
সবশেষ জাপানের বিপক্ষে হারের পর দলের সামর্থ্য নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে নিন্দুকেরা। তবে এই ব্রাজিল যে বদলে যাওয়া এক দল সেটা আবার মাঠেই প্রমাণ দিল তারা। একের পর এক আক্রমণের ঢেউয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ত্রাস ছড়াতে থাকেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-রদ্রিগোরা। জয়ের ব্যবধানটা হতে পারত আরো বড়। এরপরও এই ব্রাজিল দলকে নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন সমর্থকরা।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে আজ সেনেগালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে দারুণ এক পারফরম্যান্সই উপহার দিল ব্রাজিল। ঘরের মাঠে আফ্রিকার এই দেশটির বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলোত্তির দল। ব্রাজিলের আক্রমণভাগের ভরসার প্রতীক হয়ে যাওয়া এস্তেভাওয়ের নৈপুণ্যে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ানো গোলটি আসে কাসেমিরোর পা থেকে।
সেনেগালের বিপক্ষে ব্রাজিলের এটি প্রথম জয়। আফ্রিকার দেশটির টানা ২৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার যাত্রাও ইতি টেনে দিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এর আগে সবশেষ ২০২৩ সালে প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের কাছে হালি খেয়ে ৪-২ গোলে হেরেছিল তারা। ২০১৯ সালে হয়েছিল ১-১ গোলের ড্র। তাতে এই জয় প্রতিশোধও নেওয়া হয়ে গেল সেলেসাওদের।
সেনেগালের বিপক্ষে কেবল বল দখলের লড়াইয়েই পিছিয়ে ছিল ব্রাজিল। র্যাঙ্কিংয়ে ১৮ নম্বর দেশটির বিপক্ষে গোলের সুযোগ তৈরি, শট নেওয়া কিংবা গোলমুখে শট রাখায় দাপট ছিল সেলেসাওদেরই। ৪৮ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রেখে ১৪টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে ব্রাজিল। বিপরীতে ১১টি শট নেয় মাত্র একবারই লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে সফরকারী দল।
ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই সেনেগালের রক্ষণভাগকে তটস্থ রাখে ব্রাজিল। ভিনিসিয়ুসদের নেওয়া কিছু শট গোলপোস্টের বাইরে, কিছু সেভ করেন সেনেগালের গোলকিপার। ২৮ মিনিটে সফলতা আসে চেলসির উইঙ্গার এস্তেভাওয়ের সৌজন্যে।
আক্রমণটা শুরু হয় কাসেমিরোকে দিয়ে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডারের পাস প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে দিক বদলায়, বল চলে যায় বক্সের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা এস্তেভাওয়ের কাছে। দৌড়ে এসে প্রথম ছোঁয়াতেই যে শটটা নিল, তা দারুণভাবে বাঁক খেয়ে জালের কোণায় গিয়ে জড়ায়।
মিনিট সাতেক পরই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ব্রাজিল। রদ্রিগোর ফ্রি-কিক থেকে বল পান কাসেমিরো। সেনেগালের ডিফেন্ডাররা এই মিডফিল্ডারকে ঠিকঠাক মার্ক করে রাখতে পারেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্দন্ত এক বাঁকানো শটে জাল কাঁপান কাসেমিরো।
প্রথামারর্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে তেমন একটা গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। লক্ষ্যে রাখতে পারেনি দুই দলই। ৫১ মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল সেনেগাল। স্বাগতিকতের গোলকিপার এডারসনের ভুলে গোল পেতে পারত সফরকারীরা। তবে সেনেগালের এভার্টনের উইঙ্গার ইলিম্যান নদিয়ে ঠিকঠাক শটই নিতে ব্যর্থ হন।
দারুণ এই জয়ের পর আগামী ১৮ নভেম্বর তিউনিসিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল
No posts available.

জর্জিয়ার বিপক্ষে জয় আর ওদিকে তুরস্কের হারেই বিশ্বকাপে পৌঁছে যেত স্পেন। নিজেদের কাজটা ভালোভাবেই করেছে লা রোজারা। তবে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে তুরস্কের ২-০ গোলের জয়ে খানিকটা বিলম্বই হলো তাদের। ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বলতে গেলে আর এক কদম দূরে আছে স্পেন।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্জিয়াকে আজ ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন। বড় জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন মিকেল ওয়ারজাবাল। একবার করে বল জালে পাঠিয়েছেন মার্টিন জুবিমেন্দি ও ফেরান তরেস।
এই জয়ে গ্রুপ ‘ই’ থেকে পাঁচ ম্যাচের সবক’টিতে জিতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে স্পেন। তিন পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে তুরস্ক। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে তিনে জর্জিয়া।
আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা লামিনে ইয়ামালকে ছাড়াই মাঠে নামে স্পেন। তবে দলের প্রধান তারকাকে ছাড়াই র্যাঙ্কিংয়ে ৭০ নম্বর দলকে উড়িয়ে দিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা স্পেন। ৬১ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৪টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। আর ছয়টি শট নেওয়া জর্জিয়া গোলমুখে রাখে দুটি শট।
১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে নেন ওয়ালজাবাল। রিয়াল সোসিয়েদাদের ফরোয়ার্ডের গোলের ১১ মিনিট পর ব্যবধান ২-০ করেন জুবিমেন্দি। ফাবিয়ান রুইজের নিখুঁত পাস থেকে বল জালে জড়ান আর্সেনালের ২৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
৩৪ মিনিটে আরেক দফা এগিয়ে যায় স্পেন। এবার গোলদাতার নাম ফেরান তরেস। আক্রমনভাগের বাঁ দিক থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে বলটি গোলের সামনে দিয়ে পাঠান ওয়ারজাবাল। বল পান তরেস, লক্ষ্যে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬৩ মিনিটে শেষ গোলটি করে স্পেন। নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করার সঙ্গে দলের হালি গোলও পূরণ করেন তিনি।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে স্পেনের পরের ম্যাচ তুরস্কের বিপক্ষে। আগামী ১৮ নভেম্বর ম্যাচটিতে হারলেও বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে তারা। গোল ব্যবধানে অনেকটাই পিছিয়ে থাকায় স্পেনের বিপক্ষে জয় পেলেও প্লে অফ খেলতে হবে তুরস্ককে।

ফুটবল ক্যারিয়ারে ভুল যাওয়ার মতো একটি রাত ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। রাগ নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে দলকে এখন অনেকটা দলকে বিপদেই ফেলে দিয়েছেন আল নাসরের মহাতারকা। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে লাল কার্ড দেখে এখন নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় আছেন রোনালদো। সেই ঘটনায় নিজের ভুল নাকি বুঝতে পেরেছেন তিনি।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে আগামীকাল আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। এই ম্যাচে জয় কিংবা ড্র করলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে রবার্তো মার্টিনেজের দল। তবে পঁচা শামুকে পা কেঁটে হারলেই বিপদে পড়তে হতে পারে তাদের। অন্য ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে আয়াল্যান্ডের জয় পেলেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে চলে যাবে আইরিশরা। তাতে প্লে অফের বাঁধা উতরে বিশ্বকাপ খেলতে হবে পর্তুগালেকে।
মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে রোনালদোকে পাচ্ছে না পর্তুগাল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের শুরুর একাধিক ম্যাচেও হয়তো ‘সিআর সেভেনকে’ ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে পর্তুগালকে। প্রতিপক্ষের ফুটবলারকে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে দলকে বিপদেই ফেলে দিলেন তিনি।
আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে পর্তুগালের মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ বলছেন, নিজের ভুল হয়েছে বুঝতে পারছেন রোনালদো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেন,
‘ম্যাচের উত্তাপ, ওই মুহূর্তের আবেগ, ইতিবাচক ফল না পাওয়ার হতাশা—ফুটবলে এমন ঘটনা ঘটেই। এমন এক মুহূর্তে ক্রিস (রোনালদো) এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল যা তার জন্য বিপদ হয়ে আসে। অবশ্যই, সে জানে এটা সে করতে চায়নি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে। সে জানে সে ভুল করেছে, এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে, রোববার আমাদের সাহায্য করতে পারবে না।’
রবিবার পর্তুগাল গ্রুপ এফ–এর ষষ্ঠ ম্যাচে আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হবে। আর্মেনিয়া ইতোমধ্যেই বাদ পড়ে গেছে, আর পর্তুগাল ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ জিতলেই তাদের পথ অনেকটাই সহজ হবে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কোচ মার্টিনেজের রক্ষণভাগের ভুলগুলোই তাদের ভুগিয়েছে বলছেন ব্রুনো,
‘সবকিছু আমাদের পরিকল্পনা মতো হয়নি। আমরা খুব কম সুযোগ তৈরি করেছি কারণ ফাইনাল থার্ডে আমাদের খেলোয়াড় ছিল কম। আমার মনে হয় আমাদের বিল্ড-আপ খুব গভীর থেকে শুরু হচ্ছিল এবং আয়ারল্যান্ডের রক্ষণের জন্য তা যথেষ্ট ধীর ছিল। আক্রমণে উঠার ক্ষেত্রে আমাদের আরও কৌশলী হওয়া উচিত ছিল।’
প্রতিপক্ষ হিসেবে আর্মেনিয়াকে নিয়ে ব্রুনো বলেন,
‘আমরা আগেও আর্মেনিয়ার মুখোমুখি হয়েছি। তারা আক্রমণে খুবই গতিময়, মাঝমাঠে বেশ মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে, খুব আগ্রাসী দল। তারা আমাদের কী ধরনের সমস্যায় ফেলতে পারে, আমরা জানি।’
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৩৫ পিএম

ঘড়ির কাঁটা তখন বিকেল ৪টা ছুঁইছুঁই। জাতীয় স্টেডিয়ামের মূল মাঠের পাশে দুই ভিনদেশী দেখে অজানা কতশত প্রশ্ন। কাছে এগোনোর পরে দ্রুতই আড্ডাটা জমে উঠল। পরিচয় জানতে পেরে দুই ভদ্রলোকেই প্রশ্নবানে ভাসালেন প্রতিবেদককে। হামজা চৌধুরীকে নিয়েই তাদের যত আগ্রহ। বাংলাদেশে হামজা উন্মাদনা এখন কোন পর্যায়ে তার খানিকটা বন্দনা দিতেই আরো আন্তরিক হয়ে উঠলেন। তাদেরকে প্রশ্ন করব কি জানার আগ্রহ আমার চেয়ে যেন তাদেরই বেশি। তা কিছুটা জানাতেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বেরসিক মিডিয়া অফিসার সেই আড্ডা থামিয়ে দিলেন। জানালেন টিম বাস পৌঁছেছে সবাইকে মাঠ ছাড়তে হবে।
যাওয়ার আগে দুজনের পরিচয়টা দিয়ে গেলেন — হামজার ক্লাব লেস্টার সিটির মিডিয়া বিভাগের একজন অন্যজন নিরাপত্তা রক্ষী। পরে অবশ্য দুজনেই কথা বলেছেন উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে।
অনেকের মতে বাংলাদেশের ফুটবলের নবজন্মের নায়ক তিনি। কারও কাছে তিনি ফুটবল বিপ্লবের কারিগর। জনপ্রিয়তার তলানীতে গিয়ে ঠেকা ফুটবলকে হামজা দেখিয়েছেন আশার আলো। এমন লেস্টার সিটির এই ফুটবলারকে নিয়ে এমন অনেক মুখভারী কথা সারাদিনই বলা যাবে। ফুটবল খেলুড়ে কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখাটাও তো দারুণ এক অভিজ্ঞতা। আর সেটার স্বাক্ষী হতেই যে সুদূর লেস্টার সিটি থেকে বাংলাদেশে আসা দুই কৌতূহলী চরিত্র।
জাতীয় দলের অনুশীলনে হাজির হওয়া ভিডিও প্রডিউসার ড্যানিয়েল ট্যাগেটের মুখ থেকেই প্রথমে শোনা যাক তাদের আগমনের হেতু,
‘আমরা আজ সকালেই এসেছি। সম্প্রতি সে ইংল্যান্ডের জাতীয়তা বদলে বাংলাদেশের হয়ে খেলছে। সেটারই একটা ডকুমেন্টারি (প্রামান্যচিত্র) বানাচ্ছি। ইংল্যান্ডে গিয়ে আরও ভিডিও বানাব। এরপর এডিটিং আছে তাই প্রকাশ পেতে কয়েক মাস লাগবে।’
বর্তমানে দেশে হামজার জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। সদা হাস্যজ্যেল এই ফুটবলারের একবার দর্শন পেতে মুখিয়ে থাকে ফুটবলপ্রেমীরা। বিপণণ প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁর পিছু ছুটছে প্রতিনিয়ত। হামজার এমন জনপ্রিয়তা প্রত্যাশা করেননি ট্যাগেট,
‘বাংলাদেশে সে কতটা জনপ্রিয়—এটা দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। হামজা বলেছিল আগে আমাকে। কিন্তু এতটা হবে তা আমি ভাবিনি। ম্যাচের সময় হয়তো আরও বাড়ব। হামজা বলেছে, ম্যাচ নাকি সোল্ড আউট।’
একটা সময় বাংলাদেশের ম্যাচে গ্যালারি সারিতে দর্শক শূন্যতায় খাঁ খাঁ করতো চারিদিক। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার কাছে ফুটবল নেহাৎ একটা সাদামাটা ক্রীড়া হয়েই ছিল। রাতারাতি সেই অতীত বদলে যায় একঝাঁক প্রবাসী ফুটবলারদের বদৌলতে। এখন সেই সময়টা কেবল ক্ষয়ে যাওয়া অতীত। ফুটবলে প্রাণ সঞ্চার করা হামজা এখন মাঠে নামলেই দেখছেন উপচে পড়া ভিড়।
আগামী ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের টিকিট বিক্রি হতে সময় লেগেছ মাত্র মিনিট চারেক। ট্যাগেট তা শুনে খানিকটা অবাকই হন,
‘হ্যাঁ, আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশ কেমন, মানুষ হামজাকে কীভাবে গ্রহণ করছে, সে কতটা বড় সেলিব্রিটি। লেস্টারের ভক্তরা তো এগুলো দেখে না। তাদের সেই অভিজ্ঞতা দেখাতেই আমরা কাজ করছি।’
ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে তো আরও অনেক ইউরোপের বাইরের ফুটবলারই খেলেন। হামজাই কেন ব্যাতিক্রম ? সবার থেকে কোথায় আলাদা এই ২৮ বছর বয়সী তারকা ? এর আগে লেস্টার সিটির আব্দুল ফাতাউকে নিয়েও নাকি ডকুমেন্টরি বানাতে তাঁর দেশ ঘানায় গিয়েছিলেন ট্যাগেট। হামজাকে নিয়ে কেন ভিডিও বানাতে হচ্ছে তাঁদের। সেই উত্তরে তিনি বলেন,
‘হামজা ভক্তদের প্রিয় কারণ সে লেস্টারের স্থানীয় ছেলে। এখানেই বড় হয়েছে। ভক্তরা তাকে ভালোবাসে, আর তার গল্পটাও আকর্ষণীয়। তাই আমরা এই ডকুমেন্টারি করছি।’
লেস্টার সিটি হামজাকে কীভাবে দেখে সেই গল্পও তুলে ধরলেন ট্যাগেট,
‘লেস্টার সিটি হামজাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে। সে আমাদের সহ-অধিনায়ক। আমরা তাকে ভালোবাসি, সম্মান করি। সে বহুদিন ধরে ক্লাবে আছে, লেস্টারের কথা ভাবলে হামজার নাম আসে। সে ক্লাবকে ভালোবাসে, ক্লাবও তাকে ভালোবাসে।’
ভারত ম্যাচ পর্যন্ত ঢাকায় থাকবেন ট্যাগেট। তাঁর নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত দীর্ঘদেহী জে প্যাটম্যান। হামজার জনপ্রিয়তা ক্যামরা বন্দি করবেন। আর স্বাক্ষী হবেন, একজন ফুটবলার কিভাবে গোটা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ঝড় তুলতে পারেন।

আন্তর্জাতিক বিরতিতে আবারও তর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের নিয়ম। ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার পথ কতটা কঠিন—এ নিয়েই বিতর্কে উত্তাপ ছড়িয়েছেন ইতালির কোচ জেনারো গাত্তুসো। আর সেই মন্তব্যকে সরাসরি আঘাত হিসেবে নিয়ে জবাব দিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
আগামী গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় হবে ২০২৬ বিশ্বকাপ। তার আগেই মার্তিনেজদের আর্জেন্টিনা দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দাপটের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে মূলপর্বে। কনমেবলের দীর্ঘ লিগভিত্তিক বাছাইয়ে শীর্ষে থেকে শেষ করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
আর্জেন্টিনার সঙ্গে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ব্রাজিল, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ে। প্লে-অফে লড়াইয়ের সুযোগ পেয়েছে বলিভিয়া।
ইতালি অবশ্য ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে বাধায় পড়েছে। নরওয়ের কাছে স্বয়ংক্রিয় যোগ্যতা হারিয়ে এখন প্লে-অফে খেলতে হবে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। আর সেই ক্ষোভ থেকেই গাত্তুসোর মন্তব্য—দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর নাকি বিশ্বকাপে যাওয়ার পথ তুলনামূলক সহজ।
গাত্তুসো বলেছেন,
'আমাদের সময়ে গ্রুপের সেরা রানার্স-আপ সরাসরি বিশ্বকাপে যেত। এখন নিয়ম বদলে গেছে। নিয়ম বদলানোর আগে আয়োজকদের উচিত এটা নিয়ে ভাবা। ছয়টা ম্যাচ জিতেও আমরা প্লে-অফে—এটার জবাব যারা নিয়ম বানায়, তাদেরই দিতে হবে।'
গাত্তুসোর কথাকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে চান না এমি। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের দাবি, কনমেবলের লড়াই কতটা কঠিন—তা তারা ছাড়া কেউ অনুভব করবে না,
'দক্ষিণ আমেরিকায় এক-একটা ম্যাচ মানে যুদ্ধ। এখানকার পরিবেশ, উচ্চতা, তাপমাত্রা—সব মিলিয়ে প্রতিটি ম্যাচ ভয়ংকর কঠিন। ইউরোপ থেকে কেউ বসে মন্তব্য করলে সেটা বাস্তবতাকে স্পর্শই করে না।'
মার্তিনেজ আরও বলেন,
'বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে আমরা মাঠে লড়াই করে যোগ্যতাই অর্জন করেছি। কেউ এটা সহজ বললে সেটা তার অজ্ঞতা।'
ইতোমধ্যে বাছাইপর্বে আধিপত্য দেখিয়ে আত্মবিশ্বাসী মার্তিনেজ। বিশ্বকাপ সামনে রেখে আর্জেন্টিনা আবারও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে প্রস্তুত তারা। গতকাল অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে বছরের শেষ ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে আলবিসেলেস্তেরা।
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৮:২৭ পিএম

অদ্ভুত সব কাণ্ডের জন্য প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হতে দেখা যায় উত্তর কোরিয়াকে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব টটেনহ্যামের খেলা দেখানো নিষিদ্ধ করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলার সন হিউং মিনের জন্য। এবার অদ্ভুত কিছু শর্তে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ সম্প্রচার করার ঘোষণা দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
ইতিহাসে প্রথমবার উত্তর কোরিয়া প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ সম্প্রচার করবে। তবে এটি হবে কিম জং-উনের নির্দেশিত কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে দিয়ে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইংলিশ লিগটির ম্যাচগুলো স্থানীয় দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর আগে ব্যাপকভাবে কাঁটসাট আর সম্পদনা করা হবে।
চলতি বছরে এপ্রিলেই প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ সম্প্রচারের পরিকল্পনা ছিল উত্তর কোরিয়ার। তবে সেটা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও শর্তাবলী আগের মতোই থাকবে।
উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল লিড়ের ম্যাচগুলো উপভোগ করতে পারবে, তবে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত কিছু নিয়ম। যেমন ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করা হবে না। ৯০ মিনিটের খেলা পরিমার্জন করে তারপর সম্প্রচার করা হবে।
ছেঁটে ফেলা হবে এলজিবিটিকিউ প্রতীক দেখানো যেকোনো দৃশ্য। দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়দের ছবি বা অংশ দেখানো যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, কিম জি-সু (ব্রেন্টফোর্ড) এবং হ্বাং হি-চান (উলভরহ্যাম্পটন) কে দেখানো হবে না। এছাড়া স্টেডিয়ামে প্রদর্শিত ইংরেজি লেখা সম্পাদনা বা মুছে ফেলা হবে। বিশেষ এক গ্রাফিক্স ব্যবহার করে ইংরেজি লেখার জায়গায় কোরিয়ান ভাষা থাকবে।