এমন লজ্জা সান্তিয়াগো বার্নাব্যু-তে শেষ কবে পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ তা মনে করাই দুষ্কর। ঘরের মাঠে রিয়ালকে নিয়ে তারুণ্য নির্ভর বার্সেলোনা রীতিমত ছেলে-খেলাই করেছে। উড়িয়ে দিয়েছে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। তাতে রিয়ালের টানা ৪২ ম্যাচ ধরে লা লিগায় অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাও ভেঙেছে হান্সি ফ্লিকের দল। সে সাথে অক্ষত রেখেছে নিজেদের সর্বোচ্চ ৪৩ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।
এদিন দুই অর্ধে দেখা মিলেছে দুই দলের দাপট। প্রথমার্ধে রিয়াল দাপট দেখালেও পায়নি গোলের দেখা, অন্যদিকে বার্সেলোনা দ্বিতীয়ার্ধে সবগুলো সুযোগই লুফে নিয়েছে। সেই সাথে বার্নাব্যু-তে রিয়ালকে দিয়েছে অস্বস্তিকর এক অভিজ্ঞতাই।
আরও পড়ুন
রিয়ালের রেকর্ড নাকি বার্সার চমক? |
![]() |
ম্যাচ শুরুর আগেই এদিন আলোচনায় ছিল বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্স। রিয়ালের সাথে সেটা কতটা কার্যকর হয় তা নিয়ে ছিল শঙ্কা। তবে এমবাপে, ভিনিসিয়ুসদের বারবার অফ সাইডের ফাঁদে ফেলে ফ্লিকের শিষ্যরা প্রমাণ করেছেন এই ট্যাকটিক্সে তাদের পক্ষে সম্ভব সফল হওয়া। সব মিলিয়ে ম্যাচে রিয়ালকে ১২ বার অফসাইডে ফেলেছে কুবরাসি, ইনিগো মার্তিনেজরা।
ম্যাচের ৫৮ শতাংশ বলই ছিল রিয়ালের দখলে। এক্সপেক্টেড গোল রেশিও কিংবা অন টার্গেট শট সব কিছুতেই এগিয়ে ছিল কার্লো আনচেলত্তির দল। ৭ অন টার্গেট শট নিয়েও গোলের খাতা খুলতে পারেনি লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
প্রথমার্ধে দাপট দেখিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। একের পর এক আক্রমণে তারা বারবারই পরীক্ষা নিয়েছে বার্সেলোনা রক্ষণের। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের আটকে যেতে হয়েছে বার্সার হাই লাইন ডিফেন্সের সামনে। প্রথম ৪৫ মিনিটে এমবাপে, ভিনিসিয়ুসদের ৯ বার অফ সাইডের কাটায় ফেলেছে হান্সি ফ্লিকের দল। যেখানে বাতিল হয়েছে ৩০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের করা দারুণ গোলও।
আরও পড়ুন
মেসিদের শহরে লা লিগার ম্যাচ খেলবে বার্সা? |
![]() |
বল দখল, কিংবা সুযোগ তৈরিতে এগিয়েছিল ছিল রিয়াল। তবে এর মাঝেও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। লামিন ইয়ামাল, রাফিনিয়াদের দুর্বল ফিনিশিংয়ের গোল পাওয়া হয়নি কাতালানদের। অন্যদিকে রিয়ালের হয়ে বেশ কিছু সহজ সুযোগ মিস করেন এমবাপে, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহাম। তাতে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতে।
বিরতি থেকে ফিরেই বদলে যায় বার্সেলোনা। বাড়ায় আক্রমণের ধার। তাতে সফল্য মিলতে খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি বার্সাকে। ৫৪ মিনিটে কাসাদোর দারুণ এক পাস থেকে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন রবার্ট লেভানদফস্কি। মিনিট দুয়েক বাদে বালদের করা ক্রস থেকে লাফিয়ে উঠে হেডে আবারও বল জালে জড়ান পোলিশ স্ট্রাইকার।
দুই মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল হজম করে আক্রমণের ধার বাড়ায় রিয়াল। ৬৪ মিনিটে মদ্রিচের পাস থেকে সহজ সুযোগ হাতছেড়া করেন এমবাপে। ৬৬ মিনিটে এমবাপে গোলের দেখা পেলেও সেটা আবারও কাঁটা পড়ে অফ সাইডে। এর মিনিট দুয়েক বাদে দুটি সহজ সুযোগ মিস করে বার্সেলোনার লিড বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন জোড়া গোল করা লেভানদফস্কি।
আরও পড়ুন
বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগে শাস্তির কবলে বার্সা সমর্থকরা |
![]() |
অবশ্য লেভানদফস্কি সুযোগ মিস করলেও লামিন ইয়ামাল ঠিকই ৭৭ মিনিটে জাল খুঁজে নিয়েছেন। ৮৪ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন উড়ন্ত ফর্মে থাকা রাফিনিয়া। তাতে বার্নাব্যু থেকে তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে রিয়ালের সাথে ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নিয়েছে বার্সেলোনা। ১১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩০, সমান ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ২৪।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৫৯ এম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৪৩ এম
১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৬:০২ পিএম
গেতাফের বিপক্ষে স্বস্তির জয়ে স্প্যানিশ লা লিগার শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে গিয়ে ম্যাচের ৮০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের করা গোলে ১-০ ব্যবধানেই জিতল জায়ান্ট ক্লাবটি।
রিয়ালের কাজ সহজ করে দিয়েছে গেতাফেই। ম্যাচের ৭৭ থেকে ৮৪- এই ৭ মিনিটের মধ্যে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেছেন স্বাগতিক দলের দুই ফুটবলার অ্যালান নিওম ও অ্যালেক্স স্যানক্রিস।
দুই লাল কার্ডের মাঝে ৮০তম মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন এমবাপে। জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে এ নিয়ে টানা ১১ ম্যাচে গোল করলেন ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। তার হাতেই ওঠে চলতি লিগে সপ্তম ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
স্কোরলাইন অবশ্য বোঝাতে পারবে না, কতটা দাপুটে ফুটবল খেলেছে রিয়াল। পুরো ম্যাচে প্রায় ৭৫ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদের দখলে। গোলের জন্য মোট ২৩টি শট করে তারা। এর মধ্যে ১০টি ছিল লক্ষ্য বরাবর। কিন্তু গোল শুধু একটিই।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পায় রিয়াল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপে, ডেভিড আলাবা, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৫৫ মিনিটের সময় মাস্তানতুয়োনোর বদলি হিসেবে ভিনিসিয়ুসকে নামান জাভি আলোনসো। পরে তিনিই হয়ে যান পার্শ্বনায়ক।
ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন নিওম। এক মিনিট পেরোনোর আগেই ডান পাশের সাইডলাইনের কাছে ভিনিসিয়ুসকে কনুই দিয়ে ধাক্কা মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি। যা নিয়ে প্রতিবাদ জানানোয় খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ।
পুনরায় খেলা শুরু হতেই জাল খুঁজে নেন এমবাপে। আর্দা গুলারের চমৎকার পাস থেকে গোল করেন ফরাসি তারকা।
মিনিট চারেক পর ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন সানক্রিস। ৯ জনের দল নিয়ে আর গোল শোধ করতে পারেনি গেতাফে।
৯ ম্যাচে ৮ জয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন রিয়াল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে নেমে গেছে বার্সেলোনা। ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে গেতাফে।
দীর্ঘ ১৮ বছরের খরা কাটাতে পারল না আর্জেন্টিনা। আরও লম্বা হলো তাদের অপেক্ষা। আলবিসেলেস্তেদের হতাশায় ডুবিয়ে ইতিহাস গড়ল মরক্কো। প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল আফ্রিকান দেশটি।
চিলির সান্তিয়াগোতে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে হওয়া শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারায় মরক্কো। দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে একাই দুই গোল করেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড ইয়াসির জাবিরি।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই মরক্কোর প্রথম শিরোপা। এত দিন ২০০৫ সালের আসরে রানার্স-আপ হওয়া ছিল তাদের সেরা সাফল্য। প্রায় ২০ বছর পর এবার নতুন ইতিহাস লিখল তারা।
অন্য দিকে ১৯৮৩ সালের পর আবার রানার্স-আপ হলো আর্জেন্টিনা। এর আগে-পরে ছয়বার ট্রফি ঘরে তুলেছে আলবিসেলেস্তেরা। তবে ২০০৭ সালের পর আর এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা।
ফাইনালের দুইটিসহ টুর্নামেন্টে মোট ৫ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা ইয়াসির। তবে গোল্ডেন বুট অবশ্য জিততে পারেননি তিনি। তবে আসর জুড়ে ভালো খেলায় সিলভার বল জেতেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড।
টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফুটবলের প্রদর্শনীতে আসরের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন মরক্কোর ওথমান মামা।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগপর্যন্ত নক আউট পর্বে কোনো গোল হজম না করা আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি জেতেন গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কার।
শিরোপার মঞ্চে ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখিয়েই খেলে আর্জেন্টিনা। কিন্তু গোলের তালা ভাঙতে না পারায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। গোলের জন্য মোট ২০টি শট করেন লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াদের উত্তরসূরিরা। কিন্তু জাল খুঁজে পায়নি। বিপরীতে ৪টি শট লক্ষ্যে রেখেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়ে যায় মরক্কো।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে আচমকা আক্রমণে আর্জেন্টিনাকে চমকে দেয় মরক্কো। ডি-বক্সের মুখে গোলরক্ষককে একা পেয়ে শট করেন ইয়াসির। তখনই দুজনের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। তবে ফাউল দেননি রেফারি।
তাই খেলার শুরুতেই 'গ্রিন কার্ড' ব্যবহার করে ভিএআর রিভিউয়ের আবেদন করে মরক্কো। এতে দেখা যায়, ডি-বক্সের ঠিক বাইরে হয়েছে ফাউল। তাই পেনাল্টি পায়নি মরক্কো। তবে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
ওই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকে বল জালে জড়ান ইয়াসির। তার উঁচু করে নেওয়া বাম পায়ের বাঁকানো শট তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি।
পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ২৮তম মিনিটে উল্টো দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে তারা। পাল্টা আক্রমণে ওথমান মামার ক্রস পেয়ে বাম পায়ের ছোঁয়ায় দ্বিতীয় গোল করেন ইয়াসির।
এরপর ব্যবধান কমাতে একের পর এক চেষ্টা করতে থাকে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। বারবার মরক্কোর রক্ষণে হানা দিলেও সে অর্থে জোরাল কোনো আক্রমণ করতে পারেনি তারা। এমনকি লক্ষ্য বরাবরও ছিল না বেশিরভাগ শট।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর দেওয়া হয় অতিরিক্ত আরও ৫ মিনিট। সেই সময় শেষ হওয়ার বাঁশি বাজাতেই উল্লাসে মাতেন মরক্কোর ফুটবলাররা আর গ্যালারিতে শুরু হয় লাল জার্সির উচ্ছ্বাস।
একই দিন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে দ্বিতীয় মিনিটে করা ওস্কার পেরেয়ার গোলে ফ্রান্সকে হারায় কলম্বিয়া।
ম্যাচের ৮৪তম মিনিট। গোলের
ব্যবধান ১-১। মনে হচ্ছিল, পয়েন্ট ভাগাভাগিতে শেষ হবে লিভারপুল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যাচ। আচমকা দৃশ্যপট বদলে দেন হ্যারি মাগুইর। কর্নার থেকে ছুটে আসা তীব্রগতির বল
এর-ওর পা ছুঁয়ে পৌঁছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডারের কাছে। তার শক্তিশালী হেডার
খুঁজে নেয় লিভারপুলের জাল। তাতেই প্রিমিয়ার লিগ ২০২৫-২৬ মৌসুমের প্রথম দেখাতেই অল রেডসদের
হারাল দ্য রেড ডেভিলসরা।
প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল এবার বেশ ছন্দহীন। লিগে সবশেষ ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসির কাছে হারের পর নিজেদের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ম্যান ইউনাইটেডকে আতিথেয়তা দেয় তারা। প্রত্যাবর্তন তো হলোই না, উল্টো আরও একবার পয়েন্ট খোয়াল আর্নে স্লটের দল।
লিগে ৯ ম্যাচে এটি লিভারপুলের
টানা তৃতীয় হার। অন্যদিকে ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে রুবেন আমোরিমদের। সমালোচনার মুখে থাকা
এই পর্তুগিজ কোচের দলের ৪ জয়, ৩ হার ও ১ ড্র। টানা দুই জয়ে নিজেদের নতুন করে জানান
দিল ম্যান ইউনাইটেড।
আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে
নয়টায় শুরু হওয়া ম্যাচে মাত্র দুই মিনিটেই এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ব্রুনো
ফের্নান্দেস বল বাড়ান ডান পাশে থাকা আমাদ দিয়ালোকে। তিনি এগিয়ে গিয়ে বক্সের ভেতর দৌড়ে
আসা ব্রায়ান মবেমোর উদ্দেশে বল বাড়ান, আর মবেমো দুর্দান্ত শটে জাল কাঁপান। নতুন মৌসুমে
ক্যামেরুন ফরোয়ার্ডের এটি দ্বিতীয় গোল।
৩২তম মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে কোডি গাকপো শট হেডে জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন মোহাম্মদ সালাহ। কিন্তু ইউনাইটেড গোলকিপার বলটি গ্লাভসে বন্দি করেন। দুই মিনিট পর শোধের আরেকটি সুযোগ পায় লিভারপুল। নিজেদের অর্ধ থেকে উঠে আসা লং পাস ধরে গোলের চেষ্টা করেন মোহাম্মদ ইসাক, তবে অফসাইডে পড়ে যান নিউক্যাসল থেকে আসা এই স্ট্রাইকার। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের পরও প্রথমার্ধ ১-০ ব্যবধানে শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৮তম মিনিটে
খেলা জমিয়ে দেন কোডি গাকপো। চিয়েসার পাস ধরে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। ৮৪ মিনিট
পর্যন্ত ম্যাচ ছিল ১-১। মনে হচ্ছিল, ম্যাচটি ড্র হতে যাচ্ছে। ঠিক তখনই মাগুইর বদলে
দেন চিত্র।
কর্নার থেকে ব্রায়ান মবেমোর নেওয়া তীব্র শট ফেদেরিকো চিয়েসার গায়ে লেগে ফিরে আসে ব্রুনো ফের্নান্দেসের পায়ে। তিনি নিখুঁতভাবে বল বাড়িয়ে দেন ম্যাগুয়েরের কাছে, যিনি শক্তিশালী হেডে গোল আদায় করেন। এটি ইংলিশ ডিফেন্ডারের মৌসুমের প্রথম গোল, যদিও এর আগে একটি অ্যাসিস্ট ছিল তার।
ম্যাচ হারলেও বল দখলে এগিয়ে
ছিল স্বাগতিকরা। মোহাম্মদ সালাহ ও ভার্জিল ফন ডাইকেরা বল নিজেদের কাছে রেখেছে প্রায়
৬৩ শতাংশ সময়। ইউনাইটেডের দখলে ছিল মাত্র ৩৭ শতাংশ বল। লিভারপুলের ১৯টি শটের মধ্যে
৬টি ছিল লক্ষ্য বরাবর, আর ইউনাইটেডের ১২টি শটের মধ্যে ৪টি ছিল অন টার্গেট।
অতিথি দলের জয়ে বড় অবদান
রাখেন গোলকিপার সেনে লামেন্স। বেলজিয়ামের এই গোলরক্ষক মোট ৫টি নিখুঁত শট ঠেকান। তার
টাইমলি লং পাসও ছিল দেখার মতো।
৩৬ বছরের গেরো খুলে ২০২২ সালে বিশ্বকাপে ট্রফি ওঠে লিওনেল মেসিদের হাতে। আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দলের সামনেও একই দেয়াল। ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসানের খুব কাছে বয়সভিত্তিক দলটি।
আগামীকাল সোমবার অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে মরক্কোর মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। চিলির সান্তিয়াগোতে বাংলাদেশ সময় ভোর পাঁচটায় শুরু হবে শিরোপার এই লড়াই।
ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকান
অঞ্চলের দুই পাওয়ার হাউস একে অন্যের মুখোমুখি হওয়ার খুব একটা সুযোগ হয়নি। এর আগে মাত্র
একবার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে আর্জেন্টিনা ও মরক্কো। ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে সেবার
মরক্কোকে ৩-০ গোলে হারায় সাদা ও আকাশি নীল জার্সিধারীরা।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবলে অন্যতম সফল দল আর্জেন্টিনা। ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আলবিসেলেস্তারা। তবে সর্বশেষ ট্রফিটি আর্জেন্টাইন যুবারা জিতেছে সেই ২০০৭ সালে।
১৮ বছরের অপেক্ষার ঘটিয়ে আবারও তারা ফাইনাল মঞ্চে। সপ্তম শিরোপা জয়ের পর সাতটি অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের পাঁচটিতে সুযোগ পাওয়া আর্জেন্টাইনরা সর্বোচ্চ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল ২০১১ সালে।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে
এবারই প্রথমবার ফাইনালে উঠলো মরক্কো। ফিফার সর্বোচ্চ সম্মানের এই টুর্নামেন্টে এর আগে
২০০৫ সালে চতুর্থ হওয়াই ছিল এত দিন দলটির সর্বোচ্চ সাফল্য। এবার তারা রীতিমতো বাজিমাত দেখিয়েছে। আসরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত (সেমিফাইনাল) নিজেদের ভেঙে-গড়ে নতুন করে চিনিয়েছে।
স্পেন ও ব্রাজিলের
মতো দলকে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ষোলোয় ওঠে মরক্কো। কোয়ার্টার ফাইনালে
ওঠার লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে হারায় দলটি। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মরক্কোর
কাছে হারে যুক্তরাষ্ট্র। আর ফাইনালে ওঠার পথে ফ্রান্স।
ফরাসিদের হারানোর মাধ্যমে
কঠিন একটি প্রতিশোধ নিয়েছে মরক্কো। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে এই কিলিয়ান এমবাপেদের কাছে
হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল আশরাফ হাকিমিদের। এবার যুবারাও ফরাসিদের হারিয়ে নিলো সেই শোধ।
শেষ চারে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারায় তারা। এ টুর্নামেন্টে এটাই প্রথম ফাইনাল
আফ্রিকান দেশটির।
শেষ চারে কলম্বিয়াকে ১-০
ব্যবধানে হারানো আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনালে ২-০ ব্যবধানে হারায় মেক্সিকোকে। এর
আগে বেশ ভালোভাবেই তারা গ্রুপ পর্ব উৎরায়। আসরে টানা ছয় ম্যাচ জিতে অন্যরকম কীর্তি
গড়ল আর্জেন্টিনার যুব দলটি।
ফাইনালের আগে বার্তা দিয়েছেন
আর্জেন্টিনার সেন্টার ফরোয়ার্ড মাহের মাউরিসিও কররিসো। তিনি জানিয়েছেন, সবারই স্বপ্ন
বিশ্বকাপ জেতা। তিনি বলেছেন, ‘ভাগ্যক্রমে আমরা ফাইনালে, আমরা ফাইনাল জিততে চাই।
এটা প্রত্যেক ফুটবলের স্বপ্ন।’
মরক্কো অধিনায়ক হোস্সম্
এ্যাসাডাকের চোখেও শিরোপা। দেশকে প্রথম কোনো ফিফা ট্রফি উপহার দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর
এই মিডফিল্ডার।
বাংলাদেশ ফুটবল লিগে অঘটন-ঘটনের প্রথম রাউন্ডে হেরেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ড্র করে অপর দুই জায়ান্ট বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনী। লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডেও জয়ের দেখা পায়নি আবাহনী ও মোহামেডান। কুমিল্লায় আবাহনীর পরাজয়ের দিনে গাজীপুরে ড্র করেছে সাদা-কালোরা।
প্রতিপক্ষের অতর্কিত আক্রমণে তৃতীয় মিনিটে পিছিয়ে পড়ে আবাহনী। ম্যাচে ফিরতে অপ্রাণ চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে লিড দ্বিগুণ করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। শেষদিকে এক গোল পরিশোধ করলে হারের ব্যবধান কিছুটা কমে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল লিগের বর্তমান রানারআপ আবাহনীকে হারিয়ে মাঠ ছাড়ে গোপীবাগের ক্লাব।
রবিবার লিগের খেলায় কুমিল্লার ভাষা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনীকে মোকাবিলা করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ম্যাচে ২-১ গোলের জয় তুলে নেয় ব্রাদার্স। দলটির হয়ে নেপালি ফরোয়ার্ড অঞ্জন বিস্তা গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে লিড দ্বিগুণ করেন দলটির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কাস সিলভা। আবাহনীর হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন সোলেমান দিয়াবাতে।
লিগের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির সঙ্গে ০-১ গোলে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ জয় পেল ব্রাদার্স। লিগে প্রথম প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল আবাহনী।
এদিন ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠে ব্রাদার্স। পেনাল্টি এরিয়ায় বল পেয়ে অঞ্জনের কাছে কাট-ব্যাক দেন মার্কাস। বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে অনেকটা ফাঁকা জালে বল ঠেলে দেন নেপাল জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড অঞ্জন বিস্তা। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে তিনজন নেপালের ফুটবলার খেলিয়েছে ব্রাদার্স।
দ্বিতীয় গোলেও অবদান ছিল অঞ্জনের। ৫৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢোকার পর তাকে ফাউল করে ফেলে দেন হাসান মুরাদ। পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি; সফল স্পট কিকে গোলকিপার মিতুলকে পরাস্ত করেন মার্কাস সিলভা।
জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে চেষ্টা চালায় আবাহনী। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পেতে আবাহনীকে অপেক্ষা করতে হয় ম্যাচের যোগ করা মিনিট পর্যন্তা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে কর্নারের কাছ থেকে হাসান মুরাদের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন দিয়াবাতে।
আবাহনীর হয়ে বাংলাদেশ ফুটবল লিগে প্রথম গোল আদায় করেন দিয়াবাতে। তবে ম্যাচ জয়ের জন্য সেটি পর্যাপ্ত ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১-২ ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটি।
শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আবাহনীর মতো এতটা বিবর্ণ অবশ্য ছিল না মোহামেডান। ১৯ মিনিটে রহমত মিয়ার লং থ্রো ক্লিয়ার করতে পারেনি পুলিশ এফসি। বল মাটিতে পড়ার আগেই বাঁ পায়ের শটে সাদা-কালোদের এগিয়ে দেন রহিম উদ্দিন।
৪৯ মিনিটে শফিক কাগিমুর কর্নার থেকে দারুণ হেডে বল জালে জড়ান মোহাম্মদ বাবলু। ১-১ গোলে সমতায় ফেরে পুলিশ এফসি। ওই গোলের পর চেষ্টা করেও দুই দল পারেনি গোল করতে। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
আর মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ। লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ। তাদের সমান ৪ পয়েন্ট বাংলাদেশ পুলিশ এফসিরও। টেবিলের তিনে ও চারে থাকা ফর্টিস ও ব্রাদার্সের পয়েন্ট সমান ৩ করে। এক ম্যাচ কম খেলেছে ফর্টিস। পাঁচে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সংগ্রহ এক ম্যাচে এক পয়েন্ট।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফর্টিস এফসি আগামীকাল খেলবে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে। বেলা সাড়ে ৫টায় গড়াবে ম্যাচটি। দিনের অপর ম্যাচে মানিকগঞ্জে মুখোমুখি হবে পিডব্লিউডি ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। বাংলাদেশ ফুটবল লিগের ম্যাচ সরাসরি দেখা যাবে চ্যানেল টি-স্পোর্টস-এ।