১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৬:২০ পিএম
ভক্তরা মুখিয়ে থাকেন তাদের পছন্দের ফুটবলারের খেলায় মত্ত হয়ে থাকতে, তাঁর গোল করা দেখতে। কিন্তু নেইমার ভক্তদের জন্য এ যেন এক বিলাসীতা। যখন তাদের আকুল হয়ে চেয়ে থাকতে হয়--ব্যস, খেলুক বা না খেলুক, চোটে না পরুক নেইমার।
কিন্তু বলে না, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়। নেইমারের ক্ষেত্রেও তাই। মাঠে নামলেই কেন যেন চোটের কবলেই পড়তে হয় তাঁকে। বুধবার রাতে এক মাইলফলকের ম্যাচেও সেই দুঃখই সঙ্গী হলো তাঁর। সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোতে তার শততম ম্যাচ। তাই মাঠে নেমেছিলেন ‘১০০’ নম্বর জার্সি গায়ে। অনেকটা দিন পর জায়গা করে নিয়েছিলেন শুরুর একাদশে। তাঁকে দেখতে মাঠে ছিল দর্শকের ভীড়, গ্যালারিতে ছিল উন্মাদনা। ম্যাচে দলের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু স্বপ্নময় সেই আবহ বদলে গেল দুঃস্বপ্নে। প্রথমার্ধেই নেইমারকে মাঠ ছাড়তে হলো অশ্রুসিক্ত চোখে।
আরও পড়ুন
সাহসী ফুটবলে রিয়ালকে হারিয়ে সেমিতে আর্সেনাল |
![]() |
চোট দুর্ভাগ্য নেইমারের নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে সান্তোসেও। অনেক দিন বাইরে থাকার পর গত রোববার ফ্লুমিনেসির বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে ফেরেন তিনি। বুধবার আতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে তাঁকে শুরুর একাদশে রাখেন কোচ সেজার সাম্পাইয়ো।
নেইমারের ফিট থাকা নিয়ে সংশয় অবশ্য ছিল শুরু থেকেই। দুই উরুতেই মোটা করে টেপ পেচিয়ে নামতে দেখা যায় তাঁকে। মাঠেও খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি।
তাঁর দল অবশ্য ২৪ ও ২৭তম মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। তবে ভুগতে থাকা নেইমার ৩৪ তম মিনিটের পর আর পারলেন না। বাঁ উরুতে হাত রেখে একটু খোঁড়াতে দেখা যায় তাকে। ডাগআউটের দিকে ইশারা করেন বদলির জন্য। উরু চেপে বসে পড়েন মাঠে। এতক্ষণ ধরে উল্লাস করতে থাকা গ্যালারিও তখন প্রায় নিশ্চুপ।
সান্তোসে নিজের ১০০ তম ম্যাচের দিনেও এমন করুণ, অসহায় পরিণতিতে কান্না ছাড়া আর কিছুই সঙ্গী হলো না নেইমারের। সেই কান্না তিনি চেপেও রাখতে পারেননি। তাঁর চোখ জোড়া অশ্রুসিক্ত হয়েছে মাঠেই। সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ দুদিক থেকেই সকলে তখন নেইমরাকে স্বান্তনা দিচ্ছেন। শেষমেশ দুজনের সহায়তায় কার্টে বসে মাঠ ছাড়েন নেইমার। আর সে সময় গ্যালারি থেকে আসতে থাকে জোর করতালির আওয়াজ।
চোটে পড়ে আগেও নানা সময়ে চোখের পানিতে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। সৌদি আরবের আল-হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে গিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার মাঠে নামেন তিনি। টানা সাতটি ম্যাচে খেলেন এই তারকা, আস্তে আস্তে তাঁর মাঠে থাকার সময় বাড়তে থাকে। তবে গত ২ মার্চ করিঞ্চাসের বিপক্ষে ম্যাচে আবার চোটে পড়ে বাইরে থাকেন ছয় সপ্তাহ।
আরও পড়ুন
ইন্তার বাধায় শেষ আটেই থামল বায়ার্নের পথচলা |
![]() |
মাঝে ব্রাজিল জাতীয় দলে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ওই চোটের কারণে মার্চের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুটি ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি। যে উরুর চোটের কারণে তিনি বাইরে ছিলেন, সেখানেই আবার সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। চোটের ধরন কী বা কতটা গুরুতর, তা অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানানো হয়নি।
No posts available.
ইউরোপা লিগে অংশ নিতে আগামী মাসে বার্মিংহামে পৌঁছাবে ইসরায়েলের অন্যতম সফল ক্লাব ম্যাকাবি তেল আবিব। আগামী ৬ নভেম্বর ভিলা পার্কে অ্যাস্টন ভিলার মুখোমুখি হবে দলটি। তবে এই ম্যাচে ইসরায়েলি সমর্থকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বার্মিংহাম প্রশাসন।
২০২৪ সালে আমস্টারডামে ইউরোপার একটি ম্যাচকে ঘিরে আয়াক্স ও ম্যাকাবি তেল আবিবের সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি সমর্থক ও প্রতিপক্ষ সমর্থকদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
সতর্কতার অংশ হিসেবে অ্যাস্টন ভিলা ও ম্যাকাবির মধ্যকার ম্যাচে অতিথি দলের সমর্থকদের মাঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্তের ওপর তাৎক্ষণিক তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের পুলিশ ও অপরাধ কমিশনার।
বার্মিংহাম সিটির কাউন্সিলর জন কটন এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে "ভুল" বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,
"হুমকি বা সহিংসতার কারণে শহরের কোনো ফুটবল ম্যাচে দর্শকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া উচিত নয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমি সেফটি অ্যাডভাইজরি গ্রুপের স্বাধীনতাকে সম্মান করি, তবে তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।"
ম্যাকাবি সমর্থকদের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন লন্ডনের বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কটাক্ষও করেছেন অনেকে।
কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী কেমি বাডেনক বলেছেন, "এটি একটি জাতীয় লজ্জা। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, "ইহুদি সমর্থকরা যেন দেশের যেকোনো ফুটবল স্টেডিয়ামে নিশ্চিন্তে প্রবেশ করতে পারেন—এটি তিনি যেন নিশ্চয়তা দেন।"
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা এড ডেভি বলেছেন, "এই সিদ্ধান্তটি যত দ্রুত সম্ভব পরিবর্তন করা উচিত। এটি সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত।"
ইহুদি লিডারশিপ কাউন্সিল একে বলেছে "বিকৃত" সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে "লজ্জাজনক" বলে মন্তব্য করে।
একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল কোল পালমারকে ঘিরে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে কুঁচকির চোটে পড়া ইংলিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার শিগগিরই ফিরবেন— এমন প্রত্যাশা ছিল খোদ কোচ এনজো মারেস্কার। যদিও শেষ পর্যন্ত জানা গেল, সেটি আর হচ্ছে না।
ফিফা উইন্ডো শেষে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে ইতালিয়ান কোচ জানিয়েছেন, কুঁচকির চোটের কারণে প্রায় ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকতে হবে কোল পালমারকে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠের বাইরে আছেন পালমার। কোনো ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এ সময়ে নামা হয়নি তার। প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুমে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন পালমার। তাতেই ইংল্যান্ড দলের কোচ টমাস টুখেলের শর্টলিস্টে ঢুকে পড়েছেন। ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য বেশ ভালোভাবেই বিবেচনায় আছেন ইংল্যান্ডের এই তরুণ মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন
জানুয়ারিতে ক্লাব ছাড়তে পারেন রিয়ালের যে চার তারকা |
![]() |
চেলসির চাওয়া, আগামী নভেম্বরে ফিফা উইন্ডো পর্যন্ত বিশ্রামে থাকুক ২৩ বছর বয়সি পালমার। তবে কোচ মারেস্কা তাকে দ্রুতই মাঠে দেখতে চেয়েছিলেন। আগামী মাসের শুরুতেই পালমারকে মাঠে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলার পর তার সে চাওয়া আক্ষেপে রূপ নিয়েছে।
শনিবার প্রিমিয়ার লিগে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে চেলসির ম্যাচ। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে মারেস্কা বলেছেন, ‘আমি ভুল করেছিলাম। আসলে তার ছয় সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে মাঠে ফিরতে। এটাই সর্বশেষ আপডেট।’
প্রিমিয়ার লিগের ২০২৪-২৫ সিজনে ১৫টি গোল করেছেন পালমার। নিঃসন্দেহে নতুন মৌসুমেও তার প্রয়োজনীয়তা অনেক। কারণ, এই মুহূর্তে সাত ম্যাচ খেলে পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে আছে দ্য ব্লুজরা। এমন সময়ে প্রিয় শিষ্যকে না পাওয়াটা বড় ধাক্কা মারেস্কার জন্য।
ইতালিয়ান কোচ আরও বলেছেন, ‘যতটা সম্ভব আমরা পালমারকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে আশার দিক হলো, যখন সে মাঠে ফিরবে, তখন পুরোপুরি সুস্থ হয়েই ফিরবে।’
অনেকেই বলছেন, শিগগিরই ফিরবেন পালমার। কারণ, তাকে এই মুহূর্তে দলের খুব প্রয়োজন। এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে মারেস্কার। তিনি বলেছেন,‘মেডিক্যাল স্টাফরা কোনো ম্যাজিশিয়ান নয়। আশা করি ছয় সপ্তাহ যথেষ্ট সময়। ধাপে ধাপে সে সুস্থতার পথে এগোচ্ছে। এমনকি ভালোভাবেই সুস্থতার পথে পালমার।’
একমাসেরও বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকবেন চেলসির এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। তার জায়গায় কে খেলবেন বা কাকে খেলানো হবে—এ বিষয়ে সূক্ষ্ম মন্তব্য মারেস্কার,‘পালমারের রিপ্লেসমেন্ট পাওয়া কঠিন। সে প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। তাই তার জায়গায় অন্য কাউকে খেলানো কঠিন। পালমারের মতো এমন কেউ নেই দলে। কারণ, কোল (পালমার) ইউনিক।’
২০২৫-২৬ মৌসুমে এখন পর্যন্ত লা লিগার শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। নতুন মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
তবে ছন্দে থাকা দলের কিছু সদস্যসের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে দিনদিন। কেউ হয়তো মাঠে সুযোগ পাচ্ছেন না, কেউ বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় দল থেকে জায়গা হারাতে বসেছেন। জানুয়ারির শীতকালীন দল বদলের মৌসুমেই হয়তো সান্তিয়াগো বার্নাব্যু থেকে বিদায় নিতে পারেন তাদের মধ্যে অনেকে।
সুযোগের খোঁজে এন্ডিক
ব্রাজিলের এক বিস্ময় বালক নামে শোরগোল পড়ে যায় রিয়ালে এন্ডিকের আগমনে। অনেক আশা নিয়েই ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছিলেন তরুণ ফরোয়ার্ড। তবে ক্রমেই চুপসে যায় আশার বেলুন। গত মৌসুমে কার্লো আনচেলত্তির সময়ে মাঝেমধ্যে মাঠে নামার সুযোগ পেলেও নতুন কোচ জাবি আলোনসো চোখ তুলেও তাকাননি এন্ডিকের দিকে। চলতি মৌসুমে রিয়ালের হয়ে এক মিনিটের জন্যও খেলার সুযোগ পাননি প্রতিভাবান তরুণ তারকা।
সবশেষ লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে চোট পেলেও বদলি হিসেবে রদ্রিগোকেই নামান জাবি। তাতে এটা স্পষ্ট স্প্যানিশ কোচের পরিকল্পনায় নেই তিনি। মার্চের পর থেকে ব্রাজিল দলেও ডাক পাননি। বিশ্বকাপের এক বছর আগে নিয়মিত খেলায় ফিরতে না পারলে জাতীয় দলে তার জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাতে জানুয়ারিতে লা লিগার ছোট কোনো ক্লাবে কিংবা ইউরোপের অন্য কোথাও ধারে খেলতে যাওয়া হতে পারে তার জন্য সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। গুঞ্জন আছে ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাব এন্ড্রিককে ধারে নিতে আগ্রহী।
অবহেলিত দানি সেবাইয়াস
রিয়াল মাদ্রিদে ধৈর্যের প্রতীক হিসেবে আছেন দানি সেবাইয়োসই। তবে সেই ধৈয্যের বাঁধও তো একটা সময় ভেঙে পড়ে। সম্প্রতি চার ম্যাচের তিনটিতে শুরুর একাদশে সুযোগ পেলেও মিডফিল্ডে তিনি এখনও পিছিয়ে আছেন জুড বেলিংহাম, ফেদেরিকো ভালভার্দে, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, অরেলিয়েন চুয়ামেনি ও আর্দা গুলার থেকে।
ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড ও দানি কারভাহাল চোট থেকে ফিরলে আবার মিডফিল্ডে ফিরবেন ভালভার্দে । ফলে সেবাইয়োসের সুযোগ আরও কমে যাবে। গ্রীষ্মে ফরাসি ক্লাব মার্শেইয়ে যোগ দেওয়ার কথা ছিল থাকলেও ভেস্তে যায় চুক্তি। বিশ্বকাপের আগে নিয়মিত খেলায় ফিরতে না পারলে জানুয়ারিতে স্থায়ীভাবে বা ধারে অন্য ঠিকানায় পাড়ি দিতে পারেন ২৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী গঞ্জালো গার্সিয়া
স্পেনের তরুণ ফরোয়ার্ডদের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীলদের একজন গঞ্জালো গার্সিয়া। জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে চার গোল করে গোল্ডেন বুট জেতার পর দলে নিয়মিত হওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন। তবে ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের জায়গায় যে খেলেন বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে।
চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এমবাপের জায়গায় মাত্র ১০১ মিনিট খেলতে পেরেছেন গার্সিয়া। স্পেন অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তিনি। নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় সেরা হওয়ার লক্ষ্য রাখি। বিশ্বকাপে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা আমার স্বপ্ন।’ স্পেন ও ইউরোপের কয়েকটি ক্লাব ইতিমধ্যে তাকে ধারে নিতে আগ্রহী। নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলে স্পেনের মূল দলে জায়গা পাওয়ার দাবিও জোরালো করতে পারবেন।
শেষ অধ্যায়ে ডেভিড আলাবা
নিজের সেরা সময়টা যে পেছনে ফেলে এসেছেন সেটা বোধহয় বুঝতে পারছেন ৩৩ বছর বয়সী ডেভিড আলাবা। একের পর এক চোটে পড়া অস্ট্রিয়ান এই ডিফেন্ডারের রিয়াল মাদ্রিদ অধ্যায়ও শেষের পথে। হাঁটুর গুরুতর চোটের কারণে এক বছর বাইরে থাকার পর ফিরে এসেও খুব একটা খেলতে পারেননি।
এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচ খেলেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাজাখস্তানের কাইরাত আলমাটির বিপক্ষে। তাঁর সঙ্গে ক্লাবের চুক্তি ২০২৬ পর্যন্ত থাকলেও নতুন করে তা নবায়নের কোনো পরিকল্পনা নেই। তাতে জানুয়ারিতেই তাকে বিক্রি করে দিতে পারে রিয়াল। ২০২১ সালে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে রেকর্ড ১৫বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলে যোগ দেওয়ার পর ১১৯ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে এখন তার শরীরের ক্লান্তি স্পষ্ট। তারুণনির্ভর পরিকল্পনার কথা ভেবে জানুয়ারিতেই আলাবাকে বিদায় দিতে পারে রিয়াল
অনেক বছরই এ তালিকায় সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে পর্তুগিজ মহাতারকা। ব্যতিক্রম কিছু নেই সবশেষ হিসেবেও। ফোর্বস সাময়িকী প্রকাশিত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করা ফুটবলারের তালিকায় এক নম্বরে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তালিকায় দুই নম্বরে আছেন আল নাসর মহাতারকার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি লিওনেল মেসি।
২০২৫-২৬ মৌসুমে ফোর্বসের হিসেব অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি আয় করা ফুটবলারদের তালিকায় আছেন রিয়াল মাদ্রিদের তিন তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহাম। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুই তারকা ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ ও আর্লিং হল্যান্ডও আছেন সেরা দশে।
সৌদি প্রো লিগে রোনালদোর আল নাসরের সতীর্থ সাদিও মানে আছেন আয়ের শীর্ষ তালিকায়। সৌদির লিগের আরেক আল ইত্তিহাদের ফরাসি ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা আছেন। আল হিলাল ছেড়ে সান্তোসে যোগ দেওয়া নেইমারের আয় ভাটা পড়ায় গত বছর তিনে থাকলেও এবার সেরা দশে থেকে ছিটকে গেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
প্রথমবারের মতো সেরা দশে প্রবেশ করলেন বার্সেলোনার তারকা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামাল। গত কয়েক বছর ফুটবলবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করা স্প্যানিশ এই ফুটবলারের আয় এক লাফে কয়েকগুন বেড়েছে।
সৌদি প্রো লিগের দল আল নাস্রের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো রোনালদোর এই বছরের আয় ২৮ কোটি ইউরো। কর ও এজেন্ট ফি বাদ দেওয়ার আগে এ অর্থ আয় করেছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। আল নাসরের বেতন ছাড়া নাইকি, বিনান্স, হার্বালাইফসহ অন্যান্য অংশীদারদের থেকে মাঠের বাইরে উপার্জনও হিসেব করা হয়েছে।
তার দীর্ঘ দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী মেসির আয় বছরে ১৩ কোটি। ইন্টার মায়ামির ৩৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের আয়ের বেশিরভাগই মাঠের বাইরের চুক্তি থেকে আসে। অ্যাডিডাস, লেইস, মাস্টারকার্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি আছে মেসির। গত বছর একটি স্পোর্টস ড্রিংকও এনেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
আয়ে তিন নম্বরে থাকা করিম বেনজেমার উপার্জন ১০ কোটি ৪০ লাখ ইউরো। সেরা পাঁচে থাকা অন্য দুই জন এমবাপে (৯ কোটি ৫০ লাণ ইউরো) ও হলান্ড (৮ কোটি ইউরো)। ছয় নম্বরে আছেন ভিনিসিয়ুস (৬ কোটি ইউরো)। আট ও নয় নম্বরে যথাক্রমে সাদিও মানে (৫ কোটি ৪০ লাখ ইউরো) ও বেলিংহ্যাম (৪ কোটি ৪০ লাখ ইউরো)।
এবার চমক দেখিয়ে দশে নম্বরে জায়গা করে নেওয়া ইয়ামালের আয় ৪ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। ফোবর্স বলছে, বিস্ট বাই ড্রে, অ্যাডিডাস, কোনামি এবং পাওয়ারএডের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিতে থেকে এই আয়ের বেশিরভাগ আসে। এ ছাড়া বার্সেলোনার থেকে তো আয় বেতন-বোনাস তো আছেন। কাতালান ক্লাবটির সঙ্গে ২০৩১ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর।
দিনক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। ফিফা ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ক্রমশই বাড়ছে আগ্রহ-উত্তেজনা। ২১২টি দেশের ফুটবল ভক্তরা এরই মধ্যে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের’ স্বাক্ষী হতে টিকেট কিনতে শুরু করেছে। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, প্রথম দফায় ১০ লাখেরও বেশি টিকেট বিক্রি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডার যৌথ আয়োজিত ৪৮ দলের সম্প্রসারিত বিশ্বকাপের টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে মধ্য সেপ্টেম্বরে। সবচেয়ে বেশি টিকিট কেনা দেশ ২০২৬ বিশ্বকাপের তিন আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বাকি ৭টি দেশ যথাক্রমে ইংল্যান্ড, জার্মানি, ব্রাজিল, স্পেন, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনো এই ফুটবল ভক্তদের টিকেট কেনার হিড়িক লাগার প্রতিক্রিয়াকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে অভিহিত করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,
‘বিশ্বজুড়ে জাতীয় দলগুলো যখন এই ঐতিহাসিক বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার লড়াই করছে, তখন ফুটবলপ্রেমীরা এ আয়োজনে অংশ নিতে যে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তা নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত। অসাধারণ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্বকাপটি যে সারা বিশ্বের সমর্থকদের কল্পনা ও উচ্ছ্বাসকে ছুঁয়ে যাচ্ছে, এটা তার দারুণ এক ইঙ্গিতও।’
প্রথম ধাপে ৪৫ লাখ আবেদনকারীর মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন টিকেট কিনতে আগ্রহীরা। পরবর্তী ধাপের লটারি আবেদনের জন্য সময় শুরু হবে ২৭ অক্টোবর থেকে। এতে ১০৪টি ম্যাচের একক টিকেট এবং নির্দিষ্ট দল বা ভেন্যুভিত্তিক টিকেট বিক্রি হবে।
উত্তর আমেরিকার ১৬টি ভেন্যুতে মোট ১০৪টি ম্যাচে প্রায় ৭১ লাখ আসন থাকবে। অবশ্য এর মধ্যে কত আসন সাধারণ দর্শকের জন্য বিক্রয়যোগ্য, তা এখনও জানানো হয়নি।
সবচেয়ে কম মূল্যের টিকেটের দাম ৬০ ডলার, যা অন্তত ৪০টি ম্যাচের জন্য প্রযোজ্য। অধিকাংশ ম্যাচের আসনের দামই অনেক বেশি। ক্যালিফোর্নিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বোধনী ম্যাচ টিকেটের দাম ৫৬০ থেকে ২ হাজার ৭৩৫ ডলারের মধ্যে। দর্শকরা চারটি ক্যাটাগরির মধ্যে আসন বেছে নিতে পারবেন। ক্যাটাগরি এক হলো সেরা আসন, ক্যাটাগরি ৪ হলো স্টেডিয়ামের উঁচু অংশ। এবারই প্রথম ‘ডায়নামিক প্রাইসিংয়ের’ সুযোগ রেখেছে ফিফা।
দ্বিতীয় ধাপের লটারিতে নির্বাচিতরা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত টিকেট কিনতে পারবেন। ৫ ডিসেম্বর দলগুলোর চূড়ান্ত সূচি ঘোষণার পর তৃতীয় ধাপে শুরু হবে টিকেট বিক্রি। টুর্নামেন্টের আগমুহূর্তে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে টিকিট কেনা যাবে। ফিফা তাদের অফিসিয়াল পুনর্বিক্রয় প্ল্যাটফর্মও চালু করবে।