
| মেসি-রোনালদো হ্যাটট্রিকের একই ব্রাকেটে |
|
No posts available.
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৩২ এম
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:২০ এম
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৯ এম

চোখধাঁধানো গোলে ফুটবল সমর্থকদের বিনোদনের খোরাক জোগানো ফুটবলারকে দেওয়া হয় বিশেষ স্বীকৃতি। পুরুষ ক্যাটাগরির সেরা গোলের পুরস্কার ‘পুসকাস অ্যাওয়ার্ড’। আর গত বছর থেকে নারীদেরকে আলাদা করে সেরা গোলের জন্য দেওয়া হচ্ছে ‘মার্তা পুরস্কার’।
সবশেষ গত মৌসুমে পুসকাস অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন আলেক্সান্দ্রো গার্নাচো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুর্দন্ত এক বাইসাইকেল কিকে গোল করে সেরা গোলের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এবারও এক আর্জেন্টাইন ফুটবলারের হাতে উঠল এই পুরষ্কার। আর্জেন্টাইন প্রিমেরা ডিভিশনের ক্লাব ইনডিপেন্ডিয়েন্টের উইঙ্গার সান্তিয়াগো সাংটিয়াগো মন্টিয়েল পেলেন সেরা গোলের পুরষ্কার।
২০২৫ সালের পুসকাস জয়ের দৌড়ে ছিলেন বার্সেলোনার লামিন ইয়ামাল ও আর্সেনালের ডেক্লান রাইসের মতো তারকা ফুটবলার। স্প্যানিওলের বিপক্ষে ইয়ামালের বাঁ পায়ের বাঁকানো শট এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে রাইসের ফ্রি-কিক সেরা গোলের আলোচনায় ছিল।
তবে সেরা গোলের মনোনয়ন পাওয়া ১১ জনের সবাইকে ছাপিয়ে যান মন্টিয়েল। ইনডিপেন্ডিয়েন্ট রিভাদাভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি কর্নার হেডে ক্লিয়ার করে রিভাদাভিয়ার ফুটবলার। তবে বক্সের বাইরে থেকে বল পেয়ে যান মন্টিয়েল। এরপর বলের দিকে মুখ না ঘুরিয়ে, অসাধারণ এক ওভারহেড কিক করেন ২৫ বছর বয়সী উইঙ্গার। তাঁর ওই বাইসাইকেল শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি প্রতিপক্ষের গোলকিপার। ওই ম্যাচে মন্টিয়েলের গোলটিতেই ১-০ গোলে জয় নিশ্চিত হয় তাঁর ক্লাব ইন্ডিপেন্ডিয়েন্টের।
মেয়েদের বিভাগে বছরের সেরা গোলের পুরষ্কার জিতেছেন মেক্সিকোর মিডফিল্ডার লিজবেথ ওভালে। নারীদের ফুটবলে সর্বকালের সবচেয়ে দামী এই ফুটবলার পুসকাসের সমতুল্য মার্তা অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। মন্টিয়েলের মতো লিজবেথও ওভারহেড কিকে গোল করে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন। গত মার্চে মেক্সিকান লিগে গুয়াদালাজারা বিপক্ষে ম্যাচে টাইগ্রেসের হয়ে গোলটি করেন তিনি।

গত ১৩ মে এর ঘটনা। ইরাকের স্টার্স লিগে আল-হুদুদ ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচের আগে জাখোর সমর্থকেরা স্বরণীয় এক মুহূর্তের জন্ম দেন। গ্যালারি থেকে মাঠে নানা ধরনের প্রায় প্রায় ৩০ হাজার খেলনা ছুঁড়ে মারছেন দর্শকরা। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে ওই অঞ্চলের অসুস্থ শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
মানবিক এই উদ্যোগ কেবল কুর্দিস্তান অঞ্চল নয় ক্রীড়াঙ্গনেই ব্যাপক সাড়া ফেলে। সম্প্রীতি, ঐক্য ও দৃঢ়তার মূল্যবোধকে আরও জোরদার করা জাখোর সমর্থকরা পেল ফিফার বেস্ট ফ্যান অ্যাওয়ার্ড। গতকাল রাতে ‘দা বেস্ট’ ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডসে এই স্বীকৃতি পায় ইরাকের ক্লাবটি।
ফিফার বেস্ট ফ্যান অ্যাওয়ার্ড জেতার পর ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের জাখো শহরজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক উদ্যাপন। এই সম্মান জাখো এসসি ও পুরো কুর্দিস্তান অঞ্চলের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রও পড়ুন
| পিএসজিকে হারিয়ে ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাচ্ছেন এমবাপে |
|
পুরস্কারের ঘোষণা আসার পরপরই জাখোর বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন। শিশু ও তরুণদের ধ্বনি-স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শহর। তাদের উচ্ছ্বাসে ফুটে ওঠে জাখো এসসির প্রতি গর্ব, ভালোবাসা ও অকুণ্ঠ সমর্থন—যা ক্লাব ও সমর্থকদের গভীর সম্পর্কেরই প্রতিফলন।
ক্লাবের অধিনায়ক আহমেদ ইব্রাহিম বলেন, ‘শিশুদের সাহায্য করার জন্য মাঠে খেলনা নিক্ষেপ ছিল একটা দুর্দান্ত কাজ। আমাদের অঞ্চলে অনেক শিশু আছে যাদের চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন। এই ধরনের কাজ এবং ভক্তরা যে অর্থ উত্তলন করেন, তা ওই শিশুদের সহায়তা করে।’
২০১৬ সাল থেকে ফিফা বেস্ট ফ্যান অ্যাওয়ার্ডে বিশ্বের সেরা ক্লাবের সমর্থকদের স্বীকৃতির প্রচলন শুরু হয়। এই পুরষ্কার এমন ফুটবল সমর্থকদের জন্য, যাঁরা খেলার সীমা ছাড়িয়ে মানবিক দায়বদ্ধতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

শেষ পর্যন্ত জয় হলো কিলিয়ান এমবাপেরই। প্যারিস সেন্ট জামের্ইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ডের পক্ষে রায় দিল আদালত।
ফরাসি ক্লাবটি থেকে পাওনা বেতন উদ্ধারের লড়াইয়ে জিতলেন এমবাপে। প্যারিসের একটি শ্রম আদালত পিএসজি-কে নির্দেশ দিয়েছে তাদের সাবেক খেলোয়াড় এমবাপেকে ৬ কোটি ইউরো বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৫২ কোটি টাকা বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে।
পিএসজি ছাড়ার পর থেকেই সাবেক ক্লাবের সঙ্গে রেষারেষি শুরু হয়ে যায় এমবাপের। গত নভেম্বরে প্যারিস শ্রম আদালতে দীর্ঘকাল ধরে চলা বিরোধের পর এমবাপ্পে তার প্রাক্তন ক্লাব থেকে ২৬৩ মিলিয়ন ইউরো দাবি করে। এরপর পিএসজিও এমবাপের বিরুদ্ধে ‘মানহানি’র পাল্টা অভিযোগ করেছিল।
২৬ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড এমবাপে এই নয়-আঙ্কের অর্থ দাবি করেছিলেন চুক্তি বিরোধ ও ক্লাবের অসদাচরণের প্রতিশোধ হিসেবে। তবে আদালত মঙ্গলবার শুধুমাত্র ওই পরিমাণের অর্থের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এমবাপেকে প্রদান করার রায় দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এমবাপেকে প্রদত্ত অধিকাংশ অর্থ ছিল বোনাস, তাঁর বেতন নয়।
আরও পড়ুন
| তৃতীয় সারির দলের বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয়ে শেষ ষোলোতে বার্সা |
|
এমবাপের আইনজীবী ফ্রেডেরিক ক্যাসেরো এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এক বিবৃতি তিনি বলেন, ‘আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। বেতন না দেওয়ার পর এটি প্রত্যাশিত ফল। এই রায় নিশ্চিত করেছে যে, যেকোনো প্রতিশ্রুতি পূরণ করা আবশ্যক। এটি একটি সহজ সত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে: পেশাদার ফুটবল শিল্পেও শ্রম আইন সবার জন্য প্রযোজ্য। এমবাপ্পে সাত বছর ধরে তার ক্রীড়াগত ও চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব সতর্কতার সঙ্গে পালন করেছেন, শেষ দিন পর্যন্ত।’
শ্রম আদালতের এই রায়ের প্রতি পিএসজি সম্মান জানালেও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে কি না, তাৎক্ষনিকভাবে সে বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করেনি পিএসজি।
এমবাপে ২০১৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পিএসজিতে ছিলেন। প্রথমে মোনাকো থেকে ধারে এবং পরে স্থায়ীভাবে ফরাসি ক্লাবটিতে যোগ দিয়ে ১৫টি ট্রফি জিতেছেন। ২৬ বছর বয়সী এই তারকা পিএসজির ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ৩০৮ ম্যাচে ২৫৬ গোল করেন তিনি, যার মধ্যে শেষ মৌসুমে ৪৮ ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা ছিল ৪৪।

অখ্যাত এক দলকে হারাতে বেশ বেগ পোহাতে হলো বার্সেলোনাকে। স্প্যানিশ লিগের তৃতীয় সারির দল কাতালানদের আক্রমণ বারবার প্রতিহত করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন ঘটেনি। মূল একাদশের বাইরের একাধিক সদস্যদের নিয়েই জিতেছে বার্সা।
কোপা দে রের শেষ বত্রিশের ম্যাচে গতকাল রাতে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। তৃতীয় স্তরের ক্লাব গুয়াদালাহারার মাঠে এই জয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত হলো হান্সি ফ্লিকের দলের। আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ডেডলক ভাঙার পর ব্যবধান বাড়ানো গোলটি করেন মার্কাস রাশফোর্ড।
স্টেডিয়ামের অস্থায়ী গ্যালারি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ম্যাচটি শুরু হতে আধা ঘণ্টা দেরি হয়। রোববার লা লিগায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভিয়ারিয়ালের মুখোমুখি হবে বার্সা। সেই ম্যাচের কথা মাথায় রেখে এই ম্যাচে দলের কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখেছিলেন বার্সেলোনার কোচ হান্সি ফ্লিক।
আরও পড়ুন
| ফিফা বর্ষসেরা একাদশে পিএসজির জয়জয়কার |
|
প্রতিপক্ষের মাঠে ফেরান তরেস, রাফিনিয়া, পেদ্রিসহ আরও কয়েকজনকে বাইরে রেখে শুরুর একাদশ সাজান বার্সা কোচ। আর গোলপোস্টে জোয়ান গার্সিয়াকেও বিশ্রাম দিয়ে মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনকে সুযোগ দেন ফ্লিক। দীর্ঘ ২১২ দিন পর শুরুর একাদশে ফেরেন এই জার্মান গোলকিপার।
প্রত্যাশিতভাবে ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল বার্সেলোনার কাছে। তবে তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে উল্লেখযোগ্য গোলের সুযোগ তৈরি করতে হিমশিম খেতে হয় সফকারীদের। ম্যাচে ৮০ শতাংশ বল ছিল বার্সার দখলে।
গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে গড়ানো ম্যাচটি ৭৬ মিনিটে প্রাণ ফিরে পায়। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের ক্রস থেকে হেডে বার্সাকে লিড এনে দেন ক্রিস্টেনসেন। প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়। সমতায় ফেরার কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা, তবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে গোল করে বার্সেলোনার জয় নিশ্চিত রাশফোর্ড।

ফিফা ফেয়ার প্লে পুরস্কার জিতেছেন জার্মান ক্লাব এসএসভি ইয়াহন রেগেনসবুর্গের দলীয় চিকিৎসক আন্দ্রেয়াস হারলাস-নয়কিং। গত এপ্রিলে বুন্দেস লিগায় ম্যাগডেবুর্গের বিপক্ষে রেগেনসবুর্গ ম্যাচে অসুস্থ এক দর্শককে চিকিৎসা দিয়ে জীবন বাঁচান তিনি। মানবিক এই উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ নয়কিংকে সম্মাননা দিয়েছে ফিফা।
কাতারের রাজধানী দোহার ফেয়ারমন্ট কাতারা হলে আজ নয়কিংয়ের হাতে ফিফা ফেয়ার প্লে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
গত এপ্রিলের ম্যাচটিতে হঠাৎ স্বাগতিক দলের এক সমর্থক গ্যালারিতে লুটিয়ে পড়েন। মুহূর্তেই আনন্দঘন পরিবেশ রূপ নেয় শোকাবহ পরিস্থিতিতে। শুরুতে ম্যাচ চলতে থাকায় বিষয়টি কারও নজরে আসেনি। কিছুক্ষণ পর জায়ান্ট স্ক্রিনে ঘটনার দৃশ্য ভেসে ওঠে।
এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত সেই সমর্থকের কাছে ছুটে যান হারলাস-নয়কিং। তিনি তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই মানবিক ভূমিকার জন্যই তিনি ফিফার ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।
হারলাস-নয়কিং একজন ক্রীড়া চিকিৎসক ও ক্রীড়া সার্জারির বিশেষজ্ঞ। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে জার্মান ক্লাব এসএসভি ইয়াহন রেগেনসবুর্গের দলীয় চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
হারলাস-নয়কিংয়ের পুরস্কার প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে তিনি লেখেন,
‘বুন্দেসলিগায় এক সমর্থকের জীবন বাঁচাতে দ্রুত ও মানবিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ২০২৫ সালের ফিফা ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড জয় করায় এসএসভি ইয়াহন রেগেনসবুর্গের দলীয় চিকিৎসক ডা. আন্দ্রেয়াস হারলাস-নয়কিংকে অভিনন্দন।’
তিনি আরও লেখেন,
‘সেই দিনের এই সাহসী উদ্যোগের জন্য ফিফা ও বিশ্বব্যাপী ফুটবল সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।’