
বুয়েনস আইরেসের মোনুমেন্টাল স্টেডিয়াম যেন ভাসছিল আবেগে আর উদ্যাপনে। লিওনেল মেসি - আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের অমলিন প্রতীক, বিশ্ব ফুটবলের রূপকথার চরিত্র, নিজ দেশের মাঠে শেষবারের মতো নেমেছিলেন সাদা-আকাশি জার্সি গায়ে। প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলা, কিন্তু প্রতিপক্ষের রঙ-গন্ধ মিলিয়ে গিয়েছিল দর্শকদের আবেগে। চারদিক জুড়ে একটাই প্রকম্পিত শব্দ-মেসি, মেসি!
নিজ দেশের মাঠে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শেষবার যখন মাঠে নামলেন, ভক্ত-সমর্থকদের মনে করিয়ে দিলেন তোমাদের একজন মেসি ছিলেন। সবুজ গালিচায় যাঁর শেষ তুলিতেও বাঁ পায়ের জাদুতে বুঁদ থাকতে হবে সবাইকে। বিদায়ী ম্যাচেও দিয়ে গেলের আবেগঘন জয় উপহার। লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চেয়েও মেসির বিদায়ী হিসেবে বিশেষ হয়ে ওঠা ম্যাচে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ ব্যবধানে হারাল আলবিসেলেস্তেরা।
জোড় গোল করেছেন মেসি, আরেকটি গোল লাউতারো মার্তিনেজের সৌজন্যে। বিপরীতে উল্লেখযোগ্য কোনো আক্রমণই করতে পারেনি ভেনেজুয়েলা।
আরও পড়ুন
| দুইবারের ব্যর্থতা ভুলে ২০২৬ বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য জার্মানির |
|
তিন ছেলেকে নিয়ে অধিনায়ক মেসি নামলেন আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে। ৪-২-২ ফরমেশন শুরু করেন স্কালোনি। শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবলে ভেনেজুয়েলার ওপর আধিপত্য দেখায় আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুনোর পাস থেকে জোরাল শট নেন আলভারেজ। ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষক রাফায়েল রোমো ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন কর্নারের বিনিমিয়ে। সেই কর্নার থেকেই হেডে অফসাইড গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। ২৬ মিনিটে মেসির শট বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে আবারও ভেনেজুয়েলাকে রক্ষা করেন রোমো। তার আগে তাগলিয়াফিকোর কোনাকুনি শটও ঠেকান তিনি।
তার একটু পরই মেসি লিড এনে দেন আর্জেন্টিনাকে। ৩৮ মিনিটে লম্বা করে বাড়ানো বল দারুণভাবে রিসিভ করে বক্সে মেসিকে পাস দেন হুলিয়ান আলভারেজ। সামনে ৩ জন ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে অসাধারণ দক্ষতায় বোকা বানিয়ে কিছুটা পানেনকা শটে বল জালে জড়ান মহাতারকা। মুহূর্তেই যেন বিস্ফোরিত হয় মোনুমেন্টাল। গ্যালারিতে উপস্থিত তাঁর পরিবার, স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা সবার মুখে হাসি। মেসিময় স্লোগান আর মোবাইলে ভিডিও ধারণে ব্যস্ত দর্শকেরা।
যোগ করা সময়ে আলমাদার শট ঠেকান রোমো। ৭২ মিনিটে আলভারেজের বদলি নেমে তিন মিনিট পরই জালের দেখা পান লাউতারো। মেসির ফ্রি কিক থেকে লেফট ইউং থেকে ক্রস করেন নিকো গঞ্জালেস। দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড।
৭৯ মিনিটে আলমাদার ক্রসে দারুণ ফিনিশিংয়ে ৩-০ ব্যবধান করেন মেসি। গোলটা যেন সবার কাছে উপহার— নিজ দেশের মাঠে বিদায়ের শেষ সই। ৮৮ মিনিটে প্রায় হ্যাটট্রিকই পেয়ে গিয়েছিলেন। অফসাইডের বাঁশিতে বাতিল হয় গোল।
আরও পড়ুন
| মেসির বিদায়ী ম্যাচে বিপদে পড়তে পারেন যারা |
|
শেষ বাঁশি বাজতেই সতীর্থরা ঘিরে ধরেন মেসিকে। স্টেডিয়াম জুড়ে একটাই স্লোগান— 'ওলে, ওলে ওলে, মেসি, মেসি'। আকাশে উড়ছে কনফেত্তি, গ্যালারিতে ঝরছে আবেগ। মেসিও নিজের আবেগ ভাগ করেন সতীর্থদের আলিঙ্গনে। তারপর ধীরে ধীরে দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শেষবারের মতো বিদায় জানালেন দেশের মাঠে।
এ যেন এক অধ্যায়ের শেষ, অমরত্বের শুরু। এই ম্যাচ শুধু ফুটবল নয়, ইতিহাস হয়ে থাকবে। হয়তো বিশ্বকাপ বাছাইয়েরও শেষ ম্যাচ খেললেন মেসি। এই জয় আবেগের, স্মৃতির, এক নায়কের বিদায়ের।
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৭ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের মূলপর্ব আগেই নিশ্চিত করেছে আলবিসেলেস্তেরা।
No posts available.
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৩ পিএম
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ এম
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১৬ এম

ম্যাচ চলাকালে নারী রেফারিকে উদ্দেশ্য করে যৌন বৈষম্যমূলক মন্তব্যের কারণে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে ইংল্যান্ডের নন-লিগের একটি ম্যাচ। বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে এই খবর।
শনিবার নর্দার্ন প্রিমিয়ার লিগ মিডল্যান্ডস ডিভিশনের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল এএফসি রাশডেন ও ডায়মন্ডস এবং কভেন্ট্রি স্ফিঙ্কস ক্লাব। ডায়মন্ডসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথমার্ধের শেষদিকে গ্যালারি থেকে রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একজন দর্শক ‘লিঙ্গবিদ্বেষী’ মন্তব্য করেন।
এই ঘটনাটি মাঠে থাকা ক্লাব কর্তারা শুনে ফেলেন। ম্যাচ শেষে এক বিবৃতিতে রাশডেন অ্যান্ড ডায়মন্ডস জানিয়েছে, তারা এ ঘটনায় “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও হতাশ।”
আরও পড়ুন
| বিশ্বকাপের জন্য ‘মাস্টার প্ল্যান’ জানালেন ব্রাজিল কোচ |
|
ক্লাবের এক মুখপাত্র বলেন, দোষী ব্যক্তি যদি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিতদের সহযোগিতা সত্ত্বেও তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করা যায়নি।
ডায়মন্ডসের কোচ এলিয়ট স্যান্ডি জানান, রেফারি খেলা থামিয়ে অভিযুক্ত দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দিতে বলেন। এরপর ম্যাচ আবার শুরু হলেও বিরতির সময় রেফারি জানান, তিনি আর নিরাপদ বা স্বস্তি বোধ করছেন না। ফলে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
স্যান্ডি বলেন, 'আজ যা ঘটেছে তার কোনো জায়গা ফুটবলে নেই। তার জন্য (রেফারি) আমার খুব খারাপ লাগছে।'
প্রত্যক্ষদর্শী বা যাদের কাছে তথ্য আছে, তাদের ক্লাবে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে ডায়মন্ডস।

ক্লাবের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়েও নতুন মৌসুমের শুরুটা দুর্দান্ত করেছেন হ্যারি কেইন। তবে এতে উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছেন না ইংল্যান্ডের তারকা ফরোয়ার্ড। ব্যালন ডি অরের মতো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেতে দলীয় ট্রফিও জিততে জানেন তিনি।
চলতি মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ ম্যাচে ২৩ গোল করে ফেলেছেন কেইন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে চার ম্যাচে তার গোল তিনটি। গত মাসে লাটভিয়ার বিপক্ষে করেন দুই গোল। ওই ম্যাচ জিতেই বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত হয় ইংল্যান্ডের।
রোববার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আলবেনিয়ার মুখোমুখি হবে ইংলিশরা। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় ব্যালন ডি অরের ব্যাপারে। উত্তরে তিনি জানান, দলীয় ট্রফি জিততে হবে আগে।
আরও পড়ুন
| বিশ্বকাপের জন্য ‘মাস্টার প্ল্যান’ জানালেন ব্রাজিল কোচ |
|
“আমি হয়তো এই মৌসুমে ১০০ গোল করতে পারি। কিন্তু আমি যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অথবা বিশ্বকাপ না জিততে পারি, তাহলে খুব সম্ভবত ব্যালন ডি অর জিততে পারব না।”
“আর্লিং হলান্ডের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমনই। যে কোনো ফুটবলারের ক্ষেত্রেই একই কথা। আপনাকে ওই বড় ট্রফিগুলো জিততে হবে।”
ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে 'কে' গ্রুপে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে পূর্ণ ২১ পয়েন্ট পেয়েছে ইংল্যান্ড। জার্মান বুন্দেসলিগায় ১০ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বায়ার্ন মিউনিখ।
মৌসুমের শেষ পর্যন্ত এই ছন্দ ধরে রাখতে পারলে ব্যালন ডি অর জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে বললেন কেইন।
“বায়ার্ন মিউনিখে দল হিসেবে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। তাই এটি আমার পক্ষে কিছুটা কাজ করতে পারে। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রেও তাই। ক্লাব ও দেশের হয়ে সব কিছু যদি ঠিকঠাক এগোয়, তাহলে ব্যালন ডি অরের মতো পুরস্কার জেতার আলাপ করা যেতে পারে।”

ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনও ঠিকঠাক পর্তুগিজ ভাষা ঠাউরে উঠতে পারেননি কার্লো আনচেলত্তি। তবে ব্রাজিলের ফুটবলের ভাষা অনেকটাই রপ্ত করে ফেলেছেন ইতালিয়ান কোচ। এরই মধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপের মাস্টার প্ল্যান সাজিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মাস ছয়েক আগে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন আনচেলত্তি। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করার পাশাপাশি রক্ষণেও তিনি দিয়েছেন বাড়তি মনোযোগ।
তার কোচিংয়ে খেলা প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছিল ব্রাজিল। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যেন অন্যরকম এক সতর্কবার্তাই পেয়েছেন আনচেলত্তি। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা।
আরও পড়ুন
| স্কালোনির কোচিংয়ে স্বপ্নপূরণ আর্জেন্টিনার ৫৯ ফুটবলারের |
|
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আনচেলত্তির কোচিংয়ে সাত ম্যাচের চারটি জিতেছে ব্রাজিল। ড্র হয়েছে এক ম্যাচ। আর তারা হেরে গেছে বাকি দুই ম্যাচ। যেখানে ১২ গোল করেছে ব্রাজিল। বিপরীতে হজম করেছে শুধু ৪ গোল।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য রক্ষণ জমাট রাখার পথেই হাঁটতে চান আনচেলত্তি। সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই জোর দিয়ে বলেছেন ৬৬ বছর বয়সী ইতালিয়ান কোচ।
“ব্রাজিলের সবশেষ বিশ্বকাপ জয়ের আসরগুলোতে রক্ষণভাগের অনেক ভূমিকা ছিল। সেই দলগুলোতে প্রতিভাধর অনেকে ছিলেন, যারা খেলা উপভোগ করতেন। একইসঙ্গে তারা এটিও নিশ্চিত করতেন যেন রক্ষণ কোনোভাবে উন্মুক্ত না হয়ে যায়।”
“১৯৯৪ বিশ্বকাপের কথা আমার মনে আছে। দুজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, পেছন দিক একদম জমাট আর সামনে বেবেতো ও রোমারিও ছিলেন পার্থক্য গড়ার জন্য। বিশ্বকাপের জন্য আমি এমনটাই ভাবছি। শক্ত রক্ষণভাগ থাকলে কোয়ালিটি খেলোয়াড়রা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।”
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০২ সালের পর শিরোপা জিততে পারেনি ব্রাজিল। আগামী বছরও যদি ব্যর্থ হয় তারা, তাহলে বিশ্বকাপখরা বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ বছরে! যা নিশ্চিতভাবেই হতে দিতে চান না আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন
| উড়তে থাকা সেনাগালকে থামিয়ে ব্রাজিলের প্রতিশোধ |
|
সেটি করার জন্য রক্ষণে জোর দিতে চান তিনি। তাই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সেন্টার-ব্যাক খেললেও, ব্রাজিল দলে এডেন মিলিতাওকে রাইট-ব্যাক হিসেবে খেলানোর পরিকল্পনা করেছেন আনচেলত্তি। সামনের দিনগুলোতে নির্ভরযোগ ফুল-ব্যাক খোঁজার মিশন চালু রাখবেন তিনি।
“অন্যান্য রাইট-ব্যাকের চেয়ে মিলিতাওয়ের ধরন কিছুটা আলাদা। তার কাছ থেকে আমার কিছুটা ভিন্ন চাওয়া থাকবে। রক্ষণে আরও শক্তি বাড়াতে আমরা বিশ্বকাপে তাকে এভাবে ব্যবহার করতে পারি। তবে জাপানের বিপক্ষে ৩ গোল হজম করে আমরা ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। সেসব জায়গায় উন্নতির চেষ্টা থাকবে।”

আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফলতম কোচ লিওনেল স্কালোনি। তার কোচিংয়ে এরই মধ্যে একটি বিশ্বকাপ, দুইটি কোপা আমেরিকা ও একটি ফিনালিসিমা জিতে নিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। আর এই সাফল্য পাওয়ার পথে ৫৯ জন ফুটবলারকে তিনি দিয়েছেন স্বপ্নপূরণের স্বাদ।
যে কোনো ফুটবলারের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন থাকে নিজ দেশের জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করা। স্কালোনির কোচিংয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ৫৯ জন ফুটবলারের। আর্জেন্টিনার প্রধান কোচ হিসেবে সাত বছরে ৫৯ জন ফুটবলারের অভিষেক করিয়েছেন স্কালোনি।
প্রায় নিয়মিতই প্রীতি ম্যাচ বা তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ পেলেই নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ পথে হাঁটেন স্কালোনি। তার এই পরিকল্পনার কারণেই মূলত গত কয়েক বছরে কখনও তেমন সংকটে পড়তে হয়নি আর্জেন্টিনার। কারণ সবসময়ই প্রস্তুত থাকেন কেউ না কেউ।
অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সবশেষ ম্যাচে প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন কেভিন ম্যাক-অ্যালিস্টার, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি, হোয়াকিন পানিচেল্লি ও ম্যাক্সিমো পেরোনে। এর আগে পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে ৬-০ গোলে জেতা ম্যাচে অভিষেক হয় ফাকুন্দো ক্যাম্বেসের।
২০১৮ সালে গুয়াতেমালার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে কোচিং অধ্যায় শুরু করেন স্কালোনি। সেদিন জেরোনিমো রুলি, রেনজো সারাভিয়া, এজেকুয়েল পালাসিওস, গনসালো মার্তিনেস, জিওভানি সিমেওনে, ওয়াল্টার কানেমান, আলান ফ্রাঙ্কো, মাতিয়াস ভার্গাস, ফ্রাঙ্কো সার্ভি, ফ্রাঙ্কো ভাসকেসের অভিষেক হয়।
গত বছর অসংখ্য ফুটবলারের অভিষেক করান স্কালোনি। কোপা আমেরিকার আগে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম খেলেন ওয়াল্টার বেনিতেজ, ভ্যালেন্তিন কারবোনি ও ভ্যালেন্তিন বারকো। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অভিষেক হয় আরও তিন জনের- ভ্যালেন্তিন ক্যাস্তেয়ানোস, নিকোলাস পাজ, জুলিয়ানো সিমেওনে।
সাত বছরের এই অধ্যায়ে স্কালোনির সবচেয়ে বড় সাফল্য নিশ্চিতভাবেই ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জয়। ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলা শুরুর একাদশের সাতজনেরই অভিষেক হয় স্কালোনির কোচিংয়ে।
সব মিলিয়ে কাতার বিশ্বকাপের দলে থাকা আর্জেন্টিনার ২৬ ফুটবলারের মধ্যে ১৩ জনই তাদের যাত্রা শুরু করেন স্কালোনির কোচিংয়ে। তারা হলেন- রদ্রিগো ডি পল, হুয়ান ফয়েথ, লিসান্দ্রো মার্তিনেস, গনসালো মন্তিয়েল, অ্যালেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, নাহুয়েল মোলিনা, এনজো ফার্নান্দেস ও থিয়াগো আলমাদা।
স্কালোনির কোচিংয়ে অভিষেক হওয়া ৫৯ ফুটবলার
জেরোনিমো রুলি, রেনজো সারাভিয়া, এজেকুয়েল পালাসিওস, গনসালো মার্তিনেস, জিওভানি সিমেওনে, ওয়াল্টার কানেমান, আলান ফ্রাঙ্কো, মাতিয়াস ভার্গাস, ফ্রাঙ্কো সার্ভি, ফ্রাঙ্কো ভাসকেস, সান্তিয়াগো আস্কাসিবার, রদ্রিগো বাত্তালিয়া, রদ্রিগো ডি পল, হুয়ান ফয়েথ, গাস্তোন গিমেনেস, পাওলো গাসানিগা, লিসান্দ্রো মার্তিনেস, গনসালো মন্তিয়েল, হোয়াইট সানডে, মাতিয়াস সুয়ারেস, এস্তেবান আন্দ্রাদা, ইভান মারকোন, মাতিয়াস জারাচো, হুয়ান মুসলো, লুকাস মার্তিনেজ কুয়ার্তা, নিকোলাস দোমিঙ্গেস, আলেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার, লেওনার্দো বালার্দি, আদোলফো গাইচ, লুকাস ওকাম্পোস, নিকোলাস গনসালেস, ফাকুন্দো মেদিনা, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, হুলিয়ান আলভারেস, নাহুয়েল মোলিনা, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, লুকাস বোয়ে, মারকোস সেনেসি, থিয়াগো আলমাদা, নাহুয়েন পেরেস, এনজো ফার্নান্দেস, আলেহান্দ্রো গারনাচো, ফাকুন্দো বুয়োনানোর্তে, ভ্যালেন্তিন বারকো, ওয়াল্টার বেনিতেজ, ভ্যালেন্তিন কারবোনি, ভ্যালেন্তিন ক্যাস্তেয়ানোস, নিকোলাস পাজ, জুলিয়ানো সিমেওনে, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো, হোসে মানুয়েল লোপেজ, লাউতারো রিভেরো, হানিবাল মোরেনো, ফাকুন্দো কামবেসেস, কেভিন ম্যাক-অ্যালিস্টার, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি, হোয়াকিন পানিচেল্লি, ম্যাক্সিমো পেরোনে।

জর্জিয়ার বিপক্ষে জয় আর ওদিকে তুরস্কের হারেই বিশ্বকাপে পৌঁছে যেত স্পেন। নিজেদের কাজটা ভালোভাবেই করেছে লা রোজারা। তবে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে তুরস্কের ২-০ গোলের জয়ে খানিকটা বিলম্বই হলো তাদের। ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বলতে গেলে আর এক কদম দূরে আছে স্পেন।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্জিয়াকে আজ ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন। বড় জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন মিকেল ওয়ারজাবাল। একবার করে বল জালে পাঠিয়েছেন মার্টিন জুবিমেন্দি ও ফেরান তরেস।
এই জয়ে গ্রুপ ‘ই’ থেকে পাঁচ ম্যাচের সবক’টিতে জিতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে স্পেন। তিন পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে তুরস্ক। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে তিনে জর্জিয়া।
আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা লামিনে ইয়ামালকে ছাড়াই মাঠে নামে স্পেন। তবে দলের প্রধান তারকাকে ছাড়াই র্যাঙ্কিংয়ে ৭০ নম্বর দলকে উড়িয়ে দিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা স্পেন। ৬১ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৪টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। আর ছয়টি শট নেওয়া জর্জিয়া গোলমুখে রাখে দুটি শট।
১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে নেন ওয়ালজাবাল। রিয়াল সোসিয়েদাদের ফরোয়ার্ডের গোলের ১১ মিনিট পর ব্যবধান ২-০ করেন জুবিমেন্দি। ফাবিয়ান রুইজের নিখুঁত পাস থেকে বল জালে জড়ান আর্সেনালের ২৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
৩৪ মিনিটে আরেক দফা এগিয়ে যায় স্পেন। এবার গোলদাতার নাম ফেরান তরেস। আক্রমনভাগের বাঁ দিক থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে বলটি গোলের সামনে দিয়ে পাঠান ওয়ারজাবাল। বল পান তরেস, লক্ষ্যে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬৩ মিনিটে শেষ গোলটি করে স্পেন। নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করার সঙ্গে দলের হালি গোলও পূরণ করেন তিনি।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে স্পেনের পরের ম্যাচ তুরস্কের বিপক্ষে। আগামী ১৮ নভেম্বর ম্যাচটিতে হারলেও বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে তারা। গোল ব্যবধানে অনেকটাই পিছিয়ে থাকায় স্পেনের বিপক্ষে জয় পেলেও প্লে অফ খেলতে হবে তুরস্ককে।