়েলের থ্রু বল পেয়ে রোনালদো বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ক্রস দেন। বল প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে গ্যাব্রিয়েলের সামনেই পড়ে। প্রাক্তন চেলসি তারকা প্রথম ছোঁয়াতেই শট নিয়ে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আবারও এগিয়ে যায় আল ইত্তিহাদ। থ্রু বল ধরে হুসেম আওয়ার বক্সে ঢুকে আল নাসরের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত এক শটে ব্যবধান ২-১ করেন।
বিরতির পর রোনালদোরা সমতায় ফেরার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন। জর্জ জেসুসের দল আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। খেলার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এক ধাক্কা খায় আল ইত্তিহাদ। আইমান ইয়াহিয়াকে বিপজ্জনক ট্যাকল করায় ক্লাবটির ডিফেন্ডার আহমেদ আল জুলায়দান সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
প্রতিপক্ষের একজন কম খেলোয়াড়ের সুবিধা নিয়ে আল নাসর আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়ায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আল ইত্তিহাদের দুর্দান্ত রক্ষণভাগ তাদের কোনো গোল করতে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় রোনালদোদের।
আল নাসরে ব্যক্তিগত সাফল্য থাকলেও এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ট্রফি জেতা হলো না রোনালদোর। প্রায় তিন বছরেরও বেশি সময় ক্লাবটিতে খেলে দলকে শিরোপা এনে দিতে ব্যর্থ পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ৪০ বছর বয়সী রোনালদোও।
আরও পড়ুন
| ফিফা বিশ্বকাপে আকাশছোঁয়া বিস্ময়, সৌদি আরবের ‘স্কাই স্টেডিয়াম’ |
|
২০২৩ সালের শুরুতে সৌদি প্রো লিগে যোগ দেওয়ার পর থেকে রোনালদো মোট ১৩টি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। দুইবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশগ্রহ করে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য গত মৌসুমের সেমিফাইনালে ওঠা।
রোনালদো যোগ দেওয়ার পর ২০২২–২৩ এবং ২০২৩–২৪ মৌসুমে সৌদি প্রো লিগে রানার্সআপ হয়েছিল আল নাসর। সবশেষ মৌসুমে তো পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে শেষ করেছে তারা। তারা শেষ পর্যন্ত তৃতীয় স্থানে ছিল।

জিতলে নিশ্চিত শেষ আট। হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। ২০২৫ কারাবাও কাপের এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ব্রাইটনের মুখোমুখি হবে আর্সেনাল।
আর্সেনালের ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে আগামী শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে দুইটায় মাঠে গড়াবে বাঁচা-মরা এই ম্যাচ। ম্যাচের আগে দুঃসবাদ জানালেন গার্নারদের স্প্যানিশ কোচ মিকেল আরতেতা।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আরতেতা জানিয়েছেন, কারাবাও কাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে উইলিয়াম সালিবা ও গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিকে পাচ্ছে না আর্সেনাল। দুইজনই চোটে ভুগছেন। তবে দুটি সুসংবাদও দিয়েছেন তিনি। ডেকলান রাইস ও রিকার্ডো কালাফিওরি চোট কাটিয়ে প্রস্তুত ঘরের মাঠে লড়াইয়ের জন্য।
আরতেতা বলেছেন,
‘সালিবা খেলতে পারবেন না। সে চোটে। রাইস ও কালাফিওরি প্রস্তুত পরের ম্যাচের জন্য। সালিবার মতো মার্তিনেল্লিও চোটে। তাকেও পাওয়া যাবে না পরের ম্যাচে।’
বুকায়ো সাকা গত সপ্তাহে অসুস্থ ছিলেন। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে বদলি করা হয়। তবে আরতেতা নিশ্চিত করেছেন ব্রাইটনের বিপক্ষে দেখা যাবে সাকাকে।

এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে গ্রুপ পর্বের শুরুটা বাংলাদেশের পাঁচবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের জন্য শুভ হয়নি। প্রথম ম্যাচে ওমানের লিগ চ্যাম্পিয়ন আল সিবের বিপক্ষে ২-৩ গোলে হারের পর কোয়ার্টার ফাইনালের আশা রক্ষার জন্য ক্লাব আল আনসারের বিপক্ষে জয় একমাত্র বিকল্প ছিল। লিগে দেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী ক্লাব দেখল মুদ্রার উল্টোপিঠ। লেবাননের জায়ান্টদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে মারিও গোমেজের দলের কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে।
কুয়েতের আল সাবাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় ‘বি’ গ্রুপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আল আনসারের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ও লেবাননের ক্লাব—দু’দলই হার দেখেছিল। হারের ব্যবধানও একই, ২-৩ গোলে। আজ যে দল জিতবে, তারা শেষ আট নিশ্চিতের পথে এগিয়ে যাবে—এমন সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি বসুন্ধরা কিংস। লিগ থেকে কার্যত বিদায়ঘণ্টা বেজেছে বাংলাদেশের ক্লাবটির।
আরও পড়ুন
| ফিফা বিশ্বকাপে আকাশছোঁয়া বিস্ময়, সৌদি আরবের ‘স্কাই স্টেডিয়াম’ |
|
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ ক্লাব আল কুয়েত। এটি অনেকটা নিয়মরক্ষার ম্যাচ। গ্রুপ ‘বি’ থেকে শীর্ষ পয়েন্টধারীরাই পা রাখবে শেষ আটে। সেক্ষেত্রে লড়াইটা হবে আল সিব ও আল আনসারের মধ্যে।
এদিন ম্যাচঘড়ির ১৫ মিনিটে লিড নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় বসুন্ধরা কিংসের। কর্নার থেকে সিনিয়র সোহেল রানার জোরালো শট মাজিদি ওসমানের পা ছুঁয়ে পৌঁছে রাকিব হোসেনের সামনে। জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড হেলায় নষ্ট করেন সুযোগ। তাঁর ডান পায়ের শট বারের অনেক ওপর দিয়ে চলে যায়। নিজের এই হেন কাণ্ডের জন্য বিরক্তিও প্রকাশ করেন ২৬ বছর বয়সী রাইট উইঙ্গার।
২০তম মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে একপ্রকার ছোঁ মেরে বল নেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। পাস দেন দরিয়েলতন গোমেজ নাসিমেন্তোকে। বল পেয়েই ছুটতে থাকেন ব্রাজিলীয়ান রাইট উইঙ্গার। তাঁকে থামাতে পেছন পেছন ছোটেন আনসারের চার-পাঁচজন ফুটবলার। তাতে অবশ্য কাজ হয়নি, চিতার বেগে বক্সে ঢুকে পড়েন দরিয়েলতন। ওয়ান-টু অ্যাকশনে চলে যান একপর্যায়ে। তাঁর সামনে তখন কেবল প্রতিপক্ষ গোলকিপার আসাদ। বসুন্ধরা কিংসের দুর্ভাগ্য নাকি দরিয়েলতনের—কে জানে—ব্রাজিলীয়ান উইঙ্গারের আগেই বল পৌঁছে যায় আল আনসার গোলকিপারের গ্লাভসে।
আরও পড়ুন
| ক্যানসারের কাছে হার মানলেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড |
|
২৯তম মিনিটে আক্রমণে ওঠে ক্লাব আল আনসার। বাংলাদেশের রক্ষণদেয়ালের আশপাশে বল ওয়ান-টু খেলতে থাকে দলটির ফরোয়ার্ডরা। বারবার চেষ্টাতেও সুযোগ হচ্ছিল না ডিফেন্সে চিড় ধরানোর। উপায়ন্তর না পেয়ে দূরপাল্লার শট নেন আবুবকর জিবরিন আকুকি। লেবানিজ মিডফিল্ডারের সে শটে চোখের শান্তির চেয়ে বিরক্তিই বেশি ঠেকেছে।
৩২তম মিনিটে একপ্রকার গোল পেয়ে যাচ্ছিল আল আনসার। বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠে দলটি। মিডফিল্ডে প্রথমে দুজনকে কাটিয়ে বল যায় ওসমানের কাছে। বল পাওয়া মাত্রই তপু বর্মনকে ড্রিবল করে বক্সের কাছে পৌঁছে যান ৩১ বছর বয়সী এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। তবে তাঁর প্রচেষ্টা বিফলে যায়—আড়াআড়ি শট বারের ডানপ্রান্ত ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
ওসমান ফের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ান বসুন্ধরা কিংসের জন্য। এর জন্য অবশ্য বেশি দায়ী কিংস ডিফেন্ডার তাজউদ্দিন। মিডফিল্ড থেকে রফিক মাদনিনের দূরপাল্লার শট হেডে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন , হিতে বিপরীত হয়। বক্সের বাইরে চাতক পাখির মতো অপেক্ষমাণ ওসমান চেস্ট ট্র্যাপে বল নিয়ন্ত্রণে নেন। কয়েক গজ সামনে থেকে শটও নেন। কিংস এ যাত্রাতেও বেঁচে যায়। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান তপু। ওসমানের বাঁ পায়ের জোরালো শট সোজা গিয়ে লাগে বসুন্ধরা কিংস অধিনায়ক তপুর বুকে। তাতেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বল চলে যায় বারের অনেক ওপরে।
আরও পড়ুন
| ক্ষুব্ধ বাটলার হঠাৎ খুশি |
|
শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি বসুন্ধরা কিংসের। ৪৩ মিনিটে গোল হজম করে বাংলাদেশের ক্লাব। গোলবার থেকে প্রায় ১৯–২০ গজ দূরে আল আনসারের ফিলিস্তিনি ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ হেবাউসকে ফাউল করে বসেন রাকিব। সেটপিস থেকে স্পটকিকের দায়িত্ব পড়ে হেবাউসের। তাঁর বুলেটগতির শট দারুণ হেডে জালে জড়ান আকুকি। নাইজেরীয় ফরোয়ার্ডের বল বারের সামনে পৌঁছে। সেটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে উল্টো জালে জড়িয়ে বসুন্ধরা কিংস গোলরক্ষক শ্রাবন।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করার সুযোগ তৈরি হয় ক্লাব আল আনসারের। ডি বক্সের মধ্যে এমানুয়েল টনির কড়া ট্যাকেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হেবাউস। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। আলি তনাই কিক নেন—বারের ডানদিকে মারা সে শট দারুণভাবে রুখে দেন শ্রাবন।
আরও পড়ুন
| নেগ্রেইরা কেলেঙ্কারিতে আবার আইনি চাপে বার্সা |
|
৭৬ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে ক্লাব আল আনসার। বক্সে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ার আগে তপুর পায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে যান আকুকি। তাতেই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সেখান থেকে গোল করেন হিশেম খালফাল্লাহ। যদিও রেফারির এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
বসুন্ধরা কিংসের কফিনে শেষ পেরেক ডুকে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে। মিডফিল্ড থেকে পাওয়া বল নিয়ে বক্সের সামনে পৌঁছে যান হেবাউস। যদিও তাঁর সামনে ছিলেন তাজউদ্দিন ও টনি। বসুন্ধরার দুই মিডফিল্ডারকে ড্রিবলিং করে বাঁ প্রান্ত দিয়ে চিপ শট নেন ফিলিস্তিনি ফরোয়ার্ড। তাতেই ৩-০ গোলে হেরে চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টারে ওঠার স্বপ্ন ফিকে হয়ে পড়ে বসুন্ধরা কিংসের।